ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

ভারতবর্ষ গল্পের নামকরণের সার্থকতা

ভূমিকাঃ- ছােটোগল্পের নামকরণের অনেকগুলি রীতি প্রচলিত। একটি গল্পের নামকরণ এক বা একাধিক বিষয়কে কেন্দ্র করে হতে পারে। যেমন চরিত্রপ্রধান, ঘটনাপ্রধান, বিষয়বস্তুনির্ভর, ব্যঞ্জনাপ্রধান ইত্যাদি। ভারতবর্ষ গল্পের নামকরণের ক্ষেত্রে ব্যঞ্জনাপ্রধান নামকরণের রীতি অনুসরণ করতে দেখা যায়। ভারতবর্ষ গল্পের মধ্যে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করেই নামকরণ করা হয়েছে। যদিও আমরা সেই ঘটনায় ভারতবর্ষ কথাটির কোনো উল্লেখ দেখতে পারিনা,তবুও সেই ঘটনার মধ্যে ভারতবর্ষের রূপ ফুটে উঠেছে এবং সেই রূপকে কেন্দ্র করেই গল্পের নামকরণ করা হয়েছে ভারতবর্ষ।

ভারতবর্ষ গল্পের নামকরণের সার্থকতা আমরা তিনটি দিক থেকে বিচার করতে পারি। যথা-

প্রথমতঃ- দুরন্ত শীতে অকাল দুর্যোগে যখন চার দোকানে বসে সবাই তর্ক বিতর্ক নিয়ে ব্যস্ত ছিল, তখন হঠাৎ করেই চায়ের দোকানে এক থুত্থুরে ভিখারিনীকে আসতে দেখা যায়। চায়ের দোকানের সেই আলোচনার মধ্যে আমরা ভারতবর্ষের এক রূপ দেখতে পারি। কারণ ভারতবর্ষের প্রায় সব জায়গাতেই চায়ের দোকানে বসে আড্ডা হয়েই থাকে।

দ্বিতীয়তঃ- এই চেহারা নিয়ে বুড়ি পিচের রাস্তার উপর বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে চায়ের দোকানে এসে প্রবেশ করে। চায়ের দোকান থেকে বেরিয়ে বুড়ি বাজারের একটি বটতলায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। কিন্তু কিছু সময় পরেই জগা এটা বুঝতে পারে যে বুড়ি কোন সাড়াশব্দ করছে না অর্থাৎ বুড়ির নির্ঘাত মরেছে। সবাই বুড়িকে মৃত বলে ঘোষণা করার পর বুড়ির একটা ব্যবস্থা করার জন্য চৌকিদার সাহেবের কথায় বুড়িকে নদীর ধারে ফেলে দিয়ে আসা হয়।। কিন্তু কিছু সময় পরেই দেখা যায় কয়েকজন মুসলিম সেই বুড়িকে মুসলিম ধর্মাবলম্বী বলে, তার সঠিক কবরের ব্যবস্থা হয়নি বলে তারা সেই বুড়িকে আবার সেখানেই নিয়ে আসে। এবং এরপরেই হিন্দুদের সঙ্গে তাদের ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এখানে ফুটে উঠে ভারতবর্ষের আরেক রূপ, যা অকাম্য কিন্তু বাস্তব।

ভারতবর্ষে এমন একটি দেশ যেখানে বিভিন্ন ভাষা, বিভিন্ন জাতি, ধর্মের লোক বসবাস করে। কিন্তু ভারতবর্ষে ধর্মকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। এবং এখানেও সেরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে।

তৃতীয়তঃ অল্প সময়ের মধ্যেই হিন্দু এবং মুসলিম দের মধ্যে বুড়ির মৃতদেহটিকে নিয়ে সৃষ্টি হওয়া ঝামেলা খুব বড় আকার ধারণ করতে শুরু করে। কিন্তু শেষ পর্যায়ে আশ্চর্যজনকভাবে দেখা যায়,পিচের রাস্তার ওপর বাঁশের মাচায় শুয়ে থাকা সেই বুড়ির মৃতদেহটি নড়েচড়ে ওঠে। তারপর সে বসার চেষ্টা করে বা সে উঠে বসে। এবং তারপর দাঁড়িয়ে দুই দিকে লক্ষ করে। চৌকিদার তাকে জিজ্ঞেস করে -‘বুড়িমা,তুমি মরোনি!’- তখন সেই বৃদ্ধা চৌকিদারকে জবাব দেয়- মর্! মর তুই। তোর চৌদ্দগুষ্টি মরুক’ বলে একটি হাস্যরস যুক্ত মন্তব্য করেন। এ রপর দুই দিকে অর্থাৎ হিন্দু এবং মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের লোকেরা চেঁচিয়ে বলে ওঠে -বুড়ি, তুমি মরোনি?’- তখন এর উত্তরে বুড়ি বলে -‘তোরা মর। তোরা মর মুখপোড়া।’ এরপর যখন একজন বুড়িকে জিগ্যেস করে যে, বুড়ি হিন্দু নাকী মুসলমান, তখন সেই বৃদ্ধা জবাব দেয়-চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা! দেখতে পাচ্ছিস নে?.. আমি কি তা দেখতে পাচ্ছিস নে?- এই বক্তব্যের মাধ্যমে সেই বৃদ্ধা সেই ভিড়কে সরিয়ে নড়বড় করে রাস্তা দিয়ে চলে যায়। এ বক্তব্যের মাধ্যমে সেই বৃদ্ধা জাতি ধর্মের কোনো পরিচয় দেন না।

