ব্যবস্থাপনা কাকে বলে, ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

ব্যবস্থাপনা কি, ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

একটি প্রতিষ্ঠান উদ্দেশ্য অর্জনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করে সেগুলোকে একত্রে ব্যবস্থাপনা বলে।

প্রশ্ন হতে পারে প্রয়োজনীয় সম্পদগুলো কী? প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ, বস্তুগত সম্পদ, আর্থিক সম্পদ ও তথ্য সম্পদ হলো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় সম্পদ। আর এ সম্পদের ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মসংস্থান, নির্দেশনা ও নেতৃত্বদান, সমন্বয় সাধন, প্রেরণা এবং নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। ব্যবস্থাপনা বিশারদগণ ব্যবস্থাপনাকে বিভিন্নভাবে ব্যাখা করেছেন। এবার আসুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিই।

ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞা

আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল (Henri Fayol) ম্যানেজমেন্ট কাকে বলে? এর উত্তরে বলেন, “ব্যবস্থাপনা হলো পূর্বানুমান ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা, সংগঠিত করা, নির্দেশ প্রদান, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ।”

জর্জ আর, টেরি (George R. Terry) ব্যবস্থাপনা কাকে বলে? এর উত্তরে বলেছেন, “ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি স্বতন্ত্র সামাজিক প্রক্রিয়া যা মানুষ ও সম্পদসমূহের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষ্যে উদ্দেশ্য নির্ধারণ ও তা অর্জনের নিমিত্তে পরিকল্পনা, সংগঠন ও নিয়ন্ত্রণ কাজের সাথে সম্পৃক্ত।”

সুতরাং উপরোক্ত আলোচনা থেকে ব্যবস্থাপনা বা ম্যানেজমেন্ট কাকে বলে? এর উত্তরে বলা যায় যে, পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন উপকরণ তথা মানব সম্পদ, যন্ত্রপাতি, পদ্ধতি ইত্যাদির কাম্য ব্যবহার কল্পে কর্মীবৃন্দের যৌথ প্রচেষ্টায় ব্যবহৃত পরিকল্পনা, সংগঠন, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণের সুস্পষ্ট সামাজিক প্রক্রিয়াকে ব্যবস্থাপনা বা ম্যানেজমেন্ট বলে।

ব্যবস্থাপনা কত প্রকার

প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রকারের ব্যবস্থাপক থাকেন। প্রতিষ্ঠানের স্তর অনুযায়ী ব্যবস্থাপকদের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।। ব্যবস্থাপনার স্তর বলতে প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান নানা ধরনের ব্যবস্থাপক থাকে তাদের পদমর্যাদাগত অবস্থানকে বোঝানো হয়। বড় প্রতিষ্ঠানে সাধারণত তিন ধরনের ব্যবস্থাপনার স্তর বিদ্যমান উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন। এই স্তরের ভিত্তিতে ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারিত হয়।

উচ্চ ব্যবস্থাপনা | Top Management

উচ্চ ব্যবস্থাপনা স্তরের ব্যবস্থাপকগণ সংগঠনের নীতিমালা প্রণয়ন ও সকল কাজের সমন্বয় সাধন করেন। এ স্তর পুরো সংগঠনের কাজের জন্য দায়ী। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভেদে ব্যবস্থাপকদের পদবির নাম ভিন্ন হতে পারে।

একটি বেসরকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে এ স্তরে সাধারণ প্রেসিডেন্ট, বোর্ড অব ডাইরেক্টরস-এর চেয়ারম্যান, বোর্ডের নির্বাহী কমিটি, প্রধান নির্বাহী অফিসার এবং মুখ্য ভাইস প্রেসিডেন্ট অন্তর্ভুক্ত থাকেন, এরা সাধারণত কর্তৃপক্ষ হিসেবে বিবেচিত। এ স্তরের ব্যবস্থাপকগণ প্রতিষ্ঠানের নীতি এবং দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

মধ্যম ব্যবস্থাপনা | Middle Management

মধ্যম ব্যবস্থাপনা স্তরে সবচেয়ে বেশি ব্যবস্থাপক থাকেন। বিভাগীয় প্রধান, ফ্যাক্টরি ম্যানেজার, কর্মী পরিচালক, উৎপাদন ম্যানেজার ইত্যাদি। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নীতি প্রণয়ন এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণ করেন। এরপর মধ্যম স্তরের ব্যবস্থাপকগণ এ নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা ও কার্য পদ্ধতি তৈরি করেন। এরপর বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

অপারেটিং ব্যবস্থাপনা | Operating Management

ব্যবস্থাপনার তৃতীয় স্তর হলো অপারেটিং স্তর। এ স্তর সংগঠনের নিম্ন স্তরের ব্যবস্থাপকদের সাথে সম্পর্কিত। এ স্তরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের সর্বনিম্ন পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণ; যথা-সহকারী ব্যবস্থাপক, জুনিয়র এক্সিকিউটিভ, সুপারভাইজার বা ফোরম্যান। এরা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রণীত নীতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্বে নিয়োজিত থাকেন।

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি, ব্যবস্থাপনার কাজ কয়টি ও কি কি

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে এর মানবীয় ও অমানবীয় (Human & Non-human) উপকরণের সঠিক ব্যবহার ও সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য ব্যবস্থাপকগণ যেসব কাজ সম্পাদন করেন, সেগুলোকেই ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি বলে।

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি সম্পর্কে বিভিন্ন লেখক বিভিন্ন রকম মতামত দিয়েছেন। তবে আধুনিক লেখকদের মতে ব্যবস্থাপনার মুখ্য কাজ চারটিঃ পরিকল্পনা, সংগঠন, নেতৃত্বদান ও নিয়ন্ত্রণ।

এগুলোর ভেতরে আরও প্রাসঙ্গিক কাজ রয়েছে। যেমন কর্মীসংস্থান, বেষণা ও সমন্বয়সাধন ইত্যাদি। ব্যবস্থাপনার কার্যসমূহ ধারাবাহিকভাবে সম্পাদিত হয় বিধায় এগুলোকে ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াও বলা হয়।

ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্যবস্থাপক যেসব কার্যাবলি সম্পাদন করে থাকে তাকে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি বলে। প্রত্যেক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে। ব্যবস্থাপকের কাজ হল প্রয়োজনীয় উপাদানের সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কার্যাবলির দ্বারা উক্ত লক্ষ্য অর্জন করা। আর এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি ঘূর্ণায়মানচক্রে আবর্তিত হয়। বিভিন্ন ব্যবস্থাপনা বিশারদের দৃষ্টিতে ব্যবস্থাপনা কার্যাবলি হল :

  • Stoner ও অন্যদের মতে, “ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া হল কর্মসম্পাদন বা কর্ম পরিচালনার প্রণালীবদ্ধ পদ্ধতি বিশেষ।”
  • আইরিচ ও কুঞ্জ এর মতে, “ব্যবস্থাপনার কার্যাবলি হল পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নেতৃত্বদান ও নিয়ন্ত্রণ।”
  • হিকস্ ও গুল্পেট এর মতে, “পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভাবন ও উপস্থাপন।”
  • হেনরী ফেয়ল এর মতে, “পূর্বানুমান পরিকল্পনা, সংগঠন, আদেশদান, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ।”
  • আরনেস্ট ডেল এর মতে, “পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, নিয়ন্ত্রণ, উদ্ভাবন ও উপস্থাপন।”
  • এল. গুলিক এর মতে, “পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, সমন্বয় সাধন, রিপোর্ট প্রদান ও বাজেট প্রণয়ন।”
  • আমরা এল. গুলিকের কার্যাবলি নিম্নলিখিত উপায়ে উপস্থাপন করতে পারি- POSDCORB, এখানে:

