ভারতের শিল্প প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

WBBSE ভূগোল Class 10 | Bhugol Bharater Shilpo | Question Answer

সূচিপত্র

অনুসারী শিল্প কাকে বলে, অনুসারী শিল্প কী

উত্তর: অনু কথাটির অর্থ হলো ক্ষুদ্র। একটি বৃহদায়তন শিল্পকে কেন্দ্র করে তার চারপাশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে। এই বৃহদায়তন শিল্পকে কেন্দ্রীয় শিল্প এবং এই কেন্দ্রীয় শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পগুলিকে অনুসারী শিল্প বা সহযোগী শিল্প বলা হয়।

অনুসারী শিল্প গুলি কেন্দ্রীয় শিল্পের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল। এই অনুসারী শিল্প বৃহদায়তন শিল্প গুলিকে প্রয়োজনের সামগ্রী সরবরাহ করে থাকে।

অনুসারী শিল্পের উদাহরণ

উত্তর: যেকোনো বৃহদাকার শিল্প কে কেন্দ্র করে এই অনুসারী শিল্প গড়ে ওঠে। পেট্রো-কেমিক্যাল বা পেট্রোরসায়ন শিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বহু অনুসারী শিল্প। যেমন- পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়ায় পেট্রোরসায়ন শিল্পকে নির্ভর করে পেট্রোরসায়ন শিল্পের নিকটবর্তী অঞ্চলে প্লাস্টিক শিল্প , রং শিল্প, রাবার শিল্প হল একটি অনুসারী শিল্প।

এছাড়াও কোথাও মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প গড়ে উঠেলে, সেই মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্পকে ঘিরে গড়ে ওঠা কাচ শিল্প, রাবার শিল্প, টায়ার শিল্প, সিট নির্মাণ শিল্প, ব্যাটারি নির্মাণ শিল্প, ছোট-বড় যন্ত্রাংশ নির্মাণ শিল্প ইত্যাদি হলো অনুসারী শিল্পের উদাহরণ।

অনুসারী শিল্প গুচ্ছ কাকে বলে

উত্তর: অনুসারী শিল্পের অপর নাম সহযোগী শিল্প, ডাউন-স্ট্রিম শিল্প, শিল্প গুচ্ছ। অনুসারী শিল্প গুলি মূলত বৃহদায়তন শিল্প (পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প, মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প) গুলির ওপর নির্ভরশীল।
অনুসারী শিল্পগুলি কেন্দ্রীয় শিল্পের (পেট্রো-কেমিক্যাল শিল্প, মোটর গাড়ি নির্মাণ শিল্প) চারপাশে গড়ে ওঠা ছোট ছোট শিল্প কারখানা।

অনুসারী শিল্প গুলি বৃহদায়তন শিল্পগুলিকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করে।

আধুনিক শিল্প দানব কাকে বলে

উত্তর: পেট্রো রাসায়নিক শিল্পকে আধুনিক শিল্প দানব বলা হয়।

বর্তমান দৈনন্দিন জীবনযাত্রার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে পেট্রো রাসায়নিক শিল্পজাত দ্রব্যাদি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্য হিসেবে পরিচিত।এই পেট্রো রাসায়নিক শিল্পের শিল্পজাত দ্রব্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে কোন একটি অঞ্চলে বিভিন্ন প্রকার অনুসারী শিল্প একই সাথে গড়ে ওঠে এক বৃহদায়তন জটিল শিল্পাঞ্চল বিকাশ লাভ করে। এই শিল্পকে বাদ দিয়ে আধুনিক শিল্প-সভ্যতার কথা ভাবাই যায় না, অধিকাংশ আধুনিক শিল্পকেই পেট্রো রাসায়নিক শিল্প কোন না কোনভাবে গ্রাস করে নিয়েছে। এইভাবে পেট্রো রাসায়নিক শিল্প জাত দ্রব্য ব্যবহার করে বা পেট্রো রাসায়নিক শিল্পকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের শিল্প বিকাশ লাভ করে বলে একে আধুনিক শিল্প দানব বলা হয়।

