কোনি উপন্যাস প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

কোনি উপন্যাসের সারাংশ, কোনি উপন্যাস সারাংশ, কোনি উপন্যাসের বিষয়বস্তু, কোনি উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু

উত্তরঃ প্রখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক ও সাহিত্যিক মতি নন্দী রচিত ” কোনি ” উপন্যাসে কোনি ও তার সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের ঘাত – প্রতিঘাত যুক্ত সংঘর্ষ – সংকুল জীবনের ক্রমোথ্থানের কাহিনী ।
জুপিটার ক্লাবের সদস্যরা চক্রান্ত করে ক্ষিতীশকে চিফ ট্রেনারের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করায় । এমন এক সময়ে কোনিকে আবিষ্কার করেন ক্ষিতীশ । কোনি পিতৃহীন ।অপরদিকে ক্ষিতীশ সন্তানহীন ।এতদিনে ভাগ্যবিড়ম্বিত ক্ষিতীশ উপযুক্ত শিষ্যা পান ।

প্রচণ্ড পরিশ্রম , অধ্যবসায় ও দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ কোনিকে এনে দেয় সাফল্য । এর সঙ্গে যুক্ত হয় পিতৃপ্রতিম ক্ষিতীশ সিংহের প্রশিক্ষণ । হিয়া মিত্র , অমিয়া , রমা যোশী প্রমুখ বাংলা ও বাংলার বাইরের সমস্ত দক্ষ সাঁতারুকে পরাস্ত করে কোনি । জয়ী হয় কোনি । জয়ী হয় ক্ষিতীশ ।

কোনির কানে নিরন্তর অনুপ্রেরণার বাণী রণিত হয় —— ” ফাইট কোনি, ফাইট ” ।

‘কোনি’ উপন্যাসের নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো:-

উত্তরঃ

ভূমিকা :- নাম হল জীবনের সেই অঙ্গ , যা বিমূর্ত হয়েও একজন মানুষের অস্তিত্বকে বয়ে নিয়ে চলে । ঠিক একইরকমভাবে একটি গল্প , উপন্যাস ,কবিতা বা সাহিত্যের যে – কোনাে শাখায় নামকরণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । নামকরণ যেন ঝলমলে মােড়ক আর রচনা হল উপহার । সে কারণেই নামকরণের গুরুত্বটি অপরিসীম এবং লেখকেরা সাধারণত কোনাে কেন্দ্রীয় চরিত্র , বর্ণিতব্য ঘটনা , মূর্ত ভাবব্যঞ্জনা বা ইঙ্গিতময় , প্রতীকী বা তির্যকতাশ্রিত কোনাে নামকরণ করে থাকেন । তো চলুন আমাদের পাঠ্য কোনি উপন্যাসটি কী জাতীয় নামকরণ সেটি আলোচনা করা যাক।

নামকরণের সার্থকতা :- আমাদের আলােচ্য ‘কোনি ’ উপন্যাসটিতে নামকরণ হয়েছে মূল চরিত্রকে কেন্দ্র করে । তাই উপন্যাসটির নামকরণ চরিত্র কেন্দ্রিক । কাহিনিতে কোনির পাশাপাশি আর একটি চরিত্র ক্ষিতীশকেও পাওয়া যায় । এমনকি কোনির জীবনের লেখচিত্র ঊর্ধ্বগতিপ্রাপ্ত হয় ক্ষিতীশের সংস্পর্শে এসেই । শেষপর্যন্ত এটি কোনির গল্পই হয়ে ওঠে । হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান কোনি ভাই বােনের সংসারে পিতৃহারা , ভ্রাতৃহারা হয়েও নিজের চারিত্রিক দৃঢ়তা , জেদ ও অধ্যবসায়কে অবলম্বন করেই ক্রমশ জয়লাভের পথে এগিয়ে যায় । ক্ষিতীশ না এলে কোনির প্রতিভা ধরা সম্ভব হত না। অন্যদিকে ক্ষিতীশও পূর্ণতা পেয়েছেন কোনির প্রতিভাকে কাজে লাগাতে পেরে । কোনি -ক্ষিতীশের আন্তরিক সম্পর্কও কাহিনিকে মানবিকতার স্পর্শ এনে দিয়েছে । মতি নন্দীর স্বাভাবিক সাবলীলতা তাঁর উপন্যাসগুলিকে কেবল ক্রীড়াসাহিত্যই নয় বরং মানবিকতার এক জীবন্ত দলিল হয়ে উঠতে সাহায্য করে । ‘কোনি ’ -উপন্যাস আসলে কোনির খােলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার গল্প , সাধারণ নিম্নবিত্ত কন্যার বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানাের গল্প । কাজেই উপন্যাসের নাম ‘কোনি ’ ছাড়া আর কিছু হওয়া সম্ভব ছিল না ।

তাই সমস্ত বিচার -বিবেচনা করে এই উপন্যাসের নাম ‘কোনি ‘ হওয়া যুক্তিসঙ্গত ও যথাযথ সার্থক হয়েছে।

‘কোনি’ উপন্যাসের উৎস

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসটি আনন্দ পাবলিশার্স থেকে প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালের জুলাই মাসে। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে এই উপন্যাস প্রথম চলচ্চিত্রায়িত হয় ও জাতীয় পুরস্কার লাভ করে ।

‘কোনি’ উপন্যাসের চরিত্র

উত্তরঃ ক্ষিতীশ, কোনি, লীলাবতী, বিষ্টুচরণ, হিয়া, প্রণবেন্দু, অমিয়া, হরিচরণ,কমল, বেলা, ধীরেন,বিনোদ প্রমুখ।

কোনি উপন্যাসে অবলম্বনে কোনির চরিত্র

উত্তরঃ

ভূমিকাঃ- ‘কোনি’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হলো কোনি। ক্ষিতীশের অভিভাবকত্বে কোনির সকল বাধা জয় করে জীবনের বিজয়স্তম্ভে উত্তীর্ণ হওয়ায় এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য বিষয় ।ক্ষিতীশ কোনিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন, সহিষ্ণুতা শিখেছেন, জয়লাভের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। অন্যদিকে কোনি ক্ষিতীশকে পূর্ণতা এনে দিয়েছে। কোনিকে ছাড়া ক্ষিতীশ অসম্পূর্ণ। একজন গুরু তার সৃষ্টির মধ্য দিয়েই নিজেকে তুলে ধরে এবং আত্মপ্রকাশ করে। কোনি ক্ষিতীশকে সেই আত্মপ্রতিষ্ঠা দানে সহায়তা করেছে।

চারিত্রিক দৃঢ়তাঃ- কোনি দরিদ্র পরিবারের সন্তান জন্ম থেকেই দৃঢ় চরিত্রের অধিকারী। গঙ্গায় আম কুড়ানো নিয়ে ঝগড়ায় হোক বা হিয়া মিত্রের হাতে আঘাত করে জল ফেলে দেওয়া হোক, সবকিছুর মধ্যেই তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা প্রকাশিত হয়েছে।

