বই পড়া প্রমথ চৌধুরী সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

বই পড়া প্রমথ চৌধুরী মূলভাব

মননশীল প্রবন্ধকার প্রমথ চৌধুরী বই পড়া’ প্রবন্ধে বই পড়ার উপযােগিতা ও পাঠকের মনমানসিকতা নিয়ে আলােচনা করেছেন। এই প্রবন্ধে লেখক বই পড়ার প্রয়ােজনীয়তা ও অপরিহার্যতা সম্পর্কে তার মতামত ও যুক্তি-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন।

আমাদের পাঠে অনভ্যাসের কারণ হিসেবে লেখক মূলত শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা আমাদেরকে অর্থ উপার্জন করতে শেখায়, কিন্তু সুপ্ত হৃদয়বৃত্তিকে প্রস্ফুটিত করে না। যে কারণে সবাই শিক্ষার ফল হাতে হাতে পেতে আগ্রহী। যে শিক্ষার সাথে আর্থিক যােগ নেই সেই শিক্ষা আমাদের কাছে অনর্থক বলে বিবেচিত হয়। তাই বই পড়ার প্রতি আমাদের প্রবল অনিচ্ছা, অনাগ্রহ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যে শিক্ষা দেওয়া হয় তা অপূর্ণ হওয়ায়ই এই মারাত্মক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

সুশিক্ষিত ব্যক্তিমাত্রই স্বশিক্ষিত। যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসারতা দরকার, যা পাঠ-অভ্যাসের মাধ্যমেই কেবল সম্ভব। একজন স্বশিক্ষিত মানুষ নীচতা, স্পর্শকাতরতা, হিংসা-বিদ্বেষের ঊর্ধ্বে। স্বশিক্ষিত ব্যক্তি নিজেকে প্রকৃতভাবে চিনতে ও জানতে পারে। এই কারণে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সুপরিকল্পিতভাবে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর বাধ্য না হলে যে লােকে বই পড়ে না- এই ধারণার অবসান ঘটাতে হবে, তবেই উন্নতি সম্ভব। প্রগতিশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বই পড়ার কোনাে বিকল্প নেই।

বই পড়া সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘তোতাকাহিনী’ গল্পে রাজা শখ করে একটি তোতা পাখি কিনে সেটির শিক্ষার ব্যবস্থা করলেন। শিক্ষার জন্য বিখ্যাত সব পণ্ডিত নিয়োগ দেওয়া হলো। মহাসমারোহে তোতার শিক্ষাদান চলতে থাকল। পণ্ডিতেরা পাখিটিকে জোর করে পুস্তকের পাতা মুখের মধ্যে পুরে দিতে থাকল। অবশেষে একদিন সেটি মারা গেল।

প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী?

উত্তর:- প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ‘বীরবল’।

লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের ওপরে স্থান দিয়েছেন কেন?

উত্তর:- মানসিক সুস্থতার জন্য হাসপাতালের চেয়ে লাইব্রেরির গুরুত্ব বেশি বলে লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের ওপরে স্থান দিয়েছেন।

শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যায়। শারীরিক অসুস্থতার চেয়ে মানসিক অসুস্থতা বেশি ভয়াবহ। মানসিক সুস্থতার জন্য লাইব্রেরি অন্যতম জায়গা। যেখানে স্বেচ্ছায় বই পড়ে মানুষ তার মনের সুস্থতা পেতে পারে, মনকে আনন্দিত করতে পারে, মনের প্রসার ঘটাতে পারে। বই পড়ার অবাধ সুযোগ থাকে লাইব্রেরিতেই। তাই লেখক লাইব্রেরিকে হাসপাতালের ওপর স্থান দিয়েছেন।

উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধের যে বিশেষ দিকটির প্রতিফলন ঘটেছে, তা ব্যাখ্যা করো।

উত্তর:- উদ্দীপকে ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে উল্লেখিত ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতির কথা ফুটে উঠেছে।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধের মূল বক্তব্যে ফুটে উঠেছে, জোর করে চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষা শিক্ষার্থীর জন্য ক্ষতিকর। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হয় শিক্ষায় আনন্দের স্পর্শ থাকলে। আনন্দপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর মানসিক প্রসার ঘটে।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে লেখক শিক্ষাপদ্ধতির নানান দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। শিক্ষাপদ্ধতির ক্রটিপূর্ণ দিকটি হলো মুখস্থনির্ভরতা এবং শুধু পরীক্ষায় পাস করে সার্টিফিকেট অর্জন করার প্রবণতা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় যে বিদ্যা গেলানো হয়, তা শিক্ষার্থী পরীক্ষায় উগড়ে দেয়। এমন শিক্ষা শুধু ব্যর্থই হয় না, অনেক স্থলে তা মারাত্মক পরিস্থিতি ধারণ করে। উদ্দীপকের পাখিটির ক্ষেত্রেও এমন ঘটনার দেখা পাওয়া যায়। পাখিটির ধারণক্ষমতার তোয়াক্কা না করে একদল পণ্ডিত জোর করে পুস্তকের পাতা পাখিটির মুখে পুরে দিতে থাকলে পাখিটির মৃত্যু হয়। উক্ত পাখিটিকে শিক্ষাদানের যে পদ্ধতি, তা ‘বই পড়া’ প্রবন্ধে উল্লেখিত ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতির দিকটিকেই নির্দেশ করে।

