কাজ কাকে বলে, কাজের একক কি, কাজ কত প্রকার ও কি কি, কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য, কাজের মাত্রা নির্ণয় কর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

কাজ কাকে বলে

কোনো বস্তুর ওপর বল প্রযুক্ত হলে, বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণফলকে কাজ বলে। কাজ = F.S হেলানো তল এর ক্ষেত্রে কাজ = FScosθ [যেখানে 0≤θ≤180]

সংজ্ঞা: একটি বস্তুর উপর কোনো বল ক্রিয়া করায় যদি বলের অভিমুখে বস্তুটির কিছু সরণ ঘটে তাহলে ক্রিয়াশীল বল কাজ করেছে বলে ধরা হয়।

ধরা যাক, কোনো বস্তুর উপর একটি ধ্রুব বল F এর ক্রিয়ায় বস্তুটির বলের অভিমুখে সরলরেখা বরাবর সরণ হয় S (চিত্র)। তাহলে বস্তুটির উপর বল দ্বারা কৃতকাজ W হবে,  W=FS

এখানে সরণ S এর সময় যদি বল F স্থির থাকে, অর্থাৎ বল ধ্রুব হয়, তাহলে কাজের সমীকরণে আমরা F বসিয়ে সহজেই কাজ হিসাব করতে পারি। কিন্তু যদি বল F ধ্রুব না হয়ে পরিবর্তিত হতে থাকে, তাহলে উক্ত সমীকরণে কোন F বসাবো? সেই ক্ষেত্রে উপরিউক্ত সমীকরণ প্রযোজ্য হবে না। প্রতিটি মুহূর্তে F এর নতুন নতুন মান নিয়ে অসংখ্যবার কাজ হিসাব করে যোগ করে, অন্য কথায় যোগজীকরণ করে কাজ হিসাব করতে হবে।

কাজ কত প্রকার ও কি কি

কোনো বস্তুর ওপর বল প্রযুক্ত হলে, বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণফলকে কাজ বলে। কাজ = F.S হেলানো তল এর ক্ষেত্রে কাজ = FScosθ [যেখানে 0≤θ≤180]

কাজ দুই প্রকার যথা–

  • ধনাত্মক কাজ
  • ঋণাত্মক কাজ

ধনাত্মক কাজ : কোনো বস্তুর ওপর বল প্রয়োগে যদি বলের দিকে বস্তুর সরণ হয় অথবা বলের দিকে সরণের উপাংশ থাকে তবে ওই বল দ্বারা কৃত কাজের ধনাত্মক কাজ বা বল দ্বারা কাজ বলে।

ঋণাত্মক কাজ : কোনো বস্তুর ওপর বল প্রয়োগের ফলে বলের বিপরীত দিকে বস্তুর সরণ ঘটলে বা বলের বিপরীত দিকে সরণের উপাংশ থাকলে যে কাজ সম্পন্ন হয় তাকে ঋণাত্মক কাজ বলে।

কাজের একক কি

বলের একককে দূরত্বের একক দিয়ে গুণ করলে কাজের একক পাওয়া যায়। যেহেতু বলের একক নিউটন (N) এবং দূরত্বের একক হলো মিটার (m), সুতরাং কাজের একক হবে নিউটন মিটার (Nm)। একে জুল বলা হয়।

বলের দ্বারা কাজ বলতে কি বুঝায়

সংজ্ঞা : যদি বল প্রয়োগের ফলে বলের প্রয়োগ বিন্দু বলের দিকে সরে যায় বা বলের দিকে সরণের উপাংশ থাকে, তাহলে সেই বল এবং বলের দিকে সরণের উপাংশের গুণফলকে ধনাত্মক কাজ (Positive Work) বা বলের দ্বারা কাজ বলে।

W=FS=FScosθ

সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, cos ধনাত্মক হলে W ধনাত্মক হয়। বল F এবং সরণ s এর অন্তর্ভুক্ত কোণ এর মান 90° কম হলে অর্থাৎ 0≤θ<90 হলে cos ধনাত্মক হয়, তখন বলের দিকে সরণের উপাংশ থাকে; ফলে বলের দ্বারা কাজ বা ধনাত্মক কাজ হয়।

উদাহরণ : একটি বস্তু উপর থেকে মাটিতে ফেলে দিলে বস্তুটি অভিকর্ষ বলের দিকে পড়বে। এক্ষেত্রে প্রযুক্ত বল তথা বস্তুর ওজন mg এবং সরণ s একই দিকে তথা নিচের দিকে হয়; ফলে বস্তুর উপর অভিকর্ষ বল দ্বারা কাজ হয়েছে বা অভিকর্ষ বলের জন্য ধনাত্মক কাজ হয়েছে বোঝায়।

