মানব কল্যাণ প্রবন্ধ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

মানব কল্যাণ প্রবন্ধ মূলভাব, মানব কল্যাণ প্রবন্ধ মূলভাব, মানব কল্যাণ প্রবন্ধ আবুল ফজল

“মানব – কল্যাণ”প্রবন্ধটির নামকরণ করা হয়েছে মূলভাব তথা বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে। মানবকল্যাণ বলতে সাধারণভাবে আমরা অসহায় মানুষকে অর্থ বা দ্রব্য দ্বারা সাহায্য করাকে বুঝি। দান-খয়রাত বা কাঙালি ভোজের ব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে মানবকল্যাণ নয়।

কারণ এসব করে মানুষের মর্যাদা বৃদ্ধি হয় না, তার মানবিক বিকাশও হয় না। যে কারণে ইসলামের শ্রেষ্ঠ নবি বলেছেন, ওপরের হাত সবসময় নিচের হাত থেকে শ্রেষ্ঠ । এখানে মানুষের মর্যাদাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লেখকের মতে, মানবকল্যাণ হলো মানুষের মর্যাদাবোধ বৃদ্ধি এবং মানুষের মানবিক চেতনার বিকাশ সাধন। আর এটি কার্যকর করার দায়িত্ব পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের । লেখকের মতে বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস , লালন থেকে আধুনিককালের রবীন্দ্রনাথ – নজরুল সবাই মানবিক চেতনার উদাত্ত কণ্ঠস্বর।

আমরা যে আজ এক চরম স্ববিরোধিতার যুগে বাস করছি লেখক তা ব্যাখ্যা করেছেন। একদিকে জ্ঞান বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি, যা মানুষের সাধনা ও প্রতিভার ফল , অন্যদিকে মানবতার চরম লাঞ্ছনা ও নিষ্ঠুরতা। অথচ মানবকল্যাণ ব্যবহারিক জীবনের সঙ্গেই সম্পর্কিত,পারলৌকিক জীবনের সঙ্গে তাই জাগতিক জীবনের ভালো-মন্দের নিরিখেই নয়। মানবকল্যাণকে বিচার করতে হবে। অথচ পৃথিবীজুড়ে আজ দেখা যাচ্ছে দুস্থ,অবহেলিত, বাস্তুহারা মানুষের মিছিল। এসব মানুষের জন্য কাজ করছে রেডক্রস, লায়নস্ ও রোটারিয়ানরা । লেখকের মতে মানুষের মধ্যে রয়েছে এক অসীম ও অনন্ত সম্ভাবনার বীজ, তার স্ফুরণ – স্ফুটনের ক্ষেত্র রচনা করাই শ্রেষ্ঠ মানবকল্যাণ।

সব ধর্ম আর ধর্মপ্রবর্তকই বারবার নির্দেশ দিয়েছেন মানুষের ভালো করো, মানুষের কল্যাণ করো,মানুষকে সুখ-শান্তি দান করো। বস্তুত কোনো প্রকার শক্তি দিয়ে মানবকল্যাণ করা যায় না। শক্তির বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় মানুষের জীবন থেকে সুখ, শান্তি, নিরাপত্তা ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছে। এ এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি অবলম্বন করতে হবে।যা হবে বিজ্ঞানসম্মত মানবিক ও সুবুধি-নিয়ন্ত্রিত তাহলে মানব কল্যাণ হয়ে উঠবে মান-মর্যাদা সহায়ক ।এসব বিষয় বিবেচনায় প্রবন্ধের নামকরণ মানবকল্যাণ যথার্থ হয়েছে।

মানব কল্যাণ প্রবন্ধের MCQ, মানব কল্যাণ প্রবন্ধ MCQ pdf, মানব কল্যাণ প্রবন্ধের MCQ, মানব কল্যাণ প্রবন্ধের বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

মানবধর্ম কবিতার মূল বিষয়বস্তু কী?

ক. সমাজের কল্যাণসাধন করা

খ. সমাজে জাতিভেদহীন মনুষ্যধর্ম প্রতিষ্ঠা করা

গ. মানুষের ধর্মভেদ দেখানো

ঘ. মানুষের সম্প্রদায়গত বিভাজন দেখানো

সঠিক উত্তর: – খ. সমাজে জাতিভেদহীন মনুষ্যধর্ম প্রতিষ্ঠা করা

মানবধর্ম কবিতায় ‘গঙ্গাজল’ কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?

ক. একটি গঙ্গাকে বিশেষ অর্থে দেখানো হয়েছে

খ. গঙ্গা হতে উৎসারিত জলের কথা বলা হয়েছে

গ. গঙ্গাকে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে

ঘ. গঙ্গাকে আশীর্বাদের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে

সঠিক উত্তর: – গ. গঙ্গাকে পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে

‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’ এখানে ‘লালন’ বলতে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?