পূর্ব ভারত থেকে পশ্চিম ভারতে স্থানান্তরিত হয়েছে কোন শিল্প

উত্তর: পূর্ব ভারত থেকে পশ্চিম ভারতে স্থানান্তরিত হয়েছে কার্পাসবয়ন শিল্প

জামনগর কোন শিল্পের জন্য বিখ্যাত, জামনগর কি শিল্পের জন্য বিখ্যাত

উত্তর: ভারতের বৃহত্তম বেসরকারী সংস্থা, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ, জামনগর জেলার মতি খাওয়াদি গ্রামের নিকটে বিশ্বের বৃহত্তম তেল পরিশোধন ও পেট্রোকেমিক্যাল কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করেছে। নায়ারা এনার্জি রিফাইনারি যা ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বেসরকারী শোধনাগারটি নিকটবর্তী ভাদিনারে অবস্থিত।

উদীয়মান শিল্প কাকে বলে

উত্তর: যে শিল্প পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসগুলি থেকে রাসায়নিক পদ্ধতির মাধ্য়মে অনুসারী শিল্পের বিভিন্ন কাঁচামাল ও নানান ধরনের রাসায়নিক ও বিভিন্ন যৌগ পদার্থ উৎপন্ন করে তাকে উদীয়মান শিল্প বলে বা পেট্রো রসায়ন শিল্প বলা হয়। আমাদের বর্তমান সমাজ এই পেট্রো রসায়ন শিল্পের উপর অনেকটা নির্ভরশীল হওয়ায় এই শিল্পকে আধুনিক শিল্প দানব বলা হয়। এছাড়াও ভারতের পেট্রোরসায়ন শিল্পকে উদীয়মান শিল্প বলা হয়।

এছাড়াও এই শিল্প ভবিষ্যতে আমাদের সমাজ কে উজ্জ্বল করতে চলেছে তাই একে ‘সূর্যোদয়ের শিল্প’ বলা হয়ে থাকে। এই পেট্রো রসায়ন শিল্প কেন্দ্র গুলিতে একসাথে অনেক গুলি দ্রব্য তৈরী করা হয়।

পেট্রো রসায়ন শিল্প কে ভারতের উদীয়মান শিল্প বলা হয়। ভারতের উদীয়মান শিল্পের নাম হলো পেট্রো রসায়ন শিল্প।

কুটির শিল্প কাকে বলে

উত্তর: কুটির শিল্প কাকে বলে: পারিবারিক শ্রমিক দ্বারা ঘরে বসে কোনরকমের বিদ্যুৎ ও ভারী যন্ত্রপাতির সাহায্য ছাড়াই হাতের সাহায্যে কোনো দ্রব্যসামগ্রী উৎপাদন করাকে কুটির শিল্প বলা হয়।

অর্থাৎ, কোনো ব্যাক্তি যদি ঘরে বসে ছোটখাটো কোনো যন্ত্রপাতি অথবা হাতের সাহায্যে কোনো দ্রব্যসামগ্রী তৈরি করে । ওই শিল্পকে কুটির শিল্প বলা হয়।

কুটির শিল্পের উদাহরণ

  • কুমোর মাটির জিনিসপত্র তৈরি করে,
  • কাঠের মিস্ত্রি কাছের আসবাবপত্র বানায়।
  • সোনার দোকানি সোনার জিনিসপত্র বানায়।
  • কামার কাঁচি, কাস্তে, হাতুড়ি বানায়।
  • ঘরে বসে জামাকাপড় তৈরি করা।
  • কাগজের ঠোঙ্গা বানানো।
  • ঘরে বসে পুতুল বানানো।
  • বাঁশ ও বেতের ঝড়া বানানো।