জেদি মানসিকতাঃ- কোনি চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো তার জেদ। জীবনের প্রথম প্রতিযোগিতায় হিয়ার কাছে হেরে যাওয়ায় সে তা ভুলতে পারেনি। জেতার জেদ তার চোয়ালকে আরো কঠিন করে তুলেছিল। বড়োলোকের মেয়ে হিয়াকে চড় মারতেও তার হাত কাঁপেনি। এই জেদকে কাজে লাগিয়েই ক্ষিতীশকে কোনিকে নিয়ে গেছেন সাফল্যের চূড়ায় ।

ক্ষিতীশের সঙ্গে বোঝাপড়াঃ- ক্ষিতীশ কোনির জীবনে এসেছে দেবদূতের মতো। অন্যদিকে কোনিকে খুঁজে পেয়ে ক্ষিতীশের জীবনের মোড় ঘুরে গেছে। তারা একে অপরকে অবলম্বন করেই সাফল্যের মুখ দেখেছে।

জয়লাভঃ- উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কোনি হলেও তার জয়লাভ সহজে আসেনি। নানান বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করেই কোনি সাফল্য পেয়েছে। তাই বলা যায় কোনি চরিত্র লেখকের মানস কন্যা বললেও অতিকথন হয় না ।

কোনি উপন্যাস প্রশ্ন উত্তর 2022, কোনি উপন্যাস প্রশ্ন উত্তর 2023, কোনি উপন্যাসর অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর, কোনি উপন্যাস রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর

কোনির পারিবারিক জীবনের পরিচয় দাও।

উত্তরঃ সাহিত্যিক মতি নন্দী রচিত ‘কোনি’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কনকচাঁপা পাল বা কোনি একজন দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদের পরিবারকে দরিদ্র বললে কম বলা হবে, বরং বলা যেতে পারে, ‘খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটা যাদের কাছে বিলাসিতা’, তেমনই একটি পরিবারের সন্তান কোনি।

কোনিদের বাসস্থান শ্যামপুকুর বস্তিতে। সাত ভাই-বোনের মধ্যে কোনি চতুর্থ। বড় ভাই কমল রাজাবাজারে একটা মোটর গ্যারেজে কাজ করে মাসে শ’ দেড়েক টাকা উপার্জন করে, তাতেই তাদের পরিবারের অন্নসংস্থান হয়; মেজো ভাই ট্রেনের ইলেকট্রিক তারে প্রাণ হারিয়েছে আর সেজো থাকে পিসির বাড়িতে কাঁচরাপাড়ায়। কোনির পরেও রয়েছে দুই বোন এবং এক ভাই। টি. বি রোগে আক্রান্ত হয়ে কোনির বাবা আগেই গত হয়েছেন। মা আর বাকি ভাইবোনদের সঙ্গে কোনি থাকে বস্তির স্যাঁতসেঁতে ঝুপড়িতে।

একসময় কমলেরও শখ ছিল নামকরা সাঁতারু হওয়ার, অ্যাপেলোতে প্রশিক্ষণ নিত সে। কিন্তু তার বাবার অকাল মৃত্যুতে সাঁতার শেখা আর হয়ে ওঠে না, এমনকি তাকে স্কুলও ছাড়তে হয়। ইচ্ছে থাকলেও কোনিকে সাঁতার শেখানোর মতো সামর্থ্য তার ছিল না।

বাবার পথ অনুসরণ করে বড় ভাই কমলও টি.বি রোগে মারা যায়। কোনিদের পরিবার চরম দুর্দিনের মুখোমুখি হয়। এইসময় ক্ষিতীশ দেবদূতের মতো তাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং কোনির প্রশিক্ষণ সহ তাদের পরিবারের অন্নসংস্থানের বন্দোবস্ত করে দিয়েছিল।

ক্ষিদ্দা কীভাবে কোনির জীবনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছিল সে সম্পর্কে আলােচনা করাে।

উত্তরঃ মতি নন্দীর “কোনি” উপন্যাসে কোনির ‘ক্ষিদ্দা’ ক্ষিতীশ সিংহ এক অনন্য সাধারণ ব্যক্তিত্ব। এক অতিদরিদ্র পরিবারের মেয়ে থেকে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু হওয়ার সফরে যে মানুষটি কোনির বন্ধু, দার্শনিক এবং পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করেছিলেন, তিনি হলেন এই ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতীশ সিংহ।

খেলাধুলার প্রতি কোনির আগ্রহ ছিল ঠিকই কিন্তু তাকে সাঁতার শেখানোর মতো সামর্থ্য ছিলনা তার পরিবারের। ক্ষিতীশই কোনির সাঁতার-প্রতিভার সন্ধান পেয়েছিলেন এবং নিজে থেকেই তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই অর্থে কোনি হল ক্ষিদ্দারই আবিষ্কার। কোনি যে একজন সাঁতারু এবং তার ‘আসল লজ্জা জলে এবং আসল গর্বও জলে’, একথা ক্ষিদ্দাই কোনিকে শিখিয়েছিলেন।

ক্ষিদ্দা কোনিকে কেবল সাঁতারের প্রশিক্ষণই দেননি, তিনি কোনিকে নানাভাবে উৎসাহিত করেছিলেন। কোনিকে তিনি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদদের জীবন সংগ্রামের কাহিনি শোনাতেন। তার মতো দারিদ্র-পীড়িত অতিসাধারণ ঘরের মেয়েরাও যে জীবনে সফল হতে পারে, ক্ষিদ্দাই কোনিকে সেই স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। ক্ষিদ্দার জন্যই কোনির মধ্যে এক অদম্য লড়াকু মানসিকতা তৈরি হয়েছিল।

ক্ষিদ্দা কোনিকে দিয়ে যেমন কঠোর অনুশীলন করিয়েছেন তেমনি বিভিন্ন সময়ে কোনির ভিতরে বারুদ ভরে দিয়েছেন। অমিয়া, হিয়ার প্রতি কোনির যে বিরূপ মনোভাব ছিল, ক্ষিদ্দা সেটাকে আরো উসকে দিতেন। কোনির তেজ তিনি ভোঁতা হতে দেননি, বরং তাতে আরো শান দিয়ে গেছেন। কারণ, তিনি জানতেন এই তেজটাই সাঁতার কাটার সময় কোনিকে ক্ষিপ্র করে তুলবে।

তাই বলা যায়, ক্ষিদ্দার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং ‘হার না মানার মন্ত্র’ কোনিকে সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছিল।

জোচ্চুরি করে আমাকে বসিয়ে রেখে এখন ঠেকায় পড়ে এসেছ আমার কাছে”- কোনির এই অভিমানের কারণ কী? এর পরবর্তী ঘটনা সংক্ষেপে বর্ণনা করাে।

