রামকৃষ্ণ | Ramkrishna Paramhans

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

রামকৃষ্ণ পরমহংস, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের জীবনী, ঠাকুর রামকৃষ্ণ

প্রখ্যাত বাঙালি যোগসাধক।

রামকৃষ্ণ দেবের জন্মস্থান কোথায়

১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমার কামারপুকুর গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

রামকৃষ্ণের পিতা, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাবার নাম কি, রামকৃষ্ণ দেবের মায়ের নাম কি, রামকৃষ্ণের মায়ের নাম

পিতার নাম ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায় এবং মাতা নাম চিন্তামণি দেবীর। তিনি ছিলেন পিতামাতার চতুর্থ ও শেষ সন্তান।

রামকৃষ্ণের ছেলেবেলার নাম ছিল গদাধর চট্টোপাধ্যায়। গদাধরের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশি দূর পর্যন্ত না হলেও বিভিন্ন উপায়ে তিনি বেদান্ত ও পুরাণ-শাস্ত্রী বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন। এর পাশাপাশি তিনি সঙ্গীত ও যাত্রাভিনয়ে পারদর্শিতা অর্জন করেছিলেন।

১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে দাদা রামকুমারকে পৌরহিত্য কার্যে সহায়তার জন্য কলকাতায় আসেন। এরপর তিনি রাণী রাসমণির অনুগ্রহ লাভ করেন। উল্লেখ্য ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে জমিদার মথুরামোহন বিশ্বাসের পত্নী রাণী রাসমণি দক্ষিণেশ্বরে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত কালীবাড়িতে রামকুমার পুরোহিতের দায়িত্ব পান। এই সময় রামকৃষ্ণ ও তাঁর ভাগনেয় হৃদয়রাম তাঁর সহকারী ছিলেন। ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে রামকুমারের মৃত্যু হলে গদাধর ঐ মন্দিরের পুরোহিত হিসেবে নিযুক্ত হন। গদাধর মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত কালীর কাছে নিজেকে সমর্পণ করেন। তিনি তন্ত্র-মন্ত্র আর নিয়ম-অনুশাসনের ঊর্ধে গিয়ে মাতৃভাবে কালীর পূজা করতে থাকেন। তিনি প্রচলিত প্রথা ভেঙে কালীর নৈবেদ্য নিজে খেতেন এবং মাকেও খাইয়ে দিতেন। কথিত আছে একদিন মন্দিরে বসে তিনি সংকল্প করলেন যে, কালীর দর্শন না পেলে আত্মহত্যা করবেন। অনেক ডাকার পরেও কালী তাঁকে দর্শন না দিলে মন্দিরে রাখা এক খড়গ দিয়ে নিজেই নিজের গলায় কোপ বসাতে যান। এই সময় কালী তাঁকে দর্শন দেন।

সংসারে উদাসিনতার কারণে তাঁর মা চিন্তামণিদেবী গদাধরকে বিবাহ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। বিবাহের কথা শুনে গদাধর নিজেই পাত্রীর সন্ধান দিয়েছিলেন। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর কথামত কামারপুকুরের তিন মাইল উত্তরে অবস্থিত জয়রামবাটী গ্রামের পঞ্চমবর্ষীয়া সারদা মুখোপাধ্যায়ের সাথে তাঁর বিবাহ সম্পন্ন হয়। সাধারণ গৃহস্থের মত গদাধরের সংসার-ধর্ম হয় নি। কথিত আছে বিবাহের পরেও তাঁর ব্রহ্মচর্য অক্ষুন্ন ছিল। সারদাদেবীও ভক্তদের কাছে জগজ্জননী রূপে পূজিতা হয়ে থাকেন।

১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দে গদাধর ভৈরবী নামক এক তন্ত্রসিদ্ধা ও শাস্ত্রজ্ঞা যোগিনীর নিকট তান্ত্রিক দীক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি ভৈরবী প্রদর্শিত পথে ৬৪ প্রকার তন্ত্র-সাধনায় সিদ্ধি লাভ করেন। তিনি তন্ত্রোক্ত বামাচারী হয়ে তিনি পঞ্চ ম-কারের সাধনা করেন। তবে তিনি পঞ্চ ম-কারের মদ্য ও মৈথুন বর্জন করেছিলেন। তিনি ভৈরব মতেও সাধনা করেছিলেন। ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তোতাপুরি নামক এক বৈদিক নাগা-সন্ন্যাসীর নিকট সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। সন্ন্যাস গ্রহণের পর তাঁর নাম হয় রামকৃষ্ণ। সাধনার দ্বারা তিনি পরমহংস (নির্লোভ ও নির্বিকার যোগী) হয়েছিলেন বলে তাঁর নাম হয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব।

