দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

দাঁড়াও কবিতার বিষয়সংক্ষেপ

‘মানুষ’ শব্দটির মধ্যেই লুকিয়ে আছে ‘মান’ ও ‘হুশ’ এর অর্থ। কিন্তু যত মানুষ আধুনিকতার শিখরে উত্তীর্ণ হয়েছে, ততই মানবিকতার অবক্ষয় দেখা গিয়েছে। মানুষ হয়ে উঠেছে আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর, সুযােগসন্ধানী ও ক্ষমতালােভী। মানবিকবােধ সম্পন্ন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় ‘দাঁড়াও’ কবিতাটির মধ্যে মানুষের মানবিকতার অবক্ষয়ের দিকটিকে তুলে ধরেছেন। মনুষ্যত্ব, বিবেকবােধ ইত্যাদি যেগুলি মানুষের সদগুণ বলে বিবেচিত, সেইসমস্ত গুণসম্পন্ন মানুষকে তিনি অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানাের আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সমস্ত মানুষের কথা কবি সর্বদা মনে করেন এবং যেভাবেই হােক, প্রতিটি মানুষ প্রতিটি মানুষের পাশে এসে যেন দাঁড়ায়এটাই কবির একমাত্র প্রার্থনীয় বিষয়।

আসলে কবি বিশ্বাস করেছেন, যে কোনাে প্রাকৃতিক দুর্যোগে হােক কিংবা নিঃসঙ্গতা, অসহায়তায় হােক-মানবিকতার বােধ থেকে মানুষ যেন মানুষের পাশে দাঁড়ায়, নিঃসঙ্গতার সঙ্গী হয়, ব্যথিত মানুষের সমব্যথী হয়ে ওঠে। পাশে দাঁড়াও’ বা পাশে এসে দাঁড়াও’ এই শব্দগুলি যথাক্রমে ৩ বার করে মােট ৬ বার কবি এই কবিতায় ব্যবহার করেছেন। এর মধ্য দিয়ে কবি মানুষের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অন্তর-মানবিক চেতনাকে জাগ্রত করে পাঠকমনকে মানবতাবােধে উদ্বুদ্ধ করেছেন।

দাঁড়াও কবিতার বড় প্রশ্ন উত্তর

‘মতাে’ শব্দ ব্যবহার করা হয় কখন ? তােমার যুক্তির পক্ষে দুটি উদাহরণ দাও।

উঃ দুটি বিষম বস্তুর সঙ্গে তুলনা বােঝাতে বা সাদৃশ্য কিংবা বৈসাদৃশ্য কল্পনা করতে ‘মতাে’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। যেমন কারাে চোখ কোনাে কারণে খুব লাল হলে সেই লাল ভাবের সঙ্গে রক্তের তুলনা করে বলা হয়- ‘চোখটা রক্তের মতাে লাল। আবার কখনাে কখনাে ‘রক্তজবা’-র সঙ্গে তুলনা করে বলা হয়—চোখটা রক্তজবার মতাে লাল। সাধারণত গানে। ও কবিতায় এই ধরনের তুলনা বেশি পাওয়া যায়।

আমাদের পাঠ্য কবি জীবনানন্দ দাশের ‘পাড়াগাঁর দু-পহর ভালোবাসি’ কবিতা থেকে উদাহরণ দিয়ে বলা যায়—“নকশাপেড়ে শাড়িখানা মেয়েটির রৌদ্রের ভিতর/হলুদ পাতার মতাে সরে যায়” কবি এখানে রৌদ্রের ভিতর মেয়েটির শাড়ির সঙ্গে জীর্ণ, হলুদ পাতার তুলনা করে ‘মতাে’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

কবি পাখির মতাে পাশে দাঁড়াতে বলছেন কেন ?

উঃ কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় : জীবনকে কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে দেখেছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ বড়াে অসহায়, বড়াে একা। ফলে তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতাকে পরিত্যাগ করে মানুষকে মানুষের পাশে দাঁড়ান্নোর আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে পাখির আছে স্বাধীনতা, গতিবেগ ও চঞ্চলতা। পাখিদের মধ্যে আত্মকেন্দ্রিকতা বা বিচ্ছিন্নতাবাদী মনােভাব নেই। নেই সামাজিক জটিলতার স্পর্শ। তাই কবি পাখির মতাে মানুষকে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে বলেছেন।

‘মানুষই ফাঁদ পাতছে’—কবি এ কথা কেন বলেছেন ? ‘মানুষ’ শব্দের সঙ্গে ‘ই’ ধ্বনি যােগ করেছেন কেন তােমার কী মনে হয় ?

