কি ফ্রান্সে কর বাড়াতে লুই XVI কে বাধ্য করেছিল?

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

WBBSE History, Itihas | Farashi Biplob | Question Answer

নিম্নলিথিত প্রশ্ন এবং তার যথাযত সমাধান গুলি অতিসংক্ষিপ্ত (VSA), এবং ছোট (SA), সকল প্রশ্নের ক্ষেত্রে উত্তর সমাধান হিসাবে পাঠ করা যেতে পারে।

প্রশ্নোত্তর এবং সমাধান

কি ফ্রান্সে কর বাড়াতে লুই XVI কে বাধ্য করেছিল?

উত্তর:

  • যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক সংকট : 1774 সালে, যখন ষোড়শ লুই সিংহাসনে আরোহণ করেন, তিনি ধন খুঁজে পান এবং খালি পান। সাত বছরের যুদ্ধ (1756-1763) এবং লুই XVI এর অধীনে আমেরিকায় বিপ্লবী যুদ্ধের কারণে জাতি গভীর গভীরে চলে গিয়েছিল। এই যুদ্ধে, ফ্রান্স 13টি আমেরিকান উপনিবেশকে ব্রিটেনের কাছ থেকে তাদের স্বাধীনতা অর্জনে সহায়তা করেছিল। যুদ্ধটি এমন একটি বিভাগে এক বিলিয়নেরও বেশি লিভার যুক্ত করেছে যা ইতিমধ্যে 2 বিলিয়নেরও বেশি লিভারে উন্নীত হয়েছে।
  • ঋণের ফাঁদ: ঋণদাতারা যারা রাষ্ট্রকে ঋণ দিয়েছে, তারা এখন ঋণের উপর 10 শতাংশ সুদ নিতে শুরু করেছে। তাই ফরাসি সরকার তার বাজেটের ক্রমবর্ধমান শতাংশ শুধুমাত্র সুদ পরিশোধের জন্য ব্যয় করতে বাধ্য ছিল। তার নিয়মিত খরচ মেটাতে যেমন সেনাবাহিনী, আদালত, সরকারী অফিস বা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার খরচ মেটাতে রাষ্ট্র কর বাড়াতে বাধ্য হয়।
  • অযৌক্তিক আদালত: বিভিন্ন রাজার অধীনে ফ্রান্সের ভার্সাইয়ের বিশাল প্রাসাদে একটি অসামান্য আদালত ছিল।

ফরাসি বিপ্লবের তিনটি আদর্শ কি কি

উত্তর : ফরাসি বিপ্লবের তিনটি মূল আদর্শ ছিল। এগুলি হল- সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা অর্থাৎ

  • জাতীয়তাবাদ
  • গণতন্ত্রবাদ এবং
  • ব্যক্তিস্বাধীনতা।

বিপ্লব পূর্ববর্তী ফরাসি সমাজ কাঠামো

1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্সের জনসাধারণ তিনটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল।

যথা- প্রথম সম্প্রদায়, দ্বিতীয় সম্প্রদায় ও দ্বিতীয় সম্প্রদায়।

প্রথম সম্প্রদায়:- যাজকেরা ছিলেন প্রথম সম্প্রদায়ভুক্ত। ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার প্রায় 1 শতাংশ ছিলেন যাজক। এরা ভূমিকর, ধর্মঘর, বিবাহ কর, মৃত্যুকর প্রভৃতি কর আদায় করলেও সরকারকে স্বেচ্ছাকর ছাড়া অন্য কোনো কর দিতেন না। কর না দিলেও এরা রাষ্ট্রের সব রকম সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন।

দ্বিতীয় সম্প্রদায়:- অভিজাতরা ছিলেন দ্বিতীয় সম্প্রদায় ভুক্ত। দেশের মোট জনসংখ্যার 1 থেকে 1.5 শতাংশ ছিল অভিজাত সম্প্রদায়ভুক্ত। ফ্রান্সের মোট জমির 20 শতাংশ ছিল এদের দখলে। এরা প্রজাদের কাছ থেকে বিভিন্ন কর আদায় করলেও সরকারকে কোন কর দিতেন না। এরাও ছিলেন সুবিধাভোগী শ্রেণীর অন্তর্গত।

