মেঘ চোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

মেঘ চোর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লেখক পরিচিতি

লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ১৯৩৪ সালে বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন। তাঁর লেখা প্রথম উপন্যাস হল ‘আত্মপ্রকাশ’ আর প্রথম কাব্যগ্রন্থ হল ‘একা এবং কয়েকজন’। কবি হিসেবেও তাঁর খ্যাতি অসামান্য। বড়োদের পাশাপাশি ছোটোদের মহলেও তিনি সমান জনপ্রিয়। তাঁর প্রথম কিশোর-উপন্যাস ‘ভয়ংকর সুন্দর’।

‘নীললোহিত’, ‘সনাতন পাঠক’, ‘নীল উপাধ্যায়’ ইত্যাদি ছদ্মনামে অনেক লেখা তিনি লিখেছেন। ‘আনন্দ পুরস্কার’, ‘বঙ্কিম পুরস্কার’, ‘সাহিত্য অকাদেমি’ সহ নানা পুরস্কারে তিনি সম্মানিত হয়েছেন। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘প্রথম আলো’, ‘সেই সময়’, ‘পূর্ব-পশ্চিম’, ‘মনের মানুষ’, ‘অর্জুন’, ‘অরণ্যের দিন-রাত্রি’ ছাড়াও দু’শোর বেশি গ্রন্থ তিনি লিখেছেন। তাঁর রচনাগুলি চলচ্চিত্র, বেতার ও টেলিভিশনের পর্দায় রূপায়িত হয়েছে এবং পৃথিবীর নানা ভাষায় অনুদিত হয়েছে। ২০১২ সালে এই প্রখ্যাত লেখকের জীবনাবসান হয়।

মেঘ চোর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচনা পরিচয়

মেঘ এবং মেঘ থেকে সৃষ্টি হওয়া বৃষ্টি। পৃথিবীতে প্রাণের বেঁচে থাকার অন্যতম শর্ত। আবার এই বৃষ্টি বেশি হলে তা প্রাণহানিরও কারণ হয়ে ওঠে । গল্পটিতে কৃত্রিমভাবে মেঘ তৈরি করে বৃষ্টি ঝরানো। এবং তা নিয়ে নানা দেশের মধ্যে টানাপোড়েন সংক্রান্ত বিষয়টি উঠে এসেছে। তাই গল্পটির নাম ‘মেঘচোর’ প্রাসঙ্গিক।

মেঘ চোর গল্পের বিষয়বস্তু

পুরন্দর চৌধুরি বিখ্যাত বৃষ্টিবিজ্ঞানী। তিনি সাহারায় এক মাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে সোরগোল ফেলেছেন। কিন্তু তাঁর এই কাজের সমালোচনাও হয়েছে। তাঁর এই দক্ষতার ক্ষমতা ধরে রাখতে না-পেরে তিনি যেন ক্রমশ উন্মাদ হয়ে উঠছেন। তিনি অন্যদেশ থেকে মেঘ তাড়িয়ে এনে সাহারায় বৃষ্টি ঝরিয়েছেন। একে মেঘ চুরি বলা হয়। তাঁর ধারণা তিনি সর্বশক্তিমান। যা ইচ্ছে তাই করতে পারেন।

তিনি শ্রেভার লেকের জল শুকিয়ে দিয়ে মেঘ তৈরির পরিকল্পনা করেন। সেই কাজ থেকে তাঁকে নিবৃত্ত করেন আর-এক বিজ্ঞানী কারপভের মেয়ে অসীমা। সে পৃথিবীর জল পৃথিবীতে ধরে রাখাটাকেই শ্রেয় বলে মনে করে। সে কম্পিউটার প্রোগ্রামের সাহায্যে পুরন্দর চৌধুরির রকেটকে বায়ুমণ্ডলের বাইরে এনে তাঁর তৈরি নতুন অ্যালয়কে নষ্ট করে দেয়। পৃথিবীর জল বেঁচে যায়।

মেঘ চোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর Class 7

ঠিক শব্দটি বেছে নিয়ে বাক্যটি আবার লেখো:-

মেঘ চোর গল্পের MCQ প্রশ্ন উত্তর

প্র: অনেকগুলি দেশ দাবি তুলেছে যে, (বৃষ্টিচুরি/মেঘচুরি/রোদচুরি) আইন করে বদলানো দরকার।