অর্থাৎ বৃদ্ধা তার বক্তব্যের মাধ্যমে এটাই বলার চেষ্টা করেন যে,সে কোন জাতি ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না। তিনি এটাই বলতে চাই যে,তিনি হলেন ভারতীয়।। এরপর বৃদ্ধা হিন্দু-মুসলিম উভয় দলের দিকে তাকিয়ে তিনি নিজের পথে চলে যান। যাওয়ার আগে তার চোখে থাকে ধর্মান্ধতার প্রতি ঘৃণা। হিন্দু অথবা মুসলমান পরিচয়ে যে নিজেকে চিহ্নিত করতে চায় না। এবং তিনি নিজের পথে চলে যাওয়ার মাধ্যমে তিনি হিন্দু ধর্ম মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের বিরোধ সেখানেই শেষ করে দিয়ে,দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকা অচেতন ভারতবাসীকে জাগিয়ে তোলেন। এই তিনটি দিককে বিচার করে আমরা বলতে পারি যে, ভারতবর্ষ গল্পের নামকরণ একেবারে সার্থক হয়েছে

ভারতবর্ষ গল্পের MCQ, ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উত্তর MCQ

“ যবন নিধনে অবতীর্ণ হও মা ! ” একথা বলেছিল

(ক) ভট্টাচার্যমশাই

(খ) গাঁয়ের দারােগা

(গ) নিবারণ বাগদি

(ঘ) গাঁয়ের পুলিশ।

উত্তর : (ক) ভট্টাচার্যমশাই।

“ বুড়িমা ! তুমি মরনি ! ” বক্তা হলাে—

(ক) চৌকিদার

(খ) গাঁয়ের দারােগা

(গ) নিবারণ বাগদি

(ঘ) গাঁয়ের পুলিশ।

উত্তর : (ক) চৌকিদার।

ডাকপুরুষের বচন অনুযায়ী সােমবারের পউষে বাদল কতদিন চলে ?

(ক) সাত দিন।

(খ) পাঁচ দিন।

(গ) তিন দিন

(ঘ) এক দিন।

উত্তর : (ঘ) এক দিন।

“ তােমাদের কত্তাবাবা টাটু ” – কাদের উদ্দেশে এই কথা বলেছিল ?

(ক) মুসলমানদের

(খ) হিন্দুদের

(গ) যুবকদের

(ঘ) দেশের।

উত্তর : (গ) যুবকদের।

“ মাথার ওপর আর কোনাে শালা নেই রে— কেউ নেই ” — কথাটি বলেছিল—

(ক) গ্রামের কোনাে যুবক চাষি

(খ) গ্রামের মােড়লেরা

(গ) গ্রামের এক গণমান্য চাষি।

(ঘ) এক ভবঘুরে

উত্তর : (ক) গ্রামের কোনাে যুবক চাষি।

থুথ্থুরে ভিখিরি বুড়ির গায়ে জড়ানো—

(ক) তুলোর কম্বল

(খ) ছেড়া কাপড়

(গ) নোংরা চাদর

(ঘ) দামি শাল

উত্তর : (ক) তুলোর কম্বল

“জোর কথা কাটাকাটি চলে” – চায়ের দোকানে এর ফলে কী হয়?

