কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি

একটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যার সমূহকে অন্য এক বা একাধিক কম্পিউটার শেয়ার করে ব্যবহার করার জন্য পরষ্পর সংযুক্ত হয়ে থাকে। এই সংযুক্ত হওয়ার সিস্টেমকেই কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলে।

কম্পিউটার সমূহের মাঝে সংযোগ ব্যবস্থা বিভিন্ন ভাবে হতে পারে। যেমন ধরুন আপনার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক ভবনের কম্পিউটারের সাথে অন্য ভবনের কম্পিউটার সমূহের মধ্যে সরাসরি তার বা ক্যবল দিয়ে সংযোগ প্রদান করা যায়। এটি নেটওয়ার্ক সংগযোগের একটি ব্যবস্থা বলতে পারেন।

কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন দূরত্বের কম্পিউটার সমূহের মাঝে সংযোগ স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এক্ষেত্রে ক্যবল বা তার দিয়ে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হয় না। যেমন ধরেন একটি ব্যংকের বিভিন্ন শাখার কম্পইউটার সমূহের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে হয়। ঢাকা শাখার কম্পিউটারের সাথে সিলেট শাখার কম্পিউটারের সংযোগ স্থাপন করতে হলে, এত দূরত্বে সরাসরি তার বা ক্যবল দিয়ে সংযোগ করা সম্ভব নয়। কিন্তু টেলিফোন লাইন মডেম কিংবা স্যাটেলাইট ব্যবহার করে কম্পিউটার সমূহের মাঝে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা যায়।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর উদ্দেশ্য কি

ই বা ততোধিক কম্পিউটারের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয় । এ নেটওয়ার্কের প্রধান উদ্দেশ্য কম্পিউটারসমূহের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার রিসোর্স শেয়ার করা । নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত কোন কম্পিউটারের জন্য রিসোর্স হচ্ছে অন্য কম্পিউটারের এমন কোন উপাদান বা সুবিধা বা তার মধ্যে নেই। যে কোন কম্পিউটারের উপাদানগত সীমাবদ্ধ থাকতে পারে । তবে নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যদি রিসোর্স শেয়ার করা যায় তবে কম্পিউটারে সাহায্যে কাজ করার ক্ষেত্ত অনেক বড় হয়ে যাবে ।

উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি রিসোর্স সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

ফাইল শেয়ারিং

ফাইল শেয়ারিং হলো নেটওয়ার্ক ভুক্ত কম্পিউটার সময়ের মধ্যে সহজেই ফাইল শেয়ার করা যায়। এর ফলে এক কম্পিউটার সেভ করা ফাইল অন্য কম্পিউটার থেকে অ্যাক্সেস করা যায়। অতএব কেউ যদি মনে করে ফাইল শেয়ারিং কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর উদ্দেশ্য কি না । তবে অনায়াসে বলা যায় হ্যাঁ ফাইল শেয়ারিং কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর উদ্দেশ্য।

অধিক আউটপুট

আপনার যদি মনে হয় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মূল উদ্দেশ্য কি। সহজভাবে বলা যাবে অধিকতর আউটপুট বা বেশি থ্রোপুট। অধিকতর আউটপুট হল নেটওয়ার্ক এর ফলে অল্প সময়ে অধিক ফলাফল পাওয়া যায়।

নিরাপত্তা

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর উদ্দেশ্য এরমধ্যে নিরাপত্তা একটি। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীরাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারে ফলে গোপনিয়তা রক্ষা পায়। নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি হচ্ছে একধরনের স্টাডি এখানে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ও তার মধ্যে থাকা বিষয়গুলোর বাইরে কারও এক্সেস অথবা পরিবর্তনের চেষ্টা কে প্রতিরোধ করে।

ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট

কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মূল উদ্দেশ্য এর মধ্যে ডেটাবেস ম্যানেজমেন্ট অন্যতম।কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর ফলে কোন প্রতিষ্ঠান সকল ডাটা সার্ভারে জমা থাকার কারণে কেন্দ্রীয়ভাবে সেগুলো রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা ও ব্যাকআপ রাখা বিভিন্ন কাজে সহজ হয়।

