অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন কি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কি, বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোট কোনটি

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

প্রশ্নপত্র

অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন কি

সামগ্রিক বিচারে বিশ্বায়নের ধারণাটি মূলত আর্থনীতিক। প্রধানতঃ একটি আর্থনীতিক ধারণা ও ব্যবস্থা হিসাবে বিশ্বায়নের আবির্ভাব ও বিকাশ ঘটেছে। প্রকৃত প্রস্তাবে সমাজের মূল ভিত্তিই হল অর্থনীতি। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের ধারণা অনুযায়ী কোন জাতীয় অর্থনীতিকে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপের মত কোন বিচ্ছিন্ন বিষয় হিসাবে বিবেচনা করা হয় না। সকল দেশের অর্থনীতিই পরস্পর সংবদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে জাতীয় অর্থনীতির এই সংযোগ-সম্পর্ক ব্যাপকতর ক্ষেত্রে হতে পারে, আবার সংক্ষিপ্ত ক্ষেত্রেও হতে পারে।

এদিক থেকে বিচার করলে আর্থনীতিক বিশ্বায়ন হল স্বতন্ত্র জাতীয় অর্থনীতিসমূহের দুনিয়া ছেড়ে বিশ্ব অর্থনীতির দুনিয়ায় চলে আসা। বিশ্ব আর্থনীতিক ব্যবস্থায় উৎপাদনের আন্তর্জাতিকীকরণ ঘটে এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে বৈত্তিক মূলধন (financial capital) উন্মুক্ত ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে চলাচল করে। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের একটি বড় বিষয় হল যে, নিজেদের অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে জাতীয় সরকারসমূহের সামর্থ্য হ্রাস পায়; উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থার পথে নিজেদের অর্থনীতির পুনর্বিন্যাসকে জাতীয় সরকারসমূহ আটকাতে পারে না।

আর্থনীতিক বিশ্বায়ন হল বিশ্ব আর্থনীতিক ব্যবস্থার সঙ্গে কোন দেশের আর্থনীতিক সংযোগ সাধন। আর্থনীতিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন হল মুক্ত অর্থনীতির দ্যোতক। এ হল একটি দেশের আর্থনীতিক বিষয়াদির উপর আরোপিত নিয়ন্ত্রণমূলক বিধি-ব্যবস্থাগুলিকে অপসারিত করা এবং দেশীয় অর্থনীতিকে বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত করা।

বিশ্বব্যাপী সাম্যবাদী ব্যবস্থার অবক্ষয়-অবসান আর্থনীতিক বিশ্বায়নের ধারাকে বিশেষভাবে উজ্জীবিত করেছে। যে রাষ্ট্রগুলি পুঁজিবাদী দুনিয়ার বাইরে ছিল সেগুলিও বিশ্ব পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সাম্যবাদী ব্যবস্থার বিলুপ্তির ব্যাপারে আর্থনীতিক বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার সদর্থক অবদান আছে বলে মনে করা হয়।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড্রাকার (Peter Drucker) তাঁর New Realities শীর্ষক গ্রন্থে বিশ্বায়নের আর্থনীতিক দিকগুলির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার প্রকাশ হিসাবে তিনি কতকগুলি আর্থনীতিক বৈশিষ্ট্যকে চিহ্নিত করেছেন। এই বৈশিষ্ট্যগুলিকে নিম্নলিখিতভাবে বিন্যস্ত করা যায়।

  • (ক) বিশ্বায়নের সুবাদে অতিজাতিক সংস্থাসমূহ (Transnational corporations) সমগ্র পৃথিবীকে একটি মাত্র উৎপাদন ও পণ্য-পরিষেবার বাজার হিসাবে গড়ে তোলার ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে। 
  • (খ) বিশ্বায়নের অর্থনীতির মূল উদ্দেশ্য হল বাজারের সর্বাধিক বিস্তার; মুনাফার সর্বাধিককরণ নয়। 
  • (গ) বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগই বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে, বাণিজ্যে বিনিয়োগ নয়। 
  • (ঘ) বিশ্বায়নের কারণে সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণের ক্ষমতা জাতীয় রাষ্ট্রের কাছ থেকে আঞ্চলিক জোট- সমূহের কাছে হস্তান্তরিত হয়। 
  • (ঙ) বিশ্বায়নের অর্থনীতিতে ‘পরিচালন ব্যবস্থা’ উৎপাদনের উপাদান হিসাবে প্রাধান্য পায়। জমি, শ্রম প্রভৃতি উৎপাদনের প্রচলিত উপাদানসমূহ প্রাধান্য হারায়। 
  • (চ) প্রধানত অর্থের লেনদেনের মাধ্যমে বিশ্বায়নের অর্থনীতি বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে। আবার এই আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। অনুৎপাদক বিদেশী পুঁজি জাতিরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিকূল প্রভাব-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। 
  • (ছ) বিশ্বায়নের অর্থনীতিতে সমগ্র পৃথিবী জুড়ে প্রায় স্বতস্ফূর্ত ঋণ, অর্থ ও বিনিয়োগের এক প্রক্রিয়া চলতে থাকে। জাতীয় রাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রমী তথ্যাদি এই প্রক্রিয়াকে সংগঠিত করে থাকে।

