কোষ কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

কোষ কি, কোষ কী, কোষ কাকে বলে

১৯৬৯ সালে লোই এবং সিকেভিজ নামক দুইজন বিজ্ঞানী সর্বপ্রথমবারের মতো কোষ আবিষ্কার করেন এবং কোষের সংজ্ঞা প্রদান করেন। 

এই সংজ্ঞা মতে, কোষ হলো জীবের দেহ গঠনের একক এবং তারা কোন ধরনের মাধ্যম ছাড়াই সকল জীবজ ক্রিয়াকলাপ পরিচালনা করতে পারে। এগুলো মূলত আকারে খুবই ক্ষুদ্র এবং বেশ কয়েক ধরনের উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত হয় ।

  • কোষ হচ্ছে জীবদেহের গঠন ও কার্য্যের একক যা প্রোটোপ্লজমে গঠিত এবং পূর্ববর্তী কোষ থেকে নতুন কোষের সৃষ্টি হয়।
  • ব্রিটিশ প্রকৌশলী রবার্ট হুক (Robert Hooke) তার নিজের তৈরি অণুবীক্ষণযন্ত্রে বোতলের ছিপি বা কর্কের সেকশন নিয়ে সেখানে মৌচাকের কুঠরির মতো অসংখ্য কাঠামো দেখে একে cell নামে অভিহিত করেন যা আজও প্রচলিত।
  • প্রতিটি জীবের সূচনা হয় একটিমাত্র কোষ থেকে এবং পূর্ববর্তী কোষ থেকেই নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। এই তত্ত্বটি কোষ মতবাদ বা cell theory নামে পরিচিত যা প্রদান করেন প্রাণিবিজ্ঞানী সোয়ান (Theodor Schwann) এবং উদ্ভিদবিজ্ঞানী স্লেইডেন (M.J. Schleiden)।
  • প্রতিটি জীবদেহ এক বা একাধিক কোষ নিয়ে গঠিত এবং প্রতিটি কোষ এককভাবে কাজ করতে পারে।
  • পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কোষ হচ্ছে- মাইকোপ্লাজমা গ্যালিসেপ্টিকাম (Mycoplasma gallisepticum) এবং মাইকোপ্লাজমা লেডলয়ি (Mycoplasma laidlawii) নামক এককোষী জীবাণু যা ব্যাকটেরিয়া সদৃশ। এদের ব্যাস মাত্র ০.১ মাইক্রন।
  • পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহত্তম প্রাণী কোষ হচ্ছে- উটপাখির ডিম, খোসাসহ যার আয়তন ১৭০ মিমি x ১২৫ মিমি।
  • মানবদেহের দীর্ঘতম কোষ হচ্ছে স্নায়ুকোষ যা দৈর্ঘ্যে প্রায় ১ মিটার হয়ে থাকে। একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষ মানুষের দেহে (৮০ কেজি ওজনের) কোষের সংখ্যা প্রায় দশ লক্ষ কোটি।
  • প্রাণী কোষ বিভিন্ন আকার ও আকৃতির হয়ে থাকে।  যেমন- ডিম্বাণু প্রায় গোলাকার বা ডিম্বাকার, শুক্রাণু লেজ বিশিষ্ট, পেশীকোষ লম্বা, যকৃত-কোষ বহুভূজাকার, স্নায়ুকোষ সরু ও শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট।

কোষ কাকে বলে কত প্রকার

আধুনিক এবং প্রাসরাসায়নিক দৃষ্টিকোণ থেকে জীবিত কোষগুলোকে একটি সুসংগঠিত রাসায়নিক কারখানা হিসাবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে যা জীবন পরিচালনার জন্য সব রকম কাজ সম্পন্ন করতে এবং সব রকম দ্রব্যাদি তৈরি করতে সক্ষম। অর্থাৎ জীবের মূল দৈহিক কাঠামো এবং জৈবিক ক্রিয়ার এককই হচ্ছে কোষ।

ক) অবস্থান এবং কাজের উপর নির্ভর করে কোষকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

  • দেহ কোষ এবং
  • জনন কোষ।

দেহ কোষ কাকে বলে

যে সকল কোষ দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গতন্ত্র গঠন করে তাদেরকে বলা হয় দেহ কোষ। যেমন- পেশি কোষ, জাইলেম কোষ ইত্যাদি।

দেহ কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা জনন কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যার দ্বিগুণ থাকে। তাই দেহ কোষকে ডিপ্লয়েড কোষ বলা হয়।

জনন কোষ কাকে বলে

জীব দেহের যে সকল কোষ জনন কার্যে অংশ নেয় তাদেরকে বলা হয় জনন কোষ। জনন কোষ কেবল মাত্র যৌন জননক্ষম জীবে সৃষ্টি হয়। যেমন- শুক্রাণু, ডিম্বাণু, পরাগরেণু ইত্যাদি।

জনন কোষে ক্রোমোসোম সংখ্যা দেহ কোষের ক্রোমোসোম সংখ্যার অর্ধেক। তাই জনন কোষকে হ্যান্ড্রয়েড কোষ বলা হয়।