উঃ মেঘচুরি।

প্র: দেখতে পাচ্ছি কটা (রুপোলি/তামাটে/সোনালি) রঙের পাহাড়।

উঃ সোনালি। 

প্র: শেষ (লৌহযুগ/তাম্রযুগ/হিমযুগ) শেষ হয়েছিল তেরো হাজার বছর আগে।

উঃ হিমযুগ

প্র: মাত্র (পনেরো হাজার/দশ হাজার/কুড়ি হাজার) কিউবিক মাইল বৃষ্টি নিয়ে পৃথিবীর অত মানুষ জীবজন্তু, গাছপালা সব বেঁচে আছে।

উঃপনেরো হাজার।

প্র: ইতিহাসেও তো (বিজ্ঞান/অঙ্ক/ভুগোল) লাগে।

উঃ অঙ্ক।

মেঘ চোর গল্পের অনুশীলনী অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

প্র: পুরন্দর চৌধুরিকে দেখতে কেমন

উঃ পুরন্দর চৌধুরি খুব ফরসা, গোল চাঁদের মতো মুখ এবং তার চোখের মণিদুটো নীল। তার বয়েস পঞ্চাশের কাছাকাছি।

প্র: লেক শ্রেভার কোন্ পাহাড়ের কাছে অবস্থিত

উঃ লেক শ্রেভার আলাস্কার মাউন্ট চেম্বারলিন পাহাড়ের কাছে অবস্থিত। 

প্র: পুরন্দর চৌধুরি হিসেব করে কী দেখেছিলেন

উঃ পুরন্দর চৌধুরি হিসেব করে দেখেছিলেন যে শ্রেভার লেকের জল শুকোতে দশ হাজার বছর সময় লাগবে।

প্র: পুরন্দর মানে কী? পুরন্দর কী হতে চেয়েছিলেন

উঃ পুরন্দর হলো দেবতাদের রাজা ইন্দ্রের এক নাম। বিজ্ঞানী পুরন্দর আকাশের দেবতা ইন্দ্র হতে চেয়েছিলেন। 

প্র: সাহারায় অন্য দেশের মেঘ আনার দরকার নেই কেন

উঃ সমুদ্র থেকে খাল কেটে সাহারায় জল আনা হচ্ছে, তাই আর অন্য দেশের মেঘ আনার দরকার নেই।

প্র: পুরন্দরের তৈরি অ্যালয়টি কোথায় কাজ করে না

উঃ পুরন্দরের তৈরি অ্যালয়টি বায়ুমণ্ডলের বাইরে কোনো কাজ করে না।

প্র: ‘মেঘচোর’-এর মতো তোমার পড়া দু-একটি কল্পবিজ্ঞানের গল্পের নাম লেখো।

উঃ পাগলা গণেশ, নীল মানুষ। 

প্র: ‘মেঘচোর’ এই গল্পে ক-জন চরিত্র? তাদের নাম কী

উঃ এই গল্পে চারজন চরিত্র। তাদের নাম হল পুরন্দর, অসীমা, দিক্‌ বিজয় এবং কারপভ।

প্র: ‘মেঘচোর’ কাকে বলা হয়েছে

উঃ ‘মেঘচোর’ বলা হয়েছে গল্পটির প্রধান চরিত্র পুরন্দর চৌধুরিকে।

প্র: পুরন্দরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও

উঃ। পুরন্দর চৌধুরি নামকরা বৃষ্টিবিজ্ঞানী। অসামান্য প্রতিভাধর এবং অত্যন্ত অহংকারী।

অসীমা সম্বন্ধে দু-একটি বাক্য লেখো

উঃ। অসীমা অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মেয়ে এবং দক্ষ অভিনেত্রী। ইতিহাস, ভূগোল এবং কম্পিউটারেও তার জ্ঞান আছে।

পুরন্দর কী সাংঘাতিক কাণ্ড করেছেন

উঃ। পুরন্দর অন্য দেশের মেঘ তাড়িয়ে এনে সাহারা মরুভূমিতে একমাসে একশো ইঞ্চি বৃষ্টি ধঝরিয়েছেন। 

রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন দেশ কী দাবি তুলছে?