বিগত কয়েক দশকের সময়কালে প্রযুক্তিগত কৌশলসমূহের অভাবিত উন্নতি সাধিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নাটকীয় রূপান্তর সংঘটিত হয়েছে। কমিউনিজমের পতন ঘটেছে। উদারনীতিবাদের বিস্তার ঘটেছে। তার ফলে বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং আর্থনীতিক সম্পর্কসমূহের অভাবনীয় বিকাশ ও বিস্তার ঘটেছে। সাম্প্রতিককালে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এবং বাজারের উদারনীতিকরণ ঘটেছে। তার ফলে অধিকতর মুনাফা অর্জনের প্রয়াসে বিভিন্ন বিনিয়োগকারী সংস্থা মূলধনসহ দুনিয়ার বাজারে হাজির হচ্ছে।

স্বভাবতই বিনিয়োগের আন্তর্জাতিকীকরণ ঘটছে ক্রমবর্ধমান হারে। তা ছাড়া বেশ কিছু বহুজাতিক করপোরেশনের উত্থানের সঙ্গে বাণিজ্য ও বাজার সম্পর্কিত হয়ে পড়েছে। এই সমস্ত বহুজাতিক করপোরেশন বিশ্ববাজারের উপর প্রভাব-প্রতিক্রিয়া কায়েম করে। অধিকতর উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থা, পরিবহনজনিত ব্যয় হ্রাস প্রভৃতির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহদাকৃতির বহুজাতিক কোম্পানিসমূহ কোটি কোটি টাকা মুনাফা করে এবং বিশ্ববাজারের সম্পদসমূহ নিয়ন্ত্রণ করে। এ রকম বহুজাতিক করপোরেশনের উদাহরণ হিসাবে উল্লেখযোগ্য হল : আই.বি.এম. (IBM), ম্যাকডোনাল্ডস (McDonald’s), জনসন ও জনসন (Johnson & Johnson), ইউনিলিভার (Uniliver), হন্ডা (Honda) প্রভৃতি।

সাম্প্রতিককালে প্রযুক্তিগত প্রকৌশলের ক্ষেত্রে অভাবনীয় বিকাশ সাধিত হয়েছে। তারফলে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সাবেকি বিবিধ প্রতিবন্ধকতা অপসারিত হয়েছে। বিভিন্ন ফার্ম এবং সাধারণ মানুষজন মধ্যবর্তী কোন বাজারি শক্তি বা সংস্থার সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়াই বা নামমাত্র মধ্যবর্তী পরিষেবা নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের বাজার থেকে দ্রব্য সামগ্রী ও পরিষেবা ক্রয় করতে পারে। ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রক্রিয়া বর্তমানে বৈদ্যুতিন প্রকৃতিপ্রাপ্ত হয়েছে। বিশ্বের দূরদূরান্তরের ব্যবসাবাণিজ্যের সঙ্গে বৈদ্যুতিন পথে সংযোগ-সম্পর্ক সাধিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবিত বিকাশ ও বিস্তারের সুবাদে আর্থনীতিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ববাজার অধিকতর উন্মুক্ত হয়ে পড়েছে এবং ফার্মসমূহের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিনিয়োগ প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও ব্যাপক প্রযুক্তিগত বৈপ্লবিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। কম্পিউটারের কয়েকটি মাউস ক্লিকের মাধ্যমেই মানুষ অধুনা আন্তর্জাতিকভাবে পরিচালিত হতে ও বিনিয়োগ করতে পারে। আজকাল অনলাইন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ও বিনিয়োগের ব্যবস্থা আর্থনীতিক দুনিয়ায় বিপ্লব এনেছে। শ্রমের ক্ষেত্রেও আর্থনীতিক বিশ্বায়নের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া চমকপ্রদ। বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার কারণে মানুষ কাজের বাজারে হাজির হয়। গ্রামাঞ্চলের মানুষ শহরাঞ্চলে আসে; দেশের ভিতরে এ রকম পরিযান প্রক্রিয়া চলতে থাকে। অনুরূপভাবে দেশের বাইরেও কাজের তাগিদে পরিযান পরিলক্ষিত হয়। এক দেশ থেকে অন্য দেশে শ্রমের বা শ্রমিকের পরিযান ঘটে।

আর্থনীতিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া বা পরিণাম প্রসঙ্গে ইতিবাচক ও নেতিবাচক উভয়বিধ বক্তব্যই বর্তমান। প্রথমে বিরুদ্ধবাদীদের বিরূপ মতামতসমূহ উল্লেখ করা যেতে পারে।

(ক) বিরুদ্ধবাদীদের অভিযোগ অনুযায়ী আর্থনীতিক বিশ্বায়ন রাষ্ট্রের সামর্থ্য ও স্বাতন্ত্র্যকে বিপন্ন করে তোলে। রাষ্ট্রীয় আইনের অনুশাসন হীনবল হয়ে পড়ে। অথচ সে জায়গায় আন্তর্জাতিক আইনের অনুশাসন কায়েম হয়, তাও নয়। কার্যত বৃহৎ ও শক্তিশালী করপোরেশনসমূহের সম্মিলিত সংস্থাই দুনিয়া জুড়ে এক ধরনের আর্থনীতিক কর্তৃত্ব কায়েম করে। সংশ্লিষ্ট শক্তিশালী করপোরেশনসমূহের উপর জাতীয় বা গণতান্ত্রিক কোন রকম নিয়ন্ত্রণ কার্যকর হয় না। বৃহদাকারের করপোরেশনগুলির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিশ্বায়ন ঘটে। এ রকম অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর সরকারের নজরদারি থাকে না এবং জনসাধারণের কাছে কোন রকম দায়বদ্ধতাও থাকে না।

(খ) বিনিয়োগ এবং শ্রমবাজারের বিশ্বায়নও বিরূপ সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। এ রকম ব্যবস্থায় অধিকতর মুনাফা অর্জনের অভিপ্রায়ে সেই সমস্ত দেশে অধিক বিনিয়োগ করে, যেখানে সস্তায় শ্রমিক পাওয়া যায় এবং শ্রম-নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত দুর্বল। সংশ্লিষ্ট উদ্যোগ আয়োজনের কারণে উন্নত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাসমূহে উৎপাদনমূলক কাজকর্ম অপসারিত হতে থাকে। এই ব্যবস্থায় কাজকর্ম বা চাকরিবাকরির অবস্থান দূরবর্তী হয়ে পড়ে। তারফলে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকরা প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যায়। সমাজবিজ্ঞানী প্যাট্রিক ওনীল তাঁর Essentials of Comparative Politics শীর্ষক গ্রন্থে এ বিষয়ে বলেছেন: “For societies with developed social democratic systems in particular, globalization is seen as a huge threat, demanding fewer social expenditures in the name of increased competitiveness.”