P = Planning (পরিকল্পনা)
O= Organising (সংগঠন)
S = Staffing (কর্মীসংস্থান)
D = Directing (নির্দেশনা)
CO = Co-ordinating (সমন্বয় সাধন)
R = Reporting (প্রতিবেদন পেশ)
B = Budgeting (বাজেটকরণ)

  • Linder R. Wreck এর মতে, “পূর্বানুমান, পরিকল্পনা, সংগঠন, আদেশদান, সমন্বয় সাধন ও নিয়ন্ত্রণ।”

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী বর্ণনাসহ ব্যাখ্যা

নিম্নে ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী বর্ণনা করা হল

পরিকল্পনা | Planning

কোন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে হলে অবশ্যই পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যাবলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করা যায়। একটা প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলি কিভাবে সম্পাদন করতে হবে তা ব্যবস্থাপকের উপর বর্তায়। একজন ব্যবস্থাপক কিভাবে কার্যাবলি সম্পাদন করবে, কখন করবে, কোন সময় করবে তার জন্য ক’টা সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে, আর এটাই হল পরিকল্পনা। প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যাবলি নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় কৌশল নির্ধারণ, বিভিন্ন প্রকার পলিসি, নীতি ও তা প্রণয়ন সবই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত।

সংগঠন | Organization

পূর্বের নির্ধারণ করা কার্যাবলি যথাসময়ে সম্পাদন করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলির সাথে সংশ্লিষ্ট সকল জনশক্তির সমন্বয় সাধন আবশ্যক। সংগঠনের তত্ত্বাবধানে যেসব জনশক্তি থাকে তাদের মাঝে কার্যাবলি যথানিয়মে ভাগ করার নাম সংগঠন। আর এর ফলে কর্মীরা তাদের উপর অর্পিত কার্যাবলি যথাসময়ে সম্পন্ন করে ফেলতে পারে। ব্যবস্থাপনা বিশারদ Bartol and Martin এর মতে, “মানবীয় ও বস্তুগত সম্পদসমূহের যথাযথ বণ্টন ও বিন্যাস প্রক্রিয়াই হল সংগঠিতকরণ। এর ফলাফলস্বরূপ সফলতার সাথে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়।”

নির্দেশনা | Directing

প্রতিষ্ঠানের কার্যাবদি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য প্রয়োজন যথাযথ নির্দেশনা। নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যবস্থাপকগণ কর্মভার অর্পণের সাথে সাথে কার্যসম্পাদনের কৌশল ও প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন। এ প্রসঙ্গে Earnest Dale বলেছেন, “কি করতে হবে তা কর্মীদের অবহিত করা এবং তারা সামর্থ্য অনুযায়ী তা সম্পাদন করেছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করাই নির্দেশনা।” তাই শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের কর্মী নিয়োগ করে বসে থাকলে চলবে না, কর্মী কখন কোন কাজ কিভাবে করবে, তার জন্য প্রয়োজন সুস্পষ্ট নির্দেশনা।

কর্মীসংস্থান | Staffing

সাংগঠনিক কাঠামো নির্ধারণের পর ব্যবস্থাপনার অন্যতম কাজ হল বিভিন্ন স্তরে কাজের প্রকৃতি অনুযায়ী যোগ্যতাসম্পন্ন প্রয়োজনীয় কর্মী যোগাড় ও এতদসংক্রান্ত কার্যাদি সম্পন্ন করা। J. L. Massie বলেছেন, “কর্মী সংস্থান হল সেই পদ্ধতি, যার মাধ্যমে ব্যবস্থাপকগণ তাদের অধঃস্তন কর্মীদের নির্বাচন করেন, প্রশিক্ষণদেন, পদোন্নতি প্রদান করেন এবং পরিশেষে অবসর গ্রহণ করান।” দক্ষ ও যোগ্য কর্মী সংস্থানের উপর প্রতিষ্ঠানের সফলতা নির্ভর করে।

প্রেরণা | Motivation

ব্যবস্থাপনার কার্যাবলিতে প্রেরণা একটি মনস্তাত্বিক প্রক্রিয়া। প্রেরণার মাধ্যমে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ততা বৃদ্ধি পায়। ফলে কর্মে মনোযোগ সৃষ্টি হয়। কাজের জন্য কর্মীদের শুধুমাত্র আদেশ দিলেই চলে না, ব্যবস্থাপনাকে প্রয়োজনীয় উৎসাহ সৃষ্টি ও তা ধরে রাখার প্রয়াস চালাতে হয়। তাই প্রেরণা হল কর্মীবৃন্দের কার্যক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে তাদের অনুপ্রাণিত উৎসাহিত ও প্ররোচিত করার প্রক্রিয়া।

Michael Julius এর মতে, ” প্রেরণা হল ব্যবস্থাপনা কর্তৃক সেইধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ, যা কর্মীবৃন্দকে নির্ধারিত কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে উৎসাহিত ও প্রণোদিত করে।

গবেষণা ও বিশ্লেষণ | Research and Analysis

পরিবেশ এবং পারিপার্শ্বিকতা প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। এ পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে খাপখাইয়ে নেওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য প্রয়োজনীয় গবেষণা ও বিশ্লেষণ করা ব্যবস্থাপনার একটি ঐচ্ছিক কাজ।

যোগাযোগ | Communication

ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ অনেকটা একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। কেননা ব্যবস্থাপনা যোগাযোগের মাধ্যমেই পূর্ণাঙ্গতা লাভ করে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে শুরু করে বাস্তবায়ন পর্যন্ত সর্বস্তরে যোগাযোগ ও মত বিনিময় করতে হয়।

সমন্বয় সাধন | Co-ordinating

একটা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনের জন্য অনেক বিভাগ কাজ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য এসব বিভাগের কাজকর্মগুলোর সমন্বয় সাধন করা হয়ে থাকে। নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যে সমন্বয় সাধন আবশ্যক:

  • ক. ত্রুটিবিচ্যুতি রোধ করা।
  • খ. আন্তঃবিভাগের সাথে একযোগে কাজ করা।
  • গ. দলীয় সমঝোতা।
  • ঘ. পারস্পরিক সহযোগিতা।

সুতরাং সমন্বয় একটা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সহযোগিতা, শৃঙ্খলা রক্ষা এবং কাজের প্রতি যত্নশীল হওয়ার পিছনে বিরাট ভূমিকা পালন করে।

রিপোর্টিং | Reporting

প্রতিষ্ঠানে যেসব কর্মচারী কাজকর্ম করেন তাদের কাজকর্মের উপাত্ত, তথ্য সংগ্রহ করা হয়। একজন শ্রমিকের যেভাবে কাজকর্ম করা উচিত এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি তার যতটুকু দায়িত্ব কর্তব্য আছে তার কতটুকু পালন করছে, কি পরিমাণ শ্রম দিচ্ছে সবকিছুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট রিপোর্ট করা হয়। তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। রিপোর্টিং এর ফলে কর্মীগণ স্ব স্ব কাজের প্রতি যত্নবান এবং দায়িত্ববান হয়ে থাকে।

বাজেটিং | Budgeting

প্রাতিষ্ঠানিক কার্যাবলি সঠিক ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার জন্য যেমন দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন তেমনি সাথে সাথে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ আবশ্যক। বাজেটিং প্রতিটি বিভাগের জন্য কি পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন তা বিশ্লেষণ করে অর্থসংস্থান করে থাকে। যার মাধ্যমে কাজকর্ম সঠিকভাবে সম্পন্ন করা যায়। মূলত উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য গৃহীত পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করার জন্য যে অর্থ ব্যয় হবে তার পূর্ব নির্ধারণকেই বাজেটিং বলে।

