মাটি দূষণ কাকে বলে, মাটি দূষণের কারণ, মাটি দূষণের কারণ ও ফলাফল

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মাটি দূষণ কি

যখন মাটিতে অস্বাভাবিকভাবে বেশি পরিমাণে ক্ষতিকারক যৌগ উপস্থিত থাকে, তখন তাকে মাটি দূষণ বলে। এটিতে থাকা অসংখ্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির পরিপ্রেক্ষিতে, এটি একটি গুরুতর পরিবেশগত উদ্বেগ এবং তাই একটি প্রাসঙ্গিক বৈশ্বিক সমস্যা। এটা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে সমস্ত মাটিতে এমন পদার্থ রয়েছে যা মানুষ এবং অন্যান্য জীবন্ত জিনিসের জন্য বিপজ্জনক বা ক্ষতিকর। তবে, দূষণ মুক্ত মাটিতে তাদের কম পরিমাণের কারণে এই যৌগগুলি স্থানীয় পরিবেশকে বিপন্ন করে না। মাটিকে দূষিত বলে মনে করা হয় যখন এই ক্ষতিকারক যৌগের এক বা একাধিক ঘনত্ব জীবন্ত জিনিসের ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট বেশি হয়।

মাটি দূষণের মূল কারণ

  • কৃষি (কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহার)
  • বিশাল শিল্প কার্যক্রম
  • দুর্বল ব্যবস্থাপনা বা বর্জ্য নিষ্কাশনের অদক্ষতা
  • মাটি দূষণের মাত্রা সরাসরি মাটিকে দূষিত করার ক্ষেত্রে জড়িত অসুবিধাগুলিকে প্রভাবিত করে। একটি এলাকা যত বেশি দূষিত, পরিচ্ছন্নতার জন্য তত বেশি সংস্থান প্রয়োজন।

মাটি দূষণ কাকে বলে

রোদ, বৃষ্টি, বায়ুপ্রবাহ, পানিস্রোত, হিমবাহ, অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিকম্প প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে শিলারাশি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পৃথিবী পৃষ্ঠের উপরিভাগে যে নরম আবরণ সৃষ্টি হয়েছে তাকে মাটি বলে।

মৃত্তিকার উপরই আমরা বসবাস করি এবং গাছপালাসহ নানা ধরনের ফসল উৎপাদন করে জীবনধারণ করি।

শিল্প বর্জ্য, কৃষি বর্জ্য, তেজষ্ক্রিয় বর্জ্য, জমাকৃত আবর্জনা এবং বিভিন্ন জৈব উপাদান মৃত্তিকার যে ক্ষতিসাধন করে তাই হলো মৃত্তিকা দূষণ।

মাটি দূষণের সংজ্ঞা

মাটি দূষণ বলতে ভুপৃষ্ঠের উপরিভাগের মাটির গুণগত মানের অবনমন ঘটাকে বোঝায়। পৃথিবীর ব্যাপক জনসংখ্যার চাপ, মাত্রাতিরিক্ত জনগণের খাদ্য চাহিদা পুরণের জন্য প্রগাঢ় কৃষির স্বার্থে কষিজমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক, রাসায়নিক সার, শিল্পকেন্দ্রের কঠিন আবর্জনা, শহরের ও গৃহস্থালীর সৃষ্ট আবর্জনা প্রভৃতির প্রভাবে ভূমিভাগের স্বাভাবিক গুণমানের অবনমন ঘটাকেই বলা হয় মাটি দূষণ (Soil Pollution)।

মাটি দূষণের কারণ ও ফলাফল

মাটি দূষণ বলতে মানুষের ক্রিয়াকলাপের ফলে মাটিদূষণ, মাটি ক্ষয়, মরু বিস্তার, মাটির লবনাক্তকরন প্রভৃতি পরিবেশের সার্বিক গুনমান হ্রাস কে বোঝায়। মাটি এক গুরুতবপূর্ন সম্পদ। মাটির অপরের স্তরের উৎকর্ষ মানের ওপর মাটির উর্বরতা ও উৎপাদনশীলতা নির্ভর করে। কিন্তু মানুষ সৃষ্ট বিভিন্ন দূষণের ফলে মাটির ওপরের স্তরের পুষ্টি পদার্থ অপসারিত হচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষুদ্র জীবানুর ক্রিয়াকলাপে ব্যাঘাত্ ঘটছে এবং মাটিতে বাইরের জৈব ও অজৈব উপাদানের সংযোজন ঘটছে। 

