প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কবে হয়েছিল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কবে হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কত সালে হয়

“প্রথম বিশ্বযুদ্ধ” যা গ্রেট ওয়ান হিসেবেও পরিচিত।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই ইউরোপে শুরু হয়। যা পরবর্তীতে ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। সেই যুদ্ধে ৬০ মিলিয়ন ইউরোপীয় সহ আরো ৭০ মিলিয়ন সামরিক বাহিনীর সদস্য ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম এই যুদ্ধে একত্রিত হয়। ইতিহাসে সংগঠিত হওয়া সবচেয়ে বড় সংগাতের মদ্ধ্যে এটি অন্যতম।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমান অর্থ ব্যয় হয়েছিল তা আজ পর্যন্ত যেকোনো যুদ্ধের যুদ্ধব্যয় থেকে বেশি। টাকার পরিমানে যা ছিল প্রায় ১৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রত্যক্ষ ও ১৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরোক্ষভাবে।

আর এই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত হয় প্রায় ১ কোটি সৈন্য এবং ২ কোটি ১০ লক্ষ্য সাধারন মানুষ।
আর নিহতের সংখ্যাও ছিল ভয়াবহ। যা সংখ্যায় প্রায় ৯০ লক্ষ যোদ্ধা আর ৫০ লক্ষ নিরিহ মানুষ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে ৪টি সম্রাজ্যের পতন ঘটে আর অটোমান সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা অধিকাংশ আরব এলাকা ব্রিটিশ ও ফরাসি সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল pdf

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম রক্তক্ষয়ী মহাযুদ্ধ হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। নতুন নতুন সামরিক প্রযুক্তি ও ভয়াবহ ধ্বংসের জন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সর্বাধিক আলোচিত। পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগের কোন যুদ্ধে কখনোই এতো মানুষের প্রাণ যায়নি। যুদ্ধে সামরিক ও বেসামরিক মিলে প্রায় ১৬ মিলিয়ন লোকের প্রাণ গিয়েছিল।

১৯১৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই মহাযুদ্ধটি ১৯১৮ পর্যন্ত চলেছিল। প্রায় ৫ বছর ধরে চলা প্রথম বিশ্বের কারণ ও ফলাফল নিয়ে আজকের আলোচনা।

পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম রক্তক্ষয়ী মহাযুদ্ধ হল প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। নতুন নতুন সামরিক প্রযুক্তি ও ভয়াবহ ধ্বংসের জন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সর্বাধিক আলোচিত। পৃথিবীর ইতিহাসে এর আগের কোন যুদ্ধে কখনোই এতো মানুষের প্রাণ যায়নি। যুদ্ধে সামরিক ও বেসামরিক মিলে প্রায় ১৬ মিলিয়ন লোকের প্রাণ গিয়েছিল।

১৯১৪ সাল থেকে শুরু হওয়া এই মহাযুদ্ধটি ১৯১৮ পর্যন্ত চলেছিল। প্রায় ৫ বছর ধরে চলা প্রথম বিশ্বের কারণ ও ফলাফল নিয়ে আলোচনা।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণ গুলি আলোচনা করো, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল

১ম বিশ্বযুদ্ধের শুরুটা হয় অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্কডিউক ফার্ডিনান্ড হত্যার মধ্য দিয়ে। ১৯১৪ সালের ২৮ শে জুন, তাঁকে বসনিয়ার রাজধানী সেরোজিবেতে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। তাকে হত্যা করে সার্বিয়ান নাগরিক গ্রাব্রিলো প্রিন্সিপ। এমনিতেই  প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর কয়েক বছর পূর্বে পুরো ইউরোপ বিশেষ করে দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপের বলকান অঞ্চলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল।

ইউরোপীয় শক্তি, অটোমান সাম্রাজ্য, রাশিয়া এবং অন্যান্য দেশের সাথে তাদের শক্ত জোট ছিল কিন্তু বলকান অঞ্চল বিশেষত বসনিয়া, সার্বিয়া এবং হার্জেগোভিনার রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এই চুক্তিগুলি ধ্বংস করার হুমকি হিসেবে দেখা দেয়।

এই হত্যাকাণ্ডের ফলে বহুদিনের অস্ট্রিয়া ও সার্বিয়ার পারস্পরিক শত্রুতা একেবারে চরম আকার ধারণ করে। অস্ট্রিয়া সরকার তখন হত্যার অপরাধে কতগুলো শর্ত আরোপ করে এক চরমপত্র দেয় সার্বিয়ার উপর। চরম পত্রের দাবি অধিকাংশ মানলেও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে কয়েকটি দাবি পূরণ করার নয় বলে ঘোষণা দেয় সার্বিয়ার।