নিয়ন্ত্রণ | Controlling

সাধারণত পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রতিটি কাজকর্ম সম্পাদিত হচ্ছে কি না তা যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিমাপ করা হয় তাকে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বলে থাকে। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রথমত কাজে যদি কোন ত্রুটিবিচ্যুতি ইত্যাদি থেকে থাকে। তাহলে সেটা সংশোধন করে নেওয়ার জন্য তাগিদ দিতে হবে। এ সম্বন্ধে Mary Niles বলেছেন, “An aspect and projection of planning.” অর্থাৎ, নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার ভিত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়।

উপরিউক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, বাস্তবক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার যেসব কার্যাবলি পরিলক্ষিত হয় তা সম্পূর্ণভাবে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য তথা উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য পর্যায়ক্রমে সংগঠন, নির্দেশনা, সমন্বয় সাধন, প্রেষণা ও নিয়ন্ত্রণ কার্যাবলি সম্পাদিত করতে হয়।

ব্যবস্থাপনার মূলনীতিগুলো কি কি

নীতি হচ্ছে সুনির্ধারিত ও সুপ্রতিষ্ঠিত আইন বা নিয়ম, যার উপর নির্ভর করে যথাযথ কর্মসূচিও কর্মপন্থা প্রণয়ন করা হয়। 

ব্যবস্থাপনা পারিপার্শ্বিক অবস্থার দ্বারা সবসময় প্রভাবিত হওয়ায় এ পর্যন্ত ব্যবস্থাপনার কোন বাঁধাধরা নিয়মনীতি নির্দিষ্ট করা সম্ভব হয় নি। এ কারণে যুগে যুগে বিভিন্ন মনীষীগণ বিভিন্ন অবস্থাদি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে বিভিন্ন প্রকারের নীতিমালা নির্দিষ্ট করার প্রয়াস পেয়েছেন। তন্মধ্যে হেনরি ফেয়ল প্রদত্ত ১৪টি নীতিইসবচেয়ে গ্রহণযোগ্য। হেনরি ফেয়লের ১৪টি নীতিমালাই ব্যবস্থাপনার মূলনীতি হিসেবে মানা হয়। 

এ প্রসঙ্গে N. C, Roy Chowdhury বলেছেন, “Fayol’s principles of management still live bright star among the stars.”

ব্যবস্থাপনার ১৪ টি মূলনীতি বা নীতিমালা । নিম্নে ব্যবস্থাপনার নীতিসমূহ আলোচনা করা হল।

কার্যবিভাগ | Division of work

কার্যবিভাগ ব্যবস্থাপনার একটি উল্লেখযোগ্য নীতি। এ নীতি অনুসারে একটি সংগঠনের বিভিন্ন কার্যের প্রকৃতি অনুযায়ী এদেরকে বিভাগ করে যোগ্যতানুসারে কর্মীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। ফলে দক্ষতা ও নিপুনতার সাথে শুধু কার্যসম্পাদনই হয় না, কর্মীদের কর্ম নিপুনতা এবং দক্ষতাও বৃদ্ধি পায়। এ প্রসঙ্গে Weihric and Koontz এর মতে, “দক্ষতার সাথে শ্রমিক ব্যবহার করে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করাকে কার্যবিভাগ বলে।” (Division of work is the specialization that economists consider necessary for efficiency in the use of labour.)

ক্ষমতা ও দায়িত্ব | Balancing authority and responsibility

প্রতিষ্ঠানে যখন কোন অধস্তন নির্বাহি বা কর্মীকে দায়িত্ব অর্পণ করা হবে তখন তা সম্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষমতাও তাকে প্রদান করতে হবে। অন্যথায় উক্ত নির্বাহি বা কর্মীর পক্ষে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না। এ প্রসঙ্গে Henri Fayol এর মতে, “Authority and responsibility to be related.” অর্থাৎ, দায়িত্বের সাথে ক্ষমতা বা কর্তৃত্বের সম্পর্ক থাকতে হবে। সুতরাং কর্তৃত্ব ও দায়িত্বের মধ্যে সবসময় সমতা বা ভারসাম্য থাকা উচিত।

নিয়মানুবর্তিতা | Discipline

সংগঠনের নির্ধারিত নিয়মনীতির প্রতি সকলের শ্রদ্ধাবোধ এবং তা মেনে চলার প্রতি ঐকান্তিক আগ্রহ প্রাতিষ্ঠানিক সফলতা অর্জনের জন্য অপরিহার্য। হেনরী ফেয়ল ব্যবস্থাপনার সকল স্তরে নিয়মানুবর্তিতা প্রতিষ্ঠার জন্য গতানুগতিক শান্তিদান নীতির পরিবর্তে উত্তম তত্ত্বাবধানের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এ প্রসঙ্গে Henri Fayol এর মতে, “Discipline requires good superiors at all levels.” অর্থাৎ, ভালো ব্যবস্থাপকের সকল পর্যায়ে নিয়মানুবর্তিতা প্রয়োজন।

আদেশের ঐক্য | Unity of command

এ নীতির মূলকথা হল প্রত্যেক কর্মী একজন মাত্র Boss বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে আদেশ ও নির্দেশ প্রাপ্ত হবে। কারণ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একাধিক হলে কর্মীর পক্ষে সকলের আদেশ অনুসরণ করা অসম্ভব হয়ে পড়বে এবং তাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে কর্মীর পক্ষে দক্ষতার সাথে কার্যসম্পাদন করা সম্ভব হবে না। তাই সুষ্ঠু ও দক্ষতার সাথে কার্যসম্পাদনের জন্য একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অধীনে, কর্মচারীদেরকে কাজে ন্যস্ত থাকতে হবে। ফলে প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরে আদেশ দানের ঐক্য বজায় থাকবে।

নির্দেশনার ঐক্য | Unity of direction

এ নীতির অর্থ হল প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগ, উপবিভাগ ও ব্যক্তির, সমবেত প্রচেষ্টাকে একটি মূল উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য নিয়োজিত করতে হবে এবং সে উদ্দেশ্যকে ঠিক রেখে ধারাবাহিক সমন্বিত নির্দেশিকা কার্যক্রম চালাতে হবে। অর্থাৎ পরস্পরবিরোধী আদেশ-নির্দেশ যেন জারি না হয় সে দিকে ব্যবস্থাপনা লক্ষ্য রাখবে।

সাধারণ স্বার্থে নিজের স্বার্থ ত্যাগ | Sacrifice individuals interest to general interest

প্রাতিষ্ঠানিক স্বার্থকে সবসময় ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া আবশ্যক। অন্যথায় প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জন ও সংশ্লিষ্ট সকলের সর্বোচ্চ কল্যাণ লাভ সম্ভব হবে না। তাই সাধারণ স্বার্থকে যে কোন অবস্থায় ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য প্রণয়ন করতে হবে। এ প্রসঙ্গে Bartol and Martin বলেছেন, “কোন একজন কর্মী বা একদল কর্মীর স্বার্থকে কখনই প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বা লক্ষ্যের উপর স্থান দেওয়া উচিত নয়।”

পারিশ্রমিকের নীতি | Law of Remuneration

হেনরী ফেয়ল পারিশ্রমিক সম্পর্কে বলেছেন, (ক) পারিশ্রমিক ন্যায্য হতে হবে এবং (খ) পারিশ্রমিক দানের যুক্তিসংগত পন্থা থাকতে হবে। তাই কর্মীদের কাজের প্রকৃতি, সময়, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনা করে সুষ্ঠু ও ন্যায্য বেতন কাঠামো স্থির করতে হবে যাতে তারা সকলে সন্তুষ্টির সাথে কাজ করতে পারে।