উদ্দীপকে প্রতিফলিত দিকটি মানুষের স্বশিক্ষিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়—‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

উত্তর:- উদ্দীপকে উল্লেখিত দিকটি মানুষের স্বশিক্ষিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়— মন্তব্যটির যথার্থতা রয়েছে।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধের আলোকে দেখা যায়, শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করা। আর আনন্দহীন এবং চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষায় তা কখনোই সম্ভব হয় না। তাই শিক্ষাপদ্ধতিতে আনন্দের সঙ্গে শিক্ষাদানের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।

‘বই পড়া’ প্রবন্ধে আমাদের স্কুল-কলেজে শিক্ষাদানের যে পদ্ধতি উল্লেখিত হয়েছে, তার সঙ্গে উদ্দীপকের ঘটনার সাদৃশ্য বিদ্যমান। এখানে জোর করে মুখস্থ করানো হয়। বিদ্যা গেলানো হয়। এই ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতিতে শিক্ষার্থীর মানসিক জাগরণ ঘটে না। শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। সার্টিফিকেট অর্জনই হয়ে ওঠে তাদের একমাত্র লক্ষ্য। এ শিক্ষা আমাদের স্বশিক্ষিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করে দেয়। উদ্দীপকে তোতা পাখিটিকে শিক্ষাদানের যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, তা হাস্যকর এবং অনিয়মতান্ত্রিক। জোর করে তার মুখে পুস্তকের পাতা পুরে দিয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

স্বেচ্ছায় বই পড়ার মাধ্যমে এবং আনন্দপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য সাধিত হয়। উদ্দীপকে যে শিক্ষাপদ্ধতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বই পড়া’ প্রবন্ধ অনুযায়ী বলা যায়, এ পদ্ধতি মানুষের স্বশিক্ষিত হওয়ার পথে অন্তরায়।

বই পড়া বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর

মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ কোনটি?

উত্তর : মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হচ্ছে বই পড়া।

শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কী?

উত্তর : শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলাে সাহিত্যচর্চা।

সুশিক্ষিত লােক মাত্রই কী?

উত্তর : সুশিক্ষিত লােক মাত্রই স্বশিক্ষিত ।

সাহিত্যচর্চার জন্য কী প্রয়ােজন?

উত্তর : সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরির প্রয়ােজন।

দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, কার হয় না?

উত্তর : দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয় না।

‘পদচারণ’ কার লেখা?

উত্তর : ‘পদচারণ’ প্রমথ চৌধুরীর লেখা।

কী ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই?

উত্তর : বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর নেই।

লেখক কোনটিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন?

উত্তর : লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।

লেখক লাইব্রেরিকে কিসের ওপরে স্থান দিয়েছেন?

উত্তর : লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।

শিক্ষা গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে বলে কার বিশ্বাস?

উত্তর : শিক্ষার ফল লাভে উদ্বাহু ব্যক্তির।

কে শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন?

উত্তর : যিনি যথার্থ গুরু তিনিই শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন।

কিসের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু?

উত্তর : শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু।

কাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি?

উত্তর : কেউ স্বেচ্ছায় বই পড়লে তাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি।

বই পড়ার প্রধান দুটি দিক কী কী?

উত্তর : বই পড়ার প্রধান দুটি দিক হলাে যথাক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক উপায় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়।

উত্তরসাধক মাত্র কে?

উত্তর : গুরু উত্তরসাধক মাত্র ।

বই পড়া প্রবন্ধের অনুধাবনমূলক প্রশ্ন উত্তর

শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না কেন?

উত্তর : শিক্ষার ন্যায় অন্তর্লোকের মনােরাজ্যের অর্জন গ্রহণসাপেক্ষ বিধায় শিক্ষা কেউ কাউকে দিতে পারে না।

সুশিক্ষিত লােক মাত্রই স্বশিক্ষিত। শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, ছাত্রকে তা অর্জন করতে সক্ষম করায়। যিনি যথার্থ গুরু তিনি শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তােলেন। সেই শক্তির বলে শিষ্য নিজের মন নিজে গড়ে তােলে, নিজের অভিমত বিদ্যা নিজে অর্জন করে। বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে হয়। গুরু উত্তরসাধক মাত্র।

লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিতে চান কেন?

