পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি, এশিয়ার দীর্ঘতম নদী কোনটি, ভারতের দীর্ঘতম নদীর নাম কি, বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী কোনটি

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী কোনটি

পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীটি হল আফ্রিকার নীলনদ। এর দৈর্ঘ্য ৬৬৫০ কিলোমিটার। এই নদীটি আফ্রিকার বৃহত্তম হ্রদ ভিক্টোরিয়া থেকে উৎপন্ন হয়েছে এবং আফ্রিকার উত্তর-পূর্ব দেশগুলির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উত্তরে ভূমধ্যসাগরে মিলিত হয়েছে।

এটি আফ্রিকার ১১টি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত। পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী হচ্ছে আমাজন, যার দৈর্ঘ্য ৬,৪৩৭ কিলোমিটার। 

বিশালতা বরাবরই বিস্ময়ের। বিশালতার সঙ্গে প্রকৃতির ঐশ্বর্য যোগ হলে তৈরি হয় শ্রেষ্ঠতা। তাই পৃথিবীর দীর্ঘতম নদী হিসেবে ‘নীলনদ’ আজ শ্রেষ্ঠতার আসনে। নীলনদের অববাহিকায় গড়ে ওঠা মিসরীয় সভ্যতাও রীতিমতো স্বর্ণাক্ষরে লিপিবদ্ধ আছে ইতিহাসের পাতায়। এ নদীর দুটি উপনদী। একটি হল শ্বেত নীল নদ, উৎপত্তি হয়েছে আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল থেকে। অন্যটি নীলাভ নীলনদ।

নীলাভ জলরাশির এ নীলনদের উৎসস্থল ইথিওপিয়ার তানা হ্রদ। রহস্যময় হলেও একথা সত্যি, পৃথিবীর সব নদ-নদী উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হলেও নীলনদ দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়। এ নদীর আরও একটি বৈশিষ্ট্য হল, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর অন্যান্য নদী শুকিয়ে গেলেও নীলনদ কানায় কানায় জলে ভরা থাকে।

আর নীলনদ যখন শুকিয়ে যায় তখন অন্যান্য নদী জলে ভরা থাকে। নীল নদের ব-দ্বীপে বাস করে প্রায় চার কোটি মানুষ। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ অব্দ থেকে এ নদী অববাহিকার বিস্তৃতি বেড়ে বর্তমানে ১০টি দেশ এর আশীর্বাদপুষ্ট। সেগুলো হল- মিসর, সুদান, দক্ষিণ সুদান, বুরুন্ডি, রুয়ান্ডা, কঙ্গো, তানজানিয়া, কেনিয়া, ইথিওপিয়া ও উগান্ডা।

এশিয়ার দীর্ঘতম নদী কোনটি

চীনের ইয়াংজি নদী এশিয়া মহাদেশের দীর্ঘতম নদী। পশ্চিম এশিয়ার দীর্ঘতম নদী হল ইউফ্রেটিস। মেকং পৃথিবীর দ্বাদশ দীর্ঘতম নদী এবং এশিয়ার সপ্তম দীর্ঘতম নদী।

এশিয়ার সবচেয়ে দীর্ঘতম এবং পৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম নদী হলো ছাংচিয়াং। নদীটি ছিংহাই-তিব্বত নামক বরফাবৃত মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম, কেন্দ্রীয় এবং পূর্ব চীনের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাংহাইয়ের কাছে পূর্ব চীন সাগরে মিশেছে। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ হাজার ৩০০ কিলোমিটার। চীনের এক-পঞ্চমাংশ অঞ্চলের জলের প্রধান উৎস এই নদী।

নদীর উপত্যকায় চীনের এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার বসবাস। ছাংচিয়াং নদী চীনের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এই নদীর ব-দ্বীপ চীনের মোট দেশজ উৎপাদনের ২০ ভাগ জোগান দেয়। নদীটি বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় চার পাশের অঞ্চলগুলো জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ। চৈনিক সভ্যতার শুরু থেকে নদীটি ব্যবসা-বাণিজ্য, জলসেচ, পরিবহনসহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে।

ছাংচিয়াং নদীর ওপর অবস্থিত ‘তিন গিরিখাতের বাঁধ’ নামের বাঁধটি বিশ্বের সবচেয় বড় জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে স্বীকৃত। বর্তমানে ছাংচিয়াং নদী শিল্প দূষণসহ বহুমুখী দূষণে ক্ষতির সম্মুখীন। তাই প্রাকৃতিক সুরক্ষিত স্থান হিসেবে নদীটির কিছু অংশকে সুরক্ষিত করা হয়েছে।

