মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক কম্পিউটার ভাইরাস

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক কম্পিউটার ভাইরাস, Computer Virus, কম্পিউটার ভাইরাস

কম্পিউটার ভাইরাস কি, কম্পিউটার ভাইরাস কী, কম্পিউটার ভাইরাস কাকে বলে, কম্পিউটার ভাইরাস বলতে কি বুঝ

কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে এক ধরনের প্রোগ্রাম,যা কম্পিটারকে আপনার অনুমতি ছারা আপনার কম্পিউটার এ প্রবেশ করে আপনার সব প্রয়োজনীয় জিনিস নস্ট করে, তাই হল কম্পিউটার ভাইরাস।

কম্পিউটার ভাইরাস, এমন একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম বা ফাইল যে ব্যবহারকর্তার অনুমতি বা সচেতনতার ছাড়াই কম্পিউটারকে সংক্রমিত করে এবং আস্তে আস্তে পুরো কম্পিউটারে ছড়িয়ে যায়। এর বাইরে, ভাইরাস যেকোনো কম্পিউটারে কখন কিভাবে ঢুকে যেতে পারে, সেটা বুঝে পাওয়া অনেক কঠিন।

ভাইরাস এর মূল কাজ হলো, সে আপনার কম্পিউটার সিস্টেমে ঢুকে, অন্য প্রোগ্রাম বা ফাইল গুলিকে মোডিফাই করে নিজের কিছু ক্ষতিকারক কোড প্রোগ্রাম গুলিতে লিখে দেয়। এতে, আপনার কম্পিউটারের অন্যান্য প্রোগ্রাম ফাইল গুলি, সেই ক্ষতিকারক ভাইরাসটির মতেই কাজ করা শুরু করে দেয়।

কম্পিউটার ভাইরাস কে আবিষ্কার করেন, কম্পিউটার ভাইরাস কত সালে আবিষ্কৃত হয়

১৯৮৩ সালে ফ্রেডরিক বি কোহেন এমন একটি প্রোগ্রাম আবিষ্কার করেন যেটি নিজের প্রতিরূপ নিজে তৈরি করতে সক্ষম। তিনি তার শিক্ষক লিউনার্দো অ্যাডেলম্যানের পরামর্শে এর নাম দেন কম্পিউটার ভাইরাস।

প্রখ্যাত গবেষক “ফ্রেড কোহেন” কম্পিউটারের ক্ষতিকারক প্রোগ্রামের নামকরণ করেন Virux.

কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার, কম্পিউটার ভাইরাস কত প্রকার ও কি কি, কম্পিউটার ভাইরাসের প্রকারভেদ

কম্পিউটার ভাইরাস গুলির আক্রমণ করার বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে কম্পিউটার ভাইরাস কে ৩ টি শ্রেণীতে শ্রেণীভাগ করা হয় থাকে সাধারণত , যা হলো :

  1. বুট ভাইরাস (Boot Virus: এই কম্পিউটার ভাইরাস গুলি কম্পিউটারের বুটিং সিস্টেম কে আক্রমণ করে থাকে।
  2. প্রোগ্রাম ভাইরাস (Program Virus: এগুলি সাধারণত প্রোগ্রাম ফাইল কে আক্রমণ করে থাকে। যেমন যেসব ফাইল এর এক্সটেনশন .exe, .dil, .sys।
  3. ম্যাক্রো ভাইরাস (Macro Virus: এই ভাইরাস গুলি সাধারণত কম্পিউটারে রাখা ফাইল, ডেটা কে আক্রমণ করে।

কিছু বিশেষ ধরনেক computer virus রয়েছে যেগুলি ৯০% লোকেদের কম্পিউটারে গিয়ে ক্ষতি সাধন করে। সেগুলি হলো –

১. Worms –

এই ভাইরাস গুলিকে self -replicating  বলা হয়। মানে, এগুলি আপনার সিস্টেমে খুঁড়তে থাকে এবং আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পরে। এগুলি নিজেদের কোড এমন ভাবে বদলে নেয় যে, এগুলিকে খুঁজে বের করা অনেক কঠিন।