হিন্দুধর্ম ছাড়াও তিনি অন্যান্য ধর্ম মতানুসারে সাধনা করেছিলেন। কথিত আছে ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে খ্রিষ্টীয় মতে সাধনা করেন। ১৮৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইসলামী সুফি মতে সাধনা করে সিদ্ধি লাভ করেন।

তিনি বেদ-বেদান্তের দুর্বোধ্য মতবাদগুলো সহজ করে গল্প-উপমার মাধ্যমে ভক্তদের বোঝাতেন। তিনি বলতেন- যেই কালী সেই কৃষ্ণ অর্থাৎ তিনি কালী ও কৃষ্ণতে ভেদ করতেন না। সকল ধরমের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তিনি প্রচার করেছিলেন ‘যত মত তত পথ’।

রামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যুর কারণ

১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ক্লার্জিম্যান’স থ্রোট রোগে আক্রান্ত হন, যা পরবর্তীতে গলার ক্যান্সারে পরিণত হয়। মৃত্যুর পূর্বে তিনি কল্পতরু রূপে ভক্তের মনোষ্কামনা পূর্ণ করেন। ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই আগষ্ট তিনি দেহত্যাগ করেন। রামকৃষ্ণদেবের ত্যাগী শিষ্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী প্রজ্ঞানন্দ, স্বামী ব্রহ্মানন্দ (রাখালচন্দ্র ঘোষ), স্বামী সারদানন্দ (শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী), স্বামী অভেদানন্দ (কালীপ্রসাদ চন্দ্র), স্বামী রামকৃষ্ণানন্দ (শশীভূষণ চক্রবর্তী), স্বামী শিবানন্দ (তারকানাথ ঘোষাল) প্রমুখ।

রামকৃষ্ণ জন্মতিথি, রামকৃষ্ণ দেবের জন্মতিথি, রামকৃষ্ণ দেবের জন্মদিন

শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৩ সাল অর্থাৎ পরাধীন ভারতে তাঁর জন্ম।

ফাল্গুন অথবা মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিকে রামকৃষ্ণের আবির্ভাব দিবস হিসেবে ধরা হয়। পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তাঁর জন্ম হয়। পিতৃদত্ত নাম গদাধর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর আধ্যাত্মিকতার জন্য জনমনে নিজের স্বতন্ত্র পরিচিতি গড়ে তুলতে পেরেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। পাঞ্জাবের সাধু তোতাপুরী ছিলেন তাঁর বৈদিক গুরু। এই গুরুদেবই গদাধরকে পরমহংসদেব উপাধি দিয়েছিলেন।

রামকৃষ্ণের বাণী, রামকৃষ্ণ কথামৃত বাণী, শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাণী, শ্রীরামকৃষ্ণের বাণী, রামকৃষ্ণ কথামৃত, ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাণী

শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের বাণী শ্রবণে ও চয়নে মানুষের মনে যে আধ্যাত্মিক চেতনা জন্মায় ;যে শুভবুদ্ধি জাগ্রত হয় তা মানুষের অন্তর্দৃষ্টি ও জাগরণ করতে সাহায্য করে । বিশ্ব শান্তির জন্য এবং মানবতার কল্যাণ হেতু তাঁর এই বাণীর কোনো তুলনা নেই।