ক. বাউল লালনকে

খ. মানুষ লালনকে

গ. কবি লালনকে

ঘ. গায়ক লালনকে

সঠিক উত্তর: – খ. মানুষ লালনকে

‘মানবধর্ম’ কবিতায় কবি লালন শাহ নিজেকে প্রশ্ন করার মাধ্যমে যে বিষয়টি প্রকাশ করেছেন—

i. মানবধর্ম

ii. মিথ্যা গর্ব থেকে বিরত থাকা

iii. ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক. i ও ii খ. i ও iii

গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii

সঠিক উত্তর: – ঘ. i, ii ও iii

মানবধর্ম কবিতাটির চরণ সংখ্যা কত?

ক. দশটি খ. বারোটি

গ. চৌদ্দটি ঘ. পনেরোটি

সঠিক উত্তর: – গ. চৌদ্দটি

‘সবলোকে কয় লালন…..’ এটি কী?

ক. গান খ. কবিতা

গ. ছড়া ঘ. পদ্য

সঠিক উত্তর: – খ. কবিতা

উদ্দীপকের যুবকদের চিন্তায় ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের কোন দিকটি উপস্থাপিত হয়েছে?

ক) শিক্ষার প্রসার

খ) যুক্তিবুদ্ধির চর্চা

গ) প্রকৃত মানবকল্যাণ

ঘ) গোঁড়ামিমুক্ত মানসিকতা

সঠিক উত্তর: – গ) প্রকৃত মানবকল্যাণ

উদ্দীপকের লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার ফলে ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের যে দিকগুলো প্রতিষ্ঠা পাবে—

i. মুক্তবুদ্ধির চর্চা হবে

ii. শিক্ষার প্রসার

iii. আত্মমর্যাদাবোধ চেতনা

নিচের কোনটি সঠিক?

ক) i ও ii খ) i ও iii গ) ii ও iii ঘ) i, ii ও iii

সঠিক উত্তর: – ঘ) i, ii ও iii

উদ্দীপকের নাজমুলের চরিত্রে ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্যটি ফুটে উঠেছে?

ক) মানবিক দায়িত্ববোধ খ) সেবাকর্ম গ) মানবপ্রেম ঘ) দেশপ্রেম

সঠিক উত্তর: – ক) মানবিক দায়িত্ববোধ

দান করার মূল উদ্দেশ্য কী হতে হবে?

ক) মানুষকে স্বাবলম্বী করা খ) লোক-দেখানো গ) দরিদ্রতা দূর করা ঘ) শিক্ষার প্রসার করা

সঠিক উত্তর: – ক) মানুষকে স্বাবলম্বী করা

মানব কল্যাণ প্রবন্ধের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন

কোন কথাটি মামুলি অর্থে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ?

উত্তর :’ মানব – কল্যাণ ‘ কথাটি।

একমুষ্টি ভিক্ষা দেওয়াকে আমরা সাধারণভাবে কী মনে করে থাকি ?

উত্তর : মানবকল্যাণ ।

মানুষ যে হাত পেতে গ্রহণ করে, সেটি কোন হাত ?

উত্তর :নিচের হাত ।

অনুগ্রহকারী আর অনুগৃহীতের মধ্যে কোন দিক থেকে তফাত ?

উত্তর : অনুগ্রহকারী আর অনুগৃহীতের মধ্যে মনুষ্যত্ব ও মানব মর্যাদার দিক থেকে তফাত ।

জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনার প্রতীক কী ?

উত্তর :রাষ্ট্র জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনার প্রতীক ।

রাষ্ট্রের বৃহত্তর দায়িত্ব কী ?

উত্তর : রাষ্ট্রের বৃহত্তর দায়িত্ব জাতিকে আত্মমর্যদাসম্পন্ন করে তোলা ।

মানবকল্যাণের উৎস কিসের মধ্যে নিহিত ?

উত্তর :মানবকল্যাণের উৎস মানুষের মর্যাদাবোধ আর মানবিক চেতনা বিকাশের মধ্যে নিহিত ।

‘মানব – কল্যাণ’ প্রবন্ধে একদিন এক ব্যক্তি কার কাছে ভিক্ষা চাইতে এসেছিল ?

উত্তর : ইসলামের নবির কাছে এক ব্যক্তি ভিক্ষা চাইতে এসেছিল ।

‘মানব – কল্যাণ’ প্রবন্ধে উল্লিখিত ইসলামের নবি ভিক্ষুককে কী কিনে দিয়েছিলেন?

উত্তর : ইসলামের নবি ভিক্ষুককে একখানা কুড়াল কিনে দিয়েছিলেন ।

মানবকল্যাণের প্রাথমিক সোপান কী ?

উত্তর : মানবিক বৃত্তি বিকাশের যথাযথ ক্ষেত্র রচনা করা ।

মানবকল্যাণের প্রাথমিক সোপান রচনার দায়িত্ব কার?

