মেকলে মিনিট কি, মেকলে কে ছিলেন, মেকলে মিনিট কবে প্রকাশিত হয়

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মেকলে মিনিট কি, মেকলে মিনিট কাকে বলে

১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে লর্ড টমাস ব্যাবিংটন মেকলে গভর্নর জেনারেলের পরিষদে আইন সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হন। গভর্নর জেনারেল বেন্টিঙ্ক মেকলেকে Commitee of Public Instruction-এর সভাপতি পদে নিযুক্ত করেন। এ সময়ে ভারতে প্রাচ্য-পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্ব প্রবল আকার ধারণ করে। এই পরিস্থিতিতে বেন্টিঙ্ক মেকলেকে এ ব্যাপারে সুপারিশ পাঠাতে বলেন। মেকলের এই সুপারিশ বা Minute-ই ‘মেকলে মিনিট’ নামে অভিহিত।

১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত তাঁর এই সুপারিশে তিনি ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাপ্রসারের ওপর জোরালো সওয়াল করেন। তাঁর মতে,

(১) ভারতীয় বিদ্যা জানা অপ্রয়োজনীয়। 

(২) প্রাচ্য ভাষা ও সাহিত্য সম্পদ ইউরোপীয় ভাষা ও সাহিত্যের সম্পদের তুলনায় নিকৃষ্টতর, অপরপক্ষে পাশ্চাত্য জ্ঞানভাণ্ডার অফুরন্ত। 

(৩) এ ছাড়া মেকলে ইংরেজি শিক্ষিত একদল ভারতীয় কর্মচারী সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন যারা অল্প বেতনে কাজ করে সরকারের অনেক আর্থিক সাশ্রয় করতে পারবে। মেকলের যুক্তি ঘোরতর পাশ্চাত্যবাদী বেন্টিঙ্ক সমর্থন করে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ৭ মার্চ ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের সরকারি নীতি ঘোষণা করেন। 

মেকলে মিনিট ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তন ও প্রসারে এক মাইল ফলক। এর ফলে ভারতে নবজাগরণের পথ প্রশস্ত হয়েছিল। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের সরকারি ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বেন্টিঙ্কের উৎসাহে প্রতিষ্ঠিত হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ এবং বোম্বাইয়ের এলফিনস্টোন ইনস্টিটিউশন। এ ছাড়া Council of Education প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইংরেজি শিক্ষার ওপর লক্ষ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। 

মেকলে কে ছিলেন

ব্যাবিংটন মেকলে ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শিক্ষাসচিব। কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি।

লর্ড টমাস ব্যাবিংটন মেকলে (১৮०০-১৮৫৯ খ্রি.) ছিলেন একজন খ্যাতনামা ব্রিটিশ পণ্ডিত, ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক এবং হুইগ দলের রাজনৈতিক নেতা। তার বিভিন্ন আলােচনা ও ক্ষুদ্র প্রবন্ধগুলিতে ভারতীয় সমাজ ও সভ্যতা সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় পাওয়া যায়।

জনশিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৮২৩ খ্রিঃ জনশিক্ষা কমিটি তৈরি হয়। গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক জনশিক্ষা কমিটির সভাপতি নিযুক্ত করেন তাঁর আইন সচিব টমাস ব্যাবিংটন মেকলেকে।

মেকলে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারের উগ্র সমর্থক ছিলেন। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদী দ্বন্দ্বের অবসান ঘটাতে তিনি ভারতে পাশ্চাত্যশিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে ১৮৩৫ খ্রিঃ (২ ফেব্রুয়ারি) লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে একটি প্রস্তাব দেন যা ‘মেকলে মিনিটস’ নামে পরিচিত।

মেকলে তাঁর প্রস্তাবে বলেন যে প্রাচ্যের শিক্ষা বৈজ্ঞানিক চেতনাহীন এবং পাশ্চাত্যের তুলনায় নিকৃষ্ট। প্রাচ্যের সভ্যতা দুর্নীতিগ্রস্থ ও অপবিত্র। তাই এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তিত হওয়া উচিত। এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রাসর ঘটলে ‘চুঁইয়ে পড়া নীতি’ অনুসারে ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।

পাশ্চাত্য শিক্ষার বিস্তারের ফলে এদেশে এমন একটি সম্প্রদায়ের আত্মপ্রকাশ ঘটবে যারা রক্তে ও বর্ণে ভারতীয় হলেও রুচি, মত, নৈতিকতা ও বুদ্ধিমত্তায় হবে ইংরেজ’। শেষ পর্যন্ত তার প্রস্তাবের সুপারিশ মেনে বেন্টিঙ্ক ১৮৩৫ খ্রিঃ (৭ মার্চ) এদেশে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকে সরকারের শিক্ষানীতি হিসেবে ঘোষণা করেন— এই হিসেবে মেকলেকে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তক বলতে অত্যুক্তি হয় না।

