সংখ্যা কাকে বলে, সংখ্যা কত প্রকার ও কি কি, সংখ্যা প্রতীক কয়টি, সংখ্যা পদ্ধতির বেজ কি, পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি কি

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

সংখ্যা কাকে বলে

সংখ্যার ধারণা অতি প্রাচীন। খ্রিষ্টপূর্ব ৬০০০ সাল থেকে বিভিন্ন সংখ্যা ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ বিভিন্ন ধরণের প্রতীক, বিভিন্ন চিত্র ইত্যাদির মাধ্যমে সংখ্যাগত মান পরস্পরকে বোঝাতো।

সভ্যতা বিকাশের ধারাবাহিকতায় দৈনন্দিন কাজে এর ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। কালক্রমে গণিতশাস্ত্রের বিকাশের সাথে সাথে সংখ্যা আবিষ্কৃত হয় এবং গণনা কাজকে সহজতর করে তুলে। এভাবে মানুষের প্রয়োজনের তাগিদে গণনার কাজ করার জন্য স্বাভাবিক সংখ্যার সৃষ্টি হয়।

স্বাভাবিক সংখ্যার সীমাবদ্ধতা থেকে ভগ্ন সংখ্যার সৃষ্টি। বিভিন্ন হিসাব করার জন্য ধনাত্মক সংখ্যা, ঋণাত্মক সংখ্যা, শূন্য, মৌলিক সংখ্যা, যৌগিক সংখ্যা মূলদ সংখ্যা, অমূলদ সংখ্যারও আবির্ভাব ঘটে।

খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠদশ শতাব্দির মাঝামাঝি দ্বিঘাত সমীকরণের সমাধান হিসেবে গণিতে জটিল সংখ্যার আবির্ভাব ঘটে।

সংখ্যা কাকে বলে

দশটি স্বল্পমান অঙ্ক, দশমিক বিন্দু, বর্গ চিহ্ন, বর্গমূল চিহ্ন এবং অন্যান্য গণিতিক চিহ্নগুলির সহায্যে যে সমষ্টি তৈরি হয়, তাকেই সংখ্যা বলে।

অথবা সংখ্যা বলতে বুঝায় পরিমাপযোগ্য বস্তুর পরিমাণ বা মান নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত চিহ্ন বা প্রতীক। সংখ্যার কিছু উদাহরণ:

1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10 ইত্যাদি।

সংখ্যা দিয়ে আমরা পরিমাপ করতে পারি – যেমন দৈর্ঘ্য, পরিমাণ, ওজন, সময়, টাকা ইত্যাদি। সংখ্যাই হলো গণিতের ভিত্তি। তাই সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা খুবই জরুরি।

সংখ্যা কত প্রকার ও কি কি

সংখ্যাকে তার কাজ ও প্রয়োজনের ভিত্তিতে নানা ভাগে ভাগ করা যায়। নীচে বিভিন্ন প্রকার সংখ্যা সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো –

স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে

গণনা করার জন্য সাধারণত 1, 2, 3, 4, ইত্যাদি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সুতরাং, আমাদের গণনার কাজে ব্যবহৃত সকল পূর্ণসংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা (Natural Number) বলা হয়।

তাই স্বাভাবিক সংখ্যাকে গণনাকারী সংখ্যাও ( Counting Number) বলে।

স্বাভাবিক সংখ্যা 1 থেকে শুরু হয়ে অসীম পর্যন্ত বিস্তৃত। অর্থাৎ, এর কোনো শেষ নেই। স্বাভাবিক সংখ্যার যোগফল ও গুণফল একটি স্বাভবিক সংখ্যা হয় কিন্তু বিয়োগফল ও ভাগফল স্বাভবিক সংখ্যা নাও হতে পারে।

সকল স্বাভাবিক সংখ্যার সেটকে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ, N= (1, 2, 3… … … .. )

স্বাভাবিক সংখ্যাকে আমরা দুইভাগে ভাগ করতে পারি।

যেমন – 

  1. মৌলিক সংখ্যা এবং 
  2. যৌগিক সংখ্যা।

মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে

যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যা কেবলমাত্র ঐ সংখ্যা এবং 1 দ্বারা বিভাজ্য তাদেরকে মৌলিক সংখ্যা (Prime Number) বলা হয়।

2 ব্যতীত সকল মৌলিক সংখ্যা বিজোড়। সকল মৌলিক সংখ্যার সেটকে P দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ P ={2, 3, 5, 7, 11,…)

