দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

WBBSE Class 10 | দশম শ্রেণির ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়

সূচিপত্র

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময়ের মধ্যে তিন ধরনের গতিবিধি বা প্রবাহ ব্যাখ্যা কর। প্রতিটি ধরনের প্রবাহের একটি উদাহরণ খুঁজুন যা ভারত এবং ভারতীয়দের জড়িত, এটির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখুন।

সমাধান:

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিনিময়ের মধ্যে তিন ধরনের গতিবিধি বা প্রবাহ হল বাণিজ্য প্রবাহ, মানব পুঁজি প্রবাহ এবং মূলধন প্রবাহ বা বিনিয়োগ। এগুলোকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে—কৃষি পণ্যের বাণিজ্য, শ্রমের স্থানান্তর এবং অন্যান্য দেশ থেকে আর্থিক ঋণ।

বাণিজ্যের প্রবাহ (পণ্যের বাণিজ্য, যেমন কাপড় বা গম):

প্রাক-আধুনিক বিশ্বে ভারত ছিল বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল, এবং ইউরোপ থেকে সোনা ও রূপার বিনিময়ে টেক্সটাইল ও মশলা রপ্তানি করত।

ভারতে উৎপাদিত সূক্ষ্ম তুলা ইউরোপে রপ্তানি করা হতো। শিল্পায়নের সাথে সাথে, ব্রিটিশ তুলা উত্পাদন প্রসারিত হতে শুরু করে এবং শিল্পপতিরা তুলা আমদানি সীমিত করতে এবং স্থানীয় শিল্পকে রক্ষা করার জন্য সরকারকে চাপ দেয়। কাপড় আমদানিতে যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, তার ফলে ভারতীয় সূক্ষ্ম তুলার প্রবাহ কমতে শুরু করেছে।

শ্রমের প্রবাহ (কর্মসংস্থানের সন্ধানে মানুষের অভিবাসন):

শ্রমের ক্ষেত্রে, ঊনবিংশ শতাব্দীতে প্রচুর পরিমাণে বিদেশে খনি, বাগান এবং কারখানার জন্য চুক্তিবদ্ধ শ্রম সরবরাহ করা হয়েছিল। এটি ছিল ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক আধিপত্যের একটি হাতিয়ার। চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের এমন পরিচিতির অধীনে নিয়োগ করা হয়েছিল যারা তাদের নিয়োগকর্তার প্ল্যান্টেশনে পাঁচ বছর কাজ করার পরে ভারতে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। জীবনযাত্রার অবস্থা ছিল কঠোর, এবং শ্রমিকদের সামান্য অধিকার ছিল বলে আইনের বা তা থেকে সামান্যই সুরক্ষা ছিল।

মূলধনের চলাচল (বিনিয়োগ):

সর্বশেষ বিশ্বযুদ্ধে অর্থায়নের জন্য ব্রিটেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে উদার ঋণ নিয়েছিল। যেহেতু ভারত একটি ইংরেজ উপনিবেশ ছিল, তাই এই ঋণ ঋণের প্রভাব ভারতেও অনুভূত হয়েছিল। বিশ্ববাজারে খাদ্য ও অন্যান্য ফসলের জন্য মূলধনের প্রয়োজন। বড় আবাদ ব্যাঙ্ক এবং বাজার থেকে এটি ধার করতে পারে।

চিপকো আন্দোলনের নেতৃত্ব কে দিয়েছিলেন

সুন্দর লাল বাহুগুনা চিপকো আন্দোলনের এই নেতা ছিলেন।

চিপকো আন্দোলনের ভাবনাটি তার স্ত্রীর ছিল এবং সুন্দরলাল এই আন্দোলনটি বাস্তবায়িত করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশকে প্রথমে চিপকো আন্দোলনের সদস্য হিসাবে এবং পরে ১৯৮০-এর দশক থেকে শুরু করে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তেহরি বাঁধ নির্মাণের বিরুদ্ধে, বছরের পর বছর ধরে তিনি হিমালয় অঞ্চলে বন সংরক্ষণের জন্য লড়াই করে গেছেন। তিনি ভারতের গোড়ার দিকের অন্যতম পরিবেশবিদ, এবং পরে তিনি এবং চিপকো আন্দোলনের সাথে যুক্ত লোকেরা পরিবেশগত সমস্যাগুলি যেমন বড় বড় বাঁধ তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলন করে।