  • যদি আপনি বাইরে দেখে চলেনতাহলে আপনি কিছুই জানবেন নাআপনি কোথায় ; নিজেরভিতরে দেখুন।
  • যদি আপনি বাইরে দেখে চলেনতাহলে আপনি কিছুই জানবেন নাআপনি কোথায় ; নিজেরভিতরে দেখুন।
  • অভিজ্ঞতা একটি কঠিন শিক্ষকসে প্রথমে পরীক্ষা নেয় এবংপরে পাঠ দেয়
  • টাকা মাটি, মাটি টাকা।
  • জীবনের বিশ্লেষণ করা ছেড়েদাও, এটা জীবনকে আরাে জটিলকরে দেবে।
  • যদি আপনি কর্ম করেন, তাহলেনিজের কর্মের প্রতি ভক্তির ভাবথাকা অতি আবশ্যক ।তখন সেইকর্ম একমাত্র সার্থক হতে পারে ।
  • যখন ফুল ফোটে তখন মৌমাছিরাআপনা থেকেই চলে আসে ; ঠিকতেমনই, যখনই আমরা প্রসিদ্ধহয়ে যাই তখন সমস্ত মানুষ নিজেথেকেই আমাদের গুনগান করতেশুরু করে দেয় ।
  • যত মত তত পথ।
  • যেইভাবে ধুলােপুর্ণ আয়নার উপরসূর্যের আলাের প্রতিবিম্ব পড়েনা,ঠিক সেইভাবেই মলিন মনে ঈশ্বরেরপ্রকাশের প্রতিবিম্বও পড়া সম্ভবনয় ।
  • ভগবান সর্বত্র আছেন এবংপ্রত্যেক কণায় আছেন | কিন্তু তিনিএকটি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে অধিক থাকেন ।তাই এইজন্যই ভগবানরুপী মানুষের সেবাকরাই ভগবানের আসল সেবা ।
  • সফলতা অন্যের দ্বারা ঠিককরে দেওয়া উপায় মাত্র কিন্তুসন্তুষ্টি সম্পূর্ণ নিজের দ্বারা ঠিককরে দেওয়া উপায় মাত্র
  • যদি আপনি কর্ম করেন, তাহলেনিজের কর্মের প্রতি ভক্তির ভাবথাকা অতি আবশ্যক । তখন সেইকর্ম একমাত্র সার্থক হতে পারে
  • আমার ধর্ম ঠিক আর অপরের ধর্ম ভুল এ মত ভালো না বাবা, সবাই ভিন্ন ভিন্ন রাস্তা দিয়ে এক জনের কাছেই তো যাবে তাই যে নামেই তাকে ডাকো না কেন তাকে মন প্রাণ দিয়ে ভালোবাসো
  • তোমার ধর্ম আমার ধর্ম বলে লড়াই করে কী লাভ? যখন তোমার আমার সবার গন্তব্য সেই এক জনেরই কাছে।
  • লজ্জা ঘৃণা ভয় তিন থাকতে নয়
  • জীবনে একটু করে হলেও সাধু, সৎ সঙ্গ কর তবেই ঠিক পথে চলতে পারবে, এক বার যদি ভুল পথে চলে যাও তবে ফিরে আসা বড়ই কঠিন গো

রামকৃষ্ণ সারদা মা, রামকৃষ্ণ সারদা

কামারপুকুরে গুজব রটে যায়, দক্ষিণেশ্বরে অতিরিক্ত সাধনার শ্রমে শ্রীরামকৃষ্ণ পাগল হয়ে গেছেন। মা ও মধ্যমাগ্রজ রামেশ্বর তার বিবাহদানের চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। তারা ভেবেছিলেন, বিবাহের পর সাংসারিক দায়-দায়িত্বের ভার কাঁধে চাপলে আধ্যাত্ম সাধনার মোহ তার কেটে যাবে – তিনি আবার স্বাভাবিক জীবনের ছন্দে ফিরে আসবেন। শ্রীরামকৃষ্ণ বিবাহে আপত্তি তো করলেনই না, বরং বলে দিলেন কামারপুকুরের তিন মাইল উত্তর-পশ্চিমে জয়রামবাটী গ্রামের রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের গৃহে কন্যার সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে। ১৮৫৯ সালে পঞ্চমবর্ষীয়া বালিকা সারদার সঙ্গে তার শাস্ত্রমতে বিবাহ সম্পন্ন হয়। শ্রীরামকৃষ্ণের বয়স তখন তেইশ। বয়সের এই পার্থক্য উনিশ শতকীয় গ্রামীণ বঙ্গসমাজে কোনও অপ্রচলিত দৃষ্টান্ত ছিল না। যাই হোক, ১৮৬০ সালের ডিসেম্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা দেবীকে ছেড়ে কলকাতায় ফিরে আসেন। ১৮৬৭ সালের মে মাসের আগে তাদের আর সাক্ষাৎ হয়নি।

সেকালের প্রথা অনুযায়ী সতেরো-আঠারো বছর বয়স হলে সারদা দেবী স্বামীগৃহে যাত্রা করলেন। স্বামী পাগল হয়ে গেছেন – এইরূপ একটি গুজব শুনে তিনি অত্যন্ত দুঃখিত ছিলেন। আবার এও শুনেছিলেন, তার স্বামী একজন বিশিষ্ট সাধকে পরিণত হয়েছেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ এই সময় ষোড়শী পূজার আয়োজন করেন। এই পূজায় তিনি সারদা দেবীকে দিব্য মাতৃকাজ্ঞানে পূজা নিবেদন করেছিলেন। তাকে দেবী কালীর পীঠে বসিয়ে পুষ্প ও ধূপদানে তার পূজা সম্পাদন করেন শ্রীরামকৃষ্ণ। শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, তিনি যে নারীমাত্রেই জগজ্জননীর রূপ দর্শন করেন, তার নিজের স্ত্রীও তার ব্যতিক্রম নয়। এমনকি তিনি রূপপোজীবিনী বারবণিতাদেরও মাতৃসম্বোধন করতেন। দাম্পত্যজীবনে সারদা দেবীর মধ্যে মাতৃজ্ঞান করায় তাদের বিবাহ অসাধারণত্বে উন্নীত হয়।

