- বক্সারের যুদ্ধ
- বক্সারের যুদ্ধ কাকে বলে
- বক্সারের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল, বক্সারের যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল
- বক্সারের যুদ্ধ কবে হয়েছিল, বক্সারের যুদ্ধ কত সালে হয়, বক্সারের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়
- বক্সারের যুদ্ধের সময় বাংলার নবাব কে ছিলেন
- বক্সারের যুদ্ধের সময় মোগল সম্রাট কে ছিলেন
- বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি কে ছিলেন
- বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
- বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব, বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
- পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল তুলনামূলক আলোচনা করো, পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের তুলনামূলক আলোচনা
- FAQ | বক্সারের যুদ্ধ
বক্সারের যুদ্ধ
বক্সারের যুদ্ধ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে সম্মিলিত ভাবে মীর কাশিম-এর মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জয়ের ফলে ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পথ সূচিত হয়।
১৭৬০ সালে ক্লাইভ ব্রিটেনে চলে যান। ক্লাইভের মতো পৃষ্ঠপোষক ও অভিভাবক হারিয়ে মীরজাফর অসহায় হয়ে পড়েন। তা ছাড়া খড়কুটো ধরে বাঁচার লক্ষ্যে ওলন্দাজদের সাথে ষড়যন্ত্র করার পর তিনি ইংরেজদের বিশ্বাস ও সমর্থন হারিয়েছিলেন। অধিকন্তু ইংরেজদের পুনঃপুন টাকার দাবি মেটাতে পারছিলেন না। সে জন্য ইংরেজ কর্তৃপক্ষ হলওয়েল ও ভেনসিটার্ট মীরজাফরকে সরিয়ে তার জামাতা মীর কাসিমকে মসনদে বসানোর পরিকল্পনা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৭৬০ সালের অক্টোবরে মীর কাসিমকে মসনদে বসায়। নবাবীর বিনিময়ে মীর কাসিম ইংরেজ প্রধানদের বহু অর্থ উপঢৌকন দেন। তা ছাড়া বর্ধমান, মেদেনীপুর ও চট্টগ্রাম জেলা কোম্পানিকে দান করে দিতে বাধ্য হন।
মীর কাসিম অনেকটা স্বাধীনচেতা ছিলেন। ইংরেজ আশ্রিত অবস্থান থেকে নবাবের শাসনক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চেষ্টা করেছিলেন। নবাব এ সময় কয়েকজন হিন্দু কর্মচারী, জমিদার ও ব্যবসায়ীর অবাধ্যতায় বিরক্ত হয়ে ওঠেন। এ জন্য আজিমাবাদের নায়েম নাযিম রামনারায়ণ, গুপ্ত পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা রাজা মুরলী ধর এবং রাজবল্লভ, জগৎশেঠ ও অন্যদের গ্রেফতার করেন।
ইংরেজদের সাথে ষড়যন্ত্র করার অপরাধে রামনারায়ণ, রাজবল্লভ, উমেদরায়, জগৎশেঠ এবং আরো কয়েকজনের প্রাণদণ্ড হয়। ইংরেজদের প্রভাব থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য মীর কাসিম তার রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গের এ স্থানান্তর করেন। বিলম্বিত বোধোদয়ের কারণে তিনি ইংরেজদের বিনাশুল্কে বে-আইনি ব্যবসায় নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করেন।
কোম্পানির কর্মকর্তারা এর বিরোধিতা করায় তিনি সব বণিকের পণ্যদ্রব্যের ওপর হতে শুল্ক রহিত করে দেন। এই ব্যবস্থার ফলে বাণিজ্যে ইংরেজদের একচেটিয়া ও বিশেষ সুবিধা নষ্ট হয়। কারণ এর ফলে তাদের অন্য বণিকদের সাথে সমপর্যায়ে ব্যবসায়ে প্রতিযোগিতা করতে হতো। এ সব কারণে মীর কাসিমের সাথে ইংরেজদের স্বার্থের সংঘাত দেখা দেয়।