উঃ রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন দেশ মেঘ চুরি আইন বন্ধের দাবি তুলছে।

প্র: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কোথায়

উঃ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত।

প্র: পুরন্দরের মুখটা হাঁ হয়ে গেল কেন

উঃ কারপড়ের মেয়ে অসীমা কম্পিউটারের প্রোগ্রাম করে রেখে রকেটটিকে বায়ুমণ্ডলের বাইরে নিয়ে এসেছিল। রকেটটি বায়ুমণ্ডল ছাড়িয়ে পৃথিবীর অনেক ওপরে চলে এসেছে শুনে পুরন্দরের মুখটা হাঁ হয়ে গেল।

প্র: জ্ঞান ফিরে পুরন্দর অবাক হয়েছিলেন কেন

উঃ জ্ঞান ফিরে পুরন্দর বিদেশে একটি বাঙালি মেয়েকে তার সেবা করতে দেখে অবাক হয়েছিলেন।

প্র: দিগবিজয় কে ছিলেন

উঃ। দিগবিজয় ছিলেন পুরন্দরের ভাই। যিনি পঁচিশ বছর আগে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন। 

প্র: গল্পের ঘটনা যখন ঘটছে তখন চরিত্রগুলো কোথায় ছিল

উঃ। গল্পের ঘটনা যখন ঘটছে তখন চরিত্রগুলো রকেটে আলাস্কার আকাশে ছিল। 

প্র: ইগলুর পরিবর্তে সেখানে তখন কী দেখা যাচ্ছিল

উঃ। ইগলুর পরিবর্তে সেখানে তখন বড়ো বড়ো এয়ারকন্ডিশনড বাড়ি দেখা যাচ্ছিল।

প্র: কেন বলা হয়েছে অসীমা ‘ভূগোলও বেশ ভালো জানে’

উঃ অসীমা মেরু অঞ্চলের পাহাড় এবং হ্রদকে নিখুঁতভাবে চিনতে পেরেছিল। তাই বলা হয়েছে অসীমা ভালো ভূগোল জানে। 

প্র: কে কোথা থেকে কোথায় মেঘ এনেছিল

উঃ পুরন্দর চৌধুরী সাইবেরিয়া থেকে সাহারায় মেঘ এনেছিল।

প্র: তুষার যুগ কাকে বলে

উঃ বহু বছর আগে পৃথিবী তুষারে ঢেকে গিয়েছিল একে তুষার যুগ বলে। শেষ হিমযুগ সমাপ্ত হয়েছিল তেরো হাজার বছর আগে।

প্র: পৃথিবী থেকে কত জল সারাবছর বাষ্প হয়ে উড়ে যায়

উঃ পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল জল পৃথিবী থেকে সারাবছর বাষ্প হয়ে উড়ে যায়।

প্র: মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার কেন

উঃ মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে তাই মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার।

প্র: আটলান্টিস কী

উঃ গ্রিক পুরাণে বর্ণিত শহর। সেখানে ছিল এক লুপ্ত সভ্যতা। বলা হয় সেটি গ্রিক লেখকদের জল্পনা কল্পনা।

প্র: পুরন্দরের মতে আটলান্টিসের অবস্থান কোথায়?

উঃ । পুরন্দরের মতে লেক শ্রেভারের নীচে আটলান্টিসের অবস্থান।

প্র: সাইবেরিয়া কোথায়?

উঃ। সাইবেরিয়া রাশিয়া মহাদেশে অবস্থিত।

প্র: অসীমা কেন পুরন্দরকে ফেরিওয়ালা বলে ব্যঙ্গ করেছে?

উঃ যেসব দেশে বৃষ্টি কম তাদের কয়েক টুকরো মেঘ বিক্রির কথা পুরন্দর বলায় অসীমা তাকে ফেরিওয়ালা বলে ব্যঙ্গ করেছে।

অ্যালয় কী ?

উঃ। অ্যালয় হল পুরন্দরের তৈরি ধাতুসংকর। মার্কারির সঙ্গে আরও এগারোটি ধাতু মিশিয়ে পুরন্দর এই নতুন অ্যালয়টি তৈরি করেছিলেন।

প্র: পুরন্দরের তৈরি গোলকটিতে আছে এমন কোন ধাতুর নাম গল্পে পেলে

উঃ মার্কারি বা পারদ।

প্র: পুরন্দরের তৈরি গোলকটি এয়ারটাইট রাখা হয় কেন

উঃ বাতাসের জলকণার সংস্পর্শে এলে গোলকটি গরম হয়ে যায়, তাই সেটিকে এয়ারটাইট রাখা হয়।

