- খাদ্য কাকে বলে
- খাদ্য কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
- সুষম খাদ্য কাকে বলে
- সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্য
- সুষম খাদ্যের উপাদান
- সুষম খাদ্যের উপকারিতা
- সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা
- অসুষম খাদ্য কাকে বলে
- সম্পূরক খাদ্য কাকে বলে
- প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য কাকে বলে, প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য কাকে বলে কেন
- গো খাদ্য কাকে বলে
- দানাদার খাদ্য কাকে বলে
- সংশ্লেষিত খাদ্য কাকে বলে
- প্রক্রিয়াজাত খাদ্য কাকে বলে
- প্রাকৃতিক খাদ্য কাকে বলে, প্রাকৃতিক খাদ্য কাকে বলে উদাহরণ দাও
- আদর্শ খাদ্য কাকে বলে
- উদ্ভিজ্জ খাদ্য কাকে বলে
- ভেজাল খাদ্য কাকে বলে
- খাদ্যে ভেজালের কারণ
- FAQ | সুষম খাদ্য কাকে বলে Class 10
খাদ্য কাকে বলে
যে সব আহার্য সামগ্রী গ্রহন করলে জীবদেহের বৃদ্ধি, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন ও ক্ষয়পূরন হয়, তাকেই খাদ্য বলে।
আমরা যে সব বস্তু আহার করি তাকে আহার্য সামগ্রী বলে। কিন্তু সব আহার্য সামগ্রীই খাদ্য নয়। যেমন, থোড় সেলুলোজ দিয়ে গঠিত হওয়ায় আমাদের পরিপাক নালীতে পাচিত হয় না। ফলে পুষ্টি সহায়ক নয়। সেই সব আহার্য সামগ্রীকেই খাদ্য বলা যাবে, যা দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক এবং তাপশক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
খাদ্য হচ্ছে যেসব বস্তু বা দ্রব্য যা আহার করলে, আহার্য বস্তু হজম হয়ে বিশোষিত হবে এবং বিশোষণের পর রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনমত কাজে লাগবে। দেহের বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরণ, রক্ষণাবেক্ষণ, তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে, শরীরকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখবে।
যেমন: চাল, ডাল, মাছ, মাংস, শাক, সবজি, ফলমূল, দুধ, চিনি, পানি ইত্যাদি।
খাদ্য কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি
যা দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক এবং তাপশক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে, সেই সব আহার্য সামগ্রীকেই খাদ্য বলে।
খাদ্য প্রধানত দুই প্রকার যথা
দেহ-পরিপোষক খাদ্য
যে সব খাদ্য দেহের গঠন, বৃদ্ধি ও শক্তি উৎপাদনে সহায়কারী, তাদের দেহ-পরিপোষক খাদ্য বলে। যেমন : শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, আমিষ বা প্রোটিন এবং স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট বা লিপিড।
দেহ-সংরক্ষক খাদ্য
যে সব খাদ্য দেহকে রোগ সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে, শক্তি উৎপাদনে সহায়ক নয়, তাদের দেহ-সংরক্ষক খাদ্য বলে। যেমন : খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, খনিজ পদার্থ বা মিনারালস।
