রূপমূল কাকে বলে, স্বাধীন রূপমূল কাকে বলে, পরাধীন রূপমূল কাকে বলে, দুটি পরাধীন রূপমূল এর উদাহরণ দাও

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

রূপমূল কাকে বলে

আমরা জানি একাধিক ধ্বনির সংযোগে শব্দের উৎপত্তি। প্রতিটি শব্দ হয়ে অর্থবহ, ধ্বনি পরবর্তী বৃহত্তর একক শব্দ। ধ্বনির পরে এবং শব্দের মধ্যবর্তী এককই রূপমূল বা রূপিম।

ড. রামেশ্বর শ মহাশয়ের মন্তব্য-

“রূপি বা মূলরূপ (Morpheme) হল এক বা একাধিক স্বনিমের সমন্বয়ে গঠিত এমন অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম একক যা পৌনঃপুনিক এবং যার অংশবিশেষের সঙ্গে অন্য শব্দের ধ্বনিগত ও অর্থগত সাদৃশ্য নেই।”

ভাষাবিজ্ঞানী ব্লুমফিল্ড রূপিমের সংজ্ঞায় বললেন-

“A Linguistic form, which bears no partial phonetic-semantic resemblance to any other form is a simple or morpheme.”

ভাষাবিজ্ঞানী “Outlines of Linguistic Analysis” এ ব্লক এবং ট্রেগার এর মতে “Any form, whether free or bound which cannot be divided in to smaller meaningful parts is a Morpheme.”

রূপমূলের উদাহরণ

‘আমের’, ‘জামের’, ‘লোকটি’ শব্দ গুলিতে দুটি করে রুপিম আছে।

আমের = ‘আম’ এবং এর

লোকটি = ‘লোক’ এবং টি

জামের = জাম’ এবং এর

মানুষকে = ‘মানুষ’ এবং ‘কে’

আম, লোক, জাম, মানুষ এক একটি মূলরূপ, আবার ‘এর’, ‘টি’, ‘কে’, এগুলি রূপিম তবে এরা একা ব্যবহৃত হতে পারে না। কখনো কখনো একাধিক অক্ষরে গঠিত রূপমূল দেখা যায়। যেমন

হালকা, পলকা রূপিন গুলি গঠনগত দিক হল- হাল + কা হালকা, পল + কা =পলকা।

ক্ষুদ্রতম একক বা রূপমূল ভাষার মধ্যে বারবার ফিরে আসে যেমন- আমের, ফলের, জামের শব্দগুলিতে এর রূপিম বারবার ফিরে এসেছে, অনুরূপ ইংরাজিতে ও দেখা যায় যেমন- Kindly, Frankly, Friendly প্রভৃতি।

রূপিমের বৈশিষ্ট্য, রূপমূলের বৈশিষ্ট্য

ড. শ বলেছেন “কোনো ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে কলিম বা মূলরূপ হতে হলে তাকে চারটি শর্ত একই সঙ্গে পূরণ করতে হয়ে।”- এই চারটি শর্ত বা বৈশিষ্ঠ্য হল-

(ক) রুপিম এক বা একাধিক ধ্বনির মিলন জনিত অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম একক।

(খ) এক একটি ক্ষুদ্রতম এককের একটি অর্থ থাকা বাঞ্ছনীয়।

(গ) এই ক্ষুদ্র এককটি ভাষার মধ্যে বার বার ফিরে আসে। পুরাবৃত্তি রূপিমের একটি বিশেষ ধর্ম।

(ঘ) “সেই এককটির অংশ বিশেষের সঙ্গে অন্য এককের ধ্বনিগত ও অর্থগত মিল থাকবেনা।”

যে ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টি উপরোক্ত চারটি শর্ত পূরণ করবে তাকে রূপিন বলা যেতে পারে।