সারদা দেবীর স্মৃতিচারণা থেকে জানা যায়, শ্রীরামকৃষ্ণ কোনও দিন তাকে ‘তুই’ সম্বোধন করেননি। কখনও রূঢ়বাক্য প্রয়োগ বা তিরস্কারও করেননি।

সারদা দেবীকেই শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম অনুগামী মনে করা হয়। তার শিষ্য ও ভক্তসমাজে সারদা দেবী ‘শ্রীমা’ বা ‘মাতাঠাকুরানী’ নামে পরিচিতা হন। শ্রীরামকৃষ্ণের তিরোভাবের পর তিনিই রামকৃষ্ণ আন্দোলনের কেন্দ্রস্বরূপা হয়েছিলেন।

রামকৃষ্ণ সারদা মায়ের ছবি

রামকৃষ্ণ সারদা মায়ের ছবি

ঠাকুর রামকৃষ্ণের সাধক জীবনের প্রধান সহায়ক কে ছিলেন

১৮৭৯ থেকে ১৮৮৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ে নিজের প্রধান শিষ্যদের সঙ্গে রামকৃষ্ণ পরমহংসের সাক্ষাৎ হয়। এঁদের অনেকেই ছিলেন উচ্চ শিক্ষিত। কেউ আবার ছিলেন একান্তই নাস্তিক; নিছক কৌতূহলের বশেই তারা শ্রীরামকৃষ্ণকে দেখতে এসেছিলেন। কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণের উপদেশ এঁদের সকলের মধ্যেই গভীর প্রভাব বিস্তার করে এবং এঁরা সকলেও তার অনুরাগী ভক্তে পরিণত হন। প্রবল যুক্তিবাদী সুরেন্দ্রনাথ মিত্র তাকে দেখতে গিয়েছিলেন, তার ‘কান মলে’ দেওয়ার জন্য; কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি শ্রীরামকৃষ্ণের একনিষ্ঠ ভক্তে পরিণত হন। তার অননুকরণীয় ধর্মপ্রচারের ভঙ্গি অনেক সংশয়বাদী ব্যক্তির মনেও দৃঢ় প্রত্যয়ের উন্মেষ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিল।

তার প্রধান শিষ্যদের মধ্যে উল্লেখনীয়:

  • গৃহস্থ শিষ্য – মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত, গিরিশচন্দ্র ঘোষ, অক্ষয়কুমার সেন প্রমুখ;
  • ত্যাগী বা সন্ন্যাসী শিষ্য – নরেন্দ্রনাথ দত্ত (স্বামী বিবেকানন্দ), রাখালচন্দ্র ঘোষ (স্বামী ব্রহ্মানন্দ), কালীপ্রসাদ চন্দ্র (স্বামী অভেদানন্দ), তারকনাথ ঘোষাল (স্বামী শিবানন্দ), শশীভূষণ চক্রবর্তী (স্বামী রামকৃষ্ণানন্দ), শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী (স্বামী সারদানন্দ) প্রমুখ।
  • এছাড়া নারী ভক্তদের একটি ছোটো অংশও তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিল। এঁদের মধ্যে গৌরী মা ও যোগীন মা উল্লেখযোগ্য। এঁদের কেউ কেউ মন্ত্রদীক্ষার মাধ্যমে তার থেকে সন্ন্যাস গ্রহণ করেছিলেন। তবে তপস্যার বদলে শহরে অবস্থান করে নারীসমাজের সেবাতেই তাদের উৎসাহিত করতেন শ্রীরামকৃষ্ণ।

রামকৃষ্ণ ও নরেন্দ্রনাথের সাক্ষাৎকারের বর্ণনা দাও, রামকৃষ্ণ নরেন্দ্রনাথ এর সাক্ষাৎকার এর বর্ণনা দাও, রামকৃষ্ণ নরেন্দ্রনাথের সাক্ষাৎকারের বর্ণনা দাও