২. Trojans –

এই ধরণের ভাইরাস বেশিভাগ হ্যাকার (hacker) রা ছড়ায় এবং ব্যবহার করে। এদের দ্বারা, হ্যাকার রা আপনার কপম্পিউটারে ইন্টারনেট, নেটওয়ার্ক আদিৰ দ্বারা প্রবেশ করে তাতে থাকা পার্সোনাল এবং গুপ্ত তথ্য চুরি করে নিতে পারে।

৩. Browser Hijackers –

এই ধরণের কম্পিউটার ভাইরাস আপনার সিস্টেমে “ডাউনলোড” এর মাধ্যমে ঢুকে যেতে পারে। মানে, যখন আপনি কোনো ফাইল ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করেন, তখন এই ভাইরাস গুলি সেই ফাইলের সাথে “plugin” বা “extension” হিসেবে আপনার কম্পিউটারে ঢুকে যায়। আর, তারপর সেই virus গুলি আপনার web page বা ইন্টারনেট ব্রাউজারে অনেক রকমের ক্ষতিকারম বিজ্ঞাপন দেখায়, popup বিজ্ঞাপন দেখায়, আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে, অন্য ওয়েবসাইট খুলে যায়।

৪. Overwrite Viruses –

এই ভাইরাস গুলি আপনার কম্পিউটারে ঢুকে, সিস্টেম ফাইল বা যেকোনো ফাইল ডিলিট করে দিতে পারে। এবং, ফাইল ডিলিট করে এগুলি নিজের মতো সেই ফাইল গুলি এডিট কোরে আপনার সিস্টেমে ক্ষতি সাধন করে।

৫. Malware –

এই ধরণের সিস্টেম ভাইরাস বানানো হয় আপনার কম্পিউটারকে damaged (ক্ষতিগ্রস্থ) করার জন্য বানানো এবং ছড়ানো হয়। এগুলি বেশিভাগ, অন্য কম্পিউটার থেকে ফাইল কপি করার সময় এবং infected usb device ব্যবহার করার সময় আপনার সিস্টেমে ছড়ায়।

৬. Spyware –

spyware virus গুলির ব্যবহার করে, আপনার কম্পিউটার এবং ব্রাউসার ব্যবহারের ওপরে নজর রাখা হয়। এগুলি বেশিরভাগ ইন্টারনেট থেকে আপনার সিস্টেমে ঢুকতে পারে। তাহলে, ওপরে আমি কিছু সাধারণ এবং সবচেয়ে বেশি ছড়ানো কম্পিউটারের কিছু ভাইরাসের নাম বললাম। এগুলি সবচে বেশি, ইন্টারনেট এবং অন্যদের থেকে ফাইল কপি পেস্ট করার সময় আপনার কম্পিউটারে আসতে পারে।

৭. Adware virus –

এইগুলি আপনার কম্পিউটারে ইন্টারনেট থেকে কিছু ডাউনলোড করার সময় ঢুকে। এর বাইরেও, কিছু নিরাপত্তাহীন ওয়েবসাইটে গেলে নিজেরথেকেই এমন কিছু ফাইল popup এর মাধম্মে আপনার কম্পিউটারে ডাউনলোড হয়ে যায় যেগুলিতে এই adware ভাইরাস গুলো থাকে। এই ভাইরাস আপনার কম্পিউটারে ঢুকে নিজে নিজে বিজ্ঞাপনের ওপর বিজ্ঞাপন দেখাতে থাকে যেগুলি আপনি কোনো মতেই বন্ধ করতে পারবেন না।

কম্পিউটার ভাইরাস এর কাজ কি, কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে কাজ করে, কম্পিউটার ভাইরাস কিভাবে ছড়ায়