উত্তর : মানবকল্যাণের প্রাথমিক সোপান রচনার দায়িত্ব সমাজ ও রাষ্ট্রের ।

মানুষের ভবিষ্যৎ জীবনের সূচনা হয় কোথা থেকে ?

উত্তর : মানুষের ভবিষ্যৎ জীবনের সূচনা হয় পরিবার থেকে ।

প্রত্যেক মানুষ কিসের সঙ্গে সম্পর্কিত ?

উত্তর : প্রত্যেক মানুষ সমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত ।

সামগ্রিকভাবে সমাজের ভালো – মন্দের সঙ্গে কোনটি সংযুক্ত ?

উত্তর : মানবকল্যাণ সমাজের ভালো – মন্দের সঙ্গে সংযুক্ত । নাথ, নজরুল প্রমুখ মানবিক চেতনার উদাত্ত কণ্ঠস্বর ।

মানব কল্যাণ প্রবন্ধ সৃজনশীল প্রশ্ন, মানব কল্যাণ প্রবন্ধ সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : জরিনা কিছুদিন আগেও রাস্তায় ভিক্ষা করে সংসার চালাত। দুই বছর আগে একটি এনজিও’র মাধ্যমে সেলাই প্রশিক্ষণ নিয়ে সে কাজ শুরু করে। এখন তার দোকানে অনেক বেচাকেনা। সেলাই প্রশিক্ষণ তার ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে। ছেলেমেয়েরাও এখন স্কুলে পড়ে। বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে রহিমার মতো অন্যরাও আত্মমর্যাদা নিয়ে সমাজে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারত।

‘রেডক্রস’ কোন ধরনের সংস্থা?

‘রেডক্রস’ সেবাধর্মী সংস্থা।

মানব-কল্যাণ স্বয়ম্ভূ, বিচ্ছিন্ন, সম্পর্করহিত হতে পারে না কেন? ব্যাখ্যা করো।

প্রত্যেক মানুষ সমাজের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত বলে মানব-কল্যাণ স্বয়ম্ভূ, বিচ্ছিন্ন, সম্পর্ক-রহিত হতে পারে না। প্রত্যেক মানুষ সমাজের সাথে সম্পর্কিত। ফলে মানুষের কল্যাণও সামগ্রিকভাবে সমাজের ভালো-মন্দের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু সমাজে মানব-কল্যাণ কথাটি সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহৃত হয়। মূলত উপলব্ধিহীনতার কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। সমাজের বৃহত্তর .. জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কখনো মানব-কল্যাণ সাধিত হতে পারে না। প্রকৃত মানব-কল্যাণ তখনই সাধিত হবে যখন সমাজের সকলের কল্যাণ একসাথে হবে। আর এ কারণেই মানব-কল্যাণ স্বয়ম্ভূ, বিচ্ছিন্ন, সম্পর্ক-রহিত হতে পারে না।

সৃজনশীল প্রশ্ন 2 : ভেলরি টেইলর, বাংলাদেশের অন্য রকম বন্ধু ৭২ বছর বয়সী ভেলরি কর্মজীবনে লাভ করেছেন অনেক স্বীকৃতিসহ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি। স্বেচ্ছাসেবা এবং সম্পূর্ণ আপন প্রচেষ্টায় সিআরপি প্রতিষ্ঠা করে তিনি বিশ্বে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে পঙ্গুত্বের শিকার হাজার হাজার মানুষকে স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরিয়ে আনতে তার গড়া সিআরপি নজিরবিহীন ভূমিকা পালন করছে। চিরকুমারী ভেলরির জন্ম ব্রিটেনে হলেও তার সব কিছুই যেন বাংলাদেশ। মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে জীবনের বাকি সময়টা থেকে যান এই বাংলাদেশেই। প্রতিবন্ধী, পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে প্রতিষ্ঠা করেছেন হাসপাতাল, পুনর্বাসন কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

সত্যিকার মানবকল্যাণ কিসের ফসল?

উত্তরঃ সত্যিকার মানবকল্যাণ মহৎ চিন্তা-ভাবনার ফসল।

আমরা কোন উত্তরাধিকারকে জীবনে প্রয়ােগ করতে পারিনি? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ আমরা মহৎ প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মানবিক চিন্তা ও আদর্শের উত্তরাধিকারকে জীবনে প্রয়ােগ করতে পারিনি। মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানবকল্যাণ বলতে আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারিক জীবনের কল্যাণকে বুঝিয়েছেন।

মনুষ্যত্ববােধে আঘাত লাগে, মানব-মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কোনাে কাজকে তিনি মানবকল্যাণ মনে করেননি। কাউকে দান করা বা এক মুষ্টি ভিক্ষা দেওয়াকেও তিনি মানবকল্যাণ হিসেবে ধরেননি। কারণ তাতে একজনকে করুণা করা হয়, প্রকৃত মানবকল্যাণ সাধিত হয় না।