(গ) উদারনীতিক রাজনীতিক অর্থনীতিকে যাঁরা বড় একটা স্বীকার বা সমর্থন করেন না, তাঁরাও আর্থনীতিক বিশ্বায়নের বিরুদ্ধে বলেন। এই শ্রেণীর সমালোচকদের অনেকে অধিকতর ব্যবসা বাণিজ্যকে অধিকতর নির্ভরশীলতার সমগোত্রীয় হিসাবে প্রতিপন্ন করার পক্ষপাতী। ব্যাখ্যা করে তাঁরা বলেন যে, বিশ্বায়িত ব্যবসাবাণিজ্যের কারণে কিছু কিছু দেশ বিশেষ বিশেষ দ্রব্য সামগ্রীর উৎপাদনের উপর একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে এই সমস্ত দ্রব্যসামগ্রী অতিমাত্রায় তাৎপর্যবাহী। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ সামগ্রী বা প্রাণদায়ী ঔষধ উৎপাদনের রাসায়নিক পণ্য সামগ্রী, প্রাণপ্রযুক্তি, সফটওয়ার প্রভৃতি। বিপরীতক্রমে অন্য কিছু দেশের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী বিশ্ব অর্থনীতির ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ। তারফলে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অসাম্যের সৃষ্টি হয়। তাৎপর্যপূর্ণ সম্পদ সামগ্রী নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি যে কয়েকটি দেশের হাতে থাকে তারা অন্যান্য দেশসমূহের উপর কর্তৃত্বমূলক নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে।

আর্থনীতিক বিশ্বায়নের সমর্থকরা এ বিষয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন। তাঁরা আর্থনীতিক বিশ্বায়নের সদর্থক দিকগুলি তুলে ধরেন। তাঁদের বক্তব্য বিষয়াদিও সংক্ষেপে তুলে ধরা আবশ্যক।

(১) আর্থনীতিক বিশ্বায়ন সম্ভৃত নাটকীয় আর্থনীতিক পরিবর্তনসমূহ বিশেষভাবে সমর্থনযোগ্য। কারণ সংশ্লিষ্ট পরিবর্তনসমূহের সুবাদে সমগ্র দুনিয়ার সমৃদ্ধি সম্পাদিত হবে।

(২) আর্থনীতিক বিশ্বায়নের কল্যাণে দ্রব্য সামগ্রী ও শ্রমের জন্য অধিক সংখ্যক মানুষ বিশ্ববাজারে অংশগ্রহণ করতে পারে। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের সদর্থক প্রবণতার সুবাদে অধিকতর সমৃদ্ধির সৃষ্টি হয়। অসংখ্য মানুষ দারিদ্র্যসীমার ঊর্ধ্বে উঠার সুযোগ পায়।

(৩) আর্থনীতিক বিশ্বায়নের আর একটি বড় ইতিবাচক দিক আছে। দ্রব্যসামগ্রী, শ্রম ও মূলধনের জন্য উন্মুক্ত বাজারের মাধ্যমে সম্পদ অধিকতর কার্যকরভাবে পৃথিবীব্যাপী সঞ্চারিত হয়। তারফলে বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবনযাত্রার মান অধিকতর উন্নত হয়।

(৪) আর্থনীতিক বিশ্বায়ন অনেকাংশে উদারনীতিক আর্থনীতিক ব্যবস্থার আন্তর্জাতিকীকরণ হিসাবে প্রতিপন্ন হয়। এই প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ত বাজার ব্যবস্থা এবং দ্রব্যসামগ্রী এবং শ্রমের জন্য প্রতিযোগিতার উপর জোর দেওয়া হয়। 

(৫) আর্থনীতিক বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক আর্থনীতিক সংযোগসমূহ সম্প্রসারিত হয়। তার‌ ফলে বৃহত্তর বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে দ্রব্য সামগ্রী, বিবিধ পরিষেবা, শ্রম এবং অন্যান্য সম্পদসমূহ অধিকতর কার্যকরভাবে বিলি-বরাদ্দ করা সম্ভব হয়। সরকারি মাশুল ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় বিধি-নিষেধ এ ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করতে পারে না।

(৬) সকল দেশ সর্ববিধ উৎপাদনে সমভাবে পারদর্শী নয়। কিছু কিছু দেশ বিশেষভাবে পারদর্শী। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের সুবাদে প্রতিটি দেশ তার পারদর্শিতা অনুযায়ী দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদনের সুযোগ পায়। তারফলে উৎপাদন ব্যয় হ্রাস, বিশেষীকরণ, গবেষণা, উদ্ভাবন প্রভৃতির সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। 