এরকম অসংখ্য শিল্পকে কুটির শিল্প বলা হয় ।

পশ্চিমবঙ্গের শিল্প মন্ত্রীর নাম কি

উত্তর: শশী পাঁজা পশ্চিমবঙ্গের শিল্প মন্ত্রীর নাম কি

ইউরোপে শিল্প বিপ্লবের কারণগুলি কী, ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্প বিপ্লবের কারণ গুলি উল্লেখ করো, কোন সময় ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব হয়েছিল, শিল্প বিপ্লবের প্রভাব

উত্তর: ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের কারণ ও ফলাফল ইতিহাসে মোটামুটি ১৭৬০-১৮৪০ খ্রিষ্টাব্দ এই সময়কালে কৃষি এবং বাণিজ্যিক ব্যবস্থা থেকে আধুনিক শিল্পায়নের দিকে গতি শুরু হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিস্ময়কর পরিবর্তন ঘটে।

পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীর সমুদ্র যাত্রা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যের পথ খুলে দেয়। এরপর পুঁজিবাদের উদ্ভব, বাষ্পীয় ইঞ্জিনের আবিষ্কার, কয়লার খনি আর ইস্পাতের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে অনেক শিল্প শহর আর কারখানা গড়ে উঠে।

ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব সংগঠিত হওয়ার নানারকম কারণের মধ্যে একটি বড় কারণ ছিল পুঁজির জোগান। এই পুঁজির অনেকটাই এসেছিল ঔপনিবেশিক ব্যাবসাবাণিজ্য থেকে। ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লবের ফলে দুটি সমস্যা দেখা দেয়। কাঁচামালের অভাব এবং উদ্বৃত্ত দ্রব্যসামগ্রী বিক্রয়ের জন্যে বাজার। এই দুটি সমস্যা সমাধানের একটি উপায় হল উপনিবেশ স্থাপন। খনিজ ও বাণিজ্যিক কৃষিতে সমৃদ্ধ উপনিবেশ থেকে একদিকে যেমন কাঁচামাল সংগ্রহ করা সম্ভব, তেমনই অন্যদিকে সেখানেই উদ্বৃত্ত দ্রব্যসামগ্রীর বিক্রয়েরও সুযোগ ছিল।

ভারতের বৃহত্তম পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র কোনটি, ভারতের বৃহত্তম পেট্রো রসায়ন শিল্প কেন্দ্র

উত্তর: গুজরাটের জামনগর ভারতের বৃহত্তম পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প কেন্দ্র।

  • জামনগর শোধনাগার হল ভারতের গুজরাটের জামনগরে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের মালিকানাধীন একটি বেসরকারি খাতের অপরিশোধিত তেল শোধনাগার।
  • শোধনাগারটি 14 জুলাই 1999 তারিখে 668,000 ব্যারেল প্রতি দিন (106,200 m3/d) ইনস্টল ক্ষমতা সহ চালু করা হয়েছিল।

ভারতের প্রথম পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র কোনটি

উত্তর: ভারতের প্রথম পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র হল ট্রম্বে।

গান্ধার শিল্পের উপর নিবন্ধ লেখ, গান্ধার শিল্প সম্পর্কে টীকা

উত্তর: পশ্চিম ভারতের গান্ধারকে কেন্দ্র করে মূলত শক ও কুষাণ যুগে একটি নতুন ধরণের শিল্পরীতির উদ্ভব ঘটেছিল। এই শিল্পরীতিকেই গান্ধার শিল্প বলা হয়। খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দী থেকেই গান্ধার শিল্পের সূচনা হয়েছিল। তবে কুষাণ রাজাদের আনুকূল্যে গান্ধার শিল্পের উন্নতি সর্বোচ্চ হয়েছিল। এই সময় তক্ষশীলা, বামিয়ান, জালালাবাদ সহ আরও বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গান্ধার শিল্প বিস্তার লাভ করেছিল। গান্ধার শিল্পের প্রচলন প্রায় পাঁচশত খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল। ভারতের কুষাণ বংশীয় সম্রাট কনিস্ক গান্ধার শিল্পকে ভারতের বাইরে চিন, জাপান, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। গান্ধার শিল্পের নির্মাণ কৌশল ও বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করা হল ।

