বিভব পার্থক্য কাকে বলে, বিভব পার্থক্যের সূত্র

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

বিভব পার্থক্য কি, বিভব পার্থক্য কাকে বলে

দুটি চার্জিত বস্তুর বিভবের মধ্যে যে পার্থক্য তাকে বিভব পার্থক্য বলে।

সাধারণত তড়িৎ বিষয়ক বিভিন্ন কাজে বিভব পার্থক্য ব্যাবহার করা হয়। কারণ একটি বিন্দু থেকে আরেকটি বিন্দুতে তড়িৎ প্রবাহ করতে হলে অবশ্যই বিভব পার্থক্য সৃষ্টি করতে হবে। তড়িৎ উচ্চ বিভব থেকে নিম্ন বিভবের দিকে প্রবাহিত হয়। কোন বস্তুর ধণাত্মক আধাণ বৃদ্ধি পাওয়া মানে বস্তুর বিভব বৃদ্ধি পাওয়া। উল্লেখ্য যে, তড়িৎ উচ্চ বিভব থেকে নিম্ন বিভবের দিকে প্রবাহিত হয় কিন্তু পরিবাহীর ইলেক্ট্রন নিম্ন বিভব থেকে উচ্চ বিভবের দিকে প্রবাহিত হয়না।

বিভব কে বল বা চাপের সাথে তুলনা করতে পারেন। কোনো পরিবাহীর মধ্যে ইলেকট্রন কে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যেতে যে চাপ বা বল ব্যবহার করা হয় সেটাই বিভব।

আর পার্থক্য হলো আপনার a প্রান্তে এক রকম বিভব b প্রান্তে এক রকম বিভব এটাই মূলত বিভব পার্থক্য।

আমরা ব্যটারির গায়ে 1.5V লেখা দেখে থাকি। এটা বলতে a-b=1.5v এটাই বোঝায়

বিভব পার্থক্যের একক কি

প্রতি একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎ ক্ষেত্রে এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করতে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে। বিভব পার্থক্যের একক ভোল্ট

বিভব পার্থক্যের এসআই একক হল ভোল্ট এবং v অক্ষর দ্বারা তাকে চিহ্নিত করা হয়।

সাধারণত তড়িৎ বিষয়ক বিভিন্ন কাজে বিভব পার্থক্য ব্যবহার করা হয়।

বিভব পার্থক্য কেন তৈরি হয়

বিভব পার্থক্যের কারণে পুরো তারে যে তড়িৎক্ষেত্র তৈরী হয়, তা ইলেক্ট্রনকে গতিশীল হতে সাহায্য করে। যার কারণে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।

বিভব পার্থক্যের উদাহরণ

ধরুন একটি সমতল টেবিলের একদিকে উঁচু কিন্তু অন্যদিকে ঢালু ।

এখন উঁচু দিকে পানি দিলে অবশ্যই তা নিচের দিকে নেমে যাবে । এ নামার কারণ হচ্ছে এদের মধ্যে উচ্চতার পার্থক্য ।

তেমনি বিভব পার্থক্য থাকলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয় এদের পার্থক্যের কারণে ।

বিভব পার্থক্য সূত্র

কোনো প্রদত্ত চার্জ বা পরিবর্তনের সিস্টেমের বৈদ্যুতিক সম্ভাব্য শক্তিকে কোনো ত্বরণ ছাড়াই চার্জ বা চার্জের সিস্টেমকে অসীম থেকে বর্তমান কনফিগারেশনে আনার জন্য একটি বহিরাগত এজেন্ট দ্বারা করা মোট কাজ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

সংজ্ঞা: বৈদ্যুতিক সম্ভাব্য শক্তিকে সংজ্ঞায়িত করা হয় মোট সম্ভাব্য শক্তি হিসাবে একটি ইউনিট চার্জ যদি বাইরের মহাকাশের যেকোনো স্থানে অবস্থিত থাকে।

বৈদ্যুতিক সম্ভাব্য শক্তি একটি স্কেলার পরিমাণ এবং শুধুমাত্র মাত্রা এবং কোন দিক নেই। এটি জুলের পরিপ্রেক্ষিতে পরিমাপ করা হয় এবং V দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। এতে ML2T-3A-1 এর মাত্রিক সূত্র রয়েছে।

ভোল্টেজ = শক্তি/চার্জ

বিভব পার্থক্য নির্ণয়

2 ওহম, 3 ওহম এবং 6 ওহম এর তিনটি রোধকে কিভাবে যুক্ত করলে, তুল্যঙ্ক রোধ 4 ওহম হবে?