দেহ কোষ ও জনন কোষের পার্থক্য

দেহকোষ (Somatic cell)জননকোষ (Reproductive cell)
দেহ গঠনকারী কোষ, জনন কাজে অংশ নেয় নাজনন কাজে অংশগ্রহণকারী কোষ যথা- শুক্রাণু ও ডিম্বাণু
মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে পূর্ববর্তী দেহকোষ (2n) থেকে নতুন দেহকোষ (2n) উৎপন্ন হয়মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় বিভাজিত হয়ে জনন মাতৃকোষ (2n) থেকে শুক্রাণু (n) বা ডিম্বাণু (n) উৎপন্ন হয়
দেহকোষ ডিপ্লয়েড (2n)জননকোষ হ্যাপ্লয়েড (n)
দেহকোষে সিনগ্যামি দেখা যায় নাশুক্রাণু (n)ও ডিম্বাণুর (n) মিলনকে সিনগ্যামি বলে। শুক্রাণু (n)ও ডিম্বাণুর (n) মিলনের (n+n) ফলে জাইগোট (2n) গঠিত হয়।
দেহ কোষ ও জনন কোষের পার্থক্য

(খ) নিউক্লিয়াসের গঠনের উপর নির্ভর করে কোষকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-

  • আদি কোষ এবং
  • প্রকৃত কোষ।

আদি কোষ কাকে বলে, আদিকোষ কাকে বলে

যে সকল কোষে সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস অনুপস্থিত থাকে তাদেরকে বলা হয় আদি কোষ। এ সকল কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলগি বডি সেন্ট্রিয়াল, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইতাদি অনুপস্থিত থাকে। তবে বিক্ষিপ্ত DNA এবং রাইবোসোম থাকে। Mycoplasma নামক PPLO (Pleuropneumonia like organism), ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ সবুজ ব্যাকটেরিয়া, ইত্যাদি আদি কোষীয় জীব।

যেসকল কোষে বা সেলে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাদের প্রোক্যারিওটিক সেল বা আদিকোষ বলে। প্রোক্যারিওটিক সেলে নিউক্লিয়াস কোনো পর্দা দ্বারা বেষ্টিত থাকে না। ফলে নিউক্লিওবস্তু সাইটোপ্লাজমে ছড়ানো থাকে। এসব সেলে মাইটোকন্ড্রিয়া, প্লাস্টিড, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি অঙ্গাণু থাকে না তবে রাইবোজোম থাকে। নীলাভ সবুজ শৈবাল, ব্যাকটেরিয়ায় এ ধরনের সেল পাওয়া যায়।

প্রকৃত কোষ কাকে বলে

যে সকল কোষে সুসংগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে তাদেরকে বলা হয় প্রকৃত কোষ। শৈবাল, ছত্রাক, প্রায়োফাইটস, টেরিডোফাইটস, জিমনোস্পার্মস, অ্যানজিও স্পার্মস ইত্যাদি প্রকৃত কোষ দ্বারা গঠিত।

যে সকল কোষের নিউক্লিয়াস সুগঠিত অর্থাৎ নিউক্লিয়ার ঝিল্লি দ্বারা নিউক্লিও বস্তু পরিবেষ্টিত ও সুসংগঠিত থাকে তাকে প্রকৃত কোষ বলে। এসব কোষে রাইবোজোমসহ সকল অঙ্গাণু উপস্থিত থাকে। অধিকাংশ উচ্চ শ্রেণির জীবকোষ এ ধরনের হয়। কাজের ভিত্তিতে প্রকৃত কোষ দুই প্রকার, যথা– দেহকোষ এবং জননকোষ।

আদিকোষ ও প্রকৃত কোষের পার্থক্য, আদি কোষ ও প্রকৃত কোষের মধ্যে পার্থক্য

যেসকল কোষে বা সেলে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে না তাদের প্রোক্যারিওটিক সেল বা আদিকোষ বলে। আদিকোষ ও প্রকৃত কোষের মধ্যে পার্থক্য নিচে দেখানো হয়েছে-

আদি কোষপ্রকৃত কোষ
আদি কোষ সুগঠিত নয়। অর্থাৎ আদিকোষের গঠন সরল এবং এর ভেতরে বিভিন্ন ধরনের অঙ্গানুও কম।প্রকৃত কোষ সুগঠিত। এতে বিভিন্ন ধরণের কোষীয় অঙ্গাণু বিদ্যমান।
আদিকোষে রাইবোজম ৩০s ও ৫০s সাবইউনিট দ্বারা গঠিত।প্রকৃত কোষ ৬০s ও ৪০s উপ একক সাবইউনিট দ্বারা গঠিত।
আদিকোষ সাইটোপ্লাজমীয় গঠন সরল, সাধারণত অর্ধতরল প্রকৃতির। প্রকৃত কোষ সাইটোপ্লাজম সাইটোকংকল জাতীয় ঘোন থকথকে পদার্থ দ্বারা গঠিত।
আদি কোষে DNA বৃত্তাকার ও ননহিস্টন।প্রকৃত কোষে DNA লম্বাকৃতি এতে সেন্ট্রোমিয়ার স্যাট ইত্যাদি থাকে। হিস্টোন প্রোটিন বিদ্যমান।
আদিকোষ ও প্রকৃত কোষের পার্থক্য