উত্তর : লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিতে চান, কারণ লাইব্রেরিতে লােকে স্বেচ্ছায় স্বচ্ছন্দচিত্তে স্বশিক্ষিত হওয়ার সুযােগ পায় ।

আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি উল্টো। সেখানে ছেলেদের বিদ্যে গেলানাে হয়। তা তারা হজম করতে পারুক আর নাই, তা কেউ দেখে না। ফলে ছেলেরা শারীরিক ও মানসিকভাবে জীর্ণশীর্ণ হয়ে বেরিয়ে আসে কলেজ থেকে। পক্ষান্তরে লাইব্রেরিতে প্রত্যেকে নিজ নিজ শক্তি ও রুচি অনুসারে নিজের মনকে নিজের চেষ্টায় আত্মার রাজ্যে, জ্ঞানের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তাই লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিতে চান।

শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে। উক্তিটি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : “শিক্ষা আমাদের গায়েল জ্বালা ও চোখের জল, দুই-ই দূর করবে”- উক্তিটির মধ্য দিয়ে শিক্ষা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ভুল ধারণা প্রকাশ পেয়েছে।

আমাদের দেশ রােগ-শােক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশ। সুন্দর জীবনধারণ করা এখানে কঠিন। তাই শখ করে বই পড়ার প্রস্তাব অনেকের কাছে নিরর্থক ও নির্মম ঠেকবে বলে প্রমথ চৌধুরী মনে করেন। তিনি বলেন, আমরা সকলে শিক্ষার ফললাভের জন্য সব সময় উদ্বাহু। কারণ আমাদের বিশ্বাস শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে।

সাহিত্যের রস উপভােগ করতে আমরা প্রস্তুত নই কেন?

উত্তর : সাহিত্যের ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না বলে আমরা সাহিত্যের রস উপভােগ করতে প্রস্তুত নই। সাহিত্য মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে জাগিয়ে তােলে। মানুষকে বিকশিত করে তােলে। সাহিত্যের রস মানুষের আত্মাকে সজীব করে তােলে। কিন্তু আমরা যেকোনাে পাঠের ফল সরাসরি প্রত্যাশা করি। আর এ কারণেই আমরা সাহিত্যের রস উপভােগ করতে প্রস্তুত নই।

সাহিত্যচর্চার সুফল সম্পর্কে অনেকেই সন্দিহান কেন?

উত্তর : সাহিত্যচর্চার কোনাে নগদ বাজার দর নেই বলে এর সুফল সম্পর্কে অনেকেই সন্দিহান। সমাজের অনেকেই সাহিত্যের রস উপভােগ করতে প্রস্তুত না উত্তীর্ণ থাকলেও শিক্ষার ফললাভের জন্য উদ্বাস্তু হয়ে থাকেন। তাদের বিশ্বাস শিক্ষা তাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে। সাহিত্যচর্চার সুফল সম্পর্কে লােকে যে সন্দেহ করে, তার কারণ এ শিক্ষার ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ তার কোনাে নগদ বাজার দর নেই।

সাহিত্যচর্চাকে লেখক শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলেছেন কেন?

উত্তর : সাহিত্যচর্চায় মন ও জ্ঞানের সামগ্রিক রূপ পাওয়া যায় বলে লেখক সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলেছেন।

লেখকের মতে, যে জাতি মনে বড় নয়, সে জাতি জ্ঞানেও বড় নয়। মানুষের মনকে সরল, সচল, সরাগ ও সমৃদ্ধ করার ভার আজকের দিনে সাহিত্যের ওপর ন্যস্ত হয়েছে। কেননা, মানুষের দর্শন, বিজ্ঞান, ধর্মনীতি, অনুরাগ-বিরাগ, আশা-নৈরাশ্য, তার অন্তরের সত্য ও স্বপ্ন এসবের সমবায়ে সাহিত্যের জন্ম। এসব কারণেই লেখক সাহিত্যচর্চাকে শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ বলেছেন।

“সাহিত্যচর্চার জন্য চাই লাইব্রেরি।”- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বই পড়া অর্থাৎ সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরি অপরিহার্য।

বাস্তবতার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, বিভিন্ন ধরনের চর্চা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন- ধর্মের চর্চা মন্দির কিংবা মসজিদে, দর্শনের চর্চা গুহায়, নীতির চর্চা ঘরে এবং নাই বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে। ঠিক তেমনি সাহিত্যের চর্চার জন্যও লাইব্রেরির কোনাে বিকল্প নেই।