দ্রুত গতি

প্রিয় পাঠক একটি কাজ যদি একটি কম্পিউটারে করা হয় তবে সেটা নিশ্চয়ই ধীরগতিতে হবে। এবং সেই কাজটাই যদি একই সাথে একাধিক কম্পিউটার কাজ করার ফলে দ্রুত গতিতে কাজ করা সম্ভব হয়। এর ফলে আপনার সময়টা অনেকটাই কমে যাবে। যেমন একটি কম্পিউটারে যদি একশ টি প্রিন্ট করতে দেওয়া হয় তবে সেখানে অনেক সময় লেগে যাবে আর সেই একই কাজ যদি দুই বা ততোধিক কম্পিউটারে করা হয় তাহলে নিশ্চয়ই সময়টা অনেক কম লাগবে।

অব্যাহত কাজ

অনেক সময় দেখা যায় কম্পিউটারে কোন একটি কাজ অফিসে গিয়ে করা লাগবে। কিন্তু কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দূরে বসেও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অনেক কাজ করা সম্ভব হয়। ফলে দূরে বা কাছে অব্যাহত নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করা সম্ভব হয়।

হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ারিং

আপনার মনে হতে পারে হার্ডওয়ার রিসোর্স শেয়ারিং কি বা এটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর উদ্দেশ্য কি? হার্ডওয়্যার রিসোর্স শেয়ারিং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের একটি বড় সুবিধা।

আরো পড়ুনঃ ভিটমেট ডাউনলোড করব কিভাবে

এক কম্পিউটারে যুক্ত প্রিন্টার অন্য কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করা যায় এর মাধ্যমে। হার্ডডিস্ক ডেটা সমূহ অ্যাক্সেস করা যাবে কিংবা সংরক্ষণ করা যাবে।

খরচ কম

অনেকগুলো নেটওয়ার্ক সম্মিলিত হয়ে কাজ করলে যেমন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করা যায় তেমন ভাবে রিসোর্স শেয়ারিং এর ফলে সিস্টেম বাস্তবায়নে খরচ কম হয়। একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কাজ করলে সিস্টেম বাস্তবায়নে অনেক অর্থ ব্যয় হয়ে যায়। অথচ সেই কাজটি যদি শতাধিক কম্পিউটারে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করা হয় তবে রিসোর্স শেয়ারিং এর ফলে সিস্টেম বাস্তবায়নে খরচ কম হবে।

বিশ্বাসযোগ্যতা

এতক্ষণে নিশ্চয়ই ভাবছেন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মূল উদ্দেশ্য কী এর মধ্যে আবার বিশ্বাসযোগ্যতার কি আছে? অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধির দরকার। একই ফাইল একাধিক কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা সম্ভব। ফলে কোনো একটা কপি মুছে গেলে তা অন্য কম্পিউটার থেকে সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। এর ফলে মানুষের নেটওয়ার্কের প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।

কাজের সুষম বন্টন

অনেক সময় দেখা যায় যে কাজ বেশি হওয়ায় একটা চাপ পড়ে যায়। কোন কম্পিউটারে যদি কাজের চাপ বেশী হয় তাহলে তা অন্য কম্পিউটারে বন্টন করে দ্রুতগতিতে করা সম্ভব হয়। মূলত এটি কাজের সুষম বন্টন। ধরুন আপনি যদি একা অনেকগুলো কাজ করেন তবে আপনার নিজের ওপর অনেক চাপ আসবে কিন্তু সেই কাজটি যদি দুই বা তার বেশি জন্য করেন তাহলে নিশ্চয়ই আপনার চাপ টি কমে আসবে।

তেমনি কম্পিউটারের কাজ গুলো একই ধরনের একসাথে অনেকগুলো কাজ করার সময় কম্পিউটারেও চাপ পড়ে যায় তাহলে সে কাজ যদি ততাধিক কম্পিউটারে বন্টন করে করা হয় তবে দ্রুত গতিতে করা সম্ভব হবে।

