সংকল্প কবিতা, সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

সংকল্প কবিতা, সংকল্প কবিতা সম্পূর্ণ, সংকল্প কবিতা আবৃত্তি

সংকল্প কবিতা লেখক কাজী নজরুল ইসলাম

থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে,-
কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে।
দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
ছুটছে তারা কেমন করে,
কিসের নেশায় কেমন করে মরছে যে বীর লাখে লাখে,
কিসের আশায় করছে তারা বরণ মরণ-যন্ত্রণাকে।

কেমন করে বীর ডুবুরী সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে,
কেমন করে দুঃসাহসী চলছে উড়ে স্বর্গ পানে।
জাপটে ধরে ঢেউয়ের ঝুঁটি
যুদ্ধ-জাহাজ চলছে ছুটি,
কেমন করে আনছে মানিক বোঝাই করে সিন্ধু-যানে,
কেমন জোরে টানলে সাগর উথলে ওঠে জোয়ার বানে।

কেমন করে মথলে পাথার লক্ষী ওঠেন পাতাল ফুঁড়ে,
কিসের অভিযানে মানুষ চলছে হিমালযয়ের চুড়ে।
তুহিন মেরু পার হয়ে যায়
সন্ধানীরা কিসের আশায়;
হাউই চড়ে চায় যেতে কে চন্দ্রলোকের অচিন পুরেঃ
শুনবো আমি, ইঙ্গিত কোন ‘মঙ্গল’ হতে আসছে উড়ে।।

কোন বেদনার টিকিট কেটে চন্ডু-খোর ঐ চীনের জাতি
এমন করে উদয়-বেলায় মরণ-খেলায় ওঠল মাতি।
আয়ার্ল্যান্ড আজ কেমন করে
স্বাধীন হতে চলছে ওরেঃ
তুরষ্ক ভাই কেমন করে কাঁটল শিকল রাতারাতি!
কেমন করে মাঝ গগনে নিবল গ্রীসের সূর্য-বাতি।।

রইব না কো বদ্ধ খাঁচায়, দেখব এ-সব ভুবন ঘুরে-
আকাশ বাতাস চন্দ্র-তারায় সাগর-জলে পাহাড়-চুঁড়ে।
আমার সীমার বাঁধন টুটে
দশ দিকেতে পড়ব লুটেঃ
পাতাল ফেড়ে নামব নীচে, ওঠব আবার আকাশ ফুঁড়েঃ
বিশ্ব-জগৎ দেখব আমি আপন হাতের মুঠোয় পুরে।

সংকল্প কবিতার মূলভাব, সংকল্প কবিতার মূলভাব লেখ, সংকল্প কবিতার মূলভাব জেনে নিই

উত্তর : ‘সংকল্প’ নজরুলের একটি কবিতা, যা প্রতিটি অনুসন্ধিৎসু বাঙ্গালী তরুণ-তরুণীরই জানা উচিত। ঘরে-অফিসে বসে যারা পরনিন্দা-পরচর্চা করে সময় কাটান, তাদের জন্যে না, বরং দৃপ্ত-দৃঢ় জ্ঞানপিপাসুদের জন্যে নজরুলের লেখা এই সংকল্প।

কিশোর মন চিরকৌতূহলী। সে জানতে চায় বিশ্বের সব কিছু। আবিষ্কার করতে চায় অসীম আকাশের সব অজানা রহস্য। বুঝতে চায় কেন মানুষ অসীমে, অতলে, অন্তরীক্ষে ছুটছে, বীর কেন জীবন বিপন্ন করে মৃত্যুকে বরণ করছে। সে আরও জানতে চায় ডুবুরি কেমন করে গভীর পানিতে ডুব দিয়ে মুক্তা আহরণ করছে, দুঃসাহসী অভিযাত্রী কেমন করে আকাশের দিকে উড়ে চলছে। কিশোর মন তাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বদ্ধঘরে আবদ্ধ না থেকে এই পৃথিবীর সব কিছু সে ঘুরেফিরে দেখবে।