উঃ সমাজসচেতন কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় বুর্জোয়া উদারনীতিবাদ এবং সমাজের বিকৃতি ও ব্যভিচার দেখে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছেন। এই সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষের মধ্যে থেকে মনুষ্যত্ববােধ যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। একে অপরকে আক্রমণ করার জন্য, ঠকাবার জন্য মানুষ যেন জাল পেতে আছে। তাই কবি এখানে বলেছেন—“মানুষই ফাঁদ পাতছে”।

‘মানুষ’ শব্দের সঙ্গে ‘ই’ ধ্বনি যােগ করে মানুষকেই বিশেষায়িত করতে চেয়েছেন কবি। এই পৃথিবীতে মানুষ হল শ্রেষ্ঠ জীব। মানুষের মধ্যে দয়া-মায়া, ভদ্রতানম্রতা, পারস্পরিক সাহায্য-সহানুভূতি ইত্যাদির প্রকাশ লক্ষ করা যায়। আবার এই মানুষই মানুষকে ঠকায়, শােষণ করে, খুন করে। মানুষের প্রতি মানুষের বর্বরতার কথা জোর দিয়ে বােঝাতেই কবি ‘ই’ ধ্বনিটি যােগ করেছেন।

তােমার মতাে মনে পড়ছে’ –এই পঙক্তির অন্তর্নিহিত অর্থ কী ?

উঃ আলােচ্য পঙক্তিটির মাধ্যমে কবি মানুষের অসহায়তার কথাটিকে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। অবক্ষয়ী সমাজে মানুষ বড়াে একলা হয়ে পড়েছে। মানুষের ওপর শােষণ-পীড়ন চালাচ্ছে আরেক দল মানুষ। সামাজিক বিকৃতি ও ব্যভিচার যেন মানুষকে গ্রাস করে ফেলেছে। মানুষ ক্রমশ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। অথচ, এই মানুষেরই মধ্যেই আছে বহু সদগুণের সমাবেশ। তাই কবি বলেছেন, “তােমার মতাে মনে পড়ছে”। অর্থাৎ, মানুষের মধ্যে যে-সমস্ত সদগুণগুলি আছে—সেই গুণগুলিরই বহিঃপ্রকাশ কামনা করছেন কবি।

“এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালােবেসে দাঁড়াও”– এই পঙক্তিটির বিশেষত্ব কোথায় ? এই ধরনের দুটি বাক্য তুমি তৈরি করাে।

উঃ আলােচ্য পৃঙক্তিটির বিশেষত্ব নানাভাবে লক্ষণীয়।প্রথমত, ‘এসে,ভেসে’, ‘বেসে’—তিনটিই অসমাপিকা ক্রিয়াপদ সম্পূর্ণ বাক্যটি তিনটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদ দ্বারা গঠিত। দ্বিতীয়ত, শব্দগুলির মধ্যে একটি ছন্দগত মিল লক্ষ করা যায়। পর পর দুই মাত্রার শব্দ বসিয়ে আলাদা ধ্বনি ঝংকার সৃষ্টি করা হয়েছে। তৃতীয়ত, ‘এ’-কার-সহ ‘স’ অক্ষরটি তিনবার বসে বৃত্ত্যনুপ্রাস অলংকার সৃষ্টি করেছে।

এমন ধরনের দুটি বাক্য হল— (ক) দিয়ে থুয়ে তুমি খেয়ে নাও। (খ) হেঁটে যাও ছুটে যাও তারপর জু যাও।

“মানুষ বড়াে কাঁদছে”—কী কারণে কবি এই কথা বলেছেন?

