অভিস্রবণ কাকে বলে, ব্যাপন ও অভিস্রবণ এর মধ্যে পার্থক্য

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

অভিস্রবণ কাকে বলে

একই দ্রাবক বিশিষ্ট দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ অর্ধভেদ্য পর্দা দিয়ে পৃথক করা থাকলে দেখা যায় যে পাতলা দ্রবণ থেকে পর্দার ভেতর দিয়ে ঘন দ্রবণের দিকে যায়। দুটি দ্রবণের ঘনত্ব এক না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে। এরই নাম অভিস্রবণ (Osmosis)।

উদ্ভিদ অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় মটি থেকে পানি শোষণ করে। উদ্ভিদের মূলরোমের কোষরস এবং মাটির পানি (পানি+খনিজ লবণ) দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ এবং মূলরোমের কোষ ঝিল্লি অর্ধভেদ্য পর্দা হিসেবে কাজ করে। মাটির পানি ও খনিজ লবণের দ্রবণ কোষরসের চেয়ে পাতলা থাকায় পানি (দ্রাবক) অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় মূলরোমে প্রবেশ করে।

আমরা জানি, দ্রবণ-দ্রব +দ্রাবক। আর, দ্রাবক হলো দ্রবণে যার ঘনত্ব বেশি এবং দ্রব হলো দ্রবণে যার ঘনত্ব কম ।

যেমন : এক গ্লাসের মধ্যে ৫ চামচ পানি মিশালে সেখানে পানি কম এবং দুধ বেশি হবে । সুতরাং সেখানে দুধ হলো দ্রাবক এবং পানি হলো দ্রব ।

অতএব, একই দ্রব এবং দ্রাবকযুক্ত দুইটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি বৈষম্যভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদ করা হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্ইটি দ্রাবক তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয় ।

দ্রাবকের বৈষম্যভেদ্য পর্দা ভেদ করে তার নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হওয়াকে অভিস্রবণ (Osmosis) বলে।

অভিস্রবণ এর সংজ্ঞা

অভিস্রবণ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দ্রাবকের অণুগুলি কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা উচ্চতর দ্রাবক ঘনত্বের অঞ্চলের দিকে ব্যাপিত হওয়া, তাকেই অভিস্রবণ বলে।

একই দ্রাবকের দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ অথবা দ্রবণ ও বিশুদ্ধ দ্রাবককে অর্ধভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করে রাখলে কম ঘনত্বের দ্রাবক বেশি ঘনত্বের দ্রবণের দিকে অথবা বিশুদ্ধ দ্রাবক দ্রবণের দিকে যায়। দ্রাবকের এই চলনকে অভিস্রবণ বা অসমোসিস বলে।

সহজ ভাষায়, যে প্রক্রিয়ায় একই দ্রাবক বিশিষ্ট দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লির মধ্য দিয়ে হালকা ঘনত্বের দ্রবণ থেকে পানি অধিক ঘন দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়, তাকে অভিস্রবণ বলে।

অভিস্রবণ এর উদাহরণ, অভিস্রবণ এর ২টি উদাহরণ

দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একত্র মিশ্রিত হলে স্বাভাবিকভাবেই এদের মধ্যে ব্যাপন সংঘটিত হয়। লক্ষ করলে দেখা যায়, কিশমিশের ভেতরের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে সেটি কুঁচকে গেছে। কিশমিশ খেতে মিষ্টি লাগে কারণ এর ভেতরে পানির অণুর ঘনত্ব খুবই কম এবং চিনির অণুর ঘনত্ব খুবই বেশি।

এখন কিশমিশগুলো পানিতে রাখলে, নিয়ম অনুসারে চিনির (দ্রাব) অণু পানির (দ্রাবক) দিকে এবং পানির অণু চিনির দিকে ধাবিত হবে। কিন্তু কিশমিশের ক্ষেত্রে তা ঘটছে না, কিশমিশটি শুধু পানি শোষণ করে ফুলে উঠছে।

পানির অণু কিশমিশের অভ্যন্তরে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করেছে, কিন্তু চিনির অণু এই রকম পর্দা ভেদ করে বাইরে আসতে পারছে না। এ ধরনের পর্দাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। অর্থাৎ যে পর্দার মধ্য দিয়ে দ্রাবক (পানি) শুকনা কিশমিশ অভিস্রবণ দ্বারা পানি শোষণের ফলে কিশমিশগুলো স্ফীত হয়েছে। এটিই অভিস্রবণ বা অসমোসিস।