তৃতীয় সম্প্রদায়:- ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার 97 শতাংশের বেশি ছিল তৃতীয় সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে ছিলেন শিক্ষক, চাকুরীজীবী, ডাক্তার, অধ্যাপক, শ্রমিক-মালিক, শ্রমিক, মজুর প্রমুখ। এরা রাষ্ট্র থেকে কোন সুযোগ সুবিধা পেতেন না, কিন্তু রাষ্ট্রকে বিভিন্ন প্রকার কর দিতে বাধ্য ছিলেন। আর্থিক শাসন থেকে মুক্তির জন্য এরা 1789 খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবে যোগ দিয়েছিল।

ফরাসি সংবিধান সভার কৃতিত্ব ও সীমাবদ্ধতা

উত্তর : ১৭৮৯খ্রিঃ ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সংকট চরমে পৌছালে তা থেকে নিষ্কৃতি লাভের উপায় হিসেবে রাজা ষােড়শ লুই ১৭৫ বছর পর ১৭৮৯খ্রিঃ ৫ই মে স্টেটস্ জেনারেল বা জাতীয় সভার অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু প্রথম থেকেই প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীভুক্ত যাজক ও অভিজাত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের জাতীয়, সভায় ভােটদানের পদ্ধতি নিয়ে তীব্র মতবিরােধ দেখা দেয়। রাজা এই বিরােধে অবিবেচকের মতাে হস্তক্ষেপ করলে অবস্থা আয়ত্বের বাইরে যায়। তৃতীয় সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা নিজেদের দাবীর ভিত্তিতে পার্শ্ববর্তী টেনিস কোর্টে ২০শে জুন সমবেত হয়ে শপথ গ্রহণ করে যে, যতদিন না ফ্রান্সের জন্য সংবিধান রচিত হচ্ছে ততদিন তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে। শেষ পর্যন্ত রাজা তৃতীয় সম্প্রদায়ের দাবীর নিকট নতি স্বীকার করে এবং সমস্ত সদস্যদের মাথাপিছু ভােটের ভিত্তিতে স্টেট জেনারেলে বসার রীতি প্রবর্তিত হয়। ৭ই জুলাই ফ্রান্সের সংবিধান রচনার জন্য কমিটি গঠিত হয় এবং ৯ই জুলাই জাতীয় সভা সংবিধান সভার রূপলাভ করে।

ফ্রান্সের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা ছিল এর মুখ্য কাজ। এই সভার সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিনিধি ছিল বুর্জোয়া, শ্রমিক-কৃষকশ্রেণীর প্রতিনিধির সংখ্যা ছিল নগণ্য। সেইজন্য নবরচিত সংবিধানে (যা ১৭৯৯ খ্রিঃ সংবিধান নামে অভিহিত) বুর্জোয়া স্বার্থের সুস্পষ্ট প্রভাব ছিল। এই সভা যে সমস্ত কার্য সম্পাদন করে তা নিম্নরূপঃ

(i) সামন্ততন্ত্রের অবসান :

সংবিধান সভার প্রথম ও প্রধান অবদান সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার বিলােপসাধন। ১৭৮৯ খ্রীঃ ৪ঠা আগস্টের অধিবেশনে সামন্ততন্ত্রকে বিলােপ করা হয়। এর ফলে ভূমিদাস প্রথা, বেগার বা কর্ভি প্রথা, সামন্তকর, ম্যানরপ্রথা, বর্গা প্রথা, টাইদ বা ধর্মকর, অভিজাতদের বিশেষ অধিকার, বৈষম্যমূলক কর, অন্তঃশুল্ক প্রথা প্রভৃতি লােপ পায়। রাজা পার্লামেন্টের মাধ্যমে পনেরাে বছরের ধারাবাহিক চেষ্টায় যা করতে পারেননি সংবিধান সভার একটি অধিবেশনেই তা সম্পন্ন হয়ে যায়।

(ii) নাগরিক অধিকার ঘােষণা :

সংবিধান সভা এরপর ২৬শে আগস্ট ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকারগুলি’ ঘােষণা করে। আমেরিকার স্বাধীনতার ঘােষণাপত্র এবং লক ও রুশাের দার্শনিক তত্ত্বের উপর নির্ভর করে এই ঘােষণাপত্র রচিত হয়। এ ছাড়া এতে প্রাকৃতিক আইন বা Natural Law -র প্রভাবও দেখা যায়। এতে বলা হয় – (ক) মানুষ স্বাধীনতা ও সমান অধিকার নিয়ে জন্মেছে এবং সে তা ভােগ করার অধিকারী। (খ) আইনের চোখে সমস্ত নাগরিক সমান। (গ) সার্বভৌম ক্ষমতা একমাত্র জাতির মধ্যে নিহিত আছে। (ঘ) ব্যক্তি স্বাধীনতা, জীবনের নিরাপত্তা, সম্পত্তিভভাগের অধিকার, বাক্ ও ধর্মাচরণের স্বাধীনতা সকলেরই আছে। (ঙ) সরকারি ক্ষমতা বিভাজন ও ব্যক্তি স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার বলে ঘােষিত হয়।