ভাইরাসটি কম্পিউটারে প্রবেশের পর মূলত যা করে, দুষিত বা ম্যালিসিওয়াস প্রোগ্রামটি ইউজারের পারমিশন নিয়ে একটিভ হয়ে যায়, এবং বৈধ কোডটি কার্যকর হবার আগেই সেটি কম্পিউটারের CPU মেমোরিতে লোড হয়ে যায়।

মেমোরিতে লোড হবার সাথে সাথে ভাইরাসটি বিভিন্ন প্রোগ্রাম, এপ্লিকেশনে আক্রমণ করে দ্রুত প্রসারিত হতে থাকবে এবং দুষিত বা বা ম্যালিসিওয়াস কোড ছড়াতে থাকবে।

ভাইরাসটি বুট সেক্টর ভাইরাস হোক বা বা অন্য ভাইরাস হোক, এটি আপনার সিস্টেমে ম্যালিসিওয়াস কোড ঢুকিয়ে দেয়, যাতে করে তারা যেকোনো প্রোগ্রাম বা ফাইল নিয়ন্ত্রণ এমনকি অপারেটিং সিস্টেম লোড হবার আগেই বুট সেক্টরে হানা দিতে পারে।

এইভাবে অপারেটিং সিস্টেমে কোড গুলো একটিভ হয়ে যায় এবং এর নির্মাতা যা চায় তাই হয়, যাকে অন্য ভাবে Payload ও বলা হয়। এর পর এটি আপনার কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক স্ক্যান করে, বিশেষ করে বিভিন্ন সেনসিটিভ তথ্য কালেক্ট করে যেমন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল এর পাসওয়ার্ড, ইউজার নেম, ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ইত্যাদি। এবং এই তথ্য গুলো ব্যবহার করে হ্যাকাররা কি করতে পারবে সেটা হয়তো ভাল ভাবেই বুঝতে পারছেন।

কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ

কম্পিউটার ভাইরাস গুলোর মধ্যে এমন অনেক ভাইরাস রয়েছে যে গুলো কম্পিউটারে প্রবেশ করলেও কোনো লক্ষণ দেখা যায় না।

কারণ, এক একটি ভাইরাসের এক একটি লক্ষণ দেখা যায়। আসলে এটা সম্পূর্ণ ভাবে নির্ভর করে আপনার কম্পিউটারে কোন ভাইরাস প্রবেশ করেছে সেটার উপর।

আপনি কম্পিউটারে যদি ইন্টারনেট চালু করলে নানা ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পান তাহলে বুঝতে হবে adware virus আপনার কম্পিউটারে আক্রমণ করেছে।

এমন ভাবে এক একটি ভাইরাসের লক্ষণ এক এক ধরনের হয়ে থাকে। তবে, নিচে কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকলে বুঝবেন এমন কিছু লক্ষণ নিচে উল্লেখ করেছি।

  • কম্পিউটার স্লো (slow) কাজ করবে।
  • কম্পিউটার ওপেন (open) হতে অনেক বেশি সময় নিবে।
  • কম্পিউটার নিজে নিজে রিস্টার্ট হয়ে যাবে। 
  • কম্পিউটার চলতে চলতে হটাৎ হ্যাং (hang) হয়ে যাবে। 
  • সফটওয়্যার গুলো ওপেন হতে সময় লাগবে।
  • ইনস্টল (install) করা সফটওয়্যার আনইনস্টল (uninstall) করতে পারবেন না।
  • ইন্টারনেট চালু করলে হঠাৎ বিজ্ঞাপন চলে আসবে।

১০ টি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম, কম্পিউটার ভাইরাসের নাম, কয়েকটি কম্পিউটার ভাইরাসের নাম, কম্পিউটার ভাইরাস নাম

(১) Cryptolocker

২০১৩ সালে ইমেইল অ্যাটাচমেন্টের মাধ্যমে এই ভাইরাসের আগমন ঘটে। এই ভাইরাস আক্রমণের ফলে কম্পিউটারের ফাইল গুলো ব্লক করে দেয়।