১৭৬৩ সালে ইংরেজদের সাথে তার সংঘর্ষ বেধে যায়। কাটোয়া, মুর্শিদাবাদ, গিরিয়া, সুতি, উদয়নালা ও মুঙ্গেরের যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীর কাসিম ক্ষমতাহারা অবস্থায় অযোধ্যায় আশ্রয় গ্রহণ করেন। ১৭৬৩ সালে কোম্পানির কর্মকর্তারা দ্বিতীয়বার ক্লাইভের গর্দভ খ্যাত মীরজাফরকে বাংলার সিংহাসনে বসায়।
বক্সারের যুদ্ধ কাকে বলে
১৭৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২২ শে অক্টোবর বিহারের বক্সার নামক স্থানে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম, বাংলার নবাব মীর কাশিম ও অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌল্লার যৌথ বাহিনীর সাথে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তথা ইংরেজদের মধ্যে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয় ইতিহাসে তা বক্সারের যুদ্ধ নামে পরিচিত। ভারতবর্ষে ইংরেজ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় এ যুদ্ধের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সমগ্র ভারতবর্ষের ভাগ্য নির্ভরশীল ছিল এ যুদ্ধের ফলাফলের উপর। যুদ্ধে যৌথবাহিনী ইংরেজ সেনাপতি মেজর মনরোর নিকট সম্পূর্ণ পরাজিত হয়। মীর কাশিম যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যান এবং পলাতক অবস্থায় ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে মারা যান।
বক্সারের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়েছিল, বক্সারের যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল
ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে বাংলার নবাব মীর কাসিম, অযোধ্যার নবাব সুজা উদ দৌলা ও দিল্লীর মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের যৌথবাহিনীর এই যুদ্ধ হয়েছিল।
1763 সালে ইংরেজ ও মীর কাসিমের মধ্যে যুদ্ধ হয়, পরাজিত হয়ে মীর কাসিম অবধের নবাব সুজাউদ্দৌলার আশ্রয়ে যান। ইংরেজরা মীরজাফরকে নামমাত্র বাংলার নবাব বানিয়েছিল। বক্সারের যুদ্ধ, ভারতের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এবং নবাব এবং মুঘল সম্রাটের সম্মিলিত বাহিনীর মধ্যে লড়াই হয়েছিল।
বক্সারের যুদ্ধ কবে হয়েছিল, বক্সারের যুদ্ধ কত সালে হয়, বক্সারের যুদ্ধ কবে কাদের মধ্যে হয়
২২শে অক্টোবর ১৭৬৪ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ২৩শে অক্টোবর ১৭৬৪ খ্রীষ্টাব্দ। ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে বাংলার নবাব মিরকাশিম, অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দোল্লা ও শেষ মুঘল সম্রাট শাহ আলমের সাথে। এই যুদ্ধে ব্রিটিশরা জয় লাভ করে। এরপর মীর কাশিম আত্মগোপন করেন ব্রিটিশরা অযোধ্যা দখল নিলে সুজাউদ্দোলা রোহিলাখন্ড আশ্রয় নেন এবং সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ইংরেজদের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হন।
বক্সারের যুদ্ধের সময় বাংলার নবাব কে ছিলেন
মীর কাশিম বক্সারের যুদ্ধের সময় (1764) বাংলার নবাব ছিলেন।
পলাশি যুদ্ধের পর মীর জাফরকে নামেমাত্র নবাব করা হয়। কিন্তু ইংরেজ যে উদ্দেশে মীর জাফরকে সিংহাসনে বসিয়েছিল, তাদের সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। নতুন নবাব কোম্পানির প্রাপ্য অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয়ে দেউলিয়া হয়ে পড়ে । নিজের ক্ষমতা রক্ষা করতেও তাকে বার বার ক্লাইভের ওপর নির্ভর করতে হয় । আবার ক্লাইভের রাজকার্যে ঘন ঘন হস্তক্ষেপ নবাবের পছন্দ ছিল না।
