সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের মূলভাব, বিষয়বস্তু

উত্তরঃ শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের রচিত এক অসাধারন নাটক হল ” সিরাজদ্দৌলা “। আমাদের বইয়ের পাঠ্য নাটকটি সিরাজদ্দৌলা – এর দ্বিতীয় অংশের প্রথম দৃশ্য।

সাধারণভাবে এই নাটকটি নবাব সিরাজের অসহায়তা এবং তার মনের কষ্টের কাহিনি। আমাদের পাঠ্যবইয়ের নাটকের অংশে আমরা দেখতে পাই বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজের রাজদরবার। সিরাজের রাজদরবারের একদিকে উপস্থিত রয়েছেন সিরাজের কিছু শুভাকাঙ্খী বা তার কল্যাণকামী মানুষ। তাদের মধ্যে হলেন মোহনলাল, মিরমদন ও গোলাম হোসেনর মত কিছু মানুষ। অন্যদিকে রয়েছেন সিরাজের বিপক্ষে থাকা ষড়যন্ত্রকারী কিছু মানুষ, যারা সিরাজকে সিংহাসন থেকে উৎখাত করতে চান। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মীরজাফর, রায় দুর্লভ, রাজবল্লভ, জগৎশেঠ প্রমুখ। এর সঙ্গে নবাবের দরবারে হাজির থাকেন ফরাসি প্রতিনিধ মসিয়ে লা, যিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় নবাবের কাছে সাহায্যপ্রার্থী ছিলেন।

নবাব উপযুক্ত তথ্য ও প্রমান হাজির করে ওয়াটসকে নবাবের রাজদরবার থেকে বের করে দেন। ওয়াটস কে নবাব তার রাজদরবার থেকে বের করে দেওয়ায় যারা ওয়াটসের সর্মথনে ছিলেন, যারা ইংরেজি কোম্পানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করে নবাবকে বাংলার সিংহাসন থেকে উৎখাত করতে চেয়ে ছিলেন অর্থাৎ মীরজাফর, রায়দুর্লভ, জগৎশেঠ ও রাজবল্লব প্রমুখ নবাবের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেন। এবং এভাবে রাজদরবারে নবাবের সঙ্গে মীরজাফর, রায়দুর্লভ, রাজবল্লব ও জগৎশেঠ এর মধ্যে ঝামেলা সৃষ্টি হয়।

নবাব একের পর এক এদের কুকর্মের পর্দা ফাঁস করতে থাকেন। এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা নবাবের শুভাকাঙ্ক্ষী, অর্থাৎ মোহনলাল, মিরমদন ও গোলাম হোসেনের মতো মানুষেরা তাদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নবাবের রাক সভা দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যায়। একদিকে ছিলেন নবাবের শুভাকাঙ্ক্ষী দল এবং অন্যদিকে ছিলেন রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ জগৎ শেঠ ও মীরজাফরের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা। এখানে নবাব এদের চারজনের কুকর্মের কথা জানা সত্ত্বেও এবং তাদের সামনেই তাদের কুকর্মের পর্দা ফাঁস করে দেওয়ার সত্বেও নবাব এদের কোন শাস্তি দেন না।

যেখানে নবাব চাইলেই এদের কুকর্মের শাস্তি দিতে পারতেন কিন্তু নবাব এখানে এদের চারজনকে কোন রকম শাস্তি না দিয়ে তিনি মিত্রতার ভাষা ব্যবহার করেন। নবাব চারজনকেই পাল্টে যেতে বলেন। এরপর নগর রাজদরবারে গোলাম হোসেন ছাড়া বাকি সবাই দরবার ত্যাগ করেন। পরমুহুর্তেই নবাবের দরবারে তার মাসি ঘসেটি বেগম উপস্থিত হন। এখানে ঘষেটি বেগম তার বন্দিজীবন এবং তার নিজ পুত্রের মৃত্যুশোকে, তিনি তার মনের জ্বালার বসে নবাবের এই দুর্দিনে সিরাজকে অভিশাপ দেন এবং তিনি এখানে সিরাজের মৃত্যু কামনা করেন।

