পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সারাংশ, পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার মূল মর্মবাণী কি

করিতে পারি না কাজ, সদা ভয় সদা লাজ
সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,-পাছে লোকে কিছু বলে।

আড়ালে আড়ালে থাকি, নীরবে আপনা ঢাকি,
সম্মুখে চরণ নাহি চলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

হৃদয়ে বুদবুদ মত, উঠে চিন্তা শুভ্র কত,
মিশে যায় হৃদয়ের তলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি, সযতনে শুকায়ে রাখি;-
নিরমল নয়নের জলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

একটি স্নেহের কথা, প্রশমিতে পারে ব্যথা,-
চলে যাই উপেক্ষার ছলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

মহৎ উদ্দেশ্য যবে, এক সাথে মিলে সবে,
পারি না মিলিতে সেই দলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

বিধাতা দেছেন প্রাণ, থাকি সদা ম্রিয়মাণ;
শক্তি মরে ভীতির কবলে, পাছে লোকে কিছু বলে।

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

আমরা কাজ করতে পারি না—

উত্তর : ভয় আর লজ্জায়।

শক্তি মরে—

উত্তর : ভীতির কবলে।

সব সময় সংকল্প টলে—

উত্তর : সংশয়ে।

কবি অন্তরের চিন্তাকে তুলনা করেছেন—

উত্তর : বুদ্বুদের সঙ্গে।

মনের ব্যথা প্রশমন করতে পারে—

উত্তর : স্নেহের কথা।

বিধাতা প্রাণ দিয়েছেন—

উত্তর : উচ্ছল থাকার জন্য।

লোকলজ্জার ভয় পরিহার করলে—

উত্তর : সদিচ্ছা বাস্তবায়িত হয়।

নয়নের জল—

উত্তর : নির্মল।

হৃদয়ে শুভ্র চিন্তা ওঠে—

উত্তর : বুদ্বুদের মতো।

কাজ করতে গেলে মানুষ—

উত্তর : দ্বিধাগ্রস্ত হয়।

কাজে দ্বিধাগ্রস্ততার কারণ—

উত্তর : সমালোচনার ভয়।

কবিতার মূল উদ্দেশ্য—

উত্তর : মানুষকে কর্মোদ্যমী করা।

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

‘নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো, যুগ-জনমের বন্ধু আমার আঁধার ঘরের আলো।
সবাই মোরে ছাড়তে পারে বন্ধু যারা আছে, নিন্দুক সে ছায়ার মতো থাকবে পাছে পাছে।
নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্বহিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে।’

‘প্রশমিতে’— শব্দটির অর্থ কী?

উত্তর : ‘প্রশমিতে’— শব্দটির অর্থ হলো উপশম ঘটাতে বা নিবারণ করতে।

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে’— উক্তিটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : ‘সংশয়ে সংকল্প সদা টলে’— উক্তিটির অর্থ মনের দৃঢ় ইচ্ছা পূরণে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়।
কামিনী রচিত ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বলা হয়েছে যে কোনো কাজ করতে গেলে কেউ কেউ দ্বিধাগ্রস্ত হয়। লোকলজ্জা ও সমালোচনার ভয়ে তাদের মনে এই দ্বিধা বা সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তাই যে কাজ করার জন্য তারা সংকল্প করে, তা অন্যের সমালোচনায় বাধাগ্রস্ত হয়।

উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কোন স্তবকের বিপরীত ভাব ধারণ করেছে? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : উদ্দীপকের প্রথম অংশের বক্তব্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকের বিপরীত ভাবকে ধারণ করেছে।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকে বলা হয়েছে, কোনো কাজ করতে গেলে কেউ কেউ অনেক সময় দ্বিধাগ্রস্ত হয়, কাজটি সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারবে কী পারবে না এই ভেবে। তা ছাড়া কাজটি করতে গেলে কে কী মনে করবে, কে কী সমালোচনা করবে, এই দ্বিধা ও সংকোচে তারা বসে থাকে, ফলে তাদের সংকল্পও দ্বিধান্বিত হয়।