এবার কম্পিউটারের স্কিনে একটা অফার দেখতে পাবেন যেখানে বলা হবে অর্থের বিনিময়ে আপনি কম্পিউটারের ডাটা গুলো ফেরত নেওয়ার জন্য।

Cryptolocker ভাইরাসের প্রধান কাজ কম্পিউটারের ডাটা গুলো জিম্মি করে অর্থ আদায় করা। আপনি চাইলে কম্পিউটার থেকে এই ভাইরাস ডিলিট করে দিতে পারবেন কিন্তু ডাটা গুলো ফেরত নিতে পারবেন না।

২০১৪ সালে এই ভাইরাস প্রতিরোধ করার আগে প্রায় ৩ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে এর মূল হোতা।

(২) Sasser & Netsky

মাত্র ১৭ বছর বয়সে জার্মানির এক কিশোর দুটো প্রোগ্রাম তৈরি করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়। এই দুইটা প্রোগ্রামের মধ্যে তেমন কোনো মিল না থাকলেও কোডিং মিল ছিলো।

যার ফলে নিরাপত্তা নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সহজে বুঝতে পারেন এই দুইটা প্রোগ্রাম তৈরি করেছে একই ব্যাক্তি। 

এই ভাইরাস ছড়ানো হলো ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করে। আপনার কম্পিউটার সিস্টেমের দুর্বলতা খুঁজে বের সিস্টেমের সাথে সংযোগ স্থাপন করে স্যাসার ডাউনলোড করতে বাধ্য করবে।

এভাবে স্যাসার পুরো কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে। একবার পুরো কম্পিউটারে স্যাসার ছড়িয়ে পড়লে সেটা বন্ধ করা সম্ভব হতো না।

তখন এটাকে প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় হলো কম্পিউটারের পাওয়ার ক্যাবল খুলে ফেলা। এটা মূলত ইমেইল এবং উইন্ডোজ ব্যবহার করে ছড়িয়ে পড়ে।

(৩) Storm Worm

২০০৬ সালের দিকে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এই ভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে বের করেন। Storm Worm হচ্ছে এক ধরনের ট্রোজান হর্স প্রোগ্রাম।

এর কিছু সংস্কারণ কম্পিউটারকে সয়ংক্রিয় রোবটে পরিনত করে। কম্পিউটার এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে পুরো নিয়ন্ত্রণ ভাইরাসের হোতা নিয়ে নেই।

২০০৮ সালে বেইজিং অলিম্পিকের কিছু দিন আগে ইমেইলের মাধ্যমে এর নতুন সংস্কারণ ছড়িয়ে পড়ে। ইমেইলের মাধ্যমে লেখা গুলো এমন থাকতো যাতে যেকেউ দেখে ইমেইল ওপেন করবো।

(৪) Nimda

২০০১ সালে এই nimda virus এর যাত্রা শুরু হয়। এই ভাইরাস এতোটাই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়েছিলো যে অন্য ভাইরাসের রেকর্ড ভাঙতে মাত্র ২২ মিনিট সময় নিয়েছিলো।

প্রথমে এটা ইন্টারনেট সার্ভারকে লক্ষ্য করে ইন্টারনেটে ঢুকে পড়ে। তারপর ইমেইলের মাধ্যমে ও কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

এই ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করে পুরো কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় যিনি ভাইরাস তৈরি করেছেন সেই হোতা।

(৫) MyDoom

Nimda virus এর মতো আর একটি ভাইরাস হলো মাইডুম। মূলত এই ভাইরাস দুইটি ধাপে ইন্টারনেটে প্রবেশ করে। 

এই ভাইরাস কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে কম্পিউটার থেকে ডাটা চুরি করার জন্য চোরকে দরজা খুলে দেয়।

(৬) The Klez Virus

২০০১ সালের শেষের দিকে এই ভাইরাসের আগমন ঘটে। এই ভাইরাসের আক্রমণে কয়েক মাস ধরে কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা তটস্থ হয়েছিল।