উত্তর: 3 ওহম ও 6 ওহম রোধকে পরস্পর সমান্তরালে রেখে,তাদের তুল্যরোধকে 2 ওহম এর সাথে শ্রেণিতে যুক্ত করলে তুল্যরোধ 4 ওহম হবে।

এখানে,

3 ওহম ও 6 ওহমকে সমান্তরালে যুক্ত করলে ,

1/ তুল্যরোধ=1/3+1/6=(3+6)/18=1/2

সুতরাং, তুল্যরোধ=২ ওহম।

এবার, ২ ওহম রোধের সাথে উক্ত তুল্যরোধকে শ্রেনিতে সংযুক্ত করলে,

মোট তুল্যরোধ=২+২ =৪ ওহম।

তড়িৎ চালক শক্তি এবং বিভব পার্থক্য

দুটি চার্জিত বস্তুর মধ্যে চার্জের আদান-প্রদান যে তড়িৎ অবস্থার দ্বারা নির্ধারিত হয়, তাকে তড়িৎ বিভব বলে(Electric potential)।

কোন একটি পরিবাহী বা বস্তুর দুই প্রান্তে ভোল্টেজের তারতম্য দেখা যায়। এই অসমান ভোল্টেজ এর পার্থক্য কে বিভব পার্থক্য বলে।

তড়িৎ বিভব পার্থক্য কাকে বলে

অসীম দূরত্ব থেকে একটি একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে পরিমান কার্য করতে হয় তাকে তড়িৎক্ষেত্রের ওই বিন্দুতে তড়িৎবিভব (Electric Potential) বলে।

মনে করা যাক, তড়িৎক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে বিভব V ।

সুতরাং, অসীম দূরত্ব থেকে ধনাত্মক আধানকে ওই বিন্দুতে আনতে কৃত কার্য = W । অতএব অসীম দূরত্ব থেকে q পরিমান আধানকে ওই বিন্দুতে আনতে কৃত কার্য,

  • W = V×q
    অর্থাৎ, সম্পাদিত কার্য = বিভব × আধান

বিভব পার্থক্য

একটি পজিটিভ চার্জকে একটি বিন্দু হতে অন্য বিন্দুতে আনতে,আনয়নকারি যে কাজ সম্পন্ন করে তাকে বিভব পার্থক্য বলে।

vপরিমান চার্জ কে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে অপর বিন্দুতে নিতে যে কাজ সম্পন্ন হয় ঐ পরিমাণ চার্জ কে ঐ বর্তনীর বিভব পার্থক্য বলে।

বিভব পার্থক্য বিদ্যুৎ প্রবাহের সমানুপাতিক, I∝V

আরো পড়ুন: শক্তি কাকে বলে, প্রচলিত শক্তি কাকে বলে, অপ্রচলিত শক্তি কাকে বলে

বিভব পার্থক্য ও তড়িৎ প্রবাহের মধ্যে সম্পর্ক

আসলে তড়িৎ বিভব বলতেই বুঝায় দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য। তাই বলা যায় বিভব পার্থক্য আর তড়িৎ বিভব একই কথা।

বিভব মানে চাপ বা বৈদ্যুতিক চাপ। বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে হলে বিদ্যুৎ সম্পর্কে খানিকটা ধারনা থাকা চাই। বিদ্যুৎ হল একপ্রকার শক্তি, যা পরিবাহী তারের মধ্যদিয়ে ইলেক্ট্রনের প্রবাহ ছাড়া আর কিছুই না। এই ইলেক্ট্রন কে প্রবাহিত করে যে চাপ বা শক্তি তাকে বলা হয় ভোল্টেজ। এই ভোল্টেজের পরিমান কে বিভব শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