মাটির দূষক – মাটির দূষণ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন উপাদান গুলি হল – ১) বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, প্রোটোজোয়া, কৃমি প্রভৃতি সজীব দূষক।  ২) সালফেট, ফসফেট প্রভৃতি বিভিন্ন অজৈব দূষক, ভারী ধাতু (সিসা, পারদ, ক্যাডমিয়াম প্রভৃতি)। লবন, অ্যাসিড প্রভৃতি অজীব দূষক।  ৩) বিভিন্ন জৈব ক্লোরিন, কীটনাশক, প্লাস্টিক, পলিথিন প্রভৃতি জৈব দূষক। 

মাটি দূষণের উৎস

ভূপৃষ্ঠের ভূমিভাগ বা মৃত্তিকা দূষণের উৎস গুলি হল—

(i) অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃষিকাজ ভূমি দূষণের অন্যতম কারণ। একই জমিতে বারংবার একই ফসল চাষ, অত্যধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার, দুটি ফসল রোপণের মধ্যে ব্যবধান খুবই কম থাকায় ভূমি দূষণ ঘটেছে।

(ii) শিল্পকেন্দ্রগুলি থেকে সৃষ্ট বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলি ভূমি দূষণ ঘটায়।

(iii) হাঁস-মুরগি প্রতিপালন ও পশুপালনের প্রভাবে ভূমিভাগ দূষিত হয়। 

(iv) পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্জ্যপদার্থ, কিংবা, পারমাণবিক বিস্ফোরণজনিত কারণে ভূমিভাগ দূষিত হয়। 

(v) পৌর সংস্থাগুলির স্তূপীকৃত কঠিন আবর্জনা থেকে ভূমি দূষণ ঘটে।

(vi) বিভিন্ন প্রাণীর রেচন পদার্থ ভূমি দূষণ ঘটায়।

(vii) অম্লবৃষ্টির প্রভাবে ভূমিভাগের অম্লের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ভূমিভাগ দূষিত হয়। 

(viii) ব্যাপক ও যথেচ্ছভাবে পলিথিন, প্লাস্টিকের ব্যবহার ভূমি দূষণ ঘটাতে সাহায্য করে।

মাটি দূষণের কারণ, মাটি দূষণের ৫টি কারণ

সাধারণত মৃত্তিকা দূষণের ক্ষেত্রে সে সকল কারণগুলো কাজ করে থাকে। তা বর্ণনা করা হলো।

১. শিল্প-কারখানার বর্জ্য :

শিল্প-কারখানার বর্জ্য পদার্থ মৃত্তিকার সাথে মিশে দূষণ ঘটায়। শিল্প-কারখানার কঠিন বর্জ্য, রাসায়নিক উপাদান প্রভৃতি দীর্ঘদিন মৃত্তিকায় মিশলে মৃত্তিকা তার স্বাভাবিক গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে।

২. কৃষি ও গৃহস্থালি বর্জ্য :

ফসলের পরিত্যক্ত অংশ জমানো এবং পোড়ানো, গবাদি পশুর মলমূত্র, কৃষি যন্ত্রপাতির অবশিষ্টাংশ দীর্ঘদিন ধরে মাটিতে ফেলে রাখলে মাটির গুণাগুণের উপর প্রভাব পড়ে। এছাড়া গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের অবশিষ্টাংশ, প্রাণি বর্জ্য, খাদ্যের আঁশ, মিউনিসিপ্যালের বর্জ্য, পলিথিন ইত্যাদি মাটিতে পড়ে থাকলে মাটি দূষিত হয়।

৩. রাসায়নিক সার ও কীটনাশক :

