বেদ কি, উপনিষদ কি, বেদ গ্রন্থের রচয়িতা কে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

বেদ কি, বেদ কাকে বলে

বেদ (সংস্কৃত: वेद, “জ্ঞান”) হল প্রাচীন ভারতে লিপিবদ্ধ একাধিক গ্রন্থের একটি বৃহৎ সংকলন। ছান্দস্ ভাষায় রচিত বেদই ভারতীয় সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন এবং সনাতন ধর্মের সর্বপ্রাচীন পবিত্র ধর্মগ্রন্থ।

প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী বেদকে অপৌরুষেয় অর্থাৎ ঈশ্বরের বাণী বলে মনে করা হয়। এটি কতগুলি মন্ত্র ও সূক্তের সংকলন। বিশ্বামিত্র, ভরদ্বাজ প্রমুখ বৈদিক ঋষি জ্ঞানবলে ঈশ্বরের বাণীরূপ এসব মন্ত্র প্রত্যক্ষ করেন।

বেদকে ত্রয়ীও বলা হয়। এর কারণ, বেদের  মন্ত্রগুলি আগে ছিল বিক্ষিপ্ত অবস্থায়। ব্যাসদেব যজ্ঞে ব্যবহারের সুবিধার্থে মন্ত্রগুলিকে ঋক্, যজুঃ, সাম এই তিন খন্ডে বিন্যস্ত করেন। তাই বেদের অপর নাম হয় সংহিতা। বেদ চারখানা হলেও চতুর্থ অথর্ববেদ  অনেক পরবর্তীকালের রচনা এবং এর কিছু কিছু মন্ত্র প্রথম তিনটি থেকেই নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া যজ্ঞে এর ব্যবহার নেই। অবশ্য বেদকে ত্রয়ী বলার অন্য একটি কারণও আছে এবং তা হলো: এর মন্ত্রগুলি মিতত্ব, অমিতত্ব ও স্বরত্ব এই তিনটি স্বরলক্ষণ দ্বারা বিশেষায়িত, যার ওপর ভিত্তি করে মন্ত্রগুলিকে উপর্যুক্ত তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

বেদের শত শত বিকৃত ভার্সন আছে।

বেদ বহু শাখা-প্রশাখায় বিভক্ত। শাখা-প্রশাখা নিয়েও হিন্দু পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। দয়ানন্দ সরস্বতীর মতে বেদের শাখা রয়েছে ১১২৭টি, সর্বানুক্রমণীতে ১১৩৭। আর পতাঞ্জলি তার মহাভাষ্যে লিখেছেন ১১৩১টি – ঋগ্বেদের ২১টি, অথর্ববেদের ৯টি, যজুর্বেদের ১১১টি (কৃষ্ণ যজুর্বেদের ৮৬টি, শুক্ল যজুর্বেদের ১৫টি), সামবেদের ১০০০টি। কিন্তু বর্তমানে এগুলো বেশিরভাগই হারিয়ে গেছে। এই ১১৩১টি থেকে বর্তমানে ১০-১২টি পাওয়া যায়। যেমনঃ

  • ঋগ্বেদের ১টি (শাকাল)
  • যজুর্বেদের ৬টি (শুক্লযজুর্বেদের কাণ্ব ও মাধ্যন্ডিন, কৃষ্ণযজুর্বেদের তৈত্তিরীয়, মৈত্রায়নী, কথক, কপিষ্ঠালা)
  • অথর্ববেদের ২টি (পৈপ্পলাদ, শৌণক্য)
  • সামবেদের ৩টি (কৌথম, জৈমিনীয়, রানায়াণীয়)

বেদ গ্রন্থের রচয়িতা কে

বেদ গ্রন্থের রচয়িতা ঋষিগণকে দ্রষ্টা বলা হয়েছে । তাঁরা ধ্যানে সমাধিস্থ অবস্থায় এই সত্য কে অন্তরে অনুভব করেছিলেন ও পরে শিষ্য পরম্পরায় যুগ যুগ ধরে কথিত ও শ্রুত হয়ে ছিল এবং বহু পরে লেখা হয়েছিল ।

আর্ষ শাস্ত্র অনুযায়ী পরব্রহ্মই সৃষ্টির আদিতে মানব হিতার্থে বেদের জ্ঞান প্রকাশ করেন। সর্বপ্রথম অগ্নি, বায়ু, আদিত্য ও অঙ্গিরা এই চার ঋষি চার বেদের জ্ঞান প্রাপ্ত হন। এবং পরবর্তিতে তাঁরা অন্যান্য ঋষিদের মাঝে সেই জ্ঞান প্রচার করেন এবং অলিপিবদ্ধভাবে পরাম্পরার মাধ্যমে তা সংরক্ষিত হয়ে এসেছে।