স্বামীজি ও শ্রীরামকৃষ্ণের সাক্ষাৎ

তাঁর সঙ্গে তুলনায় হয়তো আসতে পারে কোনও বিশাল বটবৃক্ষের ছায়া। যে ছায়া গ্রীষ্মের তপ্ত দিনে শীতল মুগ্ধতা দেয় পথিককে। ঠিক তেমনই স্বামী বিবেকানন্দের জীবন-দর্শন রণক্লান্ত সমাজের বুকে এনে দেয় স্বস্তির মুগ্ধতা। ধর্ম, সম্প্রদায়, জাতির ভেদের উর্ধ্বে উঠে কেবল মনুষ্যত্ব নিয়ে এগিয়ে চলা এই সন্ন্যাসীর জন্মদিবসে পালিত হয় জাতীয় যুব দিবস। আর এই বছরেও তা সাড়ম্বরে পালিত হতে চলেছে। এই পূণ্যাত্মার জন্মদিবসের প্রাক্কালে একবার আলোকপাত করা যাক স্বামীজির আধ্যাত্ম জীবনের দিকে। যে জীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে রয়ে গিয়েছেন শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব।

ঘনিষ্ঠদের কাছে একবার স্বামীজি বর্ণনা করেছিলেন ১৮৮১ সালের সেই যুগান্তকারী ঘটনা। যে সময়ে শ্রীরামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে আসেন বিবেকানন্দ। বাংলার বুকে তখন নবজাগরণের এক দৃপ্ত মশাল জ্বলতে শুরু করেছে সবে। সাহিত্য, বিজ্ঞান, রাজনীতির সঙ্গে বাঙালির আধ্যাত্ম চেতনাতেও তখন যুক্তিবাদ জায়গা করে নিচ্ছে ধীরে ধীরে। আর সেই সময় শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎ স্বামীজির।

স্বামীজির চোখে কেমন ছিল শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম দর্শন

স্বামীজি জানিয়েছিলেন, শ্রীরামকৃষ্ণকে প্রথম দর্শনে অত্যন্ত সাধারণ একজন মানুষ বলে মনে হয়েছিল তাঁর। এত সরল ভাষায় সেদিন রামকৃষ্ণ কথা বলতে শুরু করেছিলেন যে স্বামীজি তাঁর কাছে কৌতূহল নিয়ে পৌঁছে যান। স্বামীজি জিজ্ঞাসা করেছিলেন ,’মহাশয় আপনি কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন?’ এরপরই স্বামীজি এক গুরুতর প্রশ্ন করেন। চিনি বলেন,’ আপনি কি ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে পারেন?’

এরপর কোন জবাব দিয়েছেন শ্রীরামকৃষ্ণ?

শ্রীরামকৃষ্ণ স্বামীজির উত্তরে ইতিবাচক জবাব দিয়ে বলেছিলেন সেদিন, ‘ আমি তোমাকে যেমন আমার সম্মুখে দেখিতেছি, তাঁহাকেও ঠিক সেই রূপে দেখি। বরং আরও স্পষ্টতর আরও উজ্জ্বল রূপে দেখি।’ শ্রী রামকৃষ্ণের এই বক্তব্যই পাল্টে দেয় স্বামীদির আধ্যাত্ম চেতনা। পাল্টে যায় স্বামীজির জীবন দর্শন। বাংলা যখন এক অগ্নিগর্ভ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াইয়ে সেই সময় এগিয়ে চলেছে, তখন দেশকে উদ্বুদ্ধ করার আরও একটি অধ্যায় উঠে আসতে শুরু করল স্বামীজির হাত ধরে। যে স্বামীজি মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ নির্বিষেশে খুঁজে পেতে লাগলেন ঈশ্বরকে।

গুরু-শিষ্যের সম্পর্ক

প্রাথমিকভাবে কিছুতেই শ্রীরামকৃষ্ণের সমস্ত কথায় সায় দিতে পারছিলেন না যুবক নরেন্দ্রনাথ দত্ত। কিন্তু পরমহংসদেবের ব্যক্তিত্বের ব্যাপ্তি তিনি অস্বীকারও করতে পারেননি। বার বার এক অদ্ভূত নেশায় তিনি ছুটে যেতেন শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে। বহুবার রামকৃষ্ণকে যে পরীক্ষাও করতে গিয়েছিলেন স্বামীজি , সেকথা জানাতে ভোলেননি এই বীর সন্ন্যাসী।

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন, স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন, রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠাতা কে, রামকৃষ্ণ মিশন কবে প্রতিষ্ঠিত হয়, রামকৃষ্ণ মিশন কে কবে প্রতিষ্ঠা করেন