সংকল্প কবিতা কোন কাব্যগ্রন্থের

উত্তর : তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, ঝিঙেফুল ইত্যাদি। শিশু-কিশোরদের জন্য রচিত কবি নজরুল ইসলামের অনেক উদ্দীপনামূলক ও প্রেরণামূলক কবিতার অন্যতম ‘সংকল্প কবিতা’

সংকল্প কবিতার সারমর্ম, সংকল্প কবিতার ব্যাখ্যা

উত্তর : কাজী নজরুল ইসলামের এই বিজ্ঞানময় কবিতাটি লিখেন আজ থেকে প্রায় ৯০ থেকে ১০০ বছর আগে যখন মানুষের প্রযুক্তিগত জ্ঞান এত ছিলোনা ! উনি ১৯৪২ সালে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন ফলে আর কবিতা লিখতে পারেন নি তিনি। কিন্তু তার এই কবিতার পরতে পরতে আছে বিজ্ঞান । এই কবিতা জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনের মতো ।

আসুন বিশ্লেষণ করি,

“থাকব না’ক বদ্ধ ঘরে
দেখব এবার জগৎটাকে”

এই অংশটুকুর সাথে বর্তমান বিশ্বের মিল পাওয়া যায় ।
স্যাটেলাইট , সাবমেরিন ক্যাবল , মাইক্রোওয়েভ , ওয়াইফাই এরকম নানা যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে আজ বিশ্ব একটি উন্মোচিত জিনিস । যেকোনো দেশে বসেই পৃথিবীর ওপর প্রান্তের খবর পাওয়া যাচ্ছে ।

“কেমন করে ঘুরছে মানুষ
যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে”

এর দ্বারা তিনি বুঝিয়েছেন যে, মানুষ মেডিকেল সাইন্সের উন্নতি করে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করতে পারবে ফলে মানুষের অনেক দিন বেঁচে থাকা সম্ভব হবে আগের তুলনায় । অর্থাৎ বহু যুগ(এক যুগ মানে ১২ বছর) মানুষ দেখতে পাবে ।

“দেশ হতে দেশ দেশান্তরে
ছুটছে তারা কেমন করে”

এই লাইনের দ্বারা তিনি আসলে বর্তমান যুগের হাইস্পিড রেল এবং এয়ারক্রাফটের কথাই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। হাইস্পিড রেল ও এয়ারক্রাফটে চড়ে মানুষ এখন দেশ থেকে দেশে ছুটে বেড়াচ্ছে দ্রুত গতিতে।

“কিসের নেশায় কেমন করে
মরছে যে বীর লাখে লাখে।
কিসের আশায় করছে তারা
বরণ মরণ যন্ত্রণাকে”

এই লাইনের দ্বারা তিনি ভবিষ্যতে অর্থাৎ বর্তমানে আবিস্কার করার তাড়নায় মানুষের মৃত্যুর ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন । এখন আমরা দেখছি অনেক মানুষ মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে অথচ ওখানে গেলে নিশ্চিত মৃত্যু হবে প্রতিকূল পরিবেশে । এছাড়া মানুষ নিজের উপর নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে । আজকের সাইন্স যা দেখাচ্ছে তিনি তা প্রায় ১০০ বছর আগেই বলে গেছেন । এর দ্বারা বোঝা যায় তিনি কতটা দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন।

“কেমন করে বীর ডুবুরি
সিন্ধু সেঁচে মুক্তা আনে”

এখানে তিনি সিন্ধু শব্দটি রূপক অর্থে ব্যবহার করছেন যার দ্বারা তিনি আসলে সমগ্র জলরাশির আধার বা সাগরকেই বুঝিয়েছেন। মুক্তা মানে হলো ঝিনুকের থেকে উৎপাদিত এমন একটি রত্ন যা জ্বলজ্বল করে আলো প্রতিফলিত করে। এটিও রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছিল যে একটু গবেষণা করলেই বুঝা যায়। ঝিনুক আসলে জীবদেহের অবশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে আর মুক্তার জ্বলজ্বলে বৈশিষ্টের সাথে মিল পাওয়া যায় জ্বালানি তেলের । এগুলোও দাহ্য যা জ্বলজ্বল করে জ্বলে । আজ থেকে লক্ষ লক্ষ বছর আগে গাছ ও প্রাণী মাটির নিচে চাপা পড়ে ধীরে ধীরে হাইড্রোকার্বনে পরিণত হয়েছে যার থেকেই আমরা বড় বড় মেশিনারি দিয়ে অয়েল রিগ বানিয়ে জ্বালানি তেল রিফাইন করে বের করেছি আজকে !