পুষ্টি উপাদানের ভিত্তিতে খাদ্য ৬ ধরনের। যথাঃ ১) শর্করা (ভাত, ভুট্টা, আলু), ২) আমিষ (মাছ, মাংস), ৩) চর্বি (ঘি, বাদাম), ৪) ভিটামিন (লেবু, পেয়ারা, ডিমের কুসুম) ৫) খনিজ লবণ (মলা মাছ, খাবার লবণ, কচু শাক) এবং ৬) জল/পানি।
খাদ্য উপাদান, খাদ্যের উপাদান কয়টি ও কি কি
একটি খাদ্য বস্তু দেহে এক বা একাধিক কাজ করতে পারে। তার কারণ হচ্ছে একটি খাদ্যবস্তুতে এক বা একাধিক রাসায়নিক দ্রব্য বা পদার্থের মিশ্রণে বিভিন্ন উপাদান থাকে। মৌলিক রাসায়নিক পদার্থগুলো হচ্ছে কার্বন, হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, নাইট্রোজেন, সালফার, আয়োডিন, লৌহ, ফসফরাস, পটাসিয়াম ইত্যাদি। এসব রাসায়নিক পদার্থের আনুপাতিক সংমিশ্রনে এক একটি উপাদান গঠিত হয়। খাদ্য উপাদানগুলো হচ্ছে— প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ভিটামিন, খনিজ লবণ এবং পানি।
খাদ্যের উপাদান যথাক্রমে ছয়টি। এই উপাদান গুলি হল যথাক্রমে: 1) কার্বোহাইড্রেট, 2) প্রোটিন, 3) ফ্যাট, 4) ভিটামিন, 5) খনিজ লবণ ও 6) জল।
- এগুলোর মধ্যে শর্করা , আমিষ ও স্নেহ পদার্থ বা ফ্যাট দেহ পরিপোষক খাদ্য , যারা দেহের পুষ্টি , বৃদ্ধি ও শক্তি উৎপাদনে সহায়ক।
- খাদ্যের স্নেহ ও শর্করাকে বলা হয় শক্তি উৎপাদক খাদ্য এবং আমিষযুক্ত খাদ্যকে বলা হয় দেহ গঠনের খাদ্য।
- ভিটামিন , খনিজ লবণ ও পানি দেহ সংরক্ষক খাদ্য উপাদান , যারা দেহের রোগ প্রতিরোধে সহায়তাকারী।
1. আমিষ | Protein
অ্যামাইনো এসিডের পলিমারকে আমিষ বলে। অ্যামাইনো এসিডের পলিমারকে আমিষ বলে আমিষ বা প্রোটিন – জাতীয় খাদ্য কার্বন , হাইড্রোজেন , অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন দিয়ে গঠিত ।
আমিষে শতকরা 16 ভাগ নাইট্রোজেন থাকে । আমিষে সামান্য পরিমাণে সালফার , ফসফরাস এবং আয়রনও থকে । নাইট্রোজেন এবং শেষোক্ত উপাদানগুলোর উপস্থিতির কারণে আমিষের গুরুত্ব শর্করা ও স্নেহ পদার্থ থেকে আলাদা।
শুধু আমিষজাতীয় খাদ্যই শরীরে নাইট্রোজেন সরবরাহ করে বলে পুষ্টিবিজ্ঞানে আমিষকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়
আমিষের উৎস – আমরা আগেই জেনেছি মাছ , মাংস , ডিম , দুধ , ডাল , শিমের বীচি , শুঁটকি মাছ , চিনাবাদাম ইত্যাদি থেকে আমরা আমিষ পাই ।
উৎস অনুযায়ী আমিষ দুই ধরনের :
- প্রাণিজ আমিষ এবং
- উদ্ভিজ্জ আমিষ ।
2. শর্করা | Carbohydrates
পলিহাইড্রোক্সি অ্যালডিহাইড , কিটোন বা এদের পলিমারকে শকরা বলে ।
শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ( Carbohydrate ) শর্করাজাতীয় খাদ্য শরীরে কাজ করার শক্তি যোগায় ।
শর্করার মৌলিক উপাদান কার্বন , হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন । উদ্ভিদের মূল , কাণ্ড , পাতা , ফুল , ফল ও বীজে শর্করা বিভিন্নরূপে জমা থাকে ।
ফলের রসে গ্লুকোজ , দুধে ল্যাকটোজ , গম , আলু , চাল ইত্যাদিতে শ্বেতসার ( স্টার্চ ) ইত্যাদি শর্করাজাতীয় খাদ্যের বিভিন্ন রূপ ।
3. স্নেহজাতীয় খাদ্য | Fats
স্নেহজাতীয় খাদ্য ( Fats ) বা চর্বি একটি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান । কার্বন , হাইড্রোজেন , অক্সিজেন দিয়ে তৈরি এই উপাদানটির মুখ্য কাজ হলো তাপ উৎপাদন করা ।