সফটওয়্যার রিসোর্স শেয়ারিং

সবাই যদি একই সফটওয়্যার ইনস্টল করে কাজ করে তবে শুধু একটি মাত্র কাজ করা সম্ভব হবে অন্যগুলো করা হবে না। কিন্তু সবাই যদি আলাদা সফটওয়্যার ব্যবহার করে কাজ করতো তাহলে একসাথে অনেকগুলো কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এক কথায় সফটওয়্যার রিসোর্সশেয়ারিং হলো,প্রত্যকটি কম্পিউটারে একই সফটওয়্যার ইন্সটল না করে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারে ভিন্ন ভিন্ন সফটওয়্যার ব্যবহার করে শেয়ার করা যায়।

তথ্য সংরক্ষণ

অনেক সময় দেখা যায় একটি কম্পিউটারে সকল তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব হয়না। কিন্তু অনেকগুলো কম্পিউটারে অনেক রকম বা সকল তথ্য ভিন্ন ভিন্ন ভাবে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। অনেক সময় অফিস বা কোন প্রতিষ্ঠানের অনেক ধরনের তথ্য সংরক্ষণ করে রাখতে প্রয়োজন হয়। সেগুলো নির্দিষ্ট কোন কম্পিউটারে না রেখে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারের রাখলে সুন্দর ও নিরাপত্তা সহকারে তথ্য সংরক্ষণ করে রাখা যায়।

ই-কমার্স ব্যবহার করা

আপনি যদি মনে করেন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মূল উদ্দেশ্য কী। তবে ই-কমার্স ব্যবহার করা এর একটি অন্যতম উদ্দেশ্য। কেননা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করো অনেক সুবিধা করে দিয়েছে।

ব্যবসায়ীরা নিজেদের মধ্যে তাদের বিভিন্ন ব্যবসায়িক গোপনীয়তা ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারে শেয়ার করে সংরক্ষণ করে রাখতে পারে।

তথ্যর গোপনীয়তা রক্ষা

কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারে তথ্য সংরক্ষণ করা হয় এতে তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা পায়। খুবই গোপনীয় তথ্য অনেক সময় সবার কাছে প্রকাশ হয়ে যায়। এতে সেই অফিস বা প্রতিষ্ঠান গোপনীয়তার ব্যাঘাত ঘটে। এটি মূলত কোন একটি নির্দিষ্ট কম্পিউটারে রাখার কারণে হয়। তাই দুই বা ততোধিক কম্পিউটারে তথ্য সংগ্রহ করে রাখলে তথ্যর গোপনীয়তা রক্ষা পায়।

ইমেইল আদান প্রদান

কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে খুব সহজে একটি কম্পিউটার থেকে অন্য একটি কম্পিউটারে বা ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারে অফিস-আদালতের বিভিন্ন তথ্য ইমেইলের মাধ্যমে অনায়াসে আদান-প্রদান করা যায়।

বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করা

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর প্রধান উদ্দেশ্যের মধ্যে বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করা। যেমন আপনি কোন অফিসে কোন একটি কাজ করবেন কিন্তু অফিসে না গিয়ে, তবে আপনি এটি খুব সহজেই করতে পারবেন কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। এক কথায় দূরে বসে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অফিসের বা বাসা বাড়ির কাজ করা সম্ভব হয়। যার ফলে দূরে বা কাছে অব্যাহত অথবা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে কাজ করা সম্ভব হয়।

আউটপুট আদান-প্রদান

নেটওয়ার্ক এর ফলে স্বল্প সময়ে অধিক ফলাফল পাওয়া যায়। যেমন কোন স্কুল প্রতিষ্ঠান এর প্রশ্নপত্র অথবা ফলাফল নির্ণয় করবেন। আউটপুটের মাধ্যমে একসাথে অনেকগুলো ফলাফল নির্ণয় করতে পারবেন বা বের করতে পারবেন।