ইলেক্ট্রন প্রবাহিত হয় অধিক ইলেক্ট্রন এলাকা থেকে কম ইলেক্ট্রনের এলাকার দিকে বা উচ্চ বিভব এলাকা হতে নিম্ন বিভব এলাকায়। এখন কোনো পরিবাহীর উভয় প্রান্তের অর্থাৎ উচ্চ ভোল্টেজ এলাকা এবং নিম্ন (অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শূন্য ভোল্টেজ) ভোল্টেজের এলাকার মধ্যকার ভোল্টেজের পার্থক্যকে বলা যায় বিভব বা বিভব পার্থক্য।

তড়িচ্চালক শক্তি ও বিভব পার্থক্যের মধ্যে পার্থক্য

তড়িচ্চালক শক্তিবিভব পার্থক্য
একক পরিমাণ চার্জকে কোষ সমেত কোন বর্তনীর এক বিন্দু থেকে সম্পূর্ণ বর্তনী ঘুরিয়ে পুনরায় উক্ত বিন্দুতে আনতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে উক্ত কোষের তড়িচ্চালক বল বলে।একক পরিমাণ চার্জকে বর্তনীর এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে স্থানান্তর করতে যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হয় তাকে উক্ত দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে।
তড়িৎ কোষের মধ্যে রাসায়নিক শক্তি তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয় বলে তড়িচ্চালক বল পাওয়া যায়তড়িৎ কোষকে যখন বহিঃবর্তনীর সাথে যুক্ত করা হয় তখন কোষের এই তড়িৎ শক্তির নির্দিষ্ট অংশ অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে বিভব পার্থক্য প্রদান করে।
তড়িচ্চালক শক্তি মুলত একটি ব্যাটারীর শক্তিকে বুঝায় ।বিভব পার্থক্য একটি পরিবাহীর দুটি বিন্দুর।
তরিচ্চালক শক্তি তখন ই কার্যকর হয় যখন একক চার্জ একটি বদ্ধ বর্তনীতে প্রবাহিত হয়বিভব পার্থক্য মুক্ত তড়িৎ প্রবাহ এবং বর্তনী, দুই জায়গাতেই থাকতে পারে।
তড়িৎচালক শক্তি হচ্ছে অন্য কোনো ধরনের শক্তিকে তড়িৎ শক্তিতে রূপান্তর করার ‌‌‌‌ ক্ষমতা । আর বিভব পার্থক্য হচ্ছে দুই বিন্দুর মধ্যকার প্রবাহিত আধানের পার্থক্য ।
তড়িচ্চালক শক্তি ও বিভব পার্থক্যের মধ্যে পার্থক্য
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | বিভব পার্থক্য

Q1. একটি সৌর কোষে উৎপন্ন বিভব পার্থক্যের মান কত

Ans – সৌর কোষের বিভব পার্থক্য 0.5 V ।

Q2. বিভব পার্থক্য মাপা হয় কোন যন্ত্রের সাহায্যে

Ans – বিভব পার্থক্য পরিমাপ করা হয় পটেনশিওমিটার(potentiometer) এর সাহায্যে।

Q3. দুইটি সাধারণ ব্যাটারি সেলের বিভব পার্থক্য কত

Ans – কোনো ব্যাটারির প্রথম প্রন্তের বিভব V’ এবং দ্বিতীয় প্রান্তের বিভব V” হলে দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্য হবে, V=(V’-V”)

Q4. ড্রাইসেল হতে প্রাপ্ত বিভব পার্থক্য কত?

Ans – ড্রাইসেল হতে 1.5 ভোল্ট তড়িৎ বিভব পাওয়া যায়।

Q5. বিভব পার্থক্যের মাত্রা

Ans – dr/dV​ কে বিভবের নতিমাত্রা (potential gradient) বলে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।