কোষের কাজ কি কি

নিচে একটি কোষ দ্বারা সম্পাদিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 6 টি কাজ অধ্যয়ন করি।

  • গঠন এবং সমর্থন: আপনি জানেন একটি বাড়ি ইটের তৈরি। একইভাবে, একটি জীব কোষ দ্বারা গঠিত। যদিও কিছু কোষ যেমন কোলেনকাইমা এবং স্ক্লেরেনকাইমা গঠনগত সহায়তা প্রদানের জন্য উপস্থিত থাকে তবে সাধারণভাবেও, সমস্ত কোষ সাধারণত সমস্ত জীবের কাঠামোগত ভিত্তি প্রদান করে।
  • বৃদ্ধি : মানুষের মতো জটিল জীবগুলিতে, কোষের সাধারণ গুণনের মাধ্যমে টিস্যুগুলি বৃদ্ধি পায়। সুতরাং, কোষগুলি জীবের বৃদ্ধির জন্য দায়ী। পুরো জিনিসটি মাইটোসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে।
  • পরিবহন: কোষগুলি তাদের ভিতরে সঞ্চালিত বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়াতে ব্যবহৃত পুষ্টিগুলি আমদানি করে। এই প্রক্রিয়াগুলির ফলস্বরূপ, একটি বর্জ্য পণ্য উত্পাদিত হয়। কোষগুলি তখন এই বর্জ্য থেকে পরিত্রাণ পেতে কাজ করে। এই পদ্ধতিতে, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ইথানলের মতো ছোট অণুগুলি ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমে কোষের ঝিল্লির মধ্য দিয়ে যায়। এই পদ্ধতিটি প্যাসিভ ট্রান্সপোর্ট নামে পরিচিত। অন্যদিকে, প্রোটিন এবং পলিস্যাকারাইডের মতো বড় অণুগুলি সক্রিয় পরিবহনের মাধ্যমে কোষের ভিতরে এবং বাইরে যায়।
  • শক্তি উৎপাদন : বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া করার জন্য জীবের শক্তি প্রয়োজন। উদ্ভিদে, শক্তি সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া থেকে আসে যখন প্রাণীদের মধ্যে শক্তি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আসে।
  • মেটাবলিজম: কোষ বিপাকের জন্য দায়ী যা জীবিত রাখার জন্য জীবের অভ্যন্তরে সংঘটিত সমস্ত রাসায়নিক বিক্রিয়া অন্তর্ভুক্ত করে।
  • প্রজনন: একটি কোষ মাইটোসিস (আরো বিকশিত জীবের মধ্যে) এবং মায়োসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রজননে সহায়তা করে।

কোষের কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়তে, এখানে ক্লিক করুন

প্রাণী কোষ কাকে বলে

কোষ হলো জীবদেহের গঠন ও কাজের একক। ইট দিয়ে যেমন ইমারত তৈরি হয় তেমনি কোষ আমাদের দেহ গঠন করে। যে কোষ প্রাণী দেহ গঠন করে তাকে প্রাণী কোষ বলে।

জীবদেহের গঠন ও কাজের একককে কোষ বলে। অর্থাৎ প্রাণী দেহ যা দিয়ে গঠিত হয় তাই প্রাণীকোষ।

জীবিত প্রাণীর দেহ যে কোষ দ্বারা গঠিত হয় তাকে প্রাণীকোষ বলা হয় । প্রাণী কোষের গঠনও বেশী জটিল । সাধারণত এই ধরনের কোষ দ্বারা গঠিত কোন জীবকে অ্যানিমেলিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই কোষ দ্বারা গঠিত টিস্যুতন্ত্রের গঠন বেশ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। 

প্রাণী কোষের চিত্র, প্রাণী কোষ চিত্র

উদ্ভিদ কোষ, উদ্ভিদ কোষ কাকে বলে

উদ্ভিদ দেহ যে কোষ দ্বারা গঠিত তাকে উদ্ভিদ কোষ বলে। এটি উদ্ভিদদেহের গঠন ও কার্যের একক। উদ্ভিদের জড় কোষপ্রাচীর থাকে।

কোষে থাকে বিভিন্ন কোষ অঙ্গাণু, যেমন- কোষঝিল্লি, প্রোটোপ্লাজম, সাইটোপ্লাজম, ক্লোরোপ্লাস্ট, নিউক্লিয়াস, গলজিবডি, রাইবোজোম, লাইসোজোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম, মাইটোকনড্রিয়া, কোষ গহ্বর।

সজীব উদ্ভিদ যে কোষ দ্বারা গঠিত হয় তাকে উদ্ভিদকোষ বলা হয়। উদ্ভিদ কোষের গঠন তুলনামূলক জটিল এবং প্রাণী কোষের সাথে এই কোষের বেশ কিছু বৈসাদৃশ্য রয়েছে ।

উদ্ভিদ কোষ চিত্র, উদ্ভিদ কোষের চিত্র

উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য, উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য, উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য লেখ

উদ্ভিদ কৌশল প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য নিম্নে বর্ণনা করা হলো। 