অফিসের কাজ

ধরুন আপনি কোথাও ঘুরতে গিয়েছেন অফিসে যেতে পারবেন না। এ সময় অফিসের কোন একটা কাজ বা তথ্য সংরক্ষণ করা লাগবে। সেই কাজটি আপনি আপনার ল্যাপটপ দিয়ে কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে অফিসে না গিয়েও সম্পন্ন করতে পারবেন।

ফাইল ডেটা রিসোর্স

ফাইল ডেটা রিসোর্স এর মাধ্যমে ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটার থেকে ফাইল বা ডেটা শেয়ার করতে পারবেন। মনে করেন আপনার কাছে একটি ফাইল বা ডেটা রয়েছে এবং অন্য একটি কম্পিউটারে আরেকটি ফাইল ডেটা রয়েছে। কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আপনি তার সাথে শেয়ার বা সংগ্রহ করতে পারবেন মূলত এটি ফাইল ডেটা রিসোর্স।

ইনফর্মেশন রেসোর্স শেয়ার

অনেক সময় অফিসের কর্মচারীদের মধ্যে অফিসের অনেক ইনফর্মেশন একে অন্যের সাথে শেয়ার করার প্রয়োজন হয় ওএকসাথে কাজ করতে হয়। এক কথায় একটি অফিসের কম্পিউটার গুলো সমন্বয়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করে একে অপরের সাথে খুব সহজে ইনফরমেশন শেয়ার করা যায় মূলত একেই কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ইনফর্মেশন রেসোর্স শেয়ার বলা হয়।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর কাজ কি

তথ্যের আদান প্রদান করা জন্য একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বিভিন্ন ধরনের কাজ গুলো করে থাকে। যে কাজ গুলো করার ক্ষেএে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রয়োজন।

  • Email, instant messaging, video ইত্যাদির মাধ্যমে যোগাযোগ করা।
  • কম্পিউটারের একটি ডিভাইস থেকে আর একটি কম্পিউটারে file share করার ক্ষেএে।
  • বিভিন্ন remote system গুলোর মাধ্যমে software এবং operating program গুলো শেয়ার করা।
  • নেটওয়ার্ক ইউজার দের বিভিন্ন তথ্য এবং ডাটা গুলোকে access এবং maintain করার সুবিধা দেওয়া।
  • scanners, printers এবং photocopiers এর মতো বিভিন্ন ডিভাইস গুলোকে শেয়ার করা ক্ষেএে।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কত প্রকার ও কী কী

ব্যবহারকারী তথা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কের উৎপত্তি হয়েছে। যেমন ধরুনঃ-

মালিকানা অনুসারে নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ

মালিকানা ভিত্তিতে নেটওয়ার্ক ২ প্রকার

  • প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (Private Network)
  • পাবলিক (Public Network)

টপোলজির ভিত্তিতে প্রকারভেদ

টপোলজির উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্ক প্রধানত চার প্রকারঃ

  • স্টার টপোলজি (Star Topology)
  • রিং টপোলজি (Ring Topology)
  • বাস টপোলজি (Bus Topology)
  • মেশ টপোলজি (Mesh Topology)

সার্ভিস প্রদান ও নিয়ন্তণ কাঠামো নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ

কার্যাবলির বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নেটওয়ার্ক কে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

  • পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক (Per-to-Per Network)
  • ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক(Client Server Network)

কার্যক্ষেত্রের ভিত্তিতে প্রকারভেদ

কার্যক্ষেত্রের পরিধির উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্কে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়

  • লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Local Area Network)
  • মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (Metropolitan Area Network)
  • ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (Wide Area Network)

সুইচিং এর উপর ভিত্তি করে প্রকারভেদ

সুইচিং কৌশলের উপর ভিত্তি করে নেটওয়ার্কে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়

  • সার্কিট সুইচ নেটওয়ার্ক (Circuit switched Network)
  • ম্যাসেজ সুইচ নেটওয়ার্ক (Message Switched Network)
  • প্যাকেট সুইচ নেটওয়ার্ক (Packet Switch Network)

