অরবিট কাকে বলে, অরবিটাল কাকে বলে, অরবিট ও অরবিটাল এর পার্থক্য

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

অরবিট কি

পরমাণুতে নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ইলেকট্রন আবর্তনের জন্য কতগুলো নির্দিষ্ট শক্তি বিশিষ্ট কক্ষপথ রয়েছে। এদের প্রধান শক্তিস্তর বা শেল বলে। এই প্রধান শক্তি স্তরই অরবিট নামে পরিচিত।

অরবিট কাকে বলে

বোর পরমাণু মডেল অনুযায়ী নিউক্লিয়াসের চারিদিকে যে বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেকট্রন পরিভ্রমণ করে তাকে অরবিট (Orbit) বলা হয়। এটি একটি দ্বিমাত্রিক ধারণা। বিভিন্ন অরবিটের শক্তি ভিন্ন ভিন্ন হয়। কোনো অরবিটে সর্বোচ্চ 2n সংখ্যক ইলেকট্রন অবস্থান করে । 

অরবিটাল কি

নিউক্লিয়াসের চারদিকে যে নির্দিষ্ট ত্রিমাত্রিক স্থানে কোন নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে ইলেকট্রনের অবস্থানের সম্ভাবনা বেশি থাকে তাকে অরবিটাল বলে। অর্থাৎ নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ইলেকট্রনের আবর্তনের সর্বাধিক সম্ভাব্য অঞ্চলকে অরবিটাল বলে।

অরবিটাল কাকে বলে

নিউক্লিয়াসের চারদিকে যে ত্রিমাত্রিক স্থানে উচ্চ ইলেকট্রন ঘনত্ব বিশিষ্ট অঞ্চলে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তাকে অরবিটাল (Orbital) বলে । ইলেকট্রনের তরঙ্গের বিস্তারকে মেঘ রুপে বিবেচনা করে অরবিটালের ধারণা আনা হয়েছে । ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব যে অংশে সর্বোচ্চ হবে ঐ ত্রিমাত্রিক অঞ্চলকে অরবিটাল (Orbital) বলে। কোনো উপশক্তিস্তরকে অক্ষসহ প্রকাশ করা হলে তা প্রকৃতপক্ষে অরবিটাল নির্দেশ করে।

বিভিন্ন প্রকার অরবিটালের আকৃতি

s অরবিটাল (s Orbital)

এটি সুষম গোলাকৃতির। এর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস অবস্থিত। সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা �=0l=0 হলে s উপশক্তিস্তর হয়।  এক্ষেত্রে, m=0 হওয়ায় অর্থাৎ একটি মান হওয়ায় এর একটি মাত্র সমবিন্যাস বা ত্রিমাত্রিক বিন্যাস সম্ভব হয়। অর্থাৎ x, y, z অক্ষ বরাবর ইলেকট্রন ঘনত্ব সমানভাবে বিস্তৃত থাকে। প্রধান শক্তিস্তরের মান বৃদ্ধি পেলে s অরবিটালের আকৃতি বড় হবে।

1s , 2s. 3s অরবিটালগুলোর ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব একইভাবে বিস্তৃত নয় । নিউক্লিয়াসের নিকট 1s অরবিটালে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি । 2s অরবিটাল নিউক্লিয়াস থেকে কিছুটা দূরে থাকে। 1s ও 2s এর যে মধ্যবর্তী স্থানে ইলেকট্রন ঘনত্ব প্রায় শূন্য তাকে node বলে। 1s এর মধ্যে কোনো node নেই। 2s এর মধ্যে একটি এবং 3s এর মধ্যে দুটি node আছে। ns অরবিটালে node এর সংখ্যা হল (n-1)

p অরবিটাল (p Orbital)

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান 1 =1 হলে p উপশক্তিস্তর হয়। এক্ষেত্রে, m = -1, 0, +1 অর্থাৎ তিনটি মান হওয়ায় এর তিন প্রকার বিন্যাস সম্ভব। অর্থাৎ তিনটি মান হওয়ায় নিউক্লিয়াসের বিপরীত দিকে দুটি অংশে p অরবিটালের ইলেকট্রন ঘনত্ব সর্বাধিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর ফলে তিনটি p অরবিটাল সমশক্তিসম্পন্ন ডাম্বেল আকারের হয়।

ডাম্বেলের দুটি অংশ যে বিন্দুতে মিলিত হয় যেখানে নিউক্লিয়াস অবস্থান করে। প্রতিটি ডাম্বেলের 2টি করে লোব থাকে যেখানে ইলেকট্রন ঘনত্ব সর্বোচ্চ পরিমাণে থাকে। এছাড়া এতে একটি কল্পিত তল থাকে যেখানে p অরবিটালের ইলেকট্রন থাকার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। একে নোডাল তল বলে । যেমন : px​ অরবিটালের নোডাল তল হল yz, এর x অক্ষ বরাবর ইলেকট্রন ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।