ভারতের দীর্ঘতম নদীর নাম কি

ভারতের দীর্ঘতম এবং বৃহত্তম নদী হল গঙ্গা (Ganga) ভারতে লোকেরা এই নদীটিকে গঙ্গা নামে এবং বাংলাদেশে এটি পদ্মা নামে পরিচিত। এই নদীটি এশিয়ার একটি আন্তঃসীমান্ত নদী, তাই এটি ভারত হয়ে বাংলাদেশে যায় এবং তারপর বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়। ভারতের লোকেরা গঙ্গাকে তাদের মা হিসাবে পূজা করে। এই নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫২৫ কিলোমিটার। এটি উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে উৎপন্ন হয়েছে। ১৪০ টিরও বেশি জলজ প্রাণী গঙ্গা নদীতে বাস করে।

ভারতে অনেক নদী প্রবাহিত, তাই ভারতকে নদীর দেশও বলা হয়। দেশের উন্নয়নে নদীগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতের নদী দুটি ভাগে বিভক্ত:-

  • প্রথম হিমালয় নদী (হিমালয় থেকে উৎপন্ন নদী) এবং
  • দ্বিতীয় উপদ্বীপীয় নদী (উপদ্বীপ থেকে উৎপন্ন নদী)।

উপদ্বীপীয় নদীগুলি বৃষ্টির উপর নির্ভর করে, যখন হিমালয় নদীগুলি বারো মাস প্রবাহিত হয়। ভারতের প্রায় ৯০% নদী বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। মাত্র ১০% নদী আরব সাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। ভারতের দীর্ঘতম নদী হল গঙ্গা যা ২৫২৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছেছে।

উপদ্বীপীয় নদীগুলি বৃষ্টির উপর নির্ভর করে, যখন হিমালয় নদীগুলি গোটা বছর প্রবাহিত হয়। ভারতের প্রায় ৯০% নদী বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। মাত্র ১০% নদী আরব সাগরের দিকে প্রবাহিত হয়। ভারতের দীর্ঘতম নদী হল গঙ্গা, যা ২৫২৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে পৌঁছেছে।

ভারতের দীর্ঘতম এবং বৃহত্তম নদী হল গঙ্গা ভারতে লোকেরা এই নদীটিকে গঙ্গা নামে এবং বাংলাদেশে এটি পদ্মা নামে পরিচিত। এই নদীটি এশিয়ার একটি আন্তঃসীমান্ত নদী, তাই এটি ভারত হয়ে বাংলাদেশে যায় এবং তারপর বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়।

বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী কোনটি

বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী হলো মেঘনা যার দৈর্ঘ্য 330 কিলোমিটার। পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে 120, 90, 60 কিলোমিটার।

এক সময় দেশের বৃহত্তম নদী ছিল পদ্মা। তবে ক্রমাগত ভাঙনের কারণে মেঘনা এখন বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী। মেঘনা নদী, যেমন বড় তেমন গভীর তেমন চওড়া।

মেঘনা নদী বাংলাদেশের বৃহত্তম দীর্ঘতম ও গভীরতম নদী। মেঘনা নদীর দুটি অংশে বিভক্ত। কুলিয়ারচর থেকে ষাটনল পর্যন্ত আপার মেঘনা নদীর অংশ অপেক্ষাকৃত ছোট। ষাটনল থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত অংশ লোয়ার মেঘনা নামে পরিচিত।

মেঘনা নদী বা মেঘনা আপার নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ , নরসিংদী , ব্রাহ্মণবাড়িয়া , নারায়ণগঞ্জ , কুমিল্লা , মুন্সীগঞ্জ , চাঁদপুর এবং লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৩৩০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৩৪০০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার।

বাংলাদেশের সর্বমোট নদীর সংখ্যা ৭০০ ধরা হয়। এককভাবে বাংলাদেশে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী নদী রয়েছে বলে দাবী করা হয়। মূলত বাংলাদেশ একটা নিচু বদ্বীপ অঞ্চল হওয়ায় উত্তরের হিমালয় থেকে বয়ে আসা বড় বড় নদী এদেশে বিভিন্ন শাখাপ্রশাখায় বিভিক্ত হয়ে জালের মত অসংখ্য নদীতে রূপ নিয়েছে।

