বর্গ কাকে বলে, বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র, বর্গের কর্ণের সূত্র

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

বর্গ কাকে বলে ও বৈশিষ্ট্য

যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই পরস্পর সমান ও সমান্তরাল এবং প্রক্যেক কোণগুলো সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি তাকে বর্গ বলে।

চতুর্ভুজের চারটি বাহু ও চারটি কোণ পরস্পর সমান হলে তাকে বর্গ বলে। বর্গ একটি সুষম ও সমকোণী চতুর্ভুজ।

বর্গ দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রকে বর্গক্ষেত্র বলে। মূলতঃ বর্গক্ষেত্র দ্বারা বর্গের ক্ষেত্রফলকে বুঝায়। বর্গক্ষেত্র একটি সমবাহু চতুর্ভুজ; কারণ এর চারটি বাহু পরস্পর সমান। আবার এটি একটি সমকোণী চতুর্ভুজ; কারণ এর সবগুলো কোণ পরস্পর সমান এবং প্রত্যেকটি কোণের পরিমাপ সমকোণ বা ৯০

একটি বর্গক্ষেত্রের সমান বাহু ও কোণ চিত্র
একটি বর্গক্ষেত্রের সমান বাহু ও কোণগুলো

বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বর্গক্ষেত্রটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভুজে বিভক্ত করে এবং এই ত্রিভুজ দুইটির প্রতেকেই সমকোণী ত্রিভুজ। বর্গক্ষেত্র একটি বিশেষ ধরণের আয়তক্ষেত্র, যে আয়তক্ষেত্রের চারটি বাহু পরস্পর সমান।

বর্গের বৈশিষ্ট্য, বর্গ এর বৈশিষ্ট্য

  • আয়তক্ষেত্রের দুটি সন্নিহিত’ বাহু পরস্পর সমান হলে তাকে বর্গ বলে।
  • বর্গক্ষেত্রের সকল বাহুর দৈর্ঘ্য সমান।
  • বর্গক্ষেত্রের প্রত্যেকটি কোণ সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি।
  • বর্গক্ষেত্রের কর্ণদ্বয় পরস্পর সমান।
  • বর্গক্ষেত্রের কর্ণদ্বয় পরস্পরকে সমকোণে সমদ্বিখন্ডিত করে।
  • বর্গের কোনগুলো সমকোণ

বর্গের সূত্র

  • বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফলঃ ( বাহু × বাহু) বর্গ একক
  • বর্গক্ষেত্রের পরিসীমাঃ (৪ × একটি বাহুর দৈর্ঘ্য) একক
  • বর্গক্ষেত্রের কর্ণঃ √2a ( a হলো এক বাহুর দৈর্ঘ্য)

বর্গের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র

বর্গক্ষেত্রের বাহুগুলোর সমষ্টিকে বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা বলে। সুতরাং, বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা বলতে এর চতুর্দিকের দৈর্ঘ্যকে বুঝায়। আবার বর্গক্ষেত্রের চারটি বাহুর দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান, তাই এর একটি বাহুর দৈর্ঘ্যেকে চার দ্বারা গুণ করলে পরিসীমা পাওয়া যায়।

বর্গ ক্ষেত্রের পরিসীমার সূত্র

মনেকরি ABCD বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য AB = BC = CD = AD = a এবং পরিসীমা P.

সুতরাং বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা নির্ণয়ের সূত্র হবে,

P = (AB + BC + CD + AD) একক

বা, P = (a + a + a + a) একক

∴ P = 4a একক

সুতরাং, বর্গক্ষেত্রের পরিসীমা = 4×a একক

বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং পরিসীমা P হলে,

P = 4a একক

বর্গের কর্ণের সূত্র

বর্গক্ষেত্রের বিপরীত শীর্ষ বিন্দু দুইটির সংযোজক রেখাংশকে বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বলে। আর এই রেখাংশের দৈর্ঘ্যকে বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য বলে। বর্গক্ষেত্রের যেকোন কর্ণ বর্গক্ষেত্রটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভুজে বিভক্ত করে। আবার এই ত্রিভুজ দুইটির প্রত্যেকটিই সমকোণী ত্রিভুজ এবং প্রত্যেকটি ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল বর্গক্ষেত্রটির ক্ষেত্রফলের অর্ধেক। বর্গক্ষেত্রের কর্ণ দুইটির দৈর্ঘ্য পরস্পর সমান। এছাড়া, বর্গক্ষেত্রের একটি কর্ণ অপর কর্ণকে সমকোণে সমদ্বিখণ্ডিত করে।