কেন্দ্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণ | Centralization and decentralization

প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্তবলি কেন্দ্রীভূত এবং নিম্নস্তরের কার্যাবলি বিকেন্দ্রীভূত থাকে। এ নীতিতে প্রতিফলিত হয়েছে যে, কেন্দ্রে কতখানি কর্তৃত্ব কেন্দ্রীভূত হবে এবং কতখানি কর্তৃত্ব অন্যান্য স্তরে বিকেন্দ্রীভূত হবে।

সাম্যতা | Equity

সবার প্রতি সমান আচরণ ও হে প্রদর্শন করা এ নীতির লক্ষ্য। কর্মীদের প্রতি দয়া প্রদর্শন, সুবিচার দান, সমান দৃষ্টিদান এবং সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবস্থাপকগণ অনুগত্য, অনুরাগ ও শ্রদ্ধা লাভ করতে পারেন। এক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন অধস্তন সম্পর্ক খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস পায়। মোটকথা, কর্মীদের প্রতি ব্যবস্থাপনার আচরণ হতে হবে, আন্তরিক, বন্ধুসুলভ ও সাম্যভিত্তিক। তাদের সাথে কোন অবস্থাতেই বৈষম্যমূলক আচরণ করা যাবে না।

জোড়া মই শিকল নীতি | Scalar chain

সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে সর্বনিম্ন স্তর পর্যন্ত ব্যবস্থাপনার পর্যায়ভুক্ত লোকদের এমনভাবে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত করতে হবে যাতে তা সমন্বিত শিকলের রূপ ধারণ করে। এ শিকল কর্তৃত্বের প্রবাহ ও যোগাযোগের পথ নির্দেশ করে। এ নীতির মূল কথা হল সংগঠনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে একেবারে নিম্নস্তর পর্যন্ত এমনভাবে নেমে আসবে যাতে একটা স্তরের সাথে অন্য স্তর সম্পর্ক যুক্ত হয়ে পড়ে। এটি একটি দ্বিমুখী যোগাযোগ প্রক্রিয়া। এ নীতিকে অনেকে স্তরবিন্যাসের নীতি হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শৃঙ্খলা | Order

হেনরী ফোল শৃঙ্খলাকে দু’ভাগে ভাগ করছেন। যথা: মানব শৃঙ্খলা ও বস্তুগত শৃঙ্খলা। এ নীতির লক্ষ্য হচ্ছে, যোগ্য ব্যক্তিকে যোগ্য স্থানে এবং সঠিক বস্তুকে সঠিক স্থানে স্থাপন করা এবং প্রতিষ্ঠানে মানব শৃঙ্খলা ও বস্তুগত শৃঙ্খলার ব্যবস্থা করা। এছাড়াও সকল ব্যক্তি ও বস্তুগত উপাদান যাতে সঠিক নিয়মে শৃঙ্খলার সাথে কার্যসম্পাদন করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

চাকরির স্থায়িত্ব | Stability of service

আদর্শ ব্যবস্থাপনার অন্যতম নীতি হচ্ছে কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব বিধান করা। প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট প্রতিটি কর্মীর চাকরির স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এতে কর্মীদের নিরাপত্তাবোধ ও মানবিক স্বাচ্ছন্দ্য বৃদ্ধি পাবে। তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা বাড়বে। এক্ষেত্রে কর্মীরা মনোযোগ সহকারে কাজে আত্মনিয়োগ করবে। এতে করে প্রতিষ্ঠান লাভবান হয় এবং ব্যবস্থাপনার কাজ সহজ হবে। ফলে প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না। চাকরির স্থায়িত্ব কর্মীর অর্থনৈতিক জীবনকে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।

উদ্যোগ | Initiative

উদ্যোগ হল একটি চিন্তামূলক ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নমূলক কার্য। নতুন কোন পদ্ধতি বা কৌশল উদ্ভাবন ও আবিষ্কার করার জন্য কর্মীদেরকে উৎসাহিত, অনুপ্রাণিত ও যথোপযুক্ত সুযোগ দিতে হবে। এতে প্রতিষ্ঠানের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়বে এবং কর্মনৈপুণ্য প্রদর্শন সম্ভব হবে। এ প্রসঙ্গে Weihrich and Koontz এর মতে, “উদ্যোগ ব্যবস্থাপনাকে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সহায়তা করে।”

একতাই বল | Esprite de corps

ব্যবস্থাপনার উল্লেখযোগ্য নীতি হচ্ছে দলগত চেতনা বা একতাই বল। প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যার্জনের জন্য সকল স্তরের ব্যবস্থাপনা ও অধস্তনদের মধ্যে সম্মিলিত প্রচেষ্টা এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। কেননা একতাই প্রতিষ্ঠানের একমাত্র শক্তির উৎস। পারস্পরিক সহযোগিতা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে কার্যসম্পাদন করলে প্রতিষ্ঠান সহজে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়। কারণ একক শক্তির চেয়ে দলীয় শক্তি অনেক বেশি গতিশীল। এ প্রসঙ্গে Robert Kreituer এর মতে, “Harmonious efforts among individuals in the key to organizational success.” অর্থাৎ, কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা হচ্ছে সংগঠনের সফলতার চাবিকাঠিস্বরূপ।

পরিশেষে বলা যায় যে, বর্তমান বৃহদায়তন উৎপাদনের যুগে ব্যবস্থাপনাকে উপরিউক্ত মূল নীতিসমূহের উপর যথেষ্ট গুরুত্বারোপ করতে হবে। ফলে তিনি তার কার্য অত্যন্ত সুচারুভাবে সম্পাদন করতে পারবেন। ব্যবস্থাপনার উপরিউক্ত মূলনীতি ছাড়া আরও কতিপয় নীতি পরিলক্ষিত হয়; যেমন- সহযোগিতার নীতি, নমনীয়তার নীতি, ভারসাম্যের নীতি, সর্বজনীনতার নীতি, ব্যতিক্রমের নীতি প্রভৃতি। সুতরাং সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, ব্যবস্থাপনার সকল মূলনীতি প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ডে ইতিবাচক ফল প্রদানে সক্ষম হবে।

ব্যবস্থাপনার স্তর কয়টি, ব্যবস্থাপনা স্তর কয়টি

প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকীয় উচ্চক্রমকে ব্যবস্থাপনার স্তর বলে। মূলত সফলতার সাথে উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে প্রতিষ্ঠান কাম্য তত্ত্বাবধান পরিসর নির্ধারণ করে। এতে প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপকের সংখ্যা বাড়ে। ফলে ব্যবস্থাপনা স্তর বৃদ্ধি পায়। Skinner & Ivancevich – এর মতে, ব্যবস্থাপনার পর্যায় বলতে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার স্তরকে বুঝায়। এরূপ পর্যায় মূলত নীতি নির্ধারণী, মধ্য ও নিম্ন এই তিনটি পর্যায়ে বিভক্ত, যা অনেকটা পিরামিডের ন্যায়।

যাইহোক, এ পর্যায় গুলোকে ব্যবস্থাপনা স্তর (Management hierarchy or Management level) বলা হয়।

সুতরাং বলা যায় যে, কোন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে যে তিনটি স্তর বা পর্যায় পরিলক্ষিত হয়, চিত্রে যা পিরামিডের মত দেখায়, তাকে ব্যবস্থাপনা স্তর বা পর্যায় বলে। নিচে বিভিন্ন স্তর বর্ণনা করা হল