এই উপাদানটি পাকস্থলীতে অনেকক্ষণ থাকে , তাই তখন ক্ষুধা পায় না । দেহের ত্বকের নিচে চর্বি জমা থাকে । তাছাড়া বিভিন্ন অঙ্গ যেমন : যকৃৎ , মস্তিষ্ক , মাংস পেশিতেও চর্বি জমা থাকে ।
দেহের এ সঞ্চিত চর্বি উপবাসের সময় কাজে লাগে । শর্করা ও আমিষের তুলনায় চর্বিতে প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ ক্যালরি থাকে ( ক্যালরি হলো প্রাণিদেহে শক্তি মাপার একটি একক ) ।
খাবার তেল বা ঘি দিয়ে রান্না করা খাবার বেশ সুস্বাদু হয় , সঙ্গে এর পুষ্টিমানও বেড়ে যায়।
4. খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন | Vitamins
স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনের পরিমাণ খুব সামান্য হলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম ।
দেহের বৃদ্ধির জন্য ও সুস্থ থাকার জন্য ভিটামিন অত্যাবশ্যক । সুষম খাদ্যে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উপাদান থাকে বলে সুষম খাদ্য থেকে প্রচুর ভিটামিন পাওয়া যায় ।
তবে নিয়মিত ভিটামিনবিহীন খাবার খেলে কিছুদিনের মধ্যে দেহে ভিটামিনের অভাবজনিত সমস্যা দেখা দেয় ।
পরবর্তীকালে তা মারাত্মক আকারে স্থায়ীভাবে দেহের ক্ষতিসাধন করে , এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
5. খনিজ লবণ | Mineral salts
দেহকোষ ও দেহের তরল অংশের জন্য খনিজ লবণ অত্যাবশ্যকীয় উপাদান । মানুষের শরীরে ক্যালসিয়াম , লৌহ , সালফার , দস্তা , সোডিয়াম , পটাশিয়াম , আয়োডিন ইত্যাদি থাকে ।
এ উপাদানগুলো কখনো মৌলিক উপাদানরূপে মানবদেহে অবস্থান করে না , এগুলো খাদ্য ও মানবদেহে বিভিন্ন পরিমাণে অন্য পদার্থের সাথে মিলিত হয়ে নানা জৈব এবং অজৈব যৌগের লবণ তৈরি করে ।
খনিজ লবণ দেহ গঠন ও দেহের অভ্যন্তরীণ কাজ নিয়ন্ত্রণ করে । হাড় , দাঁত , পেশি , এনজাইম এবং হরমোন গঠনের জন্য খনিজ লবণ একটি অপরিহার্য উপাদান ।
স্নায়ুর উদ্দীপনা , পেশি সংকোচন , দেহকোষে পানির সাম্যতা বজায় রাখা , অম্ল ও ক্ষারের সমতাবিধান , এসব কাজে খনিজ লবণের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে ।
6. পানি | Water
পানির অপর নাম জীবন । জীবনরক্ষার কাজে অক্সিজেনের পরেই পানির স্থান ।
দেহের পুষ্টির কাজে পানি অপরিহার্য । দেহের গঠন ও অভ্যন্তরীণ কাজ পানি ছাড়া চলতে পারে না ।
মানবদেহে পানির কাজগুলোকে তিন ভাগ করা যায় , দেহ গঠন , দেহের অভ্যন্তরীণ কার্য নিয়ন্ত্রণ এবং দেহ থেকে দূষিত পদার্থ নির্গমন ।
খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা
খাদ্যের প্রয়োজন এক কথায় শেষ করা যায় না। আমরা খাদ্যের কারণে বেঁচে থাকি। ক্ষুধা লাগলেই খাদ্যের প্রয়োজন হয়। এই খাদ্য আমাদের দেহে তাপ ও শক্তি যোগায়। কঠিন ও তরল যাবতীয় খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে দেহ তার নানাবিধ প্রয়োজন মিটায়, খাদ্য গ্রহণের পর হজম প্রক্রিয়ার খাদ্য তরল পদার্থে পরিণত হয়। তারপর তরল পদার্থ নানান প্রক্রিয়ায় দেহের রক্ত তরলে প্রবাহিত হয় বিশেষণের জন্য। পুষ্টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই খাদ্য দেহের বিভিন্ন কাজ করে পুষ্টি সাধন করে। অতএব খাদ্য গ্রহণ আমাদের দেহের সুস্থতা, সক্ষমতা ও জীবনধারণের জন্য অপরিহার্য।