উঃ সমগ্র পৃথিবী জুড়েই চলছে ক্ষমতার রাজনীতি। ফলে রাজনীতি, অর্থনীতি ও ক্ষমতায়নের খেলায় সময়ও অস্থির। দু-দুটো বিশ্বযুদ্ধ, ঠান্ডা লড়াই, বিচ্ছিন্নতাবাদ, উগ্রপন্থী মানসিকতা মানুষকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে। সমাজমনস্ক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় জীবনকে দেখেছেন কঠিন বাস্তবের মাটি থেকে। সেহেতু সমাজের বিকৃতি ও ব্যভিচার দেখে কবি মর্মাহত। সমাজের জটিল আবর্তে পড়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে স্বার্থান্বেষী মানুষরা মেতে উঠেছে অত্যাচার ও উৎপীড়নের খেলায় । তারা বিচ্ছিন্ন ও আত্মকেন্দ্রিক হয়ে জীবন যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়ছে। এই সমস্ত মানুষদের জন্য কবি খুবই মর্মাহত হয়েছেন। তাই তিনি মানুষেরই কাছে। মানুষের কান্নার কথাকে তুলে ধরেছেন।

“মানুষ বড়াে একলা, তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও”। এই পঙক্তিটিকে তিনবার ব্যবহার করার কারণ কী হতে পারে বলে তােমার মনে হয় ?

উঃ আলােচ্য পঙক্তিটিকে সমগ্র কবিতায় তিনবার ব্যবহার করে কবি দুটি বিষয়কে তীব্রতর করে তােলার চেষ্টা করেছেন। একটি হল ‘মানুষ বড়াে একলা এবং দ্বিতীয়টি হল ‘তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও। অর্থাৎ, মানুষের অসহায়তা, একাকিত্ব এবং মানুষের দ্বারাই সেগুলি নিরাময় করার প্রচেষ্টাকে সমগ্র কবিতায় তুলে ধরা হয়েছে। তাই আলােচ্য বাক্যটিকে তিনটি অনুচ্ছেদে তিনবার ব্যবহার করে কবি তাঁর বক্তব্যকে খুব জোরালাে, স্পষ্টতর ও প্রবলতর করার চেষ্টা করেছেন।

কবিতাটির নাম ‘দাঁড়াও’ কতটা সার্থক ? কবিতাটির নাম ‘মানুষ বড়াে কাঁদছে’ হতে পারে কি তােমার উত্তরের ক্ষেত্রে যুক্তি দাও।

উঃ নামকরণ যখন বিষয়কেন্দ্রিক হয়ে ওঠে, তখন সাহিত্যের নামকরণ-এর মধ্য দিয়ে বিষয়বস্তুর গভীরে সরাসরি প্রবেশ করা সম্ভব হয়। বিষয়কেন্দ্রিক নামকরণ তখনই আরাে সার্থক হয়ে ওঠে, যখন সেই নামকরণ হয় ব্যঞ্জনাবাহী। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় আলােচ্য কবিতাটির নাম রেখেছেন ‘দাঁড়াও। নামকরণ করার ক্ষেত্রে যে-বিষয়গুলি বিবেচ্য, কাহিনির ব্যঞ্জনাধর্মিতা তাদের মধ্যে একটি, যেটি প্রদত্ত কবিতার ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হয়েছে। কবিতাটির কাহিনির দিকে নজর দিলে দেখা যায়, অবক্ষয়ী সমাজে জীবন-যন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। সুতরাং, মানুষ হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার-উৎপীড়ন না-চালিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানাে উচিত বলে কবির ধারণাপকবিতাটির মূল বিষয় হল—মানুষ অসহায় হয়ে কাঁদছে। ফলে মনুষ্যত্ব ও বিবেকবােধসম্পন্ন মানুষ সেই অসহায় ক্রন্দনরত মানুষের পাশে এসে দাঁড়াক। সমগ্র কবিতাটির বক্তব্য-বিষয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানাের বিষয়টিতে কবি বেশি জোর দিয়েছেন। কারণ, যেভাবেই হােক এসে দাঁড়াও ভেসে দাঁড়াও এবং ভালােবেসে দাঁড়াও”—মানুষের পাশে দাঁড়ানাের এটি একটি আকুল আবেদন। তাই কবিতাটির নামকরণ ‘দাঁড়াও’ অত্যন্ত সুপ্রযুক্ত ও সার্থক হয়েছে।

কবিতাটির নাম ‘মানুষ বড়াে কাঁদছে’ও হতে পারত নিঃসন্দেহে। কারণ, কবিতার বিষয়বস্তুর সঙ্গে এই নামটির পুরাে মাত্রায় সংগতি আছে। তবুও তুলনামূলক বিচারে মানুষ বড়াে কাঁদছে’ নামটির চেয়ে ‘দাঁড়াও’ নামটি বেশি সংগত। উল্লেখ্য, মানুষ বড়াে কাঁদছে’ নামে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের অন্য একটি কাব্যগ্রন্থ আছে।

কবি কাকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরােধ করছেন বলে তােমার মনে হয় ?