এজন্য তিনি মানুষকে আত্মস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে এগিয়ে আসতে বলেছেন। মহৎ প্রতিভাবান ব্যক্তিরা আত্মস্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে মানবতার আদর্শ নিয়ে কাজ করেছেন। তাদের মানবিক চিন্তা ও আদর্শ সত্যিকারের মানবকল্যাণ সাধনের জন্য যথার্থ । অথচ আমরা তা ধারণ বা অনুসরণ করতে পারিনি।

সারকথা : মানুষের মহৎ চিন্তা-ভাবনার মূল কথা হচ্ছে মানবতা, যা মহৎ প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মধ্যে ছিল। অথচ আমরা তা জীবনে প্রয়ােগ করতে পারিনি।

উদ্দীপকটি মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের সঙ্গে কোন দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ উদ্দীপকটি ‘মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের”সত্যিকারের মানবসেবার আলােচনার দিক থেকে সাদৃশ্যপূর্ণ। আত্মস্বার্থে মগ্ন না থেকে নিজেকে পরােপকারে উৎসর্গ করার মধ্যেই জীবনের সার্থকতা নির্ভর করে। সংকীর্ণ স্বার্থে নিজেকে আবদ্ধ রাখলে জীবন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।

উদ্দীপকে ভেলরি টেইলরের বাংলাদেশে সিআরপি প্রতিষ্ঠা করে মানবসেবায় আত্মনিয়ােগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি এদেশে প্রতিবন্ধী ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে হাসপাতাল, পুনর্বাসন কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন।

বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে পঙ্গুত্বের শিকার হাজার হাজার মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে তার গড়া সিআরপি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভেলরি টেইলরের মানবসেবার এই মহৎ উদ্যোগ ও কর্মকাণ্ড মানব-কল্যাণ প্রবন্ধের সত্যিকারের মানবসেবার বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

এ প্রবন্ধে লেখক মানুষকে স্বার্থ ত্যাগ করে মানুষের বৃহত্তর কল্যাণে এগিয়ে আসার আহ্বান করেছেন। এর সঙ্গে উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের সেবাধর্মী কর্মকাণ্ডের মিল রয়েছে।

সারকথা : আত্মস্বার্থের কথা ভুলে গিয়ে মানবসেবায় আত্মনিয়ােগের যে কথা লেখক এ প্রবন্ধে বলেছেন তার সঙ্গে উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের মানবসেবার মিল রয়েছে।

হুবুহু সৃজনশীল প্রশ্ন খবুই কম কমন পড়তে দেখা যায় । তাই এই পোষ্ট মানব কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর ২০২২ এর পাশাপাশি মূল বই থেকে এ সম্পর্কিত আরও বিষয়বলী গুলো ও ধারণা রাখুন। এতে করে যেভাবেই প্রশ্ন আসুক না কেনো আপনি যাতে উত্তর করতে পারেন। চলুন বাকী অংশ পড়ে নেওয়া যাক।

উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের কর্মকাণ্ড এবং মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশা একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর।

উত্তরঃ “উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের কর্মকাণ্ড এবং মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশা একসূত্রে গাঁথা।”- মন্তব্যটি যথার্থ ।

যুগে যুগে মহৎ ব্যক্তিরা নিঃস্বার্থভাবে পরােপকার করে পৃথিবীতে মানবসেবার অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। আমরা যদি তাদেরকে অনুসরণ করে মানবসেবায় আত্মনিয়ােগ করি, তাহলে জগতে যথার্থ মানবকল্যাণ সাধিত হবে।

উদ্দীপকে ৭২ বছর বয়সী ভেলরি টেইলরের বাংলাদেশে মানবসেবায় আত্মনিয়ােগ করার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি বাংলাদেশে সিআরপি স্থাপন করে মানবসেবায় এগিয়ে এসে বিশ্বে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

মানবকল্যাণে আত্মনিয়ােগের ক্ষেত্রে তার মহৎ কর্মপ্রচেষ্টার বিষয়টি মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখকের প্রত্যাশার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ প্রবন্ধে লেখক সবাইকে মানবসেবায় এগিয়ে আসতে বলেছেন।

ধর্ম-বর্ণ-জাতির দোহাই দিয়ে বিভক্তিকরণ নীতি গ্রহণ না করে তিনি মানুষকে মানবিক হয়ে মানবসেবায় আত্মনিয়ােগ করতে বলেছেন। এই চেতনা উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানুষকে নিঃস্বার্থভাবে মানবসেবায় এগিয়ে আসতে বলেছেন।