বেদের রচনাকাল সম্পর্কে অনেক মতভেদ আছে। এ নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য পন্ডিতদের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্যও দেখা যায়। উল্লেখ্য যে, বেদ  রচনার শুরু থেকে তা সম্পূর্ণ হতে বহুকাল সময় লেগেছে। সেই কালসীমা মোটামুটিভাবে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০-৯৫০ অব্দ পর্যন্ত ধরা হয়।

আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ স্বামীর মতে, বেদ লেখা হয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে।

বেদকে শ্রুতি (যা শ্রুত হয়েছে) সাহিত্যও বলা হয়। কারণ বেদের লিখিত কোনো বই বা পুস্তক আকারে ছিল না। বৈদিক ঋষিরা বেদমন্ত্র মুখে মুখে উচ্চারণ করে তাদের শিষ্যদের শোনাতেন, আর শিষ্যরা শুনে শুনেই বেদ অধ্যায়ন করতেন।

প্রতিটি বেদের’সংশ্লিষ্ট চার ধরনের বৈদিক সাহিত্য আছে, (১) সংহিতা (২) ব্রাহ্মণ (৩) আরণ্যক ও (৪) উপনিষদ।

  1. সংহিতা: দেবতার উদ্দেশ্যে মন্ত্ব ও স্তোত্র (পদ্যে লেখা)বা চতুর্বেদ একত্রে

2. ব্রাহ্মণ: যজ্ঞের নিয়মকানুন ও তার ফলাযল (গদ্যে লেখা)

3. আরণ্যক : যাগযজ্ঞে অক্ষম বয়স্কদের ধর্মীয় জীবনের বিভিন্ন পদ্থতি বানপ্রস্থ বা অরণ্যবাসী জীবনের জন্য

4. উপনিষদ; পুনর্জন্মবাদ, কর্মফলবাদ, পরমাত্মা ও ব্রহ্ইত্যাদির আলােচনা, প্রতিটি বেদের দার্শনিক ব্যাখ্যা

বেদ শব্দের অর্থ কি

জ্ঞান বা পরমজ্ঞান। ‘বেদ’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ জ্ঞান। যার অনুশীলনে ধর্মাদি চতুর্বর্গ লাভ হয় তা-ই বেদ। 

বেদ কয় প্রকার ও কি কি, বেদ কত প্রকার

বেদের ভাগ ও বিষয়বেদ হল সংস্কৃত ভাষায় রচিত আর্যদের প্রাচীনতম সাহিত্য, বেদের সংখ্যা চার: ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ ও অথর্ববেদ ।

  1. ঋগবেদ: এখানে মূলত পদ্যরূপী ঋক্‌ মন্ত্র রয়েছে। তাই এর নাম ঋগ্বেদ।
  2. সামবেদ: এখানে যে মন্ত্রগুলো রয়েছে তা দেখতে পদ্যের আকারে অর্থাৎ ঋক মন্ত্রের আকারে। কিন্তু এগুলো ঋক্‌ মন্ত্রের মতো আবৃত্তি না করে গান করা হয়। তাই এদের বলা সাম মন্ত্র। ফলে এই বেদের নাম সামবেদ।
  3. যজুর্বেদ: এখানে গদ্য ও পদ্য উভয় মন্ত্র পাওয়া গেলেও গদ্যময়ী অর্থাৎ যজু মন্ত্রের প্রাধান্যই এখানে বেশি। তাই এই বেদের নাম যজুর্বেদ।
  4. অথর্ব বেদ: এখানেও পদ্য ও গদ্য উভয় প্রকার মন্ত্র রয়েছে। কিন্তু পদ্যরূপী ঋক্‌ মন্ত্র বেশি। যেহেতু ঋক্‌ ও যজু মন্ত্র সম্বলিত পৃথক বেদের নাম ইতোমধ্যেই করা হয়ে গিয়েছে তাই এই বেদের নামকরণ মন্ত্রের প্রকরণের উপর না করে এই বেদে প্রতিপাদ্য বিষয়ের আঙ্গিকে করা হয়েছে। এই বেদের বিখ্যাত কিছু সূক্ত জ্যেষ্ঠ্য ব্রহ্ম সূক্ত, কেন সূক্ত, স্কম্ভ সূক্ত ইত্যাদিতে অথর্ব বা নিশ্চল সর্বব্যাপী ব্রহ্ম প্রতিপাদিত হওয়ায় এর নাম হয়েছে অথর্ববেদ। এই একই কারণে এই বেদের অপরনাম ব্রহ্মবেদ।