উঃ প্রদত্ত কবিতাটিতে কবি মানুষকেই মনুষ্যত্ববােধ, শুভ চেতনা ইত্যাদি সদগুণগুলির জাগরণের মধ্য দিয়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়াতে অনুরােধ করেছেন। এই বােধই পারে মানুষকে অমানুষিক তথা বর্বর আচরণ থেকে মুক্ত করতে। বর্তমান সময়ে কিছু মানুষ হিংসায় মত্ত হয়ে মানুষের ওপর অত্যাচার করতে কুণ্ঠিত হয়। না। সমাজ থেকে সত্য-সুন্দরকে তারা মুছে ফেলতে চায়। তাই কবি বিবেকবান মানুষকে সেই সমস্ত উৎপীড়িত অসহায় মানুষদের পাশে এসে দাঁড়ানাের আহ্বান জানিয়েছেন।

কবিতাটি চলিত বাংলায় লেখা, শুধু একটা শব্দ সাধু ভাষার। শব্দটি খুঁজে বার করাে এবং শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করেছেন কেন কবি ?

উঃ আলােচ্য কবিতাটি চলিত ভাষায় লেখা। শুধু একটিমাত্র শব্দ সাধুভাষায় লেখা, সেটি হল ‘তাহার।

শব্দটিকে এভাবে ব্যবহার করে কবি সম্ভবত অসহায়। মানুষদের বিশেষভাবে চিহ্নিত করতে চেয়েছেন। কারণ, জীবনযন্ত্রণায় ক্ষতবিক্ষত মানুষের জন্য শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিমন কেঁদে উঠেছে। তাই সেই মানুষদের পাশে দাঁড়ানাের জন্যই কবির একান্ত আকুল প্রার্থনা। এই অসহায় নির্যাতিত মানুষদেরকে চিহ্নিত করতে কবিতার মধ্যে হঠাৎ একটু ব্যতিক্রমী শব্দ ব্যবহার করে কবি তাদের প্রতি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সচেষ্ট হয়েছেন। তা ছাড়া নিত্য ব্যবহার্য শব্দের বদলে বা তার পাশাপাশি সাধু শব্দ ‘তাহার’ ব্যবহার করে বক্তব্যকে আরও গভীর করে তুলতে চেয়েছেন। সম্ভবত, এ কারণেই তিনি কবিতার মধ্যে ওই জাতীয় শব্দ ব্যবহার করেছেন। আসলে ‘তার’ শব্দের পরিবর্তে ‘তাহার’ শব্দের বিস্তৃতি অনেক বেশি। তাই, চলিত ভাষার মধ্যে সাধু শব্দের ব্যবহার সেই ব্যপ্তিকেই ব্যঞ্জিত করে তােলে।

দাঁড়াও কবিতার গুরুত্বপূর্ন অতিসংক্ষিপ্ত (SAQ) প্রশ্ন উত্তর

শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ?

উঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম লেখাে। ।

উঃ তাঁর লেখা একটি উপন্যাসের নাম হল- ‘অবনী বাড়ি আছাে?”

তুমি তাহার পাশে এসে দাঁড়াও।’— কার প্রতি কবির এই আহ্বান? কার পাশে, কীভাবে এসে দাঁড়াতে হবে বলে কবি জানিয়েছেন?

উ:- সকল মানবজাতির প্রতি কবির এই আওহ্বান| অসহায়, নিপীড়িত, লাঞ্চিত মানুষের পাশে, অসহায়ের সহায় হয়ে, বন্ধুর মতো অথবা মনুষত্ব দিয়ে এসে দাঁড়াতে হবে বলে কবি জানিয়েছেন |

‘রমেশ কহিল, তুমি অত্যন্ত হীন এবং নীচ।’ — কাকে রমেশ একথা বলেছে? তার একথা বলার কারণ কী?

উ:- রমাকে একথা বলেছে রমেশ |

গ্রামের একশো বিঘা জমি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এমত অবস্থায় আমের জমিদার বেনি ঘোষাল এবং রমা তাদের পুকুরের মাছের ক্ষতির জন্য জমির জল বার করতে দিতে চাইছিল না। অথচ রমাকে রমেশ এত নিষ্ঠুর ও নিজ মনোবৃত্তির বলে কখনোই ভাবেনি। চিরকাল থাকে উদার প্রকৃতির মনে করে এসেছে। আলোচ্য মন্তব্যটি করা হয়েছে।

‘একটা স্ফুলিঙ্গ-হীন ভিজে বারুদের স্তূপ। — কাদের সম্পর্কে, কেন একথা বলা হয়েছে?