কিন্তু প্রথম উদ্দীপকটি ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার উপর্যুক্ত ভাবের বিরোধিতা করে। উদ্দীপকের কবি মনে করেন যে এই পৃথিবীতে কেউ নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত ও বিব্রত হতে জন্মগ্রহণ করেনি। এখানে সবাই পরের উপকারে নিজেকে উৎসর্গ করবে—এটাই মানবজীবনের ব্রত হওয়া উচিত। উদ্দীপকের এই ভাবটি ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার উপর্যুক্ত প্রথম স্তবকের বিপরীত ভাব ধারণ করেছে।

উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের নিন্দুক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার নিন্দুকের তুলনামূলক আলোচনা করো।

উত্তর : উদ্দীপকের দ্বিতীয় অংশের নিন্দুক ভুল সংশোধনকারী বন্ধু ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার নিন্দুক মানুষের কর্মোদ্দীপনাকে প্রতিহত করে।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বলা হয়েছে, সমাজে অনেক লোক আছে যারা মনে মনে মানুষের জন্য ভালো কোনো কাজ করতে চায়; কিন্তু প্রকাশ্যে লোকলজ্জা, অন্যের সমালোচনা ও নিন্দার ভয়ে তারা নিজেদের গুটিয়ে রাখে। এ ধরনের মানুষের মনে কোনো শুভ, কল্যাণকর চিন্তা বুদবুদের মতো জেগে উঠলেও আবারও তা সমালোচনার ভয়ে নিভে যায়। অন্যের দুঃখ-বেদনায় তাদের প্রাণ কাঁদলেও সেটাকে কেউ দুর্বলতা ভাবতে পরে মনে করে চোখের পানি প্রাণপণে আটকায়। তেমনি সামান্য একটি স্নেহের কথায় অন্যের ব্যথা কমতে পারে জেনেও উপেক্ষার ভাব দেখিয়ে তারা চলে যায়। অন্যের সমালোচনাকে তারা এতটাই প্রাধান্য দেয় যে মহৎ কোনো উদ্দেশ্যে সমাজের অনেকে ঐক্যবদ্ধ হলেও তারা সেই দলে যোগ দিতে পারে না। তাদের সব শক্তি নিন্দুকের ভয় ও সমালোচনাতেই মরে যায়।

অন্যদিকে উদ্দীপকের নিন্দুককে কবি ভয় পান না। কারণ তিনি মনে করেন যে নিন্দুক আছে বলেই তিনি তার ভুলত্রুটি সংশোধন করে সঠিক পথে চলতে পারেন। এই নিন্দুক কবিকে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও প্রেরণা জোগায় বলে তিনি সারাজীবন নিন্দুকের উপস্থিতি কামনা করেন।

উদ্দীপকের উপর্যুক্ত বক্তব্য থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে উদ্দীপকের নিন্দুক তার কঠিন সমালোচনা দ্বারা কবিকে উৎসাহ প্রদান, আর ‘আর পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার নিন্দুক তার নিন্দা বা সমালোচনা দ্বারা ব্যক্তিকে নিরুৎসাহিত ও সংশয়ান্বিত করে তোলে—এটাই বৈসাদৃশ্য।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

“গ্রীষ্মের ছুটি হলে শফিক বাড়িতে আসে। কয়েকজন বেকার যুবক ও সহপাঠী বন্ধুকে নিয়ে পরিকল্পনা করে গ্রামে নৈশ বিদ্যালয় খোলার। সবাই তার এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়। এ জন্য প্রয়োজনীয় বইপত্র, ঘর, শিক্ষক—সবই নির্বাচন করে। এমন সময় গ্রামের এক লোক বলে, এর আগে কামাল মাস্টারের মতো মানুষ এ কাজে ফেল মেরেছে, সেখানে কচি শিশুরা খুলবে নৈশ বিদ্যালয়? এ কথা শুনে তারা দমে যায়।”

সংকল্প শব্দটির অর্থ কী?

উত্তর: ‘সংকল্প’ শব্দটির অর্থ—মনের দৃঢ় ইচ্ছা।

একটি স্নেহের কথায় কীভাবে আমাদের ব্যথা দূর হতে পারে?

