অ্যাসিড বৃষ্টি কাকে বলে

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

অ্যাসিড বৃষ্টি কাকে বলে

বৃষ্টির  জলের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাই অক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইড অথবা নাইট্রোজেনের অক্সাইড সমূহ দ্রবীভূত  থাকলে বৃষ্টির জল অম্লধর্মী হয়ে ওঠে। একে অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্ল বৃষ্টি বলে। সাধারণত বৃষ্টির জলে PH-এর মাত্রা 5.6-এর কম হলেই তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্ল বৃষ্টি হিসাবে গণ্য করা হয়।

সাধারণত বৃষ্টির জলে pH এর মান ৫.৬ হলে তাকে অ্যাসিড বৃষ্টি বলে। ১৮৫৮ সালে ব্রিটিশ রসায়নবিদ অ্যানগুস স্মিথ সর্বপ্রথম অ্যাসিড বৃষ্টি কথাটি ব্যবহার করেন। শিল্পাঞ্চলে অ্যাসিড বৃষ্টি বেশি হয় কারণ শিল্পাঞ্চলের বাতাসে ভাসমান সালফার ও নাইট্রোজেন অক্সাইড বৃষ্টির জলের সাথে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিডে পরিনত হয় এবং তা বৃষ্টিরূপে পতিত হয়, একে অম্ল বৃষ্টি বা অ্যাসিড বৃষ্টি বলে।

বাতাসের নাইট্রোজেন মনোক্সাইড (NO) ও অক্সিজেন(O2) মিশে তৈরী হয় নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড (2NO+O2=2NO2) পরে তা বৃষ্টির সময় পানিতে(H2O) মিশে তৈরী হয় নাইট্রিক এসিড এবং নাইট্রাস এসিড:

2NO+H20=HNO3+HNO2

এই এসিড বৃষ্টির পানিতে মিশে ভূপাতিত হলে একেই বলা হয় এসিড রেইন।

অ্যাসিড বৃষ্টির কারণ

  • বৃষ্টির জলে অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে অ্যাসিড বৃষ্টি সৃষ্টি হয়। সাধারণত বায়ুমন্ডলে অক্সিজেন ও ভাসমান ধূলিকণাগুলি জলের সঙ্গে আলোক রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সালফার ডাই অক্সাইড সৃষ্টি করে। এছাড়া জীবাশ্ম জ্বালানির দহন, সালফারের আকরিক থেকে সালফার নিষ্কাশন, সিসা তামা ও দস্তা নিষ্কাশনের চুল্লি থেকে সালফার ডাই অক্সাইড বাতাসে মিশ্রিত হয়।
  • আবার যানবাহনের একঝস্ট, পাওয়ার হাউস ও ধাতু নিষ্কাশন চুল্লি থেকে নাইট্রোজেন অক্সাইডও বাতাসে মিশ্রিত হয়। এছাড়া বায়ুতে স্বাভাবিকভাবে কার্বন-ডাই-অক্সাইড বিদ্যমান থাকে।এই প্রাথমিক বায়ু দূষকগুলি বাতাসে ভাসমান জলকণার সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে কার্বনিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড এবং নাইট্রিক অ্যাসিড উৎপন্ন করে। এই অ্যাসিডগুলি বৃষ্টির জল আম্লিক করে তোলে এবং অ্যাসিড বৃষ্টি বা অম্ল বৃষ্টিরূপে ভূ-পৃষ্ঠে পতিত হয়।
  • শিল্পাঞ্চলে অ্যাসিড বৃষ্টি বেশি হয় কারণ শিল্পাঞ্চলের বাতাসে ভাসমান সালফার ও নাইট্রোজেন অক্সাইড বৃষ্টির জলের সাথে বিক্রিয়া করে সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিডে পরিনত হয় এবং তা বৃষ্টিরূপে পতিত হয়, একে অম্ল বৃষ্টি বা অ্যাসিড বৃষ্টি বলে। So2 + H2o = H2SO4 + O2 | 3No2 + H2O = 2HNO3 + NO

অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাব

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে নিম্নলিখিত ক্ষতিকারক প্রভাব গুলি লক্ষ্য করা যায়। যথা –

মৃত্তিকার উৎপাদন ক্ষমতার হ্রাস –

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে মৃত্তিকার অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে বিভিন্ন ধরণের শাক সবজি, আলু ও মটর শুটি জাতীয় শস্যের উৎপাদন ব্যাহত হয়।

জলদূষণ বৃদ্ধি

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে ভূ-পৃষ্টীয় জলরাশি জল আম্লিক হয়ে ওঠে। ফলে জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

উদ্ভিদদের উপর প্রভাব

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম বাধা পায়, উদ্ভিদের পাতা বিনষ্ট হয় ও পাতার ওপর ঝোপঝোপ দাগ দেখা যায়। অ্যাসিড বৃষ্টি উদ্ভিদদের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে উদ্ভিদদের অঙ্কুরোদগম বাধাপ্রাপ্ত হয়, পাতা বিনষ্ট হয় এবং পাতার ওপর ছোপ পড়ে।