উদ্ভিদ কোষপ্রাণী কোষ
উদ্ভিদকোষ আকারে তুলনামূলক অনেক বড়প্রাণী কোষ উদ্ভিদকোষ অনুপাতের ছোট হয় 
উদ্ভিদ কোষের প্রাচীর বিভিন্ন ধরনের জড় বস্তু দ্বারা গঠিত। বলে রাখা ভালো কোষ প্রাচীর উদ্ভিদ কোষের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। প্রাণী কোষে কোন ধরনের কোষ প্রাচীর থাকে না, যদি থেকেও থাকে তবে তা নিম্নবর্গ প্রাণীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। 
উদ্ভিদ দেহে কোষগহবর লক্ষ্য করা যায় তবে প্রাণীদেহে কোন ধরনের কোষগহ্বর লক্ষ্য করা যায় না। দি প্রাণীদেহে কোষগোহবর দু একটা থেকেও থাকে তবে তা আকৃতিতে বেশ ছোট । এবং অত্যাধুনিক মাইক্রোস্কোপ যন্ত্র ছাড়া তা দেখা সম্ভব নয় ।
উদ্ভিদ দেহে গলজি বস্তু থাকে না।প্রাণীদেহে গলজি বস্তু থাকে।
উদ্ভিদকোষে নিউক্লিয়াসের অবস্থানটি কষগহবরের আশপাশে কোথাও হয়ে থাকে। উদ্ভিদ কোষের নিউক্লিয়াস প্রাণী কোষের চেয়ে তুলনামূলক আকারে বড় হয় ।প্রাণীকোষে নিউক্লিয়াস একদম কেন্দ্রে অবস্থান
উদ্ভিদ কোষে লাইসোজোম অনুপস্থিত।প্রাণীকোষে লাইসোজোম নামের একটি কোষ উপাদান রয়েছে, এই লাইসোজোম মূলত প্রাণী কোষ কে বিভিন্ন ধরনের রোগ জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে থাকে । 
প্লাস্টিড হলো এমন এক ধরনের কোষ অঙ্গানু যা কেবলমাত্র উদ্ভিদকোষে পাওয়া যায়। এটির মাধ্যমে মূলত উদ্ভিদ তার খাদ্য তৈরি করতে পারে । এছাড়াও খাদ্য সংরক্ষণ, এবং উদ্ভিদ দেহকে বর্ণময় করতে কাজ করে প্লাস্টিড।প্রাণীকোষে প্লাস্টিড অনুপস্থিত।
উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের মধ্যে পার্থক্য

কোষ বিভাজন কাকে বলে

যে পদ্ধতিতে একটি কোষ হইতে দুই বা অধিক অপত্য কোষের সষ্টি হয় তাহাকে কোষ বিভাজন বলে।
আত্মপ্রতিলিপি গঠন সজীব বস্তুর সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্য। যে পদ্ধতিতে কোষ তাহার নিজ প্রতিলিপি গঠন করে তাহাকে কোষ বিভাজন বলে।

বিভাজন পদ্ধতিতে বহুকোষের উৎপত্তি জীবের সার্বিক বৈশিষ্ট্য। একটি কোষ অন্য আর একটি অনুরেপ কোষ হইতে উৎপন্ন হয় এবং এই সূত্রই জীবন-প্রবাহের ধারাবাহিকতার প্রকৃতি ভিত্তি। জীবদেহে কোষ বিভাজন তিনটি পৃথক পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। যেমন-

  • (১) অ্যামাইটোসিস (Amitosis)
  • (২) মাইটোসিস (Mitosis) ও
  • (৩) মিয়ােসিস (Meiosis)

মিয়োসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে, মিয়োসিস কোষ বিভাজন, মাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে, মাইটোসিস কোষ বিভাজন

যে বিশেষ পদ্ধতিতে নিউক্লিয়াসের নানাবিধ পরিবর্তনের মাধ্যমে মাতৃ নিউক্লিয়াস সম-গুণসম্পন্ন দুইটি অপত্য নিউক্লিয়াসের জন্ম দেয় তাহাকে মাইটোসিস বলে।

বহুকোষী জীবের দেহ দুই প্রকার কোষ দ্বারা তৈরী—

  • ১. দেহকোষ বা সােমাটিক কোষ (Somatic Cells), যাহা প্রজনন কার্য ব্যতীত দেহের যাবতীয় শারীরবৃত্তীয় কার্য করে, এবং
  • ২. জনন কোষ (Germ Cells), যাহা যৌন জননে সাহায্য করে। যেমন – শুক্রাশয় ও ডিম্বাশয়ের কোষ।

মাইটোসিস পদ্ধতিতে দেহজ কোষের নিউক্লীয় বিভাজন হয় এবং একটি নিউক্লীয়াস হইতে দুইটি সমগণ সম্পন্ন অপত্য নিউক্লীয়াস উৎপন্ন হয়। জননকোষ উৎপন্ন করতে শুক্রাশয়ে বা ডিম্বাশয়ে বা রেণুস্থলীতে মাতৃকোষে যে বিভাজন দেখা যায় এবং যে বিভাজনের দ্বারা চারটি জননকোষ বা রেণু উৎপন্ন হয় তাহাকে মিয়োসিস বলে।