নির্মাণ কৌশলের ভিত্তিতে প্রকারভেদ

নির্মান কৌশলের ভিত্তিতে নেটওয়ার্ক মূলত ২ প্রকার।

  • পয়েন্ট টু পয়েন্ট নেটওয়ার্ক (Point to Point Network)
  • ব্রডকাষ্ট বা মাল্টিপয়েন্ট নেটওয়ার্ক (Broadcast or Multipoint Network)

ভৌগলিক বিস্তৃতি অনুসারে কম্পিউটার নেটওয়ার্ককে চার ভাগে ভাগ করা যায় –

Personal Area Network (PAN)

PAN মূলত গড়ে তোলা হয় কোন ব্যক্তির নিকটবর্তী ব্যবহৃত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য। এ ধরনের নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সাধারণত ১০ মিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। PAN এ ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডিভাইস হচ্ছে ল্যাপটপ, পিডিএ, বহনযোগ্য প্রিন্টার, মোবাইল ফোন ইত্যাদি।

PAN বৈশিষ্ট্য

  • বাড়ি, অফিস, গাড়ি বা যেকোনো স্থানে সহজেই এই ধরনের নেটওয়ার্ক তৈরি করা যায়।
  • খরচ তুলনামূলক কম।
  • তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। 
  • ডিভাইসগুলোর সংযোগ তারযুক্ত বা তারবিহীন হতে পারে।
  • তারবিহীন মাউস, কীবোর্ড এবং ব্লুটুথ সিস্টেম ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।

Local Area Network (LAN)

কোনো বড় বিল্ডিং, পাশাপাশি দুটি ভবন, বড় কোনো গবেষণাগার অথবা কোনো স্কুল-কলেজের ক্যাম্পাস এরিয়ার মধ্যে অবস্থিত কম্পিউটার সমূহের মধ্যে যে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয় তাকে LAN বলে। 

LAN বৈশিষ্ট্য

  • নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি সাধারণত ১০ km বা তার কম হয়ে থাকে।
  • ডেটা প্রবাহের গতি ১০ Mbps থেকে ১০০ Mbps পর্যন্ত হতে পারে।
  • ট্রান্সমিশন মিডিয়া হিসেবে সাধারণত Coaxial Cable, UTP বা Optical Fiber Cable ব্যবহৃত হয়। 
  • তুলনামূলক কম ব্যয়বহুল।
  • রিপিটার, হাব প্রভৃতি নেটওয়ার্কিং ডিভাইস সমূহ ব্যবহৃত হয়। 

Metropolitan Area Network (MAN)

কোনো শহরে অবস্থিত একাধিক LAN এর সমন্বয়ে MAN গঠিত হয়। সাধারণত একটি শহরের কোনো ব্যাংক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শাখা অফিসের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য এই ধরনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয়। এছাড়া কোনো শহরের ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক MAN এর উদাহরণ। 

MAN বৈশিষ্ট্য

  • নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি ১০০ কিমি এর মধ্যে থাকে।
  • ডেটা প্রবাহের গতি ১০ Mbps থেকে ১০ Gbps পর্যন্ত।
  • ব্যয় LAN অপেক্ষা বেশি।
  • ট্রান্সমিশন মাধ্যম হিসেবে টেলিফোন লাইন, মডেম বা মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয়। 

Wide Area Network (WAN)

বিভিন্ন ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থিত একাধিক LAN বা MAN এর সমন্বয়ে যে নেটওয়ার্ক গড়ে উঠে তাকে WAN বলে। অর্থাৎ WAN হলো এক দেশ হতে অন্য দেশ বা এক মহাদেশ হতে অন্য মহাদেশের মধ্যে স্থাপিত কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ব্যবস্থা। WAN এর একটি অন্যতম উদাহরণ হলো ইন্টারনেট। 

WAN বৈশিষ্ট্য

  • এই ধরনের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত ভৌগোলিক এলাকা জুড়ে গড়ে উঠে। 
  • ট্রান্সমিশন মিডিয়া হিসেবে টেলিফোন লাইন, ফাইবার অপটিক ক্যাবল, স্যাটেলাইট মাইক্রোওয়েভ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
  • বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং ডিভাইস যেমন রাউটার, মডেম প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়।

