দূরত্ব কাকে বলে, পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

দূরত্ব কাকে বলে

যে কোন গতিশীল বস্তু যখন এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায় অর্থাৎ সেই বস্তুর অতিক্রান্ত পথের দৈর্ঘ্য কে দূরত্ব বলে।

নিম্নে একটি উদাহরণের মাধ্যমে দূরত্বের বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেছি –

দূরত্ব কাকে বলে

এখানে একজন বালক A স্থান থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত গিয়ে B স্থানে ঘরে পৌঁছলো এবং B স্থান থেকে ৩ মিটার এগিয়ে C স্থানে পৌঁছোয়। এরপরে C স্থান থেকে ৫ মিটার এগিয়ে পুনরায় A স্থানে পৌঁছলেন।

এখানে দূরত্ব হবে = ৪ মিটার + ৩ মিটার + ৫ মিটার = ১২ মিটার ।

কিন্তু এখানে A স্থান থেকে B স্থান থেকে C স্থান থেকে পুনরায় A স্থানে পৌঁছলেন তাহলে ওই বালকের সরণ শুন্য হবে। কিন্তু দূরত্ব ১২ মিটার হবে।

  • একটি বস্তুর বা কণার অবস্থানের পরিবর্তন হলে, তার প্রাথমিক ও অন্তিম অবস্থানের মাঝে অতিক্রান্ত পথের মোট প্রকৃত দৈর্ঘ্যকে ওই বস্তু বা কণা দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব বলে।
  • কোনাে সচল বস্তুর বা কণা যে পথে চলে সেই পথের মোট প্রকৃত দৈর্ঘ্যকে দূরত্ব বলে।
  • দূরত্ব হল দিক নির্বিশেষে একটি বস্তুর মোট গতিবিধি। একটি বস্তুর শুরু বা শেষ বিন্দু থাকা সত্ত্বেও কতটা ভূমি ঢেকে রেখেছে তা আমরা দূরত্ব নির্ধারণ করতে পারি।

দূরত্ব নির্ণয়ের সূত্র

দূরত্ব = গতি x সময়। একজন মানুষ S1 কিমি/ঘন্টা বেগে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব D1 কিমি এবং S2 কিমি/ঘন্টা বেগে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করে, পুরো যাত্রার সময় তার গড় গতি দেওয়া হয়, গড় গতি = কিমি/ঘন্টা।

ফোকাস দূরত্ব কাকে বলে

যেকোনো আলোক মাধ্যম ব্যবহারের ফলে আলোকে যে পরিমাণ অভিসারীত বা অপসারিত করে থাকে তাকে ঐ মাধ্যমের ফোকাস দূরত্ব বলে।

কৌণিক দূরত্ব কাকে বলে

পৃথিবী গোলাকার পৃথিবীপৃষ্ঠে অবস্থিত যেকোনো দুটি স্থান হতে পৃথিবীর কেন্দ্র পর্যন্ত যেকোনো দুটি সরলরেখা তার ফলে তাদের যে কোণের সৃষ্টি করে এবং সেই কোণ এর স্থান দুটির মধ্যবর্তী মাপকে কৌণিক দূরত্ব বলে।

রৈখিক দূরত্ব কাকে বলে

বিজ্ঞানীরা কৌণিক দূরত্ব কে বিশেষায়িত করার প্রয়োজন হলে সে বিশেষায়িত দূরত্বের মানকে রৈখিক দূরত্ব বলেছে।

আরো পড়তে: দ্রুতি কাকে বলে

অতিক্রান্ত দূরত্ব কাকে বলে

যে কোন গতিশীল বস্তু সরলরৈখিক কিংবা বক্র পথে যে পরিমাপ দূরত্ব অতিক্রম করে সেই দূরত্বের পরিমাপকে অতিক্রান্ত দূরত্ব বলে।

অতিক্রান্ত দূরত্ব নির্ণয়ের সূত্র

t সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দূরত্ব নির্ণয়ের জন্য সূত্রঃ

s=(u+v)t/2

s=ut + at²/2

s=vt

t তম সেকেন্ডে অতিক্রান্ত দূরত্বঃ sth=u±1/2{a(2t-1)}

আদিবেগ নির্ণয়ের সুত্রঃ u = v – at

পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কত

পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব প্রায় ১৪৯.৬ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ১৫ কোটি কিলোমিটার।তবে এই দূরত্ব সবসময় একই থাকে না।থাকত যদি পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘুরত বৃত্তাকার পথে।কিন্তু সব গ্রহই সূর্যকে প্রদক্ষিন করে উপবৃত্তাকার পথে।সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর কক্ষপথের সবচেয়ে কাছের অবস্থানকে বলে অনুসূর।আর সবচেয়ে দূরের অবস্থানকে বলে অপসূর।

পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে কাছাকাছি থাকে জানুয়ারী মাসে।আর সবচেয়ে দূরে থাকে জুলাই মাসে।অনেকেই মনে করে,শীতকালে সূর্য পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকে।কিন্তু তা হয়।জানুয়ারীর তীব্র শীতের সময়ই সূর্য পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকে।এই ধারণা ভূল হওয়ার আরো সহজ প্রমান হলো,ঐ জানুয়ারী মাসেই দক্ষিণ – গোলার্ধে থাকে তীব্র গরম।আসল কথা হল, শীত বা গরম পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্বের উপর নির্ভর করে না।নির্ভর করে পৃথিবীর কক্ষতল হেলে থাকার কারণে।

অনুসূর অবস্থানে পৃথিবী সূর্য থেকে ১৪.৭ কোটি কিলোমিটার দূরে থাকে।আর অপসূর অবস্থানে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫.২ কোটি কিলোমিটারে।

পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কত কিলোমিটার

পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চাঁদের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব প্রায় ৩৮৪,৩৯৯ কিলোমিটার(প্রায় ২৩৮,৮৫৫ মাইল)।

চাঁদের ব্যাস প্রায় ৩৪৭৪.206 কিলোমিটার(২১৫৯ মাইল), যা পৃথিবীর ব্যাসের এক চতুর্থাংশের চেয়ে সামান্য বেশি। চাঁদের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ৫০ ভাগের এক ভাগ। এর পৃষ্ঠে অভিকর্ষ বল পৃথিবীপৃষ্ঠে অভিকর্ষ বলেের এক-ষষ্ঠাংশ। অর্থাৎ পৃথিবী পৃষ্ঠে কারও ওজন যদি ১২০ পাউন্ড হয়, তাহলে চন্দ্রপৃষ্ঠে তার ওজন হবে ২০ পাউন্ড।

প্রতি ২৭.৩২১ দিনে চাঁদ পৃথিবীর চারিদিকে পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন করে। প্রতি ২৯.৫ দিন পর পর চন্দ্রকলা ফিরে আসে অর্থাৎ একই কার্য ক্রিয়া আবার ঘটে। পৃথিবী, চাঁদ, সূর্যের পর্যায়ক্রমিক আবর্তনের কারণেই চন্দ্রকলার এই পর্যানুক্রমিক আবর্তন ঘটে। বেরিকেন্দ্র নামে পরিচিত একটি সাধারণ অক্ষের সাপেক্ষে পৃথিবী এবং চন্দ্রের ঘূর্ণনের ফলে যে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ এবং কেন্দ্রবিমুখী বল সৃষ্টি হয় তা পৃথিবীতে জোয়ার ভাটা সৃষ্টির জন্য দায়ী।

দূরত্ব ও সরণ কাকে বলে

দূরত্ব: সময়ের সঙ্গে একটি বস্তুর বা কণার অবস্থানের পরিবর্তন হলে, তার প্রাথমিক  অন্তিম অবস্থানের মাঝে অতিক্রান্ত পথের দৈর্ঘ্যকে ওই বস্তু বা কণা দ্বারা অতিক্রান্ত দূরত্ব বলে

সরণ: সময়ের সঙ্গে একটি বস্তুর বা কণার অবস্থানের পরিবর্তন হলে তার প্রাথমিক  অন্তিম অবস্থানের মাঝে সরলরৈখিক দুরত্বকে সরণ বলে

কখন সরণের মান অতিক্রান্ত দূরত্বের সমান হয়

কোনো বস্তুকণা যখন সরলরৈখিক পথে কোনো একটি নির্দিষ্ট দিকে গতিশীল থাকে তখন বস্তুটির সরণের মান বস্তুকণা কর্তৃক অতিক্রান্ত দূরত্বের সমান হয়।

