বিশেষ্য কাকে বলে, বিশেষ্য পদ কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

বিশেষ্য কাকে বলে

যে শব্দ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, স্থান, জাতি, গোষ্ঠী, সমষ্টি, গুণ বা অবস্থার নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য বলে। যেমন—থালা, বাটি, টাকা, ঢাকা, ছাগল, বাঁশ, মাছ, দয়া, মায়া, সততা।

বিশেষ্য কত প্রকার, বিশেষ্য কত প্রকার ও কি কি

কী ধরনের নাম বোঝাচ্ছে তার ওপর ভিত্তি করে বিশেষ্যকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—

সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছুর নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন—নজরুল, যমুনা, দোয়েল, আষাঢ়, বঙ্গভাষা ইত্যাদি।

সাধারণ বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা সামগ্রিকভাবে একটি শ্রেণিকে বোঝায়, তাকে সাধারণ বিশেষ্য বলে। যেমন—মানুষ, কবি, নদী, পাখি, মাস, ভাষা ইত্যাদি।

বিভিন্ন মানদণ্ডে সাধারণ বিশেষ্যের শ্রেণিকরণ করা হয়ে থাকে।

ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা অনুসারে:

ক. মূর্ত বিশেষ্য: ইন্দ্রিয় দ্বারা যে বস্তুর ঘ্রাণ নেওয়া যায় কিংবা যাকে দেখা, পরিমাপ করা বা স্পর্শ করা যায়, তাকে মূর্ত বিশেষ্য বলে। যেমন—রুটি, বাটি, বেগুন, ফুল ইত্যাদি।

খ. ভাব বিশেষ্য: ইন্দ্রিয় দ্বারা যার ঘ্রাণ নেওয়া, দেখা, পরিমাণ করা, স্পর্শ করা যায় না অর্থাৎ নিবস্তুক অবস্থা ও মনোগত ভাব বোঝায়, তাকে ভাব বিশেষ্য বলে। যেমন—রাগ, ক্ষমা, আনন্দ, বেদনা ইত্যাদি।

গণনযোগ্যতা অনুসারে:-

ক. গণন বিশেষ্য: যে বিশেষ্যকে সংখ্যা দিয়ে গণনা করা যায় এবং যার বহু বচন করা চলে, তাকে গণন বিশেষ্য বলে। যেমন—ফল, গরু, হাঁস, মুরগি, মাছ, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি।

খ. পরিমাপ বিশেষ্য: যে বিশেষ্যকে সংখ্যা দ্বারা গণনা করা যায় না, কিন্তু পরিমাপ করা চলে, তাকে পরিমাপ বিশেষ্য বলে। যেমন—লবণ, তেল, চিনি, আটা, ডাল, চাল ইত্যাদি।

গ. সমষ্টি বিশেষ্য: যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো দল বা গোষ্ঠীর একক বা সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টি বিশেষ্য বলে। যেমন—ছাত্র, জনতা, পুলিশ, মালিক, শ্রমিক, সভা, সমিতি, সংসদ, শ্রেণি, ঝাঁক, দল ইত্যাদি।

সজীবতা অনুসারে:-

ক. সজীব বিশেষ্য: যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো জীবন্ত ও সক্রিয় সত্তার সাধারণ শ্রেণিকে বোঝায়, তাকে সজীব বিশেষ্য বলে। যেমন—ইঁদুর, বিড়াল, বানর, সিংহ, বাঘ ইত্যাদি।

খ. অজীব বিশেষ্য: যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো ধারণাযোগ্য ও ইন্দ্রিগ্রাহ্য কিংবা নির্জীব বস্তু বোঝায়, তাকে অজীব বিশেষ্য বলে। যেমন—বাড়ি, গাড়ি, শাড়ি, বই, খাতা, কালি, কলম, আকাশ ইত্যাদি।

সমষ্টিবাচক বিশেষ্য কাকে বলে

যে বিশেষ্য পদে সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: কমিটি, মাহফিল, জনতা, সমিতি,মিছিল, সভা, দল ইত্যাদি। যে বিশেষ্য পদে সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: জনতা, সমিতি, সভা, দল ইত্যাদি।

আরও পড়ুন :- বিশেষণ কাকে বলে, বিশেষণ পদ কাকে বলে, বিশেষণ পদের উদাহরণ

বিশেষ্য পদ কাকে বলে

যে পদ দিয়ে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, স্থান, সমষ্টি, কাজ বা গুণের নাম বোঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে।

বিশেষ্য পদ উদাহরণ

যেমন : রবীন্দ্রনাথ, পানি, মানুষ, ঢাকা, সমিতি, ভোজন, বিনয় ইত্যাদি।

বিশেষ্য পদ কত প্রকার, বিশেষ্য পদের শ্রেণীবিভাগ

বিশেষ্য পদকে ছয়টি শ্রেনীতে ভাগ করা যায় যথা –

১ – সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য। যেমন- রবীন্দ্রনাথ, সুভাষ, বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, গঙ্গা, রামায়ণ, কোরান, বাইবেল।