(৭) বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ার প্রভাবে মূলধনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন নতুন বাজারের এবং আনুষঙ্গিক নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার যাবতীয় সদর্থক দিকগুলি বহুজাতিক করপোরেশনসমূহ গ্রহণ করে। এই সমস্ত কিছুর সুবাদে চাকরি-বাকরির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পায়। মানুষজনও দেশের ভিতরে এবং বাইরে চাকরির সন্ধানে যাতায়াত করার সুযোগ-সুবিধা পায়।

আর্থনীতিক বিশ্বায়নের মূল্যায়ন সম্পর্কিত আলোচনা অনেকাংশে অস্পষ্ট। পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্যের অভাব নেই। তবে এ প্রসঙ্গে সাধারণভাবে বলা যায় যে, বিগত দু’দশকের অধিককাল ধরে বিশ্বায়নের সুবাদে দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাসকারী জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের যে সমস্ত দেশে অধিক মাত্রায় বিশ্বায়ন ঘটেছে সেই সমস্ত দেশে জীবনযাপনের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে গণ-প্রজাতন্ত্রী চীন ও ভারতের কথা বলা যায়। বিপরীতক্রমে তৃতীয় বিশ্বের যে সমস্ত দেশে আর্থনীতিক বিশ্বায়ন বিশেষ একটা হয় নি, সেই সমস্ত দেশে এই সুফল সেভাবে পাওয়া যায় নি। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে আফ্রিকার কথা বলা যায়।

উপরিউক্ত পরিসংখ্যানমূলক সুফল আর্থনীতিক বিশ্বায়নের সমর্থনে একটি বড় বিষয়। এ বিষয়ে দ্বিমতের অবকাশ নেই। কিন্তু এ প্রসঙ্গে বিপরীত বক্তব্যও আছে। আর্থনীতিক বিশ্বায়নের পরিণামে ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে আর্থিক সঙ্গতিসূচক ব্যবধানের কথা বাদ দিলেও, একই দেশের অধিবাসীদের বিত্তবান-বিত্তহীনদের মধ্যে ব্যবধান বৃদ্ধি পাচ্ছে। এক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত ভারত এবং গণ-প্রজাতন্ত্রী চীনের কথা বলা যায়।

বিশ্বায়নের আর্থনীতিক সুফল-কুফল নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু এ কথা ঠিক যে আন্তর্জাতিক বিশ্বায়ন দুনিয়ার আর্থনীতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন করেছে। সমর্থক-সমালোচক নির্বিশেষে সকলেই স্বীকার করেন যে, আর্থনীতিক ক্ষেত্রে বিশ্বায়নের সুবাদে বিভিন্ন দেশের আর্থনীতিক ব্যবস্থাসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ-সম্পর্ক বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তারফলে স্থানীয় সমস্যা-সংকটসমূহ আন্তর্জাতিক সমস্যা-সংকট হিসাবে প্রতিপন্ন হওয়ার প্রবণতা ও সম্ভাবনা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সমাজবিজ্ঞানী প্যাট্রিক ও’নিল (Patrick H. Oneil) তাঁর Essentials of Comparative Politics শীর্ষক গ্রন্থে এ বিষয়ে মন্তব্য করেছেন: “The growing linkages of finance, trade, and markets now increase the likelihood that local events will ripple throughout the system.”

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাকে বলে

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সংজ্ঞা বলতে বোঝায় পণ্য ও পরিষেবার উৎপাদনের সামগ্রিক বৃদ্ধি – এক সময়ের থেকে অন্য সময়ের তুলনায়। এটি বাস্তব বা নামমাত্র পদে পরিমাপ করা হয় বলে জানা যায়। এর সহজ শর্তে, অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে প্রদত্ত সামগ্রিক উৎপাদন বৃদ্ধি হিসাবে উল্লেখ করা যেতে পারেঅর্থনীতি. বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, সম্পূর্ণভাবে নয়, উৎপাদনের সামগ্রিক বৃদ্ধি সামগ্রিক বর্ধিত গড় প্রান্তিক উত্পাদনশীলতার সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকে।

এটি সংশ্লিষ্ট আয়ের সামগ্রিক বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করে। এইভাবে, ভোক্তারা আরও বেশি ব্যয় এবং কেনাকাটা সম্পর্কে উন্মুক্ত হতে অনুপ্রাণিত হন – যা উচ্চতর জীবনমানের বা উন্নত জীবনযাত্রার মানের দিকে নিয়ে যায়।

প্রচলিতভাবে, সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জিডিপির পরিপ্রেক্ষিতে পরিমাপ করা হয় (মোট দেশীয় পণ্য) বা জিএনপি (মোট জাতীয় পণ্য)। যাইহোক, কিছু বিকল্প মেট্রিক আছে যেগুলি ব্যবহার করা হয়।

অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গুরুত্ব

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশিরভাগ মানুষের কাজ হিসাবে পরিবেশন করার জন্য মডেল করা হয়মূলধন, ভৌত পুঁজি, প্রযুক্তি এবং শ্রমশক্তি। সহজ কথায়, কর্মক্ষম বয়সের জনসংখ্যার সামগ্রিক গুণমান বা পরিমাণ এবং তাদের দ্বারা ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলি এবং তাদের কাছে যে সংস্থানগুলির অ্যাক্সেস রয়েছে তা বৃদ্ধি করা – এই সমস্ত কারণগুলি একত্রিত হয় কাচামাল, শ্রম, এবং মূলধন।

অবশেষে, এই সমস্ত কারণগুলি অর্থনৈতিক আউটপুট বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কয়েকটি উপায়ে উত্পন্ন হতে পারে। একটি উপায় হল প্রদত্ত অর্থনীতিতে পুঁজিগত পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করা। অর্থনীতিতে পুঁজি যুক্ত হলে তা সমগ্র শ্রমের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

