- পর্বত কাকে বলে
- পর্বতের শ্রেনীবিভাগ, পর্বত কত প্রকার ও কি কি?
- পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে পার্থক্য
- হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি, হিমালয় পর্বত সৃষ্টির কারণ
- FAQ | পর্বত
পর্বত কাকে বলে
ভূ-পৃষ্ঠের অতি উচ্চ, সুবিস্তৃত এবং খাড়া ঢাল বিশিষ্ট শিলাস্তুপকে পর্বত বলে।
পর্বত সাধারণত ৬০০ মিটারের বেশি উচ্চতা সম্পন্ন হয়। তবে পর্বতের উচ্চতা সমুদ্র সমতল থেকে কয়েক হাজার মিটার পর্যন্ত হতে পারে। কোনো কোনো পর্বত বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে। যেমন- পূর্ব আফ্রিকার কিলিমানজারো।
আবার কিছু পর্বত ব্যাপক এলাকা জুড়ে অবস্থান করে। এ ধরনের পর্বত সাধারণত ঢেউয়ের ন্যায় ভাঁজ বিশিষ্ট। যেমন- হিমালয় পর্বত। পর্বত গঠনের প্রক্রিয়াকে ওরোজেনেসিস (Orogenesis) বলে। গ্রীক শব্দ Oro অর্থ পর্বত এবং Genesis অর্থ সৃষ্টি হওয়া।
পর্বতের শ্রেনীবিভাগ, পর্বত কত প্রকার ও কি কি?
পৃথিবীর প্রতিটি পর্বত দেখতে বাহ্যিকভাবে স্বতন্ত্র হলেও উৎপত্তিগত ও গঠন প্রকৃতির দিক দিয়ে এদের বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায়। উৎপত্তিগত বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে পর্বতকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা
১. ভঙ্গিল পর্বত
২. আগ্নেয় পর্বত
৩. স্তূপ পর্বত এবং
৪. ক্ষয়জাত পর্বত।
এগুলো সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হয়েছে –
ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে | Folded Mountain
পাললিক শিলাস্তর আনুভূমিক আলোড়ন বা মহাদেশীয় পর্বতের সংকোচনের ফলে কুঞ্চিত হয়ে ঢেউয়ের আকারে যে পর্বত সৃষ্টি হয় তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে।
চার ধরনের পর্বতের মধ্যে ভঙ্গিল পর্বত সর্বাধিক বিস্তৃত। অভিসারী প্লেট সীমানায় সংকোচনজনিত চাপে এ ধরনের পর্বত গঠিত হয় বলে এর শিলা কাঠামো ভাঁজ ও চ্যুতিযুক্ত। ভঙ্গিল পর্বত সাধারণত পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত।
ভঙ্গিল পর্বতের বৈশিষ্ট্য
- মহীখাত অঞ্চলে সঞ্চিত পাললিক শিলায় ভাঁজ পরে ভঙ্গিল পর্বতের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
- ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলে জীবাশ্মের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
- ভাঁজ পর্বত গুলি বহু দূর অবধি বিস্তৃত, দীর্ঘায়িত ও সূউচ্চ পর্বতচূড়া বিশিষ্ট অনেক গুলি পর্বতশৃঙ্খলের সমন্বয়ের গঠিত হয়ে থাকে। তবে ভঙ্গিল পর্বত গুলির দৈর্ঘ্য প্রস্থের থেকে অনেক বেশি হয়ে থাকে।
- ভূমিকম্প প্রবন – ভঙ্গিল পর্বত গুলির গঠন এখনো চলতে থাকায় এই অঞ্চল গুলি ভূমিকম্প প্রবন হয়ে থাকে।
- পৃথিবীর পর্বত গুলির মধ্যে নবীনতম হল ভঙ্গিল পর্বত।