রূপিমের শ্রেণিভেদ, রূপমূল কয় প্রকার ও কি কি, রূপমূল কাকে বলে শ্রেণীবিভাগ করো

রূপিম বা রূপমূল তার ব্যবহারযোগ্যতার উপর নির্ভর করে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত হতে পারে। যথা-

  •  মুক্ত রূপমূল (Free morpheme) এবং
  • বদ্ধ রূপমূল (Round morpheme)

আসুন, এবার আমরা দেখি, কোন বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে এই শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে।

মুক্ত রূপমূল যে সমস্ত রূপমূলের স্বাধীন ও একক ব্যবহারযোগ্যতা আছে অর্থাৎ যে সমস্ত রূপমূল বা রূপিমকে অন্য কোনো রূপিমের সাথে যুক্ত না করেই বাক্যে ব্যবহার করা যায়, তেমন রূপিমকে মুক্ত রূপিম বা মুক্ত রূপমূল বলা হয়।

যেমন, একটি বাক্য ধরুন রাম বনে ফুল পায়ে। এখানে শব্দগুলিকে রূপতত্ত্ব অনুযায়ী ভাগ করলে পাই—রাম = রম্ + ঘঞ, বনে = বন্ + এ, ফুল, পাড়ে = পাড় + এ।

এবার দেখুন ‘রম’ বা ‘ঞ’ এককভাবে বাক্যে প্রয়োগ করার কোনো দৃষ্টান্ত আমাদের ভাষাবোধে নেই। কিন্তু আমরা ‘বন’ ‘ফুল’ ও ‘পাড়’ রূপিমগুলির স্বাধীন ও একক প্রয়োগে অভ্যস্ত। তাই শেষোক্ত এই তিনটিকেই মুক্ত রূপিম বা রূপমূল বলতে পারি।

‘অন্যদিকে ‘রম’ বা ‘ঞ’, এর মতই ‘বনে’র ‘এ’ রূপিমটি এবং ‘পাড়ের ‘এ’ রুপিমটিও এককভাবে প্রযুক্ত হবার পক্ষে অনুপযুক্ত। অথচ সেইসঙ্গে আরও একটি জিনিস লক্ষ্য করুন – দুটি ‘এ’-ই বিশেষ দুটি অর্থ বহন করছে, ‘বনে’র ক্ষেত্রে অধিকরণ বোঝাতে, ‘পাড়ে’র ক্ষেত্রে প্রথম পুরুষে ক্রিয়ার সাধারণ বর্তমান কাল বোঝাতে। এই জাতীয় রূপমূলকে বন্য রূপমূল বা রূপিম বলা যায়।

অর্থাৎ বদ্ধ রূপমূলের সংজ্ঞার্থ নির্ণয়ে আমরা বলতে পারি যে সকল রূপিমের অর্থময়তা আছে, অথচ স্বাধীন বা এককভাবে ব্যবহারযোগ্যতা নেই, অন্য কোনো রূপমূলের সঙ্গে যুক্ত হ’লে তবেই তার অর্থগত তাৎপর্য পরিস্ফুট হয়, তাকে বলা হয় বদ্ধ রূপমূল বা রূপি ।

বদ্ধ রূপমূল হিসাবে আমরা যাবতীয় অন্যপ্রত্যয় বা উপসর্গ (Prefix) বিকরণ ও মধ্যপ্রতায় মধ্যম ( Infix ) এবং অন্ত্যপ্রতায়, বিভক্তি পরমর্শ (Suffix) গুলিকে চিহ্নিত করতে পারি।

এছাড়া নামপদ ও ক্রিয়াপদেরও মূল যে ধাতু অংশ, সেগুলিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে বদ্ধরূপমূল হিসাবে দেখা দেয়। যেমন আমাদের পূর্বোক্ত দৃষ্টান্ত ‘রাম’ নামপদের ক্ষেত্রেই এই ঘটনা ঘটতে দেখছেন। ‘রাম’ ধাতুটি এককভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে একেবারেই অচল।