মাইটোসিস কোথায় হয়

মাইটোসিস বিভাজন সকল দেহকোষে ঘটিয়া থাকে। যে সকল জীবের দেহকোষ আদর্শ নিউক্লিয়াসযুক্ত তাহাতেই এই বিভাজন হয়। রেণুস্থলীতে রেণুমাতৃকোষ সৃষ্টির পূর্বে মাইটোসিস বিভাজন হয়। শুক্রাশয়ে আদি শুক্রকোষ (Spermatogonia) পর্যন্ত মাইটোসিস বিভাজন ঘটে। ডিম্বাশয়ে আদি ডিম্বাণু (Oogonium) অবস্থা পর্যন্ত মাইটোসিস বিভাজন ঘটে।

মাইটোসিস পদ্ধতি | Process of Mitosis

 1878 খ্রীষ্টাব্দে ওয়াল্টার ফ্লেমিং (Walter Flemming) প্রথম জীবদেহে মাইটোসিস কোষবিভাজন প্রত্যক্ষ করেন এবং ইহার বিবরণ দেন। স্লাইচের (Schleicher) 1878 খ্রীষ্টাব্দে মাইটোসিসের বিবরণ প্রসঙ্গে ইহার নামকরণ করেন কেরিওকাইনেসিস (Karyokinesis)।

1879 খ্রীষ্টাব্দে সেনাইডার (Scheneider) মাইটোসিস পদ্ধতির পূর্ণ বিবরণ দেন, ককরাউম (Cockraum) এবং ম্যাককলে (Mac Caulay) 1960) খ্রীষ্টাব্দে মাইটোসিসের রাসায়নিক পদ্ধতির বিশদ বিবরণ দেন।

মিয়োসিস কোষ বিভাজনের গুরুত্ব

মিয়োসিস বিভাজনের প্রধান প্রধান গুরুত্বগুলি হল :

  • ১) প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক রাখা — প্রতিটি প্রজাতির জীবের ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক। যৌন জননের ফলে জাইগোট তৈরী হলে জীবের ক্রোমোজোম সংখ্যা দ্বিগুণিত হয়। আবার মিয়োসিস বিভাজনের মাধ্যমে গ্যামেট তৈরী হলে ক্রোমোজোম সংখ্যা অর্ধেক হয়ে যায়। ফলে প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা একই থাকে। মিয়োসিস না ঘটলে প্রতি প্রজন্মে ক্রোমোজোম সংখ্যা দ্বিগুণিত হয়ে ঐ সব প্রজাতির অবলুপ্তি ঘটত।
  • ২) জনুক্রম বজায় রাখা— যৌন জননকারী জীবদের জীবনে দুটি জনু বা দশা যথা– অযৌন জনু বা রেণুধর জনু ( উদ্ভিদে) দশা বা ডিপ্লয়েড জনু ( 2n) এবং যৌন জনু বা লিঙ্গধর জনু বা হ্যাপ্লয়েড ( n) জনুর পর্যায়ক্রমে আবর্তন ঘটে।
  • ৩) জিনের পুন:সংযুক্তি ও প্রকরণ– মিয়োসিস বিভাজনের প্রথম প্রফেজ দশার প্যাকিটিন উপদশায় সমসংস্থ ক্রোমোজমের নন- সিস্টার ক্রোমাটিড দুটির মধ্যে ক্রোমাটিড খন্ডের বিনিময় বা ক্রশিং ওভার ঘটে । ফলে জিনের পুন:বিন্যাস ঘটে এবং অপত্য জীবে প্রকরণ দেখা যায়। এই প্রকরণ হল জৈব অভিব্যক্তি বা বিবর্তনের কাঁচামাল। প্রকরণের পুঞ্জীভবনের ফলে নতুন প্রজাতির আবির্ভাব ঘটে।

অ্যামাইটোসিস কোষ বিভাজন কাকে বলে

যে কোষ বিভাজনে পিণ্ডিল গঠিত না হইয়া নিউক্লিয়াসটি সরাসরি মধ্যাংশ বরাবর খাঁজ সৃষ্টির দ্বারা দুইটি অপত্য খণ্ডাংশে বিভক্ত হয় তাহাকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন বলে। এই প্রক্রিয়ায় মাইটোসিসের ন্যায় নিউক্লিয়াসের ভাঙ্গন, ক্রোমােজোম সষ্টি এবং নিউক্লিয়াসের পুনর্গঠন প্রভৃতি ঘটনা ঘটে না। নিউক্লীয়াসের বিভাজন সরাসরি খাঁজ সৃষ্টির মাধ্যমে ঘটে বলিয়া এই বিভাজনকে প্রত্যক্ষ কোষ বিভাজন (Direct cell division) বলে।

উদাহরণ—অ্যামিবা, ব্যাকটিরিয়া, কারা (শৈবাল), ঈস্ট (ছত্রাক)।

জনন কোষ কাকে বলে

যেসব কোষ মিয়োসিস বিভাজনের মাধ্যমে জনন কাজে অংশ গ্রহণের জন্য গ্যামেট সৃষ্টি করে তাদের জনন কোষ বলে। উদ্ভিদের অভিউলের ডিম্বমাতৃকোষ (Megaspor Mother Cell) ও পরাগধানীতে পরাগমাতৃকোষ এবং প্রাণীর ওভারির ডিম্বমাতৃকোষ ও টেস্টিসের শুক্রমাতৃকোষ জনন কোষের উদাহরণ।