জার্মানির ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের অবদান আলোচনা করো, ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের ভূমিকা আলোচনা করো, ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের অবদান, জার্মানির ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের অবদান, জার্মানিতে সংস্কারবাদী আন্দোলনে মার্টিন লুথারের অবদান, ইউরোপের ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের ভূমিকা, জার্মানির ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের ভূমিকা আলোচনা করো, ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের ভূমিকা, ইউরোপের ধর্ম সংস্কার আন্দোলনে মার্টিন লুথারের অবদান

পােপতন্ত্রের বিরােধিতা

  • ইনডালজেন্সের বিরােধিতা: ১৫১৭ খ্রিস্টাব্দে যাজক টেটজেল সেন্ট পিটার্স চার্চ সংস্কারের অজুহাতে জার্মানির স্যাক্সনিতে যান। সেখানে তিনি পাপমুক্তির ছাড়পত্র হিসেবে ইনডালজেন্স বা মার্জনাপত্র বিক্রি করতে শুরু করেন। মার্টিন লুখার এই মার্জনাপত্র বিক্রয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
  • লুথারের ৯৫ থিসিস: লুথার ইনডালজেন্স বা মার্জনাপত্র বিক্রয়ের বিরুদ্ধে উইটেনবার্গের কাসেল চার্চের দরজায় তার লিখিত প্রতিবাদপত্র ‘পঁচানব্বই থিসিস’ আটকে দেন। তার এই লিখিত প্রতিবাদের মধ্যে দিয়েই কলুষিত পােপতন্ত্রের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম জেহাদ ঘােষিত হয়।

খ্রিস্টধর্মের আদর্শের পুনরুজ্জীবনে প্রচেষ্টা

মাটিন লুথার খ্রিস্টধর্মাদর্শের পুনরুজ্জীবন ঘটান। লুথার বলেন যে, ভগবান হলেন সর্বশক্তিমান এবং তার ইচ্ছাতেই পৃথিবীতে সবকিছু ঘটে চলেছে। লুথারের মতে, সমস্ত মানুষের ভাগ্যই পূর্বনির্ধারিত এবং যে-কোনাে মানুষ মঙ্গলময় ঈশ্বরের করুণা‌ বা Gratia লাভের অধিকারী।

অপ্রয়ােজনীয় আচার-অনুষ্ঠানের বিরােধিতা

লুখার ক্যাথলিকধর্মের অধিকাংশ আচার-অনুষ্ঠানকেই অপ্রয়ােজনীয় বলে মনে করতেন। খ্রিস্টের শেষ নৈশভােজ-এর স্মরণে খাদ্যরূপে রুটি ও মদ গ্রহণ রীতি (The Eucharist), খ্রিস্টধর্মের আনুষ্ঠানিক দীক্ষাগ্রহণ (Baptism), দোষী ব্যক্তিকে পাদরি কর্তৃক শান্তি প্রদান (Penance) এবং অর্থের বিনিময়ে পাপমুক্তি (Indulgence) ক্রয় প্রভৃতি অপ্রয়ােজনীয় আচার-অনুষ্ঠানের বিরােধিতা করেন লুথার।

প্রতিবাদী খ্রিস্টধর্মের প্রতিষ্ঠা:

লুথারের ধর্মসংস্কার আন্দোলনের ফলে খ্রিস্টানগণ দুটি সম্প্রদায়ে ভাগ হয়ে যান। পােপতন্ত্রের অনুগামী বা সমর্থকগণ ক্যাথলিক (Catholic) এবং পােপ বিরুদ্ধকারী তথা লুথারের সমর্থনকারীগণ প্রােটেস্ট্যান্ট (Protestant) বা প্রতিবাদী নামে পরিচিতি পান।