(ক) চা বিক্রি বাড়ে

(খ) ঝগড়া হয়

(গ) সময় কাটে

(ঘ) বিরক্তি লাগে

উত্তর : (ক) চা বিক্রি বাড়ে

“হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল।” দৃশ্যটি হলো-

(ক) হিন্দুরা বুড়ির মৃতদেহ নিয়ে আসছে

(খ) হেঁটে হেঁটে বুড়ি এদিকেই আসছে

(গ) বুড়ি মারা গেছে বলে সকলে কাদছে

(ঘ) মুসলমান পাড়ার লোকেরা বুড়ির মৃতদেহ নিয়ে আসছে

উত্তর : (ঘ) মুসলমান পাড়ার লোকেরা বুড়ির মৃতদেহ নিয়ে আসছে

ডাকপুরুষের বচন অনুযায়ী সোমবারের পউষে বাদল কতদিন চলে ?

(ক) সাত দিন

(খ) পাঁচ দিন

(গ) তিন দিন

(ঘ) এক দিন

উত্তর : (ঘ) এক দিন

বুড়িকে নদীতে ফেলে দিতে কে বলেছিল?

(ক) চৌকিদার

(খ) জগা

(গ) ভটচাযমশাই

(ঘ) মোল্লা

উত্তর : (ক) চৌকিদার

“চোখের মাথা খেয়েছিস মিনষেরা”- কার উক্তি ?

(ক)মোল্লার

(খ)ভট্টাচার্যমশায়ের

(গ) বুড়ির

(ঘ) নাপিতের

উত্তর : (গ) বুড়ির

“তোমাদের কত্তাবাবা টাট্ট” – কাদের উদ্দেশে এই কথা বলেছিল ?

(ক) মুসলমানদের

(খ) হিন্দুদের

(গ) যুবকদের

(ঘ) দেশের

উত্তর : (গ) যুবকদের

“মাথার ওপর আর কোনো শালা নেই রে— কেউ নেই”- কথাটি বলেছিল

(ক) গ্রামের কোনো যুবক চাষি

(খ) গ্রামের মোড়লেরা

(গ) এক ভবঘুরে

(ঘ) গ্রামের এক গণমান্য চাষি

উত্তর : (ক) গ্রামের কোনো যুবক চাষি

“আমি স্বকর্ণে শুনেছি, বুড়ি লা ইলাহা বলেছে।” কথাটি বলেছিল–

(ক) করিম ফরাজি

(খ) মোল্লা সাহেব

(গ) ফজলু শেখ

(ঘ) মৌলবি সাহেব

উত্তর : (গ) ফজলু শেখ

“যবন নিধনে অবতীর্ণ হও মা!” একথা বলেছিল—

(ক) ভট্টাচার্যৰ্মশাই

(খ) গাঁয়ের দারোগা

(গ) নিবারণ বাগদি

(ঘ) গাঁয়ের পুলিশ

উত্তর : (ক) ভট্টাচার্যৰ্মশাই

“বুড়িমা! তুমি মরনি!” বক্তা হলো—

(ক) চৌকিদার

(খ) গাঁয়ের দারোগা

(গ) নিবারণ বাগদি

(ঘ) গাঁয়ের পুলিশ

উত্তর : (ক) চৌকিদার

এ বারের বাদলা কী বারে লেগেছিল ?

(ক) সোমবারে

(খ) মঙ্গলবারে

(গ) বুধবারে

(ঘ) শনিবারে

উত্তর : (খ) মঙ্গলবারে

“পিচের সড়ক বাঁক নিয়েছে যেখানে, সেখানেই গড়ে উঠেছে”–

(ক) একটি মিষ্টির দোকান

(গ) একটি শনিমন্দির

(ঘ) একটি চায়ের দোকান

উত্তর : (খ) একটি ছোট্ট বাজার

“তোর শতগুষ্টি মরুক”- উক্তিটি কার?

(ক) জগার

(খ) মোল্লার

(গ) নকড়ির

(ঘ) বুড়ির

উত্তর : (ঘ) বুড়ির

“এক সময় দাগি ডাকাত ছিল”– কে একসময় দাগি ডাকাত ছিল?

(ক) ফজলু শেখ

(খ) নিবারণ বাগদি

(গ) করিম ফরাজি

(ঘ) নকড়ি নাপিত

উত্তর : (খ) নিবারণ বাগদি

ভারতবর্ষ গল্পের ছোট প্রশ্ন উত্তর

’ডাওর’ কাকে বলে?

উত্তর : শীতকালের বৃষ্টিকে রাঢ়বাংলার চাষাভুষোরা ‘ডাওর’ বলে |

‘ সেটাই সবাইকে অবাক করেছিল ” —কোন ঘটনা সবাইকে অবাক করেছিল ?