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর সুবিধা, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর সুবিধা ও অসুবিধা

একটি নেটওয়ার্ক সংযোগ এবং যোগাযোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল:

নেটওয়ার্কের সুবিধা

একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের অনেক সুবিধা রয়েছে যা নিম্নরূপ:

  • নেটওয়ার্কের সাহায্যে যোগাযোগ করা খুবই সহজ। মানুষ সহজেই অন্য গ্রুপের মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
  • নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই যেকোনো ফাইল আদান প্রদান করতে পারি।
  • নেটওয়ার্কের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আমরা হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার দুটোই শেয়ার করতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, প্রিন্টারগুলি একটি নেটওয়ার্কে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ভাগ করা যেতে পারে।
  • নেটওয়ার্কে ডেটা স্থানান্তরের গতি খুব দ্রুত।
  • আমরা একটি পাসওয়ার্ড দিয়ে নেটওয়ার্কের যেকোনো সংবেদনশীল ফাইল রক্ষা করতে পারি।

নেটওয়ার্কের অসুবিধা

একটি মুদ্রার যেমন দুটি দিক থাকে, তেমনি নেটওয়ার্কের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। নেটওয়ার্কের কিছু অসুবিধা নিচে দেওয়া হল-

  • নেটওয়ার্কে হ্যাকিংয়ের ঝুঁকিও রয়েছে।
  • কম্পিউটার ভাইরাস সহজেই একটি নেটওয়ার্কে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  • একটি বড় নেটওয়ার্ক পরিচালনা করা খুবই জটিল এবং প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
  • একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করতে, নেটওয়ার্ক ক্যাবলিং এবং ফাইল সার্ভারের খরচ ব্যয়বহুল হতে পারে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | কম্পিউটার নেটওয়ার্ক

Q1. কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কাকে বলে

Ans – যখন দুই বা ততোধিক কম্পিউটার একে অপরের সাথে ওয়্যার বা বেতার মাধ্যমে সংযোগ করে, যোগাযোগ স্থাপন করে এবং তথ্য ও সম্পদ বিনিময় করে, তখন তাকে নেটওয়ার্ক বলা হয়। আমরা নেটওয়ার্ককে বলি শুধুমাত্র কম্পিউটারের আন্তঃসংযোগ।

Q2. কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মূল উদ্দেশ্য কী

Ans – কম্পিউটার নেটওয়ার্কের এর মূল উদ্দেশ্য কম্পিউটারের মাধ্যমে পারস্পরিক যােগাযােগ। এক্ষেত্রে হার্ডওয়্যার রিসাের্স শেয়ার, সফটওয়্যার রিসাের্স শেয়ার ও ইনফরমেশন রিসাের্স শেয়ার কাজের সূক্ষতা ও গতি অনেক বাড়িয়ে দেয়।

Q3. কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর ব্যবহার

Ans – বর্তমান সময়ে নেটওয়ার্ক এর ব্যবহার অনেক বৃস্তিত। তবে সাধারণত নিম্নলিখিত কাজের জন্য নেটওয়ার্ক এর ব্যবহার করা হয়-
1. নেটওয়ার্কের সাহায্যে, একটি কম্পিউটার সহজেই অন্য কম্পিউটারের সাথে ডেটা বিনিময় করতে পারে।
2. নেটওয়ার্ক ব্যবহারে যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে গেছে। দূরে বসে থাকা ব্যক্তির সাথে আমরা এমনভাবে কথা বলতে পারি যেন সে আমাদের কাছাকাছি।
3. নেটওয়ার্কের সাহায্যে আমরা তথ্যের পাশাপাশি সম্পদও ভাগ করতে পারি।
4. নেটওয়ার্কের সাহায়্যে আমারা সফ্টওয়্যার ভাগ করে ব্যবহৃত করতে পারি।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।