উদ্দীপকের ভেলরি টেইলরের কর্মকাণ্ডে তার প্রতিফলন ঘটেছে। প্রতিবন্ধী ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষের কল্যাণে তিনি এদেশে হাসপাতাল, পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন করেছেন। মানবকল্যাণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায় যে, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সারকথা : মানবকল্যাণ মানুষের শুভ ও কল্যাণকর চিন্তার প্রতিফলন, এটি জাগতিক মানবধর্ম। উদ্দীপকের ভেলরি টেইলর এবং মানব কল্যাণ’ প্রবন্ধের লেখক উভয়ই মানবের কল্যাণ প্রত্যাশা করেছেন। এ দিক থেকে তাদের প্রত্যাশা একসূত্রে গাঁথা।

সৃজনশীল প্রশ্ন 3 : সত্যিকারের মানবকল্যাণের বৈশিষ্ট্য অনুধাবন-এর আলােকে প্রণীত। আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর, আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মােরে করেছে পর।

চলতি কথায় মানবকল্যাণ কী অর্থে ব্যবহৃত হয়?

উত্তরঃ চলতি কথায় মানবকল্যাণ সস্তা ও মামুলি অর্থে ব্যবহৃত হয়।

“সত্যিকার ‘মানব-কল্যাণ’ মহৎ চিন্তা-ভাবনারই ফসল।”- ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ “সত্যিকার ‘মানব-কল্যাণ’ মহৎ চিন্তা-ভাবনারই ফসল।”- কারণ মানুষের মহৎ ও কল্যাণকর চিন্তা-ভাবনার মধ্যে মানবকল্যাণের মূল কথা নিহিত।

মানব-কল্যাণ প্রবন্ধে লেখক সত্যিকার অর্থে মানবকল্যাণ কী এবং এটি কীভাবে সাধিত হয় তা ব্যাখ্যা করেছেন। মনুষ্যত্ববােধে আঘাত লাগে এবং মানব-মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় এমন কোনাে কাজকে তিনি মানবকল্যাণ মনে করেননি। তিনি মানুষের প্রতি যথাযথ মর্যাদার মাধ্যমে হিত সাধন করাকে মানবকল্যাণ মনে করেছেন।

তিনি মানুষকে বিভক্তিকরণের মনােভাবে বিশ্বাসী নন। তিনি মুক্ত বুদ্ধির মাধ্যমে মানবিক কাজ করাকে মানবকল্যাণ মনে করেন। এসব বিবেচনা করে তাই বলা হয়েছে যে, “সত্যিকারের মানব-কল্যাণ’ মহৎ চিন্তা-ভাবনারই ফসল।”

সারকথা : মানবতাবােধ না থাকলে মানবকল্যাণ করা যায় না। মানবতাবােধই হচ্ছে মানুষের মহৎ চিন্তা-ভাবনার মূল কথা।

উদ্দীপকটি মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধের সঙ্গে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ উদ্দীপকটি মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে আলােচিত সত্যিকারের মানবকল্যাণের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। মানুষকে ভালােবাসার মধ্যে মানবজীবনের সার্থকতা প্রকাশ পায়। মানবজীবনের বাইরে মানুষের করণীয় অন্য কিছুই নেই।

তাই মানুষকে তার জীবনের সময়টুকুর মধ্যে ভালাে কাজ করতে হয়। কারণ মানুষের জীবনের সঙ্গে জীবনের যােগ না হলে জীবন সার্থক হয় না। উদ্দীপকের কবিতাংশে নিঃস্বার্থ পরােপকারী মনােভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নিজের ক্ষতি সত্ত্বেও কবি অন্যের প্রতি গভীর সহানুভূতিশীল।

তাঁকে যে আঘাত দেয়, তার জন্য তিনি সমব্যথী হন। যে তাঁকে পর করে তিনি তাকে আপন করার জন্য ব্যাকুল হয়ে ঘুরে বেড়ান। এ বিষয়গুলাে কবির মহৎ চিন্তা ও মানবতাবােধেরই প্রতিফলন। এসব বিষয় ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে প্রতিফলিত সত্যিকারের মানবকল্যাণের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

লেখক এ প্রবন্ধে মানুষের মহৎ চিন্তা-ভাবনা এবং মানুষের আত্মমর্যাদা ক্ষুন্ন না করে মানুষের কল্যাণ সাধন করার কথা বলেছেন। তাঁর মতে মানবকল্যাণ সর্বজনীন, মহৎ কর্ম। তাই বলা যায়, প্রবন্ধে আলােচিত সত্যিকার মানবকল্যাণের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে উদ্দীপকের ভাব সাদৃশ্যপূর্ণ।

সারকথা : সত্যিকারের মানবকল্যাণ নিঃস্বার্থ পরােপকারের মধ্যে নিহিত থাকে। উদ্দীপক ও ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে এ বিষয়টি অভিন্নভাবে অ প্রতিফলিত হয়েছে।