মানুষের ওপর প্রভাব

অম্ল বৃষ্টির ফলে মানুষের ত্বক, কোষ ও স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হয়।

পশুপাখির সংখ্যা হ্রাস

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে কোন অঞ্চলের পশু পাখির সংখ্যা হ্রাস পায়। যেমন – ভারতের ভরতপুরের পাখিরালয়ে হ্রদের জলে সালফার ডাই অক্সাইড ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা হ্রাস পায়।

স্থাপত্য ও স্মৃতি সৌধের ক্ষতি

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে স্থাপত্য শিল্প, স্মৃতি সৌধ, মনুমেন্ট ও অট্টালিকা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। যেমন – ভারতের আগ্রার তাজমহল।

জলজ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে বিভিন্ন ধরনের জলজ প্রাণী ও মাছ, জলজ শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এর ফলে জলজ খাদ্য শৃংখল বিনষ্ট হয় তথা জলজ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়।

জনস্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব

জনস্বাস্থ্যের ওপর অ্যাসিড বৃষ্টি ভয়ঙ্কর ক্ষতিকারক প্রভাব বিস্তার করে।অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে মানুষের ত্বক ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষের পরিপাকতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র ইত্যাদিও অ্যাসিড বৃষ্টির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পশু পাখির সংখ্যা হ্রাস

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে কোন অঞ্চলে পশু পাখির সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পায়। ভারতের ভরতপুর পাখিরালয়ের হ্রদের জলে অ্যাসিড বৃষ্টির ফলে সালফার ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে এখানে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।

অ্যাসিড বৃষ্টির ফলাফল,অ্যাসিড বৃষ্টির ক্ষতিকারক প্রভাব

  • অ্যাসিড বৃষ্টি পরিবেশের ক্ষতি করে। কারণ সালফিউরিক অ্যাসিড় এবং নাইট্রিক অ্যাসিড- এই দুটি রাসায়নিকই বায়ুকে দূষিত করে। সে কারণে বিজ্ঞানীরা এদের “প্রাথমিক বায়ুদূষক” (Primary pollutants) বলেছেন।
  • অ্যাসিড মিশ্রিত বৃষ্টির জল পুকুর, হ্রদ, জলাশয়ের জলকে অল্প করে তােলে। ফলে মাছ, পােকামাকড়, শৈবাল মারা যায়। মাছের ডিম পাড়ার ক্ষমতা কমে যায়।
  • অ্যাসিড জলের প্রভাবে হ্রদ, নদী, পুকুরের শৈবাল, পােকামাকড়, মাছ ইত্যাদি মারা যাওয়ার ফলে ওই জায়গার বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হয়। খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙ্গে পড়ে। জল দূষিত হয়।
  • গাছপালার ওপর অ্যাসিড বৃষ্টি হলে গাছের ক্ষতি হয়। যেমন, গাছের পাতা ঝলসে যায়। পাতা কুঁকড়ে যায়। ফলে সালােকসংশ্লেষ বিঘ্নিত হয়। গাছের উচ্চতা কমে যায়। অঙ্কুরােদগম বাধা পায়। কাষ্ঠ শিল্পের জন্য ভালাে কাঠের জোগান কমে যায়।
  • অ্যাসিড বৃষ্টি মার্টিকে দূষিত করে। মাটির উর্বরতা কমে যায়।
  • অ্যাসিড বৃষ্টির প্রভাবে মার্বেল দিয়ে তৈরি স্ট্যাচু বা অন্যান্য স্মারক, অট্টালিকা, প্রাসাদ এবং ধাতু নির্মিত সেতু, কলকারখানা ইত্যাদিরও বিশেষ ক্ষতি হয়। যেমন, বিজ্ঞানীরা বলছেন যে, মথুরা তৈল শােধনাগার থেকে নির্গত রাসায়নিক পদার্থ অ্যাসিড বৃষ্টির মাধ্যমে আগ্রার তাজমহলের ক্ষতি করছে।
  • অ্যাসিড বৃষ্টির জন্য জীবজন্তু ও মানুষের ত্বক ও কোশের ক্ষতি হয়।

অ্যাসিড বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের উপায়

অ্যাসিড বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের উপায়গুলি হল-

  • জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস করতে হবে।
  • জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারকারী ইঞ্জিনের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
  • পাওয়ার হাউস ও ধাতু নিষ্কাশন চুল্লি থেকে নির্গত গ্যাস ও ধোঁয়া পরিশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে।
  • যতটা সম্ভব সালফার এবং নাইট্রোজেনের স্তর হ্রাস করুন কারখানা, হিটিং, যানবাহন ইত্যাদি থেকে নির্গমন নবায়নযোগ্য শক্তি এবং নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে এটি হ্রাস করা যায়।
  • গণপরিবহন উন্নত করুন বেসরকারী গাড়ির ব্যবহার কমাতে।
  • বিদ্যুতের খরচ হ্রাস করুন বাড়িতে।
  • এত বেশি রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে না ফসলে।
  • গাছ লাগান।
  • জনগণকে উন্নততর, দূষণকারী লাইফস্টাইল অভ্যাসগুলি গ্রহণের জন্য শিক্ষিত করুন যে সংস্থা এবং শিল্প জনসংখ্যা হ্রাস করতে।