যৌগিক সংখ্যা কাকে বলে

যে সকল স্বাভাবিক সংখ্যা শুধুমাত্র ঐ সংখ্যা এবং 1 ব্যতীত অন্য সংখ্যা দ্বারাও বিভাজ্য তাদেরকে যৌগিক সংখ্যা (Composite Number) বলে।

যেমন: 4.6.8.9.10.. যৌগিক সংখ্যাকে একাধিক মৌলিক উৎপাদকে বিশ্লেষণ করা যায়। 1 সকল সংখ্যার উৎপাদক।

আরো পড়তে: যৌগিক সংখ্যা কাকে বলে

সংখ্যাকে আমাদের ব্যবহারের সুবিধার জন্য স্বাভাবিক সংখ্যাকে-

  1. জোড় সংখ্যা এবং 
  2. বিজোড় সংখ্যা 

এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

যুগ্ম বা জোড় সংখ্যা কাকে বলে

যে সকল সমগ্র ও স্বাভাবিক সংখ্যা 2 দ্বারা বিভাজ্য তাদের যুগ্ম বা জোড় সংখ্যা (Even Numbers) বলে।

যেমন – 0, 2, 4, 6, …………… প্রভৃতি হল যুগ্ম বা জোড় সংখ্যা।

অযুগ্ম বা বিজোড় সংখ্যা কাকে বলে

যে সকল সমগ্র ও স্বাভাবিক সংখ্যা 2 দ্বারা বিভাজ্য নয় তাদের অযুগ্ম বা বিজোড় সংখ্যা (Odd Numbers) বলে।

যেমন- 1, 3, 5, 7, 9, প্রভৃতি হল অযুগ্ম বা বিজোড় সংখ্যা।

এছাড়াও আরও বিভিন্ন প্রকার সংখ্যা রয়েছে। এগুলো সম্পর্কে নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো!

সমগ্র সংখ্যা ( Whole Numbers) :

স্বাভাবিক সংখ্যা ও শূন্য (0) এর সংকলনকে বলা হয় সমগ্র সংখ্যা।

সমগ্র সংখ্যার সেট বা সংকলনকে W দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। … W= (0, 1, 2, 3, 4, 5,…….সমগ্র সংখ্যা (W)

পরবর্তী সংখ্যা (Successor of a whole number)

সমগ্র সংখ্যার সাথে 1 যোগ করলে পরবর্তী সমগ্ৰসংখ্যা পাওয়া যায়। যেযন-

শূন্য এর পরবর্তী সংখ্যা হল 0+1 = 1

1 এর পরবর্তী সংখ্যা হল 1 + 1 = 2

সমর্থসংখ্যা “a” এর পরবর্তী সমগ্রসংখ্যা হল (a + 1)

পূর্ববর্তী সংখ্যা কাকে বলে

শূন্য বাদে সকল সমগ্রসংখ্যা থেকে 1 বিয়োগ করলে তার পূর্ববর্তী সমগ্ৰসংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন –

1 এর পূর্ববর্তী সংখ্যা হল 1- 1=0

2 এর পূর্ববর্তী সংখ্যা হল 2 – 1 = 1

সমগ্রসংখ্যা a (≠ 0) এর পূর্ববর্তী সমগ্রসংখ্যা হল ( a – 1 )

সুতরাং শূন্য বাদে প্রত্যেক সমগ্রসংখ্যার পূর্ববর্তী সংখ্যা রয়েছে।

পূর্ণ সংখ্যা কাকে বলে

সকল ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা, ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা ও শূন্য মিলে যে সংখ্যার সমাহার তাকে পূর্ণ সংখ্যার সেট (Set of Integers) বলা হয়।

শূন্য (0) পূর্ণ সংখ্যা, এটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক কোনোটিই নয়। সংখ্যা রেখায় পূর্ণ সংখ্যা -∞ থেকে 0 এবং 0 হতে +∞ পর্যন্ত বিস্তৃত। পূর্ণ সংখ্যার সেটকে Z অথবা I দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা কাকে বলে

শূন্য (0) সহ সকল স্বাভাবিক সংখ্যা যা ভগ্নাংশ ভিন্ন তাদেরকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলা হয়।

সকল অঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার সেটকে W দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

অর্থাৎ W= 0,1,2,3,………

ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা কাকে বলে

শূন্য (0) থেকে ছোট সকল পূর্ণসংখ্যাকে ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা বলা হয়।

ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যার বর্গমূল করলে জটিল সংখ্যা পাওয়া যায়। যেমন: -1,-3,-100 ইত্যাদি ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা।

ধনাত্মক সংখ্যা কাকে বলে

শূন্য (0) অপেক্ষা বড় সংখ্যাগুলোকে ধনাত্মক সংখ্যা বলা হয়। ভগ্নাংশও ধনাত্মক সংখ্যা হতে পারবে।