অভিস্রবণ কত প্রকার, অভিস্রবণের প্রকারভেদ

অভিস্রবণ দু’ প্রকার। যথা-

১. অন্তঅভিস্রবণ এবং

২. বহিঅভিস্রবণ।

১. অন্তঅভিস্রণঃ দ্রাবক যখন কোষের বাইরে থেকে ভেতরে প্রবেশ করে তখন অন্তঅভিস্রবণ ঘটে। অন্তঅভিস্রবণের ফলে মাটি থেকে পানি মূলরোমে প্রবেশ করে; উদ্ভিদ মাটি থেকে পানি শোষণ করতে পারে। উদাহরণ – কিসমিস পানিতে ভিজিয়ে রাখলে ধীরে ধীরে ফুলে উঠে।

২. বহিঅভিস্রবণঃ দ্রাবক যখন কোষের ভেতর থেকে বাইরে আসে তখন বহিঅভিস্রবণ ঘটে। টসটসে আঙ্গুর ঘন চিনির কিম্বা লবণের দ্রবণে ডুবিয়ে রাখলে কিছুটা চুপসে যায়। কারণ বহিঅভিস্রবণের ফলে আঙ্গুরের ভেতরের পানি বাইরের ঘন দ্রবণে চলে আসে।

অন্তঅভিস্রবণ এবং বহিঅভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় সম্মিলিত কার্যক্রমের ফলে উদ্ভিদের কোষ থেকে কোষান্তরে পানির চলাচল ঘটে।

অভিস্রবণ এর বৈশিষ্ট্য

  • অভিস্রবণ বলতে দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একটি অর্ধভেদ্য পর্দা দিয়ে পাশাপাশি আলাদা করে রাখলে পর্দা ভেদ করে কম ঘন দ্রবণ থেকে অধিক ঘন দ্রবণের দিকে দ্রাবক অণু প্রবেশ করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
  • দুটো দ্রবণের ঘনত্ব সমান না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
  • অভিস্রবন এক প্রকার ব্যাপন।অভিস্রবণ কেবলমাত্র তরলের ক্ষেত্রে ঘটে।
  • অভিস্রবণ অন্যভাবে বলা যায় কোনো শক্তির প্রয়োগ ছাড়াই তরলের বাস্তবিক চলাচল।

অভিস্রবণ এর গুরুত্ব

সমস্ত জীবিত প্রাণীর মধ্যে পুষ্টি এবং খনিজগুলি অভিস্রবণের কারণে কোষগুলিতে প্রবেশ করে। এটি অবশ্যই একটি কোষের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয়। কোষগুলি অভিস্রবণ দ্বারা তাদের বর্জ্য থেকে মুক্তি দেয়।  কোষের মধ্যে দ্রাবকের আদর্শ ঘনত্ব বজায় রাখা অভিস্রবনের একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তাছাড়া, অসমোসিস ব্যতীত, আমাদের দেহের পক্ষে বিষাক্ত বর্জ্যগুলি পৃথক করে বহিষ্কার করা এবং রক্ত ​​প্রবাহকে অমেধ্য থেকে মুক্ত রাখা অসম্ভব।

অভিস্রবণ প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে পুষ্টিগুলি কোষগুলিতে স্থানান্তরিত হয় এবং বর্জ্য পদার্থগুলি সেগুলি থেকে সরে যায়। প্রতিটি কোষের অভ্যন্তরে এবং বাইরে চাপটি অভিস্রবণ দ্বারা বজায় থাকে কারণ এই প্রক্রিয়াটি কোষের প্রাচীরের উভয় পক্ষের তরল ভলিউমের ভারসাম্য নিশ্চিত করে।

অভিস্রবণ গাছগুলির জন্য মূলত গুরুত্বপূর্ণ কারণ শিকড় কোষগুলি এই প্রক্রিয়াটি দ্বারা পানি শোষণ করে। গাছপালার জন্য অভিস্রবণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, অভ্রিস্রবণ ছাড়া গাছপালার অস্তিত্ব থাকত না এবং গ্রহের পুরো খাদ্য শৃঙ্খলার একটি গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্ক হওয়ায় জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