ঘসেটি বেগমের এরকম কথা শুনে তখন সেখানে সিরাজের স্ত্রী লুৎফা হাজির হন। এবং তিনি ঘষেটি বেগমের সৃষ্টি করা এরকম বাজে একটা পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দেন। এবং লুৎফা এখানে তার স্বামী সিরাজকে মানসিকভাবে সামাপ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু নবাব সিরাজ ঘষেটি বেগমের অভিশাপ এবং পলাশীর যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং তার বিপদের কথা চিন্তা করেই তিনি তার মনের দুঃখ প্রকাশ করেন। এবং বাংলার নবাব সিরাজের এই মনের হাহাকার তার দুঃখ, কষ্ট, বেদনা নিয়েই এই নাটকটি শেষ হয়।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের লুৎফা চরিত্র

উত্তরঃ আমাদের পাঠ্য শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ নাট্যাংশে যে দুটি নারীচরিত্র আছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সিরাজপত্নী লুৎফা । নাট্যাংশে লুৎফাকে আমরা প্রথম দেখতে পাই ঘসেটি বেগমের সঙ্গে নবাবের মতিঝিলের অধিকার নিয়ে যখন বাদানুবাদ চলছিল তখন । ঘসেটির কথায় শওকতের মতো কেউ নবাবকে যেদিন হত্যা করবেন সেদিনই তিনি শাস্তি পাবেন । স্বামীর বিরুদ্ধে এই অভিসম্পাত শুনে লুৎফা অনুরোধের সুরে ঘসেটিকে এমন কথা বলতে বারণ করেন ।

ঘসেটির ভর্ৎসনা সত্ত্বেও লুৎফা তাঁর উদ্দেশ্যে একটা কটু কথাও উচ্চারণ করেননি , এটি তার বিনয় । স্বামীর প্রতি লুৎফা একনিষ্ঠ , তাই স্বামীর বিপদের বিষয়ে সে উদ্‌বিধা । বিভিন্ন সময়ে তিনি স্বামীর পাশে থেকে , কাজে সাহায্য করেছেন । ঘসেটির প্রতিহিংসা থেকে বাঁচাতে নবাবকে মতিঝিল ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন । স্বল্প রাজত্বকালে নানান সমস্যায় দীর্ণ সিরাজকে বিশ্রামের পরামর্শ দিয়ে যোগ্য সঙ্গিনীর পরিচয় দিয়েছেন । লুৎফা হলেন সেই নারী যিনি ট্র্যাজিক নায়কের পাশে থেকে তাকে ভালোবাসা সেবা – সাহস ও আস্থা জুগিয়েছেন , যাতে হতাশ , সমস্যাদীর্ণ নবাবের যন্ত্রণার ক্ষততে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়েছে ।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের ঘসেটি বেগমের চরিত্র

উত্তর: নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের লেখা ‘ সিরাজদ্দৌলা নাটকটি পলাশির যুদ্ধের ঐতিহাসিক ঘটনাকে সামনে রেখে রচিত হয়েছে । নাট্যকার বিশেষ কিছু চরিত্রের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক সত্যকে হুবহু রক্ষা করেছেন । এই চরিত্রগুলির মধ্যে অন্যতম চরিত্র হলো “ ঘসেটি বেগম । তাঁর চরিত্রের যে দিকগুলি পাঠ্যাংশে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেগুলি হলো –

ষড়যন্ত্রকারী : ঘসেটি বেগম সম্পর্কে সিরাজের মাসি । তিনি চেয়েছিলেন পিতা আলিবর্দির মৃত্যুর পরে তাঁর স্বামী বাংলার মসনদে বসুন । কিন্তু তাঁর স্বামীর আকস্মিক মৃত্যু হলে সিরাজের সিংহাসনে লাভ একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে ওঠে । নিজের মনোবাসনা পূর্ণ না হওয়ায় ঘসেটি সিরাজের প্রতি ঈর্ষা থেকে ইংরেজদের সাথে মিলিত হয়ে ষড়যন্ত্রে

প্রতিহিংসাপরায়ণ : ঘসেটি সিরাজের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ও অভিসম্পাত করেছেন । কিন্তু রাজনৈতিক কারণে সিরাজ ঘসেটিকে গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন । তাতে ঘসেটি আরও প্রতিহিংসাপরায়ণা হয়ে ওঠেন । ঘসেটির মুখেই সেই প্রতিহিংসার কথা প্রকাশ পায়— “ আমার রাজ্য নাই , তাই আমার কাছে রাজনীতিও নাই — আছে শুধু প্রতিহিংসা । ” এই প্রতিহিংসা তাঁর পূর্ণ হবে সেদিন যেদিন সিরাজের প্রাসাদ অপর জন অধিকার করবে এবং সিরাজকে হত্যা করবে ।