যেমন: 0.214, ½, 0.652, 1, 1.2, 4, 5.59……….. ইত্যাদি।

ঋণাত্মক সংখ্যা কাকে বলে

শূন্য (0) অপেক্ষা ছোট সংখ্যাগুলোকে ঋণাত্মক সংখ্যা বলা হয়।

যেমন: – 0.5, – 1, – 3, – 4.5………….ইত্যাদি ।

সম্পূর্ণ সংখ্যা কাকে বলে

যে সমস্ত সংখ্যার অণনীয়কগুলোর সমষ্টি সেই সংখ্যাটির দ্বিগুণের সমান হয় তাকে সম্পূর্ণ সংখ্যা বলে।

উদাহরণ :

i) 6 এর গুণনীয়ক হচ্ছে 1, 2, 3 এবং 6

.·. 1+2+3+6=12=2×6

ii) 28 এর গুণনীয়কগুলো হলো 1, 2, 4, 7, 14 এবং 28

.·. 1+2+4+7+14+28= 56 = 2 x 28

সুতরাং 6 এবং 28 সংখ্যা দুটি হল সম্পূর্ণ সংখ্যা।

রোমান সংখ্যা কাকে বলে

প্রাচীন গণনা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি পদ্ধতি হচ্ছে রোমান পদ্ধতি। এই পদ্ধতি আজও বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হয়।

ঘড়িতে আমরা রোমান সংখ্যার ব্যবহার প্রায়ই দেখে থাকি। বিদ্যালয়ের শ্রেণির সংখ্যা বোঝাতেও রোমান সংখ্যা ব্যবহার করা হয়।

রোমান সংখ্যাগুলো হচ্ছে I, II, III, IV, V, VI, VII, VIII, IX, X উপরোক্ত চিহ্নগুলোকে 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9 এবং 10 সংখ্যাগুলোকে বোঝায়।

কাল্পনিক সংখ্য কাকে বলে

ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূলকে কাল্পনিক সংখ্যা বলা হয়। কাল্পনিক সংখ্যার একক í দ্বারা সূচিত হয়।

ধনাত্মক বা ঋণাত্মক সংখ্যার বর্ণ সব সময় ধনাত্মক হয়। কিন্তু কোন ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল কখনও বাস্তব সংখ্যা হতে পারে না। কতিপয় দ্বিঘাত সমীকরণ সমাধান করালে কাল্পনিক সংখ্যার উদ্ভব হয়।

কাল্পনিক সংখ্যা দুই শ্রেণির। যথা- (ক) বিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা (খ) অবিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা

বিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা (Pure imaginary numbers):

ib আকারের সংখ্যাকে বিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা বলা হয়।

যেমন- ±i, ±3i, ±5i ইত্যাদি আকারের সংখ্যা বিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা।

অবিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা (Impure Imaginary Numbers)

a + ib আকারের সংখ্যাকে অবিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা বলা হয়।

যেমন- 1±i, -3±5i ইত্যাদি আকারের সংখ্যাকে অবিশুদ্ধ কাল্পনিক সংখ্যা বলা হয়।

জটিল সংখ্যা কাকে বলে

a এবং b দুইটি বাস্তব সংখ্যা হলে a±ib আকারের প্রকাশিত সংখ্যাকে জটিলসংখ্যা বলা হয়।

জটিলসংখ্যা হলো বাস্তব ও কাল্পনিক সংখ্যার সমষ্টি। এখানে a ও b বাস্তব সংখ্যা এবং i কাল্পনিক সংখ্যা।

বাস্তব সংখ্যা কাকে বলে

ধনাত্মক সংখ্যা, ঋনাত্মক সংখ্যা এবং শূন্য নিয়ে একত্রে বাস্তব সংখ্যা গঠিত হয়। যেমন- 5.1.0.8, 3, 3 . . . . . . . . . ইত্যাদি বাস্তব সংখ্যা।

বাস্তব সংখ্যার সেটকে আবার অন্যভাবেও প্রকাশ করা যায় যেমন, সকল মূলদ এবং অমূলদ সংখ্যা নিয়ে গঠিত সেটকে বাস্তব সংখ্যার সেট (Set of real number) বলা হয়।

১৮৭১ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান গণিতবিদ জর্জ ক্যান্টর (Georg Cantor, 1845-1918) বাস্তব সংখ্যা নির্ণয়ে কৃতিত্ব অর্জন করেন।