ব্যবস্থাপনার স্তর হচ্ছে ৩ টি, যথাঃ

  • ১. উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা
  • ২. মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপনা
  • ৩. নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপনা

নিম্নে এ স্তরগুলো সম্পর্কে বিশদ বিবরণ পেশ করা হল :

উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা | Top level Management

সংগঠনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত স্তরটিই হল উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনা। এই স্তরের ব্যবস্থাপকগণ পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ, কর্মসূচি গ্রহণ, নির্দেশনা দান ও নিয়ন্ত্রণ কাজের সাথে জড়িত। সংক্ষেপে যারা সংগঠনের সার্বিক ব্যবস্থাপনার সাথে জড়িত তারাই উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক।

কোন একটি কোম্পানির পরিচালকবৃন্দ, সভাপতি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক এ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার অধীন। উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণের সার্বিক দক্ষতার উপর একটি প্রতিষ্ঠানের সফলতা বহুলাংশে নির্ভরশীল। তাই দক্ষ লোকদেরকে উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া উচিত।

এ স্তরের ব্যবস্থাপকদেরকে প্রধান নির্বাহী অফিসার (CEO), প্রেসিডেন্ট, নির্বাহী পরিচালক (ED) প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হয়। মূলতঃ এ স্তরের ব্যবস্থাপকগণই সম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানের দায়-দায়িত্ব বহন করেন।

  • উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপক: – পরিচালকবৃন্দ, সভাপতি, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক
  • উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকের কার্যাবলি: – পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ও নীতি নির্ধারণ, কর্মসূচি গ্রহণ, নির্দেশনা দান ও নিয়ন্ত্রণ

মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপক | Mid-Level Management

উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপকগণের অধীনে কিন্তু নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকগণের উপরে অবস্থানরত ব্যবস্থাপকগণই মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপক হিসেবে পরিচিত। এদের মাঝে যারা উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপনার সন্নিকটে অবস্থান করেন, অনেকে তাদেরকে উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবস্থাপনা (Higher Secondary Management) হিসেবেও অভিহিত করেন।

প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিভাগীয় নির্বাহীদের নিয়ে এ স্তরের ব্যবস্থাপনা পরিচালিত হয়। ক্রয় ব্যবস্থাপক, বিক্রয় ব্যবস্থাপক, উৎপাদন ব্যবস্থাপক, অর্থ ও হিসাব এবং গবেষণা কার্যে জড়িত ব্যক্তিবর্গ এ স্তরের ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্ত। এ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনার মূল কাজ হল উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচির বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে মধ্যম স্তরের ব্যবস্থাপকগণ উচ্চ স্তরের ব্যবস্থাপনা ও নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপনার মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি করে।

উল্লেখ্য যে, এ স্তরের ব্যবস্থাপকদেরকে অনেক নামে অভিহিত করা হয়, যেমন- বিভাগীয় প্রধান, মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক, গবেষণা, ল্যাবরেটরী পরিচালক, উপ-মহা ব্যবস্থাপক, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, কর্মী ব্যবস্থাপক, অর্থ ব্যবস্থাপক প্রভৃতি।

  • মধ্যস্তরের ব্যবস্থাপক : – ক্রয় ব্যবস্থাপক, বিক্রয় ব্যবস্থাপক, উৎপাদন ব্যবস্থাপক, অর্থ ও হিসাব ব্যবস্থাপক।
  • মধ্যমস্তরের ব্যবস্থাপকের কার্যাবলি : – উচ্চ ও নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকগণের মাঝে সেতুবন্ধন তৈরি, উচ্চস্তরের ব্যবস্থাপকগণের গৃহীত পদক্ষেপের বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।

নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপনা | Lower Level Management / First Line Management

নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকগণ প্রতিষ্ঠানের জন্য গৃহীত প্রয়োজনীয় কর্ম পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরাসরি অংশগ্রহণ করে ও প্রত্যক্ষভাবে শ্রমিককর্মীদের সাথে সম্পর্কিত, ফোরম্যান, সুপারভাইজার এ স্তরের ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্ত।

এ স্তরের ব্যবস্থাপকগণ কর্মীদের কার্য-সম্পাদনের সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তাদের সুপারভাইজার, ফোরম্যান, কর্মনায়ক প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হয়। তাঁরা কার্য-সম্পাদনের জন্য শ্রমিক কর্মীদের পরিচালনা করে থাকে বলে এ স্তরীকে তত্ত্বাবধায়ক পর্যায় ও (Supervisory level) বলা হয়ে থাকে।

সুতরাং বলা যায় যে, যে স্তরে প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কার্য-সম্পাদন করা হয়, তাকে নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপনা বলে এবং যারা এ স্তরে নির্দেশনা প্রদান করেন তাদেরকে নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক বলা হয়।

  • নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপক : – ফোরম্যান, সুপারভাইজার ইত্যাদি।
  • নিম্নস্তরের ব্যবস্থাপকের কার্যাবলি : – উচ্চ ও মধ্যস্তরের পর্যায়ে গৃহীত পদক্ষেপের বাস্তবায়নের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ।

ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্য কি কি

ব্যবস্থাপনা হল সাংগঠনিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষ, উপকরণ এবং অর্থের মতো সম্পদের পরিকল্পনা, সংগঠিত, নির্দেশনা এবং নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়া। ব্যবস্থাপনার মূল বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:

লক্ষ্য-ভিত্তিক | Goal-Oriented

ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য হল সংস্থার দ্বারা নির্ধারিত নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যগুলি অর্জন করা। এর মধ্যে কর্মের একটি পরিকল্পনা তৈরি করা জড়িত যা পছন্দসই ফলাফল অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলির রূপরেখা দেয়। ম্যানেজমেন্টকে অবশ্যই এই লক্ষ্যগুলির দিকে অগ্রগতি নিরীক্ষণ করতে হবে এবং সেগুলি অর্জন করা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করতে হবে।

ক্রমাগত প্রক্রিয়া | Continuous Process

ব্যবস্থাপনা একটি এককালীন ঘটনা নয় বরং একটি অবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া যার জন্য চলমান মনোযোগ এবং প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এতে উন্নতির জন্য ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করতে এবং প্রয়োজনে সামঞ্জস্য করার জন্য অপারেশনগুলির নিয়মিত পর্যালোচনা এবং মূল্যায়ন জড়িত।

সার্বজনীন প্রয়োগ | Universal Application

ব্যবস্থাপনা নীতিগুলি তাদের আকার, প্রকৃতি বা লক্ষ্য নির্বিশেষে সমস্ত ধরণের সংস্থার জন্য প্রযোজ্য। এর মানে হল যে একটি ছোট ব্যবসার মালিক দ্বারা ব্যবহৃত একই নীতিগুলি একটি বড় কর্পোরেশনের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।

মাল্টিডিসিপ্লিনারি | Multidisciplinary

ম্যানেজমেন্ট এমন একটি ক্ষেত্র যা অর্থনীতি, মনোবিজ্ঞান, সমাজবিজ্ঞান এবং পরিসংখ্যান সহ বিভিন্ন শাখার উপর আকৃষ্ট হয়। ম্যানেজারদের অবশ্যই তাদের প্রতিষ্ঠানগুলিকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করার জন্য বিস্তৃত দক্ষতা এবং জ্ঞান থাকতে হবে।

গতিশীল | Dynamic

ব্যবসার পরিবেশ ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং ব্যবস্থাপনা অবশ্যই এই পরিবর্তনগুলির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সক্ষম হবে। এর জন্য প্রবণতা সনাক্ত করার এবং উপলব্ধ তথ্যের উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োজন।

