মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, সহমৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, পরস্পর মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, গুণিতক কাকে বলে, গুণনীয়ক কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে, মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে ও কি কি

  • মৌলিক সংখ্যা হল একটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা যার 1 এবং নিজেই ছাড়া অন্য কোন ভাজক নেই। অন্য কথায়, একটি মৌলিক সংখ্যা এমন একটি সংখ্যা যা 1 এবং নিজে ছাড়া অন্য কোনো ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা দ্বারা সমানভাবে ভাগ করা যায় না। উদাহরণস্বরূপ, 2, 3, 5, 7, 11, এবং 13 সব মৌলিক সংখ্যা।
  • যে স্বাভাবিক সংখ্যার কেবল দুইটি পৃথক উৎপাদক ১ এবং ঐ সংখ্যাটি নিজে – তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমনঃ ৫ একটি মৌলিক সংখ্যা। কারণ, স্বাভাবিক সংখ্যা ৫ কে কেবল ৫ = ১×৫ আকারে প্রকাশ করা যায়। তাই ৫ এর কেবল দুইটি পৃথক উৎপাদক হলো ১ এবং ৫। একারণে ৫ একটি মৌলিক সংখ্যা। তদ্রূপ- ২, ৩, ৭, ১১, ১৩ ইত্যাদি এক-একটি মৌলিক সংখ্যা।
  • যে সংখ্যাকে অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে নিঃশেষে বিভাজ্য হয় না তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে।
  • অন্যভাবে বললে, যে সংখ্যাকে অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ থাকে তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে।
  • যে সংখ্যাকে ১ ও সেই সংখ্যা ছাড়া অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করা যায় না তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে।
  • যে সংখ্যা শুধু ১ এবং ঐ সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য, অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা বিভাজ্য নয় তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে।
  • সহজভাবে বলা যায়, যে সংখ্যাকে অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করা যায় না তাকে মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমনঃ ১৭ একটি মৌলিক সংখ্যা। কারণ, ১৭ সংখ্যাটি অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য নয়; ১৭ সংখ্যাটিকে অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করলে ভাগশেষ থাকে; অর্থাৎ, ১৭ সংখ্যাটিকে অন্য কোনো সংখ্যা দ্বারা ভাগ করা যায় না।

মৌলিক সংখ্যার বৈশিষ্ট্য

মৌলিক সংখ্যার কিছু আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা তাদেরকে ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যার মধ্যে অনন্য করে তোলে। উদাহরণ স্বরূপ:

  • 1 এর চেয়ে বড় প্রতিটি ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা মৌলিক সংখ্যার গুণফল হিসাবে লেখা যেতে পারে। এটি পাটিগণিতের মৌলিক উপপাদ্য হিসাবে পরিচিত।
  • অসীম সংখ্যক মৌলিক সংখ্যা আছে। এটি 2,000 বছর আগে গ্রীক গণিতবিদ ইউক্লিড দ্বারা প্রমাণিত হয়েছিল।
  • মৌলিক সংখ্যা হল মডুলার পাটিগণিত, ক্রিপ্টোগ্রাফি এবং সংখ্যা তত্ত্ব সহ অন্যান্য অনেক গাণিতিক ধারণার বিল্ডিং ব্লক।
  • মৌলিক সংখ্যার বন্টন এলোমেলো নয়, বরং নির্দিষ্ট নিদর্শন এবং প্রবণতা অনুসরণ করে। উদাহরণস্বরূপ, উচ্চ পরিসরের তুলনায় পূর্ণসংখ্যার নিম্ন পরিসরে বেশি মৌলিক সংখ্যা রয়েছে।

মৌলিক সংখ্যার ধর্ম

মৌলিক সংখ্যার নানান ধর্ম আছে। এই ধর্মগুলোর উপর ভিত্তি করে গণিতে অনেক উপপাদ্য তৈরি হয়েছে। মৌলিক সংখ্যার কিছু বিশেষ ধর্ম গুলি নিচে দেওয়া হল-