মৃত্তিকা দূষণের অন্যতম কারণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার। ক্রমবর্ধিষ্ণু জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে জমিতে অধিক হারে ফসল ফলানোর জন্য অধিক হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় কীটনাশকের বিষক্রিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ থাকে যা মৃত্তিকার উর্বরতা হ্রাস, কেঁচোসহ, উপকারী কীটপতঙ্গ এবং বিভিন্ন অনুজীব ধ্বংস করে থাকে।

এছাড়া রাসায়নিক সার ব্যবহারের পুনরাবৃত্তির ফলে মৃত্তিকায় অপ্রয়োজনীয় রাসায়নিক যৌগের পরিমাণ বাড়ে, অন্যদিকে হিউমাস ও নাইট্রোজেনের মাত্রা কমে যায়। এভাবে মৃত্তিকা দূষিত হতে থাকে।

৪. মাটি পোড়ানো :

সাধারণত ইটভাটার স্থানে মাটি পোড়ানো, ক্ষেতের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর ফলে মাটি পুড়ে গেলে উৎপাদন ক্ষমতা কমে যায় এবং দূষণ ঘটে।

৫. এসিড বৃষ্টি :

বৃষ্টির পানির সাথে সালফিউরিক এসিড, নাইট্রিক এসিড, হাইড্রোজেন ক্লোরাইড ইত্যাদি রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত অবস্থায় ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হয়। এই ধরনের বৃষ্টিপাতকে বলে এসিড বৃষ্টি। সাধারণত শিল্পাঞ্চলে অধিক হারে জীবাশ্ম জ্বালানি ও সালফাইড আকরিক পোড়ানোর ফলে এ ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। এতে মৃত্তিকা দূষিত হয়।

৬. মৃত্তিকার লবণাক্ততা :

মৃত্তিকার লবণাক্ততা উর্বরতা হ্রাসের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। সামুদ্রিক পানি জলোচ্ছ্বাসের মাধ্যমে ভূ-অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মৃত্তিকাকে লবণাক্ত করে।

৭. বন উজাড় :

ব্যাপকহারে বন উজাড় করলে গাছপালার অভাবে মাটির আর্দ্রতা এবং হিউমাস কমে গিয়ে উর্বরতা শক্তি হ্রাস পায় এবং দূষণ ঘটে।

৮. প্রাকৃতিক উৎস :

বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, ভূমিধ্বস, ভূমিক্ষয়, প্রবল বায়ুপ্রবাহ, অতিবৃষ্টি প্রভৃতি মৃত্তিকা দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৯. চিকিৎসা বর্জ্য :

চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম যেমন- সিরিঞ্জ, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি দীর্ঘদিন মাটিতে ফেলে রাখলে মাটির গুণগতমান বিনষ্ট হয়। মাটির উপকারী কীটপতঙ্গগুলো আক্রান্ত হয় এবং দূষণ ঘটে। এছাড়া পারমানবিক পরীক্ষা, মানুষের মলমূত্র, জলাবদ্ধতা প্রভৃতি কারণেও মৃত্তিকা দূষিত হয়।

মাটি দূষণের ফলাফল

নিম্নে মৃত্তিকা দূষণের ফলাফল সমূহ উল্লেখ করা হলো

১. উৎপাদন হ্রাস :

মৃত্তিকা দূষণের প্রধান প্রভাব পড়ে কৃষি উৎপাদনে। অধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে সাময়িকভাবে অধিক উৎপাদন হলেও দীর্ঘমেয়াদে মৃত্তিকা গুণাগুণ হারিয়ে ফেলে উৎপাদন হ্রাস পায় ।

২. মৃত্তিকার ভৌত রাসায়নিক অবক্ষয় :

মৃত্তিকা দূষণের ফলে যেসব ভৌত রাসায়নিক অবক্ষয় ঘটে তার মধ্যে রয়েছে ধারণ ক্ষমতা হ্রাস, অনুজৈবিক কার্যাবলি হ্রাস, কণার ঘনত্ব বৃদ্ধি, দৃঢ়তা ও চাপ বৃদ্ধি, কীটপতঙ্গের কার্যাবলি এবং বৈচিত্র্যতা‌ হ্রাস পাওয়া। এছাড়া মৃত্তিকার লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেতে পারে।