- কিছু কিছু ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল অগ্ন্যুৎপাত সম্পন্ন হয়ে থাকে। যেমন – আন্দিজ, রকি পার্বত্য অঞ্চল।
- উচ্চতার ভিত্তিতে হিমালয় পৃথিবীর উচ্চতম পর্বত এবং দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে আন্দিজ পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতমালা।
আরও পড়ুন:- সমভূমি কাকে বলে, পৃথিবীর বৃহত্তম সমভূমির নাম কি
বিভিন্ন পর্যায়ে ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি
ভূ-বিজ্ঞানীগণ ভঙ্গিল পর্বত গঠনে কয়েকটি পর্যায় দেখিয়েছেন। যেমন-
প্রথম পর্যায়ে সমুদ্রখাতের উভয় দিক থেকে সংকোচনের ফলে নিম্নাংশ অবনমিত হয় বা নিচে নেমে যায়।
দ্বিতীয় পর্যায়ে সমুদ্রখাতের অবনমিত অংশে পলি জমা হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে পলির ভারে নিচের দিকে নেমে যায়। ফলে ভূ-অধঃভাজের সৃষ্টি হয়।
তৃতীয় পর্যায়ে অবনমিত খাতের তলদেশ রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয় এবং আগ্নেয়শিলা পলির ভিতরে প্রবেশ করে। এবং
চূড়ান্ত পর্যায়ে সংকোচন হ্রাস পায় এবং সম্পূর্ণ খাত উপরে উত্থিত হয়ে পর্বতমালা গঠন করে।
যেমন-এশিয়ার হিমালয়, দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ, উত্তর আমেরিকার রকি এবং ইউরোপের আল্পস পর্বতমালা।
ভঙ্গিল পর্বত ছবি
আগ্নেয় পর্বত কাকে বলে | Volcanic Mountain
ভূ-অভ্যন্তরস্থ ক্রিয়াকলাপের জন্য ম্যাগমা পাতা হিসাবে উদগিরিত হয়ে চারদিকে সঞ্চিত হয়। পরবর্তীতে জমে ঠাণ্ডা হয়ে যে শিলাস্তূপের সৃষ্টি করে তাকে আগ্নেয় পর্বত বলে।
লাভার প্রকৃতির ওপর আগ্নেয় পর্বতের বিস্তৃতি ও আকৃতি নির্ভর করে। কোনো কোনো আগ্নেয় পর্বত খাড়া ঢালবিশিষ্ট এবং স্বল্প স্থান জুড়ে থাকে। আবার স্বল্প ঢাল সম্পন্ন কিন্তু বিস্তৃত এলাকা জুড়েও এ পর্বত হতে পারে ।
আগ্নেয় পর্বতের বৈশিষ্ট্য
- আগ্নেয় পর্বতের আকৃতি অনেকটা শঙ্কু বা মোচার মতো হয়।
- ভূপৃষ্ঠের দূর্বল স্থানসমূহে আগ্নেয় পর্বত অধিক দেখা যায়।
- আগ্নেয় পর্বতের ঢাল খুব বেশি হয় না।
- আগ্নেয় পর্বত থেকে লাভা নির্গত হওয়া কে অগ্ন্যুৎপাত বলে।
আরও পড়ুন :- মালভূমি কাকে বলে, ভারতের উচ্চতম মালভূমির নাম কি
আগ্নেয় পর্বতের উৎপত্তি
কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভূ-আলোড়নের জন্য ভূ-ত্বকের দুর্বল অংশের ফাটলের মধ্য দিয়ে ভূ-গর্ভস্থ উত্তপ্ত লাভা, নানা প্রকার গ্যাস ও বাষ্প, ছাই, ধাতু ইত্যাদি প্রবল বেগে বেরিয়ে আসে। এই উত্তপ্ত লাভা ফাটলের চতুর্দিকে সঞ্চিত হতে হতে উঁচু পর্বতের সৃষ্টি করে।
যেমন- জাপানের ফুজিয়ামা, হাওয়াই দ্বীপের মওনালোয়া, ইতালির ভিসুভিয়াস, আফ্রিকার কিলিমানজারো ইত্যাদি।
স্তুপ পর্বত কাকে বলে | Block Mountain
