WBBSE Class 9 Bangla | Bengali Story Question Answer
নিম্নলিথিত প্রশ্ন এবং তার যথাযত সমাধান ছোটো প্রশ্ন এবং বড়ো (LA) প্রশ্নের উত্তর সমাধান হিসাবে পাঠ করা যেতে পারে।
প্রশ্নোত্তর এবং সমাধান
ইলিয়াস প্রতিবেশীকে ধন্যবাদ দিল।—কোন্ প্রতিবেশীর কথা বলা হয়েছে? তাকে ধন্যবাদ দেওয়ার কারণ কী?
উত্তর: লিও তলস্তয় রচিত ইলিয়াস’ গল্পে ব্যবহৃত উদ্ধৃতাংশে প্রতিবেশী বলতে মহম্মদ শার কথা বলা হয়েছে। সমস্ত সম্পত্তি হারিয়ে ইলিয়াস নিঃস্ব হয়ে পড়েছিল তার তাড়িয়ে দেওয়া। পুত্রও অনেক দূরদেশে থাকত, মেয়েও মারা গিয়েছিল।
চূড়ান্ত দুদশীর অসহায় ইলিয়াসকে দয়ালু প্রতিবেশী মহম্মদ শা সাধ্য অনুযায়ী কাজের বিনিময়ে নিজের বাড়িতে থাকা ও খাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। তাদের এই রিম বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় প্রতিবেশী মুহম্মদ শা-কে ইলিয়াস ধন্যবাদ দিয়েছিল।
Model Activity Task Class 9 Bengali Part 6 Answer | মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক Class 9 বাংলা পার্ট 6
ভাবসম্প্রসারণ কাকে বলে
উত্তর: কবি-সাহিত্যিকদের রচনায় অনেক সময় ভাব-সংহত বাক্য বা চরণ থাকে, যার মিত-অবয়বে লুক্কায়িত থাকে জীবন ও জগৎ সম্পর্কিত গূঢ় কথা, নিহিত থাকে ভূয়োদর্শনের শক্তি। ইতিময়, রূপকাশ্রয়ী স্বল্প-বাক উক্তিগুলো বিশ্লেষণে বের হয়ে আসে গত জীবন সম্পর্কে বৃহৎ ভাব, জীবনের অদ্ভুদর্শন। এই ধরনের ভাবগূঢ় বাক্যগুলোর ব্যাখ্যা-বিশেষণই হলো ভাবসম্প্রসারণ।
আরও স্পষ্ট ভাষায় ভাবসম্প্রসারণ কি তা বললে বোঝায়, কবি, সাহিত্যিক, মনীষীদের রচনা কিংবা হাজার বছর ধরে প্রচলিত প্রবাদ প্রবচনে নিহিত থাকে জীবনসত্য। এ-ধরনের গভীর ভাব বিশ্লেষণ করে তা সহজভাবে বুঝিয়ে দেওয়াকে বলে ভাবসম্প্রসারণ।
ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম
উত্তর:
- প্রদত্ত গদ্য বা পদ্যাংশটি পড়ে মূল ভাবটি বুঝতে হবে।
- প্রদত্ত অংশটি রূপকাশ্রয়ী হলে রূপকের আড়ালে প্রচ্ছন্ন ভাববস্তুটি অনুসন্ধান করে বের করতে হবে।
- প্রদত্ত অংশটি রূপকাশ্রিত না হয়ে ভাবব্যণ্জকও হতে পারে। এ রকম ভাবের সরাসরি সম্প্রসারণ করাই বিধেয়।
- ভাবসম্প্রসারণ ব্যাখ্যা নয়। ব্যাখ্যাংশের মতো রচনার নাম,রচয়িতার নাম, প্রসঙ্গ কথা- কোন কিছুর উল্লেখ করা যাবেনা।
- মূল ভাবকে ফুটিয়ে তুলতে উদ্ধৃতি, দৃষ্টান্ত প্রয়োগ, পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক কাহিনীর উল্লেখ, অলঙ্কার, উপমাদির প্রয়োগ চলতে পারে।
- ভাবসম্প্রসারণের আকৃতিগত আয়তনের ব্যাপারে বাঁধাধরা নিয়ম নেই।