৩. জীববৈচিত্র্য হ্রাস :

মৃত্তিকা দূষিত হলে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায়। কারণ মৃত্তিকা দূষণের ফলে প্রাণির খাদ্য চক্র বিঘ্নিত হয়, জৈব পদার্থ হ্রাস পায়, ভূমিধ্বস হয় এবং বায়োমাস হ্রাস পায়। ফলে জীববৈচিত্র্য তার স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে পারে না।

৪. মানবদেহে প্রভাব :

মৃত্তিকায় স্তুপ হয়ে থাকা আবর্জনা জনজীবনে স্বাস্থ্যহানি ঘটায়। মাটিতে মিশে যাওয়া রাসায়নিক দূষকসমূহ মানুষসহ অন্যান্য জীবের মৃত্যুও ঘটাতে পারে। এছাড়া ভারী ধাতুকণা মানবদেহে প্রবেশ করে হাঁপানি, ক্যান্সার, চর্মরোগ ইত্যাদি সৃষ্টিতে সহায়তা করে।

আরও পড়ুন :– শব্দ দূষণ কাকে বলে, শব্দ দূষণের কারণ ও প্রতিকার

মাটি দূষণ ছবি

মাটি দূষণের প্রভাব

মাটি দূষণের কারণে বিস্তৃত প্রতিকূল প্রভাব মানুষ, প্রাণী, গাছপালা এবং সামগ্রিকভাবে পরিবেশের ক্ষতি করে। শিশুরা রোগের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, তাই দূষিত মাটি তাদের জন্য বেশি বিপজ্জনক। এই উপধারাটি মাটি দূষণের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব সম্পর্কে বিশদে যায়।

মানুষের উপর প্রভাব

দূষিত মাটিতে মানুষের সংস্পর্শে আসার কিছু স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়েছে। নিম্নলিখিত সারণীতে, প্রার্থীরা মানুষের উপর মৃত্তিকা দূষণের সমস্ত স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলির একটি বিশদ বিবরণ পাবেন।

মানুষের উপর মাটি দূষণের প্রভাব

স্বল্পমেয়াদী প্রভাব 

দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমি। কাশি, বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্ট। ত্বক এবং চোখের জ্বালা। ক্লান্তি এবং দুর্বলতা।

দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব

উচ্চ মাত্রার সীসার এক্সপোজারের ফলে স্নায়ুতন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। শিশুরা বিশেষ করে নেতৃত্বের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। CNS (সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম) এর বিষণ্নতা। কিডনি এবং লিভারের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষতি। ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বেশি।

জীববৈচিত্র্যের উপর প্রভাব

বায়োক্যাকুমুলেশন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, দূষিত মাটিতে জন্মানো গাছগুলি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মাটি দূষণকারী সংগ্রহ করতে পারে।

  • তৃণভোজীরা যখন এই গাছগুলি খায় তখন সমস্ত জমে থাকা দূষক খাদ্য শৃঙ্খলে স্থানান্তরিত হয়। এর ফলে অনেক উপকারী প্রাণীর প্রজাতি বিলুপ্ত বা বিলুপ্ত হতে পারে।
  • উপরন্তু, এই টক্সিনগুলির খাদ্য শৃঙ্খলে আরোহণের সম্ভাবনা রয়েছে এবং অবশেষে মানুষের মধ্যে রোগ হিসাবে উপস্থিত হয়।
  • ইকোসিস্টেমের উপর প্রভাব
  • মাটি দূষণ এবং বায়ু এবং জল দূষণের মধ্যে একটি স্পষ্ট যোগসূত্র বিদ্যমান কারণ মাটির উদ্বায়ী রাসায়নিক বায়ু দ্বারা আকাশে উড়ে যেতে পারে বা ভূপৃষ্ঠের জলাধারে প্রবেশ করতে পারে।
  • উপরন্তু, এটি পরিবেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে অ্যামোনিয়া নিঃসরণ করে অ্যাসিড বৃষ্টির কারণ হতে পারে।

বেশ কিছু অণুজীব যা মাটির গঠন উন্নত করে এবং জৈব পদার্থের ভাঙ্গনে সাহায্য করে তারা অম্লীয় মাটির প্রতিকূল।