প্রজনন কোষগুলি যৌন প্রজননের জন্য দায়ী কোষ এবং গেমেট নামেও পরিচিত। প্রাণীদের মধ্যে, পুরুষ গ্যামেটকে শুক্রাণু বলা হয়, যখন স্ত্রী গ্যামেটকে ডিম বা ডিম্বাণু বলা হয়। এই কোষগুলি একটি জীবের অর্ধেক জেনেটিক তথ্য বহন করে এবং যখন তারা নিষিক্তকরণের সময় ফিউজ হয়, তখন তারা ক্রোমোজোমের সম্পূর্ণ সেট সহ একটি জাইগোট গঠন করে।

মাতৃ কোষ কাকে বলে

যে সমস্ত কোষ বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়, তাকে মাতৃ কোষ বা জনিতৃ বা (Mother cell) বলে।

অপত্য কোষ কাকে বলে

মাতৃ কোষ বা জনিতৃ বা (Mother cell) বিভাজনের ফলে যে কোশ উৎপন্ন হয়, তাকে অপত্য কোষ বা (Daughter cell) বলে।

কোনো কোষ বিভাজিত হওয়ার পর যে নতুন কোষ উৎপন্ন হয় তাদেরকে অপত্য কোষ (Daughter cell) বলে।

কোষ বিভাজনে, একটি মাতৃ কোষ বা পিতা-মাতার কোষ এমন কোষ যা দুইটি কন্যা কোষের বা অপত্য কোষ (Daughter cell) এর জন্ম দেয়। Mitosis মধ্যে, দুই কন্যা কোষ বা অপত্য কোষ (Daughter cell), মাতৃ কোষ হিসাবে একই জেনেটিক কন্টেন্ট থাকে।

শিখা কোষ কি

শিখা কোষ হচ্ছে প্লাটিহেলমিনথিস পর্বের প্রাণীদের দেহে বিদ্যমান এক বিশেষ ধরনের কোষ বা রেচন অঙ্গ।

প্লাটিহেলমিনথিস পর্বের প্রাণীর দেহে রেচন কার্য সম্পন্ন করার জন্য যে বিশেষ ধরনের কোষ থাকে তাকে শিখা কোষ বলে। এই সকল শিখা কোষ দ্বারাই প্লাটিহেলমিনথিস পর্বের প্রাণীদের রেচন তন্ত্র গঠিত হয়। নাইট্রোজেন ঘঠিত বর্জ্য নিষ্কাশনই এদের কাজ।

কোষ চক্র কি

একটি কোষ সৃষ্টি এর বৃদ্ধি এবং পরবর্তীতে বিভাজন এ তিনটি কাজের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় তাকে কোষ চক্র বলে।হাওয়ার্ড ও পেল্ক এই কোষচক্রের প্রস্তাব করেন ।

  • প্রক্রিয়া : কোষ চক্র দুটি প্রধান ধাপে বিভক্ত যথা- ইন্টারফেস বা প্রস্তুতি পর্যায় ও এম ফেজ বা মাইটোসিস বিভাজন পর্যায়।
  • ইন্টারফেস: কোষ বিভাজনের পূর্বে প্রস্তুতিমূলক এবং বিপাক সমৃদ্ধ ধাপকে ইন্টারফেস বলে। এটি বেশ দীর্ঘ ধাপ। এম ফেজ ধাপকে সম্পূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয় ইন্টারফেস অবস্থায় ।এটি তিনটি দশায় বিভক্ত যথা- G1 দশা, S দশা ও G2 দশা।
    • G1 দশা: একটি কোষ পরবর্তীতে বিভাজন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এই দশায়। এ সময় প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রোটিন আরএনএ এবং ডিএনএ প্রতিলিপিকরণ তৈরি হয়। মোট কোষচক্রের ৩০-৪০% সময় এই দশায় ব্যয় হয়।
    • S দশা: এই দশার প্রধান কাজ হলো নিউক্লিয়াসের ক্রোমোজোমস্থ ডিএনএ সূত্রের প্রতিলিপন । এতে ৩০-৫০% সময় ব্যয় হয় ।
    • G2 দশা: এই দশার প্রধান কাজ হলো মাইটোসিস পর্যায় স্পিন্ডল তন্তু তৈরি করে বিভাজন প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি (ATP) তৈরি করা ।
    • মাইটোসিস: একটি জটিল প্রক্রিয়া নিউক্লিয়াসের বিভাজন ও পুনর্গঠন, সাইটোপ্লাজম এর নতুন কোষে গমন, সেল মেমব্রেন এবং উদ্ভিদ কোষে কোষ প্রাচীর গঠনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে এই ধাপ সমাপ্ত হয়।

কোষ চক্র সম্পর্কে বিস্তারিত পড়তে, এখানে ক্লিক করুন

তড়িৎ রাসায়নিক কোষ কাকে বলে

যে তড়িৎ কোষে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহ সৃষ্টি হয় অর্থাৎ রাসায়নিক বিক্রিয়ার শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় তাকে তড়িৎ রাসায়নিক কোষ বলে।