বর্গক্ষেত্রের কর্ণের দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সূত্র

মনেকরি, একটি বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং কর্ণ d. আবার a, a এবং d বাহু তিনটি দ্বারা যে ত্রিভুজ গঠিত হয় তা একটি সমকোণী ত্রিভুজ যেখানে ত্রিভুজটির অতিভুজ d এবং ভুমি ও লম্ব উভয়ই a ও a. সুতরাং, পিথাগোরাসের উপপাদ্য অনুসারে

d2 = a2 + a2

বা, d2 = ২a2

বা, d = ২a2

বা, d = a

একটি বর্গক্ষেত্রের সমান বাহু ও কর্ণ চিত্র
একটি বর্গক্ষেত্রের সমান বাহু ও কর্ণ

বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং কর্ণ d হলে,

d = a

বর্গের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র

বর্গক্ষেত্রের একটি বাহুর দৈর্ঘ্যকে বর্গ করলে বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়। বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল বলতে বুঝায় বর্গক্ষেত্রটি দ্বারা কতটুকু জায়গা আবদ্ধ অর্থাৎ সমতলের কতটুকু জায়গা এই বর্গক্ষেত্রটি দখল করে আছে। ক্ষেত্রফল দ্বিমাত্রিক জ্যামিতির অন্তর্গত। এতএব বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ দ্বারা গঠিত। তাই স্মরণ রাখা দরকার – ক্ষেত্রফল হলো সমতলের জায়গা মাত্র। তাই ক্ষেত্রফল পরিমাপে উচ্চতার সংশ্লিষ্টতা নেই।

বর্গ ক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল, বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ের সূত্র

আয়তক্ষেত্রের দৈর্ঘ্যকে প্রস্থ দ্বারা গুণ করলে আয়তক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়। যেহেতু সব বর্গক্ষেত্রই এক একটি আয়তক্ষেত্র, তাই এর বাহুর দৈর্ঘ্যকে আরেক বাহুর দৈর্ঘ্য দ্বারা গুণ করলে ক্ষেত্রফল পাওয়া যায়।

সুতরাং বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল= (দৈর্ঘ্য × দৈর্ঘ্য) বর্গএকক

একটি বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং ক্ষেত্রফল A হলে,

A = a × a বর্গএকক

∴ A = a2 বর্গএকক

বর্গক্ষেত্রের বাহুর দৈর্ঘ্য a এবং ক্ষেত্রফল A হলে,

A = a2 বর্গএকক

আরো পড়তে: যৌগিক সংখ্যা কাকে বলে

পূর্ণ বর্গ সংখ্যা কাকে বলে

কোনো সংখ্যাকে সেই সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, তাকে পূর্ণবর্গ সংখ্যা বলে।

কোনো সংখ্যাকে সেই সংখ্যা দিয়ে গুন করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, তা হলো পূর্ণবর্গ সংখ্যা। যেমন ৭ কে ৭ দিয়ে গুন করলে ৪৯ পাওয়া যায়। তাই ৪৯ হলো পূর্ণবর্গ সংখ্যা।

পূর্ণবর্গ সংখ্যার উদাহরণ

 = ১×১১ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ২×২৪ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৩×৩৯ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৪×৪১৬ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৫×৫২৫ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৬×৬৩৬ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৭×৭৪৯ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৮×৮৬৪ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
 = ৯×৯৮১ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
১০ = ১০×১০১০০ (পূর্ণবর্গ সংখ্যা)
পূর্ণবর্গ সংখ্যার উদাহরণ

বর্গ ও বর্গমূল কাকে বলে

বর্গ: যে চতুর্ভুজের চারটি বাহুই পরস্পর সমান ও সমান্তরাল এবং প্রক্যেক কোণগুলো সমকোণ বা ৯০ ডিগ্রি তাকে বর্গ বলে। বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বর্গক্ষেত্রটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভুজে বিভক্ত করে এবং এই ত্রিভুজ দুইটির প্রতেকেই সমকোণী ত্রিভুজ। বর্গক্ষেত্র একটি বিশেষ ধরণের আয়তক্ষেত্র, যে আয়তক্ষেত্রের চারটি বাহু পরস্পর সমান।