তিনি প্রমাণ করেন যে, বাস্তব সংখ্যা স্বাভাবিক সংখ্যা হতে অনেক বেশি। তিনি দেখান যে, মূলদ ও অমূলদ সংখ্যা নিয়ে বাস্তব সংখ্যাগঠিত। প্রত্যেক মূলদ বা অমূলদ সংখ্যাই এক একটি বাস্তব সংখ্যা। বাস্তব সংখ্যার সেট R দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

মূলদ সংখ্যা কাকে বলে

যে সকল সংখ্যাকে দুইটি পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসেবে প্রকাশ করা যায় তাদেরকে মূলদ সংখ্যা বলা হয়।

অর্থাৎ, যে সকল সংখ্যাকে p/q আকারে প্রকাশ করা যায়, যেখানে p ও q পূর্ণসংখ্যা বা (p.q € Z) এবং q ≠ 0,q ধনাত্মক বা ঋণাত্মক পূর্ণসংখ্যা হতে পারবে, তাকে মূলদ সংখ্যা বলা হয়। মূলদ সংখ্যার সেট Q দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

অমূলদ সংখ্যা কাকে বলে

যে সংখ্যাকে দুইটি পূর্ণসংখ্যার অনুপাত হিসেবে প্রকাশ করা যায় না তাকে অমূলদ সংখ্যা বলে। অমূলদ সংখ্যার সেট Q’ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

উল্লেখ্য যে, অমূলদ সংখ্যাকে দশমিক ভগ্নাংশে প্রকাশ করলে তা সসীম দশমিক বা পৌনঃপুণিক কোনো আকারেই প্রকাশ করা যায় না।

অখন্ড সংখ্যা কাকে বলে

অখন্ড সংখ্যা বলতে পূর্ণ সংখ্যাকে বোঝায়। যেমন –

1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10 ইত্যাদি।

এখানে দশমিক বা ভাগ থাকে না। তাই এসবকে অখন্ড বা পূর্ণ সংখ্যা বলা হয়।

অখন্ড সংখ্যার কিছু উদাহরণ:

1, 53, 211, 999, 1234 ইত্যাদি

সংখ্যার বৈশিষ্ট্য

সংখ্যার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:

1. সংখ্যা হলো পরিমাপের একটি প্রতিনিধিত্ব। সংখ্যা দিয়ে আমরা বিভিন্ন জিনিসপত্র, দূরত্ব, ওজন, সময় ইত্যাদি পরিমাপ করি।

2. সংখ্যার মান স্থির থাকে। একবার যদি ১০ হয়, সেটা সবসময় ১০ থাকবে।

3. সংখ্যা অত্যন্ত সংক্ষিপ্তভাবে তথ্য প্রদান করে।

4. সংখ্যাকে ব্যবহার করে হিসাব-নিকাশ করা যায়। যেমন- যোগ, বিয়োগ, গুণফলন, ভাগফল ইত্যাদি।

5. সংখ্যা অত্যন্ত সুবিধাজনকভাবে তালিকাভুক্ত করা যায়।

6. সংখ্যাকে সাধারণ ও দশমিক সংখ্যা হিসেবে বিভক্ত করা যায়।

7. বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা রয়েছে যেমন প্রাকৃতিক, পূর্ণ, শূন্য, ঋণাত্মক ইত্যাদি।

এভাবে সংখ্যার অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা একে গণিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান করে তোলে।

সংখ্যার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা

সংখ্যার অত্যন্ত গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। সংখ্যার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক নিম্নরূপ:

১. পরিমাপ এবং হিসাব-নিকাশ:

সংখ্যা ব্যবহার করে আমরা বিভিন্ন জিনিসের পরিমাণ, দৈর্ঘ্য, ওজন, সময় ইত্যাদি পরিমাপ করি। সংখ্যার ব্যবহারে হিসাব-নিকাশও সহজতর হয়।

২. বৈজ্ঞানিক গণনা এবং প্রমাণ:

বিজ্ঞান, গণিত ও প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংখ্যা সঠিক ফলাফল পেতে গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও সংখ্যার ভিত্তিতে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ-নির্ধারণ করা হয়।

৩. সামাজিক জীবন ও অর্থনীতি:

সংখ্যার ব্যবহার থেকে জনসংখ্যা, মূল্যস্ফীতি হার, আয়-ব্যয়, লাভ-ক্ষতি ইত্যাদি সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়।

৪. দৈনন্দিন কাজে প্রয়োজনীয়তা:

সংখ্যা ছাড়া দৈনন্দিন জীবনের যে কোন কাজ করার কল্পনাও করা কঠিন। সংখ্যার প্রয়োজন আছে প্রত্যেকটি কাজে।