রূপমূল কাকে বলে উদাহরণসহ স্বাধীন ও পরাধীন রূপমূল এর পরিচয় দাও

এক বা একাধিক ধ্বনি দ্বারা গঠিত অর্থপূর্ণ ক্ষুদ্রতম একক হল রূপমূল (Morpheme)I রূপমূল দু-প্রকারের一

  • মুক্ত রূপমূল বা স্বাধীন রূপমূল এবং
  • বদ্ধ রূপমূল বা পরাধীন রূপমূল।

যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি অন্য ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টির সহযােগ ছাড়াই স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে, তাকে বলে মুক্ত বা স্বাধীন রূপমূল।

আর, যে অর্থপূর্ণ, ক্ষুদ্রতম ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টি সর্বদা অন্য ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাক্যে ব্যবহৃত হয়, কখনও স্বাধীনভাবে বাক্যে ব্যবহৃত হতে পারে না, তাকে বলে বন্ধ বা পরাধীন রূপ।

যেমন ‘বেড়ালগুলাে’-র ‘বেড়াল’ হল মুক্ত রূপমূল এবং ‘গুলো’ হল বদ্ধ রূপমূল। ধাতু, মৌলিক নাম শব্দ, অনুসর্গ হল মুক্ত রূপমূল।

আর, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, নির্দেশক ইত্যাদি হল বদ্ধ রূপমূল। তবে ধাতু (যেমন—তুই বাড়ি যা) বা মৌলিক নাম শব্দ (যেমনবাড়ি যাচ্ছি)।

কিন্তু শূন্যবিভক্তি অর্থাৎ শূন্য রূপ সহযােগে পদে পরিণত হয়, অর্থাৎ বাক্যে প্রবেশ করে।

[1] মুক্ত রূপমূল : যে রূপমূল মুক্তভাবে অন্য রূপমূলের সাহায্য ছাড়া এককভাবে ব্যবহৃত হয়, যার নিজস্ব অর্থ বিদ্যমান, যাকে আর ক্ষুদ্রতম অংশে ভাঙা যায় না, তাকে মুক্ত রূপমূল বলে। যেমন—মা, বাবা, হাতি, দেশ ইত্যাদি।

[2] বদ্ধ রূপমূল : যে রূপমূলের নিজস্ব অর্থ আছে এবং যাকে আর ক্ষুদ্রতম অংশে ভাঙা যায় না, কিন্তু যেগুলো স্বাধীনভাবে ভাষায় ব্যবহৃত হতে না পেরে মুক্ত রূপমুলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়, সেই ধরনের রূপমূলকেই বদ্ধ রূপমূল বলা হয়। যেমন পুলি, রা, এর, টি, টা ইত্যাদি।

আরও পড়ুনঃ উপসর্গ কাকে বলে

স্বাধীন রূপমূল কাকে বলে

রুপমূলের মধ্যে কিছু রুপমূল আছে যেগুলো মুক্ত বা স্বাধীন । এই রূপমুল গুলো একা একা ভাষায় ব্যাবহৃত হতে পারে । এই ধরনের রুপমূল গুলোকে স্বাধীন রুপমূল বলে । একটা স্বাধীন রুপমূল কখন ও নিজে একটা পদ হতে পারে । যেমন – মানুষ , বেড়াল , ফুল ইত্যাদি ।  আবার কোনো কোনো শব্দে জায়গা নেয় একাধিক স্বাধীন রুপমূল । সেখানে দুটো রুপমূলেরই স্বাধীন অস্তিত্ব থাকে ।