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র কোনি অর্থাৎ কনকচাঁপা পাল ক্লাবকর্তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার। জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে যোগদান করার জন্য মাদ্রাজে গিয়েও সে কোনো ইভেন্টে নামতে পায়নি, নানা অজুহাতে তাকে কেবল বসিয়ে রাখা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত বাংলার এক প্রতিযোগী অমিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে কোনির ডাক পড়েছিল। এইজন্য কোনির অভিমান হয়েছিল।

মেয়েদের ৪×১০০ মিটার রিলে রেসে নামার জন্য কোনিকে ডাকতে এসেছিল হিয়া। কিন্তু এতোদিন ধরে তাকে বিনা কারণে বসিয়ে রাখা হয়েছে বলে কোনি ক্ষুব্ধ, মর্মাহত। সে কোনোমতেই রিলে রেসে নামতে রাজি হয়না। হিয়া কোনিকে বোঝায় যে বেঙ্গল টিমের জন্যই তাকে প্রয়োজন। কোনির অভিযোগ, হিয়া নিজের সোনার মেডেল নিশ্চিত করার জন্যই তাকে ডাকতে এসেছে। উত্তেজিত হিয়া কোনিকে চড় মারার জন্য হাত তুললে কোনিও তাকে মারতে উদ্যত হয়। কোনির কস্ট্যুম ছিল না, হিয়ার অতিরিক্ত কস্ট্যুমটা পরেই সে প্রস্তুত হয়।

জলে নামার ঠিক আগের মুহূর্তে কোনিকে অবাক করে দিয়ে সেখানে হাজির হন ক্ষিদ্দা। ‘ফাইট, কোনি ফাইট’ ধ্বনিতে গর্জে ওঠেন তিনি। এবার সুইমিংপুলের জলে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করার মনোবল ফিরে পেল সে। রমা জোশির থেকে তিন সেকেন্ড পরে জলে নেমেও দুর্বার গতিতে এগিয়ে গিয়ে আগেই বোর্ড স্পর্শ করে কোনি।

‘কোনি’ উপন্যাস অবলম্বনে সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহের চরিত্র সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

উত্তরঃ সাংবাদিক-সাহিত্যিক মতি নন্দী রচিত কোনি উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র ক্ষিতীশ সিংহ বা ক্ষিদ্দা ছিলেন জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক। উপন্যাসটি পাঠ করে তার চরিত্র সম্পর্কে যে ধারণা জন্মায় তা হল-

যথার্থ শিক্ষক: একজন যথার্থ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কঠোর অধ্যাবসায়ের পাশাপাশি নিয়মানুবর্তিতা শিক্ষা দেন। ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন তেমনি একজন শিক্ষক। ফাঁকি দিয়ে বেশি দূর এগোনো যায় না, এটা তিনি মনে করতেন। আর এজন্যই তিনি জুপিটারের সুইমারদের অপ্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছিলেন।

আপোষহীন সততা: তার নিজের ক্লাব জুপিটারেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল রচনা করা হয়েছিল। ক্লাবের কয়েকজন কর্মকর্তা সুইমারদের সঙ্গে অসাধু চক্রান্ত করে ক্ষিতীশকে ক্লাবছাড়া করার বন্দোবস্ত করেছিল। নিজের প্রাণাধিক প্রিয় ক্লাবকে ছেড়ে দিতে কষ্ট হলেও ক্ষিতীশ মাথা নত করে অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি। এমনকি, জুপিটার থেকে বিতাড়িত হবার পরেও তিনি মনেপ্রাণে জুপিটারকে ভালোবেসে গেছেন। এএকম সততা সত্যিই বিরল।

ক্রীড়াপ্রেমী: ক্ষিতীশ একজন প্রকৃত ক্রীড়াপ্রেমী ছিলেন। তিনি সম্পূর্ণ বিনা স্বার্থে কোনিকে সাঁতার শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন। কোচ হিসেবে পারিশ্রমিক পাওয়া দূরে থাক, কোনির জন্য তাকেই অর্থ ব্যয় করতে হয়েছিল। আবার, কোনি মেডেল জিতলে সেই সম্মানের ভাগীদার হওয়ার লোভও তার ছিল না। কারণ, ক্ষিতীশের মতে, তিনি যেহেতু কোনিকে অ্যাপোলোর ছত্রছায়ায় প্রশিক্ষণ দিতেন, তাই কোনির পাওয়া মেডেলের দাবিবার অ্যাপেলো ক্লাব।

স্নেহশীল: কোনির প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশ যতখানি কঠোর ছিলেন, তার অভিভাবক হিসেবে ততটাই স্নেহশীল ছিলেন।

প্রেরণাদাতা: ক্ষিতীশ কোনিকে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণই দেননি, তাকে সফলতার মন্ত্রে দীক্ষিত করেছিলেন। তিনি কোনিকে বিশ্বসেরা ক্রীড়াবিদদের জীবন সংগ্রামের কাহিনি শোনাতেন আর কোনির মরমে এই একটা কথা গেঁথে দিয়েছিলেন- “সব পারে, মানুষ সব পারে।”

সর্বোপরি, একজন ক্রীড়া-প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশ মনে করতেন, খেলাধুলা মানে বিলাসিতা নয়- খেলাধুলা হল সাধনা। খেলোয়াড়দের সঠিক পথে চালিত করে তাদেরকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথপ্রদর্শক ছিলেন ক্ষিতীশ সিংহ।

“ওইটেই তাে আমি রে, যন্ত্রণাটাই তাে আমি”- বক্তা কে? উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করাে।

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনির প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ একথা বলেছেন।

মাদ্রাজে আয়োজিত ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে শেষ মুহূর্তে জলে নামার সুযোগ পেয়েছিল কোনি। সাঁতারু হিসেবে অংশগ্রহণ করেও তাকে নানা অজুহাতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। মেয়েদের রিলে রেসের আগে অমিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বিনা প্রস্তুতিতে জলে নামতে হয়েছিল। এতোদিন দর্শকাসনে বসে থাকার পর যখন সে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ পেল তখন নিজের সর্ব শক্তি দিয়ে রমা জোশীকে হারিয়ে বাংলার জয় নিশ্চিত করেছিল কোনি। জল থেকে উঠে ক্ষিদ্দাকে নিজের শারীরিক কষ্টের কথা জানালে ক্ষিদ্দা বলেছিলেন, “ওইটেই তাে আমি রে, যন্ত্রণাটাই তাে আমি”।