মাটি দূষণের ক্ষতিকর প্রভাবগুলি মাটির গঠন এবং গুণমানকেও প্রভাবিত করে।

মাটি দূষণের প্রতিকার, মাটি দূষণ প্রতিরোধের উপায়

মৃত্তিকা দূষণের ফলে পরিবেশে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। মাটির সাথে যেহেতু আমাদের সম্পর্ক নিবিড় তাই এটি দূষণরোধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। নিম্নোক্ত উপায়ে মৃত্তিকা দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে:-

  • যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ না করা।
  • পরিমিত পরিমাণে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা।
  • জমিতে জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানো।
  • গবাদি পশুসহ অন্যান্য প্রাণির মৃতদেহ মাটির গভীরে গর্ত করে পুতে ফেলা।
  • পরিত্যক্ত যন্ত্রপাতির ভাঙ্গা অংশ মাটিতে ফেলে না রেখে পুন:ব্যবহার করা।
  • শিল্প-কারখানার বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থা করা এবং পুন: ব্যবহারের উপায় বের করা।
  • মাটিতে ইঁট না পুড়িয়ে যান্ত্রিক উপায়ে পোড়ানোর উপায় বের করা।
  • পারমানবিক পরীক্ষা এবং বোমার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা।
  • পাঠ্যসূচিতে দূষণ সম্পর্কে পাঠদান ও সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং
  • আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রভৃতি।
  • দূষিত মাটি খনন করা হয় এবং তারপর দূরবর্তী, জনবসতিহীন এলাকায় পরিবহন করা হয়। তাপীয় প্রতিকার ব্যবহার করা হয় দূষককে জোরপূর্বক বাষ্প পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে অপসারণের জন্য, যেখানে
  • সেগুলিকে বাষ্প নিষ্কাশন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংগ্রহ করা যেতে পারে।
  • দূষিত মাটি পরিষ্কার করতে বায়োরিমিডিয়েশন এবং ফাইটোরিমিডিয়েশনে উদ্ভিদ এবং অণুজীব ব্যবহার করা হয়।
  • ভারী ধাতু দূষক তৈরি করতে সাহায্য করার জন্য মাইকোরিমিডিয়েশনে ছত্রাক ব্যবহার করা হয়।

মৃত্তিকা দূষণ বলতে ক্ষতিকারক পদার্থ দিয়ে পৃথিবীর মাটির দূষণকে বোঝায়, যা এর প্রাকৃতিক উর্বরতা, গঠন এবং জীববৈচিত্র্যকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে। মানব ক্রিয়াকলাপ যেমন শিল্প বর্জ্য নিষ্কাশন, কৃষি, খনি, এবং কৃষি রাসায়নিক ব্যবহার মাটি দূষণে প্রধান অবদানকারী।

বিষাক্ত রাসায়নিক, ভারী ধাতু, কীটনাশক, এবং অনুপযুক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা অনুশীলনগুলি মাটিতে প্রবেশ করে, যা পরিবেশ এবং মানব স্বাস্থ্য উভয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করে। মৃত্তিকা দূষণ প্রশমিত করার জন্য টেকসই কৃষি পদ্ধতি অবলম্বন করা, যথাযথ বর্জ্য নিষ্পত্তির প্রচার করা এবং এই অত্যাবশ্যক সম্পদকে রক্ষা করার জন্য এবং একটি স্বাস্থ্যকর এবং টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পরিবেশগত বিধি প্রয়োগ করা প্রয়োজন।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | মাটি দূষণ

Q1. মাটি দূষণের প্রধান কারণ কি

Ans – মাটি দূষণ বা মৃত্তিকা দূষণ বলতে রাসায়নিক বর্জ্যের নিক্ষেপ কিংবা ভূ-গর্ভস্থ ফাটলের কারণে নিঃসৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণের কারণে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়াকে বুঝানো হয়ে থাকে।

Q2. মাটি দূষণের ফলে কোন প্রাণী সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়

Ans – মাটি দূষণের সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্ভাবনা যে প্রাণীটির তা হল কেঁচো।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।