পৃথিবীর অন্তর্জাত শক্তির ফলে সৃষ্ট টান বা প্রসারন এবং সংকোচন বা পার্শ্বচাপের ফলে ভূত্বকে যে ফাটল বা চ্যুতির সৃষ্টি হয় সেই ফাটল বা চ্যুতি বরাবর ভূত্বকের কোন একটি অংশ উপরে উঠে গিয়ে বা পার্শ্ববর্তী অংশ নিচে বসে গিয়ে যে পর্বতের সৃষ্টি হয়, তাকে স্তূপ পর্বত বলে। স্তূপ পর্বত গুলি হোর্স্ট পর্বত নামেও পরিচিত। তবে সব স্তূপ পর্বতই হোর্স্ট নয়। দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী কোন ভূখন্ড উল্লম্বভাবে উত্থিত হলে তাকে হোর্স্ট বলা হয়। আবার দুটি সমান্তরাল ফাটলের দুপাশের ভূমিরূপ অবনমিত হলে মাঝের অংশটি উঁচু হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে স্তূপ পর্বতের সৃষ্টি করে।
উদাহরণ – সারা পৃথিবীব্যাপী এই ধরনের স্তূপ পর্বতের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।ভারতের পশ্চিমঘাট পার্বত্য অঞ্চল ও আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের গ্রেট বেসিন অঞ্চল স্তূপ পর্বতের উদাহরন এবং ইউরোপের জার্মানির রাইন নদীর গ্রস্থ উপত্যকার পশ্চিমে অবস্থিত ব্ল্যাক ফরেস্ট পর্বত, ভারতের সাতপুরা, বিন্ধ্যপর্বত হোর্স্টের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
স্তূপ পর্বতের বৈশিষ্ট্য
- ভূত্বকের একটি বিশাল অংশের উত্থান বা অবনমনের ফলে এই ধরণের স্তূপ পর্বতের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
- দুটি হোর্স্ট বা স্তূপ পর্বতের মাঝে যে নিচু অংশ থাকে তাকে গ্রাবেন বা গ্রস্ত উপত্যকা বলা হয়। যেমন – পূর্ব আফ্রিকার গ্রস্ত উপত্যকা, জার্মানির রাইন নদীর গ্রস্ত উপত্যকা, ভারতের নর্মদা নদীর গ্রস্ত উপত্যকা প্রভৃতি।
- স্তূপ পর্বত এক দিকের ঢাল খুব খাড়া হয় ও অন্যদিকের ঢাল মৃদু প্রকৃতির হয়।
- স্তূপ পর্বতের বিস্তৃতি খুব সামান্য হয়ে থাকে।
- স্তূপ পর্বতের উপরিভাগ প্রায় সমতল হয়ে থাকে।
চ্যুতি স্তূপ পর্বত | Fault-block Mountain
ভূ-আলোড়নের ফলে শিলাস্তরের সংকোচন ও প্রসারণে ভূ-ত্বক অনেক সময় খাড়াভাবে ফেঁটে যায়। যে রেখা বরাবর ফাঁটল সৃষ্টি হয় তাকে চ্যুতি রেখা বলে।
দুটি ফাটলের মাঝের অংশ অনেক সময় উপরে ওঠে যায় বা নিচে বসে যায়। চ্যুতি বরাবর এই ধরনের পর্বতকে চ্যুতি-স্তুপ পর্বত বলে।
চ্যুতি স্তূপ বৈশিষ্ট্য
১. চ্যুতি-স্তূপ পর্বত সুউচ্চ নয়।
২. এদের চূড়াগুলো সাধারণত চ্যাপ্টা আকৃতির।
৩. এদের পার্শ্ববর্তী ঢাল খুবই খাড়া।
৪. এ পর্বত বেশি বিস্তৃত নয়।
চ্যুতি স্তূপ পর্বতের উৎপত্তি
তিন ধরনের পরিস্থিতিতে চাতি-স্তূপ পর্বত সৃষ্টি হতে পারে।
প্রথমত: ভূ-ত্বকের শিলাস্তরে টানজনিত চাপের কারণে ফাটলের সৃষ্টি হয়। এ ফাঁটল বরাবর একটি শিলাস্তর পাশের স্তরের চেয়ে ওপরের দিকে উঠে গেলে বা নিচের দিকে নেমে গেলে অথবা পাশে সরে গিয়ে চ্যুতি স্তূপ পর্বতের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা, নিউ মেক্সিকো, ক্যালিফোর্নিয়ায় এ ধরনের স্তূপ পর্বত দেখা যায়।