উত্তর : থুরথুরে কুঁজো ভিখিরি বুড়ি ওই দুর্যোগে কীভাবে বেঁচেবর্তে হেঁটে চায়ের দোকানে আসতে পারে , সেটাই সবাইকে অবাক করেছিল।

“সেই সময় এল এক বুড়ি।” –বুড়ির অবয়ব কেমন ছিল?

উত্তর : বুড়ি থুথুরে কুঁজো, একমাথা সাদা চুল, খর্বুটে, পরনে ছেঁড়া কাপড়, গায়ে জড়ানো চিটচিটে তুলোর কম্বল |

নাপিত নকড়ি বুড়িকে কী বলতে শুনেছিল ?

উত্তর : নাপিত নকড়ি বুড়িকে হরিবােল হরিবােল বলতে শুনেছিল।

চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে গ্রামবাসীরা কীসের প্রতীক্ষা করছিল ?

উত্তর : চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে গ্রামবাসীরা রােদ ঝলমল একটা দিনের প্রতীক্ষা করছিল।

’ফাঁপি’ কী?

উত্তর : শীতকালে বৃষ্টির সঙ্গে জোরালো বাতাস বইলে তাকে ‘ফাপি’ বলে |

“ বােঝা গেল , বুড়ির এ অভিজ্ঞতা প্রচুর আছে। ” বুড়ির কী অভিজ্ঞতা ছিল ?

উত্তর : গাছের মােটা শিকড়ে বসে শিকড়ের পিছনে গাছের খোঁদলে পিঠ ঠেকিয়ে পা ছড়িয়ে বসার অভিজ্ঞতা বুড়ির আছে।

“ তর্কাতর্কি , উত্তেজনা হল্লা চলতে থাকল। ” কী বিষয়ে , কাদের মধ্যে তর্কাতর্কি , উত্তেজনা ও হল্লা চলছিল ?

উত্তর : সমাজসচেতন লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ রচিত ‘ ভারতবর্ষ ‘ গল্পে একটি চেতনাহীন বৃদ্ধা হিন্দু না মুসলমান এই বিষয়কে কেন্দ্র করে হিন্দু – মুসলমানদের মধ্যে। তর্কাতর্কি , উত্তেজনা , হল্লা চলছিল।

“ হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল ” অদ্ভুত দৃশ্যটি কী ?

উত্তর : সকালে যে বুড়ির মৃতদেহ গ্রামের যুবকরা নদীর তীরে ফেলে দিয়ে এসেছিল , বিকেলে মাঠ পেরিয়ে মুসলমানরা সেই দেহকেই চ্যাংদোলায় বহন করে আনছে।

“সবার হাতে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র। – কী কারণে সবাই অস্ত্রশস্ত্র নিয়েছিল?

উত্তর : বুড়ি হিন্দু না মুসলমান– এই বিতর্কে হিন্দু আর মুসলমানেরা জড়িয়ে পড়েছিল। সেই বিতর্ক চরমে পৌঁছলে পরস্পরকে আক্রমণের জন্য তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়েছিল।

“চৌকিদার হাঁ করে দেখছে।” – চৌকিদার কী দেখছে?

উত্তর : চৌকিদার দেখছে বুড়ি নড়তে নড়তে উঠে বসার চেষ্টা করছে আর দু-দিকের সশস্ত্র জনতা তার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।

“একদা সে ছিল পেশাদার লাঠিয়াল। এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর : এখানে ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের করিম ফরাজির কথা বলা হয়েছে।

“বৃষ্টিতে তা হলো ধারালো” —কী ধারালো হল?

উত্তর : রাঢ় বাংলার জাঁকালো শীতের মধ্যে বৃষ্টি হলে গাঁত খুব ধারালো হয়।

“আমি স্বকর্ণে শুনেছি।” –কে, কী শুনেছিল?

উত্তর : ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে ফজলু সেখ বুড়িকে ‘লাইলাহা ইল্লাল্লা’ বলতেশুনেছে।

“তার সপক্ষে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।”—কার সপক্ষে কী প্রমাণ জুটে গেল?

উত্তর : গাঁয়ের ভটচাজমশাই বুড়িকে শ্রীহরি বলতে শুনেছে। এই কথার সমর্থন করে নকড়ি নাপিত বলল সে বুড়িকে ‘হরিবোল’ বলতে শুনেছে, নিবারণও তার পক্ষ নিল। এইভাবে অনেক প্রমাণ জুটে গেল।

“বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস জোরালো হলে বলা হয় কী?

উত্তর : বৃষ্টির সঙ্গে বাতাস জোরালো হলে তাকে ফাপি বলা হয়।

ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উত্তর

কখন বির্মষ সভ্যতার মুখ চোখে পরে?