এই চার বেদ আদিতে পরমেশ্বর কর্তৃক ঋষিদের ধ্যানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে স্বয়ং বেদ বলছে –

তস্মাদ্যজ্ঞাৎ সর্বহুত ঋচঃ সামানি জজ্ঞিরে।
ছন্দাংসি জজ্ঞিরে তস্মাদ্যজুস্তস্মাদজায়ত।।

( ১) যজুর্বেদ অধ্যায় ৩১ মন্ত্র ০৭
য়স্মাদৃচো অপাতক্ষন্ য়জুর্য়স্মাদপাকষন্।
সামা’নি য়স্য লোমান্যথর্বংঙ্গিরসো মুখম্।
স্কম্ভং তং ব্রূহি কতমঃ স্বিদেব সঃ।।

(২) অথর্ববেদ কাং ১০ প্রপা ২৩ অনু ০৪ মং ২০

ভাষার্থঃ-

মন্ত্র দুটির অর্থ মহর্ষি দয়ানন্দ সরস্বতী বিরচিত “ঋগ্বেদাদিভাষ্যভূমিকা” গ্রন্থের বেদোৎপত্তি শীর্ষক অধ্যায় থেকে নেওয়া হয়েছে।

( তস্মাৎ য়জ্ঞাৎ ) সৎ যাঁহার কদাপি নাশ হয় না চিৎ যিনি সদা জ্ঞান স্বরূপ , যাঁহার কদাপি লেশমাত্র অজ্ঞান নাই আনন্দ যিনি সদা সুখস্বরূপ এবং সকলের সুখদাতা , এবম্ভূত সচ্চিদানন্দাদি | লক্ষণযুক্ত সর্বত্র পরিপূর্ণ , সকলের উপাসনার যােগ্য , ইষ্টদেব ও সর্বশক্তিমান পরমব্রহ্ম হইতে , ( ঋচঃ ) ঋগ্বেদ ( য়জু ) যজুর্বেদ ( সামানি ) সামবেদ ( ছন্দাংসি ) এবং অথর্ববেদ প্রকাশিত হইয়াছে । এজন্য সকলেরই বেদশাস্ত্র গ্রহণ ও তদনুযায়ী আচরণ করা কর্তব্য ।

বেদ অনেক বিদ্যার আধার , ইহা প্রকাশ করিবার জন্য , ‘ জজ্ঞিরে ‘ এবং ‘ অজায়ত ’ এই ক্রিয়া দ্বয়ের প্রয়ােগ হইয়াছে । ঈশ্বর হইতে বেদ সকল উৎপন্ন হইয়াছে , ইহা অবধারণের জন্য , তস্মাৎ ‘ এই পদ দুইবার প্রযুক্ত হইয়াছে । বেদ মন্ত্র সকল গায়ত্রাদি ছন্দযুক্তহেতু , ‘ ছন্দাংসি ‘ এই পদ দ্বারা অথর্ববেদের উৎপত্তি প্রকাশ করিতেছে । শতপথ ব্রাহ্মণ এবং বেদ মন্ত্র প্রমাণ দ্বারা ইহা সিদ্ধ হইতেছে , যে ‘ যজ্ঞ ‘ শব্দে ‘ বিষ্ণু ‘ , এবং বিষ্ণু শব্দে সর্বব্যাপক পরমেশ্বরেরই গ্রহণ হইয়া থাকে , কারণ জগৎ উৎপত্তি করা , এক পরমেশ্বর ভিন্ন অন্যত্র বা অপরে ঘটিত পারে না । । ১ । ।

( যস্নাদৃচো অপা০ ) যে সর্বশক্তিমান পরমেশ্বর হইতে , (ঋচঃ) ঋগ্বেদ , (যজুঃ ) যজুর্বেদ (সামানি ) সামবেদ ( আংগিরসঃ ) অথর্ববেদ , এই বেদ চতুষ্টয় উৎপন্ন বা প্রাদুর্ভূত হইয়াছে এবম্ভূত ঈশ্বর , আংগিরস অর্থাৎ অথৰ্ব্ববেদ যাঁহার মুখ স্বরূপ , সামবেদ যাহার লােমবৎ , যজুর্বেদ যাঁহার হৃদয় স্বরূপ , এবং ঋগ্বেদ যাহার প্রাণ স্বরূপ , ( ব্রহি কতমঃ স্বিদেব সঃ ) যে , যাঁহা হইতে চারি বেদ উৎপন্ন হইয়াছে , তিনি কোন দেব ? তাহা তুমি বল ? এই প্রশ্নের উত্তরে ভগবান বলিতেছেন , ( স্কংভ তং ) যিনি সমগ্র জগতের ধারণ কর্তা পরমেশ্বর , তাঁহাকেই স্কম্ভ বলা যায় , এবং সেই স্কম্ভকেই বেদ সকলের কর্তা প্রকাশক বলিয়া জানিবে সেই সর্বাধার পরমেশ্বর ভিন্ন , অন্য কোন দেব , বেদ কর্তা নহে , এবং তিনি ভিন্ন মনুষ্যের উপাসনা যােগ্য অন্য কোন ইষ্টদেব নাই । কারণ যে বেদকৰ্তা পরমাত্মাকে পরিত্যাগ করিয়া তৎ স্থানে অন্যর উপসনা ” করে , সে নিশ্চয়ই হতভাগ্য সন্দেহ নাই । । ২ । ।