আসলে, প্রশিক্ষক হিসেবে ক্ষিতীশ সিংহের মূল মন্ত্র ছিল অনুশীলন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে শরীরকে ঘষে ঘষে শানিয়ে তুললে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায়। তিনি কোনির প্রশিক্ষণে এতোটুকু খামতি রাখেন নি। কখনো ভয় দেখিয়ে কখনো বা খাবার লোভ দেখিয়ে তিনি কোনিকে দিয়ে সাধ্যাতীত পরিশ্রম করিয়েছিলেন। তারই ফল কোনি পেয়েছিল মাদ্রাজে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে। এইজন্য ক্ষিতীশ বলেছিলেন, “যন্ত্রণাটাই তাে আমি”।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

“অবশেষে কোনি বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল।”- কোনি কীভাবে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেল তা সংক্ষেপে লেখাে।

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনির সাঁতার কাটার শুরু গঙ্গার জলে। সেখানেই ক্ষিতীশের চোখে পড়েছিল সে। ক্ষিতীশ কোনিকে যথাযোগ্য প্রশিক্ষণ দিয়ে একজন ভালো মানের সাঁতারু তৈরি করেছিল এবং শেষপর্যন্ত সে বাংলা সাঁতার দলে জায়গা পেয়েছিল। কিন্তু কোনির চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না, তাকে বহু বাধা অতিক্রম করতে হয়েছিল।

কোনির সাঁতারু হওয়ার পথে মূলত দু’রকমের প্রতিবন্ধকতা ছিল। প্রথমটা তার ব্যক্তিগত এবং দ্বিতীয় কারণটা ছিল ক্ষিতীশ-কেন্দ্রিক। কোনি একজন বস্তির মেয়ে, তাই স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য সুইমার এবং ক্লাব-কর্মকর্তাদের অবজ্ঞার পাত্রী ছিল।তবে, কোনিকে বাংলার দলে না নেওয়ার মূল কারণ ছিল জুপিটার ক্লাবের ক্ষিতীশ-বিরোধী মনোভাব।

হিয়ার প্রশিক্ষক প্রণবেন্দু বিশ্বাসই প্রথম কোনিকে দলে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। তিনি নির্বাচনী সভায় স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “কনকচাঁপা পালকে বাংলা দলে রাখতে হবে”। কোনি যে ক্লাবকর্তাদের দলাদলির শিকার, একথা তিনি জানতেন। কোনি হিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়া সত্বেও প্রণবেন্দু বাংলা দলে কোনিকে নিতে চেয়েছিলেন কারণ, তিনি জানতেন মহারাষ্ট্রের রমা যোশীর যোগ্য জবাব হবে কনকচাঁপা পাল। আসলে, কোনির যোগ্যতা সম্পর্কে প্রণবেন্দুর মনে বিন্দুমাত্র সংশয় ছিল না। বরং তিনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন যে, কোনি বাংলা দলে স্থান পেলে চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার একটা সম্ভাবনা থাকবে। যাইহোক, ধীরেন ঘোষ, বদু চাটুজ্যেরা প্রণবেন্দুর প্রস্তাব মানতে অস্বীকার করলে তিনি বলেন যে, কোনিকে না নেওয়া হলে বালিগঞ্জ ক্লাবও ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে কোনো সুইমার পাঠাবে না। এরফলে ক্ষিতীশ-বিরোধী গোষ্ঠী কার্যত মাথা নত করতে বাধ্য হয়।

এইভাবে নির্বাচনী সভায় তুমুল বাক-বিতণ্ডার পর শেষপর্যন্ত কোনিকে বাংলার দলে নেওয়া হয়েছিল।

“আপনি আমার থেকে চার হাজার গুণ বড়ােলােক, কিন্তু চার লক্ষ টাকা খরচ করেও আপনি নিজে শরীরটাকে চাকর বানাতে পারবেন না।”- বক্তা কাকে, কেন একথা বলেছিলেন?

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে জুপিটার ক্লাবের সাঁতার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ গঙ্গার ঘাটে ম্যাসাজ নিতে আসা বিষ্টুচরণ ধরকে এই কথাগুলি বলেছিলেন।

বছর চল্লিশের বিষ্টুচরণ বনেদি বংশের লোক। খান সাতেক বাড়ি, বড়োবাজারে ঝাড়ন মশলার দোকান এবং সর্বোপরি একটি সাড়ে তিন মণ দেহের মালিক সে। সপ্তাহে একদিন সে গঙ্গার ঘটে আসতো ম্যাসাজ করবার জন্য। বারুণীর দিন গঙ্গায় চান করতে এসে বিষ্টু ধরের চর্বি-বহুল শরীরে মালিশের বহর দেখে ক্ষিতীশ বিদ্রুপ করেছিলেন। প্রথমে চোখের চাহনিতে, তারপর হাসিঠাট্টার মাধ্যমে তিনি বিষ্টুকে উত্তপ্ত করছিলেন। ক্ষিতীশ নিজে থেকেই তার প্রেসার, সুগার, কোলেস্টেরল লেবেল জানতে চান। তার দেহের স্থূলতা যে হার্টের পক্ষে ক্ষতিকর সেকথা বলেই পরক্ষণে ক্ষিতীশ তাকে হাতি এবং হিপোর সঙ্গে তুলনা করে বসেন। বিষ্টু বিরক্তি প্রকাশ করলেও মনে মনে ভয় পায় এবং ক্ষিতীশকে জিজ্ঞাসা করে, “আমি কি মরে যেতে পারি?”

ক্ষিতীশ তার থেকে বয়সে বড় হলেও শারীরিকভাবে অনেক বেশি সক্ষম। বিষ্টু ধরের মতো ক্ষিতীশের অর্থকৌলিন্য ছিলনা ঠিকই কিন্তু নিয়মিত শরীরচর্চা করে তিনি শরীরটাকে নিজের চাকর বানিয়ে ফেলেছিলেন। বিষ্টু ধর ক্ষিতীশের থেকে ঢের গুণ বড়লোক হলেও তার মতো দৌড়ঝাঁপ করার ক্ষমতা ছিল না। এইজন্য ক্ষিতীশ তাকে একথা বলেছিলেন।

“এটা বুকের মধ্যে পুষে রাখুক।” – কী পুষে রাখার কথা বলা হয়েছে? কী কারণে এই পুষে রাখা?