মেকলের দৃষ্টিভঙ্গি

[1] ব্রিটিশ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব: মেকলে বিশ্বসভ্যতাকে দুই ভাগে বিভক্ত করেন, যথা-সভ্য জাতিসমূহ ও অসভ্য জাতিসমূহ। তিনি ব্রিটিশ জাতিকে চূড়ান্ত সভ্য জাতি এবং ভারতীয় সভ্যতাকে চূড়ান্ত নিকৃষ্ট সভ্যতা বলেন। তার মতে, উন্নত ব্রিটিশ সভ্যতা ও সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসে নিকৃষ্ট ভারতীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতির উন্নতি ঘটতে পারে।

[2] ভারতে মেকলে: লর্ড মেকলে ভারতের বড়ােলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের (১৮২৮-১৮৩৫ খ্রি.) আইন সচিব এবং কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন-এর সভাপতি নিযুক্ত হন। তিনি ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ইংরেজি ভাষা ও পাশ্চাত্য ভাবধারার প্রসারে উল্লেখযােগ্য অবদান রাখেন।

[3] ভারতীয় শিক্ষার নিন্দা: ভারতে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার প্রথম পর্বে শিক্ষাদানের মাধ্যম ছিল সংস্কৃত বা আরবি ভাষা। মেকলে ভারতীয় সভ্যতা ও চিরাচরিত শিক্ষাব্যবস্থার তীব্র নিন্দা করে ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে (২ ফেব্রুয়ারি) বেন্টিঙ্কের কাছে এক প্রস্তাব বা ‘মিনিট পেশ করেন। এই প্রস্তাবে তিনি উল্লেখ করেন যে—

  • [i] প্রাচ্যের সভ্যতা হল ‘দুর্নীতি, অপবিত্র ও নির্বুদ্ধিতাপূর্ণ। 
  • [ii] প্রাচ্যের শিক্ষার কোনাে বৈজ্ঞানিক চেতনা নেই। এই শিক্ষা পাশ্চাত্য শিক্ষাব্যবস্থার চেয়ে সম্পূর্ণ নিকৃষ্ট। 
  • [iii] তাঁর মতে, একটি ভালাে ইউরােপীয় গ্রন্থাগারের একটি তাক ভারত বা আরবের সমগ্র সাহিত্যের সমকক্ষ।

[4] ইংরেজি ভাষার প্রসার: মেকলে তৎকালীন বড়ােলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ককে বােঝাতে সক্ষম হন যে, বিদ্যালয়ে মাতৃভাষায় শিক্ষাগ্রহণের ষষ্ঠ বর্ষ থেকে ইংরেজি ভাষাকে ভারতে উচ্চশিক্ষার প্রসারের ভাষা মাধ্যম হিসেবে চালু করা উচিত। এর ফলে এদেশে এমন ভারতীয় জনগােষ্ঠী তৈরি হবে ‘যারা রক্তে ও বর্ণে হবে ভারতীয়, কিন্তু রুচি, মত, নৈতিকতা এবং বুদ্ধিমত্তায় হবে ইংরেজ।’

[5] ক্রমনিম্ন পরিশুত নীতি: মেকলে মনে করেন যে, প্রথম পর্যায়ে ভারতের উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ইংরেজি ও পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। জল যেভাবে ওপর থেকে নীচের দিকে প্রবাহিত হয় তেমনি পরবর্তীকালে এই উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির সহায়তায় পাশ্চাত্য শিক্ষা ক্রমে ভারতের সাধারণ ও নিম্নমধ্যবিত্তদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। মেকলের এই নীতি ‘ক্রমনিন্ন পরিশ্রত নীতি’ বা ‘টুইয়ে পড়া নীতি’ (Downward Filtration Theory) নামে পরিচিত।

মেকলে মিনিট বলতে কী বোঝো

টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে 1835 সালে ফেব্রুয়ারি মাসে বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে একটি প্রস্তাব দেন যা মেকলে মিনিট বা মেকলে প্রস্তাব নামে পরিচিত।

পটভূমি

ভারতে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এদেশে একটি সুনির্দিষ্ট শিক্ষাব্যবস্থার প্রসার ঘটানো বিশেষ প্রয়োজন দেখা দেয়।

তাই ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে প্রাচ্য শিক্ষা নাকি আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার পূর্বে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

এদেশীয় পণ্ডিতরা প্রাচ্য শিক্ষার প্রবর্তনের কথা বললেও ইংরেজরা এদেশে আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের দাবি করেন।

মেকলের প্রস্তাব

মেকলে মিনিটসের বিভিন্ন প্রস্তাবে বলা হয় যে –

(ক) পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রাচ্যের তুলনায় বহুগুনে উৎকৃষ্ট ।

