জড়তা কাকে বলে, জড়তার ভ্রামক কাকে বলে, জড়তার ভ্রামক এর সূত্র

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

জড়তা কাকে বলে

কোনো বস্তু যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থায় থাকার প্রবনতা কেই জড়তা বলে।

জড়তাকে আমরা এইভাবেও সংজ্ঞায়িত করতে পারি যে, কোনো বস্তুর গতির তথা বেগের পরিবর্তন না হতে চাওয়ার প্রয়াসকেই জড়তা বলে।

নিউটনের প্রথম সূত্রে এই জড়তার এ ধারণা দেওয়া হয়েছে। যে ” বাহ্যিক বল প্রয়োগ না করলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সরল পথে সম বেগে চলতে থাকবে।”

এখানে একটু খেয়াল করলে আমরা দেখতে পাই যে বল প্রয়োগ না করলে সে যে অবস্থায় ছিল সেই অবস্থায় থাকতে চায়, এবং এই থাকতে চাওয়ার প্রয়াস বা প্রবনতাই জড়তা।

বস্তু যে অবস্থায় আছে চিরকাল সে অবস্থায় থাকতে চাওয়ার যে প্রবণতা বা সে অবস্থা বজায় রাখতে চাওয়ার যে ধর্ম তাকে জড়তা বলে।

কোনো বস্তুর জড়তা এর ভরের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ ভর হচ্ছে এর জড়তার পরিমাপ। যে বস্তুর ভর বেশি তার জড়তা বেশি। অন্যভাবে বলা যায়, যে বস্তুর জড়তা বেশি তাকে গতিশীল করা, বেগ হ্রাস বা বৃদ্ধি করা কিংবা বেগের দিক পরিবর্তন করা তত কঠিন।

জড়তার ভ্রামক কি

একটি কণার ভর ও ঘূর্ণন অক্ষ হতে এর লম্ব দূরত্বের বর্গের গুণফলকে উক্ত কণার জড়তার ভ্রামক বলে। বস্তুর মধ্যস্থিত সবগুলো কণার জড়তার ভ্রামকের সমষ্টিকে উক্ত বস্তুর জড়তার ভ্রামক বলে।

কোনো অক্ষের সাপেক্ষে ঘূর্ণনরত দৃঢ় বস্তুর কণাগুলোর ভর এবং ঘূর্ণন অক্ষ থেকে এদের দূরত্বের বর্গের গুণফলের সমষ্টিকে ওই অক্ষের সাপেক্ষে বস্তুর জড়তার ভ্রামক বলে।

কোনো একটি অক্ষের সাপেক্ষে ঘূর্ণনরত একটি বস্তুর ঘূর্ণন গতির পরিবর্তনকে বাধা দেওয়ার প্রয়াস হচ্ছে জড়তার ভ্রামক ।

একটা বস্তু সরলেরেখায় চললে ভরের যে ভূমিকা , কৌণিক গতিতে চললে জড়তার ভ্রামকের একই ভূমিকা।

জড়তার ভ্রামক , I = MK²

এখানে, M = বস্তুর ভর এবং K = চক্রগতির ব্যাসার্ধ।

মনে কর, দুইটি বস্তুকে তুমি সমান কৌণিক ত্বরণে ঘুরাতে চাও। এখন, দুইটা বস্তুর মধ্যে যে বস্তুকে কৌণিক ত্বরণ দিতে বা ঘুরাতে তোমাকে বেশি কষ্ট করতে হবে বা টর্ক বেশি দিতে হবে সেই বস্তুটির জড়তার ভ্রামক বেশি।

একটি বস্তুকে কোন অক্ষের সাপেক্ষে ঘুরাচ্ছো তার উপরও জড়তার ভ্রামক নির্ভর করে। একটি লম্বা লাঠিকে যদি এর মাঝের অক্ষ বরাবর ঘুরাও তাহলে যে জড়তার ভ্রামক হবে, লাঠিটির একপাশে অক্ষ ধরে নিয়ে ঘুরালে জড়তার ভ্রামক তার থেকে ভিন্ন হবে। সুতরাং, একই বস্তুর বিভিন্ন জড়তার ভ্রামক হতে পারে। কারণ, জড়তার ভ্রামক চক্রগতির ব্যাসার্ধের উপর নির্ভর করে আর চক্রগতির ব্যাসার্ধ নির্ভর করে ঘূর্ণন অক্ষের উপর। ঘূর্ণন অক্ষের পরিবর্তনের সাথে সাথে চক্রগতির ব্যাসার্ধেরও পরিবর্তন হয়ে যায়।