লেখকের কাউকে শখ হিসেবে বই পড়তে পরামর্শ দিতে না চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বই পড়া মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হওয়া সত্ত্বেও লেখক ওপরে কাউকেই বই পড়তে পরামর্শ দিতে চাননি।

প্রথম কারণ, লেখকের সেই পরামর্শ কেউ গ্রাহ্য করবেন না এজন্য যে আমরা জাতি হিসেবে শৌখিন নই। আর দ্বিতীয় কারণ হলাে রােগ-শােক, দুঃখ-দারিদ্র্যের দেশে যেখানে স্বাভাবিকভাবে দূর জীবনধারণই প্রধান সমস্যা সেখানে শখ করে বই পড়ার প্রস্তাব ভুল পাঠকের কাছে খুব নির্মম ঠেকবে ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলােতে যে শিক্ষা দেওয়া হয় তা অপূর্ণাঙ্গ শিক্ষা। আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ স্কুল-কলেজগুলােতে যে ধরনের শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে তা অনেক ক্ষেত্রেই জ্ঞান বিকাশে সহায়ক নয়। শুধু পরীক্ষায় পাস করার দিকে শিক্ষার্থীদের নজর থাকে। শিক্ষকরাও পাসের লক্ষ্য নিয়েই তাদের শিক্ষা দেন। নােটসর্বস্ব বিদ্যা অর্জন করে উদরপূর্তির ব্যবস্থা হয়তাে তাতে হয়, কিন্তু অপূর্ণ শিক্ষার কারণে আত্মবিকাশের সুযােগ হয় না।

“কিন্তু এই গেলা আর ওগলানাে দর্শকের কাছে তামাশা হলেও বাজিকরের কাছে তা প্রাণান্তকর ব্যাপার”- ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : উদ্ধৃত বাক্যটি দ্বারা বাজিকরের প্রাণান্তকর চেষ্টা ও তার সাধনার ফলাফল বােঝানাের মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

বাজিকর বিভিন্ন আকার ও আয়তনের বস্তু গিলে আবার দর্শকের সামনে তা উদগিরণ করে। এটা দর্শকের কাছে নিতান্ত তামাশা ও অদ্ভুত কৌশল মনে হলেও মূলত এ কাজটা করতে বাজিকরের বহু শ্রম ব্যয়ের দরকার হয়। তেমনি আমাদের এ সময়ে ছাত্ররা নােটের লেখা তােতাপাখির মতাে মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। মানুষ এতে বাহবা দেয়। মূলত এ ছাত্র ঐ বাজিকরের মতােই প্রাণান্তকর চেষ্টার মাধ্যমে পরীক্ষায় নম্বর পেয়েছে।

স্কুল-কলেজের শিক্ষাকে লেখক ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন কেন?

উত্তর : প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী আমাদের দেশে প্রচলিত স্কুল কলেজের শিক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।

লেখকের মতে, শিক্ষা মানুষের আত্মাকে উদ্বোধিত করে, মনুষ্যত্ববােধ জাগ্রত করে। কিন্তু বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় সেই সুযােগ নেই। বর্তমানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের দেওয়া নােট মুখস্থ করে এবং পরীক্ষার খাতায় তা ওগরায়। তাই লেখক স্কুল-কলেজের প্রচলিত শিক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।

পুঁজিবাদী সমাজে সাহিত্যপাঠের পরিস্থিতি কেমন তা বুঝিয়ে লেখ।

উত্তর : সাহিত্যের বই কেনা যেখানে অপচয় ও অনর্থক মনে হয় সেখানে সাহিত্যপাঠের পরিস্থিতি সমাজে যথার্থই নাজুক বলে প্রতীয়মান হয়।

পুঁজিবাদী সমাজের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি হলাে- শিক্ষা বা জ্ঞান কেবল অর্থ উপার্জনের জন্যই প্রয়ােজনীয়। মননশীলতা আর বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান অর্জনের জন্য কারও তেমন কোনাে আগ্রহ দেখা যায় না। ব্যবসায়িক স্বার্থে অর্থ ব্যয় করতে কেউ কার্পণ্য না করলেও সাহিত্য বা কাব্যচর্চার জন্য কানাকড়িও খরচ করতে সবার অনীহা দেখা যায়।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

বই পড়া প্রমথ চৌধুরী Pdf

অল ইন ওয়ান পারুল বাংলা রেফারেন্স – ক্লাস – 9

অল ইন ওয়ান পারুল বাংলা রেফারেন্স – 2021 সালের জন্য ক্লাস – 9 (শিক্ষার ফলাফলের জন্য 5E মডেল)

বই পড়া প্রমথ চৌধুরী সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, কার হয় না?
উত্তর : দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয় না।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।