“কেমন করে দুঃসাহসী
চলছে উড়ে স্বর্গপানে”

এই লাইনটি মানুষের নভোযান এর কথা ব্যক্ত করেছে । আজকের বিজ্ঞান যে নভোযান আবিস্কার করেছে যেটি ব্যবহার করে মানুষ আজকে মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে সেটির কথা কাজী নজরুল ইসলাম সেই কবেই বলে গেছেন ।

“হাউই চড়ে চায় যেতে কে
চন্দ্রলোকের অচিনপুরে”

অশেষ বিজ্ঞানময় দুটো লাইন । ১৯৫৭ সালে মানুষ চাঁদে গিয়েছিল এপোলো নভোযানে করে অথচ সে কথা নজরুল আগেই বলে দিয়েছেন ।

“শুনব আমি, ইঙ্গিতে কোন
মঙ্গল হতে আসছে উড়ে”

মঙ্গল গ্রহে মানুষের তৈরি অনেক অরবিটার আছে এমনকি গ্রাউন্ড এক্সপ্লোরেশন ভেহিকেলও আছে যেগুলো প্রতিনিয়ত মঙ্গলগ্রহ নিয়ে নানা তথ্য উপাত্ত ছবি সিগন্যাল পাঠাচ্ছে আমাদের কাছে । এর মাধ্যমে আমরা পৃথিবীতে বসেই মঙ্গলগ্রহের ঘটনাবলী জানতে ও গবেষণা করতে পারছি । এসব করছি তার বয়স বেশিদিন না হলেও সংকল্প কবিতায় কাজী নজরুল ইসলাম এটা ১০০ বছর আগেই বলে গেছেন।

“পাতাল ফেড়ে নামব আমি
উঠব আমি আকাশ ফুঁড়ে”

এখানে মাটির নিচে খনি ও টানেলের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে আর পরের লাইনে রকেটের ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।

“বিশ্বজগৎ দেখব আমি
আপন হাতের মুঠোয় পুরে”

এমন ভবিষ্যতবাণী কে করতে পারে মহান কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছাড়া !
এখানে স্মার্টফোন এর কথা বলে দেয়া হয়েছে । স্মার্টফোনে গুগল আর্থ বা অন্যান্য এপসের ও ইন্টারনেট সংযোগ এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বটা আজ আমাদের হাতের মুঠোয় !

সংকল্প কবিতার লেখক কে

উত্তর : “সংকল্প কবিতা” কবিতাটি লেখক আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। বিদ্রোহী কবি নামে পরিচিত আমাদের প্রিয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহণ করেন ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ মে (১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৩০৬ সাল)। তাঁর জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রাম। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা, গান, গল্প, নাটক ও উপন্যাস আমাদের বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ। শিশুদের জন্য তিনি অনেক গান, কবিতা, ছড়া ও নাটক লিখেছেন। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, ঝিঙেফুল ইত্যাদি। শিশু-কিশোরদের জন্য রচিত কবি নজরুল ইসলামের অনেক উদ্দীপনামূলক ও প্রেরণামূলক কবিতার অন্যতম আমাদের আজকের আলোচ্য ‘সংকল্প কবিতা’।

সংকল্প কবিতার MCQ বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর, সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর

বীরেরা কী সাদরে গ্রহণ করেছে?

ক কোনোভাবে বেঁচে থাকাকে

খ আয়েশি জীবনকে

গ বদ্ধ ঘরে থাকাকে

ঘ মরণ-যন্ত্রণাকে

সঠিক উত্তর: – ঘ মরণ-যন্ত্রণাকে

এক দেশ থেকে আরেক দেশকে এককথায় কী বলা যায়?

