- ৯ম শ্রেণীর বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর, এসিড কাকে বলে, ক্ষার কাকে বলে | Class 9 Science Question Answer
- এসিড কাকে বলে
- এসিড কয় প্রকার
- মৃদু এসিড, দুর্বল এসিড কাকে বলে
- এসিডের বৈশিষ্ট্য
- অ্যাসিডের শনাক্তকরণ
- ক্ষার কাকে বলে, ক্ষার কাকে বলে উদাহরণ দাও
- এসিড ও ক্ষারকের বৈশিষ্ট্য
- এসিড ও ক্ষারের পার্থক্য
- এসিড ও ক্ষারকের ব্যবহার
- FAQ | এসিড
৯ম শ্রেণীর বিজ্ঞান সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর, এসিড কাকে বলে, ক্ষার কাকে বলে | Class 9 Science Question Answer
এসিড কাকে বলে
যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও জল উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা এসিড(Acid) বলে।
আবার বলা যায়,
যে সকল পদার্থে এক বা একাধিক হাইড্রোজেন (H) পরমাণু থাকে, জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন (H+) উৎপন্ন করে এবং নীল লিটমাস পেপার কে লাল লিটমাস পেপারে পরিণত করে তাকে বলে এসিড।
এসিড কয় প্রকার
উৎস অনুসারে এসিড দুই প্রকার
খনিজ এসিড
যে সকল এসিড খনি থেকে পাওয়া যায় তাকে খনিজ এসিড বলে। যেমন: হাইড্রোক্লোরিক এসিড (HCl), সালফিউরিক এসিড (H2SO4), নাইট্রিক এসিড (HNO3) ইত্যাদি।
জৈব এসিড, জৈব এসিড কাকে বলে
যে সকল এসিড জীব দেহ থেকে পাওয়া যায় তাকে জৈব এসিড বলে। যেমন: অ্যাসিটিক এসিড (CH3COOH), অক্সালিক এসিড (HOOC-COOH) ইত্যাদি।
তীব্রতা অনুসারে এসিড দুই প্রকার
তীব্র এসিড
যে সকল এসিড জলীয় দ্রবণে সম্পূর্ণ আয়নিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে তাকে তীব্র এসিড বলে। সকল খনিজ এসিডই তীব্র এসিড।
মৃদু এসিড, দুর্বল এসিড কাকে বলে
যে সকল এসিড জলীয় দ্রবণে আংশিক আয়নিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে তাকে মৃদু এসিড বলে। সকল জৈব এসিডই মৃদু এসিড।
এসিডের বৈশিষ্ট্য
১. এক বা একাধিক হাইড্রোজেন (H) পরমাণু থাকে।
২. জলীয় দ্রবণে হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে।
৩. নীল লিটমাস পেপার কে লাল লিটমাস পেপার এ পরিণত করে ।
৪. এসিড সাধারণত টক স্বাদযুক্ত হয়।
৫. এসিড ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
৬. এসিডের ক্ষয়কারী ভূমিকা রয়েছে।
অ্যাসিডের শনাক্তকরণ
- ক) লিটমাস দ্রবণ অ্যাসিড এর সংস্পর্শে এলে লাল হয়ে যায়। মিথাইল অরেঞ্জ নির্দেশক এসিডের মধ্যে দু’ফোঁটা যোগ করলে এসিডের বর্ণ লাল হয়ে যায়।
- ‘খ) সোডিয়াম কার্বনেট দ্রবনে এসিড যোগ করলে প্রচুর বুদবুদ সৃষ্টি হয়। এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হতে থাকে।
ক্ষার কাকে বলে, ক্ষার কাকে বলে উদাহরণ দাও
যেসব ক্ষারক পানিতে দ্রবীভূত হয় তাকেই ক্ষার বলে। অর্থাৎ ক্ষার একটি ক্ষারীয় ধাতু বা ক্ষারীয় ধাতব ধাতুর উপাদানগুলির একটি মৌলিক হাইড্রক্সাইড বা আয়নিক লবণ, যা পানিতে দ্রবণীয়।
উদাহরণস্বরূপ, সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড, পটাসিয়াম হাইড্রোক্সাইড, ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড, ক্যালসিয়াম কার্বনে, এবং ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ইত্যাদি।