১লা মে, ১৮৯৭ সাল।

এটি প্রতিষ্ঠা করেন, “রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব” এর অন্যতম শিষ্য “স্বামী বিবেকানন্দ”।

১৮৯৭ সালে ১ মে স্বামী বিবেকানন্দ বাগবাজারে বলরাম বসুর বাড়িতে ১৬ জন সদস্যদের নিয়ে সভা করেন। সেখানেই রামকৃষ্ণ মিশনের বীজ বপন হয়েছিল। ৫ মে সংঘের নামকরণ হয় রামকৃষ্ণ মিশন অ্যাসোসিয়েশন। ১৯০৯ সালে আইনি স্বীকৃতি ও সিলমোহর পায় রামকৃষ্ণ মঠ। ঠাকুরের আদর্শ ও ঈশ্বর-ভাবনা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন স্বামীজি। আজকের দিনটি তাই সামগ্রিক ভাবে ভারতের কাছে গৌরবের ও গর্বের।

রামকৃষ্ণ মিশন কোথায় অবস্থিত

রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান কার্যালয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতার নিকটবর্তী হাওড়া জেলায় বেলুর মঠে অবস্থিত। এই সংগঠন প্রাচীন হিন্দু দর্শন বেদান্তের অনুগামী। এটি সন্ন্যাসী সংগঠন রামকৃষ্ণ মঠ কর্তৃক অনুমোদিত।

এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে রাম কৃষ্ণ মিশন। ২০২১ সাল পর্যন্ত বিশ্বে জুড়ে রামকৃষ্ণ মিশন এবং রামকৃষ্ণ মঠের ২২১টি সেন্টার গড়ে উঠেছে।

রামকৃষ্ণ মিশনের সেন্টারের মধ্যে ১৬৭টি ভারতে, ১৫টি বাংলাদেশে, ১৪টি আমেরিকায়, ২টি করে ব্রাজিল, কানাডা, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং একটি করে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ফিজি, ফ্রান্স, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, জাপান, মালয়েশিয়া, মরিশাস, নেপাল, নেদারল্যান্ডস, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, সুইজারল্যান্ড, ইংল্যান্ড এবং জামবিয়াতে।

ভারতে ২১টি সাব-সেন্টার এবং দেশের বাইরে ২৩টি সাব-সেন্টার রয়েছে। পৃথিবী জুড়ে মোট ৭৪৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠের যেখানে দুই লক্ষের বেশি বিদ্যার্থী যুক্ত রয়েছে।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন কিসের জন্য, বিবৃতি স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন

ভারতীয় জাতির প্রাণে নবপ্রেরণার জোয়ার এনে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে ঈষ্বর জ্ঞানে মানব সেবার আদর্শ স্থাপনের জন্যই রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। ধর্ম, সেবা ও শিক্ষা এই তিনটি মূল কর্মসূচি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের যাত্রা শুরু।

এ মিশন ঊনবিংশ শতাব্দী থেকে বিংশ শতাব্দী প্রথম দিক পর্যন্ত সময়ে সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মানবসেবার মাহাত্ন্য ঘোষণা, শিক্ষার্থীর জন্য অন্ন-বস্ন্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা ও হিন্দুধর্ম প্রচার করা ছিল রামকৃষ্ণ মিশনের মূল কাজ। অন্যদিকে, বেলুড় মঠ হল রামকৃষ্ণ পরমহংসের প্রধান শিষ্য স্বামী বিবেকানন্দ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয়। রামকৃষ্ণ মন্দির রামকৃষ্ণ ভাব-আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। ভারতীয় জাতির প্রাণে নবপ্রেরণার জোয়ার এনে জাতি-ধর্ম-নির্বিশেষে ঈষ্বর জ্ঞানে মানব সেবার আদর্শ স্থাপনের জন্যই রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। ধর্ম, সেবা ও শিক্ষা এই তিনটি মূল কর্মসূচি নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশনের যাত্রা শুরু। রামকৃষ্ণ মিশনের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ। হিন্দু ধর্ম ও ঐতিহ্যের আশ্রয়ে স্থাপিত হলেও এক মধ্যে মিলন ঘটেছে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য। ঈশ্বরে বিশ্বাস ও জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে মানবসেবা ও মানুষ তৈরির আদর্শ নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এই মিশনের উদ্দেশ্যগুলি ছিল। রামকৃষ্ণ মিশনে বেদান্তের আদর্শ অনুসরণ ও মূর্তিপুজো স্বীকৃত। মিশনের বৈশিষ্ট্যগুলি হল:-