স্বাধীন রূপমূল এর উদাহরণ

সম্পূর্ন পদ = স্বাধীন রুপমূল + স্বধীন রুপমূল

রাজপথ = রাজ + পথ ।

জনশূন্য = জন + শূন্য ।

পরাধীন রূপমূল কাকে বলে

রুপমূলের মধ্যে আবার কিছুরুপমূল আছে যারা স্বধীন রুপমূলের সাথে যুক্ত অবস্থায় থাকে । এই রুপমূল গুলোকে সবন্ত্র ভাবে বা একা একা ভাষায় ব্যাবহার করা যায় না । এই রুপমূল গুলোকে পরাধীন রুপমূল বলে ।

দুটি পরাধীন রূপমূল এর উদাহরণ দাও

সম্পূর্ণ পদ = স্বধীন রুপমূল + পরাধীন রুপমূল

মানুষকে = মানুষ + কে

বেড়ালগুলো = বেড়াল + গুলো

ফুলওয়ালা = ফুল + ওয়ালা

দেশজ = দেশ + জ

উপরের উদহারন গুলোতে স্বধীন রুপমূল আগে বসেছে আর পরাধীন রুপমূল পড়ে বসেছে । এর বিপরীত অবস্থান ও এক্ষেত্রে হতে পারে । যেমন –

সম্পূর্ণ পদ = পরাধীন রুপমূল + স্বাধীন রুপমূল

অমানুষ                  অ                        মানুষ

বিদেশ                    বি                          দেশ

ক্যানবেরি রূপমূল কাকে বলে

যেসব পরাধীন রূপমূলের আভিধানিক অর্থ আপাতভাবে নেই এবং কোনাে ব্যাকরণসম্মত অর্থও থাকে না, অথচ তা একটি শব্দকে অন্য শব্দ থেকে পৃথক করে, তাকে বলে ক্র্যানবেরি রূপমূল। যেমন – আলাপ, প্রলাপ, বিলাপ, সংলাপ শব্দগুলির ‘লাপ’ এই পরাধীন রূপমূল। লাপ রূপমূলের আপাত অর্থ না থাকলেও এই তৎসম শব্দের ব্যুৎপত্তি হল, লিপ (কথা বলা) + ভাববাচ্য অর্থযুক্ত ‘ঘ’(> অ)। লাপ’এর অর্থ তাই কথা বলা।

ক্লিপিংস রূপমূল কাকে বলে

এই রূপতাত্ত্বিক প্রক্রিয়ায় একটি শব্দ আকৃতিতে ছােটো হয়ে যায়, অথচ তার ব্যাকরণগত ও অর্থগত কোনাে পরিবর্তন হয় না। যেমন-ছােটোকাকা > ছােটকা, বড়ােদাদা > বড়দা। ইংরেজি ভাষায় ক্লিপিংস ওয়র্ড বা সংক্ষেপিত পদের উদাহরণ বেশি পাওয়া যায়।

যেমন—এরােপ্লেন > প্লেন, মাইক্রোফোন > মাইক, টেলিফোন > ফোন।

জটিল রূপমূল কাকে বলে

মিশ্র রূপমূলে যেখানে দুটো মুক্ত রূপমূলের সমন্বিতরূপ দেখা যায়, সেখানে জটিল রূপমূলে দুইয়ের বেশি মুক্ত রূপমূলের সংযােগ লক্ষণীয়। বাংলা ভাষায় জটিল রূপমূলের বেশ কিছু উদাহরণ লক্ষ করা যায়।

যেমন—বাউলগান রচয়িতা, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, বহুবর্ণ-পাথর, দিবারাত্রিরকাব্য, ক্রিকেট খেলােয়াড় ইত্যাদি।

মিশ্র রূপমূল কাকে বলে

যখন দুটো মুক্ত রূপমূলের সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর রূপমূল গঠন করা হয়, তখন এই শ্রেণির রূপমূলকে মিশ্র রূপমূল রূপে চিহ্নিত করা হয়। দুটো মুক্ত রূপমূল সহযােগে যখন একটি মিশ্র রূপমূল গঠিত হয়, তখন মুক্ত রূপমূলের আগেকার অর্থের বদল হয়ে একটা নতুন অর্থ প্রকাশিত হয়।