উ:- ছন্নছাড়া বেকার নিরাশ্রয় কয়েকজন কম বয়সী যুবকের কথা এখানে বলা হয়েছে।
এখানে ছন্নছাড়া বেকার ছোকরা দের প্রতি ব্যঙ্গ করা হয়েছে। কবি বলতে চেয়েছেন তাদের মধ্যে আগুনের স্ফুলিঙ্গ অর্থাৎ জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা ছিল কিন্তু সমাজ পরিস্থিতি এসে তাদের আশাই জল ঢেলে দিয়েছে । তাই তারা সমাজের উচ্ছিষ্টে পরিণত হয়েছে।

‘আমাদের দৃষ্টি হইতে দূরে গেল বটে, কিন্তু বিধাতার দৃষ্টির বাহিরে যায় নাই – কোন প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক এই মন্তব্যটি করেছেন? ‘বিধাতার দৃষ্টির বাহিরে যায় নাই – একথার তাৎপর্য কী?

উ:- এখানে একটি ক্ষুদ্র বীজের এর কথা বলা হয়েছে যেটি ভাঙ্গা ইট অথবা মাটির নিচে লুক্কায়িত ছিল। কেউ না দেখলেও প্রকৃতির দৃষ্টির বাইরে যায় না, কিছু দিন পর্যন্ত সেটি বীজের কঠিন আবরণে মধ্যে ঘুমিয়ে থাকে, যথাসময়ে সেটি থেকে অঙ্কুর বের হয় ও বৃক্ষ শিশুর জন্ম হয়।

‘রৌদ্রে যেন ভিজে বেদনার গন্ধ লেগে আছে – কোন কবিতার অংশ? কবির মনে এমন অনুভূতি জেগেছে কেন?

উ:- জীবনানন্দ দাশের লেখা ‘পাড়াগাঁর দু পহর ভালোবাসি’ কবিতার অংশ।
কবি জীবনানন্দ দাশ প্রকৃতি প্রেমিক কবি হলেও তাঁর এই কবিতায় এক প্রচ্ছন্ন দুঃখের ইঙ্গিত দিয়েছেন। দুপুরবেলায় সমস্ত প্রকৃতি নিস্তব্ধ থাকে, দেখে মনে হয় প্রকৃতি যেন শোক যাপন করছে। শঙ্খচিলের চিৎকার, জলসিড়ি পাশে নৌকার পড়ে থাকা, বুনো চালতার ছায়া সবকিছুই এই ইঙ্গিত বহন করে।

দাঁড়াও কবিতায় কবি আমাদের কি বার্তা দিতে চেয়েছেন ?

উত্তর। কবি তাঁর কবিতায় বর্তমান জীবনের আমাদের ভুল ত্রুটি তুলে ধরেছেন যখন কোন মানুষ বিপদে পড়ে তখনই আমরা তার পাশে না দাঁড়িয়ে তাকে সাহায্য না করে অন্যত্র চলে যায় কবিতার মাধ্যমে আমাদের সেই ভুলটি শুধরে নিতে বলেছেন|

বিশেষ করে কখন আমাদের একে অপরের পাশে থাকা উচিৎ?

উত্তর। আমরা আমাদের সবসময় একে অপরের পাশে থাকা উচিত কিন্তু বিশেষ করে বিপদের সময় আমাদের একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে মনোবল বৃদ্ধি করা ভীষণ প্রয়োজন |

মানুষ কাঁদছে কেন?

উত্তর। মানুষ যখন ভীষণ অসহায় হয়ে পড়ে এবং তার পাশে দাঁড়ানোর মত কাউকে খুঁজে পায় না তখন বাধ্য হয়ে তার দুঃখ প্রকাশের জন্য কেঁদে ফেলে|

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন উত্তর, দাঁড়াও কবিতার Pdf

প্রান্তিক প্রকাশক বাংলা অষ্টম শ্রেণী বাংলা সহায়িকা

প্রান্তিক প্রকাশক বাংলা অষ্টম শ্রেণী বাংলা সহায়িকা

দাঁড়াও কবিতার প্রশ্ন উত্তর

শক্তি চট্টোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ?
উঃ শক্তি চট্টোপাধ্যায় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বহড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।