নিন্মোক্ত তালিকার মাধ্যমে অভিস্রবণের গুরুত্ব আলোচনা করা হলো—

  • মাটি থেকে মূলরোম এর সাহায্যে জল শোষণ ও অভিস্রবণ এর মাধ্যমে ঘটে।
  • প্রশান্তর অভিস্রবণ প্রক্রিয়া সাহায্যে জল থেকে সজীব কোষে যায়।
  • অভিস্রবণ পদ্ধতির সাহায্যে কোষ স্ফীত বা সংকুচিত হতে পারে।
  • কোষের একাধিক চলন অভিস্রবণ এর উপর নির্ভরশীল।
  • ফল বিদারণের সময় অভিস্রবণ প্রক্রিয়া বিশেষভাবে সাহায্য করে।
  • অভিস্রবণ এর ফলে উদ্ভিদ কোষে প্লাজমোলাইসিস প্লাজমোলাইসিস ঘটে আর লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোলাইসিস এবং ক্রিনেশান ঘটে।
  • কোষ পর্দার মধ্যে দিয়ে বালকের গাত্র দিয়ে জলের আদান-প্রদান, জলস্ফীতি চাপ, ও অভিস্রবণ চাপ এর উপর নির্ভরশীল। অন্ত অভিস্রবণ এর ফলে বিশোষিত জল কোষ পর্দার উপর বালকের কাতরে যে চাপ সৃষ্টি করে তাকে জলস্ফীতি চাপ বলে। অন্ত্র এবং বৃক্ষ নালিকা থেকে জলের যথাক্রমে শোষণে এবং পূনঃ শোষণে অভিস্রবণ চাপ বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
  • অন্ত অভিস্রবণ এর ফলে কোষটি রসস্ফীতি হয়। এই অবস্থায় কোষ প্রাচীরে যে চাপ সৃষ্টি হয় তাকে রসস্ফীতি চাপ বলে। এই চাপের ফলে এই গাছে জল দিলে কিছু গাছ সোজা হয়ে যায়। উদ্ভিদ ও প্রাণীর একাধিক শারীরবৃত্তীয় কাজে অভিস্রবণের গুরুত্ব অপরিসীম।

ব্যাপন ও অভিস্রবণ এর মধ্যে পার্থক্য

ব্যপন ও অভিস্রবণ হলো উদ্ভিদের দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া।এই দুই পরিবহন প্রক্রিয়া ছাড়া উদ্ভিদের বেঁচে থাকা অসম্ভব।ব্যাপন ও অভিস্রবণ এই দুটি প্রক্রিয়ায় নিষ্ক্রিয় পরিবহন তবে এদের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু পার্থক্য।

বিষয়ব্যাপনঅভিস্রবণ
পর্দার উপস্থিতিব্যাপন প্রক্রিয়ায় কোন পর্দার প্রয়োজন হয়না। এটি মুক্ত অবস্থায় ঘটে।অভিস্রবণ প্রক্রিয়া অর্ধভেদ্য বা প্রভেদক ভেদ্য পর্দার প্রয়োজন হয়।
মাধ্যমের অবস্থাপদার্থের সব অবস্থার মধ্যেই ব্যাপন প্রক্রিয়া ঘটে। কেবলমাত্র ‘ কঠিনে – কঠিনে ‘ সবক্ষেত্রেই ব্যাপন ঘটে।অভিস্রবণ প্রক্রিয়া কেবলমাত্র তরলের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং শুধুমাত্র দ্রাবক অণুর ক্ষেত্রেই ঘটে।
প্রক্রিয়ার অভিমুখএই প্রক্রিয়ায় পদার্থের গতিশীল অনুকূলে বেশি ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের দিকে যায়।এই প্রক্রিয়ায় দ্রাবক অনু কম ঘনত্ব যুক্ত স্থান থেকে বেশি ঘনত্বের দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
দ্রবণের প্রকৃতিভিন্নপ্রকৃতির দ্রবণের মধ্যেও ব্যাপন ঘটতে পারে।কেবলমাত্র সমপ্রকৃতির দ্রবণের মধ্যে অভিস্রবণ ঘটে।
মাধ্যমের অবস্থাব্যাপন প্রক্রিয়া তরলে- তরলে বা অন্য দ্রবণের মধ্যে ঘটে।ই প্রক্রিয়া কেবলমাত্র তরলে তরলে ঘটে।
দ্রবণের প্রকৃতিবিষম প্রকৃতির দ্রবণের মধ্যে ব্যাপন প্রক্রিয়া চলতে পারে।কেবল সদ প্রকৃতির দ্রবণের ভিতরে অভিস্রবণ ঘটে।
ব্যাপন ও অভিস্রবণ এর মধ্যে পার্থক্য