সার্বিয়ার এমন হঠকারিতার কারণে সকল প্রকারের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে অস্ট্রিয়া সরকার। উভয় পক্ষ তাদের সৈন্য সমাবেশ করতে শুরু করে দেয়। ফলে তারা ক্রমশ যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যায়। বলকান অঞ্চলের রাজনৈতিক আধিপত্য থাকায় রাশিয়া এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হওয়ার পেছনে ঐতিহাসিক বিশেষজ্ঞরা একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছেন। সেগুলি হলো-

সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বন্দ্ব

শিল্পবিপ্লবের পরবর্তীকালে ইউরোপের বিভিন্ন শিল্পোন্নত দেশ শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য এবং উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বিক্রির জন্য ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদের দিকে জোর দেয়। অনেক আগে থেকেই ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, পর্তুগাল প্রভৃতি দেশগুলি এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চল দখল করে রেখেছিল। পরবর্তীতে ইউরোপের অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশগুলি বিশেষ করে জার্মানি ও ইতালি উপনিবেশ স্থাপনের প্রতিযোগিতায় নামলে ওই দেশগুলির সঙ্গে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। যা ধীরে ধীরে এক যুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে থাকে।

উগ্র জাতীয়তাবাদ

সাম্রাজ্যবাদী মনোভাবের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপের দেশ গুলিতে সেই সময় উগ্র ও সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ সংঘাতও যুক্ত হয়। এই উগ্র জাতীয়তাবাদই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যে বিদ্বেষ ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। এই জাতিগত দ্বন্দ্ব প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পথকে অনেকটাই প্রশস্ত করে তোলে।

সামরিক শক্তি বৃদ্ধির প্রতিযোগীতা

ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকায় যুদ্ধের আশঙ্কায় দেশগুলি নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে থাকে। এবং সেইসঙ্গে সামরিক শক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলি দ্বারা দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তি জোট গঠিত হয়। এক পক্ষে থাকে জার্মানি, ইতালি ও অস্ট্রিয়া এবং অপর পক্ষে থাকে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়া। ফলে এক মহাযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ

বিশ্লেষকদের মতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হলো- ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে ২৮শে জুন অস্ট্রিয়া সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী যুবরাজ আর্চ ডিউক ফার্দিনান্দ ও তার স্ত্রী সোফি বসনিয়ার রাজধানী সেরাজেভো নগরে বেড়াতে যান। সেখানে এক আততায়ীর হাতে যুবরাজ ও তার স্ত্রী নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ‘সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড’ নামেও পরিচিত।

অস্ট্রিয়া তাদের যুবরাজের হত্যাকাণ্ডের জন্য সার্বিয়াকে দায়ী করে এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার কাছে কয়েকটি অসম্ভব দাবি করে বসে। সার্বিয়া সেই দাবিগুলি যথাযথ পূরণ না করায় অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যুদ্ধে জার্মানি অষ্ট্রিয়ার পক্ষে যোগ দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও রাশিয়া সার্বিয়ার পক্ষে যোগ দেয়। এর ফলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল

এই যুদ্ধের ফলাফল ছিল সেসময়ের জন্য ভয়াবহ ব্যপার। এর পূর্বে যতগুলো যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল সেগুলো থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল দ্বিগুণ বেশি। বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে পড়ে। মিত্রশক্তি জোটের সবচেয়ে বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। 

সামিরক লোকের চেয়ে বেসামরিক সাধারণ লোকের মৃত্যু হয়েছে বেশি। যুদ্ধাবস্থায় খাদ্যভাব, রোগ ও মহামারির কারণে এসকল সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া যুদ্ধরত সকল দেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সর্বপ্রথম বিভিন্ন মরণাস্ত্রের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। বোমারু বিমান, সাবমেরিন, ভারী কামান, ট্যাংক, বিস্ফোরক বোমা, এবং বিষাক্ত গ্যাসের মত মরণঘাতি অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছিল এতে।

শুরুতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কেন্দ্রস্থল ইউরোপ হলেও পরবর্তীতে সমগ্র বিশ্বে এই যুদ্ধ বিস্তার লাভ করতে থাকে। তাই সমগ্র বিশ্বেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কোন না কোন প্রভাব পড়েছিল।

নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি

যুদ্ধ শেষে ইউরোপের রাজনৈতিক মানচিত্রে অনেক পরিবর্তন আসে। অস্ট্রিয়া হাঙ্গেরি, তুরস্ক, রাশিয়া ও জার্মানির মতো কয়েকটি বড় সাম্রাজ্যের অবনমন ঘটে। এবং চেকোস্লোভাকিয়া, যুগোস্লোভিয়া, পোল্যান্ডের মত বেশ কয়েকটি নতুন রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়।

জাতীয়তাবাদের জয়

চেকোস্লোভাকিয়া, যুগোস্লোভিয়া প্রভৃতির মত নতুন সৃষ্টি হওয়ার রাষ্ট্রগুলিতে ও গণতান্ত্রিক সংবিধান এর প্রবর্তন হয়। এবং সব নাগরিকদের ভোটের অধিকার স্বীকার করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন উপনিবেশিক অঞ্চলগুলিতে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন ঘনীভূত হয়।

শ্রমিকশ্রেণীর গুরুত্ব বৃদ্ধি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দেশের প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুলি থেকে শুরু করে যুদ্ধের প্রয়োজনীয় সাজ সরঞ্জাম প্রস্তুত করে দেশকে অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে শক্ত রাখতে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল শ্রমিকদেরই। যুদ্ধশেষে শ্রমিকদের এই গুরুত্ব সম্পর্কে সবাই সচেতন হয়। এবং বিভিন্ন দেশে শ্রমিক কল্যাণমূলক আইন প্রবর্তিত হয়।

আন্তর্জাতিকতার প্রসার

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার ফলে আন্তর্জাতিকতার প্রসার ঘটে। বিশ্বের সমগ্র শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার্থে ‘লীগ অব নেশনস’ বা জাতিসংঘ নামে এক আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমি

প্রাচীন সভ্যতার উত্থান – পতন থেকে আধুনিক ইতিহাসের বিংশ শতাব্দীর প্রথমাংশ পর্যন্ত যত যুদ্ধ হয়েছে এর সবকিছু কে ছাড়িয়ে গেছে এই প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ১৯১৪ থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত সংঘটিত এই মহাযুদ্ধের ব্যাপ্তি, হতাহতের সংখ্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞ অতীত কালের সকল যুদ্ধের নৃশংসতা কে হার মানিয়েছে!১৯১৪ সালের জুলাই মাসের ২৮ তারিখে শুরু হয়।

শুরুটা হয় অস্ট্রো-হাঙ্গেরি এবং সার্বিয়ার মধ্যে এবং কিছু দিনের মধ্যেই পুরো ইউরোপ জুড়ে ছড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এই আগুন আটলান্টিক পার হয়ে মার্কিনমুলুকে যাত্রা করে এবং এশিয়ার কিছু দেশও এই ধ্বংসযজ্ঞে মেতে উঠে। আর এই কারনেই এটাকে বলা হয় মহাযুদ্ধ বা বিশ্বযুদ্ধ। এবং প্রথম বারের মতো বিশ্বযুদ্ধ বা মহাযুদ্ধ হয়, তাই এটাকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ বলা হয়। দুই ব্লকে বিভক্ত পরাশক্তিদের মাঝে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। এটা শুধু আস্ট্রিয়ার যুবরাজ ফ্রান্সিস ফার্দিনান্দের এবং তার স্ত্রীর হত্যার জন্য শুরু হয়না, বরং এটা ছিলো একটি স্ফুলিঙ্গ মাত্র। যা আগে থেকে জ্বলতে অপেক্ষায় থাকা তেলে আগুন দেয়।

সব কিছুই অর্থনীতির সাথে যুক্ত এবং বিশ্বের সকল ইতিহাস হলো অর্থনৈতিক ইতিহাস (Class Discrimination – শ্রেণী সংগ্রামের ইতিহাস)। প্রথম মহাযুদ্ধের পুর্বে ইউরোপের অন্যান্য দেশ, আফ্রিকা, এশিয়া এবং ল্যাটিন আমেরিকাতে নিজ নিজ কলোনি স্থাপন করে ফেলেছিলো। ব্রিটিশ এবং ফ্রান্স অর্থনৈতিক ভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও জার্মান দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছিলো। সেই সময় জার্মান পণ্য ব্রিটিশ পণ্যের বাধার সম্মুখীন হয়।