যেমন—জাম + বাটি = জামবাটি, এখানে ‘জাম’ বিশেষ ধরনের ফল ও বাটি একধরনের পাত্র, এই দুই মুক্ত রূপিম জুড়ে যে নতুন ‘জামবাটি’ রূপিমটি তৈরি হল তার অর্থ একটি বিশেষ ধরনের বাটি বা পাত্র। আরও কয়েকটি মিশ্র রূপমূলের উদাহরণ হল গাং + চিল = গাংচিল, পদ্ম + লােচন = পদ্মলােচন, সংবাদ + পত্র = সংবাদপত্র, মহা + মারি = মহামারি ইত্যাদি।

শূন্য রূপমূল কাকে বলে

আমরা অনেক সময় কোনাে রূপমূলের বহুবচন নির্দেশ করতে ‘রা’, ‘গুলি’, ‘গুলাে” ইত্যাদি সহরূপমূলকে রূপমূলের সঙ্গে যুক্ত করে ব্যবহার করি। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে রূপমূলের বহুবচন নির্দেশে রূপমূলের সঙ্গে কোনো প্রকার সহরূপমূল সংযুক্ত হয় না, এই শ্রেণির সহরূপমূল শূন্য রূপমূল রূপে চিহ্নিত। এই ধরনের শূন্য রূপমূলের ব্যবহার ইংরেজি ভাষায় বেশি দেখতে পাওয়া যায়। যেমন—sheep (একবচন)—sheep (বহুবচন) বা put (বর্তমান কালের রূপ) put (অতীত কালের রূপ)। এক্ষেত্রে sheep বা put-এর সঙ্গে শূন্য রূপমূল যুক্ত করে বহুবচন বা অতীত কালের ক্রিয়ারূপ নির্দেশ করা হয়েছে। বাংলা ভাষায় অনেক ক্ষেত্রে পরিমাণসূচক বিশেষ্যের বহুবচন নির্দেশের ক্ষেত্রে শূন্য রূপমূলের প্রয়ােগ করা হয়। যেমন এক্ষেত্রে একই শব্দের দ্বিত্ব প্রয়ােগ শূন্য সহবুূপমূল-এর ব্যবহার দেখা যায় হাসাহাসি, বাড়িবাড়ি, ছােটো ছােটো ইত্যাদি অনন্তবাচক, অসীম দিকনির্দেশক রূপমূল।

এই শ্রেণির শূন্য রূপমূলগুলি আবার ধ্বনিপরিবর্তন করে বহুবচন নির্দেশও করে। যেমন一 mouse-mice, tooth-teeth, man-menu ইত্যাদি।

বাংলায় কর্তৃকারকের প্রথমা বিভক্তির কোনাে ধ্বনিগত প্রকাশ নেই। তবে সংস্কৃত প্রাচীন ব্যাকরণবিদগণ এসব ক্ষেত্রে একটি রূপের বা সহরূপমূলের অদৃশ্য উপস্থিতি অনুমান করে এর নাম দিয়েছিলেন শূন্য বিভক্তি। আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানীরা এই ধারণাটিকেই শূন্য রূপমূল বা Zero allomorph হিসেবে গ্রহণ করেছেন, যা রূপহীন রূপভেদ এবং তা উহ্য বা শূন্য রূপে অবস্থিত। বাংলা ভাষায় একটা উদাহরণ দিলে শূন্য রূপমূল বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠবে। যেমন一

ছেলেটি ভাত খাচ্ছে।

সােনা গান গাইছে।

এক্ষেত্রে ‘ভাতকে’ খাচ্ছে এবং ‘গানকে’ গাইছে বললে ব্যাকরণের দিক থেকে হয়তাে ঠিক হত। কিন্তু বাংলা ভাষার রীতি অনুসারে ‘ভাত’ এবং ‘গান’-এর সঙ্গে কোনাে বিভক্তি যােগ হয় না। তবু অদৃশ্য ‘কে’ বিভক্তিটি রয়ে গেছে। এই অদৃশ্য বিভক্তি বা রূপমূলটিকেই শূন্য রূপমূল হিসেবে ভাষাবিদরা চিহ্নিত করেন।