আপনি এই পোষ্টে মানব কল্যাণ প্রবন্ধের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে পড়তেছেন। এটি পূর্ণাঙ্গ পড়া শেষে আপনি এ সম্পর্কিত আরও পাঠ্য আমাদের সাইটে খুঁজে পাবেন। অথবা সার্চ বক্সে অনুসন্ধান করে ও আপনাদের সিলেবাস অবলম্বনে পাঠ্য আর্টিকেল খুঁজে পেতে পারেন। চলুন বাকী অংশ পড়ে নেওয়া যাক।

উদ্দীপকের মূলভাব ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে আলােচিত প্রকৃত মানবকল্যাণকেই নির্দেশ করে।” মন্তব্যটির যথার্থতা ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ “উদ্দীপকের মূলভাব ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে আলােচিত প্রকৃত মানবকল্যাণকেই নির্দেশ করে।”- মন্তব্যটি যথার্থ। • মানুষের কল্যাণ সাধনের মধ্যে মানবজীবনের সার্থকতা নিহিত।

অন্যের কল্যাণের কথা বিবেচনা না করে নিজের স্বার্থকেই যদি বড় মনে করা হয় তাহলে সেই জীবনের প্রকৃত অর্থে কোনাে গুরুত্ব নেই। উদ্দীপকের কবিতাংশে কবির পরােপকারী মনােভাব প্রতিফলিত হয়েছে। এ বিষয়টি মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে প্রতিফলিত সত্যিকারের মানবকল্যাণ বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। উ

ভয় ক্ষেত্রেই নিঃস্বার্থ পরােপকারের দিকটি ফুটে উঠেছে। আত্মকেন্দ্রিকতা বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক স্বার্থচিন্তা মানুষকে সমাজের অন্যান্য মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ফলে তার পক্ষে আর মহৎ কাজ করা সম্ভব হয় না। কাজেই সামাজিক জীব হিসেবে মানুষকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে হয়।

একে অন্যের সুখ-দুঃখের ভাগী হতে হয়। মানব-কল্যাণ প্রবন্ধে লেখক এই ঐক্যের দিকটির ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁর মতে বিভক্তিকরণের মনােভাব নিয়ে কারও কল্যাণ করা যায় না। মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানবকল্যাণ অর্থে আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারিক জীবনের কল্যাণকে বুঝিয়েছেন।

উদ্দীপকের কবিতাংশের কবির ঘর যে ভাঙে তিনি তার ঘর বেঁধে দেন। এই ঘর বেঁধে দেওয়ার মধ্যে ঐ কবির পরােপকারী মনােভাবের পরিচয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। মানবকল্যাণ প্রবন্ধ এবং উদ্দীপক উভয় ক্ষেত্রেই মানবকল্যাণের বিষয়টি এক ও অভিন্ন হয়ে ধরা পড়েছে।

এ কারণেই বলা হয়েছে, উদ্দীপকের মূলভাব ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে আলােচিত প্রকৃত মানবকল্যাণকেই নির্দেশ করে। | এম সারকথা : মানবকল্যাণ মানুষের শুভ ও কল্যাণকর চিন্তার প্রতিফলন; এটি জাগতিক মানবধর্ম। উদ্দীপক ও ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে এ বিষয়টি অভিন্নভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

মানব কল্যাণ প্রবন্ধের অনুধাবন প্রশ্ন

‘রাষ্ট্র জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনারই প্রতীক’ – উক্তিটি দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর : আলোচ্য উক্তিটি দ্বারা জাতীয় জীবন ও জাতীয় চেতনার সাথে রাষ্ট্রের অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ককে বোঝানো হয়েছে। একটি জাতি যেভাবে জীবনযাপন করে, যে চেতনা ধারণ করে বেড়ে ওঠে রাষ্ট্রও সে অনুযায়ী পরিচিতি লাভ করে। রাষ্ট্র যদি তার নাগরিকদের আত্মমর্যাদাসম্পন্ন হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য না করে, তবে রাষ্ট্রও তার প্রাপ্য সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়। অর্থাৎ যে রাষ্ট্র হাত পাতা আর চাটুকারিতাকে প্রশ্রয় দেয়, সে রাষ্ট্র কিছুতেই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক গড়ে তুলতে পারে না। কাজেই রাষ্ট্রের উচিত মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করা এবং মানবিক বৃত্তি বিকাশের পথে যথাযথ ক্ষেত্র বা পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা জাতীয় জীবন ও জাতীয় চেতনার সাথে রাষ্ট্রের এমন অঙ্গাঙ্গি সম্পর্ককেই বোঝানো হয়েছে।

মানব-কল্যাণ কথাটা আমরা সস্তা ও মামুলি বানিয়ে ফেলেছি কীভাবে?