আগের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পাশে আরেকটি নতুন শক্তির আগমন ঘটে। যার ফল দ্বন্দ্ব। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো নিজেদের মধ্যে সংঘাতের সূচনা করে যা পরবর্তীকালে বিশ্বযুদ্ধে পরিণত হয়।

গোপন চুক্তি: ১৮৭২ সালে বার্লিন এক সম্মেলন আহ্বান করে। এবং জার্মানি, রাশিয়া ও অস্ট্রিয়ার মাঝে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই সম্মেলনে জার্মানির সম্রাট প্রথম উইলিয়াম, রাশিয়ার জার – প্রথম আলেকজান্ডার এবং অস্ট্রিয়ার সম্রাট প্রথম ফ্রান্সিস উপস্থিত হন। এই তিন সম্রাটের চুক্তি ইতিহাসে আজো ত্রিশক্তির চুক্তি নামে পরিচিত। আবার ১৮৭৭-১৮৭৮ সালে রুশ-টার্কিস যুদ্ধে এই মৈত্রীর কার্যকারিতা বিনষ্ট হয়। এবং রাশিয়া এই ত্রিশক্তির চুক্তি থেকে বেড়িয়ে যায়। আবার অন্য দিকে জার্মান খুব দ্রুত অস্ট্রীয়ার সাথে চুক্তি করে। মূলত এই সময় ইউরোপ ছিলো গোপন চুক্তির আতুর ঘর। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না। আর এই অবিশ্বাস বয়ে আনে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ!

জার্মানী অস্ট্রিয়াকে নজিরবিহীন সমর্থন দেয়ায় ভবিষ্যৎ জার্মান শক্তি’র সম্ভাবনায় আতঙ্কিত ফ্রান্স এবং রাশিয়ার তরফ থেকে অনাকাঙ্খিত শত্রুতা ডেকে আনে। রাশিয়া এবং ফ্রান্স সাথে সাথে যুদ্ধে যোগ দিলেও জার্মানী তাদের ভালই মোকাবেলা করছিল, কিন্তু ব্রিটেনের চোখে রাশিয়া এবং ফ্রান্সের তুলনায় একটি নতুন ও শক্তিশালী জার্মানী ছিল বড় হুমকী তাই তারা পূর্বের চুক্তি অনুযায়ী ও নিজেদের ক্ষমতার সুরক্ষিত করার জন্যই জার্মানীর বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয়।

রাজনৈতিক কারন: সেই সময় ইউরোপে গণতন্ত্রের অভাব পরিলক্ষিত হয়। সবাই ছিলো সম্রাজ্য বিস্তারে ব্যস্ত। আগ্রাসী মনোভাবে নিমগ্ন। যেহেতু রাজনৈতিক অবস্থা ছিলো চড়ম আকারে অস্থিতিশীল, তাই সেই সময়কার রাষ্ট্র প্রধানগণ আলোচনায় না যেয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পরেছিলো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কোন কোন দেশের মধ্যে হয়েছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে একপক্ষে ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্য, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বুলগেরিয়া। যাদের বলা হতো কেন্দ্রীয় শক্তি।

আর অপরপক্ষে ছিল সার্বিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যাদের বলা হতো মিত্রশক্তি।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছবি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ছবি

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য জার্মানি কতটা দায়ী ছিল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির দায়িত্ব প্রসঙ্গে জার্মানির বিরুদ্ধে অভিযোগ হিসেবে জার্মানির প্ররোচনা, ওয়েল্ট পলিটিক নীতি, রি ইনসিওরেন্স চুক্তি বাতিল, বলকানে আগ্ৰাসী নীতি, অস্ট্রিয়ার উপর চাপ, জার্মানি একা দায়ী নয় হিসেবে যুদ্ধ এড়াবার আন্তরিক চেষ্টা, আঁতাত জোটের বেষ্টনী, সব শক্তির দায়িত্ব, প্রকৃত কারণ হিসেবে পরস্পর বিরোধী শিবির, ইঙ্গ-ফরাসি মনোভাব, বলকান সমস্যার দায়িত্ব, জার্মানির একক দায়িত্ব নয় ও গর্ডন ক্রেইগের মন্তব্য সম্পর্কে জানবো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির দায়িত্ব

ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রথম বিশ্বযুদ্ধ
সময়কাল১৯১৪-১৯১৮ খ্রিস্টাব্দ
বিবাদমান জোটত্রিশক্তি মৈত্রী ও ত্রিশক্তি চুক্তি
ত্রিশক্তি মৈত্রীজার্মানি, অস্ট্রিয়া, ইতালি
ত্রিশক্তি চুক্তিইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া

একদা যুদ্ধ সৃষ্টির সব দায়িত্ব জার্মানির উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় এবং জার্মান সম্রাট কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়মকে এর জন্য দায়ী করা হয়।

জার্মানির বিরুদ্ধে অভিযোগ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের জন্য জার্মানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়। যেমন –

  • জার্মানির প্ররোচনা: জার্মান ঐতিহাসিক ইম্যানুয়েল জাইস বলেন যে, জার্মানির প্ররোচনার ফলেই সেরাজেভো ঘটনা থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হয়।
  • ফিশারের মন্তব্য: জার্মান ঐতিহাসিক ফ্রিৎস ফিশার-এর মতে, ১৯১১ থেকেই জার্মানি যুদ্ধ চেয়েছে, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত ১৯১৪-তে যুদ্ধ বাধাবার ব্যবস্থা করেছে। পিনসন-ও অনুরূপ মত প্রকাশ করেছেন।
  • ওয়েল্ট পলিটিক নীতি: দ্বিতীয় উইলিয়ম ‘ওয়েন্ট পলিটিক’ বা বিশ্ব-রাজনীতিতে জার্মানির একচ্ছত্র প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিসমার্ক -এর শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি পরিত্যাগ করে আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেন।
  • রি-ইনসিওরেন্স চুক্তি বাতিল: কাইজার রাশিয়ার সঙ্গে জার্মানির রি-ইনসিওরেন্স চুক্তি বাতিল করে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স-রাশিয়া চুক্তির পথ সুগম করে দেন।
  • ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের বিরোধিতা: কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়ম ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে ঔপনিবেশিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হন। জার্মানির নৌ-শক্তি বৃদ্ধি ইংল্যান্ডের মনে ভীতির সঞ্চার করে। তিনি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বুয়োরদের সাহায্য দানের চেষ্টা করেন এবং মরক্কোয় ফরাসিদের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে নামেন।
  • বলকানে আগ্ৰাসী নীতি: কাইজার নিজ স্বার্থে বলকানে তুরস্কের সঙ্গে সমঝোতায় আসেন এবং অস্ট্রিয়াকে বলকানে আগ্রাসী নীতি গ্রহণে প্রণোদিত করেন।
  • অস্ট্রিয়ার উপর জার্মানির চাপ: অস্ট্রিয়া হয়তো সেরাজেভো হত্যাকাণ্ড আপসে মিটিয়ে নিত, কিন্তু জার্মানির চাপেই তা সম্ভব হয় নি।
  • রাশিয়া ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা: অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলে রাশিয়া সার্বিয়ার পাশে দাঁড়ায়। এই কারণে জার্মানিই ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ১লা আগস্ট রাশিয়া এবং ৩রা আগস্ট ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এতে আলাপ-আলোচনার সব পথ বন্ধ হয়ে যায় ।
  • ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা: জার্মান পুঁজিপতি, শিল্পপতি ও সমরনায়কদের উন্মাদনা যুদ্ধকে অনিবার্য করে তোলে। কাইজার ব্যক্তিগতভাবে যুদ্ধ এড়াবার চেষ্টা করলে আদৌ এ যুদ্ধ হত না।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণ

আধুনিক সমরাস্ত্র, সৈন্যসংখ্যা, সেনানায়কদের দক্ষতা প্রভৃতি দিক থেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ -এ জার্মানি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। জার্মানির পরাজয়ের মূলে নানা কারণ ছিল।