২ – বস্তুবাচক বিশেষ্য। উদাহরণ – তামা, রূপা, পাথর, মাটি, জল, দুধ, বই, কাগজ।

৩ – জাতিবাচক বিশেষ্য। যেমন – বৌদ্ধ, হিন্দু, খ্রিস্টান, মুসলমান, বাঙালি, বিহারি।

৪ – সমষ্টিবাচক বিশেষ্য। যেমন – দল, সভা, সমিতি, জনতা, বাহিনী।

৫ – গুণবাচক বিশেষ্য। যেমন – ভালো, দয়া, সাধুতা, সততা, মমতা, মহত্ব।

৬ – ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য। যেমন – ভ্রমণ, দর্শন, ভোজন, শয়ন, চলন, গমন।

নিন্মে এই সব বিশেষ্য পদের সংজ্ঞা আলোচনা করা হলো –

সংজ্ঞাবাচক বা নামবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা ব্যক্তি, স্থান, পর্বত, নদী, গ্রন্থ প্রভৃতির নাম বোঝায় তাকেই সংজ্ঞাবাচক বা নামবাচক বিশেষ্য বলে। বা, যে বিশেষ্য পদ দিয়ে ব্যক্তি, স্থান, নদী, পর্বত, সাগর, গ্রন্থ ইত্যাদির নাম বা সংজ্ঞা বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলে। 

যেমন– বঙ্কিমচন্দ্র, শরৎচন্দ্র, কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি, গঙ্গা, কাবেরী, কৃষ্ণা, মহানদী, হিমালয়, আন্দিজ, আত্মস, রকি, বাইবেল, রামায়ণ, মহাভারত ইত্যাদি।

বস্তুবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা যে সমস্ত বস্তুর নামকে বোঝায় তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। বা, যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো বস্তুর নাম বোঝায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে।

এখানে একটি বিষয় বস্তুবাচক বিশেষ্য দ্বারা কেবলমাত্র সেই বস্তুকেই বোঝায় যার পরিমাপ করা হয়, তবে সংখ্যাকে বোঝায় না।

যেমন – পাথর, গাছ, লোহা, তামা, জল, তেল, চাপাতি, মশলা, বই, পেন ইত্যাদি।

জাতিবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা এক জাতীয় সব প্রাণী বা বস্তুকে বোঝায় তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। বা, যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো জাতি বা শ্রেণির নাম বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে।

যেমন – বাঘ, মহিষ, হাতি, জেব্রা, চিতা, হরিণ, বাঙালি, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পারসিক, ইহুদি ইত্যাদি।

সমষ্টিবাচক বিশষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো কিছুর সমষ্টিকে বোঝায় তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। বা, যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। 

যেমন—সভা, সমিতি, শ্রেণি, দল, ঝাঁক, জনতা বাহিনী, সম্প্রদায় প্রভৃতি।

গুণবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর দোষ, গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম বোঝায় তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। বা, যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো গুণ, দোষ বা অবস্থা বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য পদ বলে। 

যেমন – মমতা, কাতর, সাধুতা, দয়া, সততা, বিনয়, মহত্ব, রোগ, শোক, শৈশব, যৌবন, বৃদ্ধ, বিদ্যা ইত্যাদি।

ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য

যে বিশেষ্য দ্বারা কোনো কাজ বা কর্মের নামকে বোঝায় তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। বা, যে বিশেষ্য পদ দিয়ে কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য বলে। 

যেমন – ভ্রমণ, দর্শন, ভোজন, শয়ন, গমন, পঠন, লিখন ইত্যাদি।

ভাববাচক বিশেষ্য কাকে বলে

যে বিশেষ্য পদে কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যে বিশেষ্য পদ কোনো বিশেষ ভাব,ব্যাক্তির দোষ গুণ বা বস্তুর ধর্মের নাম নির্দেশ করে,তাকে ভাববাচক বিশেষ্য বা গুন বাচক বিশেষ্য পদ বলে।

গুণ বিশেষ্য কোনটি

যে বিশেষ্য পদে কোনো গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: সুখ, দুঃখ, দয়া,প্রেম, ,অহংকার,সৌন্দর্য,মধুরতা,তারল্য,তিক্ততা,তারুণ্য প্রভৃতি। গুণগত অবস্থা ও ধারণার নামকে গুণ-বিশেষ্য বলে। যেমন – সরলতা, দয়া, আনন্দ, গুরুত্ব, দীনতা, ধৈর্য ইত্যাদি।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | বিশেষ্য

Q1. বিরাট বিশেষ্য রূপ কি

Ans – বিরাট গুণবাচক বিশেষ্য। 

Q2. শয়ন কোন ধরনের বিশেষ্য

Ans – শয়ন ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য। 

Q3. হিমালয় কোন জাতীয় বিশেষ্য

Ans – হিমালয় সংজ্ঞাবাচক বা নামবাচক বিশেষ্য। 

Q4. দুঃখ কোন বিশেষ্য

Ans – দুঃখ গুণবাচক বিশেষ্য। 

Q5. বিশেষ্য কি

Ans – সাধারণভাবে এর সংজ্ঞা হিসাবে বলা হয়, কোন কিছুর নামকেই বিশেষ্য বলে। বাংলা ব্যাকরণ মতে, বাক্যে ব্যবহৃত যে প্রকার পদ (শব্দ-ধ্বনি) দ্বারা কোন কিছুর নাম বোঝানো হয় তাকেই বিশেষ্য পদ বলে। যেমনঃ মাহবুবা, সাকিব, নারায়ণগঞ্জ, তিতাস ইত্যাদি। 

Q6. ভোজন কোন প্রকারের বিশেষ্য

Ans – ভোজন ভাববাচক বিশেষ্য ।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।