লোকমুখী | People Oriented

ব্যবস্থাপনা মানুষ, তাদের দক্ষতা এবং তাদের ক্ষমতা পরিচালনার সাথে সম্পর্কিত। এটি সাংগঠনিক লক্ষ্যগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা নিশ্চিত করার জন্য কর্মচারীর চাহিদা, প্রেরণা এবং আচরণ বোঝার অন্তর্ভুক্ত।

সিদ্ধান্ত গ্রহণ | Decision Making

ব্যবস্থাপনার মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া জড়িত যা সঠিক বিচার, বিশ্লেষণ এবং তথ্যের মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে। এর জন্য বিকল্পগুলি ওজন করার এবং উপলব্ধ সংস্থানগুলির উপর ভিত্তি করে সর্বোত্তম পদক্ষেপ বেছে নেওয়ার ক্ষমতা প্রয়োজন।

নেতৃত্ব | Leadership

প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য কর্মীদের অনুপ্রাণিত ও অনুপ্রাণিত করার জন্য ব্যবস্থাপনার জন্য শক্তিশালী নেতৃত্বের দক্ষতা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি ইতিবাচক উদাহরণ স্থাপন করা, কার্যকরভাবে যোগাযোগ করা এবং বিশ্বাস ও সম্মানের সংস্কৃতি গড়ে তোলা জড়িত।

নমনীয়তা | Flexibility

ব্যবস্থাপনা অবশ্যই নমনীয় এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবং পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এর মানে হল অপ্রত্যাশিত ঘটনা বা বাজারে পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়ায় দ্রুত পিভট করতে সক্ষম হওয়া।

দক্ষতা এবং কার্যকারিতা | Efficiency and Effectiveness

ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার করে দক্ষতার সাথে এবং কার্যকরভাবে সাংগঠনিক লক্ষ্য অর্জন করা। এর জন্য খরচ এবং গুণমানের ভারসাম্য, কাজের অগ্রাধিকার এবং যথাযথভাবে সম্পদ বরাদ্দ করার ক্ষমতা প্রয়োজন।

ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা

মানব সভ্যতার সূচনালগ্ন হতেই মানুষ তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য পণ্যের উৎপাদন, বন্টন কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যবসায়ের সূচনা হয়।পরবর্তীতে মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশের সাথে সাথে ব্যবসায়ের বিকাশ ঘটতে থাকে।সমাজের বিবর্তন ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হতে থাকে। এ পরিবর্তিত চাহিদা পূরণের জন্য বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায় সংগঠন গড়ে উঠে। নিচে ব্যবসায় সংগঠনের ক্রমবিকাশের ধারা সম্পর্কে আলোকপাত করলাম-

  • ১. একমালিকানা ব্যবসায়
  • ২. অংশীদারি ব্যবসায়
  • ৩. কোম্পানি সংগঠন
  • ৪. ব্যবসায় জোট
  • ৫. সমবায় সমিতি
  • ৬. রাষ্ট্রীয় ব্যবসায়
  • ৭. যৌথ উদ্যোগে ব্যবসায়

একমালিকানা ব্যবসায় সংগঠনের মধ্যে দিয়ে ব্যবসায়ের অগ্রযাত্রা শুরু হলেও সময়ের বিবর্তনে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় সংগঠন গড়ে উঠেছে। তবে লক্ষণীয় বিষয় হল কোন ব্যবসায় সংগঠন একেবারে বিলুপ্ত হয়নি।বরং বৃহদায়তন ব্যবসায় পরিবেশে পরিপূরক ব্যবসায় হিসেবে নিজস্ব ক্ষেত্রে সুনামের সাথে আজ টিকে আছে সকল ব্যবসায়।

উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন

উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ব্যবসা ব্যবস্থাপনার একটি উপাদান। মার্কেটিং, ডিস্ট্রিবিউশন, ডেলিভারি, অ্যাকাউন্টিং এবং ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টের মতো অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ বিভাগগুলির বিপরীতে, এটি কোম্পানির চূড়ান্ত পণ্যগুলিতে গ্রহণ এবং কাঁচামাল পরিণত করার প্রক্রিয়ার উপর মনোনিবেশ করে।

বিপণন ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াটি একজন বিপণনকারীর কাজকে স্ট্রিমলাইন করতে এবং তাদের লক্ষ্য গ্রাহকদের চাহিদার সাথে দ্রুত এবং সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে তাদের গ্রাহক বেসে পৌঁছাতে সহায়তা করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

উৎপাদন ব্যবস্থাপনা | Production Management

প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট বা উৎপাদন ব্যবস্থাপনা হল একটি কোম্পানির ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়া যা এটি উত্পাদন করতে চায় এমন পরিষেবা এবং পণ্য সরবরাহ করে। এটি সংগঠিত করা, পরিচালনা করা এবং পরিচালনা করে যা কাঁচা সম্পদকে সম্পূর্ণ পণ্য এবং পরিষেবাগুলিতে রূপান্তরিত করে।

উৎপাদন ব্যবস্থাপনা অনুযায়ী কোম্পানির উৎপাদন কৌশল, যা কিছু প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উৎপাদনের মিশ্রণ, ইউনিট খরচ, গুণমান এবং উৎপাদন ক্ষমতা সম্পর্কিত পূর্ব-প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য আহ্বান জানায়, সফলভাবে বাস্তবায়ন করা উচিত।

এটি সাধারণত উত্পাদন প্রক্রিয়া, সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ, মান নিয়ন্ত্রণ এবং জায় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি বা দলগুলির সমন্বয়, তত্ত্বাবধান এবং নিয়ন্ত্রণ করে।

ফলস্বরূপ, এটা বলা সম্ভব যে পণ্য ব্যবস্থাপনা সম্পদ অর্জনের সাথে সম্পর্কিত, যেমন ব্যবস্থাপনা ইনপুট, প্রাকৃতিক সম্পদ, জনশক্তি, মূলধন, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি, সম্পূর্ণ পণ্য তৈরি বা উৎপাদন করার জন্য।

উৎপাদন ব্যবস্থাপনা এই দুটি চেকপয়েন্টের মধ্যে প্রক্রিয়া। উত্পাদন ব্যবস্থাপনা হল প্রক্রিয়াটির নিয়ন্ত্রণ এবং সঞ্চালন যা কাঁচা সম্পদকে সমাপ্ত পণ্যে রূপান্তর করে।

বিপণন | Marketing

বিপণন ব্যবস্থাপনা বলতে বোঝায় বিভিন্ন বিপণন কার্যক্রমের নিয়ন্ত্রণ ও ক্রিয়াকলাপ এবং সেই ক্রিয়াকলাপের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের, যেমন ম্যানেজার, মার্কেটিং ম্যানেজমেন্ট পেশাদার, ঠিকাদার এবং আরও অনেক কিছু।

  • লক্ষ্য নির্ধারণ এবং বিপণন কৌশল বিকাশ
  • বাজার গবেষণা সঞ্চালন
  • বিপণন প্রচারাভিযান তৈরি করা
  • একটি কোম্পানির লক্ষ্য বাজার সনাক্তকরণ
  • বিভিন্ন চ্যানেলে (যেমন, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল মার্কেটিং, ইত্যাদি) এবং বিভিন্ন মাধ্যম জুড়ে (যেমন, কপি, ছবি এবং ভিডিও এবং পডকাস্ট) বিষয়বস্তু পরিচালনা করা
  • বিপণন কৌশল এবং বিপণন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন