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র কোনি বয়সে ছোট হলেও বুঝতো গরিব বড়লোকের পার্থক্য। সে জানতো ধনীরা গরীবদের খারাপ চোখে দেখে, ঘৃণা করে। এটা তার সম্পূর্ণ নিজস্ব ভাবনা। কোনির মনেও ধনীদের প্রতি একটা বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই, হিয়ার প্রতিও কোনির যথেষ্ট রাগ ছিল। তাই যেদিন ক্ষিদ্দার সঙ্গে কোনি চিড়িয়াখানা ঘুরতে গিয়েছিল, হিয়া তাকে জল খেতে দিলে জলভর্তি গ্লাস কোনি ছুড়ে ফেলেছিল। কোনির এরূপ আচরণে ক্ষিদ্দা লজ্জিত হলেও তিনি মনে মনে খুশিই হয়েছিলেন। ক্ষিদ্দা চেয়েছিলেন হিয়ার প্রতি তার রাগটা কোনি বুকের মধ্যে পুষে রাখুক।

হিয়া ধনী পরিবারের মেয়ে এবং একজন প্রতিভাবান সাঁতারু। ক্ষিদ্দা জানতেন যে হিয়াই হল কোনির ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বী। কোনিকে ক্ষিতীশ এইভাবে তৈরি করেছিলেন যে সে অনায়াসে বাংলার অন্য মেয়েদের টক্কর দিতে পারতো। কিন্তু কঠোর অধ্যবসায়ের সঙ্গে কোনির এই তেজটাও জরুরি ছিল। ক্ষিতীশ সিংহ একজন উঁচু মানের প্রশিক্ষক, তাই তিনি জানতেন যে হিয়ার প্রতি কোনির এই রাগটা পুষে রাখতে পারলে সাঁতারের সময় তার সুফল পাওয়া যাবেই। এইজন্য হিয়ার প্রতি রূঢ় আচরণ করলেও ক্ষিতীশ কোনিকে বকেন নি, বরং কোনির রাগটাকে আরো উসকে দিয়েছেন। মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে পর্যুদস্ত করার জন্য যে জেদটা থাকা প্রয়োজন, কোনির সেই জেদটা আরো বাড়িয়ে তোলার জন্য এই রাগটা পুষে রাখা প্রয়োজন ছিল।

‘কোনি’ উপন্যাসের কাহিনি অবলম্বনে স্বামীর যােগ্য সহধর্মিণী রূপে লীলাবতীর পরিচয় দাও।

উত্তরঃ সাংবাদিক-সাহিত্যিক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র ক্ষিতীশ সিংহ ছিলেন জুপিটার ক্লাবের একজন সাঁতার প্রশিক্ষক। নিঃসন্তান ক্ষিতীশের পরিবারে তার স্ত্রী লীলাবতীই ছিল প্রকৃত কর্ত্রী। কোনির সাঁতারু হওয়ার পিছনে যেমন ক্ষিতীশের অবদান সবথেকে বেশি ছিল, তেমনি ক্ষিতীশের জীবনে লীলাবতীর প্রভাব ছিল অপিরিসীম। লীলাবতীর যেসব গুণাবলী সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেগুলি হল-

উপার্জনকারী: লীলাবতী স্ত্রী হয়েও সংসারের ভরণপোষণের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিল। ক্ষিতীশ যখন ব্যবসা দেখাশোনা করত, তাদের পারিবারিক দর্জির দোকান ‘সিনহা টেলারিং’ প্রায় ডুবতে বসেছিল এবং ঠিক তখনই লীলাবতী এসে শক্ত হাতে তার হাল ধরেছিল। এখন দোকানের নাম বদলে রাখা হয়েছে ‘প্রজাপতি’ এবং সেই প্রজাপতি রীতিমতো ডানা মেলে উড়তে শুরু করেছে। লীলাবতীর তীক্ষ্ণ ব্যবসায়িক বুদ্ধির ফলেই তাদের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

সংসারের কর্ত্রী: দোকান সামলানোর পাশাপাশি লীলাবতী সংসারের কর্ত্রী। ক্ষিতীশ যেরকম সারাক্ষণ ক্লাব নিয়ে ব্যস্ত থাকে, লীলাবতী যদি সংসারের দিকে বিশেষ নজর না দেয় তবে কোনো কাজই ঠিকমতো হবে না।

স্বামীর অনুগত: লীলাবতী একটু ভোজনরসিক কিন্তু ক্ষিতীশ তার বিপরীত স্বভাবের। লীলাবতী তেলমশলা দিয়ে খাবার খেতেই পছন্দ করে। আবার, ক্ষিতীশের তেলমশলা একেবারেই পছন্দ নয়। প্রথম প্রথম লীলাবতী এসবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। শেষপর্যন্ত লীলাবতী স্বামীর কথামতোই তেলমশলা বিহীন খাবারেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, ক্ষিতীশের আপত্তি সত্বেও সে স্বামীর এঁটো থালায় নিজে খাবার খায়।

স্বামীর সমর্থক: ক্ষিতীশের ক্লাবে যাওয়া নিয়ে তার স্ত্রী লীলাবতীর একটু আপত্তি ছিলই। যখন সে ব্যবসা দেখাশোনা করত, তখন দুপুর ছাড়া বাকি সময়টা ক্লাবেই কাটাতো। এইজন্য তাদের ব্যবসাও ভরাডুবি হয়েছিল। ভালো সাঁতারু তৈরি করার নেশায় ক্ষিতীশ নিজের পরিবারের দিকেও মনোযোগ দিতে পারেনি। কিন্তু এসব সত্বেও এই অপনভোলা, আদ্যোপান্ত ক্রীড়াপ্রেমী মানুষটিকে লীলাবতী সমর্থনই করত, তার পাগলামিটা যেন মনে মনে উপভোগ করত। তাই কমলদীঘিতে কোনির সাঁতার দেখতেও হাজির হয়েছিল লীলাবতী।

সহমর্মী: কমলের মৃত্যুর পর কোনির পরিবার যখন পায়ের তলায় মাটি হারিয়েছিল, তখন ক্ষিতীশ তাদেরকে বুক দিয়ে আগলেছিল। কোনিকে নিজের ঘরে রেখে সাঁতার শেখার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি তাদের পরিবারের অন্নসংস্থানের বন্দোবস্ত করেছিল ক্ষিতীশ। আর, এই কাজে ক্ষিতীশের পাশে ছিল তার স্ত্রী লীলাবতী।

সর্বোপরি, স্বামীর যোগ্য সহধর্মিণী হিসেবে লীলাবতী ক্ষিতীশকে সেই অবসরটুকু দিয়েছে যাতে ক্ষিতীশ ভালো মানের সাঁতারু তৈরি করতে পারে।

“ফাইট কোনি, ফাইট”- সাধারণ সাঁতারু থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে কী ধরনের ‘ফাইট’ করতে হয়েছিল, নিজের ভাষায় লেখ।

উত্তরঃ আধুনিককালের বাংলা উপন্যাসিক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে একজন সাধারণ মেয়ের অসাধারণ সাফল্যের কাহিনি বিবৃত হয়েছে। শ্যামপুকুর বস্তির এক হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে কোনি বহু বাধা পেরিয়ে একসময় ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন সাঁতারু হয়ে ওঠে। কোনির এই উত্তরণ স্বাভাবিক ছন্দে হয়ে ওঠে নি, রীতিমতো তাকে ‘ফাইট’ করেই এগোতে হয়েছে। সাধারণ সাঁতারু থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে গিয়ে কোনিকে যে ধরনের ‘ফাইট’ করতে হয়েছিল তা এইরকম-