নতুন, উন্নত, এবং বর্ধিত সংখ্যক সরঞ্জামগুলি বোঝায় যে কর্মীরা এখন প্রতি পিরিয়ডে আরও বেশি আউটপুট উত্পাদন করতে সক্ষমভিত্তি। যাইহোক, এই দিকটিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতিতে কেউ প্রথমত নতুন পুঁজি তৈরির জন্য সংস্থানগুলিকে মুক্ত করার জন্য কিছু ধরণের সঞ্চয় করতে প্রত্যাশিত।

তদুপরি, নতুন মূলধন সঠিক ধরণের, সঠিক সময়ে এবং সঠিক জায়গায় শ্রমিকদের একই উত্পাদনশীলভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হওয়া উচিত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সৃষ্টির একটি পদ্ধতি হল প্রযুক্তিগত উন্নতির মাধ্যমে। মূলধন বৃদ্ধির মতোই, প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তিগত বৃদ্ধি এবং এর সামগ্রিক হার উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ এবং সঞ্চয়ের সামগ্রিক হারের উপর নির্ভরশীল। এর কারণ হল বিনিয়োগ এবং সঞ্চয় যথাযথ গবেষণা এবং উন্নয়নে জড়িত থাকার জন্য অত্যাবশ্যক বলে পরিচিত।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উৎপাদনের আরেকটি লাভজনক উপায় হল উপলব্ধ শ্রমশক্তি বৃদ্ধি করা। প্রদত্ত অর্থনীতিতে শ্রমিকের সঠিক সংখ্যা অর্থনৈতিক পণ্য ও পরিষেবার সামগ্রিক উৎপাদন বাড়াতে পারে। বিদ্যমান শ্রমশক্তি বৃদ্ধি করা নতুন শ্রমিকদের আদর্শ জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় মোট আউটপুট বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।

অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কি

দেশের প্রাপ্ত সম্পদের যথাযথ ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য ও সেবা বন্টন অর্থাৎ দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যাবলীর প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে। 

যখন কোন সমাজ বা দেশ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক ও আইনগত রীতিনীতি গড়ে তোলে, তখন তাকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে। 

নাগরিকের সম্পত্তি অর্জনের অধিকার, উৎপাদন পদ্ধতি, বিনিময় মাধ্যম, বন্টন পদ্ধতি, ভোগ, শ্রম নিয়োগ, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রকৃতি ইত্যাদি কার্যাবলীর প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনগত কাঠামোকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে।

মানুষের মৌলিক চাহিদা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিতসা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি সকল দেশের জন্য একই, কিন্তু এগুলো পূরণ করতে বিভিন্ন দেশ তার প্রাপ্ত সম্পদের সাপেক্ষে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। এরুপ অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীতে বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে নিম্মে আলোচনা করা হল।

অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রকার

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানারকম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে। তারমধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কিছু বিখ্যাত ও প্রচলিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিম্মে আলোচনা করা হল। 

1. ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থা

2. কমান্ড বা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থা

3. মিশ্র অর্থনীতি ব্যবস্থা

4. অন্যান্য

১. ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি

যে অর্থনীতি ব্যবস্থায় উৎপাদন উপকরণগুলো ব্যক্তি মালিকায় থাকে, এবং সরকারি হস্তক্ষেপ বিহীন অবাধ দাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাজার পরিচালিত হয়, তাকে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি বা পুঁজিবাদী অর্থনীতি বলে। 

পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হল যেখানে উৎপাদনের উপকরণগুলো সরকারের পরিবর্তে ব্যক্তিগত উদ্যোগের মালিকানাধীন এবং নিয়ন্ত্রিত হয়। 

ভি আই লেনিন ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি সম্পর্কে বলেন, ‘‘ধনতন্ত্র বলতে উৎপাদনের ঐ উন্নত স্তরকে নির্দেশ করে যেখানে মনুষ্য শ্রমের উৎপাদন নয়, মনুষ্য শ্রমশক্তি নিজেই পণ্যে পরিণত হয়।’’

সর্বপ্রথম ইউরোপে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থার সূত্রপাত হয়। মূলত ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ইউরোপ অঞ্চলে এই ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা পায়। এই অর্থনীতি ব্যবস্থাকে বলা হয় স্বাধীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, কারণ প্রত্যেক ব্যক্তি উৎপাদন, বন্টন ও ভোগের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। অর্থাৎ এতে কোনরুপ সরকারের হস্তক্ষেপ থাকে না। 

ধনতান্ত্রিক বা পুঁজিবাদী অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য

পুঁজিবাদ বা ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল মুক্তবাজার বা লাইসেজ-ফায়ার অর্থনীতি। এখানে ব্যক্তিরা থাকে অবাধ। তারা নির্ধারণ করতে পারে কোথায় বিনিয়োগ করতে হবে, কি উৎপাদন বা বিক্রি করতে হবে এবং কোন মূল্যে পণ্য ও সেবা বিনিময় করতে হবে। laissez-faire বাজারে কোনরুপ চেক বা নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কাজ করে। এছাড়াও এই অর্থনীতির অন্যন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন,

  • বৃহৎ উৎপাদন ব্যবস্থা
  • পুঁজিপতি শ্রেণির বিস্তার 
  • ব্যক্তিমালিকানায় সম্পদ
  • ব্যক্তি উদ্যোগের স্বাধীনতা
  • ভোক্তার সার্বভৌমত্ব
  • স্বয়ংক্রিয় দাম ব্যবস্থা
  • অবাধ প্রতিযোগিতা
  • মুনাফা লাভ
  • সমাজে শ্রেণিবিভক্তি

২. সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি

কমান্ড অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা নামেও পরিচিত। এই অর্থনৈতিক কাঠামোর অধীনে উৎপাদন যাবতীয় উপকরণের  ক্ষমতা সরকার বা একমাত্র শাসকের কাছে কেন্দ্রীভূত থাকে।

বিভিন্ন অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত যেমন কোন পণ্য উৎপাদন করতে হবে, কতটা উৎপাদন করতে হবে এবং এর দাম কি হবে, সব কেন্দ্রীয় ক্ষমতা দ্বারা নির্ধারিত হয়। 

অর্থনীতিবিদ র‌্যাগান এর মতে, সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হলো এমন একটি অর্খব্যবস্থা যেখানে সম্পত্তির রাষ্ট্রীয় বা কেন্দ্রীয় মালিকানায় বিদ্যামান থাকে এবং কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

চীন, রাশিয়া, কিউবা, ভেনিজুয়েলা এবং পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে।

সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য

  • শ্রেণি শোষণের অনুপস্থিতি
  • উৎপাদন উপকরণের মালিকানা থাকে না
  • অবাধ প্রতিযোগিতা নেই
  • চাহিদার উপর নিয়ন্ত্রণ
  • কেন্দ্রীয়  বন্টন ও নিয়ন্ত্রণ
  • সুষম বন্টন
  • শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষা
  • বেকারত্বের লোপ
  • মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা
  • মুদ্রস্ফীতির অনুপস্থিতি
  • সুষম উন্নয়ন
  • ভোক্তার স্বাধীনতা থাকে না
  • ব্যক্তিগত মুনাফার স্বীকৃতি নেই

৩. মিশ্র অর্থনীতি

যে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুঁজিবাদী ও সমাজতন্ত্রের দুর্বলতাগুলো পরিত্যাগ করে এবং এর গুণগুলো গ্রহণ করে গড়ে ওঠে, তাকে মিশ্র অর্থনীতি বলে।

অর্থনীতিবিদ র্যাগান এর মতে, ‘‘মিশ্র অর্থনীতি হল এমন এক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যেখানে বিশুদ্ধ ধনতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির সংমিশ্রণ ঘটে। কিছু সম্পদ ব্যক্তি মালিকানায় এবং কিছু সম্পদ রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকে। এছাড়া অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত বাজার ব্যবস্থা ও কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করে।’’

মিশ্র অর্থনীতি বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সবচেয়ে সাধারণ রূপগুলোর মধ্যে একটি। অনেক উন্নত দেশ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, বাংলাদেশ, ভারত এবং বেশিরভাগ ইউরোপে এই অর্থনীতি ব্যবস্থা প্রচলিত রয়েছে। এটি পুঁজিবাদী ও কমান্ড অর্থনীতির সংমিশ্রণ ব্যবস্থাকে নির্দেশ করে।

মিশ্র অর্থনীতি ব্যবস্থায় প্রায়শই উৎপাদনের উপকরণগুলো কিছু ব্যক্তিগত মালিকানা ও রাষ্ট্র্রীয় মালিকানায় থাকে। যাইহোক, মিশ্র অর্থনীতিতে কিছু শিল্প কলকারখানা সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, অন্যগুলো ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও বিবিসির সম্প্রচার সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

মিশ্র অর্থনীতির বৈশিষ্ট্য

  • সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিস্তার
  • সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগ
  • সম্পদের ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় মালিকানা
  • স্বয়ংক্রিয় দাম ব্যবস্থা
  • অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ
  • শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ
  • মুদ্রস্ফীতির উপস্থিতি
  • অর্থনৈতিক স্বাধীনতা
  • সামাজিক নিরাপত্তা
  • অসম বন্টন ব্যবস্থা

অর্থনৈতিক কূটনীতি কি

অর্থনৈতিক কূটনীতি বৈদেশিক নীতির সেই অংশ, যেখানে প্রত্যেক দেশ নিজ দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ বিবেচনা করে। অর্থনৈতিক কূটনীতিতে বাণিজ্যিক দূতগণই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে অর্থনৈতিক কূটনীতির প্রকাশ ঘটে।

অর্থনৈতিক কূটনীতিকে সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে ড. রবিউল ইসলাম ও আব্দুল মালেক বলেন, “যে কূটনীতি দেশের অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণোত্তর উদ্বৃত্ত অর্থনৈতিক সম্পদকে অর্থনৈতিক মুনাফা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে তাকে অর্থনৈতিক কূটনীতি বলে।”

ড. এম. এ মান্নানের মতে, “অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা অর্জনের উদ্দেশ্যে পরিচালিত যে কূটনৈতিক ব্যবস্থা সেটাকে আমরা অর্থনৈতিক কূটনীতি বলে আখ্যায়িত করতে পার।”

ভারনন ভ্যান ডাইক এর মতে, “বিশ্বায়ন ও মুক্ত বাজার অর্থনীতির বিকাশের যুগে কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সুবিধা প্রাপ্ত হলো অর্থনৈতিক কূটনীতি।”

উপর্যুক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, অর্থনৈতিক কূটনীতি বলতে আমরা বুঝি কূটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জন।

অর্থনৈতিক খাত কাকে বলে

অর্থনৈতিক কার্যকলাপের একটি ধ্রুপদী ভাগ তিনটি সেক্টরকে আলাদা করে :

