শৈলী বিজ্ঞান কাকে বলে, শৈলী বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো, সাহিত্য চর্চার জন্য কি প্রয়োজন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

শৈলী বিজ্ঞান কাকে বলে

ইংরেজী ‘স্টাইলিস্টিক’ শব্দের অনুসরণে বাংলায় আধুনিক যুগে সাহিত্য চর্চার নতুন পদ্ধতি হিসেবে শেলীবিজ্ঞান শব্দটি যথেষ্ট পরিচিতি লাভ করেছে।

ইংরেজি ‘স্টাইলস্টক’ শব্দ সাহিত্যশৈলীর বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোচনা রূপে গৃহীত হয়েছে। সাহিত্যশৈলীর বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা ফরাসী ভাষায় La Stylistique এবং জার্মান ভাষায় Die stylistik বলা হয়।

কোনো কোনো সমালোচক ভারতীয় অলঙ্কার শাস্ত্রে কথিত রীতি ও Style শব্দটিকে সমার্থক বলে মনে করলেও তা ঠিক নয়।

ভারতীয় অলঙ্কার শাস্ত্রে গৌড়ী, মাগধী, দাক্ষিনাভা ইত্যাদি রীতির মধ্যে বিশেষ অঞ্চলে গড়ে ওঠা বহিরঙ্গ যে সমস্ত রানা পদ্ধতির কথা বলেছেন তা বস্তুগত। কিন্তু পাশ্চাত্য সমালোচনা পদ্ধতির অনুসরণে থাকে শৈলী বলা হয়ে থাকে তা নির্ভান্তই লেখকের ব্যাক্তিগত রচনারীতির বৈশিষ্ট্যকে সূচীত করে থাকে।

সাহিত্য সৃষ্টির প্রধান উপকরণ ভাষা। তাই ভাষার উপরনির্ভর করে বিজ্ঞান ভিত্তিক সমালোচনার আধুনিক পদ্ধতিকে শৈলীবিজ্ঞান নামে অভিহিত করা হয়েছে।

শৈলী বিজ্ঞান তাই ভাষাবিজ্ঞান চর্চার স্বতন্ত্র ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত। পুরাতন যুগের সাহিত্য সমালোচনা পদ্ধতির সঙ্গে শৈলী বিজ্ঞানের পার্থক্য নির্ণয় করতে গিয়ে বলা যায় পুরাতন প্রচলিত পদ্ধতিতে মন্ময় সমালোচকের রসগ্রহিতা সেখানে প্রাধান্য পেত ল কিন্তু শৈলী বিচারের ক্ষেত্রে তন্ময় দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

শৈলী বিজ্ঞান সম্পর্কে আলোচনা করো

শৈলীকে প্রথাগতভাবে দু-ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে一 (১) মূল্যায়নভিত্তিক (Evaluative) শৈলী এবং (২) বর্ণনামূলক (Descriptive) শৈলী। কোনাে রচনার শৈলীর বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রকাশই হল মূল্যায়নভিত্তিক শৈলী। আর, কোনাে লেখকের লেখার শৈলীর বিবরণই হল বর্ণনামূলক শৈলী। প্রথম প্রকারের শৈলীতে দুজন লেখকের শৈলীর পার্থক্য নির্ণয় করা যায়। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে কোনাে লেখকের দুটি পৃথক, একজাতীয় রচনার শৈলীর পার্থক্যের বিবরণ দেওয়া যায়।

ফার্দিনান্দ দ্য সােস্যুরের মতে শৈলীর দুটি দিক一 (১) লাঙ’ ও (২) ‘পারােল। ভাষার নানা উপাদান (যেমন ধ্বনি, রূপ, বাক্য ইত্যাদি) এবং সেই উপাদানগুলির পারস্পরিক সম্পর্কের বিধিবদ্ধ জালবিন্যাসই হল লাঙ (Langue)। আর সেই লা-এর বিধিকে মান্য করেও লেখক যখন তাঁর ভাষা-ব্যবহারের উপাদান নির্বাচন ও প্রতিস্থাপনের মধ্য দিয়ে নিজস্ব একটি বাচনক্রিয়া তৈরি করেন, তখন তাকে বলে পারােল (Parole)।

লেখকের মূল ভিত্তি তাই লাঙ হলেও শৈলী বিষয়টি প্রধানত পারোল-এর এক্তিয়ারভুক্তই। শৈলীবিজ্ঞানে লেখকের ভাষা ব্যবহারের রূপরীতি ও স্টাইলের পর্যালােচনা করা হয়। সুতরাং শৈলীবিজ্ঞানসম্মত সাহিত্যবিচার অনেক বেশি Objective, সেখানে রচনার বাক্য গঠন, শব্দ ব্যবহারের অভ্যাস, দীর্ঘ ও হ্স্ববাক্য ব্যবহারের পৌনঃপুনিকতা, বিভিন্ন নামপদের সংখ্যাগত প্রাধান্য ক্রিয়া ও ক্রিয়াবিশেষণের অনুপাত, আতিশয্যমূলক শব্দের ব্যবহার ইত্যাদির ওপর জোর দেওয়া হয়।