খাদ্যের কাজ প্রধানত তিনটি।
- খাদ্য দেহের গঠন, বৃদ্ধিসাধন, ক্ষয়পূরণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করে।
- খাদ্য দেহে তাপ উৎপাদন করে, কর্মশক্তি প্রদান করে।
- খাদ্য রোগ প্রতিরোধ করে, দেহকে সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম রাখে।
সুষম খাদ্য কাকে বলে
যে খাদ্যে সব কয়টি পুষ্টি উপাদান পরিমাণমত বিদ্যমান থাকে তাকে সুষম খাদ্য বলে।
যে খাদ্যের মধ্যে প্রয়োজনীয় ৭টি উপাদান (কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং পানি এই ৭টি খাদ্য উপাদান) সঠিক অনুপাতে উপস্থিত থাকে এবং যে খাদ্য গ্রহণ করলে ব্যাক্তির সুস্বাস্থ্য বজায় থাকে, তাকে সুষম খাদ্য বলে।
যে খাদ্যে মানবদেহের প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান থাকে তাকে, সুষম খাদ্য বলে।
সুষম খাদ্যের বৈশিষ্ট্য
একজন মানুষের বিপাকের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উপাদানের সামর্থ্য থাকতে হবে ।
- শর্করা , আমিষ এবং চর্বি নির্দিষ্ট অনুপাতে পরিমাণ মতো গ্রহণ করতে হবে ।
- খাদ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও রাফেজ বা সেলুলোজ ( ফাইবার ) সরবরাহের জন্য সুষম খাদ্য তালিকায় ফল ও টাটকা শাকসবজি থাকতে হবে ।
- খাদ্যে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি ও খনিজ লবণ থাকতে হবে ।
- সুষম খাদ্য অবশ্যই সহজপাচ্য হতে হবে ।
সুষম খাদ্যের উপাদান
সুষম খাদ্যের ৭টি উপাদান হল
- কার্বোহাইড্রেট : কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এগুলি হল প্রাথমিক শক্তির উত্স যা আমাদের মস্তিষ্ক এবং পেশী ব্যবহার করে। আমাদের ক্যালোরির প্রায় 55-60% কার্বোহাইড্রেট থেকে আসা উচিত।
- প্রোটিন : প্রোটিন আমাদের শরীরের দ্বারা ব্যবহৃত হয় আমাদের সঠিকভাবে বিকাশ এবং বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। প্রোটিন আমাদের পেশী, অঙ্গ, ত্বক এবং চুল তৈরি করে।
- চর্বি : আমাদের দৈনিক ক্যালোরির প্রায় 35% এর বেশি চর্বি থেকে আসা উচিত নয়। চর্বিগুলি শক্তির একটি দুর্দান্ত উত্স: 1 গ্রাম চর্বি 9 ক্যালোরি সরবরাহ করে।
- ভিটামিন : ভিটামিন হল জটিল জৈব পদার্থ যা আমাদের খাবারে পাওয়া যায় যা শরীরের প্রায় প্রতিটি সিস্টেমকে সমর্থন করে, যার মধ্যে ইমিউন সিস্টেম, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র রয়েছে।
- খনিজ : খনিজগুলি মৌলিক পদার্থ এবং মাটিতে পাওয়া যায়। এগুলি গাছপালা দ্বারা শোষিত হয়, যা আমরা খাই বা প্রাণীরা খাই – যা আমরা খাই।
- ফাইবার : ফল, শাকসবজি এবং শস্যের মতো উদ্ভিদে ফাইবার পাওয়া যায়। ফাইবার দুটি প্রধান প্রকারের দ্বারা গঠিত: দ্রবণীয় ফাইবার এবং অদ্রবণীয় ফাইবার, উভয় প্রকারই সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন।