অমানবিক আচরণ : ঘসেটিকে সিরাজের মনে হয়েছে দানবী । ঘসেটির সঙ্গে থাকতে লুৎফারও ভয় হয়— “ মনে হয় , ওর নিশ্বাসে বিষ , ওর দৃষ্টিতে আগুন , ওর বুধ অঙ্গ সঞ্চালনে ভূমিকম্প । ” নবাবের সকল চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রধান বিদ্রোহিনী ঘসেটি বেগম ।

স্বার্থপরতা : নারীর কোনো গুণ – বৈশিষ্ট্য ঘসেটির মধ্যে খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় নবাব তিনি মানবী না হয়ে হয়েছেন দানবী । সিরাজ তাঁকে মায়ের সম্মান দিলেও ঘসেটির মধ্যে কিন্তু মায়ের স্নেহ ছিল না , ছিল তীব্র প্রতিহিংসার দহন জ্বালা নাটকে এক কুচক্রী , স্বার্থান্বেষী , প্রতিহিংসাপরায়ণ কুট নারী হিসাবেই ঘসেটির উপস্থিতি ।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের সিরাজের চরিত্র

উত্তর: প্রখ্যাত নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত ‘সিরাজদ্দৌলা’ নাটকের সিরাজ এক অসামান্য ব্যক্তিত্ব । তাঁর চরিত্রের যে গুণগুলি নাট্যাংশে প্রকাশ পেয়েছে সেগুলি হল —

দেশাত্মবোধ : সিরাজ তাঁর নিজের বিরুদ্ধে যাবতীয় ষড়যন্ত্রকে কখনোই ব্যক্তিগত আলোকে দেখেননি । বরং বাংলার বিপর্যয়ের দুশ্চিন্তাই তাঁর কাছে প্রধান হয়ে ওঠে । বাংলাকে বিদেশী শক্তির হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি সভাসদদের কাছে ক্ষমা চাইতে বা শত্রুর সঙ্গে সন্ধিতেও পিছপা হননি ।

সাম্প্রদায়িক মানসিকতা: সিরাজ বুঝেছিলেন বাংলা শুধু হিন্দুর নয়, শুধু মুসলমানের নয়— হিন্দু মুসলমান মিলিত প্রতিরোধই বাংলাকে ব্রিটিশের আগ্রাসন থেকে মুক্ত করতে পারে । সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত এই জাতীয়তাবোধ সত্যিই বিরল দৃষ্টান্ত ।

আত্মসমালোচনা : নবাব সিরাজদ্দৌলা বুঝেছিলেন ষড়যন্ত্রীরা যেমন ভুল করেছে, তেমনি তাঁর নিজেরও অনেক ত্রুটি আছে । তাই তিনি বাংলার বিপদের দিনে নিজের ভুল স্বীকারে দ্বিধাগ্রস্থ হন না ।

দুর্বল মানসিকতা : সিরাজ তাঁর শত্রুদের চক্রান্ত বুঝতে পারলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন নি । তেমনি ঘসেটি বেগমের অভিযোগেরও তিনি প্রতিবাদ করতে পারেন না । বরং নিজের দুর্বলতা নিজে মুখেই স্বীকার করে নেন “পারিনা শুধু আমি কঠোর নই বলে ।”

সব মিলিয়ে নাট্যকার নবাব সিরাজকে সফল ট্রাজিক নায়কের রূপ দিতে সক্ষম হয়েছেন ।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর MCQ

মোহাম্মদি বেগ কত টাকার বিনিময়ে সিরাজউদ্দৌলাকে হত্যা করতে রাজি হয়েছিল?

ক) দশ হাজার

খ) আট হাজার

গ) ছয় হাজার

ঘ) পাঁচ হাজার

উত্তরঃ ক) দশ হাজার

‘স্বার্থান্ধ প্রতারকের কাপুরুষতা বীরের সংকল্প টলাতে পারেনি’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে?

ক) নৌবে সিং

খ) রাজবল্লভ

গ) জগেশঠ

ঘ) রায়দুর্লভ

উত্তরঃ ক) নৌবে সিং

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকটির রচয়িতা কে?