উত্তর: আমাদের ব্যথা দূর করতে পারে স্নেহের কথা, যেখানে ভালোবাসার ছোঁয়া থাকে।

যাঁরা অন্তরে ব্যথা পান, তাঁরা সবাই অন্যের সাহায্য চান। হূদয়ের সবটুকু দিয়ে নয়, মানুষের সামান্য সুখের কথা, একটি আশার বাণী সমস্যায় থাকা মানুষকে সান্ত্বনা দেয়। স্নেহমাখা কথার পরশে অনেক বড় ব্যাথার উপশম হয়, আশাহতের হূদয়ে আশার সঞ্চার হয়। আর এভাবেই আমাদের ব্যথাগুলো স্নেহের কথায় দূর হতে পারে।

শফিকের উদ্যোগ ব্যাহত হওয়ার কারণ ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: শফিকের উদ্যোগ ব্যাহত হওয়ার কারণ সংকোচ যা ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় উঠে এসেছে।
সমাজে অনেকে মহত্ কাজে অগ্রসর হন কিন্তু লোকমুখে নানা কথা শুনে সংকোচবোধ করে এবং সে কাজে পিছিয়ে যায়, যার ফলে সে কাজটি সফলভাবে শেষ করতে পারে না। উদ্দীপকের শফিকেরা সেই নিন্দুকের খপ্পরে পড়ে তাদের প্রচলিত নৈশবিদ্যালয়ের স্থাপন কাজ থামিয়ে দেয়। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাতেও এ সংকোচের বিষয়টি উঠে এসেছে।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় এমন কথা স্পষ্ট হয়েছে যে সমাজে কিছু মানুষ সব সময় ভালো কাজে বাধা দিতে প্রস্তুত হয়ে থাকে। উদ্দীপকের শফিক ও তার বন্ধুরা যখন একটি নৈশ বিদ্যালয় খোলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছিল, তখন তেমনই একজনের কথায় তাদের সে কাজ থেমে যায়। সমালোচকের একটি নেতিবাচক কথায় শফিকের সুন্দর উদ্যোগটি ব্যাহত হয়। সংশয়ের জন্য তারা তাদের কাজটি করতে পারেনি। ‘পাছে লোক কিছু বলে’ কবিতাতেও প্রকাশ পেয়েছে সব সময়ই আমরা সংশয়ের ভয়ে বা লজ্জার জন্য মূল কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি এবং নিজেরা সংকোচের ভয়ে আর ভালো কাজ করতে পারি না। তাই বলা যায়, সংশয়ের জন্য শফিকদের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে, যা আলোচ্য কবিতার সংশয়ের কথাটি নির্দেশ করে।

শফিকের মাঝে কী ধরনের পরিবর্তন এলে সে তার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হতো, তা ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার আলোকে যুক্তিসহ লেখো।

উত্তর: শফিকের মাঝে দৃঢ় মনোবল থাকলে এবং সমালোচনাকে উপেক্ষা করতে পারলে সে তার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হতো; যা ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতারই ভাবধারা বিশেষ।
উদ্দীপকে উল্লিখিত শফিকের মাঝে অন্যের সমালোচনাকে উপেক্ষা করার মতো যথেষ্ট মানসিক শক্তি ছিল না। এই মানসিকতার জন্যই সে তার কর্ম থেকে ফিরে এসেছে এবং ব্যর্থ হয়েছে। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতাটিতেও সংশয় বিষয়টি তুলে আনা হয়েছে, যার জন্য মানুষ তার কর্মে সার্থকতা লাভ করতে ব্যর্থ হয়।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বলা হয়েছে, অন্যের সমালোচনামূলক কথার ফলে আমাদের জীবন কীভাবে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। উদ্দীপকের শফিক ও তার বন্ধুদের মতো ভালো ও মহত্ কাজের উদ্যোগ নিয়েও আমরা কীভাবে পিছিয়ে আসি। শুধু পরের কথায় তাদের মনে সংশয় সৃষ্টি করেছে এবং এরই ফলে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