সংক্ষেপে, বিপণন ব্যবস্থাপনা হল একটি প্রতিষ্ঠানের বিপণন কৌশল পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন এবং ট্র্যাক করার প্রক্রিয়া। এর মধ্যে রয়েছে বিপণন পরিকল্পনা, প্রচারাভিযান এবং কৌশলগুলি তৈরি করা এবং লাভজনকতা চালনা করার লক্ষ্যে গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে।

আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তা নিশ্চিত করার জন্য, মার্কেটপ্লেস বোঝার জন্য এবং কোন প্রয়োজনগুলি পূরণ করা হচ্ছে না, বা বর্তমানে পরিবেশন করা হচ্ছে না এমন সুযোগগুলিকে কীভাবে কাজে লাগানো যায় তা নির্ধারণ করার জন্য বাজার গবেষণা প্রয়োজন। বাজার গবেষণার মধ্যে রয়েছে প্রতিযোগিতামূলক গবেষণা, মূল জনসংখ্যা, মূল্য নির্ধারণ এবং গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য সেরা প্রচার।

ব্যবস্থাপনার জনক কে

আসলে ব্যবস্থাপনার জনক কে তা নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। ব্যবস্থাপনার শাখা-প্রশাখা অনেক। একেক শাখায় একেকজনের ভূমিকা রয়েছে। নিম্নে ব্যবস্থাপনার এরকম কিছু শাখা এবং জনকের নাম দেওয়া হল:

  • বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক — ফ্রেডরিক উইন্সলো টেলর
  • প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার জনক — হেনরী ফেয়ল
  • আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনার জনক — ম্যাক্স ওয়েবার
  • কৌশলগত ব্যবস্থাপনার জনক — ইগর এন্সফ
  • আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক — পিটার এফ. ড্রাকর (হেনরী ফেয়লকেও অনেকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক মনে করেন)
  • আধুনিক ব্যবস্থাপনার জননী- ম্যারী পার্কার ফলেট
  • মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার জনক- জর্জ এল্টন মেয়ো

আধুনিক ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য ব্যবস্থাপক যে সকল কার্যাবলী (পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নেতৃত্ব, নিয়ন্ত্রণ) সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করে থাকে তার সমষ্টিকে আধুনিক ব্যবস্থাপনা বলে।

প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্যার্জনের জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, কর্মীসংস্থান, নির্দেশনা, প্রেষণা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকে ব্যবস্থাপনা বলে। সকল ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন রয়েছে এই জন্য ব্যবস্থাপনাকে সর্বজনীন বলে।

আধুনিক ব্যবস্থাপনার জনক কে

আধুনিক ব্যবস্থাপনা কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল (১৮৪১-১৯২৩)। তিনি ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মূলত একজন খনি প্রকৌশলী ছিলেন। ১৯ বছর বয়সে ১৮৬০ সালে “কম্প্যাগনি ডি কমেন্ট্রি-ফোরচ্যাম্ব্যু-ডিকেজেভিল” কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন এবং ১৮৮৮ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। তখন কোম্পানিটির আর্থিক মন্দাবস্থা় চলছিল। ১৯১৮ সালে যখন তিনি ঐ পদ থেকে অবসর নেন তখন কোম্পানি একটি দৃঢ় অর্থনৈতিক অবস্থানে ছিল।

তিনি ব্যবস্থাপনার ৫টি কার্যাবলি এবং ১৪টি মূল নীতি প্রবর্তক। ফেয়ল ১৯১৬ সালে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার উপর Industrial and General Management নামক একটি বই লিখেন যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৯ সালে প্রকাশিত হয় এবং যা পরবর্তিতে অন্যান্য লেখকদেরকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করে।

আরও পড়ুন:- শিল্প কি, শিল্প বিপ্লব কি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব

বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক কে

বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা মতবাদের মূল সূত্র হল ব্যবস্থাপনায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ। অর্থাৎ বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনার কাজ-কর্ম সম্পাদনের পদ্ধতিকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনা বলে।

মার্কিন ইঞ্জিনিয়ার ফ্রেডরিক উইন্সলো টেইলরকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার জনক বলা হয়।

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা

প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কর্মী তথা মানব সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়ে ব্যবস্থাপনার যে অংশ কাজ করে তা মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হিসেবে পরিচিত। এটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিবর্গ, তাদের সংগ্রহ, নির্বাচন ও নিয়োগ, উন্নয়ন, কর্মীদের কাজে উদ্বুদ্ধকরণ ও রক্ষণাবেক্ষণের সাথে সম্পর্কিত।

মানব সম্পদ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের চালিকাশক্তি। তাই প্রতিষ্ঠানের এ সম্পদের বাছাই, নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন, বেতন ও মজুরি প্রদান, প্রেষণা ও সুযোগ-সুবিধা দান, কর্মীদের অভাব-অভিযোগ নিরসন, কর্মীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি বিষয়সমূহ যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পাদন করা হয় তাকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হিসেবে অভিহিত করা যায়। এটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের কর্মসম্পাদন, পরিচালনা নীতি ও পদ্ধতি, মানবীয় কর্মপ্রচেষ্টার নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ এবং উত্তম মানবীয় সম্পর্ক সৃষ্টির প্রয়াসের নীতি ও কর্মসূচির সাথে সম্পৃক্ত।

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হলো সার্বজনীন মৌলিক ব্যবস্থাপনার মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনা। সাধারণ অর্থে শিল্প কারখানায় ও অফিসে কর্মরত শ্রমিক কর্মীদের ব্যবস্থাপনাকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বলে।

ব্যবস্থাপনার যে অংশের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত মানবীয় উপাদান সংক্রান্ত প্রশাসন পরিচালনা করা হয় তাই মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা নামে পরিচিত।

পূর্বে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে কর্মী ব্যবস্থাপনা (Personnel management), শ্রম ব্যবস্থাপনা (Labour management), কর্মী প্রশাসন (Personal administration), শিল্প ব্যবস্থাপনা (Industrial management) ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হতো।

বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে নানাভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। নিম্নে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংজ্ঞা প্রদান করা হলো:

Gray Dessler- এর মতে, “মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা কর্মী সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ন, ক্ষতিপূরণ এবং তাদের শ্রম সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং ন্যায় নিষ্ঠার সাথে সম্পর্কিত”  [Human resource management is the process of acquiring, training, appraising and compensating, employees, and attending to their labour relations, health and safety, and fairness concerns..]

Ricky W. Griffin এর মতে, “মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা হলো পরস্পর সম্পূরক কতিপয় সাংগঠনিক কাজ যা কার্যকর কর্মীদল আকর্ষণ, উন্নয়ন ও সংরক্ষণের সাথে জড়িত ।  [Human resource management is the set of organizational activities directed at attracting developing and maintaining an effective workforce.]

David A. Decenzo and Stephen P. Robbins এর মতে, “মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা চারটি কাজের সমন্বয়ে গঠিত (১) স্টাফিং (২) প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন (৩) প্রেষণা দান এবং (৪) সংরক্ষণ বা ধারে রাখার ব্যবস্থা করা [Human resource management is made of four activities (i) Staffing (ii) Training and development (iii) Motivation and (iv) Maintenance.]