প্র: ‘প্রকৃতিকে ধ্বংস করা একটি অপরাধ’—কে, কাকে, কখন বলেছে

উঃ অসীমা কথাটি পুরন্দরকে বলেছে। যখন পুরন্দর চৌধুরি আলাস্কার শ্রেভার লেকের জলকে মেঘে পরিণত করতে চাইছিল তখন অসীমা এই কথা বলেছিল।

প্র: অসীমার প্রকৃত পরিচয় কী

উঃ অসীমা বিজ্ঞানী কারুপভের মেয়ে, তার মা ছিলেন বাঙালি মেয়ে। সে একজন ইতিহাসের ছাত্রী। আমেরিকার হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে। কম্পিউটার সম্বন্ধেও তার বিশেষ আগ্রহ ছিল।

প্র: ‘তাহলে আমরা গুঁড়ো হয়ে যাব’ -কে, কাকে, কেন বলেছে?

উঃ অসীমা পুরন্দরকে বলেছে। কারণ তারা তখন বায়ুমণ্ডলের বাইরে মহাশূন্যে ছিল এবং পুরন্দর রকেটের জানালা খুললে তারা গুঁড়ো হয়ে যেত।

প্র: অসীমার বিশেষ আগ্রহ কোন্ বিষয়ে

উঃ অসীমার বিশেষ আগ্রহ কম্পিউটার বিষয়ে।

প্র: ‘পৃথিবীর জল যেমন আছে তেমনই থাকুক’–কে, কখন এই কথা বলেছে

উঃ অসীমা পুরুন্দরের হাত থেকে গোলকটিকে মহাশূন্যে ফেলে দিয়ে বলেছিল ওটা মহাশূন্যেই থাক।

মেঘ চোর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর

প্র: মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার’—কেন মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার

উঃ সারা বছর পৃথিবী থেকে পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল জল বাষ্প হয়ে উড়ে যায়। এর মধ্যে আশি হাজার কিউবিক মাইল সমুদ্র থেকে যায় আবার ততটাই বৃষ্টি হয়ে সমুদ্রে ফিরে আসে। আর মাত্র পনেরো হাজার কিউবিক মাইল বৃষ্টি নিয়ে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ, জীবজন্তু ও গাছপালা বেঁচে থাকে। কিন্তু মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকায় জলের অভাব ঘটতে পারে, তাই মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার।

প্র: আর একটা ছোট্ট ঘটনা বলি’–এটি কে কেন বলেছিলেন

উঃ বিজ্ঞানী পুরন্দর অসীমাকে পৃথিবীর উত্তাপ বাড়লে বা কমলে কী হতে পারে তা বোঝাতে ঘটনাটি বলেছিলেন। পৃথিবীর উত্তাপ মাঝে মাঝে কমে-বাড়ে। দশ-পনেরো হাজার বছর পরে পরে। একবার পৃথিবীর উত্তাপ তিন থেকে চার ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং সেলসিয়াসের হিসেবে দুই পয়েন্ট দুই ডিগ্রি কমে গিয়েছিল। এতেই গোটা উত্তর আমেরিকা বরফে ঢেকে গিয়েছিল এবং কোথাও কোথাও এক হাজার ফিট উঁচু বরফ জমে গিয়েছিল।

প্র: ‘এই নাও ধার শোধ’—কীসের ধার? কীভাবে এই ধার শোধ করা হবে ঠিক হয়েছিল

উঃ বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি সাইবেরিয়া থেকে মেঘ উড়িয়ে এনে সাহারা মরুভূমিতে বৃষ্টি ঝরিয়েছেন। এই কারণে কারপভ নামের একজন বিজ্ঞানী বোস্টন শহরের আবহাওয়া বিষয়ের এক আলোচনা সভায় তাঁকে মেঘ-চোর বলে গালাগালি দেন। এই ঘটনাতে পুরন্দর চৌধুরি খুব অপমানিত বোধ করেন এবং মনে করেন সাইবেরিয়ার কাছে তার ধার রয়েছে। তাই পুরন্দর চৌধুরী ঠিক করেছিলেন যে মানুষের ক্ষতি করে নয় শ্রেভার লেকের জল থেকে মেঘ তৈরি করে সেটি সাইবেরিয়াতে পাঠিয়ে দিয়ে ধার শোধ করা হবে।