জলে দ্রবণীয় ক্ষারকীয় ধর্ম বিশিষ্ট ধাতব হাইড্রক্সাইডকে ক্ষার (Alkali) বলে । যেমন – ক্যালসিয়াম হাইড্রক্সাইড (Ca(OH)2, টাশিয়াম হাইড্রক্সাইড (KOH), সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড (NaOH), অ্যামোনিয়াম হাইড্রক্সাইড (NH4OH) ইত্যাদি।
সুতরাং আমরা বলতে পারি, যে সকল ক্ষারক অতিমাত্রায় পানিতে দ্রবণীয় তাদেরকে ক্ষার বলে।
এসিড ও ক্ষারকের বৈশিষ্ট্য
এসিড এর সাধারণ বৈশিষ্ট্য
এসিড হচ্ছে একটি রাসায়নিক পদার্থ। যৌগের অণুতে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন পরমাণু থাকে এবং ঐ প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেনকে ধাতু বা যৌগমূলক দ্বারা আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে প্রতিস্থাপিত করা যায় এবং যা ক্ষারকের সাথে প্রশমন বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে তাকে অম্ল বা অ্যাসিড বলে। যে সকল যৌগ জলীয় দ্রবণে H+ আয়ন উৎপন্ন করে তাকে বলা হয় এসিড। কোনো কিছুর pH মান 7 হতে কম হলে সেটি এসিড ।
- এটি স্বাদে টক।
- এটি নীল লিটমাস কে লাল করে।
- এটি ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
- প্রতিটি এসিড হাইড্রোজেন আয়ন (H+) দান করে।
- যে এসিড যতো বেশি হাইড্রোজেন আয়ন দান করে সে ততো বেশি শক্তিশালী।
ক্ষার এর সাধারণ বৈশিষ্ট
ক্ষার এক শ্রেণির রাসায়নিক যৌগ যা হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করতে সক্ষম। যেমন ধাতুর অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইডসমূহ ক্ষার। জলে দ্রবণীয় ক্ষারক যা হাইড্রোক্সাইড আয়ন প্রদান করে তাকে ক্ষার বলা হয়। আর যে সকল যৌগ জলীয় দ্রবণে OH- আয়ন উৎপন্ন করে ও পানিতে দ্রবীভূত হয় তাকে বলা হয় ক্ষার। কোনো কিছুর pH মান 7 এর বেশি ও পানিতে দ্রবীভূত হলে সেটি ক্ষার জাতীয়।
- এরা স্বাদহীন।
- এটি লাল লিটমাস কে নীল করে।
- এটি এসিড এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ ও পানি উৎপন্ন করে।
- প্রতিটি ক্ষার হাইড্রক্সিল আয়ন (OH-) দান করে।
- এরা পিচ্ছিল প্রকৃতির।
এসিড ও ক্ষারের পার্থক্য
এসিড | ক্ষার |
---|---|
এসিডে এক বা একাধিক প্রতিস্থাপনীয় হাইড্রোজেন থাকে | ক্ষারকে অক্সাইড বা হাইড্রোক্সাইড বা হাইড্রোক্সিল আয়ন থাকে। |
এসিড ক্ষারক সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও পানি উৎপন্ন করে | ক্ষারক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও পানি উৎপন্ন করে। |
এসিড নীল লিটমাসকে লাল করে | ক্ষারক লাল লিটমাসকে নীল করে। |
এসিড ধাতুর সাথে বিক্রিয়া করে লবন ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে। | খুব কম ক্ষারক ব্যাতিত অধিকাংশ ক্ষারক ধাতুর সাথে ক্রিয়া করেনা। অধিক শক্তিশালী ক্ষারক হলে একাধিক ধাতুর জটিল যৌগ সৃষ্টি করে। |
এসিড খুবই শক্তিশালী হয়, মানবদেহকে বিশ্লিষ্ট(পুড়িয়ে) দিতে পারে । | ক্ষারক মানব শরীরে ক্ষতি করতে পারলেও তা এসিডের মত মারাত্মক হয়না। |
এসিড ও ক্ষারকের ব্যবহার
এসিড কি কি কাজে ব্যবহৃত হয়
- ভিটামিন সি/এসকরবিক এসিড – ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। এর অভাবে স্কার্ভি রোগ হয়।