বাংলাদেশে বড় নদীর সংখ্যা একেবারেই কম। শুধুমাত্র পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রক্ষ্মপুত্র আর কর্নফুলি উল্লেখযোগ্য বড় নদী। এর বাইরে বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীই ক্ষুদ্র এবং মাঝারি আকারের। নদীভাংগন আর অতিরিক্ত পলিবাহিত হওয়ায় বাংলাদেশের অধিকাংশ নদীই খুব প্রশস্ত হয়ে থাকে এমনকি কিছু কিছু যায়গায় নদীর প্রশস্ত এতটাই বেশী হয় যে অপর পাশকে অনুমান লাগানোও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

মেঘনা নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়

বারাক নদীর উৎপত্তি আসামের লুসাই পাহাড়। সিলেট দিয়ে বাংলাদেশের ঢুকে নাম হয় মেঘনা, যেটা ২ টি শাখা নদীতে বিভক্ত হয় সুরমা এবং কুশিয়ারা নামে। সুরমা এবং কুশিয়ারা আজমিরীগঞ্জে মিলিত হয়ে নাম হয় কালনি, কালনি ভৈরববাজারের নিকট মেঘনা নাম ধারন করে। মেঘনা ভৈরববাজারে পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের সাথে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে দক্ষিণ-পশ্চিমে যায়। পদ্মা-মেঘনা চাঁদপুরে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গপোসাগরে পতিত হয়েছে।

মেঘনা বাংলাদেশের গভীরতম ও প্রশস্ততম নদী এবং অন্যতম বৃহৎ ও প্রধান নদী। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, মুন্সীগঞ্জ, চাঁদপুর, ভোলা ও লক্ষ্মীপুর জেলার একটি নদী। এর দৈর্ঘ্য ১৫৬ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ তিন হাজার ৪০০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের নদী নম্বর ১৭ হিসেবে মেঘনাকে চিহ্নিত করেছে।

ক্লডিয়াস টলেমি (৯০-১৬৮ খ্রিস্টাব্দ) নামে একজন ভূগোলবিদের লেখা ‘জিওগ্রাফিয়া’ নামে বইয়ে গঙ্গার অন্যতম মুখের নাম দিয়েছিলেন Mega। Mega শব্দটি থেকেই মেঘনা শব্দের উদ্ভব হয়েছে বলে ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায় অনুমান করেন। Mega-এর বাংলা অর্থ বৃহৎ।

মেঘনা চাঁদপুরের মোহনা থেকে শুরু করেই সব থেকে বেশি খরস্রোতা হয়েছে এবং ভোলার শুরু থেকে শেষ প্রান্ত পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

মেঘনা আসামের বরাক নদী নাগা-মণিপুর অঞ্চলে উৎপত্তি হয়ে সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এই মিলিত ধারা সুনামগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের কাছে কালনী নামে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। ভৈরব বাজার অতিক্রম করে পুরনো ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

মেঘনা তার দুই তীরের মানুষকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। মেঘনার শাখা নদীগুলোর মধ্যে রয়েছে—মনু, তিতাস, গোমতী, বাউলাই।

আরো পড়তে: নদী কাকে বলে, পূর্ববর্তী নদী কাকে বলে, পৃথিবীর বৃহত্তম নদী কোনটি, নদ কাকে বলে, নদ ও নদীর পার্থক্য

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদী কোনটি

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদী হল পদ্মা নদী। এটি বাংলাদেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মধ্যে প্রবাহিত হয়। এটি বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় নদী হিসাবে গণ্য হয় এবং এর মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১২৮ কিলোমিটার। পদ্মা নদী বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনেক অংশকে জীবন ও উপজীবিতা দেয়। এটি বাংলাদেশের মুখ্য নদী হিসাবে চিহ্নিত এবং এর মধ্যে অনেক উপনদী ও খাল রয়েছে।

পদ্মা নদীর উৎপত্তিস্থল কোথায়

গঙ্গা নামে কুমায়ুন হিমালয় এর গাঙ্গেত্রী হিমবাহ থেকে উৎপত্তি হয়ে নবাবগঞ্জ দিয়ে রাজশাহী জেলায় প্রবেশ করে পদ্মা নদী নামধারন করেছে। পূর্ব- দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে গোয়ালান্দের রাজবাড়ীতে যমুনার সাথে মিলিত হয়ে পদ্মা নামে পূর্ব- দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে। পদ্মা মেঘনার সাথে চাঁদপুরে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গপোসাগরে পতিত হয়েছে।