ইংরেজদের বিতাড়নের জন্য মীর জাফর আরেক বিদেশি কোম্পানি ওলন্দাজদের সাথে আঁতাত করে। বিষয়টি ইংরেজদের দৃষ্টি এড়ায়নি । মীর জাফরের বিরুদ্ধে অযোগ্যতা, অতিরিক্ত অর্থ প্রদানে অক্ষমতা এবং ওলন্দাজদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় ।
১৭৬০ সালে ইংরেজ গভর্নর ভান্সিটার্ট মীর জাফরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মীর কাশিমকে শর্ত সাপেক্ষে সিংহাসনে বসান । ক্ষমতারোহণের পর মীর কাশিম স্বাধীনভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন । ফলে ইংরেজদের সাথে তাঁর যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল ।
বক্সারের যুদ্ধের সময় মোগল সম্রাট কে ছিলেন
বক্সারের যুদ্ধের সময় মোগল সম্রাট ছিলেন দ্বিতীয় শাহ আলম ।
বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাপতি কে ছিলেন
বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন মেজর হেক্টর মুনরো। যুদ্ধটি ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্য একটি সিদ্ধান্তমূলক বিজয়।
বক্সারের যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল
মিরকাশিম অযােধ্যার নবাব সুজা-উদদৌলা এবং মােগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের মিলিত জোটের সঙ্গে ক্লাইভের ইংরেজবাহিনীর বক্সারের প্রান্তরে যে যুদ্ধ বাঁধে তা বক্সারের যুদ্ধ নামে পরিচিত।
বক্সারের যুদ্ধের কারণ
[1] মিরকাশিমের স্বাধীনচেতা মনােভাব: মিরকাশিম আলি খান পূর্ব ভারতে এক স্বাধীন রাজ্য গড়ে তােলার জন্য বদ্ধপরিকর ছিলেন। এই লক্ষ্যপূরণের জন্য তিনি আর্থিক ও সামরিক বিভাগকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেন। এ ছাড়াও ইংরেজদের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনভাবে রাজ্য পরিচালনার লক্ষ্যে তিনি মুরশিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে (বিহারে) রাজধানী স্থানান্তর করেন। তার এই উদ্যোগ ইংরেজদের সঙ্গে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি করে।
[2] আর্থিক পদক্ষেপ: একজন স্বাধীন নবাবের মতােই মিরকাশিম আর্থিক সংস্কারের দ্বারা অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন। তিনি—
- [i] জমিদারদের ওপর কয়েকটি বাড়তি কর চাপান ও ভূমিরাজস্বের হার দেড় আনা বাড়ান।
- [ii] ইংরেজদের প্রতি অনুগত রয়েছেন—এমন কর্মচারী ও জমিদারদেরও তিনি কঠোর হাতে দমন করেন। ইংরেজ মদতপুষ্ট বিহারের নায়েব দেওয়ান নবাবের প্রাপ্য অর্থ পরিশােধ ও হিসাবপত্র দাখিলের আদেশ অগ্রাহ্য করলে তিনি রামনারায়ণকে হত্যা করেন।
- [iii] রাজস্ব আত্মসাৎকারী উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের চিহ্নিত করে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেন ও কঠোর শাস্তি দেন।
- [iv] আলিবর্দি ও মিরজাফরের পরিবারবর্গের কাছ থেকে অসাধু উপায়ে অর্জিত ও সঞ্চিত অর্থ জোর করে আদায় করেন।
[3] সামরিক উদ্যোগ: মিরকাশিম এক প্রশিক্ষিত ও সুসজ্জিত সামরিক বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেন। ইউরােপীয় রণকৌশল গ্রহণের পাশাপাশি তিনি উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের আফগান, তাতার পারসিক এবং আর্মেনীয়দের সেনাদলে অন্তর্ভুক্ত করেন। আর্মেনীয় গ্রেগরি (গুরগিন খাঁ)-কে তিনি তার প্রধান সেনাপতি ও ওলন্দাজ বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়ােগ করেন। ফরাসি সমরু (ওয়াল্টার রাইন হাউন্ড)-কে ও আর্মেনীয় মার্কারকে তিনি অন্য সমর বিভাগের সেনাপতি নিযুক্ত করেন। এ ছাড়াও আর্মেনীয় কারিগরদের সাহায্য নিয়ে তিনি মুঙ্গেরে কামান ও বন্দুক তৈরির এক অস্ত্রকারখানা নির্মাণ করেন। মিরকাশিমের এই সামরিক উদ্যোগ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে।