  • ২টি মৌলিক সংখ্যার সমষ্টি কোন না কোন জোড় সংখ্যাকে প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, ১৮ একটি জোড় সংখ্যা যাকে দুটি মৌলিক সংখ্যা যথাক্রমে ১৩ ও ৫ এর সমষ্টি হিসেবে লেখা যায় ১৩+৫=১৮। ওপরে একটি জোড় সংখ্যা ২৪ যাকে দুটি মৌলিক সংখ্যা যথাক্রমে ১৭ ও ৭ যোগফল রূপে প্রকাশ করা যায় অর্থাৎ ২৪=১৭+৭ ।
  • ৩ চেয়ে বড় যেকোনো মৌলিক সংখ্যার বর্গকে যদি ১২ দিয়ে ভাগ করা হয়, তাহলে প্রতি ক্ষেত্রে ভাগশেষ হিসেবে ১ অবশিষ্ট থাকবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ৭ এর বর্গ ৪৯। ৪৯ কি বারো দিয়ে ভাগ করলে অবশিষ্ট হিসেবে ১ ভাগশেষ থাকবে।

১ থেকে ১০০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যা কয়টি, মৌলিক সংখ্যা ১-১০০

  • ১ থেকে ১০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যাগুলি হল- ২, ৩, ৫, ৭ (৪টি)
  • ১১ থেকে ২০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যাগুলি হল- ১১, ১৩, ১৭, ১৯ (৪টি)
  • ২১ থেকে ৩০ এরমধ্যে মৌলিক সংখ্যাগুলি হল-২৩, ২৯ (২টি)
  • ৩১ থেকে ৪০ এরমধ্যে মৌলিক সংখ্যা গুলি হল -৩১, ৩৭ (২টি)
  • ৪১ থেকে ৫০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যা গুলি হল -৪১, ৪৩, ৪৭ (৩টি)
  • ৫১ থেকে ৬০ মধ্যে মৌলিক সংখ্যাগুলি হল -৫৩, ৫৯ (২টি)
  • ৬১ থেকে ৭০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যা গুলি হল- ৬১, ৬৭ (২টি)
  • ৭১ থেকে ৮০ মধ্যে মৌলিক সংখ্যা গুলি হল – ৭১, ৭৩, ৭৯ (৩টি)
  • ৮১ থেকে ৯০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যাগুলি হল – ৮৩, ৮৯ (২টি)
  • ৯১ থেকে ১০০ এর মধ্যে মৌলিক সংখ্যা গুলি হল- ৯৭ (১টি)
  • ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত পর্যন্ত মোট মৌলিক সংখ্যা ২৫ টি।
  • ১০১ থেকে ২০০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যাগুলি নির্ণয়

মৌলিক সংখ্যা কয়টি, মৌলিক সংখ্যা গুলো কি কি, মৌলিক সংখ্যা কয়টি ও কি কি

মৌলিক সংখ্যার পরিমাণ সসীম নয়, অসীম। মৌলিক সংখ্যা যে অসীমসংখ্যক তার বেশ চমৎকার একটি প্রমাণ আছে।

ধরা যাক মৌলিক সংখ্যার পরিমাণ সসীম ও মোট k সংখ্যক মৌলিক সংখ্যা আছে, যাদের p1,p2,….,pk
দ্বারা চিহ্নিত করা হলো।

এখন আমরা একটি নতুন সংখ্যা তৈরি করি, যেটি হচ্ছে N=p1p2p3…pk+1

এবার N কিন্তু p1,p2,….,pk

এর কোনটি দ্বারাই নিঃশেষে বিভাজ্য নয়, কাজেই সংজ্ঞা অনুসারে N আরেকটি মৌলিক সংখ্যা।

কিন্তু আমরা একটু আগে ধরেছিলাম মৌলিক সংখ্যা মোট k সংখ্যক, আর আমরা সেই k সংখ্যকের বাইরেও আরেকটি মৌলিক সংখ্যা বানিয়ে ফেললাম। কাজেই আমাদের প্রথম ধারণাটি ভুল। কাজেই মৌলিক সংখ্যা অসীমসংখ্যক।

পরস্পর মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে

দুটি সংখ্যাকে পরস্পর মৌলিক সংখ্যা বলা হয় যদি একটিকে দিয়ে অন্যটিকে নিঃশেষে ভাগ করা না যায় এবং এদের কোন সাধারণ গুণিতক না থাকে।

দুটি সংখ্যার মধ্যে 1 ভিন্ন অন্য কোনো সাধারণ উৎপাদক না থাকলে সংখ্যা দুটিকে পরস্পর মৌলিক সংখ্যা (Co-prime numbers) বলে।

দুটি পরস্পর মৌলিক সংখ্যার কোনো একটি বা দুটি উভয়েই মৌলিক সংখ্যা না হয়ে যৌগিক সংখ্যাও হতে পারে।