  • সামরিক শক্তির দুর্বলতা : সামরিক শক্তির দিক থেকে জার্মানি ও তার মিত্রবর্গের সম্মিলিত শক্তি অপেক্ষা ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষের সম্মিলিত শক্তি ছিল অনেক বেশি।
  • স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধের উপকরণ: জার্মানির যুদ্ধোপকরণ স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধের উপযুক্ত ছিল। তার পক্ষে দীর্ঘকাল ধরে যুদ্ধ চালানো সম্ভব ছিল না। আধুনিক যুদ্ধ ছিল ব্যয়সাপেক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে জার্মানির পক্ষে এই ব্যয়বহুল যুদ্ধ পরিচালনা করা সম্ভব ছিল না।
  • উপনিবেশের অপ্রতুলতা: ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষ তাদের উপনিবেশগুলি থেকে সেনা, রসদ ও অর্থ সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধ চালাতে পারত, কিন্তু জার্মানির কোনও ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্য না থাকায় তার পক্ষে সেই সুবিধা ছিল না।
  • এক সঙ্গে দুই রণাঙ্গনে যুদ্ধ: জার্মানিকে একই সঙ্গে পূর্ব ও পশ্চিম রণাঙ্গনে যুদ্ধ চালাতে হয়, যা কার্যত প্রায় অসম্ভব ছিল। অপরপক্ষে, মিত্রপক্ষীয়রা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন ভিন্ন সেনাদের কাজে লাগায়।
  • যুদ্ধে আমেরিকার যোগদান: আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র মিত্রপক্ষে যোগদান করলে, জার্মানির পরাজয় অবশ্যম্ভাবীহয়ে পড়ে। আমেরিকার অস্ত্র, অর্থ ও লোকবল মিত্রপক্ষকে প্রভূত সাহায্য করে।
  • নৌ শক্তির দুর্বলতা: জার্মানির নৌ-শক্তির দুর্বলতা তার পরাজয়ের অন্যতম কারণ। প্রথম দিকে জার্মান সাবমেরিন ও ইউবোট মিত্রপক্ষের জাহাজগুলি ধ্বংস করতে সক্ষম হলেও, মিত্রপক্ষ অচিরেই ইউবোট প্রতিরোধকারী অস্ত্র আবিষ্কার করে জার্মান ইউবোটের কার্যকারিতাকে নষ্ট করে দেয়।
  • মিত্রপক্ষের অবরোধ: মিত্রপক্ষ বিশাল সমুদ্রপথে জার্মান জাহাজকে অবরোধ করলে জার্মানির খাদ্য ও অন্যান্য রসদ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে, জার্মানি আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়।
  • আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধে দুর্বলতা: আক্রমণাত্মক যুদ্ধে জার্মানি দক্ষ হলেও আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধে তার অনেক অসুবিধা ছিল। আত্মরক্ষার জন্য জার্মানির যথেষ্ট ভূ-ভাগ ছিল না। রাশিয়ার মতো বিশাল ভূ-ভাগ না থাকায় জার্মানির পক্ষে পিছিয়ে এসে আবার যুদ্ধ শুরু করার কোনও উপায় ছিল না।
  • ইতালির মিত্রপক্ষে যোগদান: ত্রিশক্তি জোটের অন্যতম হওয়া সত্ত্বেও ইতালি জার্মানিকে বিশেষ সাহায্য করে নি।পরে ইতালি আবার মিত্রপক্ষে যোগ দেয়। বুলগেরিয়া ও অস্ট্রিয়ার পরাজয়ের পর যুদ্ধের সব দায়িত্বই জার্মানির উপর এসে পড়ে, যা একা বহন করা জার্মানির সাধ্যাতীত ছিল।
  • মিত্রপক্ষের কূটনীতি: জার্মানি কূটনীতির দ্বারা মিত্রপক্ষে কোনও ভাঙন ধরাতে পারে নি। মিত্রপক্ষ কিন্তু কূটনীতি দ্বারা ইতালিকে নিজপক্ষে টেনে নেয়। ইতালি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংযুক্তি মিত্রপক্ষকে শক্তিশালী করে তোলে।
  • বলশেভিক বিপ্লব: রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লবও জার্মানির পতনকে ত্বরান্বিত করে। জার্মান যুদ্ধবন্দিরা রাশিয়ার হাত থেকে মুক্ত হয়ে স্বদেশে ফিরে যায় এবং বলশেভিক আদর্শ প্রচার করতে থাকে। জার্মান সেনাদলও এর দ্বারা প্রভাবিত হয়, যা যুদ্ধের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ছিল ‘জনযুদ্ধ’। ফ্রান্স, ব্রিটেন ও আমেরিকার জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে নিজ নিজ দেশের সরকারের সাহায্যে অগ্রসর হয়। জার্মান জনগণ কিন্তু সরকারের সাহায্যে অগ্রসর হয় নি। এইসব কারণে জার্মানির পরাজয় অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার যোগদানের কারণ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকা ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে মিত্রপক্ষে যোগদান করে। প্রধানত দুটি কারণে আমেরিকা প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রপক্ষে যোগ দেয় :