জড়তার ভ্রামক কাকে বলে

জড়তার ভ্রামককে অনেক ভাবে সঙ্গায়িত করা যায়৷ যেমন-

একটি কণার ভর ও ঘূর্ণন অক্ষ হতে এর লম্ব দূরত্বের বর্গের গুণফলকে উক্ত কণার জড়তার ভ্রামক বলে। এভাবে বস্তুর মধ্যস্থিত সবগুলো কণার জড়তার ভ্রামকের সমষ্টিকে পুরো বস্তুটির জড়তার ভ্রামক বলে।

অন্যভাবে বলতে গেলে- কোন অক্ষের চারদিকে ঘূর্ণায়মান কোন বস্তুর ওপর যে টর্ক প্রয়োগ করলে তাতে একক কৌণিক ত্বরণের সৃষ্টি হয় তাকে ওই অক্ষের সাপেক্ষে তার জড়তার ভ্রামক বলে।

সহজভাবে বলতে গেলে- আমরা জানি বস্তুর রৈখিক গতীয় রাশিগুলো কৌণিক গতির ক্ষেত্রে ভিন্নরুপ হয়ে যায়৷ সেই দিক থেকে বস্তুর কৌণিক ভরকে জড়তার ভ্রামক বলতে পারি৷ অর্থাৎ একটা বস্তু সরলেরেখায় চললে ভরের যে ভূমিকা, কৌণিক গতিতে চললে জড়তার ভ্রামকের একই ভূমিকা।

জড়তার ভ্রামক এর সূত্র

নিউটনের প্রথম গতি সূত্রকে জড়তার সূত্র বলা হয়। এই সূত্র অনুসারে, বাহ্যিক বল প্রযুক্ত না হলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকবে এবং গতিশীল বস্তু সমবেগে সরলরেখায় চলতে থাকবে।

নিউটনের দ্বিতীয় গতি সূত্র হল, বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তনের হার প্রযুক্ত বলের সমানুপাতিক এবং বল যেদিকে ক্রিয়া করে বস্তুর ভরবেগের পরিবর্তন সেদিকেই ঘটে।

নিউটনের তৃতীয় গতি সূত্র হল, প্রত্যেক ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া আছে।

বয়েলের সূত্র হল, নির্দিষ্ট উষ্ণতায় নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্যাসের চাপ ও আয়তনের গুণফল স্থির থাকে।

অতএব, নিউটনের প্রথম গতি সূত্র হল জড়তার সূত্র।

আরো পড়তে: ঘাত কাকে বলে, ঘাত বল কাকে বলে, বলের ঘাত কি, বলের ঘাত এর সূত্র

জড়তার ভ্রামক এর একক, জড়তার ভ্রামক এর মাত্রা

কোনো নির্দিষ্ট সরলরেখা থেকে কোনো দৃঢ় বস্তুর প্রত্যেকটি কণার লম্ব দূরত্বের বর্গ এবং এদের প্রত্যেকের ভরের গুণফলের সমষ্টিকে ঐ সরলরেখার সাপেক্ষে বস্তুর জড়তার ভ্রামক (Moment of Inertia) বলে।

জড়তার ভ্রামকের একক ও মাত্রা

এম. কে. এস ও এস. আই. পদ্ধতিতে জড়তার ভ্রামকের একক কিলোগ্রাম-মিটার২ (kg-m2)।

এর মাত্রা সমীকরণ [ I ] = [ ভর × দূরত্ব২] = [ML2]

জড়তার প্রকারভেদ

জড়তা দুই প্রকার। যথা: ক. স্থিতি জড়তা এবং খ. গতি জড়তা।

স্থিতি জড়তা কাকে বলে

যে ধর্মের জন্য স্থির বস্তু স্থির অবস্থায় থাকতে চায় তাকে স্থিতি জড়তা বলে।

উদাহরণ: থেমে থাকা বাস হঠাৎ চলা শুরু করলে যাত্রীরা পেছনের দিকে হেলে পড়ে যায়। এটা স্থিতি জড়তার কারণে হয়।

গতি জড়তা কাকে বলে

কোন স্থিতিশীল বস্তুর স্থির থাকার প্রবণতাকে স্থিতি জড়তা বলে। আর কোন গতিশীল বস্তুর গতিময় থাকার প্রবণতাকে গতি জড়তা বলে।

যে ধর্মের জন্য গতিশীল বস্তু চিরকাল সমবেগে গতিশীল থাকতে চায় তাকে গতি জড়তা বলে।

উদাহরণ: চলন্ত বাস হঠাৎ ব্রেক কষলে যাত্রীরা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে গতি জড়তার কারণেই।

আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | জড়তার ভ্রামক

Q1. জড়তার ভ্রামক কি রাশি

Ans – জড়তার ভ্রামক ভেক্টর রাশি।

Q2. জড়তার পরিমাপ কোনটি

Ans – জড়তার পরিমাপ ভর । জড়তা কম বেশি হয় বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে ।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।