অন্যান্য ভাইরাস গুলোর মতো এই ভাইরাস ইমেইল এবং মেসেজের মাধ্যমে কম্পিউটারকে আক্রমণ করতো।

(৭) Code Red and Code Reed 2

২০০১ সালে এই দুইটা ভাইরাসের আগমন ঘটে। এই ভাইরাস কম্পিউটারে buffer overflow problem সৃষ্টি করতো।

এর ফলে কম্পিউটার যতটুকু বাফার নিয়ন্ত্রণ করে তার থেকে বেশি বেশি ডাটা গ্রহণ করতে শুরু করে।

(৮) Melissa

১৯৯৯ সালে ডেভিড এল স্মিথ নামে এক ব্যাক্তি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ভিত্তিক এই melissa virus তৈরি করেন। তিনি এমন ভাবে এটাকে তৈরি করেন যাতে সহজে ইমেইল এর মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

ডেভিড এল স্মিথ পরবর্তী সময়ে পুলিশের হাতে এই ভাইরাস তৈরি করার জন্য ধরা পড়েন। এর জন্য তাকে ২০ মাসের জেল এবং ৫০০ ডলার জরিমানা করা হয়।

(৯) ILoveYou

আই লাভ ইউ ভাইরাস কে তৈরি করেন তাকে খুঁজে বের করা যায়নি। তবে, অনেকে ধারণা করেন ওনার দে গজম্যান এই ভাইরাস তৈরি করেছেন।

এই ভাইরাস ইমেইলের মাধ্যমে কম্পিউটার ছড়িয়ে দেওয়া হতো। ইমেইলে আপনাকে এমন রোমান্টিক ভাবে মেইল করা হবে যাতে আপনি মেইল ওপেন করেন।

(১০) SQL Slammer

২০০৩ সালে জানুয়ারি মাসে এই নতুন ভাইরাস SQL Slammer কম্পিউটারের ওয়েব সার্ভারে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কম্পিউটার ডিভাইস গুলো মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।

যার ফলে ব্যাংক অব আমেরিকা এর এটিএম সার্ভার ক্রাশ করে নিয়েছিলো। ধারণা করা হয় এই ভাইরাসের কারণে ১ বিলিয়ন এর বেশি ডলার ক্ষতি হয়েছে।

কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধের উপায়, কম্পিউটার ভাইরাস মুক্ত রাখার উপায়

কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকতে বাধা দেওয়া বা ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।

সাধারণত কম্পিউটারে ৭০% ভাইরাস ঢুকে ইন্টারনেট ব্যবহার করার মাধ্যমে। কিন্তু, এই ভয়ে তো আমরা আর ইন্টারনেট ব্যবহার করা বাদ দিতে পারবো না।

তবে, কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক ভাবে থাকতে হবে। তাছাড়া নিচের নিয়ম গুলো মেনে চলুন।

  • কম্পিউটারে অবশ্যই পেইড এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করুন।
  • এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার সব সময় আপডেট (up to date) রাখবেন।
  • ইন্টারনেটে থাকা বিশ্বাস্ত ওয়েবসাইট থেকে সফটওয়্যার সহ অন্যান্য ডাটা ডাউনলোড করবেন।
  • অন্যের USB ড্রাইভ ব্যবহার করার সময় যাচাই করে নিন ভাইরাস আছে কিনা।
  • কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করার সময় ইন্টারনেট সিকিউরিটি এন্টিভাইরাস ব্যবহার করুন।

কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হলে কি কি অসুবিধা হয়, কম্পিউটার ভাইরাস কি কি ক্ষতি করে

কম্পিউটার ভাইরাস যেভাবে কম্পিউটারে ক্ষতি করে তা হলো :