সমন্বয়ী রূপমূল বলতে কী বোঝো

যে পরাধীন, ব্যাকরণসম্মত রূপমূল শব্দকে পদে পরিণত করে অর্থাৎ শব্দের সমন্বয়সাধন করে তার স্থিরতা আনে, তাকেই বলা হয় সমন্বয়ী রূপমূল। বিভক্তি হল সমন্বয়ী রূপমূল। যেমন—’রমা মেয়েকে স্কুলে দিয়ে এল’। এই বাক্যে ‘মেয়ে’ শব্দের সঙ্গে ‘কে’ এবং ‘স্কুল’ শব্দের সঙ্গে ‘এ’ বিভক্তি যুক্ত হয়ে তারা যথাক্রমে ‘মেয়ে’ এবং ‘স্কুল’ শব্দদ্বয়ের সমন্বয়সাধন করল এবং তাদের পদে পরিণত করল। এই দুই পদের শেষে অন্য কোনাে ধ্বনি বা ধ্বনিগুচ্ছ কখনােই যুক্ত হতে পারে না। তাই সমন্বয়ী রূপমূল নতুন শব্দ সৃষ্টি করতে পারে না। তবে তা পদ গঠনে সম্পূর্ণতা আনে।

নিম্পাদিত রূপমূল কাকে বলে

যে পরাধীন, ব্যাকরণসম্মত রূপমূল ধাতু বা নাম-শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দ নিষ্পন্ন করে, তাকে বলে নিম্পাদিত রূপমূল। এই রূপমূলের সাহায্যে কখনও শব্দের কার্যগত রূপের পরিবর্তন ঘটে, কখনও কেবলমাত্র অর্থেরই পরিবর্তন হয়। উপসর্গ, প্রত্যয় হয় নিম্পাদিত রূপমূল। যেমন- নি (উপসর্গ) + খোঁজ (বিশেষ্য) = নিখোঁজ (বিশেষণ); পাকা (বিশেষণ)+ মি (প্রত্যয়) = পাকামি (বিশেষ্য); অ (উপসর্গ) + চেনা (বিশেষণ) =অচেনা (বিশেষণ);কলম (বিশেষ্য) + দানি (প্রত্যয়) = কলমদানি (বিশেষ্য)।

আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | রূপমূল হল

Q1. রূপমূল হল কি, রূপমূল কী

Ans – রূপমূল (ইংরেজি Morpheme মর্ফিম) বলতে কোনও উক্তি, বাক্য বা শব্দকে বারংবার খণ্ডায়িত করে প্রাপ্ত ভাষার ক্ষুদ্রতম স্বতন্ত্র অর্থবহ বিমূর্ত একটি খণ্ড বা একককে বোঝায়, যাকে আরও খণ্ডিত করা হলে সেই খণ্ডগুলি আর কোনও অর্থ বহন করে না, বরং অর্থবিহীন ধ্বনি স্তরের কোনও খণ্ড (অর্থাৎ ধ্বনি ও ধ্বনিদল) দিয়ে সেগুলিকে ব্যাখ্যা করতে হয়। এ অর্থে রূপমূল হল ধ্বনিমূলের উপরে অবস্থিত ভাষিক স্তরের একটি ধারণা। রূপমূলকে ভাষাবিজ্ঞানের যে শাখায় অধ্যয়ন করা হয়, তাকে রূপমূলতত্ত্ব বলে।

Q2. প্রত্যয় কোন জাতীয় রূপমূল

Ans – প্রত্যয় হল পরাধীন ব্যাকরণসম্মত রূপমূল।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।