তড়িৎ বিশ্লেষ্য কোষ কাকে বলে

যে কোষে বাইরের উৎস থেকে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানো হয় তাকে তড়িৎ বিশ্লেষ্য কোষ বলে। তড়িৎ রাসায়নিক কোষে অ্যানোড ঋণাত্মক ও ক্যাথোড ধনাত্মক প্রকৃতির। তড়িৎ বিশ্লেষ্য হচ্ছে এমন একটি পদার্থ যা কোন পোলার দ্রাবকে যেমন- পানি দ্রবীভূত করলে তড়িৎ পরিবাহী দ্রবণ তৈরি করে।

দ্রবীভূত তড়িৎ বিশ্লেষ্য বিশ্লিষ্ট হয়ে ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নে বিভক্ত হয়, যা দ্রবণে সুষমভাবে বিন্যস্ত থাকে। তাড়িতিকভাবে, এমন দ্রবণ নিরপেক্ষ। এমন দ্রবণে তড়িৎ বিভব প্রয়োগ করা হলে, দ্রবণের ক্যাটায়নগুলো ঐ তড়িৎদ্বারের দিকে যায়, যার ইলেকট্রন প্রাচুর্য আছে।

গ্যালভানিক কোষ কাকে বলে

যে তড়িৎ রাসায়নিক কোষে তড়িৎদ্বার বিক্রিয়া স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘটে এবং রাসায়নিক শক্তি বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর হয় তাকে গ্যালভানিক কোষ (Galvanic Cell) বা ডেনিয়েল কোষ বলে।

ডেনিয়েল বা গ্যালভানিক কোষ কোষের একটি পাত্রে কপার সালফেট CuSO4CuSO4​ এর জলীয় দ্রবণে ক্যাথোড হিসেবে কপার দণ্ড এবং অপর একটি পাত্রে জিংক সালফেট ZnSO4ZnSO4​ এর জলীয় দ্রবণে জিঙ্ক অ্যানোড হিসেবে নেওয়া হয়। এরপর পাত্র দুটিকে পাশাপাশি রেখে লবণ সেতুর মাধ্যমে সংযোগ করলে নিম্নোক্ত জারণ বিজারণ বিক্রিয়া স্বতঃস্ফূর্তভাবে  ঘটবে।

ক্যাথোড এ বিক্রিয়া: Cu2++2e−→CuCu2++2e−→Cu  বিজারণ বিক্রিয়া

অ্যনোড এ বিক্রিয়া: Zn→Zn2++2e−Zn→Zn2++2e−  জারণ বিক্রিয়া

সার্বিক বিক্রিয়া: Zn+CuSO4→ZnSO4+CuZn+CuSO4​→ZnSO4​+Cu

এখন তারা তড়িৎদ্বার দুটিকে সংযুক্ত করলেই অ্যানোড থেকে ক্যাথোডে ইলেকট্রনের প্রবাহের সৃষ্টি হবে। আর  ইলেকট্রন প্রবাহ মানে বিদ্যুৎপ্রবাহ এজন্য ডেনিয়েল সেলে বাইরের তারের সাথে বৈদ্যুতিক বাল্ব যুক্ত করলে বাতি জ্বলে উঠবে। 

কোষের শক্তিঘর কাকে বলে

মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের পাওয়ার হাউজ বা বলার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। সংক্ষেপে বলা যায় যে, শক্তি উৎপাদনের সকল কাজ মাইটোকন্ড্রিয়াতে ঘটে বলে, একে কোষের পাওয়ার বলে।

মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোষের পাওয়ার কারনগুলো হল-

  • মাইটোকন্ড্রিয়া কোষের সমস্ত কাজের জন্য শক্তি উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ করে।
  • মাইটোকন্ড্রিয়া শ্বসনের জন্যে প্রয়োজনীয় এনজাইম, কো-এনজাইম প্রভৃতি ধারন করে।
  • মাইটোকন্ড্রিয়া শ্বসনের বিভিন্ন পর্যায় যেমন- ক্রেবস চক্র, ইলেকট্রন ট্রান্সপোর্ট,
  • অক্সিডেটিভ ফসফোরাইলেশন সম্পন্ন করে।
  • নিজস্ব DNA ও RNA তৈরী করে।
  • স্নেহ বিপাকে সাহায্য করে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | কোষ

Q1. কোষ আবিষ্কার করেন কে

Ans -১৬৬৫ সালে বিজ্ঞানী রবার্ট হুক সর্বপ্রথম জীবিত কোষ পর্যবেক্ষন করেন তাই তাকে কোষ এর আবিষ্কারক বলা হয়।

Q2. গবলেট কোষ কোথায় থাকে

Ans – গবলেট কোষগুলি বেশিরভাগই ছোট অন্ত্র এবং শ্বাসতন্ত্রের এপিথেলিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাওয়া যায়।