ক) আবু হেনা মোস্তফা কামাল

খ) সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ

গ) দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ঘ) সিকান্দার আবু জাফর

উত্তরঃ ঘ) সিকান্দার আবু জাফর

সিকান্দার আবু জাফর কোন পত্রিকা সম্পাদনা করে স্মরণীয় হয়ে আছেন?

ক) দৈনিক ইনকিলাব খ) দৈনিক যুগান্তর

গ) মাসিক মোহাম্মদি ঘ) মাসিক সমকাল

উত্তরঃ ঘ) মাসিক সমকাল

সিকান্দার আবু জাফরের পেশা কোনটি?

ক) শিক্ষকতা

খ) ওকালতি

গ) সাংবাদিকতা ঘ) ব্যবসা

উত্তরঃ গ) সাংবাদিকতা

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের উল্লেখযোগ্য চরিত্র সংখ্যা কতটি?

ক) ২৫টি খ) ৩০টি গ) ৩৫টি ঘ) ৩৯টি

উত্তরঃ ঘ) ৩৯টি

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে মোট কতটি অঙ্ক বিদ্যমান?

ক) দুটি খ) তিনটি গ) চারটি ঘ) পাঁচটি

উত্তরঃ গ) চারটি

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে মোট কতটি দৃশ্য রয়েছে?

ক) ৬টি খ) ৮টি গ) ১০টি ঘ) ১২টি

উত্তরঃ ঘ) ১২টি

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন অঙ্কে দৃশ্য সংখ্যা সর্বাধিক?

ক) প্রথম অঙ্কে

খ) দ্বিতীয় অঙ্কে

গ) তৃতীয় অঙ্কে

ঘ) চতুর্থ অঙ্কে

উত্তরঃ গ) তৃতীয় অঙ্কে

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের তৃতীয় অঙ্কে মোট কতটি দৃশ্য রয়েছে?

ক) ২টি খ) ৩টি গ) ৪টি ঘ) ৫টি

উত্তরঃ গ) ৪টি

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের কোন অঙ্কে সর্বনিম্ন দুটি দৃশ্য রয়েছে?

ক) প্রথম অঙ্কে

খ) দ্বিতীয় অঙ্কে

গ) তৃতীয় অঙ্কে

ঘ) চতুর্থ অঙ্কে

উত্তরঃ ঘ) চতুর্থ অঙ্কে

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় কত সালে?

ক) ১৯৫২ সালে

খ) ১৯৬৫ সালে

গ) ১৯৬৬ সালে

ঘ) ১৯৬৯ সালে

উত্তরঃ খ) ১৯৬৫ সালে

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকটির বিষয় অনুসারে কোন প্রকৃতির নাটক?

ক) কাল্পনিক

খ) ঐতিহাসিক

গ) আত্মজৈবনিক

ঘ) চরিত্রপ্রধান

উত্তরঃ খ) ঐতিহাসিক

রস বিচারে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকটি কোন প্রকৃতির নাটক?

ক) হাস্যরসাত্মক

খ) ব্যঙ্গাত্মক

গ) বিদ্রুপাত্মক

ঘ) ট্র্যাজেডিধর্মী

উত্তরঃ ঘ) ট্র্যাজেডিধর্মী

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের প্রথম অঙ্কের প্রথম দৃশ্যে কোন দুর্গের বর্ণনা আছে?

ক) ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ খ) একডালা দুর্গ

গ) বাস্তিল দুর্গ ঘ) লালবাগ কেল্লা

উত্তরঃ ক) ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গ

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে ‘কম্পানি’ শব্দটি দ্বারা কোন কম্পানিকে নির্দেশ করেছে?

ক) মারাঠা বহুজাতিক কম্পানিকে

খ) ফরাসি বহুজাতিক কম্পানিকে

গ) পর্তুগিজ বহুজাতিক কম্পানিকে

ঘ) ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে

উত্তরঃ ঘ) ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানিকে

‘চুপ বেইমান! কাপুরুষ বাঙালির কথায় যুদ্ধ হবে না। ’ সংলাপটি ক্লেটন কার উদ্দেশ্যে বলেন?

ক) ক্যাপ্টেন মিনচিন খ) উমিচাঁদ

গ) মানিকচাঁদ ঘ) ওয়ালি খান

উত্তরঃ ঘ) ওয়ালি খান

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের বড় প্রশ্ন উত্তর

” আমার এই অক্ষমতার জন্য তোমরা আমাকে ক্ষমা করো। ” – বক্তা কাদের কাছে কোন অক্ষমতা প্রকাশ করেছেন??