বেদ ৪ টি- মন্ত্র সংখ্যা- ২০,৪৩৪

১.ঋগবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১০,৫৮৯
২.সামবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১,৮৯৩
৩.যজু:বেদ. মন্ত্র সংখ্যা- ১,৯৭৫
৪.অথর্ববেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ৫,৯৭৭

পঞ্চম বেদ কাকে বলে

মহাভারত কে পঞ্চম বেদ বলা হয়। বেদ যেমন জ্ঞানের ভান্ডার মহাভারতে সেই প্রকার অসংখ্য জ্ঞান গল্পের আকারে দেওয়া আছে। তাই মহাভারত কে পঞ্চম বেদ বলা হয়।

ভগবান সৃষ্টির প্রথম দিকে এই বেদের জ্ঞান দান ব্রহ্মকে দান করেছিলেন। ব্রহ্মা তারপর এই জ্ঞান নারদ মুনি কে দান করেছিলেন। তারপর নারদ মুনি এই জ্ঞান তার শিষ্য ব্যাসদেবকে দিয়েছিলেন।ব্যাসদেব দেখলেন এই জ্ঞান যদি আমি লিপিবদ্ধ না করি তাহলে পরবর্তীতে এই জ্ঞানের ধারা প্রবাহিত হবে না। বিকৃত হয়ে যাবে। তারপর তিনি এই বেদের জ্ঞান লিপিবদ্ধ করলেন।বেদ অর্থ পূর্ণ জ্ঞান। জাগতিক এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞান এর ভিতরে নিহিত রয়েছে।

ব্যাসদেব এই বেদকে চারটি ভাগে বিভক্ত করে তার চার শিষ্যকে এই ব্যাপারে দক্ষ করে তুললেন এবং চার শিষ্যকে অধ্যাপক করে প্রচার শুরু করলেন। কিন্তু এই বেদের ভাষা এতই কঠিন সংস্কৃত এবং দেবনাগ্রি। এইজন্য মানুষের কাছে দুর্বোধ্য বোঝা অনেক কঠিন ছিল। তখন ব্যাসদেব বুঝতে পারলেন এই জ্ঞান সাধারণ মানুষেরা গ্রহণ করতে পারছে না। তাই তিনি আবার এই বেদকে ১০৮ টা উপনিষদে বিভক্ত করলেন। ১০৮ টা উপনিষদ অনেক বড় একটা গ্রন্থ ভান্ডার ছিল যা সাধারণ মানুষের পক্ষে ১০৮ টা উপনিষদ পরা অনেক কঠিন হয়ে গেল।

এই কারণে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই সমস্ত উপনিষদের দলিত-মথিত নির্যাসকে তিনি কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে অর্জুনকে দান করেছিলেন, যা ছিল ভাগবত গীতা। এইসব বেদ এবং উপনিষদের একদম নির্যাস করে মূল বিষয়বস্তু একত্রে করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতাতে রুপান্তরিত করেছিলেন।