  • কোনও স্বতন্ত্র ধর্মীয় মতবাদ গড়ে তোলেনি। এই প্রতিষ্ঠান মঠ ব্যবস্থার মাধ্যমে সর্বধর্মসমন্বয়ের আদর্শে বিশ্বাসী।
  • এই প্রতিষ্ঠান সকল ধর্মীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সমাজসেবার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ায়। ত্রাণকার্য, গ্রামোন্নয়ন, আদিবাসী কল্যাণ, বুনিয়াদি ও উচ্চশিক্ষা এবং সংস্কৃতির প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে।
  • এই প্রতিষ্ঠানের কোনও গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সকল গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে সমগ্র মানবজাতির সেবায় নিয়োজিত রয়েছে এই মিশন।

শ্রীরামকৃষ্ণ কিভাবে সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন করেছিলেন, শ্রীরামকৃষ্ণ কিভাবে সর্বধর্ম সমন্বয় সাধন করেছিল

উনিশ শতকে যখন বাংলার হিন্দু ধর্ম নানা কুসংস্কার ও গোঁড়ামির বেড়াজালে আবদ্ধ তখন আধ্যাত্বিক পুরুষ শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সর্বধর্ম সমন্বয় অর্থাৎ বিভিন্ন ধর্মের সম্প্রতি আদর্শ প্রচার করে হিন্দু সম্প্রদায়কে এক নতুন আশার আলো দেখান।

বাংলায় খ্রিস্টান মিশনারি, ব্রাহ্মসমাজ ও নব্য বঙ্গের সদস্যরা হিন্দুধর্মকে নানাভাবে তীব্র আক্রমণ করতে থাকলে প্রাচীন হিন্দু ধর্ম কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়ে। আর এই সময়ে হিন্দু ধর্মের সংস্কারের উদ্দেশ্য আবির্ভূত হন শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব।

তথাকথিত আধুনিক শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক পাণ্ডিত্য, ঐশ্বর্য – এই সবকিছুই শ্রীরামকৃষ্ণের ছিল না। সাধারণ পোশাক পড়ে, সহজ সরল ভাষা ও উপভাষার সাহায্যে তিনি ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করেন। তিনি বলেন, সমস্ত মানুষের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান। তাই জীবে শুধু দয়া নয়, বরং তিনি “শিব জ্ঞানে জীব সেবার” কথা বলেছেন।

শ্রী রামকৃষ্ণদেব “যত মত তত পথ” এই আদর্শ প্রচার করে বলেন যে সাধনার সমস্ত পথ সত্য ও সঠিক। বৈষ্ণব, শাক্ত, হিন্দু, মুসলিম, খৃষ্টান প্রভৃতি সমস্ত ধর্মের সাধনার মধ্য দিয়েই ঈশ্বরকে লাভ করা সম্ভব। কিন্তু তাই বলে সব সাধনাকে একসঙ্গে চর্চার প্রয়োজন নেই।

শ্রী রামকৃষ্ণদেব বলেন, শুধুমাত্র ধর্মীয় আড়ম্বর, শাস্ত্র চর্চা, যাগ-যজ্ঞ, আচার-অনুষ্ঠান প্রভৃতির মাধ্যমে ঈশ্বর কে পাওয়া যায় না বরং ঈশ্বরকে পাওয়া যায় কেবলমাত্র আন্তরিক ভক্তির দ্বারা।

শ্রীরামকৃষ্ণের সর্বধর্ম সমন্বয় নীতির মূল কথা কি

শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের ধর্মীয় দেশের মূল কথা হলো “সর্বধর্ম সমন্বয়”। সকল ধর্মের সুসম্পর্কের বা সর্বধর্ম সমন্বয়ের আদর্শ প্রচার করে তিনি বলেন – “সব মতকে একেকটি পথ বলে জানবে। আমার ঠিক পথ আর সকলের মিথ্যা – এরূপ বোধ যেন না হয়। বিদ্বেষভাব না হয়। প্রথমে একটা ধর্ম আশ্রয় করতে হয়। ঈশ্বর লাভ হলে সেই ব্যক্তি সব ধর্ম পথ দিয়ে আনাগোনা করতে পারে।”

ঈশ্বর এক বই দুই নাই। তাঁকে ভিন্ন ভিন্ন নাম দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন লোকে ডাকে। কেউ বলে গড, কেউ বলে আল্লাহ, কেউ বলে কৃষ্ণ, কেউ বলে শিব, কেউ বলে ব্রহ্ম। যেমন পুকুরে জল আছে – একঘাটের লোক বলছে জল, আর-একঘাটের লোক বলছে ওয়াটার, আর-একঘাটের লোক বলছে পানি – হিন্দু বলছে জল, খ্রীষ্টান বলছে ওয়াটার, মুসলমান বলছে পানি, – কিন্তু বস্তু এক। মত-পথ। এক-একটি ধর্মের মত এক-একটি পথ, – ঈশ্বরের দিকে লয়ে যায়। যেমন নদী নানাদিক থেকে এসে সাগরসঙ্গমে মিলিত হয়।!