দ্বিতীয়ত : ভূ-ত্বকের কোনো অংশ ভূ-অভ্যন্তরস্থ কারণে ওপরের দিকে উঠতে থাকলে পার্শ্ববর্তী শিলায় যে টানের সৃষ্টি হয়। এর ফলে ফাঁটল দেখা যায়। এই ফাঁটল বরাবর দু’পাশের শিলাস্তর নিচের দিকে নেমে যায় এবং মাঝের ঊর্ধ্বগামী শিলাস্তূপকে চ্যুতি স্তূপ পর্বতের মত দেখায়। যেমন- পূর্ব আফ্রিকার প্রস্ত উপত্যকার পার্শ্ববর্তী উঁচু পার্বত্য স্তূপই এ ধরনের চ্যুতি-স্তূপ পর্বত।
তৃতীয়ত: কোনো কারণে ভূ-ত্বকের এক অংশ খাড়াভাবে পাশের সমভূমির ওপরে উঠে গেলে চ্যুতি-স্তূপ পর্বতের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ- জার্মানির ব্লাক ফরেস্ট, ফ্রান্সের ভোঁজ এবং ভারতের বিন্ধ্যা ও ত্রিপুরা পর্বতয় চ্যুতি-স্তূপ পর্বতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
ক্ষয়জাত পর্বত কাকে বলে | Erosional Mountain
ভঙ্গিল পর্বত, স্তূপ পর্বত ও আগ্নেয়পর্বত বহুবছর ধরে বিভিন্ন বহির্জাত প্রক্রিয়া যেমন – বায়ু, বৃষ্টি, জলপ্রবাহ, হিমবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্রমাগত ক্ষয় প্রাপ্ত হয়ে যে অনুচ্চ বিচ্ছিন্ন পর্বতের সৃষ্টি হয় তাকে ক্ষয়জাত পর্বত বলে।
যেমন – ভারতের নীলগিরি, শুশুনিয়া, পূর্বঘাট, পরেশনাথ, রাজমহল পর্বত এই ধরণের ক্ষয়জাত পর্বতের প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
ক্ষয়জাত পর্বতের বৈশিষ্ট্য
- ক্ষয়জাত পর্বতের উচ্চতা বেশি হয় না।
- এরূপ পর্বতের উপরিভাগ খুব উঁচু নিচু বা অসমতল হয় না।
- পর্বতের ঢাল মৃদু প্রকৃতির হয়।
- যে কোন পর্বত বা উঁচু ভূমি ক্ষয়ের ফলে ক্ষয়জাত পর্বতে পরিনত হতে পারে।
উত্থিত ক্ষয়জাত পর্বত | Residual Mountain
ভূ-পৃষ্ঠের নরম শিলাসমূহ বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত ও অপসারিত হলে কঠিন শিলাসমূহ উঁচু হয়ে পর্বতের ন্যায় অবস্থান করে। একে উত্থিত ক্ষয়জাত পর্বত বলে।
মূলত ভূ-আলোড়নের কারণে সুদূর অতীতকালে ভূ-অভ্যন্তরস্থ ম্যাগমা উত্থিত হওয়ায় শিলাস্তর ওপরের দিকে উঠে যায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে খাঁড়া বরাবর শিলাস্তূপ ঊর্ধ্বগামী হয়। পরবর্তীতে এ সমস্ত উপরিভাগ ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নিচের আগ্নেয় ও রূপান্তরিত শিলা উন্মুক্ত হয়। পার্শ্ববর্তী ভূমির চেয়ে এ সুউচ্চ ভূমিরূপকে উত্থিত ক্ষয়জাত পর্বত বলে।
যেমন-আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ব্লাক হিলস, কলোরাডোর ফ্রান্ট রেঞ্জ (কলোরাডো)।
পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে পার্থক্য