নির্মাণ কৌশল

গান্ধার শিল্পের শিল্পীরা মূর্তি নির্মাণ করতে চুন, বালি, পোড়ামাটি ইত্যাদি ব্যবহার করতেন। তারা মূর্তিতে গাঢ় রঙের প্রলেপ দিতেন, মূর্তির শরীরে দামি অলংকার এবং পোশাক সুন্দরভাবে অলংকৃত করতেন। গান্ধার শিল্পের অন্যতম একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল, এই শিল্পে মূর্তিগুলি খুবই মসৃণ হত এবং মূর্তিগুলির ওপর খুব সুন্দরভাবে পালিশের কাজ করা হত। মূর্তি নির্মাণের এই কৌশল গান্ধার শিল্প তথা ভারতীয় শিল্পরীতির ইতিহাসকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে।

গান্ধার শিল্পের বিষয়বস্তু

গান্ধার শিল্পে গ্রিক, রোমান ও ভারতীয় শিল্পরীতির সংমিশ্রণে বিভিন্ন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে। এই শিল্পের মূল বিষয়বস্তু ছিল গৌতম বুদ্ধ ও বৌদ্ধ ধর্ম। গৌতম বুদ্ধের মূর্তি গুলি নির্মাণ করা হত বিভিন্ন গ্রিক দেবদেবীর অনুকরণে।

গান্ধার শিল্পে স্থাপত্যের দুটি দিক রয়েছে। যথা – (i) স্তূপ এবং (ii) চৈত্য। গান্ধার শিল্পরীতি ও নির্মাণকৌশল অনুসারে তৎকালীন সময়ে ভারতে বহু বিহার, স্তূপ ও গুহামন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। গৌতম বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে এই শিল্প ভাস্কর্যের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছে।

গান্ধার শিল্পে ভারতীয় শিল্পরীতির পাশাপাশি গ্রিক, রোমান ইত্যাদি দেশের শিল্পরীতিও জায়গা করে নিয়েছিল। যার ফলে ভারতীয় শিল্পরীতিও এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে গেছে। গান্ধার শিল্প একদিকে যেমন ভারতীয় ইতিহাসকে প্রভাবিত করেছে অন্যদিকে তেমনই তা ভারতের বাইরে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও (চিন, জাপান) ছড়িয়ে পড়েছে। গান্ধার শিল্প উন্নত শিল্পরীতির পরিচয় যেমন বহন করে তেমনই উন্নত হস্তশিল্পের পরিচয়ও বহন করে।

গ্লোবাল শিল্প কাকে বলে

উত্তর: তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প কে গ্লোবাল শিল্প বলে। কারণ তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কম্পিউটারের মাধ্যমে পৃথিবী জুড়ে তথ্য সংগ্রহ সঞ্চয় , বিশ্লেষণ ও প্রেরণ করা হয়। ভারতে জিডিপি প্রায় ৭.৫ শতাংশ আসে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প থেকে।

শিল্প বিপ্লব কথাটি প্রথম কে ব্যবহার করেন

উত্তর: শিল্প বিপ্লবের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো Industrial Revolution. এই শব্দটি সর্ব প্রথম ব্যবহার করেন ইংরেজ ঐতিহাসিক Arnold Toynbee. ১৮৮০ সালে তিনি তাঁর লেখা “Lectures on the Industrial Revolution in England” গ্রন্থে এটা ব্যবহার করেন।

তথ্য প্রযুক্তি শিল্প কাকে বলে

উত্তর: কম্পিউটার ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, পরিমার্জনা নির্ণয় বিশ্লেষণ এবং ব্যবসায়িক প্রয়োজনে করা হয় তা হল তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প।

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মূল উপকরণ কি

উত্তর: তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মূল উপকরণ মানুষের মেধা।