ক্ষুদ্রতম মৌলিক সংখ্যা কত, সবচেয়ে ছোট মৌলিক সংখ্যা কোনটি, সবচেয়ে ছোট মৌলিক সংখ্যা কত

 ক্ষুদ্রতম মৌলিক সংখ্যাটি হচ্ছে ২।

সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যা কোনটি

বহু যুগ ধরে গণিতবিদেরা সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যার সন্ধান করছেন। এরই অংশ হিসেবে ১৯৯৬ সালে যাত্রা শুরু করে গ্রেট ইন্টারনেট মারসেন প্রাইম সার্চ (জিআইএমপিএস) প্রকল্প। এটিস্বেচ্ছাসেবীদের একটি প্রকল্প, যাঁরা সফটওয়্যারের মাধ্যমে সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যার অনুসন্ধান করেন। জনাথন পেস নামের ওই তড়িৎ প্রকৌশলী এ প্রকল্পেরই সদস্য। ১৪ বছরের চেষ্টায় তিনি সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যাটি আবিষ্কার করেছেন। সংক্ষেপে এর নাম দেওয়া হয়েছে M77232917।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের জনাথন পেস নামের এক তড়িৎ প্রকৌশলী সবচেয়ে বড় মৌলিক সংখ্যা আবিষ্কারের দাবি করেছেন। এতে ২ কোটি ৩০ লাখ অঙ্ক রয়েছে। জনাথন ২-এর ঘাত হিসেবে ৭ কোটি ৭২ লাখ ৩২ হাজার ৯১৭ ধরে তার মান নির্ণয় করেন। তারপর তা থেকে ১ বাদ দিয়ে মৌলিক সংখ্যাটির সন্ধান পেয়েছেন। এ জন্য তাঁকে টানা ছয় দিন কম্পিউটারে হিসাব কষতে হয়েছে।

মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ের সূত্র

১. শুধুমাত্র জোড় সংখ্যা ২ ব্যতিত অন্য কোন জোড় সংখ্যা মৌলিক সংখ্যা হবে না। যেমন ৮, ১০, ২২, ২৪ ইত্যাদি।

২. ৫ যদিও একটি মৌলিক সংখ্যা কিন্তু দুই বা ততোধিক সংখ্যার শেষে ৫ সংখ্যাটি থাকলে তা মৌলিক সংখ্যা হবে না। যেমন ২৫, ৩৫, ৪৫, ৫৫, ১০৫, ১১৫ ইত্যাদি।

৩. যে সকল সংখ্যার গুণনীয়ক আছে সেগুলো মৌলিক সংখ্যা না। যেমন ৬ সংখ্যাটির গুণনীয়ক হচ্ছে ১, ২, ৩, এবং ৬।

৪. ০, এবং ১ মৌলিক সংখ্যা নয় আবার যৌগিক সংখ্যাও নয়।

৫. কোন সংখ্যা মৌলিক কি না তা জানতে প্রথমে সংখ্যাটিকে ২ দিয়ে ভাগ করে দেখতে হবে। যদি ফলাফল পূর্ণ সংখ্যা হয় তাহলে সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যা নয়। কিন্তু, যদি ফলাফল পূর্ণসংখ্যা না হয় তাহলে ক্রমান্বয়ে ৩, ৫, ৭, ১১ ইত্যাদি মৌলিক সংখ্যা দ্বারা সংখ্যাটিকে ভাগ করে দেখতে হবে। এরপরেও যদি ফলাফল পূর্ণসংখ্যা না হয় তাহলে সংখ্যাটি একটি মৌলিক সংখ্যা।

মৌলিক সংখ্যা বের করার নিয়ম, মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ের পদ্ধতি

১ম পদ্ধতিঃ ১-১০ এর মধ্যে যে ৪ টা মৌলিক সংখ্যা আছে, (২,৩,৫,৭) এবং ২,৩,৫,৭ এর যোগফল ১৭ দিয়ে ভাগ না গেলে ঐ সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যা। যেমনঃ ৯৭ কে (২,৩,৫,৭,১৭) দিয়ে ভাগ যায় না, তাই এটি মৌলিক সংখ্যা। কিন্তু ১৬১ কে (২,৩,৫,৭,১৭) এর মধ্যে ৭ দিয়ে ভাগ যায়। তাই ১৬১ মৌলিক সংখ্যা না।