পদ্মা বাংলাদেশের প্রধান নদী। হিমালয়ে উৎপন্ন গঙ্গানদীর প্রধান শাখা এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর রাজশাহী এই পদ্মার উত্তর তীরে অবস্থিত। পদ্মার সর্বোচ্চ গভীরতা ১,৫৭১ ফুট (৪৭৯ মিটার) এবং গড় গভীরতা ৯৬৮ফুট (২৯৫ মিটার)। বাংলাদেশে নদীটির দৈর্ঘ্য ১২০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১০ কিলোমিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার।

পদ্মা নদী (Padma River)  মূলত গঙ্গার নিম্ন স্রোতধারার নাম, আরও নির্দিষ্টভাবে বলা যায় গোয়ালন্দ ঘাটে গঙ্গা ও যমুনার সঙ্গম স্থলের পরবর্তী মিলিত প্রবাহই পদ্মা নামে অভিহিত। বাংলাদেশে গঙ্গার প্রবেশ স্থল (নবাবগঞ্জ জেলাধীন শিবগঞ্জ উপজেলার মানাকোসা ও দুর্লভপুর ইউনিয়ন) থেকে নদীটি পদ্মা নামে বহুল পরিচিত। এই নামটি (পদ্মা) গঙ্গা নদীর ডান তীর থেকে বিভক্ত হয়ে আসা ভাগীরথী নামক শাখাটির উৎসস্থল পর্যন্ত ব্যবহূত হয়, এবং হিন্দুমতে এই ধারাটিই গঙ্গার ধর্মীয় পবিত্রতা বহন করে। নদীজ ভূমিরূপ বিদ্যাগতভাবে যমুনার সাথে সঙ্গমস্থলের পূর্ব পর্যন্ত প্রবাহটিকে গঙ্গা নামে এবং সঙ্গমস্থল পরবর্তী নিম্নস্রোতধারাকে পদ্মা নামে অভিহিত করা অধিকতর সঠিক। পদ্মা কখনও কখনও ভুলবশত গঙ্গা নামে উল্লিখিত হয়। ব্রহ্মপুত্রের স্থানান্তরিত প্রবাহের ফলে এই নদীখাতের সৃষ্টির কারণে শুধুমাত্র নয় বরং বৎসরের অধিকাংশ সময়ে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা গঙ্গার তুলনায় পদ্মার প্রবাহে অধিকতর ভূমিকা রাখে।

পদ্মা ১২০ কিমি দীর্ঘ এবং ৪ থেকে ৮ কিমি প্রশস্ত। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গোয়ালন্দ-চাঁদপুর স্টিমার চলাচল পথের অধিকাংশই এই নদী জুড়ে। গোয়ালন্দ ঘাট থেকে ১৪ কিমি দূরে টেপাখোলার কাছে এর ডান তীর থেকে বেরিয়ে আসা ছোট একটি শাখার নাম ফরিদপুর খাল। আরও ৫০ কিমি ভাটিতে ডান তীর থেকে আড়িয়াল খাঁ নদীর সৃষ্টি হয়েছে। আরও ১৪ কিমি ভাটির দিকে বাম তীরবর্তী লোহাগঞ্জে, লোহাগঞ্জ খাল পদ্মায় পতিত হয়েছে এবং অপর তীর থেকে শাখা নদী ক্রিস্টানগরের উৎপত্তি হয়েছে। এ স্থান থেকে কয়েক কিলোমিটার নিম্নে ডান তীর থেকে শোশাখাল এবং নড়িয়াখাল উৎপন্ন হয়েছে, পরে দুটি ধারা মিলিত হয়ে একটি স্রোতধারা হিসেবে মাদারিপুরের দক্ষিণে আড়িয়াল খাঁয় পতিত হয়েছে। সুরেশ্বর থেকে ৫ কিমি দূরে ঈষৎ জল মগ্ন চড়া ও চরের স্থানান্তরের জটিল একটি অঞ্চলে পদ্মা মেঘনার সাথে মেলে। নিম্ন মেঘনা মূলত পদ্মার একটি ধারাবাহিকতা।