উওর : নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত সিরাজদ্দৌলা ওনাট্যাংশটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে রচিত। এখানে বাংলার নবাব সিরাজ ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা- এর কাছে তার অক্ষমতার কথা প্রকাশ করেছেন।

যখন ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা নবাবের রাজ দরবারে আসেন এবং তিনি ইংরেজদের সঙ্গে থাকা ফরাসিদের দীর্ঘদিনের বিবাদের সূত্রে ধরে যে ঝামেলা, এবং ফরাসিদের সঙ্গে এই ঝামেলা কে কেন্দ্র করে ইংরেজরা সিরাজদ্দৌলার অনুমতি ছাড়াই চন্দননগর আক্রমণ করে চন্দনগর দখল করে নেয়। এবং এরপর ইংরেজরা সেখানকার ফরাসিদের সমস্ত বাণিজ্য কুঠি অধিগ্রহণের দাবি জানায়। যখন ফরাসি প্রতিনিধি মঁসিয়ে লা – নবাবের কাছে এই ঘটনার সুবিচার চাইতে আসেন তখন নবাব সিরাজের ফরাসিদের প্রতি যথেষ্ট সংবেদনশীলতা এবং সহানুভূতি থাকলেও নবাব তাদের কোন রকম সাহায্য করতে পারেন না। নবাবের ফরাসিদের কোনরকম সাহায্য করতে না পারার এই অক্ষমতার কথাই এখানে তিনি প্রকাশ করেছেন।

” আপনাদের কাছে এই ভিক্ষা যে, আমাকে শুধু এই আশ্বাস দিন। – বক্তা কাদের কাছে ভিক্ষা চান? তিনি কী আশ্বাস প্রত্যাশা করেন??

উওর : নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্ত রচিত সিরারদ্দৌলা নাটক থেকে গৃহীত এই উক্তিটি হল বাংলার শেষ নবাব সিরাজের। এখানে বক্তা অর্থাৎ সিরাজ তার অসহায় পরিস্থিতিতে তার বিরুদ্ধেই ষড়যন্ত্রকারী রাজবল্লব, রায়দুর্লভ, জগতশেঠ ও মীরজাফর এর কাছে সাহায্যের ভিক্ষা চান।।

নবাব সিরাজের সভাসদ জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ রাজবল্লব ও মীরজাফর প্রমুখ নবাব সিরাজের সভাসদ হলেও, তারা নবাবকে তাঁর সিংহাসন থেকে উৎখাত করতে চান। এবং এই উদ্দেশ্য নিয়েই এই চারজন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে হাত মিলিয়ে নবাব কে বাংলার সিংহাসনে থেকে উৎখাত করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে শুরু করেন। প্রথমে নবাব এই চারজনের ষড়যন্ত্রের কথা না জানতে পারলেও পরে তার বিরুদ্ধে করা এই ষড়যন্ত্রর কথা স্পষ্ট হয়ে যায় মীরজাফরকে লেখা ওয়াটসের একটি চিঠির মাধ্যমে। এবং সেই চিঠিটা যখন নবাবের হাতে আসে তখন নবাবের কাছে এই সমস্ত ঘটনায় একদম পরিষ্কার হয়ে যায়। এখানে নবাবের বিরুদ্ধে তার সভাসদদের করা এই ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে নবাব এই চারজনকে শাস্তি দিতে পারতেন। কিন্তু নবাব এখানে এই চারজনকে কোন প্রকার শাস্তি না দিয়ে নবাব এই চারজনের দিকে বন্ধুত্বের তার হাত বাড়িয়ে দেন।। নবাব বুঝতে পেরেছিলেন তার এই অসহায় পরিস্থিতিতে ইংরেজদের বিরুদ্ধের লড়াইতে দেশীয় শক্তি একত্রিভূত করতে হলে নবাবের মিরজাফরের সাহায্য প্রয়োজন হবে। আর এজন্য এই বাংলাকে ইংরেজদের হাত থেকে রক্ষা করতে নবান তার সভাসদদের কাছ থেকে তাকে সাহায্য করার আশ্বাস চেয়েছেন।

” জানিনা, আজ কার রক্ত সে চায়। পলাশি, রাক্ষসী পলাশি। – পলাশি নামকরণের কারণ নির্দেশ করে উক্তিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উওর : নদীয়া জেলার ভাগীরথীর পূর্বদিকে বাংলার ঐতিহাসিক স্থান হল পলাশি। পলাশি নামক এই স্থানটিতে লাল পলাশের রঙে রঙিন হয়ে থাকতো বলে এই জায়গাটির নাম হয়েছিল পলাশি।