বেদ ও গীতার পার্থক্য

বেদগীতা
সনাতন ধর্মের প্রধান ধর্ম গ্রন্থ বেদ ।বেদ বা ১০৮ উপনিষদের নির্যাস হচ্ছে ভাগবত গীতা। 
হিন্দুদের প্রাচীনতম ধর্মগ্রন্থটির নাম বেদ। বেদকে বলা হয় অপৌরুষেয় বা অলৌকিক অর্থাৎ স্বয়ং ভগবান মুখনিঃসৃত। স্বয়ং ব্রহ্মা এটি রচনা করেন। বেদ শুনে শুনে শিখতে হোতো বলে বেদের অপর নাম শ্রুতি। এটি গুরু – শিষ্য পরম্পরায় চলতো।গীতা মহাভারতের একটি অংশ। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের সময়ে অর্জুন দেখলেন, তাকে জ্ঞাতি-স্বজনদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করতে হবে। তাতে তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লে শ্রীকৃষ্ণ তাকে যে উপদেশগুলি দিয়েছিল, সেটাই হলো গীতা অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুনের কথোপকথনই হলো গীতা।
বেদে সর্বমোট 20, 434 টি মন্ত্র আছ।গীতায় মোট সাতশো শ্লোক আছে। কাজেই গীতাকে সপ্তশতী বলা হয়।
আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ স্বামীর মতে, বেদ লেখা হয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে।গীতা তথা ভগবদ্গীতা খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম থেকে দ্বিতীয় শতাব্দীতে রচিত হয়েছে বলে অনুমিত।
বেদ ও গীতার পার্থক্য
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | উপনিষদ

Q1. উপনিষদ কি

Ans – উপনিষদ হচ্ছে হিন্দু-সনাতন ধর্ম-দর্শন। বর্তমানের বিশ্লেষকগণের ধারনা দুই শত উপনিষদ ছিলো, তারমধ্যে নাকি মাত্র শতাধিক (১০৮) উপনিষদের সন্ধান পাওয়া গেছে।

Q2. উপনিষদ কয়টি ও কি কি

Ans – বেদ চারটি। ঋক্ সাম্ যজু এবং অথর্ব। বেদের আবার চারটি ভাগ। ব্রাহ্মণ্য-সংহিতা,আরণ্যক এবং উপনিষদ।আদিতে বেদ ছিলো শ্রুতি-নির্ভর তাই বেদের অপর নাম শ্রুতি।তবে পরবর্তীকালে পানিণী,পতঞ্জলি, শঙ্করাচার্য বিভিন্ন টীকাকারগণ বেদের লিখিত বিশ্লেষণ প্রস্তুত করেছিলেন।

Q3. উপনিষদ শব্দের অর্থ কি, উপনিষদ মানে কি

Ans – উপনিষদ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো যে বিদ্যা নির্জনে গুরুর সমীপে উপবিষ্ট হয়ে গ্রহণ করতে হয়, অর্থাৎ গুহ্যজ্ঞান। তবে ব্যবহার অনুসারে শব্দটি বোঝায় বৈদিক সাহিত্যের অন্তিম পর্যায়ে রচিত বিশেষ গ্রন্থাবলি।
সনাতন হিন্দুধর্মের আকর শাস্ত্র বলে ধরা হয় ★উপনিষদ ★ব্রহ্ম-সূত্র ★ গীতাকে।

Q4. উপনিষদের বিষয়বস্তু কি

Ans -উপনিষদ্ (সংস্কৃত: उपनिषद्) হচ্ছে হিন্দুধর্মের এক বিশেষ ধরনের ধর্মগ্রন্থের সমষ্টি। এই গ্রন্থসমূহে হিন্দুধর্মের তাত্ত্বিক ভিত্তিটি আলোচিত হয়েছে। উপনিষদের অপর নাম বেদান্ত। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, উপনিষদ্‌গুলোতে সর্বোচ্চ সত্য স্রষ্টা বা ব্রহ্মের প্রকৃতি এবং মানুষের মোক্ষ বা আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভের উপায় বর্ণিত হয়েছে। উপনিষদ্‌গুলো মূলত বেদ- পরবর্তী ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক অংশের শেষ অংশে পাওয়া যায়। এগুলো প্রাচীনকালে গুরু-শিষ্য পরম্পরায় মুখে মুখে প্রচলিত ছিল।

Q5. বেদান্ত গ্রন্থের রচয়িতা কে

Ans – বেদান্ত গ্রন্থ (১৮১৫): রাজা রামমোহন রায় রচিত প্রথম বাংলা গ্রন্থ। মূল গ্রন্থটি চারটি অধ্যায়ে বিভক্ত। রাজা রামমোহন রায়-প্রণীত গ্রন্থাবলি-র (১৮৮০) সম্পাদক রাজনারায়ণ বসু ও আনন্দচন্দ্র বেদান্তবাগীশ অধ্যায়গুলির নামকরণ করেছিলেন যথাক্রমে সমন্বয়, অবিরোধ, সাধন ও ফল।

Q6. বেদের অপর নাম কি

Ans – বেদকে ঈশ্বরের বাণী বলে ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা মনে করে এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে বেদের বাণী শুনে সেই বাণী ঋষিরা মনে রাখত । শুনে শুনে মনে রাখা হতো বলে এর আরেক নাম শ্রুতি।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।