  • কোনো কোনো ভাইরাস চালু কম্পিউটারকে চলতে চলতে স্থির করে দেয়, যখন ওই অসহায় কম্পিউটারকে বন্ধ (shut down) করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় থাকে না। ফলে অনেক মূল্যবান, সেভ না-করা ডাটা নষ্ট হয়ে যায়।
  • কোনো কোনো ভাইরাস হার্ড ডিস্কের বুট সেক্টরকে (Boot Sector) আক্রান্ত করে তাকে অকেজো করে ফেলে। তখন হার্ড ডিস্ক ফরম্যাট করা ছাড়া উপায়ান্তর থাকে না। ফলে অনেক প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান ফাইল বা ডাটাকে হারাতে হয়।
  • বায়োসের (BIOS) সব প্রোগ্রাম মুছে দিয়ে কম্পিউটারকে অচল করে দিতে পারে, যা তখন একটি কালো বাক্সে পরিণত হয়।
  • অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল ব্যবহৃত কোনো প্রোগ্রামের এক্সিকিউটেবল ফাইলকে আক্রমণ করে তাকে অচল (corrupt) করে ফেলে, ফলে প্রোগ্রামটি তার কার্য করার ক্ষমতা নষ্ট করে ফেলে।
  • কোনো কোম্পানির ওয়েব পেজের তথ্যগুলিকে বিকৃত করে তার ব্যাবসায়িক ক্ষতি করে। ফলে তার বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ও ব্যবসায়িক ভাবমূর্তি উভয়ই নষ্ট হয়।
  • আবার, প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো কোম্পানির কম্পিউটারাইজ কর্পোরেট সিস্টেমে ভাইরাস অনুপ্রবেশ করে। অনেক গোপন তথ্য অপরকে পাচার করে ওই কোম্পানির প্রভূত ক্ষতি করতে পারে।
  • কিছু ভাইরাস সামান্য কিছু বিট ডাটা পরিবর্তন করে হিসাব-নিকাশের বিরাট তারতম্য ঘটায়, যা অর্থনৈতিক ক্ষতিকে অবর্ণনীয় করে তোলে।
  • আবার, দরকারি কোনো কোনো প্রোগ্রামের সামান্য কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে তার স্বাভাবিক কাজকর্মকে অস্বাভাবিক করে তোলে এবং ক্ষতির পরিমাণকে অকল্পনীয় করে তোলে। যেমন এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল বা নিরাপত্তা কার্যক্রমের সামান্য হেরফের ঘটিয়ে মানুষ মৃত্যুর কারণ সৃষ্টি করে।
  • কোনো কোনো ভাইরাস হার্ড ডিস্ক সম্পূর্ণ ফরম্যাট (Format) করে সব গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম ও তথ্য মুছে দিতে পারে।

এককথায় ভাইরাসের ক্ষতি করার পরিমাণ অসীম।

কম্পিউটার ভাইরাস প্রতিরোধ করতে হলে কোনটি প্রয়োজন

ভাইরাস কম্পিউটারে ঢুকতে বাধা দেয়ার জন্য আপনার অনেক কিছু মেনে চলতে হবে। আপনি যদি, ইন্টারনেট ব্যবহার করেননা, তাহলে ভাইরাস ঢুকার তেমন সুযোগ হয়না। কিন্তু, যদি আপনি কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তাহলে আপনার সতর্ক থাকার অনেক প্রয়োজন।