উল্লেখিত আলোচনা ও বিশেষজ্ঞ সংজ্ঞা বিশ্লেষণ করে চূড়ান্তভাবে বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের সার্বিক উন্নয়ন সুদক্ষ কর্মী বাহিনীর উপর নির্ভরশীল- যাদের সার্বিক ভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব ন্যাস্ত থাকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপর। তাই বলা যায়, প্রতিষ্ঠানের মানবীয় উপাদান সংক্রান্ত সকল কার্যের সমষ্টিকে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা (HRM) হিসেবে আখ্যায়িত করা যায়। প্রতিষ্ঠানের মানব সম্পদ একমাত্র উপাদান যার সেবা কার্য ও উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য উপাদান গুলোকে সমন্বয় করে।

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার জনক কে

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার জনক জর্জ এল্টন মেয়ো।

অফিস ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

সুষ্ঠুভাবে কোন অফিসের কাজ পরিচালনা করার মাধ্যম কি মূলত অফিস ম্যানেজমেন্ট বা অফিস ব্যবস্থাপনা বলা হয়ে থাকে। একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের আশায় সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে একটি উপায় ফলো করে চলে অফিসের সকল প্রকার কাজ নিয়ন্ত্রণ করা এবং পরিচালনা করার উপায় বা মাধ্যমিক হচ্ছে অফিস ব্যবস্থাপনা। 

কর্মী ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

সাধারণ ব্যবস্থাপনা বিষয়ের যে অংশ প্রতিষ্ঠানের মানবিয় দিক নিয়ে কাজ করে তাকে কর্মী ব্যবস্থাপনা বলে। কর্মক্ষেত্র এবং সত্তার সাথে তাদের সম্পর্কের সাথে সম্পর্কিত এমন দিকনির্দেশনাটি পার্সোনাল ম্যানেজমেন্ট হিসাবে পরিচিত। কর্মী পরিচালনার সুযোগ সীমিত এবং একটি বিপরীতমুখী পদ্ধতির রয়েছে, যেখানে শ্রমিকদের হাতিয়ার হিসাবে দেখা হয়। কর্মীদের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম কর্মীদের সুযোগ এবং লক্ষ্য, কৌশল, সংস্থার উন্নয়নের শর্তগুলি আনয়ন করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের মানব শক্তির উপর একটি লক্ষ্যযুক্ত প্রভাব।

কর্মী ব্যবস্থাপনার জনক কে

কর্মী ব্যবস্থাপনার জনক হল রবার্ট ওয়েন।

ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য

ব্যবস্থাপনা হল একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মানুষ এবং জিনিসগুলি পরিচালনা করার একটি পদ্ধতিগত উপায়। প্রশাসনকে একদল লোকের দ্বারা সমগ্র সংস্থাকে পরিচালনা করার একটি কাজ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। ব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসনের মধ্যে প্রধান পার্থক্য গুলো নীচে দেওয়া হল:

ব্যবস্থাপনাপ্রশাসন
ব্যবস্থাপনা হল ব্যবসায়িক এবং কার্যকরী স্তরের একটি কার্যকলাপ।অন্যদিকে, প্রশাসন একটি উচ্চ-স্তরের কার্যকলাপ।
ব্যবস্থাপনা নীতি বাস্তবায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।অন্যদিকে, নীতি প্রণয়ন প্রশাসন দ্বারা সঞ্চালিত হয়।
প্রশাসনের কার্যাবলীর মধ্যে রয়েছে আইন প্রণয়ন এবং সংকল্প। অন্যদিকে, ব্যবস্থাপনার কার্যাবলী নির্বাহী এবং শাসক।
প্রশাসন সংস্থার সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়।অন্যদিকে ব্যবস্থাপনা প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত সীমানার অধীনে সিদ্ধান্ত নেয়।
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মতো লাভজনক প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা দেখা যায়।অন্যদিকে, প্রশাসন সরকারী এবং সামরিক অফিস, ক্লাব, হাসপাতাল, ধর্মীয় সংস্থা এবং সমস্ত অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে দেখা যায়।
ব্যবস্থাপনা হল পরিকল্পনা এবং কর্মের সাথে সম্পর্কিত।অন্যদিকে, প্রশাসন নীতি প্রণয়ন এবং উদ্দেশ্য নির্ধারণের সাথে সম্পর্কিত।
ব্যবস্থাপনা সংগঠনে একটি নির্বাহী ভূমিকা পালন করে।প্রশাসনের বিপরীতে, যার ভূমিকা প্রকৃতিগতভাবে নিষ্পত্তিমূলক।
ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা দেখাশোনা করেন।যেখানে প্রশাসক প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনের দায়ভার নেয়।
ব্যবস্থাপনা মানুষ এবং তাদের কাজ পরিচালনার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।অন্যদিকে, প্রশাসন সংস্থার সম্পদের সর্বোত্তম সম্ভাব্য ব্যবহার করার দিকে মনোনিবেশ করে।
ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনের মধ্যে পার্থক্য

মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বই pdf

হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের প্রয়োজনীয়তা

এই বইটি পাঠকদের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গাইড করে এবং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য টুল সরবরাহ করে। এটি সহ ক্ষেত্রগুলির একটি বোঝার প্রদান করে:

এইচআরএম ধারণা | কর্মক্ষমতা ব্যবস্থাপনা কৌশল | আইনি এবং নিয়ন্ত্রক সম্মতি | সাংগঠনিক উন্নয়ন | দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা | বেতন এবং ক্ষতিপূরণ | এইচআরএম-এ তথ্য প্রযুক্তি | স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা | কর্মী উন্নয়ন

FAQ | ব্যবস্থাপনা

Q1. বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

Ans – যে কার্যকরী পরিচালন পদ্ধতির মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থের সংগ্রহ, অপসারণ, পরিবহণ, শোধন, ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাস ও পুনরায় বর্জ্য পদার্থকে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা হয়, তাকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলা হয় । অন্যভাবে বলা যায়, বর্জ্যের উৎপাদন নিয়ন্ত্রন এবং অবশিষ্টাংশের বিলিব্যবস্থা করার প্রক্রিয়াকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলে ।

Q2. কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে কী বোঝো

Ans – কঠিন বর্জ্য বলতে তরল বা গ্যাস নয় এমন কোনো অবাঞ্ছিত বা পরিত্যাগ করা উপাদানকে বোঝায়। এটি আবাসিক, বাণিজ্যিক, শিল্প এবং নির্মাণ কার্যক্রম সহ বিভিন্ন উত্স দ্বারা তৈরি করা যেতে পারে। কঠিন বর্জ্য বিভিন্ন আকারে আসতে পারে এবং এর উৎস, গঠন এবং বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। কিছু সাধারণ ধরণের কঠিন বর্জ্যের মধ্যে রয়েছে পৌরসভার কঠিন বর্জ্য, বিপজ্জনক বর্জ্য, নির্মাণ ও ধ্বংস বর্জ্য, ইলেকট্রনিক বর্জ্য এবং শিল্প বর্জ্য।

Q3. গৃহ ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

Ans – পারিবারিক লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন, সংগঠন, নিয়ন্ত্রণ, মূল্যায়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে মানবীয় ও বস্তুবাচক সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহারকেই গৃহ ব্যবস্থাপনা বলে।

Q4. শিক্ষা ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

Ans – শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা বলতে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রশাসনকে বোঝায় যেখানে একটি গোষ্ঠী একটি শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য তত্ত্বাবধান, পরিকল্পনা, কৌশল এবং কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য মানব ও বস্তুগত সম্পদকে একত্রিত করে। শিক্ষা হল জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ, বিশ্বাস, অভ্যাস এবং মনোভাবকে শেখার অভিজ্ঞতার সাথে সজ্জিত করা।

Q5. বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কাকে বলে

Ans – বিপর্যয়কে প্রশমিত করা, সামাল দেওয়া ও তার থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়াকেই বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা বলা হয়।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।