  • (১) জার্মানির নির্বিচার আক্রমণে আমেরিকার বাণিজ্য জাহাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হচ্ছিল এবং
  • (২) মিত্রপক্ষকে প্রদত্ত বিপুল পরিমাণ আমেরিকান ঋণ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি মিত্রপক্ষের সাফল্যের ওপর নির্ভর করছিল।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | প্রথম বিশ্বযুদ্ধ

Q1. প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কত মানুষ মারা যায়

Ans – প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সামরিক ও বেসামরিক মিলিয়ে মোট ৪ কোটি বা ৪০ মিলিয়ন মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটে: সামরিক কর্মীদের মধ্যে আনুমানিক ১৫ থেকে ১৯ মিলিয়ন নিহত, এবং প্রায় ২৩ মিলিয়ন আহত হয়। এটি সবচেয়ে মারাত্মক সংঘাতের ইতিহাস সৃষ্টি করে ।

মোট মৃত্যু সংখ্যা ৯ থেকে ১১ মিলিয়ন সামরিক কর্মীর মাঝে অন্তর্ভুক্ত ছিল । বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ মিলিয়ন। যুদ্ধ-সম্পর্কিত দুর্ভিক্ষ এবং রোগের কারণে মৃত্যু হয় প্রায় ৬ মিলিয়ন মানুষের। ট্রিপল এনটেঞ্জ (মিত্র হিসাবেও পরিচিত) প্রায় মিলিয়ন সামরিক কর্মী এবং কেন্দ্রীয় শক্তি প্রায় ৪ মিলিয়ন লোককে হারিয়েছে। কমপক্ষে ২ মিলিয়ন লোক রোগজনিত নানা ঝটিলতায় মারা গিয়েছিল ।

Q2. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট কে ছিলেন

Ans – উড্রো উইলসন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন।

Q3. কোন ঘটনা থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়

Ans – ১৯১৪ সালের ২৮শে জুন অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত হয়।

Q4. কোন চুক্তির মধ্য দিয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি হয়

Ans – ভার্সাই চুক্তি সম্পাদন হয়- জুন ২৮, ১৯১৯ সালে। ভার্সাই চুক্তির পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তি ঘটে । ভার্সাই চুক্তি একটি শান্তিচুক্তি যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরপর যুদ্ধের মিত্রশক্তি তৎসংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহ এবং জার্মানির মধ্যে সম্পাদিত হয়।

Q5. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সম্রাট কে ছিলেন

Ans – কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির সম্রাট ছিলেন ।

Q6. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব

Ans – চারটি সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। রোমানভ সাম্রাজ্য বা রুশ সাম্রাজ্য ১৯১৭ সালে, জার্মান ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য ১৯১৮ সালে এবং উসমানীয় সাম্রাজ্য ১৯২২ সালে।

অস্ট্রিয়া, চেক স্লোভাকিয়া, এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি, লাটভিয়া, লিথুনিয়া এবং তুরস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৯০ লক্ষ যোদ্ধা ও ৫০ লক্ষাধিক নিরীহ মানুষ নিহত হয়। এক কোটি সৈন্য এবং ২ কোটি ১০ লক্ষ সাধারণ মানুষ আহত হয়, এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ছিল এক লক্ষ ষোল হাজার পাঁচশ ষোল জন। প্রচুর সিভিলিয়ান পুরুষ নিহত হওয়াতে নারীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পরে।

Q7. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তি দেশ

Ans – সার্বিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

Q8. কত সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অবসান হয়

Ans – ১১ নভেম্বর ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ অবসান হয় ।

Q9. প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সামরিক শক্তি কেমন ছিল

Ans – কেন্দ্রীয় শক্তি (Central Powers) – জার্মান সম্রাজ্য, অস্ট্র-হাঙ্গেরিয় সম্রাজ্য ও ইতালির দ্বারা প্রথমে ট্রিপল এলায়েন্স হয়েছিলো ১৮৮২ সালে।

পরবর্তিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় ইতালি বিশ্বাসঘাতকতা করলে এবং অটোমান সমরাজ্য ও বুলগেরিয়া শামিল কেন্দ্রী শক্তি নাম গ্রহণ করা হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে কেন্দ্রীয় শক্তি শোচনীয় পরাজয় বরণ করেছিলো মিত্রশক্তির কাছে।

Q10. প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির চ্যান্সেলর কে ছিলেন

Ans – বিসমার্ক, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন ।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।