- পানি : আমাদের শরীর প্রায় 65% জল দ্বারা গঠিত, এটি শোষণ, হজম, মলত্যাগে সহায়তা করে এবং আমাদের শরীরের চারপাশে পুষ্টির সঞ্চালনে সহায়তা করে। আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং তাপ বিতরণের জন্যও জল অপরিহার্য। এছাড়াও জল আমাদের শরীরের চলন্ত জয়েন্ট এবং আমাদের চোখ লুব্রিকেট করে।
সুষম খাদ্যের উপকারিতা
- একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য মানবদেহকে নির্দিষ্ট ধরণের রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে,
- উন্নত স্মৃতিশক্তি এবং মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য।
- অনাক্রম্যতা এবং স্বাস্থ্যকর বিকাশের জন্য খাদ্যের ভিটামিন এবং খনিজগুলি অত্যাবশ্যক,
- স্বাস্থ্যকর খাবার পর্যাপ্ত শরীরের ওজনেও অবদান রাখতে পারে।
- ভাল মেজাজ এবং শক্তি স্তর।
সুষম খাদ্যের প্রয়োজনীয়তা
- এটি আমাদের দেহে সমস্ত প্রয়োজনীয় শর্করা, প্রোটিন, চর্বি, ভিটামিন এবং খনিজ সরবরাহ করে।
- সুষম খাবার আমাদের শরীরকে অসংখ্য রোগ থেকে রক্ষা করে।
- দেহ বৃদ্ধি এবং মেরামতে কাজ করে। তাছাড়া নতুন কোষ গঠনের জন্য এটিতে প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজ আকারে পুষ্টি প্রয়োজন যা আমরা সুষম খাদ্য হতে পাই।
- এটি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে।
- সুষম খাবার স্বাস্থ্যকর শরীরের ওজন বজায় রাখতে সহায়তা করে।
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করার পরে আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়।
- স্বাস্থ্যকর খাবার আপনার মনকে সুস্থ করে তোলে মন আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করে এবং এটি ফোকাস এবং ঘনত্বও বাড়ায়।
- সুষম ডায়েট আপনার দেহকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে যা ভাইরাস এবং অন্য ধরণের রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। স্বাস্থ্যকর ডায়েটে কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা শরীরকে অনেকগুলি ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।
অসুষম খাদ্য কাকে বলে
কোন খাদ্য তালিকায় ৬টি উপাদানের একটি কম থাকলে বা না থাকলে তাকে অসুষম খাদ্য বা অসম খাদ্য বলে। আমাদের দেশের অধিকাংশ লোকের খাদ্যই অসুষম ।
সম্পূরক খাদ্য কাকে বলে
মাছ ও পশুপাখি আঁশ জাতীয় খাবার ও দানাদার খাদ্য থেকে তাদের পুষ্টি উপাদানগুলো পেয়ে থাকে। কিন্তু এ খাবার খাওয়ার পরও মাছ, পশুপাখির কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া যায় না। তাই মাছ ও পশুপাখি থেকে দ্রুত ও অধিক উৎপাদন পেতে প্রচলিত খাবারের পাশাপাশি প্রতিদিনই কিছু অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এ খাদ্যকে সম্পূরক খাদ্য বলে।
যেমন : মাছের সম্পূরক খাদ্য খৈল, ভুসি, লবণ, ফিশমিল ইত্যাদি।
প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য কাকে বলে, প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য কাকে বলে কেন