দারিদ্রের বিরুদ্ধে ফাইট- কোনির প্রথম লড়াইটা ছিল দারিদ্র্যের সঙ্গে। সে এমন এক পরিবারের মেয়ে যেখানে তিনবেলা খেয়ে-পরে বেঁচে থাকাটাই একটা চ্যালেঞ্জের বিষয়। সুতরাং তার পরিবারের পক্ষে কোনিকে সাঁতার শেখানো তো দূরের কথা, একটা কস্ট্যুম কিনে দেওয়ার সামর্থ্যও তাদের ছিল না। তাছাড়া, দারিদ্রের কারণেই তাকে সাঁতার শেখার শুরুর সময় থেকে মাদ্রাজ পৌঁছনো অবধি নানাভাবে বিদ্রুপের শিকার হতে হয়েছে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই, ক্ষিতিশের নজরে না পড়লে কোনির সাঁতার শেখাই হতো না।

নিজের সঙ্গে ফাইট- কোনি না ছিল বড়লোক বাড়ির মেয়ে, না ছিল তার তেমন শিক্ষাদীক্ষা। তাই অমিয়া যখন তাকে ‘ঝি’ বলেছিল, সে খুব লজ্জা পেয়েছিল। সে তখন ভেবেছিল যে হাতের লেখাটা ভালো হলে কাউন্টারে বসত। সেটা যখন হয়ে ওঠেনি, কোনি ক্ষিদ্দাকেই প্রশ্ন করে “অমিয়ার রেকর্ডটা কবে ভাঙতে পারবো?” আসলে এটা ছিল তার নিজের সঙ্গে নিজের লড়াই, ক্ষমতা দিয়ে অক্ষমতা ঢাকানোর লড়াই।

ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ফাইট- জুপিটারের ক্ষিতীশবিরোধী ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিল কোনি। তাকে কখনো অন্যায়ভাবে ডিসকোয়ালিফাই করা হয় কখনো হারানোর চেষ্টা করা হয়। এমনকি, বিএএসএ নির্বাচনী সভায় তাকে বাংলা দল থেকে বাদ দেওয়ারও চেষ্টা করা হয়।

বঞ্চনার বিরুদ্ধে ফাইট- মাদ্রাজে পৌঁছেও কোনিকে নানা অজুহাতে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। একের পর এক প্রতিযোগিতা সে গ্যালারিতে বসে দেখেছে, জলে নামার সুযোগ পায়নি।

তবে, শেষপর্যন্ত সত্যেরই জয় হয়। মাদ্রাজে জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় শেষ মুহূর্তে নামার সুযোগ পেয়ে কোনি নিজের প্রতিভা প্রমাণ করে দিয়েছিল।

“খিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?”- বক্তা কে? উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কীভাবে তাদের সাহায্য করেছেন?

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে কোনি ক্ষিতীশকে একথা বলেছিল।

উদ্দিষ্ট ব্যক্তি অর্থাৎ কোনের সাঁতার-প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ সিংহ শুধু একজন ভালো প্রশিক্ষক ছিলেন না, একজন বিরাট হৃদয়ের মানুষ ছিলেন। গঙ্গায় কোনির সাঁতার দেখে তিনি স্বেচ্ছায় তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলেছিলেন। শুধু তাই নয়, কোনির খাবারের ব্যবস্থাও তিনি করেছিলেন। তারপর হঠাৎ একদিন কোনিদের পরিবারে দুর্যোগের কালো মেঘ নেমে আসে- টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যায় কোনির বড় দাদা কমল। সেই ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তার মৃত্যুতে কোনিদের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়। এইরকম পরিস্থিতিতে কোনি ক্ষিতীশকে জিজ্ঞেস করেছিল “খিদ্দা, এবার আমরা কী খাব?”

ক্ষিতীশ এরপর নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়ে কোনির পরিবারের অন্নসংস্থানের বন্দোবস্ত করেছিল। কোনির সঙ্গে সঙ্গে কোনির পরিবারকে বুক দিয়ে আগলেছিল কোনির প্রিয় ক্ষিদ্দা।

ক্ষিতীশ কোনির মাকে ছিট কাপড় কাটার কাজ দিয়েছিলেন। তিনি নিজে এসে ছিট কাপড় পৌঁছে দিয়ে যেতেন এবং সেগুলি কাটা হয়ে গেলে কোনির মাধ্যমে পাঠানো হতো। এর থেকে তাদের অল্প কিছু উপার্জন হত। তাছাড়া, কোনিকেও লীলাবতীর দোকানে চল্লিশ টাকা মাসমাইনের কাজ জোগাড় করে দিয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও ক্ষিতীশ নানাভাবে কোনির পরিবারকে সাহায্য করতেন।

“খাওয়ায় আমার লােভ নেই। ডায়েটিং করি।”- বক্তা কে ? তার ডায়েটিং-এর পরিচয় দাও।

উত্তরঃ সাংবাদিক-সাহিত্যিক মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে বিষ্টুচরণ ধর একথা বলেছিল।

ভোজনরসিক বিষ্টু ধর একজন অত্যন্ত বনেদি বংশের লোক এবং অন্যান্য সম্পত্তির সঙ্গে সে একটি সাড়ে তিন মণ দেহের মালিক। তার এই স্থূলতার জন্য ঘরে বাইরে তাকে নিন্দাবাণে জর্জরিত হতে হয়। বারুণীর দিন গঙ্গার ঘাটে মালিশ করাতে এসেও তার রেহাই নেই। জনৈক চশমাধারী ছিপছিপে চেহারার প্রৌঢ় (ক্ষিতীশ) তাকে হিপো, হাতি ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে দেন। এই প্রসঙ্গেই বিষ্টু ধর অত্যন্ত গর্বের সঙ্গে জানায় যে সে রীতিমত ডায়েটিং করে। তার ডায়েটিং ছিল এইরকম-

সে রোজ তিনশো গ্রাম ক্ষীর খায়, আগে খেতো আধ কিলো; জলখাবারে খায় পনেরোটা লুচি, আগে খেতো কুড়িটা; আড়াইশো গ্রাম চালের ভাত এবং রাতে বারোখানা রুটি রয়েছে তার দৈনিক খাদ্যতালিকায়। এখন গরম ভাতের সঙ্গে মাত্র চার চামচ ঘি খায় সে, আগে অনেক বেশি খেতো। তার অন্যান্য আহারের মধ্যে রয়েছে বিকেলে দু-গ্লাস মিছরির শরবত আর চারটে কড়াপাক। তবে, মাছ বা মাংস সে ছুঁয়েও দেখে না কারণ বাড়িতে রাধাগোবিন্দ বিগ্রহ রয়েছে।

অন্যরা যে যাই বলুক, বিষ্টু ধরের মতে, সকাল থেকে রাত অবধি ব্যবসা সামলে এই আহার নিতান্তই অপর্যাপ্ত। দুঃখের সুরে সে বলে, “এত খাটুনির পর এইটুকু খাদ্য!”