এভাবে দেখা যায়, সংখ্যা আমাদের জীবনের প্রতিটি দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সংখ্যা ছাড়া আধুনিক জীবন কল্পনাও করা সম্ভব নয়।

সংখ্যা প্রতীক কাকে বলে

সংখ্যা বা অঙ্ক লেখার জন্য যে প্রতীকগুলো ব্যবহার করা হয় তাই সংখ্যা প্রতীক। ০, ১, ২, ৩ ইত্যাদিকে সংখ্যা প্রতীক বা অঙ্ক প্রতীক বলে।

সংখ্যা প্রতীক কয়টি

সংখ্যা প্রতীক ১০টি। যথা : ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯।

সংখ্যা পদ্ধতি কাকে বলে

নির্দিষ্ট প্রতীক বা চিহ্ন দ্বারা কোনো সংখ্যা প্রকাশ করার পদ্ধতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে।

অথবা,

যে পদ্ধতিতে সংখ্যা গণনা করা হয় বা প্রকাশ করা হয়, তাকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে।

সংখ্যা পদ্ধতির বর্ণনা

সংখ্যা পদ্ধতির দুই প্রকার যথাঃ

ক) পজিশনাল ।

খ) নন- পজিশনাল ।

পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি কি

যে সংখ্যার পদ্ধতিতে মৌলিক চিহ্ন, বেস বা ভিত্তি এবং উহার স্থানীয় মান থাকে তাকে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে ।

পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি আবার চার (৪) ধরনেরঃ

১) বাইনারি= যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ এবং ১ দুটি ব্যবহার করা যায় তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলে । এর বেজ ২ ।

২) অকট্যাল = যে সংখ্যা পদ্ধতিতে (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭) ৮টি সংখ্যা ব্যবহার করা যায় তাকে অকট্যাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে । এর বেজ ৮।

৩) ডেসিমাল বা দশমিক = যে সংখ্যা পদ্ধতিতে (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯) ১০টি সংখ্যা ব্যবহার করা যায় তাকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি বলে ।এর বেজ ১০ ।

৪) হেক্সাডেসিমাল = যে সংখ্যা পদ্ধতিতে (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯,A,B,C,D,E,F) ১৬টি সংখ্যা ব্যবহার করা যায় তাকে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। এর বেজ ১৬ ।

নন- পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি

যে পদ্ধতিতে সংখ্যার মান ব্যবহিত চিহ্ন বা বেজ নাই তাকে নন-পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে ।

যেমনঃ হায়ারগ্লিফিক্স , মিসরীয় সংখ্যা ।

সংখ্যা পদ্ধতির বেজ কি

কোনো একটি সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্ন সমূহের সমষ্টিকে ঐ সংখ্যা পদ্ধতির বেজ (Base) বা ভিত্তি বলে।

যেমন- দশমিক সংখ্যাতে মোট মৌলিক চিহ্ন (০,১,২,৩,৪,৫,৬,৭,৮,৯) ১০টি। সুতরাং দশমিক সংখ্যা পদ্ধতির বেজ ১০।

তেমনিভাবে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে যেহেতু ০ এবং ১ এই দুইটি প্রতিক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় তাই এর বেজ হচ্ছে ২ ।

অকটাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত মোট ৮ টি প্রতিক বা চিহ্ন নিয়ে যাবতীয় গাণিতিক কর্মকান্ড সম্পাদন করা হয় বলে এর বেজ বা ভিত্তি হলো ৮।

হেক্সাডেসিম্যাল সংখ্যা পদ্ধতিতে মোট ১৬ টি প্রতিক বা চিহ্ন ব্যবহার করা হয় বলে এর বেজ হচ্ছে ১৬।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | সংখ্যা

Q1. প্রক্রিয়া প্রতীক বলতে কী বুঝায়

উত্তর : যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগকে বুঝায়।

Q2. প্রক্রিয়া প্রতীক কয়টি ও কী কী?

উত্তর : চারটি। যথা : +, -, , ।

Q3. সম্পর্ক প্রতীক বলতে কী বুঝায়?

উত্তর : যে প্রতীক দ্বারা একটি অঙ্ক বা সংখ্যার সঙ্গে অন্য একটি অঙ্ক বা সংখ্যার সম্পর্ক স্থাপন হয়।

Q4. সম্পর্ক প্রতীক কয়টি?

উত্তর : ৮টি।

Q5. বন্ধনী প্রতীক কাকে বলে?

উত্তর : একটি সংখ্যারাশিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করতে যে প্রতীক ব্যবহার করা হয়।

Q6. বন্ধনী প্রতীক কয়টি ও কী কী?

উত্তর : ৩টি। যথা : ( ), { }, [ ]।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।