শ্বেতসার জাতীয় খাদ্যকে প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলা হয়। একজন মানুষ কোনো প্রাণীজ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ না করেও শুধুমাত্র প্রচুর পরিমানে শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য খেয়ে দীর্ঘদিন সুস্থ শরীরে বেঁচে থাকতে পারে, তাই শ্বেতসার জাতীয় খাদ্যকে প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলা হয়।
আরো পড়তে –
গো খাদ্য কাকে বলে
গো-খাদ্য মানে হল গবাদি পশুর খাদ্য। গবাদি পশুর মধ্যে গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, ইত্যাদিকে গবাদি পশু হিসেবে বলা হয়। এই সকল পশুর খাবারকেই গো খাদ্য বলে।
দানাদার খাদ্য কাকে বলে
যে খাদ্যে কম পরিমাণে আশঁ এবং বেশী পরিমাণে শক্তি থাকে তাকে “দানাদার খাদ্য” বলে।
দানাজাতীয় খাদ্য যে জাতীয় খাদ্যে কম পরিমাণ আঁশ এবং বেশি পরিমাণ শক্তি পাওয়া যায় তাকে দানাদার খাদ্য বলা হয়। দুধাল বা মাংস উৎপাদনকারী গবাদি পশুর ক্ষেত্রে শুধু আঁশ জাতীয় খাদ্য সরবরাহ করলে কাংখিত ফল পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণে দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
দানাদার খাদ্যকে নিম্নোক্ত উপায়ে ভাগ করা যায়-
- ক) প্রাণিজ উৎস- ফিস-মিল, ব্লাাডমিল, ফেদার মিল প্রভৃতি।
- খ) উদ্ভিজ উৎস-গম, ভুট্টা, খৈল, ভুসি, কুঁড়া,ক্ষুদ প্রভৃতি।
সংশ্লেষিত খাদ্য কাকে বলে
আমরা বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করে ও কলকারখানায় তৈরি হয় সেই সমস্ত খাদ্য উপাদানকে বা খাদ্যবস্তুকে বলা হয় সংশ্লেষিত খাদ্য।
যেমন- বিভিন্ন ঠান্ডা কোকাকোলা , জ্যাম বা জেলি ইত্যাদি।
প্রাণিজ খাদ্য কাকে বলে
শর্করা জাতীয় খাদ্য কাকে বলে
আমিষ জাতীয় খাদ্য কাকে বলে
পুষ্টিকর খাদ্য কাকে বলে
আঁশ জাতীয় খাদ্য কাকে বলে
প্রক্রিয়াজাত খাদ্য কাকে বলে
যে সমস্ত খাদ্য আমরা বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাদ্য গ্রহণের উপযুক্ত করে তুলি সেই খাদ্য বস্তু কে বলা হয় প্রক্রিয়াজাত খাদ্য।
যেমন : – ভাত, রুটি, বিভিন্ন তেলেভাজা খাদ্যবস্তু ইত্যাদি।
প্রাকৃতিক খাদ্য কাকে বলে, প্রাকৃতিক খাদ্য কাকে বলে উদাহরণ দাও
যে সমস্ত খাদ্য বস্তু আমরা প্রকৃতির কাছ থেকে সরাসরি পায় সেই সমস্ত খাদ্যবস্তুকে বলা হয় প্রাকৃতিক খাদ্য।
প্রাকৃতিক খাদ্য সাধারণত ঐ সব খাদ্যকে বুঝায় যা খাওয়ার আগে কোনরুপ প্রক্রিয়াজাত করা হয় না। যার ফলে খাদ্যটির সমস্ত উপাদানের প্রকৃতিগত অবস্থা বিদ্যমান থাকে। এ যেন, প্রকৃতির কাছে এক ধরণের সমর্পন করা। এই জাতিয় খাদ্যে কোন প্রকার এডিটিভস যেমন, হরমোন, এন্টিবায়োটিকস, রঙিন ও সুগন্ধ সৃষ্টির কোন রাসায়নিক উপস্থিত থাকে না।
যেমন:- আম, কলা, আনারস, আপেল ইত্যাদি।
আদর্শ খাদ্য কাকে বলে
আদর্শ খাদ্য বলতে বোঝায় সঠিক পুষ্টিযুক্ত সুষম খাবার ।
যেমন:- দুধকে আদর্শ খাদ্য বলে।
উদ্ভিজ্জ খাদ্য কাকে বলে