সমাজ এমন একটি জায়গা, যেখানে নিন্দুকের আনাগোনা নানাভাবে হয়ে থাকে। নিন্দুকের অভাববোধ মনে হয় কোথাও নেই। নিন্দুক আমাদেরই জীবনের একটি অংশ। ‘পাছে লোক কিছু বলে’ কবিতায় এই নিন্দুকের সংশয়ের কথা বলা হয়েছে। অন্যের কাজের দোষ-ত্রুটি ধরাই যেন তাদের মূল কাজ। তবু আমাদের সমাজের মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। এ জন্য আমাদের মনে থাকতে হবে দৃঢ় মনোবল। উদ্দীপকের শফিকের মাঝে এসব বৈশিষ্ট্য থাকলে সে তার পরিকল্পনাকে ঠিকঠাক বাস্তবায়ন করতে পারতো। আলোচ্য কবিতার আলোকে এ কথা স্পষ্টভাবেই বলা যায়, উদ্দীপকের শফিকের মধ্যে যদি আত্মবলে বলীয়ান হয়ে কাজ করার ক্ষমতা অর্থাত্ মনোবল থাকত, তাহলে সে তার কর্মকাণ্ডে পিছিয়ে না গিয়ে তার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হতো।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

” নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো, যুগ জনমের বন্ধু আমার, আঁধার ঘরের আলো।
সবাই মোরে ছাড়তে পারে বন্ধু যারা আছে, নিন্দুক সে ছায়ার মতো থাকবে পাছে পাছে।
বিশ্বজনে নিঃস্ব করে, পবিত্রতা আনে, সাধক জনে নিস্তারিতে তার মতো কে জানে?
বিনা মূল্যে ময়লা ধুয়ে করে পরিষ্কার, বিশ্ব মাঝে এমন দয়াল মিলবে কোথা আর?
নিন্দুক সে বেঁচে থাকুক বিশ্ব হিতের তরে, আমার আশা পূর্ণ হবে তাহার কৃপা ভরে।

‘সদা’ শব্দটির অর্থ কী?

উত্তর: ‘সদা’ শব্দটির অর্থ সব সময়।

‘সংশয়ে সংকল্প সদা টলে’—কেন?

উত্তর: খ. অপরের সমালোচনার ভয়ে সংশয়ে সংকল্প টলে।

দৃঢ় মনোবল না থাকলে অন্যের সমালোচনা আমাদের দুর্বল করে ফেলে। সমাজে কোনো কাজ করতে গেলে এমন নানা জন নানা রকম সমালোচনা করে থাকে। এটি আমাদের মনে দ্বিধা ও সংকোচ তৈরি করে। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ না করলে আমাদের সংশয়ে থাকতে হয়; সংকল্প নড়বড়ে হয়; অপরের সমালোচনার ভয়ে সংশয়ে সংকল্প টলে।

উদ্দীপকের নিন্দুক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিন্দুকের সাদৃশ্যের দিকটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: নিন্দুক আমাদের কাজকর্ম সঠিকভাবে করার প্রেরণা জোগায়—এই দিক থেকে উদ্দীপকের নিন্দুক ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় নিন্দুকের সাদৃশ্য রয়েছে।

নিন্দুকেরা আমাদের বন্ধুর চেয়ে বেশি দামি, কারণ তারা আমাদের ভুল-ভ্রান্তিগুলো ধরে দেয়; আমাদের শুধরাতে সুযোগ করে দেয়; সচেতন হতে সাহায্য করে। তাদের কর্মপ্রক্রিয়াতে আমরা সাবধান হয়ে পথ চলতে পারি। তাই ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার মতো আলোচ্য উদ্দীপকে নিন্দুকের নিন্দাশক্তির সাদৃশ্য ফুটে উঠেছে।

পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতা ও উদ্দীপকে বর্ণিত নিন্দুকের মাঝে এদিক বিচারে সাদৃশ্য বিদ্যমান। নিন্দুক পরোক্ষভাবে পরের কল্যাণের জন্যই নিন্দা করে থাকে। কবিতার নিন্দুকের ভয়ে আমরা তেমন খারাপ কাজ করতে পারি না। উদ্দীপকের নিন্দুকের মাঝেও আমরা সেই ভীতি খেয়াল করি। আমরা আমাদের যাবতীয় খারাপ কাজ থেকে নিন্দুকের ভয় পাই। এসব বৈশিষ্ট্যেই উভয় প্রকার নিন্দুক পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ।