২য় পদ্ধতিঃ যে সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যা কিনা জানতে চাওয়া হবে সেটির(√) বের করুন। রুট সংখ্যাটির সামনে ও পিছনের মৌলিক সংখ্যাটি দিয়ে ঐ সংখাকে ভাগ যায় কিনা দেখুন। যদি ভাগ যায় তবে মৌলিক সংখ্যা না। যেমন ১৪৩ এর রুট করলে পাওয়া যায় ১১.৯৬। এখানে ১১ নিজে মৌলিক সংখ্যা এবং এর পরের মৌলিক সংখ্যা হল ১৩। এই দুইটি সংখ্যা দিয়ে ১৪৩ কে ভাগ যায়। তাই এটি মৌলিক সংখ্যা নয়।
অর্থাৎ ২,৩,৫,৭,১১,১৩,১৭ দিয়ে ভাগ না গেলে বুঝতে হবে সংখ্যাটি মৌলিক সংখ্যা

গুণিতক কাকে বলে, গুণনীয়ক ও গুণিতক কাকে বলে

কোনো সংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে যে গুণফলগুলো পাওয়া যায় তাদেরকে উক্ত সংখ্যাটির গুণিতক বলে।

কোনও সংখ্যাকে পূর্ণ সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে যে সংখ্যাগুলো পাওয়া যায় তাকে ঐ সংখ্যার গুণিতক বলে। অর্থাৎ গুণিতক হচ্ছে যেকোনো সংখ্যাকে পূর্ণসংখ্যা দ্বারা গুণ করে যে গুণফলটা পাওয়া যায়, সেই সংখ্যাটা। মূলত কোনও সংখ্যার গুণিতক হচ্ছে ঐ সংখ্যার নামতা। যেমন: ৩ এর নামতার কথাই বলা যাক। আমরা জানি,

  • ৩ × ১= ৩ 
  • ৩ × ২ = ৬ 
  • ৩ × ৩ = ৯ 
  • ৩ × ৪= ১২ 
  • ৩ × ৫ = ১৫ 
  • ৩ × ৬ = ১৮ 

এখানে ৩ কে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ দিয়ে গুণ করে যথাক্রমে ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮ পাচ্ছি। সুতরাং,  ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮ হল ৩ এর গুণিতক। আবার ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ সংখ্যাগুলোর গুণিতকগুলো যথাক্রমে ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮। কারন আমরা ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ এই প্রতিটি সংখ্যার সাথে ৩ কে গুণ করেছি। যেহেতু কোনও সংখ্যাকে পূর্ণ সংখ্যা দিয়ে গুণ করলে ঐ সংখ্যাটির গুণিতক পাওয়া যায় তাই ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮ সংখ্যাগুলো যথাক্রমে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ এরও গুণিতক। 

গুণিতকের আরেকটি সংজ্ঞা হচ্ছে – একটি সংখ্যা দ্বারা যে সকল সংখ্যা নিঃশেষে বিভাজ্য, সে সকল সংখ্যাকে প্রথম সংখ্যাটির গুণিতক বলে।যেমন ৩ এর গুণিতকগুলোর কথাই বিবেচনা করা যাক। ৩ এর গুণিতকগুলো হল:

৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮, ২১, ২৪, ২৭ ইত্যাদি । 

আরও পড়ুন :- পরিসংখ্যান কাকে বলে, পরিসংখ্যানের প্রকারভেদ, পরিসংখ্যান সূত্র

সহমৌলিক সংখ্যা কাকে বলে

দুই বা ততোধিক সংখ্যার “সাধারণ উৎপাদক” শুধুমাত্র ১ হলে, সংখ্যাগুলোকে পরস্পরের সহমৌলিক বলে।

অর্থাৎ দুইটি সংখ্যা বা তার বেশি সংখ্যার মধ্যে যদি এমন হয় যে, ১ ছাড়া আর কোনো কমন সংখ্যা দিয়ে তাদের ভাগ করা যাচ্ছে না, তবে তারা পরস্পর সহমৌলিক। উল্লেখ্য যে, দুইটি মৌলিক সংখ্যা সবসময়ই পরস্পর সহমৌলিক।   

সহমৌলিক সংখ্যার উদাহরণ

 ১৬ এর মৌলিক উৎপাদক গুলো = ১* ২* ২ *২* ২

২৫ এর মৌলিক উৎপাদকগুলো =১* ৫* ৫  

দেখা যাচ্ছে যে, ১৬ ও ২৫  এর মধ্যে ১ ছাড়া অন্য কোন সাধারণ গুণনীয়ক নেই। সুতরাং ১৬ ও ২৫ পরস্পর সহমৌলিক।

অর্থাৎ ১ বাদে এমন কোনো সংখ্যা নেই যে সংখ্যাটি ১৬কেও ভাগ করতে পারে আবার ২৫কেও ভাগ করতে পারে। 