- আম,জলপাই ইত্যাদির আচার সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয় – ভিনেগার বা এসিটিক এসিড(CH3COOH)
- বোরহানি বা দই –এ বিদ্যমান এসিডের নাম – ল্যাকটিক এসিড ; হজমে সহায়তা করে ।
- টয়লেট পরিষ্কারকের মূল উপাদান – শক্তিশালী এসিড HCl,HNO3,H2SO4
- সৌর প্যানেল, IPS(Instant Power Supply) বা গাড়িতে যে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয় তার অত্যাবশ্যকীয় উপাদান – সালফিউরিক এসিড
ক্ষারক কি কি কাজে ব্যবহৃত হয়
- বাসাবাড়িতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাজে যেসব লিকুইড বা পদার্থ (যেমন: টয়লেট ক্লিনার, সোডিয়াম হাইড্রোক্লোরাইড বা কস্টিক সোডা ইত্যাদি) ব্যবহৃত হয় সেগুলোতে ক্ষারক থাকে।
- কাচ জাতীয় জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড ব্যবহৃত হয়। এটি একটি ক্ষারক।
- পান খাওয়ার চুন এবং দেওয়ালের চুন তৈরিতে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড ব্যবহার করা হয়, যেটা একটি ক্ষারক।
- পোকামাকড় দমন করার জন্য যেসব লিকুইড বা ঔষধ তৈরি করা হয়, সেগুলোতে পানির সাথে ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড থাকে।
- পাকস্থলীর এসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিক নিরাময়ের জন্য যেসব ওষুধ তৈরি করা হয় সেগুলোতে ম্যাগনেসিয়াম হাইড্রোক্সাইড বা অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড থাকে। যেগুলো মূলত ক্ষারক।
- আমাদের দাঁতের ফাঁকে ফাঁকে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো, আমাদের দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবারগুলো খায়। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের টুথপেস্ট ব্যবহার করে সেগুলো পরিষ্কার করি। দাঁত পরিষ্কার করার জন্য যে টুথপেস্ট তৈরি করা হয় সেগুলোতে মূলত ক্ষারক থাকে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | এসিড
Q1. তেতুলে কোন এসিড থাকে
Ans – তেঁতুলের মধ্যে টার্টারিক অ্যাসিড‚ ম্যালিক অ্যাসিড এবং পটাশিয়াম থাকে।
Q2. আপেলে কোন এসিড থাকে
Ans – অ্যাপেলে সাইট্রিক, ম্যালিক, পাইরুভিক, অক্সালিক, এ কেটোগ্লুটারিক, সাক্সিনিক, ফিউমারিক, ল্যাকটিক এসিড থাকে।
Q3. কমলালেবুতে কোন এসিড থাকে
Ans – কমলা লেবুতে ৩ ধরনের এসিড থাকে। সাইট্রিক এসিড , অ্যাসকরবিক অ্যাসিড , ম্যালিক এসিড।
Q4. টমেটোতে কোন এসিড থাকে
Ans – টমেটোতে ম্যালিক এসিড থাকে।
Q5. সাইট্রিক এসিডের সংকেত
Ans – সাইট্রিক অ্যাসিড একটি দুর্বল জৈব অম্ল। এটির রাসায়নিক সংকেত হলো C6H8O7
Q6. লেবুতে কোন এসিড থাকে
Ans – সাইট্রিক ও অ্যাসকরবিক অ্যাসিড।
Q7. পাইরুভিক এসিডের সংকেত
Ans – পাইরুভিক এসিডের সংকেত হলো C3 H4 O3 ।
Q8. ম্যালিক এসিডের সংকেত
Ans – ম্যালিক এসিডের সংকেত হলো HO₂CCH=CHCO₂H।
Q9. সাইট্রিক এসিড এর সংকেত
Ans – সাইট্রিক অ্যাসিড একটি দুর্বল ত্রিক্ষারীয় জৈব অ্যাসিড। এর রসায়নিক সংকেত হল C6 H8 O7।
Q10. ল্যাকটিক এসিডের সংকেত
Ans – ল্যাকটিক এসিডের সংকেত হলো CH3-CH(OH)-COOH।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।