(খ) প্রাচ্যের সভ্যতা দুর্নীতিগ্রস্ত, অনুন্নত ও নির্বুদ্ধিতাসম্পন্ন ,তাই এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা চালু হওয়া উচিত।

(গ) প্রাচ্য–শিক্ষা নিকৃষ্ট ও বৈজ্ঞানিক চেতনাহীন ।

(ঘ) প্রাচ্যের সভ্যতা ও সংস্কৃতির উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটতে পারে একমাত্র পাশ্চাত্য শিক্ষার হাত ধরেই।

(ঙ) এদেশের উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের মধ্যে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার ঘটলে ক্রমনিম্ন পরিস্রুত নীতি বা চুঁইয়ে পড়া নীতি অনুসারে তা ক্রমশ সাধারণ দেশবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে।

প্রভাব

(ক) মেকলে মিনিটের প্রস্তাব মেনে কলকাতায় মেডিকেল কলেজ, মাদ্রাজে ইউনিভার্সিটি এবং বোম্বাইয়ে এলফিনস্টোন ইন্সটিটিউট গড়ে তোলা হয়।

(খ) কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন পুনর্গঠিত করে কাউন্সিল অব এডুকেশন গঠন করা হয়।

পরিণতি

মেকলের প্রতিবেদনের ফলেই ভারতে ইংরেজি শিক্ষার দ্বার খুলে যায়। প্রাচ্য-পাশ্চাত্য শিক্ষা সংক্রান্ত বিতর্কে পাশ্চাত্যবাদীদের জয় সুনিশ্চিত হয়।

মেকলের শিক্ষা নীতির দ্বারা প্রভাবিত হয়েই ভারতে পরবর্তী কালে পোশাকে আশাকে একটি ইংরেজ অনুগত শ্রেনী গড়ে ওঠে।

মূল‍্যায়ন

ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের প্রেক্ষাপটে মেকলে মিনিট ছিল অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব। শেষপর্যন্ত মেকলে মিনিটের সুপারিশ মেনেই বড়োেলাট লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক ভারতবর্ষে ইংরেজি শিক্ষার প্রসারকে সরকারের শিক্ষানীতি হিসেবে জারি করেন।

মেকলে প্রতিবেদন কি

টমাস ব্যাবিংটন এডওয়ার্ড মেকলে ছিলেন একাধারে লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্কের আইন সচিব এবং ‘ কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন ‘ – এর সভাপতি । তিনি প্রাচ্যশিক্ষার পরিবর্তে এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার বিষয়ে যে বিখ্যাত প্রস্তাব পেশ করেন ( ১৮৩৫ খ্রি. ২ ফেব্রুয়ারি ) তা ‘ মেকলে মিনিটস ‘ বা ‘ মেকলে মিনিট ‘ নামে পরিচিত । তিনি বলেছিলেন , “ ইউরােপের একটি ভালাে গ্রন্থাগারের বই ভরতি একটি তাকই ভারত ও আরবের সমগ্র সাহিত্যের সমান ” ( A single shelf of a good European library is worth the whole literature of India and Arabia ) ।

মেকলে তাঁর প্রতিবেদনে মেকলে জানিয়েছিলেন, যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভারতীয় ভাষায় শিক্ষার চর্চা করবে তারা কোনও সরকারি অনুদান পাবে না। মেকলেও সংস্কৃত কলেজের বিলুপ্তির পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। বাস্তবে মেকলের ধারণা ছিল, ব্রিটিশরাই জাতিগতভাবে উন্নত এবং তাদের হাত ধরেই উপনিবেশ হিসেবে ভারতে আধুনিকতা আসবে।

ইংরেজি ভাষা শিক্ষা প্রসঙ্গে মেকলে যে মন্তব্য করেছিলেন। তা হল ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ফলে এদেশে এমন এক শ্রেণির মানুষ সৃষ্টি হবে যারা রক্তে ও বর্ণে কেবল ভারতীয় থাকবে কিন্তু রুচি, মতামত, নীতি ও বুদ্ধিতে হবে ইং দর মতাে”।

মেকলে মিনিট এর গুরুত্ব কি, মেকলে মিনিট এর গুরুত্ব, মেকলে মিনিট এর দুটি গুরুত্ব

ইংরেজ ইস্ট কোম্পানি এদেশে ক্ষমতা দখলের পর পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। তাদের ধারনা ছিল এদেশের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রসারিত হলে ভারতবাসীর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনা বৃদ্ধি পাবে ও তারা ক্রমশ ব্রিটিশ বিরোধী হয়ে উঠবে। ফলে তারা প্রাচ্য ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চাকেই গুরুত্ব দিয়েছিলেন।