ক যুগান্তর খ দেশান্তর

গ যুগ যুগ ঘ দেশভ্রমণ

সঠিক উত্তর: – খ     দেশান্তর 

মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রণাকেও হাসি মুখে কারা সহ্য করতে পারে?

ক যারা ভীতু খ যেকোনো মানুষ

গ যারা বীর ঘ যারা কিশোর

সঠিক উত্তর: – গ     যারা বীর    

বিশ্বজগৎকে জানার কেমন কৌতূহল কিশোরের?

ক সামান্য খ অদম্য

গ সীমিত ঘ নেই বললেই চলে

সঠিক উত্তর: – খ     অদম্য

সংকল্প কবিতার মূলভাব কী?

ক কিশোরের পড়াশোনার আগ্রহ

খ কিশোরের হিমালয় জয়ের স্বপ্ন

গ কিশোরের বিশ্বকে জানার আগ্রহ

ঘ কিশোরের স্বর্গপানে যাওয়ার স্বপ্ন

সঠিক উত্তর: – গ     কিশোরের বিশ্বকে জানার আগ্রহ

কিশোর কিসের সংকল্প করে?

ক বদ্ধ ঘরে থাকার

খ ভালো হয়ে চলার

গ মন দিয়ে পড়ার

ঘ পৃথিবীকে জানার

সঠিক উত্তর: – ঘ     পৃথিবীকে জানার

কিশোর কোথায় থাকতে চায় না?

(ক) পাতাল তলে (খ) চাঁদের দেশে

(গ) জগৎ মাঝে (ঘ) বদ্ধ ঘরে

সঠিক উত্তর: – (ঘ) বদ্ধ ঘরে

‘বদ্ধ’ শব্দের অর্থ হলো

(ক) রাগ (খ) বন্ধ

(গ) দুশ্চিন্তা (ঘ) বায়ুর কুণ্ডলী

সঠিক উত্তর: – (খ) বন্ধ

কিশোর বিশ্বজগৎ কীভাবে দেখবে?

(ক) ঘুরে ঘুরে কাছ থেকে

(খ) দূর থেকে অল্প করে

(গ) বদ্ধ ঘরে বসে থেকে

(ঘ) হাউই চড়ে উড়াল দিয়ে

সঠিক উত্তর: – ক) ঘুরে ঘুরে কাছ থেকে

‘জগৎ’ শব্দের অর্থ কী

(ক) বায়ু (খ) মঙ্গল

(গ) পৃথিবী (ঘ) আকাশ

সঠিক উত্তর: – (গ) পৃথিবী

পঞ্চম শ্রেণি সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর, সংকল্প কবিতা প্রশ্ন, সংকল্প কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে বলতে কী বুঝ লিখ।

উত্তর : ‘যুগান্তর’ শব্দটির অর্থ হলো এক যুগের পর আরেক যুগ। দেশী গণনা মতে, ১২ বছরে এক যুগ হয়। আপন গতিতে এগিয়ে যাওয়া সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয় পৃথিবীর অনেক কিছু। নতুন নতুন রহস্য ও ঘটনার সৃষ্টি হয়। সময়ের গতির সাথে তাল মিলিয়ে মানুষও এগিয়ে চলে রহস্য অনুসন্ধান ও ঘটনার মূল উদঘাটনের জন্য। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের এই এগিয়ে যাওয়ার কৌতূহলী প্রবণতাকে বুঝানোর জন্যই বলা হয়েছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে।

কবি বদ্ধ ঘরে থাকতে চান না কেন?

উত্তর : কবি জগৎটাকে দেখতে চান। এ জগতের মানুষ কীভাবে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে ঘুরছে, দেশ থেকে দেশান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছে। কবি এসব দেখতে চান। তাছাড়া মঙ্গলগ্রহ, চন্দ্রলোকের অচিনপুর, আকাশ, পাতাল এসবের রহস্য তিনি জানতে চান। এ কারণে তিনি বদ্ধ ঘরে থাকতে চান না।

চন্দ্রলোকের অচিনপুরে কারা যেতে চায়?