ভূপৃষ্ঠের উপর অবস্থিত ভূমিরূপ গুলিকে উচ্চতার তারতম্য অনুসারে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয় – পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি। এছাড়া মালভূমির থেকে সামান্য উঁচু কিন্তু পর্বতের থেকে কম উচ্চতা বিশিষ্ট এক বিশেষ ধরনের ভূমিরূপ দেখা যায়, যা পাহাড় নামে পরিচিত। পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে যে সব পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, সেগুলি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। পাহাড় ও পর্বতের মধ্যে পার্থক্য গুলি হল –
বৈশিষ্ট্য | পাহাড় | পর্বত |
সংজ্ঞা | পারিপার্শ্বিক ভূপৃষ্ঠ থেকে সামান্য উচ্চতা বিশিষ্ট ও অল্প দূর বিস্তৃত শিলাস্তুপ কে পাহাড় বলে। | সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট ও একটানা বহুদূর বিস্তৃত শিলাময় ভূমিরূপ কে পর্বত বলে। |
উদাহরণ | পাহাড়ের উদাহরণ হল – পরেশনাথ পাহাড়, রাজমহল পাহাড়, অজন্তা পাহাড় প্রভৃতি। | পর্বতের উদাহরণ হল – মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রভৃতি। |
উচ্চতা | 300 মিটারের অধিক কিন্তু 1000 মিটারের কম উচ্চতা বিশিষ্ট ভূমিরূপ গুলো কে পাহাড় হিসাবে গণ্য করা হয়। | সাধারণত 1000 মিটারের অধিক উচ্চতা বিশিষ্ট ভূমিরূপ গুলিকে পর্বত বলে। |
শীর্ষদেশ | পাহাড় শীর্ষদেশ গুলি ছোটো এবং মূলত সামান্য গোলাকৃতি হয়ে থাকে। | পর্বতের শীর্ষদেশ খুব তীক্ষ্ম ও উঁচু হয়। |
ঢাল | পাহাড়ের ঢাল বেশি খাড়া হয় না। | পর্বত গুলি খাড়া ঢাল বিশিষ্ট হয়ে থাকে। |
বরফের অবস্থান | উচ্চতা কম হওয়ায় পাহাড়ে বরফের উপস্থিতি দেখা যায় না । | উচ্চতা খুব বেশি হওয়ায় পর্বতের উপরিভাগ অনেক সময় বরফ দ্বারা আবৃত থাকে। |
বস্তুতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য | পাহাড়ের সর্বত্র প্রায় একই রকম উদ্ভিদ প্রাণীর উপস্থিতি দেখা যায়। | ভূ-সমতল থেকে পর্বত অনেক উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ায় পর্বতের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন উদ্ভিদ ও প্রাণীর উপস্থিতি দেখা যায়। |
হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি, হিমালয় পর্বত সৃষ্টির কারণ
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভূটান, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এই দেশগুলি নিয়ে ভারতীয় উপমহাদেশ। ভারতীয় উপমহাদেশ বর্তমানে এশিয়ার অংশ।
কিন্তু দু’কোটি বছর আগে ভারতীয় উপমহাদেশের মূল ভূখণ্ড ছিল আফ্রিকার কাছাকাছি। ভূমিকম্প, জলবায়ুর পরিবর্তন ইত্যাতি নানা কারণে ভারতীয় উপমহাদেশ ধীরে ধীরে এগুতে থাকে এশিয়ার দিকে। তারপর একসময় প্রচন্ড ধাক্কায় এশিয়ার সাথে সংঘর্ষ হয়। তাতে এশিয়ার ভূ-খণ্ডের সাথে জোড়া লেগে যায়।
জোড়া লাগা স্থানগুলো প্রচণ্ড সংঘর্ষের কারণে উঁচু হয়ে যায়। উঁচু হয়ে যাওয়া এই বিরাট ভূমিইকালের স্রোতে হিমালয় পর্বত মালায় পরিণত হয়েছে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | পর্বত