রামকৃষ্ণ ছবি, রামকৃষ্ণ দেবের ছবি, রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের ছবি, রামকৃষ্ণ ছবি, রামকৃষ্ণ দেবের ছবি

শ্রীরামকৃষ্ণের শরীর থেকে নির্গত হয়

সুরেন্দ্রনাথ ছিলেন কলকাতার সিমুলিয়া অঞ্চলের বাসিন্দা । তিনি ছিলেন একজন সাধারণ গৃহস্থ ও শ্রীরামকৃষ্ণের অন্যতম ভক্তশিষ্য ।

সুরেন্দ্রনাথ একজন গৃহী হয়েও শ্রীরামকৃষ্ণের একজন গুনমগ্ধ ভক্ত ছিলেন । তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ কে দেবতার ন্যায় পূজা করতেন । তাঁর একান্ত বাধ্য ছিলেন । শ্রীরামকৃষ্ণকে নিজের বাড়িতে আনতে পেরে তিনি ধন্য । যে সন্ধায় শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর গৃহে উপস্থিত ছিলেন , সে ছিল এক মধুময় সন্ধ্যা । গুরুদেবের অপূর্ব মহিমা সম্পর্কে তিনি বলেন যে যেখানেই তিনি থাকেন সেই স্থানটি তৎক্ষণাৎ দেব মন্দিরে পরিণত হয় , তার শরীর থেকে নিরন্তর জ্যোতিধারা নির্গত হয় , তাঁর বাক্য থেকে সুধা প্রবাহিত ও তাঁর হাসি থেকে সূর্যকিরণ রাশি নিঃসরিত হয় ।

রামকৃষ্ণ প্রণাম মন্ত্র, রামকৃষ্ণ শরণম, রামকৃষ্ণ স্তোত্র, রামকৃষ্ণ স্তোত্র দশকম, শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের প্রনাম মন্ত্র

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ দেবের প্রণাম মন্ত্র –


“ওঁ স্থাপকায় চ ধর্মস্য সর্বধর্মস্বরুপিণে।
অবতারবরিষ্ঠায় রামকৃষ্ণায় তে নমঃ।।”

এটি রচিত করেন স্বামীজী

রামকৃষ্ণ কথামৃত pdf, রামকৃষ্ণ কথামৃত বাণী pdf

শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত (বাংলা)

এটি ঐশ্বরিক রেখার একটি সংগ্রহ যা শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ বলেছেন। এই বইটির একটি হার্ডকভার বাইন্ডিং রয়েছে এবং এটি বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে।

শ্রী রামকৃষ্ণ দেবের উপর সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন (FAQ’s)

Q1. রামকৃষ্ণ দেবের জন্ম তারিখ কবে?

উত্তর: – ১৮ ই ফেব্রুয়ারি ১৮৩৬ সালে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

Q2. রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের আসল নাম কি?

উত্তর: – রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের আসল নাম ছিল গদাধর চট্টোপাধ্যায় (গদাই)।

Q3. রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাবার নাম কি?

উত্তর: – রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের বাবার নাম ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়।

Q4. রামকৃষ্ণ দেবের মায়ের নাম কি?

উত্তর: – রামকৃষ্ণ দেবের মায়ের নাম চন্দ্রমণি দেবী।

Q5. রামকৃষ্ণ দেবের জন্মস্থান কোথায়?

উত্তর: – পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগ মহকুমায় অবস্থিত কামারপুকুর গ্রামে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

Q6. রামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যু দিবস কবে?

উত্তর: – ১৮৮৬ সালের ১৬ ই আগস্ট রামকৃষ্ণ দেব মারা গিয়ে ছিলেন।

Q7. রামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যুর কারণ কি ছিল?

উত্তর: – গলার ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে রামকৃষ্ণ দেব মারা গিয়ে ছিলেন।

রামকৃষ্ণ | Ramkrishna Paramhans

রামকৃষ্ণ দেবের মৃত্যু দিবস কবে?
উত্তর: – ১৮৮৬ সালের ১৬ ই আগস্ট রামকৃষ্ণ দেব মারা গিয়ে ছিলেন।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।