আরো পড়তে: ব্যাপন কাকে বলে

অভিস্রবণ পরীক্ষা, অভিস্রবণ প্রক্রিয়া

অভিস্রবণ প্রক্রিয়াটি বোঝার জন্য আমাদের যে বিষয়ের ধারণা দরকার তার মধ্যে অন্যতম হলো ভিন্ন ঘনত্ব বিশিষ্ট দুইটি দ্রবণের মধ্যে অবস্থিত পর্দার বৈশিষ্ট্য জানা। পর্দাকে সাধারণত তিনভাগে ভাগ করা যায়। যেমন, অভেদ্য পর্দা, ভেদ্য পর্দা ও অর্ধভেদ্য পর্দা।

অভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও প্রাব উভয় প্রকার পদার্থের অণুগুলো চলাচল করতে পারে না তাকে অভেদ্য পর্দা বলে। যেমন- পলিথিন, কিউটিনযুক্ত কোষপ্রাচীর। ভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে দ্রাবক ও দ্রাব উভয়েরই অণু সহজে চলাচল করতে পারে তাকে ভেদ্য পর্দা বলে ৷ যেমন— কোষপ্রাচীর।

অর্ধভেদ্য পর্দা : যে পর্দা দিয়ে কেবল দ্রবণের দ্রাবক অণু (উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পানি) চলাচল করতে পারে কিন্তু দ্রাব অণু চলাচল করতে পারে না তাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। যেমন— কোষপর্দা, ডিমের খোসার ভিতরের পর্দা, মাছের পটকার পর্দা ইত্যাদি।

আমরা লক্ষ করেছি যদি একটা শুকনা কিশমিশকে পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখি তাহলে সেটি ফুলে উঠে। এটি কিশমিশ দ্বারা পানি শোষণের কারণে ঘটে এবং পানি শোষণ অভিস্রবণ দ্বারা ঘটে। অভিস্রবণও এক প্রকার ব্যাপন। অভিস্রবণ কেবলমাত্র তরলের ক্ষেত্রে ঘটে এবং একটি অর্ধভেদ্য পর্দা অভিস্রবণের সময় দুটি তরলকে পৃথক করে রাখে। কিশমিশের উদাহরণ দিয়ে বিষয়টা এখানে বোঝানো হলো।

কিশমিশের সাহায্যে অভিস্রবণ পরীক্ষা

আমরা জানি দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবণ একত্রে মিশ্রিত হলে স্বাভাবিকভাবেই এদের মধ্যে ব্যাপন সংঘটিত হয়। লক্ষ করে দেখ কিশমিশের ভিতরের পানি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে কিশমিশগুলো কুচকে গেছে। কিশমিশগুলো পানিতে রাখলে পানি শোষণ করে ফুলে উঠবে। কারণ কিশমিশের ভিতরে শর্করার গাঢ় দ্রবণ একটি পর্দা দ্বারা পানি থেকে পৃথক হয়ে আছে। ফলে শুধু পানির অণু কিশমিশের অভ্যন্তরে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করেছে, কিন্তু শর্করা অণু এই রকম পর্দা ভেদ করে বাইরে আসতে পারছে না।

এ ধরনের পর্দাকে অর্ধভেদ্য পর্দা বলে। যে প্রক্রিয়ায় একই পদার্থের কম ঘনত্ব এবং বেশি ঘনত্বের দুটি দ্রবণ অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা পৃথক করা হলে দ্রাবক পদার্থের অণুগুলো কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে অধিক ঘনত্বের দ্রবণের দিকে যায় তাকে অভিস্রবণ বা অসমোসিস বলে (চিত্র ৩.৩)।

কোষ থেকে কোষে অভিস্রবণ পরীক্ষা, উদ্ভিদের অভিস্রবণ পরীক্ষা

দুটি ভিন্ন ঘনত্বের দ্রবন একটি অর্ধভেদ্য পর্দা দারা পৃথক থাকলে দ্রাবক পদার্থ যে প্রক্রিয়ায় কম ঘনত্বের এলাকা থেকে বেশী ঘনত্বের এলাকায় প্রবেশ করে তাকে অভিস্রবন বলে।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