রাষ্ট্রশক্তির সুদৃঢ়করণ:

লুখার বলেন যে, সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অন্যায়ের প্রতিকার করার দায়িত্ব শাসকের। তাই পােপ বা যাজক নয়, শাসক ও তার কর্মচারীরাই হলেন পৃথিবীতে ঈশ্বরের প্রতিনিধি। লুথারের এই মত ইউরােপে রাজতন্ত্র ও জাতীয় রাষ্ট্রগুলিকে শক্তিশালী করে।

পােপের কাছে প্রতিবাদ:

খ্রিস্টধর্মের এবং চার্চের বিভিন্ন অনাচারের বিরুদ্ধে লুথার বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু প্রতিবাদী বক্তৃতা করেন এবং রােমে গিয়ে পােপের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। যাবতীয় ধর্মীয় অনাচার ও দুর্নীতি দূর করার জন্য তিনি পােপকে অনুরােধ জানান। কিন্তু পােপ তার আবেদনে সাড়া দেননি।

বাইবেলের অনুবাদে উৎসাহদান:

লুথারবাদীরা মনে করতেন যে, জ্ঞান ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য শাস্ত্র পড়া প্রয়ােজন| এই লক্ষ্যেই নিজ নিজ ভাষায় বাইবেলের অনুবাদ প্রয়োজন। লুথার এই বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে বাইবেলের অনুবাদে উৎসাহ জোগান।

লিখিত প্রতিবাদ:

লুথার অজস্র গ্রন্থ ও পুস্তিকা রচনার মধ্যে দিয়ে চার্চতন্ত্রের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি তাঁর বন্ডেজ অব দ্য উইল’ প্রবন্ধে লেখেন, “মানুষ ঈশ্বরের ইচ্ছার দাস, শুধু কাজের দ্বারা সে তার নিজের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারে না” “বাবিলনিয়ান ক্যাপটিভিটি’ গ্রন্থে লুথার বলেন যে, জার্মান জাতির চার্চ পােপতন্ত্রের অধীনতা থেকে মুক্ত হতে চায়। রেজোলিউশান গ্রন্থে লুথার পােপের ক্ষমতাকে অস্বীকার করেন।

ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রসার:

মার্টিন লুথার সর্বপ্রথম জার্মানিতে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের সূচনা ঘটান। পরবর্তীকালে এই ধর্মসংস্কার আন্দোলনের রেশ ছড়িয়ে পড়ে মধ্য, পূর্ব এবং পশ্চিম ইউরােপের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে।

মূল্যায়ন

একজন দুঃসাহসী ধর্মসংস্কারক হিসেবে মার্টিন লুথার চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তিনিই প্রথম ষােড়শ শতকে পােপতন্ত্র এবং চার্চতন্ত্রের যাবতীয় অনাচার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হন। গেরহার্ড রিটার তাই বলেছেন যে, “এই ধর্মবিপ্লবের সাফল্যের জন্য লুথারের প্রচারশক্তি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়।”

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

ওয়েস্ট বেঙ্গল সারাল ইতিহাস (হিস্ট্রি) সহায়িকা ক্লাস ১০ ইন বাঙ্গালী ভার্সন

ওয়েস্ট বেঙ্গল সারাল ইতিহাস (হিস্ট্রি) সহায়িকা ক্লাস ১০ ইন বাঙ্গালী ভার্সন

FAQ | ধর্ম সংস্কার আন্দোলন

Q1. ইউরোপের ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের কারণ

Ans – ১) সম্পত্তি বৃদ্ধি খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু ছিলেন পোপ। …
(২) বৈষম্যমূলক কর
(৩) পোপ ও তার অনুচরদের ব্যাভিচার
(৪) রাজনৈতিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ
(৫) রাষ্ট্র ও পোপতন্ত্রের সংঘর্ষ
(৬) ধর্মের অপব্যাখ্যা
(৭) মার্জনাপত্র বিক্রি
(৮) পাপের মাত্রা বৃদ্ধি


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।