একটি মৌলিক এবং একটি যোগিক সংখ্যা কি পরস্পর সহমৌলিক হতে পারে

উত্তর হ্যাঁ, হতে পারে, একটি মৌলিক সংখ্যা ও  একটি যৌগিক সংখ্যাও সহমৌলিক হতে পারে।

যেমনঃ ৫ ও ৬ । ৫ মৌলিক সংখ্যা, আবার ৬ যোগিক সংখ্যা। যেহেতু তাদের মাঝে ১ বাদে কোনো উৎপাদক নেই তাই,  তারা এক অপরের সহমৌলিক। এভাবে, ৭ ও ৮, ১১ ও ১৪ ইত্যাদি। 

দুইটি যোগিক সংখ্যা কি পরস্পর সহমৌলিক হতে পারে

উত্তর হ্যাঁ , হতে পারে। যেমনঃ ৮ এবং ৯ দুইটাই যোগিক সংখ্যা কিন্তু তারা পরস্পর সহমৌলিক। এখানে একটা বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, সংখ্যা দুইটির একটি জোড় আরেকটি বিজোড় হতে হবে।দুইটি জোড় সংখ্যা হলে তাদের মধ্যে সাধারণ উৎপাদক ২ থাকবে, তখন আর তারা সহমৌলিক থাকবেনা।

যমজ মৌলিক সংখ্যা কাকে বলে

p যদি মৌলিক হয় এবং p+2 যদি মৌলিক হয় তবে p ও p+2 উভয়কে জমজ মৌলিক সংখ্যা বলা হবে।

অর্থাৎ (p,p+2) আকারের মৌলিক সংখ্যাকে জমজ মৌলিক সংখ্যা বলে। যেমন নমুনা হিসেবে বলা যায়, p=3 হলে , p+2=3+2=5 হবে। কাজেই 3 ও 5 হল জমজ মৌলিক সংখ্যা।

প্রথম ২৫টি মৌলিক সংখ্যার মধ্যে মাত্র ৮টি জমজ মৌলিক সংখ্যা রয়েছে।

উপরের দিকে উঠতে থাকলে এর সংখ্যা আস্তে আস্তে কমতে থাকে।

এক সময় তা বিরল হয়ে পড়ে।

নিচে প্রথম ৩৬টি জমজ মৌলিক সংখ্যা উল্লেখ করা হল।

(৩,৫), (৫,৭), (১১,১৩), (১৭,১৯), (২৯,৩১), (৪১,৪৩), (৫৯,৬১), (৭১,৭৩), (১০১,১০৩), (১০৭,১০৯), (১৩৭,১৩৯), (১৪৯,১৫১), (১৭৯,১৮১), (১৯১,১৯৩), (১৯৭,১৯৯), (২২৭,২২৯), (২৩৯,২৪১), (২৬৯,২৭১), (২৮১,২৮৩), (৩১১,৩১৩), (৩৪৭,৩৪৯), (৪১৯,৪২১), (৪৩১,৪৩৩), (৪৬১,৪৬৩), (৫২১,৫২৩), (৫৬৯,৫৭১), (৫৯৯,৬০১), (৬১৭,৬১৯), (৬৪১,৬৪৩), (৬৫৯,৬৬১), (৮০৯,৮১১), (৮২১,৮২৩), (৮২৭,৮২৯), (৮৫৭,৮৫৯), (৮৮১,৮৮৩), (১০১৯,১০২১)

গুণনীয়ক কাকে বলে

যেসব সংখ্যা দ্বারা কোনো একটি সংখ্যাকে ভাগ করলে কোনো ভাগশেষ থাকে না (ভাগশেষ শূন্য থাকে) সেসব সংখ্যাকে ওই সংখ্যাটির গুণনীয়ক বলে।

যে সকল সংখ্যা দ্বারা কোনও সংখ্যাকে ভাগ করলে কোনও ভাগশেষ থাকে না, সেগুলোকে ঐ সংখ্যার গুণনীয়ক বলে। অর্থাৎ গুণনীয়ক দিয়ে কোনও সংখ্যাকে ভাগ করলে আমরা যে ভাগফলটা পাবো সেটা হবে পূর্ণসংখ্যা। যেকোনো সংখ্যার গুণনীয়ক সবসময় ঐ সংখ্যাটি এবং এক হয়ে থাকে। কারণ যেকোনো সংখ্যা ঐ সংখ্যা এবং এক দিয়ে সবসময়ই নিঃশেষে বিভাজিত হয়। গুণনীয়কের আরেকটি নাম হচ্ছে উৎপাদক। যেমন: ১৫ সংখ্যাটির কথা বিবেচনা করা যাক। ১৫ কে আমরা ১, ২, ৩, ৪, ৫ দ্বারা ভাগ করলে পাই,