এশিয়ার বৃহত্তম কাগজ শিল্প কেন্দ্র কোথায় আছে

উত্তর: কাগজ উৎপাদনে বর্তমানে মহারাষ্ট্র ভারতে প্রথম স্থান অধিকার করে।

বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক কে

উত্তর: চার্লস উইলকিন্স 1778 সালে হুগলির চুঁচুড়ায় একটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এই ছাপাখানায় তিনিই সর্বপ্রথম বাংলা অক্ষরের টাইপ বা নকশা তৈরি করেন। এবং বাংলা ভাষায় বই প্রকাশ শুরু করেন। এই কারণে তাকে ‘বাংলা মুদ্রণ শিল্পের জনক’ বলা হয়।

ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নতির কারণ

উত্তর : ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প দুটি অংশের ( Component ) সম্মিলিত ফল । একটি হল তথ্যপ্রযুক্তি পরিসেবা এবং অপরটি হল বিজনেস প্রোসেস আউট সোর্সিং ( BPO ) । NASSCOM ( National Association for Software and Services Companies )-এর হিসাব অনুযায়ী 2011-12 খ্রিস্টাব্দে ভারতে IT শিল্পে প্রত্যক্ষ 28 লক্ষ এবং পরোক্ষভাবে 47 লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে । তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের অভূতপূর্ব উন্নতির কারণগুলি হল —

মানব সম্পদ

মানুষের উচ্চমেধা জ্ঞান তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রধান সম্পদ । এই শিল্প অতি উন্নত মেধা নির্ভর । সারা ভারত জুড়ে উন্নত মেধা সম্পন্ন মানব সম্পদের প্রাচুর্য রয়েছে ।

প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

সারা ভারতবর্ষ জুড়ে রয়েছে অসংখ্য উচ্চমানের তথ্যপ্রযুক্তির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।যেমন — (i) IIT প্রতিষ্ঠান রয়েছে 16টি স্থানে , যথা — রুরকী , নিউদিল্লি , কানপুর ,বারাণসী , পাটনা ,খড়্গপুর , চেন্নাই, মুম্বাই প্রভৃতি । (ii) এছাড়াও রয়েছে উচ্চমানের অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । যেমন – Indian Institute of Science- বেঙ্গালুরু ; (iii) Indian Institute of Science Education and Research- কলকাতা ,পুনে ; ( iv ) Indian Institute of Space Science and Technology তিরুবনন্তপুরম ; ( v) Indian Institute of Engineering Science and Technology – কলকাতা ; ( vi ) Indian Institute of Science and Technology- হায়দরাবাদ । এইসব প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষিত মেধাবী ইঞ্জিনিয়ার উদ্ভাবক ও অন্যান্য কলাকুশলী সম্পদ সৃষ্টি করে যা IT শিল্পের মূল উন্নতির কারণ ।

উন্নত পরিকাঠামো

কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার এই শিল্পের প্রতি আগ্রহ দেখিয়ে উন্নত যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ,বিদ্যুৎ পরিসেবা , নিরাপত্তা , 24 × 7 কর্মের পরিবেশ প্রভৃতি বিষয়ে উন্নত পরিকাঠামোগত সুযোগ করে দিচ্ছে ।

বিপুল চাহিদা ও বাজার

ভারতবর্ষ দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ । কৃষি , শিল্প , পরিবহণ -যোগাযোগ ,শিক্ষা , স্বাস্থ্য,ব্যাবসা, সরকারি , বেসরকারি পরিসেবা প্রদান প্রভৃতি ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলিতে বিশাল বাজার তৈরি হয়েছে । বর্তমানে IT মার্কেটিং – এ উজ্জ্বল পেশা হিসেবে – ( a) হার্ডওয়্যার , ( b ) সফটওয়্যার , (c) আই এস পি সার্ভিস , (d) ওয়েব , ( e) ই -কমার্স , ( f ) গ্রাফিক্স মার্কেটিং উল্লেখযোগ্য । ন্যাসকম – এর তথ্য অনুযায়ী 2020 খ্রিস্টাব্দে ভারত এই শিল্প থেকে 191 বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে ।