[4] শুল্ক বিবাদ: কোম্পানির কর্মচারীরা যথেচ্ছভাবে ব্যক্তিগত বাণিজ্য দস্তক বা শুল্ক ছাড়ের সুবিধা নিতে শুরু করে। পরিণামে দেশীয় বণিকগােষ্ঠীর বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং নবাবও তাঁর প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হন। মিরকাশিম এই সংকটমােচনের জন্য ভ্যান্সিটার্ট-এর কাছে এক আবেদন জানান। কিন্তু তাতেও সংকটের নিরসন না হওয়ায় মিরকাশিম দেশীয় বণিকদের ওপর থেকে শুল্ক তুলে নেন। ফলে কোম্পানিকে দেশীয় বণিকদের সঙ্গে প্রতিযােগিতামূলক বাণিজ্যের মুখােমুখি হতে হয়। এতে ইংরেজদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটে ও তারা মিরকাশিমকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য তৈরি হয়। ফলে ইংরেজ ও কোম্পানি, উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে। সংঘটিত হয় বক্সারের যুদ্ধ (১৭৬৪ খ্রি. ২২ অক্টোবর)। মিরকাশিমের সেনাপতি মার্কার ও ইংরেজ সেনাপতি মেজর হেক্টর মনরাের কাছে পরাজিত (১৭৬৪ খ্রি. ২২ অক্টোবর) হলে, ব্রিটিশ শক্তি সুদৃঢ় হয়।
বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল
[1] ভাগ্য নির্ণায়ক যুদ্ধ হিসেবে: বক্সারের যুদ্ধ ছিল ভারতের ইতিহাসে এক ভাগ্য নির্ণায়ক যুদ্ধ। এই যুদ্ধের ফলাফল যদি ইংরেজদের প্রতিকূলে যেত তাহলে ভারতের ইতিহাস অন্যরকমভাবে লেখা হত।
[2] ঔপনিবেশিক শাসনের দৃঢ়তায়: পলাশির যুদ্ধে জিতে কোম্পানি ভারতে ঔপনিবেশিক প্রথম ধাপ অতিক্রম করেছিল। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধে জিতে কোম্পানি ভারতের ঔপনিবেশিক শাসনকে দঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করে।
[3] বাংলায় আধিপত্য প্রতিষ্ঠায়: বক্সারের যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীনচেতা নবাব মিরকাশিমের পরাজয় ঘটায় ব্রিটিশ শক্তিকে বাধা দেওয়ার মতাে আর কোনাে শাসক রইল না, ফলে বাংলায় কোম্পানির আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ নিস্কণ্টক হল।
[4] উত্তর ভারতে আধিপত্য সূচনায়: বক্সারের যুদ্ধে জিতে কোম্পানি বাংলার আধিপত্যকে দৃঢ় করে উত্তর ভারতের দিকে নজর দেয়। অযােধ্যায় নবাব সুজা-উদদৌলা কোম্পানির অনুগত হন এবং নামসর্বস্ব মােগল বাদশা কোম্পানির দয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। ফলে সমগ্র উত্তর ভারত জুড়ে কোম্পানির আধিপত্যের সূচনা ঘটে।
[4] আর্থিক লুণ্ঠনের সূচনায়: বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের পর বাংলার বাণিজ্য ও অর্থনীতির ওপর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলায় কোম্পানির অবাধ অর্থনৈতিক লুণ্ঠন শুরু হয়। কোম্পানির উচ্চপদস্থ আমলারা নতুন নবাব নজম-উদদৌলার কাছ থেকে পনেরাে লক্ষ টাকা উপঢৌকন হিসেবে আদায় করে। এর পাশাপাশি যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ অযােধ্যার নবাব সুজা-উদদৌলার কাছ থেকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়।