- সহজ সরল ভাষা হবে ভাবসম্প্রসারণের প্রকাশ মাধ্যম।
- সাধু বা চলিত যে কোনো একটি ভাষারীতি গ্রহণ করতে হবে।
এসকল নিয়ম মেনে ভাবসম্প্রসারণ লিখলে ভাবসম্প্রসারণটি খুবই উন্নতমানের হবে ।
জীবে প্রেম করে যেই জন সেবিছে ঈশ্বর ভাবসম্প্রসারণ
উত্তর: ভাব-সম্প্রসারণ : স্রষ্টার সন্তুষ্টি বিধানের একমাত্র পথ হচ্ছে তাঁর সৃষ্টিকে ভালােবাসা।
পৃথিবীর সবাকছুই নিরন্তর নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে যাচ্ছে। মানুষের প্রধান কর্তব্য হচ্ছে স্রষ্টার উপাসনা করা । বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন উপায়ে স্রষ্টার উপাসনা করা যায়। তার মধ্যে স্রষ্টাকে পাওয়ার শ্রেষ্ঠ পথ তাঁর সৃষ্ট জীবকে ভালােবাসা। মানুষকে ভালােবাসার মাধ্যমে স্রষ্টাকে উপলব্ধি সহজতর হয়। প্রত্যেক সৃষ্টির মধ্যেই, সৃষ্টিকর্তা বিরাজমান।
এ সত্য প্রত্যেক মহাপ্রাণ মনীষী, ধর্মপ্রবর্তক, লােকহিতৈষী এক বাক্যে স্বীকার করেছেন। বিধাতা গভীর ভালােবাসায় এই সুবিশাল বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করেছেন। বিশ্বের সৃষ্টির মধ্যে যা কিছু রয়েছে, তার প্রতি ভালােবাসা প্রকাশ করলে সৃষ্টিকর্তা মানুষের প্রতি খুশি হন। জীবের প্রতি ভালােবাসার পথ ধরেই স্রষ্টাকে খোজ করার নির্দেশনা রয়েছে ধর্মীয়ভাবে।
তাই মানুষের প্রথম কর্তব্য জীবে দয়া করা। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন যে, জীব সেবাই ঈশ্বর সেবা । তাই জীব সেবা বাদ দিয়ে যদি কেউ ঈশ্বরের সেবা করতে। যায়, ঈশ্বর তাতে সন্তুষ্ট হতে পারে না। মহামানবদের মুখনিঃসৃত বাণী-মানুষকে সেবা করা, সাহচর্য দেওয়া ও ভালােবাসা হলাে। শ্রেষ্ঠ ধর্ম । যার শুভাশিসে সৃষ্টি ধন্য, এ জগৎ পরিব্যাপ্ত, জীব সেবা তাে তারই সেবা।
সৃষ্টির ভেতর দিয়েই স্রষ্টার প্রকাশ, তাই তাঁর সৃষ্ট জীবকে সেবা করলে প্রকারান্তরে তাঁকেই সেবা করা হয়।
নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস ভাবসম্প্রসারণ
উত্তর: ভাব-সম্প্রসারণ : মানুষ স্বভাবতই তার নিজের সুখ-সম্পদে পরিতৃপ্ত হতে পারে না। অপরিসীম আকাঙ্ক্ষা মানুষকে সর্বদা তাড়িত করে। নিজের নয় বরং অন্যের সুখ ও ঐশ্বর্যকে বড়ো করে দেখে। তাই যে নিজের যতটুকু আছে তাতে সন্তুষ্ট থাকতে পারে না।
মানবজীবনে সুখ এবং সম্পদের প্রয়োজন আছে। এজন্যই তো মানুষ দিন-রাত্রি পরিশ্রম করে । তার পরিশ্রমেই তৈরি হয় ধন- সম্পদের পাহাড়। কিন্তু এত কিছু থাকার পরেও ওই মানুষ অন্যের সম্পদ দেখে অন্যকে তার নিজের চেয়ে অধিক সুখী মনে করে অতৃপ্তিতে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। অন্যের সুখটাই তার কাছে বড়ো হয়ে ধরা পড়ে।