Q1. ভারতের উচ্চতম পর্বত শৃঙ্গের নাম কি, ভারতের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কি
Ans – ভারতের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম গডউইন অস্টিন বা K2. ইহার উচ্চতা 8611 মিটার।
Q2. হিমালয় পর্বত কোথায় অবস্থিত
Ans – আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, চীন, নেপাল ও ভুটান এশিয়ার এই ছয় দেশে বিস্তৃত হিমালয় পর্বতমালা। মাউন্ট এভারেস্ট, কেটু, কাঞ্চনজঙ্ঘা প্রভৃতি বিশ্বের উচ্চতম শৃঙ্গগুলি অবস্থান করছে এই হিমালয় পর্বতমালায়।
Q3. পশ্চিমঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ
Ans – পশ্চিমঘাটের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ হল আনামুদি। আনামুদি কেরালায় অবস্থিত। আনামুদি কেরালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। আনামুদি দক্ষিণ ভারতের এভারেস্ট নামেও পরিচিত।
Q4. পূর্বঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ, পূর্বঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম কি
Ans – মহেন্দ্রগিরি (1,501 মিটার) হল পূর্বঘাট পর্বতমালার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এটি ওড়িশার গজপতি জেলায় অবস্থিত।
Q5. আরাবল্লী পর্বত কোথায় অবস্থিত
Ans – ভারতের উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত, আরাবল্লী গুজরাট থেকে দিল্লি পর্যন্ত রাজস্থান ও হরিয়ানা হয়ে প্রসারিত, যার দৈর্ঘ্য প্রায় 692 কিলোমিটার। এবং গড় উচ্চতা 600-900 মিটার।
Q6. ভারতের প্রাচীনতম পর্বতের নাম কি
Ans – আরাবল্লী পর্বতশ্রেণী হল ভারতের প্রাচীনতম পর্বতশ্রেণী।
Q7. কৈলাস পর্বত কোথায় অবস্থিত
Ans – পশ্চিম তিব্বতে অবস্থিত কৈলাশ পর্বত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৬৫৬ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।
Q8. পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে উঁচু পর্বত শৃঙ্গ কোনটি, পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কি
Ans – পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ, সান্দাকফু (২,৬৩৬ মিটার (১১,৯২৯ ফুট) এবং ফালুট (২,৬০০ মিটার (১১,৮০০ ফুট)।
Q9. ভারতে অবস্থিত হিমালয়ের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গের নাম কি
Ans – কাঞ্চনজঙ্ঘা শৃঙ্গ ভারতের হিমালয়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
Q10. নীলগিরি পর্বত কোথায় অবস্থিত
Ans – কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাড়ু রাজ্যের ত্রি-সংযোগস্থলে এই পর্বতশ্রেণী অবস্থিত। নীলগিরি পর্বতের শোলা অরণ্যে প্রাপ্ত নীলাকুরুনজি ফুলের (বেগুনি-নীল ফুল) নামে এই পর্বতমালাটির নামকরণ করা হয়েছে।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।