[5] দেওয়ানি লাভের ক্ষেত্রে: বক্সারের যুদ্ধে চরম প্রাপ্তি হিসেবে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা, বিহার ও ওড়িশায় দেওয়ানি লাভ করেছিল। দেওয়ানি লাভের ফলে একদিকে বাংলার রাজনীতিতে কোম্পানির কর্তৃত্ব দৃঢ় হয়েছিল অপরদিকে কোম্পানির আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য বহুগুণ বেড়েছিল।
উপসংহার: বক্সারের যুদ্ধের পরেই বণিকের মানদণ্ড শাসকের রাজদণ্ডরূপে দেখা দিয়েছিল। বক্সারের যুদ্ধে জেতার পর থেকেই ভারতের ইতিহাসে প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সূচনা হয়।
বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব, বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
বক্সারের যুদ্ধের পরেই বণিকের মানদণ্ড শাসকের রাজদণ্ডরূপে দেখা দিয়েছিল । বক্সারের যুদ্ধে জেতার পর থেকেই ভারতের ইতিহাসে প্রকৃতপক্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সূচনা হয় । এ প্রসঙ্গে র্যামসে ম্যুর তাঁর ‘ Making of British India ‘ গ্রন্থে লিখেছেন- “ বক্সার বাংলার ওপর কোম্পানির শাসন – শৃঙ্খলার চূড়ান্তভাবে স্থাপন করেছিল। ”
বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব
১) পলাশির যুদ্ধ ছিল কয়েকটি কামানের লড়াই আর বক্সারের যুদ্ধ তার চূড়ান্ত ফল।
২) নবাব মিরজাফর ইংরেজদের হাতের পুতুলে পরিণত হয় আর বনিকের মানদন্ড রাজদন্ড রূপে দেখা দেয়।
৩) বক্সারের যুদ্ধের পরের বছর কোম্পানী দেওয়ানী লাভ করে ও দ্বৈত শাসন প্রতিষ্ঠা করে।
৪) বক্সারের যুদ্ধের ফলে কোম্পানীর অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, প্রশাসনিক শক্তি অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
৫) ঐতিহাসিক ভিনসেন্ট স্মিথ বলেছেন পলাশির যুদ্ধ ছিল কয়েকটি কামানের খেলা কিন্তু বক্সারের যুদ্ধ ছিল এক চূড়ান্ত যুদ্ধ।
৬) বক্সারের যুদ্ধে মিরকাশিমের পরাজায়ের ফলে বাংলার স্বাধীন নবাবী আমলের শেষ আস্তিত্ব লুপ্ত হয়।
৭) ১৭৬৫ সালে এলাহাবাদের চুক্তি দ্বারা কারা ও এলাহাবাদ ইংরেজরা লাভ করে এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ আদায় করে।
৮) অযোধ্যায় ব্রিটিশ বাহিনী মোতায়েন রাখা হয় তার ব্যয় ভার গ্রহণ করতে হয় দেশীয় রাজাদের।
৯) শাহ আলম বার্ষিক ২৬লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানী অধিকার করে।
১০) এই যুদ্ধের পর থেকে ইংরেজ সরকার পাকাপাকি ভাবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পায়।
বক্সারের যুদ্ধের তাৎপর্য
ভারতবর্ষের ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধের ফলে বাংলা তথা ভারতের সমাজ জীবনে এক নতুন যুগের সূত্রপাত হলেও বক্সারের যুদ্ধ ছিল ভারত ইতিহাসে অধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজ প্রভুত্ব বিস্তারে যে সূচনা হয় বক্সারের তার পূর্ণতা লাভ করে। এদিক দিয়ে বক্সারের যুদ্ধকে পলাশী যুদ্ধে চরম পরিণতি বললে অত্যুক্তি হয় না। দেখা যায় বাংলার স্বাধীনচেতা নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের সংঘাত ছিল ইতিহাসের অনিবার্য্য পরিণতি। তাই উভয়কক্ষই এই পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত ছিল। ফলে কোন আপোস রক্ষার পরিবর্তে উভয়ই বৃহত্তর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।
