কুলি মজুর কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

কুলি মজুর কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর | কুলি মজুর কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

সমাজের অবস্থাসম্পন্ন মানুষেরা দরিদ্র শ্রমজীবীদের সর্বদা অবজ্ঞা অবহেলা করে আসছে। পৃথিবীর সবখানে দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার চলে। যুগ যুগ ধরে সমাজের গরিব তথা শ্রমিক-কুলি-মজুরেরাই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। তাঁদের শ্রমের ওপর ভর করে যাঁরা ধনী হয়েছেন, তাঁরাই সব সুবিধাভোগী। এই ধনিক শ্রেণির লোকেরা জোঁকের মতোই রক্তচোষা। গরিবদের রক্ত চুষে এরা ফুলে ফেঁপে ওঠে।

‘কুলি-মজুর’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্েথর অন্তর্গত?

উত্তর: ‘কুলি-মজুর’ কবিতাটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সাম্যবাদী’ কাব্যগ্রন্েথর অন্তর্গত।

কবি কেন কুলি-মজুরের সঙ্গে দধীচির তুলনা করেছেন?

উত্তর: দধীচি হলেন প্রাচীন ভারতীয় পৌরাণিক কাহিনির একজন মহামুনি বা সাধক। দৈত্য বৃত্তাসুর দেবতাদের রাজা ইন্দ্রের কাছ থেকে তাঁর স্বর্গরাজ্য কেড়ে নিয়েছিল। সে বর পেয়েছিল প্রচলিত কোনো ধাতব অস্ত্র দিয়ে তাঁকে হত্যা করা যাবে না। তাই দেবরাজ ইন্দ্রের অনুরোধে দধীচি নামের এক মহামুনি বা সাধক প্রাণত্যাগ করলেন এবং তাঁর হাড় দিয়ে একটি অস্ত্র বানানো হলো। তার নাম বজ্র। সেই বজ্র দিয়ে ইন্দ্র বৃত্তসুরকে হত্যা করে তাঁর স্বর্গরাজ্য উদ্ধার করলেন। তাই কবি এই ত্যাগী দধীচির সঙ্গে ত্যাগী কুলি-মজুরের তুলনা করেছেন।

উদ্দীপক ও ‘কুলি-মজুর’ কবিতার বিষয়গত সাদৃশ্য নিরূপণ করো।

উত্তর: ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম মানব সভ্যতার যথার্থ রূপকার শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের কথা বলেছেন। শ্রমজীবী মানুষের জয়গান করেছেন। উদ্দীপকে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার বক্তব্যের প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।

‘কুলি ও মজুর’ কবিতায় কবি বলেছেন যুগে যুগে কুলি-মজুরদের মতো শ্রমজীবী মানুষের অক্লান্ত শ্রমে গড়ে উঠেছে এই সভ্যতা। তাঁদের আত্মত্যাগে মোটর, জাহাজ ও রেলগাড়ি চলছে। গড়ে উঠেছে দালানকোঠা ও কলকারখানা। এসব মহৎ মেহনতি মানুষকে শোষণ করেই বিত্তবানেরা সুখের অট্টালিকায় বাস করে। অবজ্ঞা এবং বঞ্চনাই যেন এসব শ্রমজীবী মানুষের একমাত্র পাওনা। একশ্রেণির সুবিধাবাদী লোক শ্রমিকদের শোষণ করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে, অথচ সভ্যতার আদি নির্মাতা এসব শ্রমজীবী মানুষ তাঁদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত।

তাঁরা তাঁদের উপযুক্ত পারিশ্রমিকটুকু পান না। এমনকি তাঁদের প্রতি কারও একটু কৃতজ্ঞতাবোধও নেই। একই বক্তব্য ফুটে উঠেছে উদ্দীপকেও। এখানে প্রকাশ পেয়েছে বণ্টন বৈষম্যের চিত্র। শ্রমিকেরা যে পরিশ্রম করেন তার তুলনায় পারিশ্রমিক অত্যন্ত নগণ্য। তাঁরা সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করেও পরিবারের প্রতি সদস্যের মুখে খাবার তুলে দিতে পারেন না। অন্যদিকে ধনিক শ্রেণি শ্রমিকের রক্ত পানি করা অর্থের ওপর ভিত্তি করে নির্মাণ করে বিলাসের প্রাসাদ। অথচ সভ্যতার কারিগর এই মেহনতি মানুষগুলো এর সুফল ভোগ করতে পারেন না। সুতরাং আমরা বলতে পারি, উদ্দীপক ও ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূল বিষয় একই।