“তোর আসল লজ্জা জলে আসল গর্বও জলে”- কে কাকে একথা বলেছিল? প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাসে ক্ষিদ্দা অর্থাৎ ক্ষিতিশ সিংহ কোনিকে একথা বলেছিল।

একদিন রাত্রে খাওয়ার পর ক্ষিতীশ কোনিকে বাড়ি পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল। ক্ষিতীশ স্টপওয়াচটা কোনির চোখের সামনে ধরে কীভাবে ছোটখাটো রেকর্ডগুলো ভেঙে ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের দিকে এগোতে হবে সেই নিয়ে আলোচনা করছিল। হঠাৎ কোনি জানতে চায় যে সে কবে অমিয়ার রেকর্ড ভাঙতে পারবে। এর কারণ জানতে চাইলে কোনি বলে যে সেদিন অমিয়া তাদের দোকানে ব্লাউজ করাতে এসেছিল এবং সবার সামনে কোনিকে ‘ঝি’ বলেছে। অমিয়ার কথায় সে লজ্জা পেয়েছিল। এরপরই ক্ষিতীশ কোনিকে উদ্ধৃত কথাগুলি বলেছিল।

কোনি একজন প্রতিভাবান সাঁতারু। সমস্ত পরিচয়ের ঊর্ধ্বে এটাই তার আসল পরিচয়। সাঁতার প্রতিযোগিতায় হারজিতের ভিত্তিতেই তার যোগ্যতা প্রমাণিত হওয়া উচিত। এইজন্য ক্ষিতীশ বলেছিল, “তোর আসল লজ্জা জলে, আসল গর্বও জলে”। অর্থাৎ, প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করলেই কোনির গর্ব এবং হেরে গেলে লজ্জা পাওয়া উচিত।

দারিদ্র আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে কোনির যে লড়াই তা সংক্ষেপে আলোচনা করো ।

উত্তর-

ভূমিকাঃ-কোনিকে নিয়ে ক্ষিতীশ বাবু নতুন করে নিজেকে প্রমাণ করার স্বপ্ন দেখছেন।কঠোর শ্রমসাধ্য ট্রেনিংয়ে বেঁধেছেন কোনিকে। কোনিও কোনদিন কামাই করে না। এরকম পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে কোনি ট্রেনিংএ আসা বন্ধ করে দেয়। ক্ষিতীশ সিংহ দুশ্চিন্তায় একদিন কোনির খোঁজে তাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে তাদের দারিদ্রতা ও বঞ্চনার পরিচয় পান।

দারিদ্র্যতাঃ- কোনি ওরফে কনকচাঁপা পাল অতি দারিদ্র্য পীড়িত সংসারের মেয়ে। তাদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বড়ো ভাই কমল মুখে রক্ত উঠে মারা গেছে । তাই কোনির সামনে আজ লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া নয়, প্রধান চিন্তা খাদ্য। এক কঠোর পরিস্থিতির সম্মুখীন কোনি এবং তার পরিবার। সহমর্মিতাই বাস্তবতা উপলব্ধি করে আশঙ্কায় কেঁপে উঠেন ক্ষিতীশবাবু ।যে সাধনা নিয়ে তিনি কোনিকে তৈরি করছিলেন সহসা তা বাধাপ্রাপ্ত হয়। দাদার মৃত্যুর পর কীভাবে এই মেয়েটি সাঁতার শিখবে, তা ভেবে পান না ক্ষতীশবাবু । খুব ক্লান্ত ও খুব অসম্ভব শান্ত গলায় ক্ষিতীশ বাবুকে কোনি বলেছিল এবার থেকে হয়তো তাদের খাওয়া জুটবে না।

কোনির জীবন সংগ্রাম:- কোনি যেন ছিল বঞ্চনার আর এক নাম । ক্ষিতীশ কোনিকে সাঁতার শেখানোর জন্য জুপিটার ক্লাবে নিয়ে গেলে ক্ষিতীশ এর বিরুদ্ধে হরিচরণ ,ধীরেন ঘোষ বদু চাটুজ্জে ,বিনোদ ভর ষড়যন্ত্র করে ক্ষিতীশ এর ছাত্রী কোনিকে ভর্তি নেয়নি।এমনকি জুপিটার সুইমিং ক্লাব এর বার্ষিক প্রতিযোগিতায় কোনির প্রবেশাধিকার গৃহীত হয়নি। কিন্তু অ্যাপোলোর অংশের জলে সাতার প্রতিযোগিতার বাইরে থেকেও অমিয়াকে হারিয়ে দেয় কোনি । মাদ্রাজের জাতীয় সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপে দল নির্বাচনের সময়ও কোনিকে প্রায় বাদে দেওয়া হচ্ছিল, ভাগ্যক্রমে বালিগঞ্জ ক্লাবের ট্রেনার প্রণবেন্দুর উদ্যোগেই বাধ্য হয়ে হরিচরন দলে নেয়। কিন্তু মাদ্রাজে নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয় । অমিয়া, বেলা প্রমুখেরা কোনিকে চোর বদনাম দেয় ।ওকে বিনা দোষে চড় মারে ।অবশেষে ভাগ্যের কারণে কোনিকে দলে স্থান দিতে হয় এবং শেষে সারা দেশের সেরা সাঁতারুকে পরাজিত করে বাংলার হাতে ট্রফি এনে দেয় কোনি ।

সফল সাঁতারু হওয়ার ক্ষেত্রে কোনির প্রতিবন্ধকতাগুলি কী ছিল ? সেগুলি কাটিয়ে উঠতে ক্ষিতীশ সিংহ তাকে কীভাবে সাহায্য করেছিলেন ?

উত্তর- সাঁতারু হওয়ার ক্ষেত্রে কোনির প্রতিবন্ধকতা উত্তর / মতি নন্দীর ‘ কোনি ‘ উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র কোনি এক হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে । বস্তিবাসী কোনির মধ্যে সাহস – জেদ – অধ্যবসায় ও আত্মবিশ্বাসের অভাব ছিল না । কিন্তু তার পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ প্রতিকূলে । পেটের খাবারের কিংবা শিক্ষার অভাব এবং মা ও সাত ভাই – বোনের সংসারে সীমাহীন দারিদ্র্যের সঙ্গে দিনযাপন— এসব কোনো কিছুই উপেক্ষা করা কোনির পক্ষে সহজ ছিল না । সেইসঙ্গে এটাও স্বীকার্য , সত্যিকারের সাঁতারু হয়ে উঠতে গেলে শুধু সাঁতার জানলেই চলে না , উপযুক্ত প্রশিক্ষণ আর সাধনার প্রয়োজন হয় । এই এতকিছু ‘ নেই’— এর মধ্যেও ক্ষিদ্দা তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা চ্যাম্পিয়নের সহজাত লক্ষণটিকে ঠিক চিনতে পেরেছিলেন ।