গঙ্গা-পদ্মা হল প্রধান জলশক্তি (hydrodynamic) প্রণালী পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ ভূমি গড়ে তুলেছে যা দেশের একটি বিরাট অংশ এবং ভারতের পশ্চিম বঙ্গের বৃহত্তর একটি অংশ অধিকার করে আছে। গাঙ্গেয় বদ্বীপের উন্নয়নের দীর্ঘ ইতিহাসে, নদীটি দক্ষিণপূর্ব দিকে সরে এসেছিল এবং বঙ্গের নিম্নভূমির বর্তমান অবস্থানে এসে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম অংশে গঙ্গা বদ্বীপের জলবিদ্যা এবং নিষ্কাশন প্রণালী প্রমত্তা গঙ্গা এবং বঙ্গ অববাহিকার নদীজ জল সংস্থান ব্যবস্থার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। গঙ্গা-পদ্মা-মেঘনা নদীর বদ্বীপ মোহনা প্রণালীর মাধ্যমে এইসব নদী প্রণালী সমূহের মিলিত অপসারিত পানি নিষ্কাশনের পরিমাণ গড়ে ৩৫,০০০ কিউমেক। অবশ্য, বর্ষা মৌসুমে পদ্মার অপসারণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ৭৫০,০০০ কিউমেক এ দাঁড়ায় এর সাথে সাথে পলি বহনের পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। পদ্মার নিম্ন পর্যায়ের অপসারণের পরিমাণ ১৫,০০০ কিউমেক, এবং এ সময়ে স্বাভাবিকভাবে খুব সামান্য পরিমাণ পলি বাহিত হয়।

সুন্দরবন কোন নদীর তীরে অবস্থিত

সুন্দরবন বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত। এটি পদ্মা,মেঘনা ,বহ্মপুত্র নদীত্রয়ের অববাহকে ব- দ্বীপে এলাকায় অবস্থিত।

সুন্দরবন হল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ‌ বা লবণাক্ত বনাঞ্চল। অপরূপ এই বনভূমি বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা,পটুয়াখালী, বাগেরহাট ও বরগুনা জেলা এবং ভারতের ২৪ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জুড়ে বিস্তৃত। সুন্দরবনের মোট বিস্তৃতি ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার। যার মধ্যে ৬২%(৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার) বাংলাদেশের মধ্যে এবং বাকি ৩৮% জুড়ে রয়েছে ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।

বৈচিত্র্যময় এই সুন্দরবনের প্রায় ১৮৭৪ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদী-নালা ও খাল বিল। রয়েল বেঙ্গল টাইগার এই বনকে করেছে আরও সৌন্দর্যময়। এই বনে রয়েছে নানা ধরনের বিচিত্র পশুপাখি, ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ‌ এবং ৮ প্রজাতির উভচর প্রাণী। সুন্দরবনের নামকরণ করা হয় মূলত সুন্দরবনে থাকার সুন্দরী গাছের থেকে।

বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকা

Sl. No.সেতুর নামবিশ্বের দীর্ঘতম সেতু
১.ডানইয়াং-কুনশান গ্র্যান্ড ব্রিজ, চীন আজ থেকে এক যুগ আগে নির্মিত হয়েছিল এই ব্রিজ। ২০১০ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়। ২০১১ সালে তা উন্মুক্ত করা হয়। এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সেতুর তকমা ধরে রেখেছে চীনের এই সেতু। এর দৈর্ঘ্য ১৬৪ কিমি । দীর্ঘ এই সেতুটি তৈরিতে সময় লেগেছিল মাত্র ৪ বছর।গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেয় এই সেতুটি। এটি নির্মাণে ৮.৫-১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচ হয়। 
২.চাংহুয়া-কোয়াশিউং রেলসেতু, তাইওয়ান পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু চাংহুয়া-কোয়াশিউং রেলসেতু। এটি তাইওয়ানে অবস্থিত। সড়কপথের পাশাপাশি তাইওয়ানের দ্রুতগতির রেলপথ এই সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ১৫৭ কিমি। 
৩.ক্যান্ডি গ্র্যান্ড ব্রিজ, চীনপৃথিবীর তৃতীয় দীর্ঘতম সেতুটির দৈর্ঘ্য ১১৬ কিমি । চীনে অবস্থিত সেতুটি বেইজিং ও সাংহাইকে সংযুক্ত করেছে। ভূমিকম্পে অটলভাবে দাঁড়িয়ে থাকার সক্ষমতার লক্ষ্য নিয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। 
৪.তাইয়ানজিন গ্র্যান্ড সেতু, চীন এই সেতুটিও চীনে অবস্থিত। এর দৈর্ঘ্য ১১৩ কিমি। চীনের লাংফাং ও কুইংজিয়েনের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে এই সেতু। 
৫.উইনান উইহি গ্র্যান্ড সেতু, চীন পৃথিবীর পঞ্চম দীর্ঘতম সেতু এটি। এর দৈর্ঘ্য ৭৯ কিমি। ২০০৮ সালে যখন এটি নির্মিত হয়েছিল তখন বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু হিসেবে নাম লিখিয়েছিল। পরবর্তীতে সেই স্থান হারিয়ে বর্তমানে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। 
৬. হংকং-ঝুহাই-ম্যাকাও সেতু, চীন ২০১৮ সালের অক্টোবরে সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই সেতুটি। এর দৈর্ঘ্য ৫৫ কিমি। হংকং আর চীন- দুইটি দেশকে যুক্ত করার কারণে এই সেতুটি  নিয়ে বহু আলোচনা হয়। ৫৫ কিলোমিটারের এই সেতুটি বিশ্বের দীর্ঘতম ঝুলন্ত সেতুর পাশাপাশি সমুদ্র টানেলও। 
৭. ব্যাং না এক্সপ্রেসওয়ে, থাইল্যান্ড বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় সপ্তম স্থানে থাকা এই সেতুটি থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সেতু। এর দৈর্ঘ্য ৫৪ কিমি। ২০০০ সালে নির্মিত হয় এই সেতুটি। 
৮.বেইজিং গ্র্যান্ড সেতু, চীন চীনের এই সেতুটি মূলত রেলপথ। এর দৈর্ঘ্য ৪৮ কিমি। ২০১০ সালে নির্মাণ কাজ শেষ করার পর ২০১১ সালে এতে যান চলাচল শুরু হয়। হাই-স্পিড বুলেট ট্রেন চলাচল করে সেতুটিতে। 
৯.লেক পন্টচারট্রেইন কজওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর দীর্ঘতম ১০ সেতুর মধ্যে একমাত্র এই সেতুটিই এশিয়ার বাইরে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের এই সেতুটির দৈর্ঘ্য ৩৮ কিলোমিটার। প্রথম এই  সেতুটি নির্মিত হয় ১৯৫৬ সালে । যান চলাচল বাড়লে দ্বিতীয় সেতু যুক্ত করা হয়। এরপর ১৯৬৯ সালে এর নির্মাণ কাজ শেষে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।   
১০.উহান মেট্রো সেতু, চীন বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় দশম স্থানে আছে উহান মেট্রো সেতু। চীনের উহান শহরে অবস্থিত এই সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৭ কিলোমিটার।  এই সেতুটি চালু হয় ১৯৯৫ সালে। 
বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকা
আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | দীর্ঘতম নদী

Q1. বাংলাদেশের খরস্রোতা নদী কোনটি

Ans – বাংলাদেশের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী হলো কর্ণফুলী। এটি মিজোরামের লুসাই পাহাড়ে জন্ম নিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রাম হয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

Q2. পদ্মা সেতু বিশ্বের কততম দীর্ঘতম সেতু

Ans – পৃথিবীতে অসংখ্য সেতু রয়েছে। আর এই অসংখ্য সেতুর মধ্যে দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় বাংলাদেশের পদ্মাসেতু বিশ্বের ১২২তম দীর্ঘ সেতু।

Q3. ইউরোপের দীর্ঘতম নদী কোনটি

Ans – ভোলগা নদী (ইংরেজি: Volga River; রুশ: Волга) দৈর্ঘ্য, প্রবাহ এবং অববাহিকার দিক থেকে ইউরোপের বৃহত্তম নদী। নদীটি মধ্য রাশিয়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে একে রাশিয়ার জাতীয় নদী হিসেবে গ্রহণ করা হয়। মস্কোসহ রাশিয়ার বৃহত্তম এগারটি শহর ভোলগার অববাহিকায় অবস্থিত। বিশ্বের বৃহত্তম জলাধারগুলোর অধিকাংশই এই অঞ্চলে পাওয়া যায়।

Q4. পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কোথায় অবস্থিত

Ans – কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, বাংলাদেশে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।