কোম্পানি উৎসাহী না হলেও খ্রিষ্টান মিশনারীরা এদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারে উদ্যোগ নেয়, তবে তাদের উদ্দেশ্য ছিল আলাদা। সমকালীন শিক্ষার দীনতা উপলব্ধি করে ১৮১৩ খ্রিঃ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চার্টার আইনের মাধ্যমে কোম্পানি সরকারকে বাৎসারিক ১ লক্ষ টাকা শিক্ষাখাতে ব্যয় করার নির্দেশ দেয়। তবে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের ফলে তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব হয়নি।

ভারতীয়রা অত্যন্ত উন্নত ছিল , তাদের অবনত না করলে শাসন করা যাবে না | অবনত করতে গেলে সংস্কৃত আর আরবি ভাষার শিক্ষা বন্ধ করতে হবে | অতএব পাশ্চাত্য শিক্ষার শুরু হলো। সেই ইচ্ছা থেকে ২রা ফেব্রুয়ারী, ১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেয়া মেকলের ভাষণের কপি থেকে পাওয়া যায় :

সংসদে যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল তা হলো ভারতের শিক্ষা খাতে বরাদ্দ টাকার কিভাবে ব্যয় হবে ? এই প্রশ্নেরই পক্ষে বিপক্ষে যুক্তি চালাচালি হচ্ছিল |

পাশ্চাত্য শিক্ষার বিপক্ষে যুক্তি :

১] ভারতে আরবি আর সংস্কৃত ভাষার জায়গায় ইংরাজি পড়ালে তা জনগনের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হবে |
২] আমরা জনগনের সহযোগিতা পেতে পারি আরবি আর সংস্কৃত শিক্ষার ব্যবস্থা করে |
৩] আরবি আর সংস্কৃত ভাষায় বিশাল সংখ্যক লোকেদের ধর্মগ্রন্থ লেখা আছে | সুতরাং এই ভাষাগুলি চর্চার প্রয়োজন |
৪] দেশীয় লোকজন ইংরাজি ভালো করে আয়ত্ত করতে পারবে না |

মেকলে মিনিট সমালোচিত হওয়ার কারণ, মেকলে মিনিট সমালোচিত হওয়ার কারণ কি

ভারতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতির অগ্রগতির ক্ষেত্রে মেকলের বিশেষ ভূমিকা থাকলেও তার ইতিহাস চেতনা বিভিন্ন কারণে। সমালােচিত হয়েছে, যেমন—

  • [i] মেকলে তাঁর রচনায় প্রতিপক্ষকে অনেক সময় অযৌক্তিকভাবে এবং নিমর্মভাবে আক্রমণ করেছেন। 
  • [ii] মেকলে ইতিহাস রচনায় তথ্যের চেয়ে ব্যক্তিগত মতামতকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। 
  • [iii] মেকলে প্রদত্ত ঐতিহাসিক তথ্যাবলি সর্বদা নির্ভরযােগ্য নয়। 
  • [iv] হুইগ দলের একনিষ্ঠ সমর্থক মেকলের রচনায় সুস্পষ্ট রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ছিল। তাঁর বক্তব্য বহুক্ষেত্রে একপেশে এবং পক্ষপাতদুষ্ট। 
  • [v] ধ্রুপদি যুগ সম্পর্কে তাঁর যতটা জ্ঞান ছিল ততটা জ্ঞান মধ্যযুগের ইতিহাস সম্পর্কে ছিল না।
  • [vi] ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দিক ধর্ম ও দর্শন সম্পর্কে মেকলের জ্ঞান ছিল সীমিত।

ড. অমলেশ ত্রিপাঠী বলেছেন যে, “সমসাময়িক কালের উচ্ছসিত অভিনন্দন লাভ করলেও মেকলের ঐতিহাসিক খ্যাতি আজ নিষ্প্রভ.. এক শতাব্দী অতিক্রান্ত হয়নি, মেকলে স্তুতির সপ্তম স্বর্গ হতে নিন্দার পঙ্কশয্যায় নেমে এসেছেন।”

আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | মেকলে মিনিট

Q1. মেকলে মিনিট কে প্রতিষ্ঠা করেন

Ans – ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে মেকলে বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে শিক্ষা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করেন যা মেকলে মিনিট নামে প্রতিষ্ঠা করেন।

Q2. লর্ড মেকলে কে ছিলেন

Ans – ব্যাবিংটন মেকলে ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের শিক্ষাসচিব। কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি।

Q3. মেকলে মিনিট কবে পেশ করা হয়

Ans – মেকলে মিনিট 1835 সালের ২ রা ফেব্রুয়ারী গৃহীত হয়।

Q4. মেকলে মিনিট বা মেকলে প্রস্তাব কি

Ans -টমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের দাবি জানিয়ে 1835 সালে ফেব্রুয়ারি মাসে বড়োলাট লর্ড বেন্টিঙ্কের কাছে একটি প্রস্তাব দেন যা মেকলে মিনিট বা মেকলে প্রস্তাব নামে পরিচিত।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।