ক্ষিতীশ বুঝেছিলেন পেটের খিদে নিয়ে কোনো মহৎ কাজ করা যায় না । তাই তিনি কোনির পেটের খাবারের সঙ্গে তার মাকেও কাজ জুটিয়ে প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দিয়ে ; তাদের পরিবারের ন্যূনতম চাহিদাটুকু পুরণের উঠতে ক্ষিতীশ চেষ্টা করেছিলেন । তিনি কোনিকে দিনের – পর – দিন সিংহের সহযোগিতা শিখিয়ে গেছেন শারীরিক যন্ত্রণাকে অতিক্রম করার কৌশল । কোনির দিনরাত নিয়ন্ত্রিত হয়েছে ক্ষিতীশের নির্দেশিত পথে । কোনির নিষ্ঠায় , সংকল্পে ও জ্ঞানে তিনিই হয়ে উঠেছেন অদৃশ্য অনুপ্রেরণা । ‘ ফাইট কোনি ফাইট’— এই মন্ত্রের উজ্জীবনী স্পর্শেই কোনি কমলদিঘির জল থেকে মাদ্রাজে পৌঁছে , যন্ত্রণাকে সাফল্যের স্তরে বদলে দিতে পেরেছিল ।

কোনি উপন্যাস ছোট প্রশ্ন উত্তর

বারুণী কী? বারুণির দিনে গঙ্গার ঘাটে কোন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল?

উত্তর: হিন্দু ধর্মমতে শতভিশানক্ষত্রযুক্ত চৈত্র মাসের কৃষ্ণ ত্রয়োদশীতে গঙ্গাপূজা ও গঙ্গাস্নানে পূন্যলাভ হয়, একেই বারুণী বলে।

মতি নন্দীর ‘কোনি’ উপন্যাস শুরু হয় বারুনীর দিন গঙ্গার ঘাটের দৃশ্য দিয়ে। আমরা দেখি গঙ্গার ঘাট ভিড়ে থৈথৈ; বয়স্করা গঙ্গায় ডুব দিয়ে কাঁচা আম বিসর্জন দিচ্ছেন। ছোট ছেলেরা আম দেখলেই হুড়োহুড়ি করে জলে নেমে তা সংগ্রহ করছে। স্নান করে মানুষজন কাদা মাড়িয়ে ঘাটে উঠে আসতে বিরক্ত করছেন। তারপর অনেক ঘাটের মাথায়, ট্রেন লাইনের দিকে মুখ করে বসা বামুনদের কাছে যায়। তারা পয়সা দিয়ে জামা কাপড় জমা রাখে, গায়ে মাখার সরষে বা নারকেল তেল দেয় এবং কপালে চন্দনের ছাপ এঁকে দেয়। রাস্তার পাশে বসে থাকে ভিখারির দল। অনেকে ছোট ছোট দেব-দেবীর দুয়ারে ও শিবলিঙ্গের মাথায় ঘটি থেকে গঙ্গাজল দেন। কাঠের, প্লাস্টিকের, লোহার, খেলনার ও সাংসারিক সামগ্রিক দোকানগুলি দেখতে দেখতে তারা বাড়ির দিকে এগোন। রাস্তায় বাজার থেকে ওল, থোড় অথবা কলমবালেবু কিনতে পারেন। রোদে গরম হয়ে ওঠা রাস্তায় খালি পা ফেলে তাড়াতাড়ি তারা বাড়ির দিকে পা বাড়ান।

“কম্পিটিশনে পড়লে মেয়েটা তো আমার পা ধোয়া জল খাবে”- কার উক্তি? মেয়েটা পা ধোয়া জল খাবে বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উত্তর-

উক্তিটির বক্তাঃ- ক্ষিতীশ যখন জুপিটার সুইমিং ক্লাবের প্রশিক্ষকের পদে ছিলেন তখন অমিয়া ও বেলা নামে দুজন মহিলা সাঁতারু সেখানে প্রশিক্ষণ নিত। কিন্তু ক্ষিতীশের শাসন ও বিদ্রুপ সহ্য করতে না পেরে ও ক্ষিতীশের প্রতি তীব্র ক্ষোভে তাঁর ক্লাব ছেড়ে অ্যাপোলোতে যোগ দিয়েছিল। সেখানেই কোনিকে দেখে প্রবল হিংসায় অমিয়া আলোচ্য উক্তিটি করেছিল।

উক্তিটির অন্তর্নিহিত অর্থঃ- অমিয়ার কোনির সম্পর্কে করা আলোচ্য উক্তিটির উদ্দেশ্য ছিল যত না কোনি, তার চেয়ে বেশি তার প্রশিক্ষক ক্ষিতীশ। জুপিটার ক্লাবে ক্ষিতীশের কাছে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় অমিয়া ও বেলা তাদের অখেলোয়াড়ি মনোভাব, আচার-আচরণ, পোশাক ও সাজগোজ নিয়ে ক্ষিতীশের কাছে যথেষ্ট অপমানিত হয়েছিল। একদিক থেকে ক্ষিতীশের জন্যই তারা জুপিটার ছেড়েছে ।সেই ক্ষিতীশের শিষ্য কোনির প্রতি তাদের ঈর্ষা কাজ করাই স্বাভাবিক। এছাড়া অমিয়ার অহংকার ও ঔদ্ধত্য তাকে দিয়ে এ ধরণের উক্তির করিয়েছে।

কোনি উপন্যাসের প্রশ্ন উত্তর MCQ

‘কোনি’ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র

  1. কোনি
  2. লীলাবতী
  3. বিষ্টুচরণ

উত্তর: 1) কোনি

‘কোনি’ উপন্যাসে কার লেখা

  1. মতি নন্দী
  2. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
  3. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টপাধ্যায়

উত্তর: 1) মতি নন্দী

ফাইট কোনি, ফাইট কার উক্তি

  1. ক্ষিতীশ সিংহ
  2. অমিয়া
  3. হরিচরণ
  4. কমল

উত্তর: 1) ক্ষিতীশ সিংহ

কোনি উপন্যাস pdf, কোনি উপন্যাস Download

কোনি উপন্যাস প্রশ্ন উত্তর pdf

দশম শ্রেণীর জন্য বাংলা সহায়িকা (বাংলা)


দশম শ্রেণীর জন্য বাংলা সহায়িকা (বাংলা)

কোনি উপন্যাস প্রশ্ন উত্তর

কোনি’ উপন্যাসের চরিত্র
উত্তরঃ ক্ষিতীশ, কোনি, লীলাবতী, বিষ্টুচরণ, হিয়া, প্রণবেন্দু, অমিয়া, হরিচরণ,কমল, বেলা, ধীরেন,বিনোদ প্রমুখ।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

2 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।