প্রখ্যাত নাট্যকার শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের সিরাজউদ্দৌলা নাট্যাংশ এখানে এই বক্তব্যটি হল বাংলার শেষ নবাব সিরাজ এর। সিরাজদ্দৌলা নাট্যাংশে পলাশির যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কি হবে তা না জেনেই সিরাজ তার এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। নবাব সিরাজ জানতেন যে কোম্পানির সাথে যুদ্ধে বিজয়ী হওয়া কঠিন! কিন্তু তবুও তিনি যুদ্ধ করবেন। নবাব হলেন এমন একজন ট্রাজিক নায়ক যার চারিদিক শত্রুদের দ্বারা ঘেড়া। নবাব সিরাজের বাইরে রয়েছে ইংরেজরা,তার সভার মধ্যে রয়েছে রাজবল্লভ, জগৎশেঠ, রায়দুর্লভ ও মীরজাফরের মত কিছু সভাসদ, যারা আদতেও পলাশির যুদ্ধে নবাবকে সাহায্য করবে কিনা তা নবাব জানে না। সেইসঙ্গে নবাবের মহলেই রয়েছেন ঘষেটি বেগম যিনি নিজ পুত্রশোকে এবং নিজের কষ্টে নবাবকে অভিশাপ দিয়ে তার মৃত্যু কামনা করেন। চারিদিকে শত্রু এবং মানসিক চাপ ও মনোকষ্টের দ্বারা জর্জরিত হয়ে নবাব নানাভাবে ভেঙ্গে পড়েন। এবং এরই মধ্যে নবাব মানসিক টানাপোড়েন এ আশঙ্কা করেন যে পলাশে রাঙা পলাশির রক্তেরনেশা মেটেনি। তাই সে রক্ত চায়! কিন্তু নবাব ভালো করে জানেন না যে আদতেই পলাশি কার রক্ত চায়.. আর কী-ই বা এই পলাশির যুদ্ধের পরিণতি।

বাংলার এই দুর্দিনে আমাকে ত্যাগ করবেন না । —কার কাছে , কার এই অনুরোধ ? এই অনুরোধের কারণ কী ?

উওর : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ নাট্যাংশে বল সিরাজদ্দৌলা তাঁর প্রধান সিপাহসালার মীরজাফরকে অনুরোধ অনুরোধের কারণ এই অনুরোধ জানিয়েছিলেন । আলিবর্দির মৃত্যুর পরে বাংলার মসনদে আরোহণ করেছিলেন । সিরাজদ্দৌলা । কিন্তু ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে গোপনে বোঝাপড়া করে রায়দুর্লভ , জগৎশেঠ ও মীরজাফরেরা তাঁকে বাংলার মসনদ থেকে উৎখাত করতে চেয়েছিল । মীরজাফর যে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এই তথ্যপ্রমাণও সিরাজের কাছে ছিল । কিন্তু পারস্পরিক দোষ – ত্রুটি ভুলে তিনি সকলকে একত্রিত করে বহিঃশত্রু ইংরেজকে পর্যুদস্ত করার স্বপ্ন দেখেছিলেন । তাঁর মনে । হয়েছিল অন্যায় উভয় পক্ষেরই হয়েছে , তবে এখন বিচারের পরিবর্তে অন্তরের সৌহার্দ্য স্থাপনই বেশি জরুরি । এই বিশ্বাস ও আবেগের বশবর্তী হয়েই নবাব সিরাজ সকলের কাছে উপরোক্ত অনুরোধ করেছিলেন ।

‘ নবাব যদি কলকাতা আক্রমণ না করতেন , তা হলে এসব কিছুই আজ হতো না ’ – ‘ নবাব ’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? কোন্ ঘটনার প্রতি নির্দেশ করা হয়েছে ?