উত্তর : ‘চন্দ্রলোক’ কথাটির অর্থ হলো চাঁদের দেশ। বিশ্বের মানুষের কাছে এই দেশ একটি অজানা-অচেনা জায়গা। অজানা-অচেনা জায়গা সম্পর্কে মানুষ চিরকালই কৌতূহলী। আর এই কৌতূহলী মানুষই চন্দ্রলোকের অচিনপুরে যেতে চায়। পৃথিবীর এই দুঃসাহসী মানুষ হাউই চড়ে চন্দ্রলোকের অচিনপুর অভিযান সফল করতে চায়। জানতে চায় অচিনপুর চন্দ্রলোকের অজানা সব রহস্য।

বীর ডুবুরি কী করে?

উত্তর : গভীর পানিতে ডুব দিয়ে যারা কোনো জিনিস উদ্ধার করে আনে তাদের ডুবুরি বলা হয়। ‘সংকল্প’ কবিতায় কবি ডুবুরিদের বীর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বীর ডুবুরিরা নদী বা সমুদ্রের তলদেশ থেকে মুক্তা সংগ্রহ করে। নদী বা সমুদ্রের গভীর তলদেশে কোনো নৌকা, লঞ্চ বা জাহাজ নিমজ্জিত হলে বীর ডুবুরিরা তা উদ্ধার করে।

কবি পাতাল ফেড়ে নামতে চান কেন?

উত্তর : পাতাল বলতে আমরা সাগরের তলদেশ বা মাটির নিচের দেশকে বুঝে থাকি। মহাকাশের মতো পাতালপুরীও এক অজানা রহস্যঘেরা জায়গা। অসীম বিশ্বকে জানার অদম্য কৌতূহলী কবি মাটির নিচে পাতালে কী আছে, তা জানার জন্য পাতাল ফেড়ে সেখানে নামতে চায়। পাতালের অজানা রহস্য সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে কৌতূহল মেটাতে চান।

কিসের আশায় বীর মরণকে বরণ করছে?

উত্তর : লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বীরেরা মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রণাকেও সাদরে গ্রহণ করে থাকে। রহস্য ভেদ করা, নতুন কিছু সৃষ্টি করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং অজানাকে জানার আশায় বীর মরণকে বরণ করছে।

কবি হাতের মুঠোয় পুরে কী এবং কেন দেখতে চান?

উত্তর : কবি হাতের মুঠোয় পুরে বিশ্বজগৎ দেখতে চান। কারণ, বিশ্বজগতজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অনেক রহস্য। অজানা সেসব রহস্য ভেদ করে তিনি সত্যিটা জানতে চান। আবিষ্কার করতে চান অসীম আকাশের সব অজানা রহস্য। বুঝতে চান কেন মানুষ অতলে, অন্তরীক্ষে, অসীমে ছুটছে। এই জানার মধ্য দিয়ে তিনি তার অদম্য কৌতূহলের সফল প্রকাশ দেখতে চান।

ক্রিয়াপদের সাধু ও চলিত রূপ লিখ।

উত্তর :

  • চলিত রূপ সাধু রূপ
  • আঁকব আঁকিব
  • দেখব দেখিব
  • ঘুরছে ঘুরিতেছে
  • মরছে মরিতেছে
  • ছুটছে ছুটিতেছে
  • আসছে আসিতেছে
  • চলছে চলিতেছে