বলের বিরুদ্ধে কাজ বলতে কি বুঝায়

সংজ্ঞা : যদি বল প্রয়োগের ফলে বলের প্রয়োগ বিন্দু বলের বিপরীত দিকে সরে যায় বা বলের বিপরীত দিকে সরণের উপাংশ থাকে তাহলে সেই বল এবং বলের বিপরীত দিকে সরণের উপাংশের গুণফলকে ঋণাত্মক কাজ( Negative Work) বা বলের বিরুদ্ধে কাজ বলে।

W=FS=FScosθ সমীকরণ থেকে দেখা যায় যে, cos ঋণাত্মক হলে W ঋণাত্মক হয়। বল F এবং সরণ S এর অন্তর্ভুক্ত কোণ এর মান 90° কম হলে অর্থাৎ 0≤θ<90 হলে cos ঋণাত্মক হয়, তখন বলের বিপরীত দিকে সরণের উপাংশ থাকে; ফলে বলের বিরুদ্ধে কাজ বা ঋণাত্মক কাজ হয়।

উদাহরণ : একখানি বই যদি মেঝে থেকে টেবিলের উপর ওঠানো হয়, তাহলে বস্তুর উপর অভিকর্ষ বল তথা বস্তুর ওজন mg খাড়া নিচের দিকে এবং সরণ S খাড়া উপরের দিকে ক্রিয়া করে। এক্ষেত্রে অভিকর্ষ বল ও সরণ বিপরীতমুখী হওয়ায় অভিকর্ষ বলের বিরুদ্ধে কাজ করা হবে বা অভিকর্ষ বলের জন্য ঋণাত্মক কাজ হবে।

শূন্য কাজ বলতে কি বুঝায়

বল প্রয়োগে যদি কোনো বস্তুর সরণ বলের লম্ব বরাবর হয়, তবে ঐ বলের দ্বারা কোনো কাজ হয় না। কেননা এই ক্ষেত্রে θ=90 হওয়ায় W=(FScosθ)=0। যেমন কোনো বস্তুকে বৃত্তাকার পথে ঘোরায় যে কেন্দ্রমুখী বল, তার দ্বারা কোনো কাজ হয় না। কেননা, প্রতি মূহূর্তে বল ব্যাসার্ধ বরাবর কেন্দ্রের দিকে ক্রিয়া করে আর সরণ হয় বৃত্তের স্পর্শক বরাবর।

কাজের মাত্রা নির্ণয় কর

কাজের মাত্রা সমীকরণ : ML2T-2

কাজের মাত্রা = বল × সরণ
                    = ভর × ত্বরণ × সরণ
                   = ভর × বেগ/সময় × সরণ
                   = ভর × সরণ/সময়² × সরণ
                   = [ML2T−2][ML2T-2]

টর্ক, কাজ, শক্তি ও বলের ভ্রামক : এদের মাত্রা একই।

কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য

কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য নিচে উল্লেখ করা হলো–

কাজক্ষমতা
কোনো বস্তুর ওপর বল প্রযুক্ত হলে বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণফলকে কাজ বলে।কোনো ব্যক্তি বা উৎস দ্বারা সম্পাদিত কাজের হারই হলো ক্ষমতা।
কাজ পরিমাপ করতে সময়ের প্রয়োজন হয় না।ক্ষমতা পরিমাপ করতে সময়ের প্রয়োজন হয়।
কাজ = বল × সরণক্ষমতা = কাজ/সময়।
কাজ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক দুই রকমের হতে পারে।
ক্ষমতার প্রকারভেদ নেই।
কাজের মাত্রা : ML2T-2ক্ষমতার মাত্রা : ML2T-3
কাজের একক জুল।ক্ষমতার একক ওয়াট।
কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | কাজ

Q1. 50 J কাজ বলতে কী বুঝায়

Ans – 1N বল প্রয়োগের ফলে যদি বলের দিকে কোন বস্তুর সরণ 50 m হয়, তাহলে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে 50 J বলে।

Q2. কাজ কি

Ans – কোন বস্তুর উপর বল প্রয়োগে বস্তুর সরণ ঘটলে প্রযুক্ত বল ও বলের অভিমুখে সরণের উপাংশের গুণফলকে কাজ বলে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।