কিন্তু পরপর কাটেয়া, ঘেরিয়া ও উদয়নালার যুদ্ধে মীরকাশিম ইংরেজদের হাতে পরাজিত হন। ইংরেজ বাহিনী মুঙ্গের দখল করলে মীরকাশিম অয্যোধায় যান। অতঃপর তিনি অয্যোধার নবাব সুজা-উ-দৌল্লা এবং দিল্লীর নাম মাত্র সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পুনরায় বাংলায় প্রবেশ করে বক্সারের প্রান্তরে উভয় পক্ষের বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে মীরকাশিম সুজা ও শাহ আলমের মিলিত বাহিনী ইংরেজদের কাছে পরাজিত হয়। বস্তুত এই যুদ্ধই বক্সারের যুদ্ধ নামে পরিচিত।
পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের ফলাফল তুলনামূলক আলোচনা করো, পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের তুলনামূলক আলোচনা
বাংলার ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ ও বক্সারের যুদ্ধ দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলার শাসনক্ষেত্রে ঐতিহ্যময় যে অধ্যায় ছিল তার অবসান হয়। অন্যদিকে, বক্সারের যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলায় নবাবি শাসনের যে শেষ চিহ্নটুকু ছিল তা মুছে যায়। তাৎপর্যগত দিক দিয়ে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজরা সফল হওয়ার পর বাংলার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান এবং বক্সারের যুদ্ধের পর বাংলার নিয়ন্ত্রার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
- পলাশীর যুদ্ধ : ১৭৫৬ সালে নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যুর পর তার দৌহিত্র নবাব সিরাজ উদ-দৌলা মাত্র ২৩ বছর বয়সে বাংলার মসনদে আরোহণ করেন। নবাব আলীবর্দী খান তার তিন কন্যাকেই তার তিন ভ্রাতুষ্পুত্রের নিকট বিবাহ দিয়েছিলেন। আলীবর্দী খান ছিলেন পুত্রহীন। তাঁর কনিষ্ঠ কন্যার সন্তান সিরাজ উদ-দৌলা সিংহাসন লাভ করেন । সিংহাসন লাভ করেই তিনি প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত হন এবং চারদিকে অন্ধকার দেখতে লাগলেন। নবাব সিরাজ উদ- দৌলা বুঝতে পেরেছিলেন যে, তিনি ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে আছেন। এ ষড়যন্ত্রে বিদেশী বণিকেরা যোগ দিয়েছিল । এ ষড়যন্ত্রকে কেন্দ্র করে পরবর্তীতে, যে যুদ্ধ শুরু হয় তাই পলাশীর যুদ্ধ নামে খ্যাত।
- বক্সারের যুদ্ধ: ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাটদের উদাসীনতা, অদূরদর্শিতা এবং সুষ্ঠু বাণিজ্যনীতি না থাকায় ইংরেজরা এ দেশে বাণিজ্য করার অনুমতিসহ রাজনৈতিক সুবিধা লাভ করে। তারা বাংলার নবাব সিরাজ উদ-দৌলার আত্মীয়স্বজন ও দরবারের লোকজনের সাথে ষড়যন্ত্র করে পলাশীর যুদ্ধে প্রহসনমূলকভাবে নবাবকে পরাজিত ও নিহত করে। এরপর নবাব মীর কাশিমের সাথে তাদের দ্বন্দ্ব বাঁধে এবং এর চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৭৬৪ সালের ঐতিহাসিক বক্সারের যুদ্ধে। এ সময়ই ইংরেজদের বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে রূপান্তরিত হয় ।
- বক্সারের যুদ্ধ সম্পর্কে স্যার জেমস স্টিফেন মন্তব্য করেন, “The Battle of Buxar deserves for more credit their of Palassey as the origin of the British power in India.” অর্থাৎ, ব্রিটিশ শক্তির উৎপত্তি হিসেবে ভারতে পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