  • ১৫÷১=১৫
  • ১৫÷২=৭.৫
  • ১৫÷৩=৫
  • ১৫÷৪=৩.৭৫
  • ১৫÷৫=৩

এখানে ১, ৩, ৫ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল পূর্ণসংখ্যায় পাই। কিন্তু ২,৪ দ্বারা ভাগ করলে আমরা দশমিকে ভাগফল পাই। সুতরাং ১৫ এর গুণনীয়ক হবে ১, ৩, ৫। আবার ১৫ কে ১৫ দিয়ে ভাগ করলে পাই

১৫÷১৫=১

অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও ১৫ নিঃশেষে বিভাজিত হচ্ছে। সুতরাং ১৫ সংখ্যাটিও ১৫র একটি গুণনীয়ক।

কয়েক ধরনের গুণনীয়ক আমরা দেখতে পাই। যেমন- মৌলিক গুণনীয়ক,কৃত্রিম গুণনীয়ক,গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক; যাকে আমরা গ.সা.গু নামে চিনি। 

মৌলিক সংখ্যার গুণনীয়ক কয়টি

মৌলিক সংখ্যার গুণনীয়ক 2 টি

গুণনীয়ক ও গুণিতক এর পার্থক্য

গুণিতকগুণনীয়ক
দুই বা ততোধিক সংখ্যার সাধারণ গুণিতকগুলির মধ্যে যে গুণিতকটি ক্ষুদ্রতম, তাকে প্রদত্ত সংখ্যাগুলির লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক বলে।অন্যদিকে কয়েকটি সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়ক বা উৎপাদকগুলির মধ্যে যেটি গরিষ্ট(বড়ো), তাকে প্রদত্ত সংখ্যাগুলির গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক বলে।
ল.সা.গু শব্দের পূর্ণরুপ হল লঘিষ্ঠ সাধারণ গুণিতক।অন্যদিকে সংখ্যার সাধারণ গুণনীয়কগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড়টিকে তাদের গরিষ্ঠ সাধারণ গুণনীয়ক।
লসাগু (গুণিতক) নির্ণয়ের দুটি পদ্ধতি যথা-
(ক) প্রত্যেক রাশি যৌগিক উৎপাদক বিশ্লেষণ এর দ্বারা ।
(খ) সাধারণ উৎপাদক বিশ্লেষণ এর দ্বারা ।
অন্যদিকে গ.সা.গু.(গুণনীয়ক) নির্ণয় এর দুটি পদ্ধতি আছে। যথা-
(ক) যৌগিক উৎপাদক বিশ্লেষণ এর দ্বারা এবং
(খ) ভাগ পদ্ধতির সাহায্যে।
গুণনীয়ক ও গুণিতক এর পার্থক্য
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | মৌলিক সংখ্যা

Q1. ১ থেকে ১০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যা কয়টি

উত্তর: ২, ৩, ৫, ৭ ।

Q2. ১ থেকে ২০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যা

উত্তর: ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯ ।

Q3. ১ থেকে ৫০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যা

উত্তর: ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯, ২৩, ২৯, ৩১, ৩৭, ৪১, ৪৩, ৪৭ ।

Q4. ০ কি মৌলিক সংখ্যা

উত্তর: শুন্য(০) কে মৌলিক বা যৌগিক কোনো সারিতে ফেলানো হয় না। শুন্য(০) ধনাত্মকও নয়, আবার ঋণাত্মকও নয়। শুধুমাত্র ধনাত্মক সংখ্যাগুলিকেই মৌলিক বা যৌগিক সংখ্যার সারিতে ফেলানো হয়। শুন্য(০) যেহুতু ধনাত্মক সংখ্যা নয়, তাই এটি মৌলিক বা যৌগিক, কোনোটিই নয়।

Q5, ৩০ থেকে ৭০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যা

উত্তর: ৩১, ৩৭, ৪১, ৪৩, ৪৭, ৫৩, ৫৯, ৬১, ৬৭ ।

Q6. ১ থেকে ৩০ পর্যন্ত মৌলিক সংখ্যা কয়টি

উত্তর: ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯, ২৩, ২৯ ।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।