অরবিট ও অরবিটাল এর পার্থক্য

একই উপশক্তিস্তরের অরবিটালগুলো সমশক্তিসম্পন্ন হতে পারে। তবে চৌম্বকক্ষেত্র প্রয়ােগের মাধ্যমে এদের মধ্যে শক্তির। পার্থক্য তৈরি করা যায়। যেকোনো অরবিটালে সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।

এছাড়া ইলেকট্রনের আবর্তনের ফলে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, যার আকর্ষণের প্রভাবে ২টি ইলেকট্রন তাদের মধ্যকার বিকর্ষণ প্রভাবকে অতিক্রম করে একসাথে অবস্থান করতে পারে।

১। অরবিট নিউক্লিয়াসের চারিদিকে সামতলিকভাবে অথবা দ্বি-মাত্রিকভাবে অবস্থান করে। এর ইলেকট্রন-ধারণ সংখ্যা 2n2 , যেখানে n = কক্ষপথের ক্রমিক সংখ্যা। নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক এনার্জি এবং ইলেকট্রনের ঋণাত্মক এনার্জির পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে সচল ইলেকট্রনের কৌণিক ভরবেগ আবর্তনকালে সর্বদা একই থাকে, ফলে কক্ষপথের সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, অরবিটাল হল পরমাণুর অন্তঃস্থ এমন একটি অনির্দিষ্ট স্থান বা অঞ্চল যেখানে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশী। হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা সূত্র থেকে আমরা বুঝতে পারি যে একটি নির্দিষ্ট মুহূর্তে ইলেকট্রনের গতিবেগ ও অবস্থান একসঙ্গে বলা সম্ভব নয়, তাই এমন একটি অনির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করা হয়, যেখানে কোন এক মুহূর্তে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশী, আর তাকেই অরবিটাল বলা হয়। অরবিটাল বাস্তবে পরমাণুর মধ্যে, তথা নিউক্লিয়াসের চারদিকের ত্রিমাত্রিক স্থানকে নির্দেশ করে।

২। প্রধান শক্তিস্বর বা প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যাই অরবিট। অন্যদিকে উপস্তরের সম্ভাব্য অঞ্চলটাই অরবিটাল ।

৩। অরবিটকে K,L,M,N,O ইত্যাদি দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অন্যদিকে অরবিটালকে S, Px, PY ,PZ ইত্যাদি দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

৪। একটি অরবিটে সর্বাধিক 2n2 ইলেকট্রন থাকতে পারে। অন্যদিকে একটি অরবিটালে সর্বাধিক 2টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।

৫। অরবিট হলো নির্দিষ্ট কক্ষপথ যাকে কেন্দ্র করে ইলেক্ট্রন ঘুরে। অন্যদিকে অরবিটাল হলো নিউক্লিয়াসের চারদিকের এমন একটি স্থান যেখানে ইলেক্ট্রনের আধিক্য বেশি।

2d অরবিটাল সম্ভব নয় কেন

2d-অরবিটালের অস্তিত্ব নেই কারণ প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা 2-এর জন্য, আজিমুথাল কোয়ান্টাম সংখ্যার মান হল 0 (s) এবং 1 (p)। Explanation: একটি পারমাণবিক অরবিটাল এমন একটি ফাংশন যা পারমাণবিক তত্ত্ব এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্স উভয়ের পরিপ্রেক্ষিতে একটি পরমাণুতে একটি ইলেক্ট্রনের অবস্থান এবং তরঙ্গের মতো আচরণকে বর্ণনা করে।

3f অরবিটাল সম্ভব নয় কেন

3f অরবিটাল অসম্ভব। কারণ 3f  অরবিটালের ক্ষেত্রে প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যার মান n = 3 n = 3 এর জন্য সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান l = 0, 1, 2 হবে। কিন্তু আমরা জানি, সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা 0, 1, 2 এর জন্য s, p ও d অরবিটাল সম্ভব। তাই 3f অসম্ভব।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | অরবিট

Q1. অরবিটাল সংকরণ কি

Ans – একটি পরমাণুর যোজ্যতা স্তরের বিভিন্ন ধরনের অরবিটাল পরস্পরের সাথে মিশ্রিত হয়ে প্রায় তুল্য অরবিটাল সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে অরবিটালসমূহের সংকরণ বলা হয় এবং এভাবে সৃষ্ট অরবিটালসমূহকে সংকর অরবিটাল বলা হয়।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।