উওর : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ নাট্যাংশ থেকে গৃহীত ‘ নবাব ’ – এর পরিচয় উদ্ধৃতাংশে ‘ নবাব ’ বলতে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলার কথা বলা হয়েছে । আলিবর্দি ছিলেন নিঃসন্তান । তাই তিনি ছোটো মেয়ের পুত্র সিরাজকে নিজের উত্তরাধিকারী হিসেবে নির্বাচিত করেছিলেন । ফলে আলিবর্দির মৃত্যুর পরে সিরাজদ্দৌলা বাংলার মসনদে বসেন । তিনি ছিলেন স্বাধীনচেতা । ঐতিহাসিক ঘটনার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরেই তিনি ইংরেজদের প্রতি নির্দেশ চন্দননগর আক্রমণ , কলকাতা ও কাশিমবাজারে সৈন্য সমাবেশের সংবাদ পান । এক্ষেত্রে কোনো রকম আপসে না – গিয়ে সিরাজ কাশিমবাজার কুঠি দখল করেন এবং কলকাতা আক্রমণ করে ইংরেজদের বিতাড়িত করেন । এখানে সেই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রতিই নির্দেশ করা হয়েছে ।

‘ আর আমরাই বুঝি ক্ষমা করব বিদ্রোহিণীকে ‘ বিদ্রোহিণী ’ কে ? তার সম্পর্কে এমন উক্তির কারণ কী ?

উওর : শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ নাট্যাংশে ‘ বিদ্রোহিণী ’ ‘ বিদ্রোহিণী ‘ – র পরিচয় বলতে নবাব সিরাজদ্দৌলার বড়ো মাসি ঘসেটি বেগম তথা মেহরুন্নিসা বেগমের কথা বলা হয়েছে । প্রশ্নোশ্বত উক্তির কারণ → ঘসেটি চেয়েছিলেন তাঁর আর – এক বোনের ছেলে শওকতজঙ্গ বাংলার মসনদে বসুক । তাই পিতা আলিবর্দি উত্তরাধিকারী হিসেবে সিরাজকে মনোনীত করলে , তা তিনি ভালোভাবে নেননি । আবার সিরাজও এ কথা জানতেন । তাই ঘসেটির সঙ্গে নবাব হওয়ার আগেই , তিনি প্রকাশ্য শত্রুতায় জড়িয়ে পড়েছিলেন । ফলে ঘসেটি দেওয়ান রাজবল্লভের মাধ্যমে সিরাজ – বিরোধী ষড়যন্ত্রে ইংরেজদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন । তখন সিরাজদ্দৌলা তাঁকে ‘ বিদ্রোহিণী ‘ আখ্যা দিয়ে বন্দি করেছিলেন ।

ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে আপোষ – ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে আপস সম্ভব নয় কেন বুঝিয়ে দাও ।

উওর : প্রশ্নোদ্ভূত অংশটি শচীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের ‘ সিরাজদ্দৌলা ‘ নাট্যাংশ থেকে নেওয়া । ঘসেটির দেওয়ান রাজবল্লভ নবাব সিরাজকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে আপাস নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়ায় , তিনি এমন মন্তব্য করেছিলেন । আসলে সিরাজের চরিত্রের একটি মহৎ গুণ , তিনি । ছিলেন স্বাধীনচেতা । তাই ইংরেজ বণিকেরা যে বাংলার শাসনক্ষমতা দখল করতে চায় সেটা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন । কলকাতায় সৈন্য সমাবেশ , চন্দননগর আক্রমণ , কাশিমবাজার অভিযান কিংবা ওয়াটস কর্তৃক আলিনগর সন্দ্বির অবমাননায় ইংরেজদের এই দুরভিসন্ধিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল । ক্লাইভ মাদ্রাজ থেকে ফিরে কলকাতা পুনরায় দখল করায় , পরিস্থিতির চাপে তখনকার মতো সিরাজ আলিনগরের সন্ধির মাধ্যমে মীমাংসা করতে বাধ্য হন । আর সেসময় থেকেই ইংরেজরা মীরজাফর , রায়দুর্গভ , জগৎশেঠ – দের সঙ্গে নিয়ে অনমনীয় সিরাজকে মসনদ থেকে অপসারিত করার ষড়যন্ত্র শুরু করেন । এ সমস্তই সিরাজ জানতেন । তাই তাঁর পক্ষে ইস্ট কোম্পানির সঙ্গে আপস সম্ভব ছিল না ।

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর pdf

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর, সিরাজউদ্দৌলা নাটকের pdf

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুরো নাটক








রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুরো নাটক

সিরাজউদ্দৌলা নাটকের প্রশ্ন উত্তর

‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকের তৃতীয় অঙ্কে মোট কতটি দৃশ্য রয়েছে?
উত্তরঃ ৪টি


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।