অ্যাসিড বৃষ্টি টিকা, অ্যাসিড বৃষ্টি বলতে কী বোঝো, অ্যাসিড বৃষ্টি যার সঙ্গে সম্পর্কিত

বায়ুদূষণের ফলে অ্যাসিড বৃষ্টি হয়। প্রধানত কলকারখানা, যানবাহন, ধাতু নিষ্কাশন চুল্লি থেকে নির্গত গ্যাস ও ধোঁয়ার মাধ্যমে বায়ুমন্ডলে সালফার ও নাইট্রোজেনের অক্সাইডগুলি জমা হয়। এই রাসায়নিক পদার্থগুলি ভাসমান জলকণার সঙ্গে বিক্রিয়া করে বৃষ্টি, শিশির, তুষারের মাধ্যমে পৃথিবীতে নেমে আসে। এইভাবে অ্যাসিড বৃষ্টি হয়। অ্যাসিড সৃষ্টির রাসায়নিক প্রক্রিয়া –

(১) বৃষ্টির জলে সালফিউরিক অ্যাসিডে উপস্থিতি :

2SO₂ + O2 → 2SO₃
SO₃ + H₂O → H₂SO₄

(২) বৃষ্টির জলে নাইট্রিক অ্যাসিডের উপস্থিতি :

2NO₂ + O₃ →N2O5 + O₂
N2O5 + H₂O → 2HNO₃

অ্যাসিড বৃষ্টির ঘটনা পৃথিবীর সেই সমস্ত জায়গায় বেশি ঘটছে, যেখানে কলকারখানা বেশি, যানবাহন বেশি, জ্বালানির ব্যবহার বেশি। সুতরাং পৃথিবীর শিল্পোন্নত দেশগুলিতে অ্যাসিড বৃষ্টির ক্ষতিকর প্রভাব যে সবচেয়ে বেশি পড়বে, তাতে কোনাে সন্দেহ নেই। তাই কানাডা, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সুইডেন, নেদারল্যান্ড, জার্মানি প্রভৃতি উন্নত দেশগুলিতে অ্যাসিড. বৃষ্টির প্রকোপ পথ চেয়ে বেশি। প্রসঙ্গত মুম্বাই-এর চেম্বুর, মহারাষ্ট্রের পুণে, কেরলের ত্রিবাম প্রভৃতি জায়গায় অ্যাসিড বৃষ্টির ঘটনা সবচেয়ে বেশি।

বাতাসে সালফিউরিক অ্যাসিড ও নাইট্রিক অ্যাসিডের জোগান কমাতে পারলে, অ্যাসিড বৃষ্টির আশঙ্কা কমে। তার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। ধাতু নিষ্কাশন চুড়ি থেকে বেরিয়ে । মাস গ্যাস ও ধোয়াকে পরিত করতে হবে। যানবাহনের হীনকে উন্নত করতে হবে।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | অ্যাসিড বৃষ্টি

Q1. অ্যাসিড বৃষ্টি কি

Ans – কল-কারখানায় উৎপন্ন বিভিন্ন গ্যাস যেমনঃ সালফার ট্রাই অক্সাইড বায়ুমন্ডলে চলে যায়। সে গ্যাস বৃষ্টির পানির সাথে যুক্ত হয়ে এসিড গঠন করে, যাকে এসিড বৃষ্টি বলা হয়।

Q2. অ্যাসিড বৃষ্টির জন্য কোন গ্যাস দায়ী

Ans – অ্যাসিড বৃষ্টির জন্য সালফার ডাই অক্সাইড (SO2), নাইট্রোজেন মনোক্সাইড (NO) গ্যাস দায়ী।

Q3. অ্যাসিড বৃষ্টি কেন হয়

Ans – এসিড বৃষ্টি হলো একধরণের বৃষ্টিপাত যেক্ষেত্রে পানি অম্লীয় প্রকৃতির হয়। এক্ষেত্রে পানির pH ৭ এর চেয়ে কম হয়ে থাকে। এটি এমন এক ধরনের বৃষ্টি যাতে এসিড উপস্থিত থাকে।** বাতাসে সালফার ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেনডাই-অক্সাইড, সালফিউরিক এসিড বাষ্প বেশি থাকলে,বৃষ্টির সময় ঐ এসিড বাষ্প পানির সাথে যুক্ত হয়ে এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে। সাধারনত শিল্প-কারখানাসমৃদ্ধ এলাকায় এসিড বৃষ্টি বেশি হয়। কারন, এসব শিল্প-কারখানা হতে নির্গত সালফারের বিভিন্ন অক্সাইড,নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড,সালফিউরিক এসিড বাষ্প বাতাসের সাথে মিশে এসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।