  • প্রাথমিক : ভুট্টা, কয়লা, কাঠ বা লোহার মতো কাঁচামালের পণ্য পুনরুদ্ধার এবং উৎপাদন জড়িত। খনি শ্রমিক, কৃষক ও জেলে সবাই প্রাথমিক খাতের শ্রমিক।
  • সেকেন্ডারি : কাঁচা বা মধ্যবর্তী সামগ্রীকে পণ্যে রূপান্তরিত করে , যেমন ইস্পাত থেকে গাড়িতে, বা টেক্সটাইলগুলি পোশাকে। বিল্ডার এবং ড্রেসমেকাররা সেকেন্ডারি সেক্টরে কাজ করে।
  • টারশিয়ারি : ভোক্তাদের এবং ব্যবসার জন্য পরিষেবা সরবরাহ করা জড়িত, যেমন বেবিসিটিং, সিনেমা বা ব্যাঙ্কিং। দোকানদার এবং হিসাবরক্ষকরা টারশিয়ারি সেক্টরে কাজ করেন।

20 শতকে, অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দিতে শুরু করেন যে ঐতিহ্যগত তৃতীয় পরিষেবাগুলিকে ” চতুর্মুখী ” এবং কুইনারি পরিষেবা খাত থেকে আরও আলাদা করা যেতে পারে। কাল্পনিক চতুর্মুখী সেক্টরে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ তথ্য- এবং জ্ঞান-ভিত্তিক পরিষেবাগুলির অন্তর্ভুক্ত, যখন কুইনারি পরিষেবাগুলি মানব পরিষেবা এবং আতিথেয়তা সম্পর্কিত শিল্পগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে।

অর্থনৈতিক তত্ত্বগুলি অর্থনৈতিক খাতকে আরও অর্থনৈতিক শিল্পে বিভক্ত করে ।

অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কি

সাধারণত কোনো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সুচিন্তিত এবং সুপরিকল্পিত কর্মসূচিকেই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বলা হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উদ্দেশ্যমূলক ও ধারাবাহিকভাবে কোনো কর্মকাণ্ড গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নের নামই হচ্ছে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।

প্রমাণ্য সংজ্ঞা :

অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদদের মতামত তুলে ধরা হলো : অর্থনৈতিক পরিকল্পনার সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য সংজ্ঞা প্রদান করেছেন,

বিশিষ্ট ধনবিজ্ঞানী অধ্যাপক এল. রবিনস (L. Robbins) তার মতে, 

“অর্থনীতি এমন এক বিজ্ঞান যা মানুষের চরম উদ্দেশ্য এবং পরিবর্তন ব্যবহারযোগ্য সসীম সম্পদের মধ্যে সমন্বয় সাধনকারী কার্যাবলি আলোচনা করে।”

অধ্যাপক হায়েক (Hayek) এর মতে, 

“অর্থনৈতিক পরিকল্পনা হচ্ছে, একটি কেন্দ্রীয় কর্তৃত্বের দ্বারা উৎপাদনমুখী কর্মকাণ্ডের নির্দেশ।”

অর্থনীতিবিদ ডিকিনসনের মতে,

“সমগ্র অর্থনীতির ব্যাপক জরিপের ভিত্তিতে কোনো নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কোনো দ্রব্য কি পরিমাণে উৎপাদন করতে হবে এবং কিভাবে তা বন্টন করতে হবে সে বিষয়ে যে সকল বিশেষ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা”

অর্থনৈতিক সমস্যা কি

উৎপাদন, ভোগ, বণ্টনের উদ্দেশ্যে মানবীয় কর্মপ্রচেষ্টার প্রয়োগ থেকে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হয় তাকে অর্থনৈতিক সমস্যা বলে।

মানুষ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন। জন্মলগ্ন থেকেই সে সমস্যার বেড়াজালে আটকা পড়ে। সম্পদের তুলনায় অভাব বেশি হওয়ার কারণে মানুষকে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এ সমস্যাগুলোর কিভাবে সমাধান করা যাবে তার উপর নির্ভর করে অর্থনৈতিক সমস্যাবলি।

মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা কি

মানুষের কর্মপ্রচেষ্টার লক্ষ্য হলো অভাব পূরণ। সেই লক্ষ্য অর্জনের উপায় হেলা সীমিত সম্পদের যথাযথ প্রয়োগ। সীমিত সম্পদ ও অসীম অভাব এ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে গিয়ে যেসব সমস্যার সৃষ্টি হয় তাকে মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা বলে। যেমন- অভাবের বিবিধত্ব ও সম্পদের স্বল্পতা থেকে পছন্দ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়।

সুতরাং অভাবের অসীমতা ও সম্পদের স্বল্পতার জন্যই মানবজীবনের মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যার উদ্ভব হয়। নোবেল বিজয়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিবিদ পল এ. স্যামুয়েলসন এর মতে, প্রত্যেক সমাজের মৌলিক বা কেন্দ্রীয় তিনটি সমস্যা হলো-

১. কী উৎপাদন করা হবে? (What to produce?)

২. কীভাবে উৎপাদন করা হবে? (How to produce?)

৩. কার জন্য উৎপাদন করা হবে? (For whom to produce?)