উদ্দীপকের নিন্দুকের প্রভাব আর ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বর্ণিত নিন্দুকের প্রভাবকে একসূত্রে গাঁথা যায় কী? যুক্তিসহ বুঝিয়ে লেখো।

উত্তর: উদ্দীপক এবং ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার নিন্দুকের প্রভাবকে পুরোপুরিভাবে একসূত্রে গাঁথা যায় না।

উদ্দীপকের নিন্দুকের কাজ ভুল সংশোধনের মাধ্যমে অপরকে সাহায্য করা। তাকে কবি সাধুবাদও জানিয়েছেন। কারণ সে কাজের পরিসীমাকে স্বচ্ছ করে, খারাপ কাজ করতে বাধা দান করে কিন্তু পাছে লোক কিছু বলে কবিতার নিন্দুকের যে বর্ণনা করা হয়েছে তাতে দেখা যায় যে নিন্দুকের ভয়ে অনেক কিছু খারাপও হতে পারে।

উদ্দীপকের নিন্দুকের কাজ হলো সে অপরের কল্যাণের জন্যই রত। তার দ্বারা কোনো ক্ষতি হবে না। কবিতাতে আমরা লক্ষ করি নিন্দুকের সমালোচনার ভয় আমাদের কাজে বাধাও আসতে পারে।
নিজের ইচ্ছে থেকেই নিন্দুকেরা অন্যের সমালোচনা করে থাকে। এর ফলে কখনো ভালো আবার কখনো খারাপ অবস্থা তৈরি হয়। নিন্দুক ও তার কথাবার্তা আমাদের জীবনেরই এক অপরিহার্য অংশ।

উদ্দীপকে নিন্দুকদের ভালো দিকের কথা বলা হয়েছে। নিন্দুকের দ্বারা সেখানে কোনো সমালোচনার ভয় নেই। নিন্দুকের জন্যই উদ্দীপকের কবি উৎসাহ পান, অনুপ্রেরণা লাভ করে কাজে গতি ফিরিয়ে আনেন; সঙ্গে তিনি সাবধানও হতে পারেন। ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় যাদের কথা বলা হয়েছে, নিন্দুকের সমালোচনার ভয়ে অনেক সময় আমরা নিজের কাজ ও কর্তব্য থেকে পিছিয়ে আসি। আমাদের প্রয়োজনীয় সব কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলি। তবে অনেক ক্ষেত্রে সেসব বাধা ও সমালোচনার ফলে আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পারি। আলোচনার এ ক্ষেত্রে বলা যায়, উদ্দীপকের নিন্দুকের প্রভাব আর ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় বর্ণিত নিন্দুকের প্রভাবকে একসূত্রে গাঁথা যায় না।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।

” সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরাই অপমান, সংকটের কল্পনাতে হয়ো না ম্রিয়মাণ।
মুক্ত করো ভয়, আপনা মাঝে শক্তি ধরো নিজেরে করো জয়।

” ‘আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে, আসে নাই কেহ অবনী পরে,
সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’

কামিনী রায়ের লেখা ছোটদের জন্য কবিতা সংগ্রহের নাম কী?

উত্তর : কামিনী রায়ের লেখা ছোটদের জন্য কবিতা সংগ্রহের নাম ‘গুঞ্জন’।

‘চলে যাই উপেক্ষার ছলে’— কেন এই উপেক্ষা? ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : ‘চলে যাই উপেক্ষার ছলে’— এই উপেক্ষা অন্যের দ্বারা সমালোচিত হওয়ার আশঙ্কায়।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কবি কামিনী রায় বলেছেন যে আমাদের সমাজে কেউ কেউ আছে, যারা কোনো কাজ করতে গেলে অনেক সময় দ্বিধাগ্রস্ত হয়। সে কাজ মহৎ হলেও অন্যেরা সমালোচনা করতে পারে ভেবে তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকে। তাই কোনো একটা স্নেহ-ভালোবাসার কথা মানুষের হৃদয়-যন্ত্রণার উপশম ঘটাতে পারে জেনেও তা না করে সমালোচনার ভয়ে নানা ছুতায় সেখান থেকে সরে পড়ে।