(iii) আইনসভার সর্বাত্মক ক্ষমতা :

৭৪৫ জন সদস্যের এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার উপর আইন সংক্রান্ত সমস্ত ক্ষমতা ন্যস্ত হয়েছিল। তাছাড়া পররাষ্ট্র নীতির উপরও এটি পরােক্ষ নিয়ন্ত্রণ লাভ করেছিল। রাজা একে কোনােক্রমেই ভেঙে দিতে পারতেন না।

(iv) বিচার ব্যবস্থা :

রাজ্যের নবপ্রবর্তিত শাসন অঞ্চলগুলির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিচার ব্যবস্থা গড়ে তােলা হয়। কমিউনের ‘জাস্টিস্ অব পীস’ থেকে প্যারিসের সর্বোচ্চ আপীল আদালতের মধ্যবর্তী ক্রমােচ্চস্তরে বহু আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়, বিচারকপদ নির্বাচনমূলক হয় এবং ফৌজদারী মামলায় জুরী প্রথা প্রবর্তিত হয়।

(v) রাজার স্থান ও মর্যাদা :

রাজার স্থান ও মর্যাদা নিয়ে বহু বিতর্কের পর ফ্রান্সের রাজা’ এই উপাধির পরিবর্তে তার উপাধি হয় “ঈশ্বরের করুণায় ও জাতির ইচ্ছানুসারে ফরাসীদের রাজা।” রাজা শাসন বিভাগের প্রধান। তিনি রাষ্ট্রের মন্ত্রী ও সৈনবাহিনীর মুখ্য কর্মচারীদের নিযুক্ত করবেন। কিন্তু তাঁর নিরঙ্কুশ নাকচ করার ক্ষমতা লুপ্ত হয়, বিনিময়ে দেওয়া হয় স্থগিতকারী নাকচ করার ক্ষমতা।

(vi) চার্চ সংক্রান্ত নীতি:

ফ্রান্সের আর্থিক সংকট মােচনের উদ্দেশ্যে সংবিধান রচয়িতারা চার্চের ভূ-সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। চার্চের শাসনভার রাষ্ট্রায়ত্ত হয় এবং যাজকরা সরকারী বেতনভােগী কর্মচারীতে পরিণত হয়। এরপর চার্চের বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির ভিত্তিতে ‘অ্যাসাইনেট’ বা কাগজীমুদ্রা প্রচলিত হয়। তাছাড়া সংবিধান রচয়িতারা ‘Civil Constitution of the clergy’ নামে আইন রচনা করে চার্চের শাসন ব্যবস্থার পুনর্গঠন করেন। ভােটাররা বিশপদের নির্বাচন করার দায়িত্ব পান।

উপসংহার :

সংবিধান সভার মাধ্যমে ফ্রান্সের পুরাতন ব্যবস্থার সরকারিভাবে বিলােপ ঘটে। সামন্ততন্ত্র, ভূমিদাস প্রথা, বৈষম্যমূলক সমাজ ও অর্থনীতির ব্যবস্থা রদ করে সংবিধান সভা ফরাসী জনগণের চোখে অসীম গুরুত্ব লাভ করে। কিন্তু সংবিধান সভার কার্যাদি একেবারেই ত্রুটিমুক্ত ছিল না।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

আরো বিশদে পড়ার জন্য

অল ইন ওয়ান ইতিহাস রেফারেন্স – ক্লাস – IX



অল ইন ওয়ান ইতিহাস রেফারেন্স

ক্লাস – 9 এর জন্য.





FAQ | কি ফ্রান্সে কর বাড়াতে লুই XVI কে বাধ্য করেছিল

ফরাসি বিপ্লবের তিনটি আদর্শ কি কি

উত্তর : ফরাসি বিপ্লবের তিনটি মূল আদর্শ ছিল। এগুলি হল- সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা অর্থাৎ
জাতীয়তাবাদ
গণতন্ত্রবাদ এবং
ব্যক্তিস্বাধীনতা।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।