- পলাশী ও বক্সারের যদ্ধের তুলনা : ইংরেজ আধিপত্য বিস্তার ও বাংলার ইতিহাসের গতি পরিবর্তনকারী যুদ্ধ হিসেবে পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে পলাশী ও বক্সারের যুদ্ধের তুলনামূলক আলোচনা করা হল : ১. প্রেক্ষাপট : এ দু’টি যুদ্ধের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। পলাশীর যুদ্ধের প্রেক্ষাপট ছিল ইংরেজ আদিপত্য বিস্তার ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্র । কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের ক্ষেত্রে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠাই ছিল মূল কারণ ।
- পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের পক্ষে ক্লাইভ এবং প্রাসাদের অমাত্যদের মধ্যে মীরজাফর, জগৎশেঠ, রাজবল্লভ, রায়দুর্লভ ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়েন, ইতি টানা পর্যন্ত সিদ্ধান্তে অনঢ় ছিলেন। বক্সারের যুদ্ধে নবাব মীর মানিককে সাহায্য করেন অযোধ্যায় নবাব সুজা উদ-দৌলা ও দিল্লির সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ।
- যুদ্ধের প্রকৃতি : পলাশীর যুদ্ধ, যুদ্ধ কি না তা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অনেকের মতে, পলাশীর যুদ্ধ, যুদ্ধ নয়, কেবল ষড়যন্ত্রের মহড়া মাত্র। কারণ যুদ্ধ হলে সেখানে চূড়ান্ত শক্তির পরীক্ষা হতো।
- অন্যদিকে, বক্সারের যুদ্ধ ছিল প্রকৃত যুদ্ধ। কারণ এ যুদ্ধে মীর কাশিম একাধিকবার বিভিন্ন স্থানে পরাজিত হন বা শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন। এমনকি অযোধ্যার নবাব সুজা উদ-দৌলা ও দিল্লির সম্রাট শাহ আলমের সাহায্যে যে সম্মিলিত বাহিনী গড়ে তোলেন তাও ব্যর্থ হয় ৩. ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা : ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পলাশীর যুদ্ধ ছিল কেবলমাত্র সূচনালগ্ন অবস্থা। এ যুদ্ধে জয়লাভে কোম্পানি কেবল পায় সন্ধি মোতাবেক অর্থ ও কতিপয় সুবিধা। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের পর ইংরেজরা হয় রাজনৈতিক ক্ষেত্রে Decision maker। সকল ক্ষেত্রে কোম্পানির সিদ্ধান্তই হয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ।
- সামরিক শক্তি : পলাশীর যুদ্ধে কোন পক্ষেরই সামরিক শক্তির তেমন প্রতিফলন ঘটে নি। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধ ছিল ইংরেজ সামরিক শক্তির চূড়ান্ত উপস্থাপন।
- যুদ্ধ পরিকর: পলাশীর পরিধী পরিচিতি করার জন্য বক্সারের যুদ্ধ ছিল পূর্ব পরিকল্পনাসম্পন্ন চূড়ান্ত শক্তি।
- ব্রিটিশদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা: পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশদের তথ্য বেরি শুরু হয়। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের পর কোম্পানি বা ব্রিটিশ বাংলার নি বা। পলাশীর যুদ্ধের পর কোম্পানি পায় মাত্র সঙ্গি শর্তে বাংলার বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি ক্ষ সুবিধা। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের পর কোম্পানি অর্থনৈতিক দেশ লাভবান ।
- সমগ্র ভারতবর্ষে ই শক্তির প্রধান প্রতিষ্ঠা পলাশীর – ভারতীয় উপমহাদেশে ইংরেজদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয় । কাশিম, নবাব সুজা উদ-দৌলা, সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সম্মিলিত বাহিনীর পর ভারতবর্ষে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার তেমন বাধা থাকল না। পশ্চিম মে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।
- রাজনৈতিক গেলে পরিবর্তন: পলাশীর যুদ্ধের রাজনৈতিক ইতিহাসে সমাধি রচিত হয়, অতীত ঐতিহ্যের যাত্রা সূচিত হয় নতুন অধ্যায়ের। অন্যদিকে, বারের পরিে হয়েছিল পলাশীর যুদ্ধের মাধ্যমে। কেননা বক্সারের যুদ্ধে পরাজয়ে বাংলার নবাব পরিবর্তনের সমতুল্য।