মনোবিজ্ঞানীরা মানবচরিত্রের এ বিষয়টি নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তাতে দেখা যায়, মানুষের মাত্রাতিরিক্ত উচ্চাশা অনেক সময় জন্ম দিতে পারে প্রচণ্ড হতাশার। মানুষ এভাবেই অতৃপ্তিতে ভোগে। আবার বাস্তবতার চরম আঘাতে অনেক সময় গগনচুম্বি উচ্চাশা মুখ থুবড়ে পড়তে পারে। এসব মিলেই মানুষের হৃদয়ে জন্ম নেয় অশান্তি আর অপ্রাপ্তি। পৃথিবীতে ধনী-নির্ধন সকলেই আজ এরূপ অতৃপ্তির শিকার।
এ ধরনের অতৃপ্তি জন্ম দেয় চৌর্যবৃত্তি, হানাহানিসহ নানা ধরনের অপকর্মের। সমাজ সংসারে আজ যেন সুখের বড়ো অভাব। তাইতো জীবনের এই সুখ-দুঃখ সম্বন্ধে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী যথার্থ বলেছেন যে, অজস্র ঐশ্বর্যের মধ্যে থেকেও কেউ যদি নিজেকে অসুখী মনে করে তাহলে সে অসুখী, আবার সর্বস্বহীন মানুষ নিজেকে সুখী মনে করলে সে সুখী। অর্থাৎ সুখ-দুঃখ একটি আপেক্ষিক ব্যাপার।
প্রবহমান নদীর দুই পাড়ে যদিও সমান সুখ-সুবিধা ও অসুবিধা আছে তবুও এপাড়ের মানুষ অন্য পাড়ের মানুষকে অধিক সুখী মনে করে নিজেকে ছোটো করে।
তাদের হৃদয়ে ওপারের সুখটাই বড়ো হয়ে ধরা দেয়। মাত্রাতিরিক্ত সুখ আর বিলাসের প্রতিযোগিতায় মানুষ নিজের প্রতি ক্রমেই তার বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। এ বিশ্বায়নের যুগে মানুষ শুধু ধন-সম্পদ আর সুখ খুঁজে বেড়ায়। না পাওয়ার চরম বেদনা নিয়ে সুখ নামক সোনার হরিণের পিছনে ছুটে বেড়ায়। কিন্তু এর শেষ কোথায়— তা হয়ত জানা যায় না। তদুপরি মনীষীরা মানুষের এ অতৃপ্তি পরিহার করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ক্যালভিন ওরেনের উক্তিটি স্মরণযোগ্য— ‘মানবজীবন চিরদিন সুখ-শান্তিতে কাটে না। আকাশের দিকে হাত বাড়ালে শূন্যতা ছাড়া আর কিছুই মিলে না। চাওয়া-পাওয়ার গণ্ডি তাই মাটির কাছাকাছি হওয়া ভালো।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
আরো বিশদে পড়ার জন্য
শেখার ফলাফলের জন্য 5E মডেল.
ডাঃ উজ্জ্বল কুমার মজুমদার (লেখক)
FAQ | Bengali Story Question Answer
ধন্যবাদ জানানোর উক্তি
1) মাঝে মাঝে আমাদের নিজেদেরকে মনে করিয়ে দেয়া উচিত যে ধন্যবাদ জানানোই জীবনের সবচেয়ে বড় পুণ্য।
— উইলিয়াম বেনেট
2) অন্ধকারে থাকা কাউকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার চেয়ে স্রষ্টাকে ধন্যবাদ জানানোর কোনো ভালো উপায় নেই।
— হেলেন কেলার
3) কখনোই ভোলা উচিত না যে মানুষের সব চেয়ে বড় আবেগী চাহিদা হলো কারো কাছে ধন্যবাদ পাওয়া।
— জ্যাক্সন ব্রাউন জুনিওর
4) মাঝে মাঝে ধন্যবাদের মত ছোট শব্দও বলতে হয় শুধু কারো জীবন সুন্দর করে তোলার জন্য।
— এল কনিংসবার্গ