উত্তরঃ যখন কাঁচা রাস্তা ধরে বিদ্যুৎহীন গ্রামের দিকে সবুজ ঝোপের ফাঁকে এগিয়ে আসে আমেদাবাদের কারখানায় তৈরি পোশাক পরিহিত কোন যুবক-যুবতি, তখনই বিমর্ষ মুখ চোখে ধরা পরে।

‘বাজারে বিদ্যুৎ আছে।’ —বাজারে কী কী আছে তার বর্ননা দাও?

উত্তরঃ বাজারে রয়েছে তিনটি চায়ের দোকান।এছাড়াও তিনটি পোশাকের, দুটি সন্দেশের, একটি মনোহারি ও দুটি মুদির দোকান রয়েছে। রয়েছে একটা আড়ত, একটা হাস্কিং মেশিন এবং পিছনে রয়েছে একটি ইটভাটা।

”তারপর সব ফাঁকা।” —কখন সব ফাঁকা হয়ে যায়?

উত্তরঃ বাজারটিতে চারপাশের গ্রাম থেকে লোকেরা আসে। সেখানে রাত নটার পর সব ফাঁকা হয়ে যায়।

ফাঁপি কাকে বলে?

উত্তরঃ রাঢ়বাংলার জাঁকালো শীত যখন বৃষ্টিতে ধারালো হয় তখন ভদ্রলোকে তাকে বলে “পউষে বাদলা”, ছোটলোকে তাকে বলে ‘ডাওর’ আর বৃষ্টির সঙ্গে জোরে বাতাস দিলে তাকে বলে ফাঁপি।

‘তখন যা খুশি করা যায়’ —এখানে যা খুশি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ আল্লা-ভগবান মাথার উপর না থাকলে ভরা শীতের অকাল দুর্যোগে সভ্যতার ছোট উনুনের পাশে উপস্থিত হয়ে প্রসঙ্গহীন তর্ক ও মারামারি করা যায়।

‘এইটুকু যা সুখ’ —কোন সুখের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ প্রচন্ড শীতে অকালবর্ষণ হলে গ্রামের লোকেরা এসে একটু হাত-পা সেঁকে সুখ পায়, তারই কথা বলা হয়েছে।

বুড়ির মুখটা কেমন ছিল?

উত্তরঃ বুড়ির মুখটা ছিল ক্ষয়িত, খর্বুটে এবং তার মুখে প্রকট ছিল সুদীর্ঘ আয়ুর চিহ্ন।

‘সেটাই সবাইকে অবাক করেছিল’ — সবাই অবাক হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ দুর্যোগের মধ্যে বুড়ি কিভাবে বেঁচে আছে এবং হেঁটে দোকানে এসেছে, তা ভেবেই দোকানের সবাই অবাক হয়ে যায়।

‘আর, সবাই আবিষ্কার করল’ —সবাই কী আবিষ্কার করল?

উত্তরঃ পউষে বাদলা, যেদিন ছাড়ল, সেদিন সবাই বটতলায় গিয়ে আবিষ্কার করল যে, বটতলায় গুঁড়ির খোঁদলে পিঠ রেখে বুড়ি চিৎ হয়ে নিঃসাড় ভাবে পরে আছে।

ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর 2022

“সেখানেই গড়ে উঠেছে একটা ছোট্ট বাজার।”—বাজারটি কোথায় অবস্থিত ছিল? এই বাজারটির বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ বাজারটির অবস্থান সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পটি গড়ে উঠেছে রাঢ়বাংলার একটি ছোট্ট গ্রাম্য বাজারকে কেন্দ্র করে। পিচের সড়ক আদ্যিকালের এক বটগাছের পাশে যেখানে বাঁক নিয়েছে, সেখানেই গড়ে উঠেছিল বাজারটি।

বাজারটির বর্ণনা: বাজারটিতে সবমিলিয়ে ছিল তিনটি চায়ের দোকান, দুটো সন্দেশের দোকান, তিনটি পোশাকের দোকান, একটা মনোহারির দোকান এবং দুটি মুদিখানা। এ ছাড়াও একটি আড়ত এবং একটি হাস্কিং মেশিনেরও দোকান ছিল সেখানে। বাজারটির উত্তরে ছিল বিরাট একটি মাঠ এবং পেছনে ছিল বাঁশবন। চারপাশের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন এখানেই কেনাকাটা করতে আসত।

পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকলেও বাজারে বিদ্যুৎ ছিল। সকাল থেকে শুরু করে রাত ন-টা পর্যন্ত এই বাজার খোলা থাকত। চারপাশের গ্রামের মানুষদের কাছে এটা তাই একটা আড্ডার জায়গাও ছিল। ‘সভ্যতার ছোট উনোনের পাশে হাত-পা সেঁকে নিতে’ তারা প্রায়শই বাজারে আসত, বিশেষত সন্ধ্যায়, যখন গ্রামগুলি প্রায় অন্ধকার থাকত। রাত ন-ন্টায় বাজার ফাঁকা হয়ে গেলে জনহীন বাজারের বৈদ্যুতিক আলোয় দু-একটা নেড়িকুত্তাকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত। একটা-দুটো ট্রাক কখনো-সখনো রাস্তা দিয়ে শহরের দিকে চলে যেত। রাতে নিস্তব্ধ বাজারের পাশের বটগাছ থেকে পাচার ডাক শোনা যেত।

“সেই সময় এল এক বুড়ি।”—লেখক বুড়ির সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ বুড়ির বর্ণনা: কথামুখ: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ এর ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে আমরা এক থুথুরে বুড়ির কথা জানতে পারি। এক বৃষ্টিভেজা শীতের দিনে গ্রামের কর্মহীন মানুষেরা চায়ের দোকানে অলস সময় কাটাচ্ছিল আর নিজেদের মধ্যে নানারকম তর্কবিতর্কে মেতে উঠেছিল। সেই সময় সেখানে আগমন ঘটে থুথুড়ে কুঁজো এক ভিখিরি বুড়ির।

চেহারার বর্ণনা: লেখকের কথায় তার ‘রাক্ষুসী চেহারা’। একমাথা সাদা চুল, পরনে একটা ছেঁড়া নোংরা কাপড়, গায়ে জড়ানো চিটচিটে তুলোর কম্বল, আর হাতে তার একটা বেঁটে লাঠি। পিচের রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে একই তালে অবিচলিত ভঙ্গিতে হেঁটে সে চায়ের দোকানে এসে ঢুকল। তার ক্ষয়া ও খর্বাকৃতি চেহারা এবং মুখে “সুদীর্ঘ আয়ুর চিহ্ন প্রকট।” চেহারার থেকেও বিস্ময়কর ছিল তার চড়া মেজাজ।

বুড়ির স্বাধীনচেতা স্বভাব: প্রবল বৃষ্টিতে তার আগমনে বিস্মিত মানুষজন জানতে চাইল যে সে কোথা থেকে এসেছে। বুড়ি তখন রাগত ভঙ্গিতে জবাব দেয়—“সে কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?” তার তেজ নিয়ে উপস্থিত মানুষেরা কিছু কৌতুক করলে বৃদ্ধা আরও ঝাঁজালো উত্তর দিয়ে বলে—“তোমাদের কত্তাবাবা টাট্রু।” চায়ের দাম মিটিয়ে বৃদ্ধা যখন আবার রাস্তায় নেমে যায়, তখন তারা তার মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করলে বৃদ্ধার উত্তর ছিল “তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।” গল্প শেষে যখন তার তথাকথিত মৃতদেহের অধিকার নিয়ে হিন্দু-মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষেরা সংঘাতের মুখোমুখি তখন তার নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বৃদ্ধা বলেছে—“আমি কী তা দেখতে পাচ্ছিস নে? চোখ গেলে দোবো”

ইতিকথা: নিজস্ব মেজাজে বৃদ্ধা যেন হয়ে উঠেছে ধর্মান্ধতার এক প্রবল প্রতিবাদ।

ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2022

“তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।”—কে মন্তব্যটি করেছে? মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।

উত্তরঃ বক্তা: সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বৃষ্টি বিঘ্নিত শীতের দিনে চায়ের দোকানে আগন্তুক বৃদ্ধাটি উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