- যুগের পরিবর্তন: পরিবর্তনের দিক থেকে পলাশীর যুদ্ধে মধ্যযুগের অবসান হয় এবং যারা যুগের। অপরদিকে, বক্সারের যুদ্ধের পর আধুনিক যুগের উপাদানসমূহের বিকাশ সাধিত হতে থাকে।
- সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে: পলাশীর যুদ্ধের পর ইংরেজরা বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে এ বিস্তার করার তেমন সুযোগ পায় নি। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের পর ইংরেজরা বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রত্যক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করেন।
- নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা: পলাশী যুদ্ধের পর রাজনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যক্তির ও ইতিহাসের পরিবর্তন হ দীর্ঘকাল জনসাধারণের মধ্যে প্রশ্ন ছিল এখন বাংলার নবাব বা নিম্নত্তাকে নবাব না অন্য কেউ। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের পর জনসাধারণের মধ্যে এ ধরনের প্রশ্নের কোন পরিবেশতো ছিলই না, বরং, ইংরেজদের ক্রীড়নকে পরিণত হয় গোটা বাংলার জনসাধারণ।
- সিরাজ উদ-দৌলা ও বীর কার্ণিকার পতন পলাশীর যুদ্ধের পর পতন হয় স্বাধীনচেতা, দেশপ্রেমিক নবার সিরাজ উদ-সৌপার। কিন্তু বক্সারের যুদ্ধের পর পতন হয় বাংলার শেষ ঐতিহ্য ও শক্তির আধার মীর কাশিমের, যিনি চেয়েছিলেন কৌশলে কিভাবে ইংরেজদের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসা যায়।
বাংলার ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ হল একটি দুঃখজনক অধ্যায়। এ যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ-দৌলা তথা বাংলার অতীত ঐতিহ্য বিলিন হয়ে যায় এবং ইতিহাসের ধারা পাল্টে যায়। এ ঘটনার জন্য অনেকে নবাব সিরাজকে দায়ী করেছেন। কিন্তু নিরপেক্ষ বিচারে এককভাবে নবাবকে এ জন্য দায়ী করা সমীচিন হবে না।
আরো পড়তে: পলাশীর যুদ্ধ, পলাশীর যুদ্ধ কত সালে হয়, পলাশীর যুদ্ধের কারণ ও ফলাফল, পলাশীর লুণ্ঠন কাকে বলে
আরো অন্যান্য প্রশ্নোত্তরের সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | বক্সারের যুদ্ধ
Q1. বক্সারের যুদ্ধ কি
Ans – মীর কাসিম অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও শেষ মোগল সম্রাট (শাহ্ আলম) সাথে মৈত্রীর সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১৭৬৪ সালের ২২ অক্টোবর তাদের সম্মিলিত সৈন্যবাহিনীর সাথে বক্সার নামক স্থানে ইংরেজ সৈন্যদের ঘোরতর যুদ্ধ হয়। বক্সারের যুদ্ধে ইংরেজেরা জয়লাভ করে।
Q2. বক্সারের যুদ্ধে কে জড়িত ছিলেন না
Ans – সুজা উদ দৌলা মুঘল সাম্রাজ্যের সময় অবধ বা অবধের নবাব ও সুবেদার ছিলেন। তিনি 1754 থেকে 1775 সাল পর্যন্ত শাসন করেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে বক্সার যুদ্ধে মীর কাসিম এবং দ্বিতীয় শাহ আলমের সাথে যুদ্ধ করেন। বক্সার যুদ্ধের সময় তিনি মুঘল সাম্রাজ্যে ছিলেন না।
Q3. বক্সারের যুদ্ধের সময় বাংলার গভর্নর কে ছিলেন
Ans – হেনরী ভ্যান্সিটার্ট ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলার গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। হেনরী ভ্যান্সিটার্ট বক্সারের যুদ্ধের সময় বাংলার গভর্নর ছিলেন।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।