দূরত্ব ও সরণের মধ্যে পার্থক্য

দূরত্বসরণ
কোন গতিশীল বস্তুর পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে যে অবস্থানের পরিবর্তন হয় তাকে দূরত্ব বলে।নির্দিষ্ট দিকে পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনকে সরণ বলে।
দূরত্ব হলো স্কেলার রাশি।সরণ হলো ভেক্টর রাশি।
দূরত্ব হল বস্তুকণা যে পথে যায় সেই পথের দৈর্ঘ্য ।সচল বস্তুকণার প্রাথমিক ও শেষ অবস্থানের মধ্যে যে রৈখিক দূরত্ব তাই হল সরণের মান ।
দূরত্বের পরিবর্তন হয় শুধু মানের পরিবর্তন দ্বারা।সরণের পরিবর্তন হয় শুধু মান বা শুধু দিক বা উভয়ের পরিবর্তন দ্বারা।
অতিক্রান্ত দূরত্ব শূন্য হলে সরণ সর্বদা শূন্য হবে।সরণ শুন্য হলে অতিক্রান্ত দূরত্ব শূন্য নাও হতে পারে।
দূরত্ব ও সরণের মধ্যে পার্থক্য

দূরত্ব ও সরণ এর মধ্যে সম্পর্ক

দুরত্ব (Distance)

যেকোনো দিকে বস্তুর পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে অবস্থানের পরিবর্তনকে দুরত্ব বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যেকোন দিকে বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তনই হচ্ছে দূরত্ব। দূরত্ব একটি সংখ্যাসূচক রাশি, যা কোনো বস্তু কতদূরে রয়েছে তা নির্দেশ করে। কিন্তু বস্তু কোন দিকে আছে সেটা কখনোই নির্দেশ করে না। তাই শুধুমাত্র মান থাকার জন্য এটি একটি স্কেলার রাশি।

মাত্রা: দুরত্বের মাত্রা হল দৈর্ঘ্যের মাত্রা। অতএব, S = [L]

একক: দুরত্বের একক হল দৈর্ঘ্যের একক অর্থাৎ মিটার (m)

সরণ (Displacement)

নির্দিষ্ট দিকে বস্তুর পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে অবস্থানের পরিবর্তনকে সরণ বলে। কোনো বস্তুর আদি অবস্থান ও শেষ অবস্থানের মধ্যবর্তী ন্যূনতম দূরত্ব অর্থাৎ সরল রৈখিক দূরত্বই হচ্ছে সরণের মান এবং সরণের দিক হচ্ছে বস্তুর আদি অবস্থান থেকে শেষ অবস্থানের দিকে।

মাত্রা: সরণের মাত্রা হল দৈর্ঘ্যের মাত্রা। অতএব, S = [L]

একক: সরণের একক হল দৈর্ঘ্যের একক অর্থাৎ মিটার (m)। কোনো বস্তুর সরণ 50m উত্তর দিকে বলতে বুঝায় বস্তুটি তার আদি অবস্থান থেকে 50 m উত্তর দিকে সরে গেছে।

সরণ বস্তুর গতিপথের ওপর নির্ভর করে না। নিচের ছবিতে দেখো, কোনো একটি বস্তু A থেকে B অবস্থানে ভিন্ন একটা পথে যাচ্ছে। বস্তুটি A থেকে B-তে যে পথেই যাক না কেনো সেটা হবে তাদের মধ্যকার দুরত্ব। কিন্তু বস্তুটির সরণ হবে ঠিক A থেকে B এর দিকে। A ও B-এর মধ্যবর্তী ন্যূনতম দূরত্ব বা AB সরলরৈখিক দূরত্বই হচ্ছে সরণের মান S = AB এবং দিক হল A থেকে B-এর দিকে। যেহেতু সরণের মান ও দিক উভয়ই আছে, কাজেই এটি একটি ভেক্টর রাশি।

স্মরণ এবং দূরত্বের সম্পর্কে চিত্র:–

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | দূরত্ব

Q1. দূরত্ব কি

Ans – সময়ের সাথে কোন বস্তুর আবস্থানের পরিবর্তনের হারকে দূরত্ব বলে

Q2. দূরত্ব মাপার একক কি

Ans – দূরত্বের যেহেতু নির্দিষ্ট মান রয়েছে সেহেতু দূরত্বের একক আছে। দূরত্বের এসআই একক মাপা হয়   মিটার(m) দ্বারা এবং দূরত্বের সিজিএস একক হল সেন্টিমিটার(cm)।

Q3. পৃথিবী থেকে তারার দূরত্ব কত

Ans – পৃথিবী থেকে একটি তারার দূরত্ব প্রথম সঠিকভাবে পরিমাপ করেন ফ্রিডরিক বেসেল, ১৮৩৮ সালে। লম্বন কৌশল ব্যবহার করে তিনি এই দূরত্ব পরিমাপ করেছিলেন। তিনি পৃথিবী থেকে ৬১ সিগনি নামক তারাটির দূরত্ব ১১.৪ আলোকবর্ষ নির্ণয় করেছিলেন।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।