শৈলীতে যে প্রকরণ (Tool) গুলি ব্যবহৃত হয়, সেগুলি হল一

(১) প্রমুখন (Foregrounding)

(২) বিচ্যুতি (Deviation) বা বিসারণ

(৩) সমান্তরালতা (Parallelism)

(8) কোড-বদল বা সংকেত বদল (Code switching)

(৫) বহুস্বরতা বা বহুধ্বনিময়তা (Polyphony)।

বক্তব্যকে পাঠকের সামনে নিয়ে আসাই হল প্রমুখন। ভাষার প্রতিষ্ঠিত ও প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে আসার ঘটনাই হল বিচ্যুতি। বাক্যের অধিগঠন এবং অধােগঠন—এই দুই স্তরেই হতে পারে বিচ্যুতি বা বিসারণ। একই কথার পৌনঃপুনিক ব্যবহারই হল সমান্তরালতা। একটি ভাষারীতির মধ্যে অন্যরীতির শব্দ বা বাক্যখণ্ড ব্যবহারকেই বলে কোড বদল। কোনা বড়াে আখ্যানে থাকা বহু, বিচিত্র চরিত্রগুলি রচনাতে ভিন্ন ভিন্ন স্বরকে প্রতিষ্ঠা করে এবং সেই স্বরগুলি রচনার জটিল বিন্যাসে গ্রথিত হয়। এটাই বহুস্বরতা।

সাহিত্য চর্চা কি

সাহিত্য কথার অর্থ হল পারস্পরিক সম্পর্ক।

সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ শুধু নিজেকে জেনেই থেমে থাকে নি। মানুষ অপরকেও জানতে চেয়েছে। জানানোর এই আনন্দ থেকেই সাহিত্যের সূচনা।

একদিকে বহিঃ প্রকৃতি অন্য দিকে মানব হৃদয় ও মনের চরিত্র সাহিত্যকের হৃদয়ের অন্তরে যে ঢেউয়ের উত্থান তার ভাষাগত প্রকাশই হল সাহিত্য।

সাহিত্য চর্চার জন্য কি প্রয়োজন, সাহিত্য চর্চার প্রয়োজনীয়তা

সাহিত্য পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম।

১. সাহিত্য আমাদের সত্য জানতে সাহায্য করে।

২. সাহিত্য মনুষ্যত্বের সর্বাঙ্গীন বিকাশ ঘটায়।

৩. সাহিত্য আমাদের ন্যায় অন্যায়ের বিচারে সাহায্য করে ও মুক্তি ও কল্যাণের পথে চালিত করে।

৪. সাহিত্য শুধুমাত্র নিজের ব্যক্তিগত চাহিদা মেটায় না, সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা সর্বকালীন মানুষ এবং অতীতের জীবন ধারাকে যেরকম জানতে পারি তেমনি অন্য ভাষার সাহিত্যের মধ্য দিয়ে অন্যান্য দেশের জীবনধারা সম্পর্কে ও জানতে পারি।

৫. সাহিত্যের মধ্য দিয়ে আমরা যেমন অতীত সম্পর্কে জানতে পারি তেমনি আমাদের নিজস্ব চিন্তাধারা ও ধ্যানধারণা কে আগত কালের জন্য লিপিবদ্ধ করে রাখতে পারি।

৬. সাহিত্য পাঠের মধ্য দিয়ে আমরা যেমন সামাজিক রীতিনীতি কে প্রকাশ করি ঠিক তেমনি আমাদের চিত্য যখন আবেগে ব্যাকুল তখন তা প্রকাশের উপায় হলো সাহিত্য।

আরো অন্যান্য প্রশ্নোত্তরের সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | শৈলীবিজ্ঞান

Q1. ভাষা শিক্ষণ শৈলী মানে কি

Ans – ভাষা শিক্ষণ হল একটি বিদেশী ভাষা বলতে এবং বুঝতে শেখার প্রক্রিয়া। এটি শিশুদেরকে ভাষার ব্যবহারিক কর্তৃত্ব অর্জন করতে সাহায্য করে। এটি ভাষা শিক্ষার মৌলিক দক্ষতা সম্পর্কে আরও ভালো বোঝার জন্য ইচ্ছাকৃত এবং সচেতন প্রচেষ্টার ফল।

Q2. শৈলী শব্দের অপর নাম কি

Ans – শৈলী শব্দের সমার্থক শব্দ ও অর্থ বা মানে হল রীতি, ধারা, ভঙ্গি ।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।