প্রেক্ষাপট: প্রবল বৃষ্টিতে গ্রামের মানুষ যখন কর্মহীন হয়ে চায়ের দোকানে আড্ডারত, সেই সময়েই সেখানে আগমন ঘটে বয়সের ভারে জীর্ণ বৃদ্ধার, যিনি প্রবল বৃষ্টিতেও চলাফেরায় সাবলীল। চায়ের দোকানে চা পান করে তিনি উপস্থিত সকলের মুখের দিকে তাকান, কিন্তু নিজে কিছু বলেন না। তখন কৌতূহলী মানুষদের মধ্যে থেকে কেউ একজন জানতে চান যে কোথা থেকে তার আগমন ঘটছে। মেজাজি বৃদ্ধা রাগত ভঙ্গিতে পালটা প্রশ্ন করেন—“সে কথায় তোমাদের কাজ কী বাছারা?” উপস্থিত মানুষেরা সেই তেজ দেখে হেসে ওঠে এবং তির্যক মন্তব্য করে—“এই বাদলায় তেজি টাট্টুর মতন বেরিয়ে পড়েছে।” বৃদ্ধাও পালটা প্রতিক্রিয়া দেন—“তোমাদের কাবাবা টাট্টু।” উপস্থিত জনতাকে তিনি ‘অকথাকুকথা’ বলতে নিষেধও করেন। শেষপর্যন্ত বৃদ্ধা কম্বলের ভিতর থেকে একটি ন্যাকড়ায় বাঁধা পয়সা খুলে চায়ের দাম মিটিয়ে আবার রাস্তায় নেমে যায়। যা দেখে সকলে আশঙ্কা প্রকাশ করে যে বৃদ্ধার নিশ্চিত মৃত্যু হবে। আর তা শুনতে পেয়েই বৃদ্ধা ঘুরে দাঁড়ায় এবং বলে— “তোরা মর্, তোদের শতগুষ্টি মরুক।”

ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উত্তর 2023

“ কতক্ষণ সে এই মারমুখী জনতাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারত কে জানে ? ” — ‘ সে ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে ? জনতা মারমুখী হয়ে উঠেছিল কেন ?

উত্তরঃ ‘ সে ’ বলতে এখানে বিপন্ন আইনরক্ষক নীল উর্দিপরা চৌকিদারকে বােঝানাে হয়েছে।

মৃত ভেবে বৃদ্ধার ধর্ম – পরিচয়ের প্রশ্নে হিন্দু ও মুসলমান দুই সম্প্রদায়ের মানুষ বিবদমান হয়ে উঠেছিল। উভয় ধর্মের বেশ কিছু মানুষ বৃদ্ধার ধর্ম – পরিচয়ের প্রমাণ দিতে শুরু করলেন। মােল্লাজি , ফজলু সেখ , করিম ফরাজি প্রমাণ করতে শুরু করল বৃদ্ধা মুসলমান। আবার ভট্টচামশাই , নিবারণ বাগদি , নকড়ি নাপিত প্রমাণ দিল বৃদ্ধা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ধর্ম পরিচয়ের প্রশ্নে বচসা বাড়তে লাগল , তর্কাতর্কি – উত্তেজনা – হল্লা চলতে থাকল। দু’পক্ষের মানুষেরাই মৃতদেহের উপর দাবি জানিয়ে বাঁশের চ্যাংদোলাটা নিয়ে টানাটানি শুরু করে দেয়। প্রচণ্ড উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে , দোকানের ঝাপ বন্ধ হতে থাকে। তারপরেই দেখা যায় গ্রাম থেকে অনেক লােক দৌড়ে আসছে। সবার হাতেই মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র। বৃদ্ধার শবদেহের দুপাশে স্পষ্ট দুটো জনতা ’ – কে দণ্ডায়মান দেখা যায়।

এই পরিস্থিতিতে অগ্নিতে ঘৃতাহুতির মতাে কাজ করে মােল্লাসায়েব এবং ভচামশাইয়ের ইন্ধন। এরই ফলশ্রুতিতে ধুন্ধুমার গর্জন – প্রতিগর্জন শােনা গেল এবং জনতা মারমুখী হয়ে উঠল। উভয় পক্ষই বৃদ্ধার ধর্মপরিচয়ের প্রশ্নে নিজ নিজ মত প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় রত হলাে। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ প্রস্তুতির পটভূমিকাকেই মারমুখী জনতা ‘ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

“শেষ রোদের আলোয় সে দূরের দিকে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল।”— কার কথা বলা হয়েছে? সে ক্রমশ আবছা হয়ে গেল কেন?