উদ্দীপক (১)-এর বক্তব্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কোন স্তবকের বিপরীত ভাব ধারণ করেছে? ব্যাখ্যা করো।

উদ্দীপক (১)-এর বক্তব্য ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকের বিপরীত ভাব ধারণ করেছে।
কামিনী রায়ের ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার প্রথম স্তবকে অন্যের সমালোচনার ভয়ে দ্বিধান্বিত, ভীত-সন্ত্রস্ত ও সংকুচিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমাদের সমাজে সব সময়ই কিছু মানুষ থাকে, যারা অন্যের সমালোচনাকে গুরুত্ব দেয়। কে কী মনে করবে, কে কী সমালোচনা করবে, এই ভেবে তারা বসে থাকে। এর ফলে তারা কোনো কাজ করতে পারে না। যে কাজ করার জন্য তারা সিদ্ধান্ত নেয়, অন্যের সমালোচনা, লোকলজ্জা, ভয়-সংকোচে তাদের সেই সংকল্প সর্বদা টলে যায়।

অথচ উদ্দীপকে বলা হয়েছে, কেউ নিজেকে নিয়ে বিব্রত হতে জন্ম নেয়নি। প্রত্যেক ব্যক্তিই স্বীয় কাজের মাধ্যমে অন্যের কল্যাণ সাধন করতে পারে। উদ্দীপকের কবির এই ইতিবাচক মনোভাব ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতায় উপর্যুক্তভাবে বিপরীত ভাব অর্থাৎ নেতিবাচক ভাবকে ধারণ করেছে।

“উদ্দীপক ১ ও ২-এর কবির মানসিকতা ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কবির মানসিকতা একই সূত্রে গাঁথা”— মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করো।

অন্যের সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিঃসকোচিত্তে জীবনপথে পরিচালিত হওয়ার দৃঢ় ইচ্ছাকে লালন করাই উভয় কবির মানসিকতা।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে কোনো কাজ করতে গেলে সংকল্পে স্থির থাকতে হবে। লোক নিন্দা, ভয়, অন্যের সমালোচনাকে প্রাধান্য দিলে সেই কাজ পণ্ড হয়ে যায়। তাই নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে না রেখে হৃদয়ে কোনো শুভ চিন্তার উদ্রেক হলে তা বাস্তবে রূপ দিতে হবে। মানুষের দুঃখ-কষ্টে প্রাণ কাদাটা লজ্জার নয়, বরং মনুষ্যত্বের পরিচায়ক। তাই সামান্য স্নেহ-ভালোবাসার কথার মাধ্যমে মানুষের দুঃখ-কষ্ট যদি লাঘব করা যায়, মহৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যদি সবার সঙ্গে মিলিত হওয়া যায়, তবেই জীবনের প্রকৃত লক্ষ অর্জিত হয়। বিধাতা মানুষকে প্রাণ দিয়েছেন নিজের শক্তিকে পরের কল্যাণে নিয়োজিত করার জন্য, তা অন্যের সমালোচনায় নষ্ট করার জন্য নয়।

উদ্দীপক ১ ও ২-এর কবিরও মনোভাব তাই। সংকোচ, ভয়-সংকটকে পাশ কাটিয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে পারলেই প্রকৃত বিজয় অর্জিত হবে।

উপর্যুক্ত বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাই বলা যায়, উদ্দীপকের কবি ও ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার কবির বক্তব্য একই সূত্রে গাঁথা।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ কবিতার মাধ্যমে কবি বলতে চেয়েছেন যে কোনো কাজ করতে গেলে সংকল্পে স্থির থাকতে হবে। লোক নিন্দা, ভয়, অন্যের সমালোচনাকে প্রাধান্য দিলে সেই কাজ পণ্ড হয়ে যায়। তাই নিজেকে লোকচক্ষুর আড়ালে না রেখে হৃদয়ে কোনো শুভ চিন্তার উদ্রেক হলে তা বাস্তবে রূপ দিতে হবে

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

‘সম্মুখে চরণ নাহি চলে’- বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: লোকলজ্জা ও লোকভয়ের কারণে সামনের দিকে চরণ চলে না। সমাজে কিছু মানুষ আছে, যারা অন্যের নিন্দায় ভীত হয়ে কোনো কাজ করতে পারে না। তাদের মনজুড়ে লজ্জা আর দ্বিধার বসতি। তাই অন্যের সমালোচনার ভয়ে শুভ কাজের সংকল্প থাকা সত্ত্বেও তারা তা সম্পাদন করতে পারে না। সংশয়ে তাদের চরণ থেমে যায়।

‘উঠে শুভ্র চিন্তা কত, মিশে যায় হৃদয়ের তলে’- কেন?