‘গরিবদের রক্ত চুষে ওরা ফুলে ফেঁপে ওঠে’— উদ্দীপক ও ‘কুলি-মজুর’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কুলি-মজুর’ কবিতায় কুলি মজুরদের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন। অর্থাৎ সভ্যতার যথার্থ রূপকার শ্রমজীবী মানুষের জয়গান গেয়েছেন।
যাঁরা শ্রম দিয়ে সভ্যতা গড়েন, তাঁরাই সমাজে অবহেলিত। যাঁরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে শরীরের রক্ত জল করে শ্রম দিয়েছেন, তাঁদেরই শ্রমের বিনিময়ে গড়ে উঠেছে বর্তমান সভ্যতা। কুলি শ্রমিকের মতো লাখো-কোটি শ্রমিকই সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। তাঁদের অক্লান্ত শ্রমে ও ঘামে চলছে মোটর, জাহাজ, রেলগাড়ি। গড়ে উঠেছে দালানকোঠা, কলকারখানা। এই শ্রমজীবী শ্রেণিকে শোষণ করেই ধনিক শ্রেণি হয়েছে বিত্ত-সম্পদের মালিক।

কিন্তু এই শ্রমজীবীরাই সমাজে সবচেয়ে লাঞ্ছিত ও বঞ্চিত। একশ্রেণির হৃদয়হীন, স্বার্থান্ধ মানুষ এঁদের শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বিত্ত-সম্পদের সবটুকুই ভোগ করছে। অথচ এঁদের তারা মানুষ বলেই গণনা করে না। দেখা যাচ্ছে, যাঁদের রক্ত-ঘামে সভ্যতা রঙিন, তাঁরাই সুবিধাবাদীদের ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছেন। পরিশ্রমের তুলনায় তাঁরা মজুরি পান কম। অন্যদিকে মালিক সেটার লাভ বা মুনাফা পান অনেক বেশি। শ্রমিকদের নামমাত্র বেতন দিয়ে তাঁরা শত শত কোটি টাকার মালিক হন।

পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপক এবং ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় উভয় ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের বঞ্চনা ও উপেক্ষার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। তাঁদের জীবন যে বড় কষ্টে কাটে, তা-ও এখানে প্রকাশ পেয়েছে। তাই উভয় ক্ষেত্রেই ধনিক শ্রেণিকে গরিবদের রক্তচোষা বলা হয়েছে।

নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:

চেয়ারম্যান আজমল সাহেবের এলাকায় একজন ভালাে মানুষ হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে, কিন্তু তার ছেলে কারণে-অকারণে বাড়ির কাজের লােক, আশপাশের খেটে খাওয়া মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। চেয়ারম্যান ছেলেকে ডেকে বুঝিয়ে বলেন, তুমি যাদের আজ তুচ্ছ জ্ঞান করছ- সত্যিকার অর্থে তারাই আধুনিক সভ্যতার নির্মাতা, তাদের কারণেই আমরা সুন্দর জীবন যাপন করছি।

কুলি-মজুর’ কবিতায় রেলপথে কোনটি চলে?

উত্তর: ‘কুলি-মজুর’ কবিতার রেলপথে বাম্প-শকট চলে।

‘শুধিতে হইবে ঋণ’- কথাটি দ্বারা কী বােঝানাে হয়েছে?

উত্তর: শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য পাওনা বুঝিয়ে দিতে কবি ঋণ শােধ করার কথা বলেছেন।

শ্রমজীবীর অক্লান্ত শ্রমে রাজপথে মােটর চলছে। সাগরে জাহাজ চলছে। দালানকোঠা গড়ে উঠছে। মূলত লক্ষ-কোটি শ্রমিকের হাতে মানবসভ্যতা গড়ে উঠেছে। আর সেই সভ্যতার ফল ধনিকশ্রেণি ভােগ করছে। তাদের শােষণ আর শাসনে শ্রমজীবী মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বতি। কবি মনে করেন, সামনে শুভ দিন আসছে। শ্রমিকরা সচেতন হয়ে উঠছে। দীর্ঘকাল ধরে শােষণের ফলে শ্রমজীবী মানুষের যে দাবি বা অধিকার জমা হয়েছে ধনিকশ্রেণিকে তা শােধ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে কবি উক্তিটি করেন।

চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে কুলি-মজুর কবিতার কোন দিকটি প্রকাশ পেয়েছে ব্যাখ্যা কর।

উত্তর: উদ্দীপকের চেয়ারম্যান সাহেবের ছেলের আচরণে ‘কুলি-মজুর’ কবিতার ধনিকশ্রেণির হৃদয়হীনতার দিকটি প্রকাশ পেয়েছে।

যুগ যুগ ধরে কুলি-মজুরদের মতাে লক্ষ-কোটি শ্রমজীবী মানুষের হাতে গড়ে উঠেছে মানবসভ্যতা। কিন্তু একশ্রেণির হৃদয়হীন মানুষ এদের মানুষ হিসেবে গণ্য করতেও নারাজ।

উদ্দীপকের চেয়ারম্যানের ছেলের আচরণে সমাজের বিত্তবান স্বার্থান্বেষী মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। সে সমাজের শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে। তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। কুলিমজুর’ কবিতায় এই শ্রেণির মানুষের কথা বলা হয়েছে। তারা শ্রমজীবীদের শ্রমের বিনিময়ে পাওয়া বিত্ত-সম্পদের সবটুকু ভােগ করে। অথচ তাদের সবখানেই বঞ্চিত করে রেখেছে। মানুষ হিসেবে তাদের গণ্য করতেও চায় না।

“চেয়ারম্যান সাহেবের মনােভাব কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাবেরই প্রতিফলন।”- বিশ্লেষণ কর।

“চেয়ারম্যান সাহেবের মনােব ‘কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাবেরই প্রতিফলন:”- মন্তব্যটি যথার্থ

শ্রমজীবীরাই মানবসভ্যতার যথার্থ রূপকার। এদেরই অক্লান্ত শ্রমে পৃথিবী আজ এত সুন্দর। অথচ এদের শােষণ করেই ধনিকশ্রেণি বিত্তসম্পদের মালিক হয়েছে। তবে এর মাঝেও ব্যতিক্রম কিছু মানুষ রয়েছেন যারা মানুষকে মানুষের মর্যাদা দেন।

উদ্দীপকের চেয়ারম্যান সাহেব বিত্তবান এবং একজন ভালাে মানুষ। তার মতে শ্রমজীবীরাই আধুনিক সভ্যতার নির্মাতা। তাদের কারণেই আমরা সুন্দরভাবে বাঁচতে পারছি। চেয়ারম্যান সাহেবের এ মনােভাব কুলি-মজুর’ কবিতার মূলভাবকে ধারণ করে। ‘কুলি-মজুর’ কবিতায় কবি মানবসভ্যতার যথার্থ রূপকার শ্রমজীবী মানুষের অধিকারের পক্ষে কলম ধরেছেন। সমাজ-সভ্যতা নির্মাণে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করে তাদের ন্যায্য পাওনা ও দাবি আদায়ের পক্ষে কথা বলেছেন।

উদ্দীপক ও ‘কুলি-মজুর’ কবিতা উভয় জায়গায় শ্রমজীবী মানুষের অবদানের কথা প্রকাশ পেয়েছে। প্রকাশ পেয়েছে তাদের প্রতি মমত্ববােধ। উদ্দীপকের চেয়ারম্যান সাহেব শ্রমজীবী মানুষের ওপর শ্রদ্ধাশীল। তিনি মনে করেন তারাই সভ্যতার নির্মাতা এবং সত্যিকার মানুষ। আলােচ্য কবিতার মূলভাবেও এই বিষয়টির প্রকাশ ঘটেছে। তাই বলা যায়, মন্তব্যটি যথার্থ।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

কুলি মজুর কবিতার Pdf

বাংলা ভাষা পরিচয়, ষষ্ঠ শ্রেণী

কথা ও কাহিনী প্রকাশনী প্রাইভেট লিমিটেডের বাংলা ভাষা পরিচয়, ক্লাস 6। লিমিটেড



কার দৌড় কতদূর প্রশ্ন উত্তর

কুলি-মজুর’ কবিতায় রেলপথে কোনটি চলে?
উত্তর: ‘কুলি-মজুর’ কবিতার রেলপথে বাম্প-শকট চলে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।