মূলধনের প্রাচুর্য

উদারীকরণ ও বিশ্বায়নের মধ্য দিয়ে ভারতের এই উদীয়মান শিল্পটিতে দেশীয় ও বহুজাতিক সংস্থাগুলি বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করায় শিল্পটি বিকশিত ও পল্লবিত হয়েছে ও হচ্ছে । ভারতের কয়েকটি প্রধান IT হাব (i) বেঙ্গালুরু (ii) চেন্নাই (iii) হায়দরাবাদ (iv) কলকাতা (v) দিল্লি-গুরগাঁও-নয়ডা (vi) পুনে (vii) ত্রিবান্দ্রম (vii) তিরুবনন্তপুরম ।

ভারতের দুগ্ধ শিল্পের সমস্যা

দুগ্ধ শিল্পের তাত্পর্যপূর্ণ বৃদ্ধি সত্ত্বেও, ভারত এখনও খারাপ দুধের গুণমান, কম ফলন, পরিকাঠামোর অভাব এবং একটি খণ্ডিত উত্পাদনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ব্যাক-এন্ড এবং ফ্রন্ট-এন্ড সাপ্লাই চেইন উভয় ক্ষেত্রেই অবকাঠামো সংক্রান্ত বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা এখনও বিদ্যমান। ভারতীয় দুগ্ধ শিল্পে অনেক সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জ রয়েছে। দুগ্ধজাত পণ্য ভারতের লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে সস্তা এবং পুষ্টিকর খাবারের একটি প্রধান উৎস। এবং ভারতীয় জনসংখ্যার একটি বৃহৎ নিরামিষভোজী অংশ বিশেষ করে ভূমিহীন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক এবং মহিলাদের মধ্যে পশু প্রোটিনের একমাত্র গ্রহণযোগ্য উৎস। দুগ্ধ চাষকে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে একটি অন্যতম কার্যক্রম হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে, বিশেষ করে গ্রামীণ অঞ্চলে বৃষ্টিনির্ভর এবং খরা-প্রবণ অঞ্চলে। ভারতে, জনসংখ্যার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ গ্রামীণ এলাকায় বাস করে এবং তাদের মধ্যে প্রায় 38% দরিদ্র।

কিছু চ্যালেঞ্জ এখানে উল্লেখ করা হলো:-

1.প্রজনন পরিকাঠামো এবং জেনেটিক্স: -ভারতীয় দুগ্ধের সাফল্য ছিল • বেশিরভাগ প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে উৎপাদনশীলতা নয়। সম্পদ যখন সীমিত, তখন পশুপ্রতি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। ভাল পশু জেনেটিক্স, প্রজনন পরিকাঠামো এবং অগ্রিম প্রজনন পদ্ধতি যেমন কৃত্রিম প্রজনন, ভ্রূণ স্থানান্তর ইত্যাদির উচ্চ চাহিদা রয়েছে।