এ তিনটি প্রধান সমস্যার সাথে আরও ৩টি সমস্যা জড়িত। তা হলো-

  • উৎপাদন ও বন্টন কার্যের দক্ষতা সমস্যা
  • সকল উপকরণের পূর্ণ ব্যবহার বা নিয়োগ সমস্যা
  • উৎপাদন ক্ষমতা বা দক্ষতা বৃদ্ধির সমস্যা

অর্থনৈতিক অধিকার কি, অর্থনৈতিক অধিকার কাকে বলে

একজন নাগরিকের যে সকল আর্থিক সুবিধা প্রয়োজন তাকে অর্থনৈতিক অধিকার বলে।

শব্দটা শুনেই বুঝতে পারছ এর সঙ্গে অর্থ তথা টাকার একটা সম্পর্ক আছে। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের কিন্তু এই অধিকার আছে। এর অধিকারের আছে কিছু প্রকারভেদ। চলো সেগুলো বুঝে নিই সহজে।

  • আয়-রোজগারের অধিকার : বড় হলে একটা না একটা কাজ তো করতেই হবে। তা না হলে আয় আসবে কোথা থেকে? কিন্তু এখন যদি কেউ বলে, ‘না বাবা! তোমাকে কোনো কাজ করতে দেওয়া হবে না! তুমি আজ থেকে বেকার বসে থাকবে!’ এটা শুনলে মনে হবে যেন এ কোন রাক্ষস রাজার কবলে পড়লাম! কারণ কাজ তো করতেই হবে। সব মানুষেরই কাজ করে আয় করার অধিকার আছে। কেউ চাইলে তা কেড়ে নিতে পারে না। 
  • ন্যায্য মজুরি লাভের অধিকার : ন্যায্য মানে যা পাওয়া উচিত সেটাই। কেউ কম কাজ করে কম টাকা পাবে, কেউ বেশি কাজ করলে বেশি পাবে—এটাই বলে ন্যায্য। তবে কোন কাজের ন্যায্য মজুরি কত হবে এর পরিমাণটা অনেক সময় সরকার ও অর্থনীতিবিদরা মিলেমিশে ঠিক করে দেয়। যারা স্বাধীন ব্যবসা করে তাদের ক্ষেত্রে এ অধিকার নেই। তবে তাদের আরেকটি অধিকার আছে, সেটা হলো ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি করার অধিকার। কেউ চাইলেই কোনো ব্যবসায়ীকে দিয়ে জোর করে কম দামে পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য করতে পারবে না।
  • সম্পত্তির অধিকার : আমরা তো বাংলাদেশের নাগরিক। আর বাংলাদেশ মানে হলো একটা বড় ভূখণ্ড। সেই হিসেবে এ দেশের একটা অংশ তো তোমারও। তাই না? তবে ব্যাপারটা এত সরল নয়। নাগরিক হিসেবে সবার সম্পত্তি অর্জনের অধিকার থাকলেও সেই অধিকার তোমাকে অর্জন করেই নিতে হবে। আর অর্জন করার পর তুমি সেই ভূখণ্ডের মালিকানা ভোগ করতে পারবে আবার সেটা চাইলে বিক্রিও করতে পারবে।
  • ছুটির অধিকার : ওপরের সব অধিকারের সঙ্গে টাকার একটা সম্পর্ক দেখতে পেয়েছ। ছুটির অধিকারটা আবার কেমন? এখানে কিন্তু তুমি স্কুলে যে ছুটি পাও সেটার কথা বলা হয়নি। এ ছুটি হলো কর্মীদের ছুটি। অর্থাত্ যারা চাকরি করে তাদের সাপ্তাহিক ও বার্ষিক নানান ছুটি দিতে হবে। চাকরিদাতাদের এ ছুটি দেওয়ার আদেশ দিয়ে থাকে সরকার। এটা অমান্য করলে চাকরিদাতাদের শাস্তিও পেতে হবে। যেমন—কোনো কোনো অফিসে বছরে অসুস্থতার জন্য ১০ থেকে ১৪ দিনের বাড়তি ছুটি দেওয়া হয়। যা কেবল অসুস্থ হলেই ভোগ করা যায়। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানে প্রতি তিন বছর পর পর এক মাসেরও ছুটি দেওয়া হয়। আর ছুটির অধিকার থাকা মানে কর্মী ছুটি কাটালেও চাকরিদাতা তার বেতন কাটতে পারবে না।

আরো পড়তে: অর্থনৈতিক উন্নয়ন কি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কি, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোট কোনটি, সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোট কোনটি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈিতক জোট হলো ইউরোপিয় ইউনিয়ন, আর বানিজ্যিক জোট হলো ডব্লিউটিও।  WTO এর পূর্বসূরী হলো গ্যাট।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ইংরেজি World Trade Organization ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন) একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যা বিশ্বের বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি প্রবর্তন এবং সদস্য রাষ্ট্র বা পক্ষ সমূহের মধ্যকার মতপার্থক্য দূর করতে সাহায্য করে থাকে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে অবস্থিত। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইইউ ইউরোপ মহাদেশের অধিকাংশ দেশের একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জোট । এর অধীনে অভিন্ন মূদ্রা (ইউরো), ইউরোপীয় সংসদ, ইত্যাদি অনেক বিষয় রয়েছে। বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র সংখ্যা ২৮।

আরো অন্যান্য সরকারি স্কিম সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | অর্থনৈতিক মন্দা

Q1. অর্থনৈতিক দ্রব্য কাকে বলে

Ans – যে দ্রব্যের সমস্ত উপযোগ রয়েছে, জোগান চাহিদার তুলনায় সীমাবদ্ধ যা হস্তান্তরযোগ্য এবং বাহ্যিক সত্তার অধিকারী তাকে অর্থনৈতিক দ্রব্য বলে।

Q2. অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলতে কি বুঝ

Ans – যে সমস্ত সামাজিক ও আইনগত কাঠামোর মধ্য থেকে মানুষের অর্থনৈতিক কার্যাবলী পরিচালিত হয় তাকে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বলে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাসমূহকে চার ভাগে ভাগ করা যায় ।

Q3. অর্থনৈতিক পরিবেশ কি

Ans – অর্থনৈতিক পরিবেশ একটি দেশের ব্যবসায়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিটি দেশে আলাদা আলাদা অর্থনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র এবং মিশ্র অর্থনীতি অন্তর্ভুক্ত।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।