উদ্ভিদ থেকে শাকসবজি, ফল, খাদ্যশস্য, ডাল পাওয়া যায়। এদের উদ্ভিজ্জ খাদ্য বলে।
ভেজাল খাদ্য কাকে বলে
যখন কোন সঠিক খাবার বা উৎকৃষ্ট খাবারের সঙ্গে খারাপ খাবার বা নিকৃষ্ট খাবার মেশানাে হয় তাকে খাদ্যে ভেজাল বলে। যে খাবার মানসম্মত নয়, স্বাস্থ্যকর নয়, বরং স্বাস্থ্যের জন্য অধিক ক্ষতিকর সেটাই ‘ভেজাল খাদ্য’। সুস্থ জীবন আর রােগমুক্ত জীবনের নিশ্চয়তার জন্য ভেজাল প্রতিরােধে সকল মানুষেরই সােচ্চার হতে হবে, প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
“ভেজাল” একটি আইনি শব্দ, যার অর্থ মিশ্রিত, মেকী বা খাঁটি নয় এমন। উৎকৃষ্ট দ্রব্যের সাথে নিকৃষ্ট দ্রব্যের মিশ্রণকে ভেজাল বলে। অন্য কথায় খাদ্যের পরিমাণ, স্থায়ীত্ব অথবা স্বাদ বৃদ্ধির জন্য কাঁচা বা প্রস্তুতকৃত খাদ্য সামগ্রীতে এক বা একাধিক ভিন্ন পদার্থ সংযােজন।
খাদ্যে ভেজালের কারণ
খাদ্যে ভেজাল এখন মানব জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। ভেজালের প্রবণতা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশে খাদ্যে ভেজাল মহামারি আকার ধারণ করেছে। খাদ্যে ভেজাল এর জন্য নিম্নরূপ কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে–
১। অধিক মুনাফা লাভের আশা
২। তদারকির অভাব
৩। আইনের যথাযথ প্রয়ােগ না হওয়া
৪। নৈতিকতার অভাব
৫। খাদ্য পরিবহণ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থার অভাব
৬। ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | সুষম খাদ্য কাকে বলে Class 10
Q1. মিশ্র খাদ্য কাকে বলে
উত্তর : যে খাদ্যে একের অধিক পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে তাকে মিশ্র খাদ্য বলে।
Q2. শিশুর সম্পূরক খাদ্য কাকে বলে
উত্তর : শিশুর পরিপূরক খাবার খাবার বলতে শিশুর জন্মের ৬ মাস পর থেকে তার শারীরিক বৃদ্ধি ও বর্ধনে প্রয়োজনীয় পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য একটি শিশুকে মায়ের দুধের পাশাপাশি যে বাড়তি খাবার দেয়া হয় তাকে বোঝানো হয়। উন্নতমানের পরিপূরক খাবার শক্তি, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ লবন, এবং খাদ্য আঁশ পূর্ণ হবে।
Q3. মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য কাকে বলে
উত্তর : প্ল্যাঙ্কটন, জলজ কীটপতঙ্গ ও উদ্ভিদ, ক্ষুদে পানা, পুকুরের তলদেশের পচা জৈব পদার্থ, ইত্যাদি মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য।
Q4. স্নেহ জাতীয় খাদ্য কাকে বলে
উত্তর : Fat বা স্নেহ জাতীয় খাদ্য আমাদের শরীরের একটি প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান যা অনেক দিন পর্যন্ত আমাদের শরীরে অবস্থান করে এবং প্রয়োজনের সময় পুষ্টির যোগান দেয়।
Q5. জ্বালানি খাদ্য কাকে বলে
উত্তর : জীবের শক্তির প্রধান জোগান দেওয়ার উৎস হল শর্করা। উদ্ভিদের ক্ষেত্রে বীজের সুপ্ত অবস্থায় বীজের ভিতরে যে শর্করা সঞ্চিত থাকে তা বীজ থেকে নতুন চারা কাজ বের হওয়ার সময় শক্তির যোগান দেয়। তাই শর্করাকে জ্বালানি খাদ্য বলে।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।