উত্তর : মানব-কল্যাণের প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি না করার ফলে আমরা একে সস্তা ও মামুলি বানিয়ে ফেলেছি। বর্তমান সমাজে মানুষ মানব কল্যাণ কথাটিকে ক্ষুদ্রার্থে ব্যবহার করে থাকে। একমুষ্টি ভিক্ষা দেওয়াকেও তারা মানব কল্যাণ বলে মনে করে থাকে। অথচ এতে মানুষের প্রকৃত কল্যাণ সাধিত হয় না, বরং মানব-মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করা হয়। মূলত মানব কল্যাণের প্রকৃত তাৎপর্য উপলব্ধি না করার কারণেই আমরা একে সস্তা ও মামুলি বানিয়ে ফেলেছি।

কীভাবে বিজ্ঞানের অভাবনীয় আবিষ্কারকে ধ্বংসের পরিবর্তে সৃজনশীল মানবিক কর্মে নিয়োগ করা যায়?

উত্তর : মুক্ত বিচারবুদ্ধির সাহায্যে বিজ্ঞানের অভাবনীয় আবিষ্কারকে ধ্বংসের পরিবর্তে সৃজনশীল মানবিক কর্মে নিয়োগ করা যায়। প্রাবন্ধিক আবুল ফজল তাঁর প্রবন্ধে মানব-কল্যাণ কথাটিকে মানব-মর্যাদার সহায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠার প্রয়াস দেখিয়েছেন। তিনি মনে করেন মানুষের মর্যাদাবৃদ্ধি মানবকল্যাণের অন্যতম শর্ত। আর এ ধরনের মানব কল্যাণ বাস্তবায়িত করতে হলে বিজ্ঞানের অভাবনীয় আবিষ্কারকে ধ্বংসের পরিবর্তে সৃজনশীল মানবিক কর্মে নিয়োজিত করতে হবে। আর মুক্ত বিচারবুদ্ধির সাহায্যেই কেবল তা সম্ভব।

মানব কল্যাণ মানব-অপমানে পরিণত হয়েছে কীভাবে?

উত্তর : মানুষের স্বাভাবিক অধিকার আর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ছাড়া মানব কল্যাণ মানব-অপমানে পরিণত হয়। লেখক বর্তমান পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দেখতে পান দুস্থ, অবহেলিত, বাস্তুহারা, স্বদেশ-বিতাড়িত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। আবার রিলিফ, রিহেবিলিটেশন প্রভৃতি শব্দের ব্যবহারও বাড়ছে। তিনি আরও প্রত্যক্ষ করেন রেডক্রসের মতো সেবাধর্মী সংস্থার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলোকে তিনি একধরনের মানব-অপমান বলে মনে করেন। কারণ এসবের মাধ্যমে কখনোই প্রকৃত মানব-কল্যাণ সাধিত হয় না। এগুলো মানুষকে ছোটো করে রাখার কৌশল ছাড়া কিছু নয়। সুতরাং, মানুষের স্বাভাবিক অধিকার আর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ছাড়া মানব কল্যাণ মানব-অপমানে পরিণত হয়।

যে রাষ্ট্র হাত পাতা বা চাটুকারিতাকে প্রশ্রয় দেয়, সে রাষ্ট্রের পরিণতি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : যে রাষ্ট্র হাত পাতা বা চাটুকারিতাকে প্রশ্রয় দেয়, সে রাষ্ট্র কখনোই আত্মমর্যাদাসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টি করতে পারে না। হাত পাতা বা চাটুকারিতা মানবচরিত্রের দুটি নেতিবাচক দিক। যে মানুষ বা জাতি এই দুটি কাজকে প্রশ্রয় দেয়, তারা যেন প্রকারান্তরে নিজের বা ঐ জাতির মর্যাদাকেই ভূলুণ্ঠিত করে। ফলে ঐ ব্যক্তি যেমন আত্মমর্যাদাসম্পন্ন হয়ে উঠতে ব্যর্থ হয়, তেমনি ঐ জাতিও সুনাগরিক সৃষ্টিতে ব্যর্থ হয়। কারণ রাষ্ট্র জাতির যৌথ জীবন আর যৌথ চেতনারই প্রতীক।

মানব-কল্যাণ কীভাবে মানব-মর্যাদার সহায়ক হয়ে উঠবে?

উত্তর : কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব হলে মানব কল্যাণ মানব-মর্যাদার সহায়ক হয়ে উঠবে। ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক কল্যাণময় পৃথিবী রচনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন। কল্যাণময় পৃথিবী বলতে তিনি এমন পৃথিবীকে বুঝিয়েছেন যেখানে মানব-মর্যাদা কখনো ক্ষুণ্ন হয় না। বরং সকল অবমাননাকর অবস্থা থেকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় সেখানে মানুষের উত্তরণ ঘটে। তিনি মনে করেন মুক্তবুদ্ধির সহায়তায় পরিকল্পনামাফিক পথে চললে তা সম্ভব; কারণ একমাত্র সুষ্ঠু পরিকল্পনাকারীকে সৃজনশীল মানবিক কর্মে নিয়োগ করা যায়। তাই বলা যায়, কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব হলেই মানব কল্যাণ মানব-মর্যাদার সহায়ক হয়ে উঠবে।

মনুষ্যত্বের অবমাননা’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?