  1. একটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার কম্পিউটারে অবশই ব্যবহার করবেন। Avast, Kaspersky আদি আপনি ফ্রীতেই পেয়েযাবেন। এন্টিভাইরাস, আপনার কম্পিউটারে বাইরের থেকে ভাইরাস ঢুকতে দিবেনা।
  2. অপ্রয়োজনীয় পপ আপ বিজ্ঞাপন গুলোতে কখনো ক্লিক করবেননা।
  3. যদি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাহলে internet security antivirus ব্যবহার করবেন।
  4. নিজের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার গুলি up to date করে রাখবেন।
  5. যেকোনো ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করবেননা। কেবল বিশ্বাসী এবং ভরসা যোগ্য ওয়েবসাইটে যাবেন বা তাদের থেকে ফাইল ডাউনলোড করবেন।
  6. ফ্রি সফটওয়্যার ডাউনলোড করার আগে ভালো করে যাচাই করবেন।
  7. অন্যদের পেনড্রাইভ (pendrive), hard drive বা যেকোনো USB Device থেকে ফাইল কপি করার আগে যাচাই করেনিবেন। সেখানে ভাইরাস থাকতে পারে।
  8. আপনার ইমেইলে চলেআসা ফাইল বা এটাচমেন্ট গুলো স্ক্যান না করে খুলবেননা।

এগুলি সাধারণ জিনিসের লক্ষ রাখলে আপনার কম্পিউটারে কোনোদিন ভাইরাস ঢুকতে পারবেনা।

সত্যিকারের ভাইরাস ও কম্পিউটার ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য

কম্পিউটার ভাইরাসেরসত্যিকারের ভাইরাস
কম্পিউটার ভাইরাস একটি দূষিত প্রোগ্রাম, যা নিজেকে প্রতিলিপি এবং কার্যকর করার ক্ষমতা রাখে।জৈবিক ভাইরাস একটি জীবন্ত প্রাণী যা মানবদেহে প্রবেশ করে এবং বিভিন্ন ধরণের রোগ সৃষ্টি করে।
এটি একটি মানবসৃষ্ট প্রোগ্রাম।এটি একটি প্রাকৃতিক জীব।
এটি প্রোগ্রামের সাথে সংযুক্ত হতে পারে এবং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নিজেকে ছড়িয়ে দিতে পারে।এটির বিস্তারের পরিমাণ কম।
এটি জীবিত প্রাণীদের প্রভাবিত করতে পারে না।এটি জীবন্ত প্রাণীদের প্রভাবিত করে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | কম্পিউটার ভাইরাস কি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

Q1. কম্পিউটার এন্টিভাইরাস কি ?

Ans – এন্টিভাইরাস হলো একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম যেটাকে তৈরি করা হয়েছে আপনার কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থেকে ভাইরাস এবং অন্যান্য ধরণের দূষিত সফ্টওয়্যার গুলোকে খুঁজে বের করতে এবং সেগুলোকে কম্পিউটার থেকে রিমুভ করতে। দূষিত সফটওয়্যার বলতে এখানে বিভিন্ন ম্যালওয়্যার ভাইরাস গুলোর কথা বলা হয়েছে।

Q2. ম্যালওয়্যার কি ?

Ans – ম্যালওয়্যার হলো এমন এক ধরণের সফটওয়্যার যেটাকে সাইবার অপরাধী দলের দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকে কম্পিউটার সিস্টেম থেকে তথ্য চুরি করা এবং কম্পিউটারের ক্ষতি সাধনের উদ্দেশ্যে। কিছু ম্যালওয়্যার ভাইরাস এর উদাহরণ হচ্ছে, worms, Trojan viruses, spyware, adware, and ransomware ইত্যাদি।

Q3. প্রথম কম্পিউটার ভাইরাসের নাম কি?

প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস হচ্ছে Creeper.
ম্যাথমেটিশিয়ান জন ভন নিউম্যান ১৯৪৯ সালে কম্পিউটার প্রোগ্রামগুলোকে নিজে থেকেই পরিবর্তন করতে পারে এমন একধরণের প্রোগ্রামের নাম কম্পিউটার ভাইরাস এবং ওর্মস দিয়ে একটি থিউরি প্রদান করে গিয়েছিলেন। তার এই থিউরী মোতাবেক দুনিয়ার প্রথম কম্পিউটার ভাইরাস হিসেবে ক্রিপার কে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।

নতুন আধুনিক কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন ক্লাস 12

নতুন আধুনিক কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন ক্লাস 12

চিন্ময় গুহ | আশুতোষ পাল (লেখক)


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।