  1. পশুখাদ্য এবং পশুখাদ্য: -একটি তীব্র এবং সর্বদা ক্রমবর্ধমান ঘাটতি রয়েছে • সবুজ পশুখাদ্য এবং ভাল মানের খাদ্য। উচ্চ জাতের পশুর ক্রমবর্ধমান প্রবণতা দোহনকারী পশুদের খাদ্যতালিকাগত চাহিদা মেটাতে ভালো মানের খাদ্য ও পশুখাদ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি করছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সংক্রান্ত অনেক জটিলতা এড়াতে প্রফিল্যাকটিক পদ্ধতির মাধ্যমে ফিড প্রি-মিক্স ব্যবহার করা হচ্ছে।
    3.প্রাণী স্বাস্থ্য:- ভাল স্বাস্থ্যসেবা এবং পশু রোগ নির্ণয়ের সমাধান • ব্যবধান মোকাবেলার প্রয়োজন। উপরের হিসাবে উচ্চ ফলনশীল প্রাণীদের অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন হয় এবং বছরের পর বছর ধরে এই প্রবণতা পশুর স্বাস্থ্য বিভাগকে চালিত করছে।
  2. খামার যান্ত্রিকীকরণ: – 1.25 বিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ হওয়া সত্ত্বেও • ক্রমবর্ধমান ঘাটতি এবং শ্রমের ব্যয়। পরিস্থিতি মোকাবেলায় খামার যান্ত্রিকীকরণকে কৃষকরা স্বাগত জানাচ্ছেন।
  3. কোল্ড চেইন অবকাঠামো: – গ্রাম পর্যায়ে দূষণ এবং নষ্ট হওয়া রোধ করার জন্য • চিলিং প্ল্যান্ট এবং বাল্ক কুলারের প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। এই বিভাগটি প্রবৃদ্ধির সুযোগ দেখতে বাধ্য কারণ সরকার এবং বেসরকারী খাত পর্যাপ্ত ক্রয় নিশ্চিত করার জন্য এতে প্রচুর বিনিয়োগ করছে।
    6.বিদ্যুতের প্রাপ্যতা:- অনেক শীতল উদ্ভিদ বিদ্যুতের ঘাটতির কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় • এবং সর্বোত্তমভাবে চলতে পারে না যার ফলে দুধের গুণমান এবং শেলফ লাইফ হয়। এই বিভাগের মধ্যে সুযোগ সৌর শক্তি চালিত দুধ চিলার হতে পারে.
    7.গুণমান পরীক্ষার পরিকাঠামো এবং প্রশিক্ষিত কর্মশক্তি:- পর্যাপ্ত গুণমান • পরীক্ষার পরিকাঠামো দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে উপলব্ধ নেই। মান পরীক্ষা করার জন্য প্রশিক্ষিত জনবলের অভাবের কারণে সমস্যাটি আরও জটিল হয়েছে। ভোক্তা শেষে, নিরাপদ খাদ্যের চাহিদা দ্রুত উঠছে এবং এইভাবে উচ্চ সুযোগ তৈরি করছে।
  4. প্রক্রিয়াকরণ সরঞ্জাম এবং খাদ্য উপাদান: ক্রমবর্ধমান ভোক্তা সচেতনতা এবং পরিবর্তনশীল জীবনধারা প্রসেসরদের পণ্য উদ্ভাবনের দিকে যেতে বাধ্য করছে এবং এইভাবে উচ্চ মানের সরঞ্জাম এবং বিভিন্ন খাদ্য উপাদানের ক্রমবর্ধমান চাহিদা।

ভারতের শিল্পের জন্য নির্মিত প্রথম রোবটের নাম কি

উত্তর: BRABO ব্র্যাভো রোবটের একটি সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি 2016 সালে প্রথমবারের জন্য প্রদর্শিত হয়েছে।

ভারতের শিল্প MCQ

কোন দুটি স্থান ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় সড়কপথ দিয়ে যুক্ত হয়েছে?

ক) মুম্বাই ও চেন্নাই

খ) বারাণসী ও কন্যাকুমারী

গ) শিলচর ও সুরাট

ঘ) দিল্লি ও কলকাতা

সঠিক উত্তর: খ) বারাণসী ও কন্যাকুমারী

দেশভাগের জন্য সরাসরি কোন শিল্পটি সবচেয়ে প্রভাবিত হয়েছে?

ক) পাট শিল্প

খ) রেশম বস্ত্রশিল্প

গ) চা শিল্প

ঘ) খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প

সঠিক উত্তর: ক) পাট শিল্প

তুমি যদি ভারতের কোনো কফি বাগিচায় অবস্থান করো, তাহলে তুমি আছো

ক) দক্ষিণ ভারতে

খ) পূর্ব ভারতে

গ) উত্তর ভারতে

ঘ) পশ্চিম ভারতে

সঠিক উত্তর: ক) দক্ষিণ ভারতে

অপ্রচলিত শক্তি সম্বন্ধে কোন বাক্যটি প্রযোজ্য নয়?