গবলেট কোষগুলি প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল থেকে উদ্ভূত হয় এবং তাদের গবলেট, কাপের মতো চেহারা থেকে তাদের নামটি এসেছে। গবলেট কোষের প্রাথমিক কাজ হল মিউসিন নিঃসরণ করা এবং একটি প্রতিরক্ষামূলক শ্লেষ্মা স্তর তৈরি করা। গবলেট কোষগুলিও ইমিউনোরেগুলেশনের সাথে জড়িত বলে মনে করা হয়

Q3. মিয়োসিস কোষ বিভাজন কোথায় ঘটে

Ans – জনন মাতৃকোষের নিউক্লিয়াসে মিয়োসিস ঘটে। মিয়ােসিসের ফলে একটি নিউক্লিয়াস থেকে চারটি অপত্য নিউক্লিয়াসের জন্ম হয়।

Q4. কোষ বিভাজন কে আবিষ্কার করেন

Ans – ওয়াল্টার ফ্লেমিং ১৮৮২ সালে সামুদ্রিক সালামান্ডার (Triturus maculosa) কোষে প্রথমবারের মতো কোষ বিভাজন লক্ষ্য করেন।

কোষ বিভাজন একটি মৌলিক ও অত্যাবশ্যকীয় প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে জীবের দৈহিকবৃদ্ধি ও বংশ বৃদ্ধি ঘটে । যে প্রক্রিয়ায় জীব কোষের বিভক্তির মাধ্যমে একটি থেকে দুটি বা চারটি কোষের সৃষ্টি হয় তাকে কোষ বিভাজন বলে । কোষ বিভাজন সাধারণত বৃহত্তর কোষ চক্রের অংশ হিসাবে ঘটে।

Q5. জনন কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা কত

Ans – মানুষের দেহকোষে অটোজমের সংখ্যা ৪৪ টি বা ২২ জোড়া এবং যৌন বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোমের সংখ্যা ২টি বা ১ জোড়া এবং জনন কোষে বা শুক্রাণু বা ডিম্বাণুতে অটোজমের সংখ্যা ২২ জোড়া এবং যৌন বা লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোমের সংখ্যা ১ জোড়া। সেগুলো হলো X এবং Y। মহিলাদের গ্যামেটে XX এবং পুরুষদের গ্যামেটে XY ক্রোমোজোম থাকে।

Q6. কোষ শব্দের অর্থ কি

Ans – কোষ শব্দের অর্থ সকল প্রাণীর মূল গঠনগত এবং কার্যগত একক যা দিয়ে প্রাণীরা তৈরী। উদাহরণ : অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখলে কোষগুলিকে এক একটি কক্ষরূপে দেখা যায়।

Q7. কোষের প্রাণশক্তি বলা হয়

Ans – কোষের প্রাণশক্তি বলা হয় মাইটোকন্ড্রিয়া । মাইটোকনড্রিয়াকে কোষের শক্তিঘর বলে। খাদ্যের শক্তি নির্গত হয়ে মাইটোকন্ড্রিয়াতে সঞ্চিত থাকে।

Q8. নিউক্লিয়াসকে কোষের প্রাণকেন্দ্র বলা হয় কেন

Ans – নিউক্লিয়াস কোষের যাবতীয় কার্যাবলি যেমন , কোষের গঠনগত ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রণ , RNA ও রাইবােজোম গঠন , প্রােটিন সংশ্লেষণ , বংশগতির স্থানান্তর , বংশগতির বৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক ক্রোমােসােম ধারণ , কোষ বিভাজনে অংশ গ্রহণ সবই নিয়ন্ত্রণ করে । তাই জীবকোষের সার্বিক কার্য সম্পাদনে জড়িত বলে নিউক্লিয়াসকে কোষের প্রাণকেন্দ্র বলে ।

Q9. জনন মাতৃকোষ কি

Ans – জনন মাতৃকোষ হল এক প্রকার কোষ যা মিয়োসিস প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যামেটে আলাদা হয়। মিয়োসিসের মাধ্যমে, ডিপ্লোয়েড জনন মাতৃকোষ চারটি জিনগতভাবে পৃথক হ্যাপ্লয়েড গ্যামেটে বিভক্ত হয়।

দেহগঠনকারী কোষকে দেহকোষ এবং জনন কাজে অংশগ্রহণকারী কোষকে জনন কোষ বলে। পুরুষ জনন কোষকে শুক্রাণু এবং স্ত্রী জননকোষকে ডিম্বাণু বলে।

যে প্রক্রিয়ায় ডিপ্লয়েড সংখ্যক (2n) ক্রোমোজোম বিশিষ্ট মুখ্য জার্মিনাল কোষ বা প্রিমোর্ডিয়াল জনন কোষ বা জনন মাতৃকোষ থেকে হ্যাপ্লয়েড সংখ্যক (n) ক্রোমোজোম বিশিষ্ট জননকোষ (শুক্রাণু বা ডিম্বাণু) উৎপন্ন হয় তাকে গ্যামেটোজেনেসিস বলে।

Q10. পোষক কোষ কি

Ans – ভাইরাস যে জীবন্ত কোষের ভেতরে বাস করে, তাকে পোষক কোষ বলে। যে সকল কোষে উদ্ভিদের এক্সপ্লাট স্থাপন করা হয় সে সকল কোষকে পোষক কোষ বা Host কোষ বলে|

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।