উত্তরঃ উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: বাংলা সাহিত্য জগতের একজন অন্যতম সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পে শীতের দিনে ‘ফাপি’র প্রতিকূল আবহাওয়ায় গ্রামে চলে আসা বৃদ্ধা–যার মৃতদেহকে ঘিরে হিন্দু এবং মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়েছিল—সেই বৃদ্ধার কথাই এখানে বলা হয়েছে।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তির আবছা হয়ে যাওয়ার কারণ: গ্রামের মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষেরা নদীর চড়ায় ফেলে আসা বৃদ্ধার মৃতদেহকে গ্রামে ফিরিে আনে এবং তাকে মুসলমান দাবি করে কবরস্থ করার উদ্যোগ নেয়। এই নিয়ে হিন্দু এবং মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষের উপক্রম হয়। মোল্লাসাহেবের নেতৃত্বে একপক্ষ থেকে চিৎকার ওঠে “আল্লাহ্ আকবর”, অন্যপক্ষ থেকে ভটচামশাইয়ের নেতৃত্বে গর্জন শোনা যায়—“জয় মা কালী।” এই সময়েই দেখা যায় এক অদ্ভুত দৃশ্য। বুড়ির মৃতদেহটি নড়ছে এবং আস্তে আস্তে তা উঠে বসার চেষ্টা করছে। বুড়ি উঠে দাঁড়ায়, ভিড়কে দেখে এবং বিকৃত মুখে হেসে ওঠে। তারপর ধীরে ধীরে রাস্তা ধরে সে এগিয়ে যায়। যুযুধান মানুষেরা সরে গিয়ে তাকে পথ করে দেয়। দূরের দিকে ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে যাওয়া বৃদ্ধা যেন ভারতবর্ষের অন্তরাত্মার প্রতীক হয়ে ওঠে, যেখানে বিদ্বেষ বা উগ্রতার কোনো জায়গা নেই।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

‘ভারতবর্ষ’ গল্পে বুড়ির দীর্ঘনিদ্রাভঙ্গ কীভাবে দুই সম্প্রদায়ের মারমুখী জনতাকে শান্ত করল, তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ উত্তর সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের ‘ভারতবর্ষ’ গল্পের শেষদিকে বুড়ির মৃতদেহের অধিকার নিয়ে সশস্ত্র হিন্দু ও মুসলমান গ্রামবাসীদের মধ্যে যখন রক্তক্ষয়ী দাঙ্গার পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখনই বুড়ির দীর্ঘনিদ্রা ভঙ্গ হয়। বাঁশের মাচায় শায়িত বুড়ি হঠাৎ নড়ে উঠে বসতে চেষ্টা করে। দু-পক্ষের মারমুখী জনতা এবং চৌকিদার বিস্ময়ে সেদিকে তাকিয়ে থাকে। বুড়ি এরপর ক্রমে দাঁড়িয়ে পড়ে। তার দু-দিকের দু-দলের ভিড় দেখে তার মুখ ব্যাজার হয়ে যায়।

সেই ব্যাজার মুখেই তারপর ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে ওঠে সে। চৌকিদারের “বুড়িমা! তুমি মরনি!”— এই বিস্ময়সূচক প্রশ্ন শুনে এরপর সে শতগুষ্টি-সহ চৌকিদারেরই মরণ কামনা করে। সমবেত জনতাও যখন চিৎকার করে একই কথা বলতে থাকে তখন বুড়ি তাদের ‘মুখপোড়া’ বলে গালি দিয়ে শাপশাপান্ত করে। বুড়ি হিন্দু না মুসলমান—এ কথা এরপর একজন জিজ্ঞাসা করলে প্রচণ্ড রেগে গিয়ে বুড়ি জনতাকে জানায় যে, তারা তাদের চোখের মাথা খেয়েছে। ‘নরকখেকো’, ‘শকুনচোখো’ ইত্যাদি গালাগাল সহযোগে সে জনতাকে জানায় যে, তারা বুড়িকে দেখে তার ধর্মপরিচয় যেহেতু বুঝতে পারছে না, তাই বুড়ি তাদের সবার চোখ গেলে দেবে।

জনতাকে দূর হতেও বলে সে। কথাগুলো বলে বুড়ি নড়বড় করতে করতে সেখান থেকে বেরোলে জনতা সরে গিয়ে তাকে পথ করে দেয়। দিনের শেষ রোদ্দুরে দুরের দিকে ক্রমে অস্পষ্ট হয়ে যায় বুড়ি। এভাবেই দীর্ঘনিদ্রা থেকে জেগে ওঠা বুড়ি সম্প্রদায়ের মারমুখী জনতাকে শান্ত করেছিল।

ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর, ভারতবর্ষ গল্পের প্রশ্ন উত্তর pdf download

রায় & মার্টিন সাহিত্য বিচিত্র ক্লাস-১২


রায় & মার্টিন সাহিত্য বিচিত্র ক্লাস-১২.

ভারতবর্ষ গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

’ডাওর’ কাকে বলে?
উত্তর : শীতকালের বৃষ্টিকে রাঢ়বাংলার চাষাভুষোরা ‘ডাওর’ বলে |


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।