উত্তর : মনুষ্যত্বের অবমাননা বলতে লেখক লোক দেখানো মামুলি বস্তুর দানকে বুঝিয়েছেন। সমাজে মানব-কল্যাণের নামে কিছু লোক মূলত এর অবমাননা করে। তারা সস্তা ও নিম্নমানের জিনিস দান-খয়রাত করে নিজেকে দানশীল প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে দানগ্রহণকারী ব্যক্তির মানবিক ও সামাজিক মর্যাদা ভলুণ্ঠিত হয়। লোক দেখানোর নিমিত্তে এমন দান গর্হিত কাজ। এজন্য লেখক একে মনুষ্যত্বের অবমাননা বলেছেন।

‘এ সত্যটা অনেক সময় ভুলে থাকা হয়।’ – কোন সত্যটা? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : সব রকম কল্যাণকর্মেরই যে সামাজিক পরিণতি রয়েছে, সে সত্যটা অনেক সময় ভুলে থাকা হয়। মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের সবকিছুর সঙ্গেই তার সম্পর্ক বিদ্যমান। ফলে মানুষের কর্মের সাথে যে কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকে তা নয়, তার সামাজিক পরিণতিও অবিচ্ছিন্ন। যেহেতু সব মানুষই সমাজের অঙ্গ তাই তার সব রকম কল্যাণ-কর্মেরও রয়েছে সামাজিক পরিণতি। আর এ সত্যটিই অনেক সময় ভুলে থাকা হয়।

‘দুঃখের বিষয়’ বলতে প্রাবন্ধিক কী বুঝিয়েছেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : আমরা যে বাংলাদেশের মহৎ প্রতিভাদের রেখে যাওয়া আদর্শের উত্তরাধিকারকে জীবনে প্রয়োগ করতে পারিনি, ‘দুঃখের বিষয়’ বলতে প্রাবন্ধিক এ বিষয়টি বুঝিয়েছেন। সত্যিকার মানব-কল্যাণ মহৎ চিন্তা-ভাবনার ফসল। যুগে যুগে বাংলাদেশে অনেক মহৎ প্রতিভার জন্ম হয়েছে। তাঁরা আমাদের জন্য মানবিক চিন্তা ও আদর্শের উত্তরাধিকার রেখে গেছেন। কিন্তু আমরা সেই আদর্শের পথে চলতে ব্যর্থ হয়েছি। ‘দুঃখের বিষয়’ বলতে প্রাবন্ধিক এ বিষয়টিকেই বুঝিয়েছেন।

কীভাবে কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব বলে প্রাবন্ধিক মনে করেন?

উত্তর : প্রাবন্ধিক মনে করেন, মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে সুপরিকল্পিত পথে কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব। ‘মানব-কল্যাণ’ প্রবন্ধে লেখক মানব-কল্যাণের প্রকৃত তাৎপর্য উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন অনেকে দুস্থ মানুষকে করুণাবশত দান-খয়রাত করাকে মানব কল্যাণ বলে মনে করেন। কিন্তু লেখকের মতে, এমন কাজ সংকীর্ণ মনোভাবের পরিচায়ক। কালে এভাবে কখনোই কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব নয়। তাঁর মতে, মানুষের সার্বিক মঙ্গলের প্রয়াসই হলো মানব-কল্যাণ। অর্থাৎ সঙ্গ অবমাননাকর অবস্থা থেকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় মানুষের উত্তরণ ঘটানোই মানব-কল্যাণ। তাই প্রাবন্ধিকের বিশ্বাস মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে পরিকল্পনামাফিক পথেই কল্যাণময় পৃথিবী রচনা সম্ভব।

মানব কল্যাণ প্রবন্ধ pdf, মানব কল্যাণ প্রবন্ধ MCQ pdf

সরল উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সহায়িকা – শ্রেণী – একাদশ


সরল উচ্চমাধ্যমিক বাংলা সহায়িকা – শ্রেণী – একাদশ

মানব কল্যাণ প্রবন্ধ সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

মনুষ্যত্বের অবমাননা’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর : মনুষ্যত্বের অবমাননা বলতে লেখক লোক দেখানো মামুলি বস্তুর দানকে বুঝিয়েছেন। সমাজে মানব-কল্যাণের নামে কিছু লোক মূলত এর অবমাননা করে। তারা সস্তা ও নিম্নমানের জিনিস দান-খয়রাত করে নিজেকে দানশীল প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এতে দানগ্রহণকারী ব্যক্তির মানবিক ও সামাজিক মর্যাদা ভলুণ্ঠিত হয়। লোক দেখানোর নিমিত্তে এমন দান গর্হিত কাজ। এজন্য লেখক একে মনুষ্যত্বের অবমাননা বলেছেন।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।