সপ্তম শ্রেণীর মেঘ চোর গল্পের প্রশ্ন উত্তর

প্র: এই গল্পে কাকে কেন ‘মেঘচোর’ বলা হয়েছে? তার মেঘ-চুরির কৌশলটি সংক্ষেপে লেখো, মেঘ চোর কাকে বলা হয়েছে

উঃ এই গল্পে বৃষ্টিবিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরিকে মেঘচোর বলা হয়েছে। তিনি একদেশের মেঘ এনে অন্য দেশে বৃষ্টিপাত ঘটিয়েছিলেন বলে এমন বলা হয়েছে। বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি একস্থানে উৎপন্ন মেঘকে বৈজ্ঞানিক কুশলতার সাহায্যে অন্য স্থানে নিয়ে যান। এই পদ্ধতি তিনিই পারেন। সেই স্থানে নিয়ে গিয়ে তিনি সেখানকার আকাশের উপর মেঘকে রেখে তার আর্দ্রতা বাড়িয়ে দেন। জলীয়বাষ্প বেশি হয়ে গেলে মেঘ স্বভাবতই বৃষ্টির আকারে সেখানে ঝরে পড়ে। এইভাবে তিনি মেঘ চুরি করেন।

প্র: “বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে অমিতবল, কিন্তু অযোগ্য মানুষের হাতে সেই ক্ষমতা হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক ও প্রাণঘাতী’ – পঠিত গল্পটি অবলম্বনে উপরের উদ্ধৃতিটি বিশ্লেষণ করো।

উঃ বৃষ্টি বিজ্ঞানী পুরন্দর চৌধুরি অসামান্য প্রতিভার অধিকারী। আকাশের মেঘ যেন তাঁর বশীভূত। কিন্তু এই পুরন্দর চৌধুরি ক্ষমতাবলে অন্ধ হয়ে গিয়ে শ্রেভার লেককে শুকিয়ে দিয়ে মেঘে পরিণত করতে চান। তিনি বৃষ্টি দিয়ে সাইবেরিয়ার বরফ বাড়িয়ে দিতে চান। তিনি চান আকাশের সব মেঘকে একত্রিত করে তাঁর কাছে প্রার্থনা করা মানুষদের আবেদন অনুসারে এক এক জায়গায় বৃষ্টিপাত ঘটাতে। এই সকল কাজের ফল প্রকৃতির উপর যে কত বড়ো বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে সে সম্পর্কে তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ উদাসীন। তাই উক্তিটির সত্যতা এখানে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে।

প্র: পুরন্দর চৌধুরির চরিত্রটি তোমার কেমন বলে মনে হয়েছে—বিশ্লেষণ করো

উঃ পুরন্দর চৌধুরি অসম্ভব প্রতিভাধর। সারা বিশ্ব বৃষ্টিবিজ্ঞানী রূপে তাঁকে এক ডাকে চেনে। তিনি নিজের ইচ্ছামতো মেঘ তৈরি করতে পারেন। নিজের ইচ্ছামতো মেঘকে কোনো দেশের উপর নিয়ে গিয়ে বৃষ্টি ঝরাতে পারেন। কিন্তু এই পুরন্দর চৌধুরি অত্যন্ত অহংকারী। তিনি অন্যান্য বিজ্ঞানীদের জব্দ করতে চান। তিনি চান মানুষ তাঁর কাছে হাত পেতে বৃষ্টির প্রার্থনা করুক। কোথায় কখন বৃষ্টি হবে তা তিনি ঠিক করতে চান। তিনি চান ভগবানের সমতুল্য স্থানটিই যেন তাঁর হয়। তাই তিনি আকাশের দেবতা ইন্দ্র হতে চান। কারণ ইন্দ্রের অপর নাম হল পুরন্দর। 

প্র: গল্পটি অবলম্বনে অসীমা চরিত্রটি সম্বন্ধে তোমার মতামত জানাও

উঃ অসীমা সাতাশ বছরের একজন সুন্দরী ও বুদ্ধিমতী মহিলা। সে বিজ্ঞানী কারপভের মেয়ে। আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করছে। সে অত্যন্ত চালাক ও ঠান্ডা মাথার অধিকারী। ভূগোল বিষয়েও তার জ্ঞান আছে। অসাধারণ অভিনেত্রী পুরন্দরকে তাঁর উন্মাদ উদ্দেশ্য থেকে নিবৃত্ত করতে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে পুরন্দরকে থামায়। এক কথায় অসীমা চরিত্রটি অনবদ্য।