ক) এর উৎসগুলি অফুরন্ত বা পূরণশীল

খ) এর উৎসগুলি সহজলভ্য নয়

গ) এর ব্যাপক উৎপাদনের প্রাথমিক খরচ বেশি

ঘ) এর উৎপাদন পদ্ধতিতে সরাসরি পরিবেশ দূষিত হয় না

সঠিক উত্তর: খ) এর উৎসগুলি সহজলভ্য নয়

আধুনিক এবং কম খরচের বিকল্প পদ্ধতি এসে যাওয়ায় ভারতে সম্প্রতি সরকারিভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া যোগাযোগ মাধ্যমটি হলো

ক) ল্যান্ডলাইন দূরভাষ

খ) নথিভুক্ত ডাক

গ) ক্যুরিয়ার ব্যবস্থা

ঘ) টেলিগ্রাম

সঠিক উত্তর: ঘ) টেলিগ্রাম

তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটোর দক্ষিণ ভারতের সর্ববৃহৎ বস্ত্রশিল্প কেন্দ্র। নীচের কোন কারণটি এই শিল্পকেন্দ্র গড়ে ওঠার সহায়ক নয় ?

ক) কাঁচামাল হিসাবে তুলোর সহজলভ্যতা

খ) সুলভ বিদ্যুৎ

গ) অনুন্নত পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা

ঘ) বস্ত্রের বিপুল চাহিদা

সঠিক উত্তর: গ) অনুন্নত পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা

ভারতের সর্বাধিক উৎপাদন ক্ষমতাবিশিষ্ট লৌহ – ইস্পাত কারখানাটি হল –

(A) জামসেদপুর

(B) বিশাখাপত্তনম

(C) ভিলাই

(D) হলদিয়া

সঠিক উত্তর: (A) জামসেদপুর

চেন্নাই – এ অবস্থিত বৃহদায়তন ট্রাক নির্মাণ কারখানাটি হল—

(A) মারুতি

(B) ফোর্ড

(C) অশোক লেল্যান্ড লিমিটেড

(D) টাটা মোটরস

সঠিক উত্তর: (C) অশোক লেল্যান্ড লিমিটেড

ভারতে রেল বগি তৈরি করা হয়—

(A) বারাণসীতে

(B) বেঙ্গালুরুতে

(C) পেরাম্বুরে

(D) ভূপালে

সঠিক উত্তর: (C) পেরাম্বুরে

ডিজেল ইঞ্জিন নির্মাণের কারখানা কোথায় অবস্থিত –

(A) এলাহাবাদে

(B) হায়দরাবাদে

(C) কানপুরে

(D) বারাণসীতে

সঠিক উত্তর: (D) বারাণসীতে

কার্পাস বজ্র উৎপাদনে ভারত এশিয়ায় কোন্ স্থান অধিকার করে ।

(A) দ্বিতীয় স্থান

(B) প্রথম স্থান

(C) তৃতীয় স্থান

(D) চতুর্থ স্থান অধিকার করে

সঠিক উত্তর: (C) তৃতীয় স্থান

ভারতে কার্পাস বয়ন শিল্পের প্রধান কেন্দ্রটি হল

(A) জামসেদপুর

(B) আমেদাবাদ

(C) মুম্বাই

(D) হুগলি

সঠিক উত্তর: (B) আমেদাবাদ

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

ভূগোল Class 10 বই

পারুল প্রকাশনী – অল ইন ওয়ান ভূগোল ও পরিবেশ রেফারেন্স – ক্লাস – ১০

পারুল প্রকাশনী – অল ইন ওয়ান ভূগোল ও পরিবেশ রেফারেন্স – ক্লাস – ১০

FAQ | ভারতের শিল্প প্রশ্ন উত্তর

তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মূল উপকরণ কি

উত্তর: তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মূল উপকরণ মানুষের মেধা।

ভারতের প্রথম পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র কোনটি

উত্তর: ভারতের প্রথম পেট্রোরসায়ন শিল্প কেন্দ্র হল ট্রম্বে।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।