বর্গমূল: কোনো সংখ্যাকে সেই সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে যে গুণফল পাওয়া যায় তাকে ঐ সংখ্যার বর্গ এবং সংখ্যাটিকে গুণফলের বর্গমূল বলে।

আয়ত ও বর্গ কাকে বলে

আয়ত

চতুর্ভুজের কোণগুলো সমকোণ বা ৯০০ হলে তাকে আয়ত বলে। চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো পরস্পর সমান ও সমান্তরাল এবং প্রত্যেকটি অন্তঃস্থ কোণ সমকোণ বা ৯০ হলে তাকে আয়ত বলে। আয়তের সংজ্ঞা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, আয়তের দুই জোড়া বিপরীত বাহু পরস্পর সমান ও সমান্তরাল। বিধায়, আয়ত একটি সামান্তরিক। কারণ সামান্তরিকের বিপরীত বাহুগুলো পরস্পর সমান ও সমান্তরাল।

বর্গ

চতুর্ভুজের চারটি বাহু ও চারটি কোণ পরস্পর সমান হলে তাকে বর্গ বলে। বর্গ একটি সুষম ও সমকোণী চতুর্ভুজ। বর্গ দ্বারা আবদ্ধ ক্ষেত্রকে বর্গক্ষেত্র বলে। মূলতঃ বর্গক্ষেত্র দ্বারা বর্গের ক্ষেত্রফলকে বুঝায়। বর্গক্ষেত্র একটি সমবাহু চতুর্ভুজ; কারণ এর চারটি বাহু পরস্পর সমান। আবার এটি একটি সমকোণী চতুর্ভুজ; কারণ এর সবগুলো কোণ পরস্পর সমান এবং প্রত্যেকটি কোণের পরিমাপ সমকোণ বা ৯০।

বর্গক্ষেত্রের কর্ণ বর্গক্ষেত্রটিকে দুইটি সর্বসম ত্রিভুজে বিভক্ত করে এবং এই ত্রিভুজ দুইটির প্রতেকেই সমকোণী ত্রিভুজ। বর্গক্ষেত্র একটি বিশেষ ধরণের আয়তক্ষেত্র, যে আয়তক্ষেত্রের চারটি বাহু পরস্পর সমান।

আয়ত ও বর্গের মধ্যে পার্থক্য

আয়তবর্গ
চতুর্ভুজের কোণগুলো সমকোণ বা ৯০০ হলে তাকে আয়ত বলে। চতুর্ভুজের বিপরীত বাহুগুলো পরস্পর সমান ও সমান্তরাল এবং প্রত্যেকটি অন্তঃস্থ কোণ সমকোণ বা ৯০ হলে তাকে আয়ত বলে।চতুর্ভুজের চারটি বাহু ও চারটি কোণ পরস্পর সমান হলে তাকে বর্গ বলে।
আয়তের বিপরীত বাহুগুলো পরস্পর সমান।বর্গের চারটি বাহু সমান।
আয়তের বিপরীত বাহুগুলো পরস্পর সমান্তরাল।বর্গের দুটি সন্নিহিত বাহু সমান।
আয়তের চারটি কোণই সমকোণ।বর্গের প্রতিটি কোণ সমকোণ।
আয়তের চারটি কোণের সমষ্টি চার সমকোণ বা ৩৬০ ডিগ্রি।বর্গক্ষেত্রের প্রত্যেকটি কোন সমকোন হয় অর্থাৎ প্রত্যের কোনের পরিমান ৯০ ডিগ্রি।
আয়ত ও বর্গের মধ্যে পার্থক্য
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | বর্গ

Q1. ১ বর্গ কিলোমিটার = কত কিলোমিটার

Ans –  বর্গকিলোমিটার = ১০০০০০০ বর্গমিটার

Q2. ১ বর্গমিটার সমান কত বর্গ সেন্টিমিটার

Ans – ১ বর্গমিটার = ১০০০০ বর্গসেন্টিমিটার

Q3. ১ বর্গ কিলোমিটার সমান কত হেক্টর

Ans – ১ বর্গ কিমি =১০০ হেক্টর

Q4. এক একর সমান কত বর্গ মিটার

Ans – ১ একর=৪০৪৬.৮৬ বর্গমিটার

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।