উত্তর: মহৎ কর্মের জন্য মানুষের মনে অনেক ভালো চিন্তার উদয় হয়। কিন্তু লোকলজ্জায় তা হৃদয়ের তলে মিশে যায়।

অনেক মানুষের মধ্যেই সমাজের মঙ্গল করার ইচ্ছা আছে। তাদের মাথায় সমাজ উন্নয়নমূলক অনেক ভাবনা কাজ করে। কিন্তু যথেষ্ট মনোবল না থাকার কারণে মানুষ কী বলবে- এই ভাবনাকে প্রাধান্য দেয়। ফলে মনের সংশয় ও সংকোচের কারণে এই শুভ চিন্তাগুলো আলোর মুখ দেখতে পায় না। মনের ভাবনা মনের মধ্যেই মিশে যায়।

‘শক্তি মরে ভীতির কবলে’- বুঝিয়ে দাও।

উত্তর: লোকনিন্দার ভয়ে মানুষের শুভ কর্মশক্তি মরে যায়। অন্যের নিন্দা ও সমালোচনার ভয় যে কোনো কাজকর্মে মানুষের মনে সংশয়ের সৃষ্টি করে। তারা এই ভয়ে থাকে, কাজটি সফল করতে না পারলে মানুষ নিন্দা করবে। আবার কাজটি সফল হলেও তার মধ্যে দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়াবে। এই সংশয় মানুষের শক্তি ও আত্মবিশ্বাসকে গ্রাস করে। ফলে মানুষের শক্তি ভীতির কবলে পড়ে মরে যায়।

‘পাছে লোকে কিছু বলে’ বলতে কী বোঝ?

উত্তর: ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ বলতে অন্যের সমালোচনার প্রতি ভীতি ও সংশয়কে বোঝানো হয়েছে।

মানুষ অনেক সময়ই অন্যের ভাবনাকে এড়াতে পারে না। তার কোনো কাজ সম্পর্কে অন্যের ধারণা ও কথাকে সে গুরুত্ব দেয়। ফলে অনেক সময়ই দৃঢ় মনোবল নিয়ে লোকলজ্জা ও লোকভয়কে এড়াতে পারে না। তার কর্ম সম্পর্কে অন্য লোক মন্দ কথা বলবে- এই ভয় তাকে তাড়িত করে। ফলে কাজকর্মে সে সদা সংশয়গ্রস্ত হয়ে যায়।

কীভাবে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ ধরনের মানসিকতা পরিহার করা যায়?

উত্তর: জীবনবোধ পরিবর্তনের মাধ্যমে ‘পাছে লোকে কিছু বলে’ ধরনের মানসিকতা পরিহার করা যায়।

পাছে লোকে কিছু বলে এই ভয়ে শুভ কাজ থেকে বিরত থাকা দুর্বল মানসিকতার পরিচয়। দৃঢ় মানসিক শক্তি দ্বারা এটাকে পরিহার করা সম্ভব। আমাদের এই জীবনবোধ গড়ে তুলতে হবে যে, আমার ভালো কাজের কেউ সমালোচনা করলেও আমি সেই কাজ থেকে পিছু হটব না। আমি একটা মহৎ কর্মে রত আছি, এটাই বড় কথা। কে কী বলল তাতে বেশি গুরুত্ব না দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার Pdf

প্রান্তিক প্রকাশক বাংলা অষ্টম শ্রেণী বাংলা সহায়িকা

প্রান্তিক প্রকাশক বাংলা অষ্টম শ্রেণী বাংলা সহায়িকা

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন

পাছে লোকে কিছু বলে কবিতার মূল উদ্দেশ্য—
উত্তর : মানুষকে কর্মোদ্যমী করা।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।