প্র: এই গল্পে পুরন্দর এবং অসীমা আসলে দুটি পৃথক এবং পরস্পরবিরোধী বিজ্ঞান চেতনার প্রতিনিধিত্ব করেছে। কে, কোন্ ধারণার প্রতিনিধিত্ব করেছেন জানিয়ে তুমি এঁদের মধ্যে কাকে কেন সমর্থন করো বিশদে লেখো

উঃ পুরন্দর প্রতিনিধিত্ব করেছেন সেই শ্রেণির যারা মনে করে বিজ্ঞানের শক্তি দিয়ে তারা পৃথিবীতে যা খুশি করতে পারেন। অসীমা প্রতিনিধিত্ব করেছেন সেই শ্রেণির যারা মনে করে বিজ্ঞান দিয়ে প্রকৃতির সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে কাজ করা উচিত। নয়তো বিপর্যয় অনিবার্য। আমি অসীমার দর্শনকে সমর্থন করি। কারণ প্রকৃতিকে তছনছ করে, তাকে বিপদগ্রস্ত করে কখনও পৃথিবীর উন্নতি সম্ভব নয়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হলে তাকে ফিরিয়ে আনা সহজ ব্যাপার নয়। তখন মহাবিপর্যয় শুরু হয়ে যেতে পারে। তার থেকে ভারসাম্য যাতে নষ্ট না-হয় তাই দেখা উচিত।

প্র: গল্পটিতে যতগুলো স্থানের নাম আছে তার একটি তালিকা বানিয়ে প্রত্যেকটি স্থান সম্বন্ধে সংক্ষেপে লেখো

উঃ বোস্টন, সাহারা, আলাস্কা, সাইবেরিয়া, কলকাতা। বোস্টন—বোস্টন হল ম্যাসাচুসেটসের রাজধানী। 

  • সাহারা—সাহারা হল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ উয়ু মরুভূমি। এটি আফ্রিকার গোটা উত্তরাংশ জুড়ে অবস্থিত। এর মোট আয়তন ৯,৪০০,০০০ বর্গকিমি। আলজিরিয়া মিশর, লিবিয়া, মালি, সুদান, তিউনিশিয়া সহ মোট বারোটি দেশ জুড়ে এই মরুভূমি অবস্থিত।
  • আলাস্কা—আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম প্রদেশ। এর উত্তরে সুমেরু মহাসাগর, পূর্বে কানাডা এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে রয়েছে প্রশান্ত হাসাগর ।
  • সাইবেরিয়া—রাশিয়ার উত্তর অংশ। এখানে সারাবছর তাপমাত্রা শূন্যের নীচে থাকে। পৃথিবীর শীতলতম স্থানগুলোর মধ্যে সাইবেরিয়া অন্যতম।
  • কলকাতা—ভারতবর্ষের পূর্বে অবস্থিত পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী তথা ভারতের সর্বাপেক্ষা জনঘনত্বযুক্ত শহর।

মেঘ চোর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় গল্পের pdf

পঞ্চাশটি প্রিয় গল্প || সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়



পঞ্চাশটি প্রিয় গল্প || সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | মেঘ চোর প্রশ্ন উত্তর

Q1. কে কোথা থেকে কোথায় মেঘ এনেছিল?

উত্তর: পুরন্দর চৌধুরী সাইবেরিয়া থেকে সাহারায় মেঘ এনেছিল।

Q2. পৃথিবী থেকে কত জল সারাবছর বাষ্প হয়ে উড়ে যায়?

উত্তর: পঁচানব্বই হাজার কিউবিক মাইল জল পৃথিবী থেকে সারাবছর বাষ্প হয়ে উড়ে যায়।

Q3. মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার কেন?

উত্তর: মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে তাই মানুষের জন্য বেশি বৃষ্টি দরকার।

Q4. আটলান্টিস কী? 

উত্তর: গ্রিক পুরাণে বর্ণিত শহর। সেখানে ছিল এক লুপ্ত সভ্যতা। বলা হয় সেটি গ্রিক লেখকদের জল্পনা কল্পনা।

Q5. সাইবেরিয়া কোথায়? 

উত্তর: সাইবেরিয়া রাশিয়া মহাদেশে অবস্থিত।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।