১. একটা বড় গোলআলু, 

২. একটি বীকার, 

৩. একটি ব্লেড,   

৪. পানি, 

৫. পরিমাণ মতো চিনির দ্রবন ও 

৬. একটি আলপিন । 

কার্যপদ্ধতি

১. প্রথমে আলুটির খোসা ছাড়িয়ে ব্লেড দিয়ে দুই মাথা  সুরু করে কাটি ।

২.  এক মাথায় একটি গর্ত করে চিনির দ্রবন দিয়ে গর্তটি অর্ধেক পরিমাণ ভর্তি করি । 

৩. বাইরে থেকে একটি গর্ত করেচিনির দ্রবন দিয়ে গর্তটি আর্ধেক পরিমাণ ভর্তি করি ।  

৪.  বিকারে কিছু পানি নিই । 

৫. এবার গর্তের মুখ উপরের দিকে রেখে আলুটিকে বীকারের পানিতে যোগ করি । লক্ষ রাখি আলুটি যেন ডুবে না যায় ।

উদ্ভিদের অভিস্রবনের পরীক্ষাপর্যবেক্ষন

১.  কিছুক্ষন পর দেখা গেল যে আলুর গর্তটিতে দ্রবনের উচ্চতা  বেড়েছে এবং

২.  বীকারের পানির উচ্চতা কমেছে । 

সিদ্ধান্ত

১. আলুর চারদিকে ছিল পানি এবং গর্তে ছিল চিনির দ্রবন ।

২ . বাইরে থেকে দ্রাবক পর পর অনেকগুলো কোষ পার হয়ে গর্তের ভেতরে অধিক ঘন দ্রবনে প্রবেশ করেছিল ।

৩ . তাই প্রক্রিয়াটি হল কোষ থাকে কোষের অভিস্রবন প্রক্রিয়া । 

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | অভিস্রবণ

Q1. অভিস্রবণ কি

Ans – কম ঘন স্থান থেকে কোনো দ্রাবকের অধিক ঘন স্থানের দিকে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে অভিস্রবণ বলে।

Q2. বিপরীত অভিস্রবণ কি

Ans – বিপরীত আস্রবণ বা RO একটি পরিস্রাবণ পদ্ধতি যা একটি সমাধান থেকে আয়ন এবং অণু অপসারণ একটি semipermeable বা নির্বাচনী ঝিল্লি একপাশে সমাধান চাপ প্রয়োগ করে ব্যবহার করা হয়। বড় অণু (সলুয়েট) ঝিল্লি অতিক্রম করতে পারে না, তাই তারা একপাশে থাকা। জল (দ্রাবক) ঝিল্লি অতিক্রম করতে পারে। ফলস্বরূপ হল ভলিউম অণুগুলি ঝিল্লির একপাশে আরও বেশি ঘনীভূত হয়ে যায়, যখন বিপরীত দিকে আরও পাতলা হয়ে যায়।

Q3. বহি অভিস্রবণ কাকে বলে

Ans – কোষের বাইরে অবস্থিত দ্রবণের ঘনত্ব কোষের মধ্যে দ্রবণের ঘনত্বের চাইতে বেশী হলে জলকোষ পর্দার মধ্যে দিয়ে কোষের ভিতরে থেকে বাইরে চলে আসে একে বহিঃ অভিস্রবণ বলে।এর ফলে কোষের আয়তন ছোট হয়ে যায় এবং কোষীয় দ্রবণের ঘনত্ব ও অভিস্রবণ চাপ বেড়ে যায়।

Q4. অভিস্রবণ চাপ কাকে বলে, অভিস্রবণিক চাপ কি

Ans – দ্রবন ও দ্রাব্যতা ভেদ্য পর্দা দিয়ে আলাদা করে রাখলে দ্রাবক দ্রবণের দিকে যাবে।মেয়ের দিকে যে পরিমাণ চাপ দিলে এই দ্রাবকের চলন আটকানো যায় তাকে ওই দ্রবণের অভিস্রবণ চাপ বলে। এই চাপকে Atmosphere mmHg তে প্রকাশ করা হয়।

Q5. অন্তঃ অভিস্রবণ কাকে বলে

Ans – কোষের বাইরে অবস্থিত দ্রবণের ঘনত্ব কোষের মধ্যে দ্রবণের ঘনত্বের চেয়ে কম হলে বাইরে থেকে জল কোষ পর্দার মধ্যে দিয়ে অভিস্রবণ প্রক্রিয়া কোষের ভিতরে আসে। একে অন্তঃ অভিস্রবণ বলে। এর ফলে কোষের আয়তন বাড়ে এবং কোষীয় দ্রবণের ঘনত্ব ও অভিস্রবণ চাপ কমে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।