সংকল্প কবিতায় কবি কী কী সংকল্প করেছেন, তা বিস্তারিত লিখ।

উত্তর : ‘সংকল্প’ কবিতায় কবি যেসব সংকল্প করেছেন সেসব নিচে দেয়া হলো

  • ১. জগৎটা ঘুরে দেখবেন।
  • ২. যুগ থেকে যুগে মানুষ কিভাবে বেঁচে আসছে তা বুঝতে চেষ্টা করবেন।
  • ৩. এক দেশ থেকে আরেক দেশে মানুষ কেন ছোটাছুটি করে বেড়াচ্ছে তা দেখবেন।
  • ৪. অগুনতি সাহসী ব্যক্তি কিসের উন্মাদনায় বিপদ তুচ্ছ করে নানা কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, মৃত্যু পর্যন্ত বরণ করছে সেসব তিনি দেখবেন।
  • ৫. সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে ডুবুরি কিভাবে মুক্তা সংগ্রহ করে কিংবা দুঃসাহসী বৈমানিক কিভাবে আকাশে পাড়ি জমায়Ñ তা তিনি জানবেন।
  • ৬. হাউই বা রকেটে চড়ে কে বা কারা চাঁদের দেশে যেতে চায়। কিংবা মঙ্গল গ্রহ থেকে আমাদের পৃথিবীর বুকে কোনো সঙ্কেত ভেসে আসছে কি না, তাও তিনি জানতে চান।
  • ৭. মাটির নিচে পাতালে কী আছে বা মাটির উপরে আকাশে কী আছে তা জানার জন্য তিনি পাতাল ও মহাকাশে অভিযান চালাবেন।

সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2021, সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2022, সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর 2023

ক্রিয়াপদের সাধু ও চলিত রূপ শিখি।

  • আঁকব – আঁকিব
  • ছুটছে – ছুটিতেছে
  • দেখব – দেখিব
  • আসছে – আসিতেছে
  • ঘুরছে – ঘুরিতেছে
  • চলছে – চলিতেছে
  • মরছে – মরিতেছে

হাউই চড়ে দুঃসাহসীরা কোথায় যেতে চায়?

উত্তর : হাউই চড়ে দুঃসাহসীরা চন্দ্রলোকের অচিন দেশে যেতে চায়।

কবি কোন ইঙ্গিত শুনতে চান?

উত্তর : কবি মঙ্গল থেকে কোনো অজানা ইঙ্গিত ভেসে আসে কি না তা শুনতে চান।

কিশোর কী জানতে চায়?

উত্তর : কিশোর অসীম মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। সে জানতে চায় কেন মানুষ অসীমে আর অতলে ছুটে চলেছে, বীরেরা কেন হাসিমুখে মৃত্যুকে বরণ করছে। ডুবুরিরা কেন ডুবছে, দুঃসাহসীরা কেন উড়ছে। বিশ্বজগতের সব কিছুর রহস্য জানতে চায় কিশোর।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

সংকল্প কবিতার শব্দার্থ, সংকল্প কবিতা ৫ম শ্রেণী

নিচের শব্দগুলোর অর্থ লিখ।

সংকল্প, বদ্ধ, যুগান্তর, দেশান্তর, কিসের নেশায়, বরণ, মরণ-যন্ত্রণা, ডুবুরি, দুঃসাহসী, চন্দ্রলোক, অচিনপুর, ফেড়ে।

উত্তর :

প্রদত্ত শব্দ             শব্দের অর্থ

সংকল্প                 প্রতিজ্ঞা, ইচ্ছা

বদ্ধ                       বন্ধ

যুগান্তর                এক যুগ পর আরেক যুগ

দেশান্তর               এক দেশ থেকে আরেক দেশ

কিসের নেশায়       কী আকর্ষণে, কী উদ্দেশ্যে

বরণ                    কোনো কিছু সাদরে গ্রহণ

মরণ-যন্ত্রণা           মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রণা

দুঃসাহসী              অত্যাধিক সাহসী

চন্দ্রলোক              চাঁদের দেশ

অচিনপুর              অচেনা জায়গা

ফেড়ে                  চিরে

সংকল্প কবিতা pdf

শ্রেষ্ঠ নজরুল স্বরলিপি


শ্রেষ্ঠ নজরুল স্বরলিপি . পাবলিশার- হারাফ প্রকাশনাই

সংকল্প কবিতা, সংকল্প কবিতার প্রশ্ন উত্তর

কিসের আশায় বীর মরণকে বরণ করছে?
উত্তর : লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য বীরেরা মৃত্যুর মতো কঠিন যন্ত্রণাকেও সাদরে গ্রহণ করে থাকে। রহস্য ভেদ করা, নতুন কিছু সৃষ্টি করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা এবং অজানাকে জানার আশায় বীর মরণকে বরণ করছে।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।