ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা কে, জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস

1885 সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার সংগ্রামকে গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিনিধিত্ব এবং সংলাপের প্রাথমিক উদ্দেশ্যগুলি ধীরে ধীরে আত্মনিয়ন্ত্রণ ও স্বাধীনতার জন্য একটি বৃহত্তর আন্দোলনের পথ দিয়েছিল। কংগ্রেস, তার বিবর্তন এবং স্বদেশী আন্দোলনে জড়িত থাকার মাধ্যমে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের ভিত্তি স্থাপন করে। এই আর্টিকেলে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, ইতিহাস, গঠন এবং উদ্দেশ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ইতিহাস, জাতীয় কংগ্রেস কবে প্রতিষ্ঠিত হয়

1885 সালে বোম্বাই শহরে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা ভারত ইতিহাসে এক অতি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সেই সময় ভাইসরয় লর্ড ডাফরিন এর সময় গঠিত হয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এলান অক্টাভিয়ান হিউম প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম সম্মেলন আয়োজিত হয় 1885 সালে বোম্বেতে W.C. বোনার্জী সভাপতিত্বে।

যেখানে ভারতীয়দের ধর্ম-জাত -ভাষা স্থান এর ঊর্ধ্বে গিয়ে প্রকৃত সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এইজন্য শুরু থেকেই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস হয়ে উঠেছিল এক সর্বভারতীয় ধর্মনিরপেক্ষ আন্দোলন। প্রতিষ্ঠার সময় জাতীয় কংগ্রেসের মনোভাব কোনভাবেই ব্রিটিশ সরকারের বিরোধী ছিল না।

জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারটিকে সরকার ভালো নজরে দেখেন নি বরং রাজনৈতিক সমস্যা অপেক্ষা সামাজিক সমস্যার দিকে দৃষ্টিপাত করে। তাঁরা মনে করেছিলেন যে জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দ হয়তো নিজেদের মধ্যে পাণ্ডিত্যপূর্ণ কিছু রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যেই তাদের কার্যাবলী সীমাবদ্ধ রাখবেন। এই কারণে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করেছিলেন।

প্রথম তিন বছর পর সরকারি কর্মচারীরা কংগ্রেস অধিবেশনে যোগদান করে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতেন। দ্বিতীয় সম্মেলন আয়োজিত হয়েছিল 1886 সালে কলকাতায় এবং তৃতীয় সম্মেলন আয়োজিত হয় 1887 সালে মাদ্রাজে।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস গঠন

হিউম লর্ড ডাফরিন এর অধীনে কংগ্রেস দল গঠন করেন যার প্রধান দুটি কারণ হল- ভারতীয়দের সেফটি ভালব প্রদান করা এবং ইংল্যান্ডের রানীর বিরোধী দলের ন্যয় ভারতেও একটি আধা সাংবিধানিক দল গঠন করা। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস হল ভারতের তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড ডাফরিনের সময়ের তৈরী।

ডাফরিনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন তৈরী করা যা ভারতে মানুষের আসল ইচ্ছে ও প্রয়োজনকে তুলে ধরবে এবং পাশাপাশি শাসনব্যবস্থাকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যার হাত থেকে বাঁচাবে।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের গঠনের কারণ

  • ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের দেশসেবকদের মধ্যে ব্যাক্তিগত যোগাযোগ ও ভালো সম্পর্ক স্থাপন।
  • জাতি,ধর্ম ও প্রাদেশিক সংকীর্ণতা দূর করে ভারতবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করা।
  • দেশের শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মধ্যে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দেশের সামাজিক সমস্যা সমাধানের উপায় বের করা এবং ভারতের রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য পরবর্তী বছরগুলিতে কর্মসূচী গ্রহণ করা।

ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের উদ্দেশ্য

  • ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস-এর প্রাথমিক উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে একটি ছিল ভারতীয় জনগণের জন্য নাগরিক অধিকার এবং স্বাধীনতার পক্ষে ওকালতি করা। কংগ্রেসের লক্ষ্য ছিল ভারতীয়দের অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং আইনের অধীনে সমান আচরণ নিশ্চিত করবে এমন সংস্কারের জন্য চাপ দেওয়া।
  • ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস-র লক্ষ্য ছিল ভারতীয়দের তাদের অভিযোগ ব্রিটিশ সরকারের কাছে জানাতে এবং জাতীয় পরিচয় ও ঐক্যের অনুভূতি জাগানোর জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করা।
  • কংগ্রেস বিশ্বাস করত যে শিক্ষা সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শিক্ষাগত সংস্কার এবং জনসাধারণের মধ্যে আধুনিক শিক্ষার প্রসারের পক্ষে কথা বলে। উপরন্তু, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস বাল্য বিবাহ এবং বর্ণ প্রথার মতো সামাজিক সমস্যাগুলিকে মোকাবেলা করার লক্ষ্য নিয়েছিল।
  • ব্রিটিশদের দ্বারা ভারতের অর্থনৈতিক শোষণ একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় ছিল। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা এবং ভারতীয় শিল্পের বিকাশের উপর জোর দিয়েছে। এটি এমন নীতির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে যা ভারতীয় কৃষক, কারিগর এবং শ্রমিকদের উপকার করবে।
  • ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতীয়দের জন্য রাজনৈতিক অংশগ্রহণের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদানের লক্ষ্য রেখেছিল। এটি জনগণকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জড়িত হতে, আইন প্রণয়ন সংস্থাগুলিতে প্রতিনিধিত্ব দাবি করতে এবং দায়িত্বশীল সরকারের দিকে কাজ করতে উত্সাহিত করেছিল।
  • ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস সাংবিধানিক সংস্কার চেয়েছিল যা ভারতীয়দের তাদের নিজের দেশ পরিচালনায় আরও বড় ভূমিকা দেবে। এটি আইন পরিষদের সম্প্রসারণ এবং আরও নির্বাচিত ভারতীয় প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চাপ দেয়।

জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা কে

ব্রিটিশ সিভিল সার্ভেন্ট “স্যার অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম্” (Allan Octavian Hume) কে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।

তাছাড়া অন্যান্য যেসব ব্যাক্তিবর্গ জাতীয় কংগ্রেস তৈরি তে মূল ভূমিকা নিয়েছিলেন তাদের মধ্যে উমেশ চন্দ্র ব্যানার্জী (W.C Banerjee), সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জী, মনমোহন ঘোষ, দাদাভাই নৌরজি, মহাদেব গোবিন্দ রানাডে, উইলিয়াম ওয়েডার্বার্ন , ফিরোজসাহ মেহতা উল্লেখযোগ্য।

এইসমস্ত মহান ব্যাক্তিদের সহায়তায় ২৮ শে ডিসেম্বর, ১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয় তৎকালীন বোম্বে (বর্তমানে মুম্বাই) এর গোকুলদাস তেজপাল কলেজে। প্রথম অধিবেশনে স্যার অক্টাভিয়ন হিউম জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে এবং কলকাতার উমেশ চন্দ্র ব্যানার্জী প্রেসিডেন্ট হিসাবে নির্বাচিত হন ।

জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন

১৮৮৫ সালের প্রথম অধিবেশনে সভাপতি ছিলেন উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি।

১৮৮৫ সালে জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৮৮৫ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির মেয়াদকাল ছিল এক বছর। ১৯৩৩ সালের পর থেকে সভাপতির মেয়াদকালের কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা রাখা হয়নি।

ইন্দিরা গান্ধী দলের মধ্যে একই সঙ্গে সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী দুই পদেই আসীন থাকার রীতির প্রতিষ্ঠানিক রুপ দেন। তার পরবর্তী উত্তরসূরি রাজীব গান্ধী ও পি. ভি. নরসিংহ রাও একই রীতি চালু রাখেন। এই রীতি চালু হবার পর ২০০৪ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস শাসন ক্ষমতায় ফিরলে মনমোহন সিং প্রথম এমন প্রধানমন্ত্রী হন যিনি কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন না।

এখনো অবধি মোট ৬২ জন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতির পদ সামলেছেন। তাদের মধ্যে সোনিয়া গান্ধী ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এবং ২০১৯ থেকে ২০২২ পর্যন্ত মোট ২০ কুড়ি বছর এই পদে থেকেছেন। তিনিই সর্বাধিক দিন পর্যন্ত দায়িত্বপালনকারী জাতীয় কংগ্রেস সভাপতি।

জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন কোথায় হয়েছিল

জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন হয়েছিল মুম্বাইয়ের গোকুলদাস তেজপাল সংস্কৃত পাঠশালাতে ২৮ থেকে ৩২শে ডিসেম্বর ১৮৮৫ সালে ।

১৮৮৫ সালে বোম্বের (বর্তমানে মুম্বাই) গোকুলদাশ তেজপাল সংস্কৃত কলেজে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পুনেতে প্রথম অধিবেশন হওয়ার কথা ছিল, কলেরা রোগ ছড়িয়ে পড়ায় তা বোম্বে অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সভাপতি কে ছিলেন

জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মুসলিম সভাপতি ছিলেন বদরুদ্দীন তৈয়েবজী। বদরুদ্দিন তৈয়েবজী বোম্বাই হাইকোর্টের ব্যারিস্টারি করা প্রথম ভারতীয়। তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের তৃতীয় সভাপতি ছিলেন এবং প্রথম মুসলিম সভাপতি।

জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি কে ছিলেন

অ্যানি বেসান্ত 1917 সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন।

সরোজিনী নায়ডু ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম ভারতীয় মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হন।

সরোজিনী নায়ডু ছিলেন স্বনামধন্য ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিশিষ্ট বাগ্মী ও ইন্দো-অ্যাংলিয়ান কবি। তিনি ভারতীয় কোকিল (দ্য নাইটেঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া) নামে পরিচিত। স্বাধীন ভারতে তিনি উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের রাজ্যপালও হয়েছিলেন।

সরোজিনী নায়ডু ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা। মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে তিনি যোগ দেন ডান্ডি পদযাত্রায়। গান্ধী, আব্বাস তয়েব ও কস্তুরবা গান্ধী গ্রেফতার হলে তিনি ধারাসন সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাগ্মী এবং ইংরেজি ভাষার যশস্বী কবি।

সুরাট অধিবেশন, জাতীয় কংগ্রেসের সুরাট অধিবেশন

বিশ শতকের প্রথম দশকে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে দুই ধরনের মনোভাব দেখা যায়। একটি হল নরমপন্থী নিয়মতান্ত্রিক মনোভাব, আর অন্যটি সংগ্রামী আপোষহীন প্রতিরোধমূলক দৃষ্টিভঙ্গি। এর ফলে জাতীয় কংগ্রেসের রাজনীতি দুইটি বিবদমান গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে।

১৯০৭ খ্রীষ্টাব্দের ডিসেম্বরে সুরাটে জাতীয় কংগ্রেসের বার্ষিক অধিবেশনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর বিরোধ চরমে ওঠে। প্রখ্যাত বাঙালী নেতা রাসবিহারী ঘোষ এই সম্মেলনের সভাপতি মনোনীত হন। এর বিরুদ্ধে চরমপন্থী গোষ্ঠী লোকমান্য তিলককে পাল্টা সভাপতি পদে মনোনীত করেন। তিলকের সমর্থক প্রতিনিধিগণ অধিবেশনের কার্যে বাধা দান করলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয় এবং কংগ্রেসের অধিবেশন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। চরমপন্থীরা কংগ্রেস সংগঠন ত্যাগ করেন। এইভাবে কংগ্রেসে ভাঙন দেখা দিল।

যদিও সুরাট অধিবেশন কংগ্রেসের ইতিহাসে লজ্জাজনক ঘটনা, এর ফলে কংগ্রেসের ভাবমূর্তি মলিন হয়। তথাপি এই অধিবেশন স্বাধীনতা আন্দোলনে নতুন গতি ও পথের সন্ধান দিয়েছিল। এই অর্থে এই অধিবেশনের গুরুত্ব অপরিসীম।

সুরাট অধিবেশনের গুরুত্ব

  • কংগ্রেসের মরজাদাহানি:- সুরাট বিচ্ছেদের ফলে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে কংগ্রেসের মর্যাদাহানি ঘটে।
  • কংগ্রেসের শক্তিক্ষয়:- সুরাট বিচ্ছেদে কংগ্রেসে দুই গোষ্ঠী তৈরি হলে কংগ্রেস দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে গান্ধীজীর নেতৃত্বদানের পূর্বকাল পর্যন্ত কংগ্রেস পরিচালিত জাতীয় আন্দোলন গতিহীন হয়ে পড়ে।
  • চরমপন্থীর উত্থান: – সুরাট বিচ্ছেদের সুদূরপ্রসারী ফলাফল হিসেবে জাতীয় কংগ্রেসে প্রথম পর্বের পর থেকে গান্ধী যুগের পূর্ব পর্যন্ত চরমপন্থীরাই জাতীয় রাজনীতির মুলশক্তি হয়ে উঠে।

অশ্বিনীকুমার দত্ত জাতীয় কংগ্রেসকে “তিন দিনের তামাশা” বলেছেন, সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মতে, সুরাট ঘটনার ফলে জাতীয় কংগ্রেসের ইতিহাসে এক স্মরণীয় ইতিহাসের অবসান এবং এক নতুন যুগের সূচনা হয়।

ভারতের জাতীয় কংগ্রেস অধিবেশন

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা: অ্যালান অক্টাভিয়ান হিউম, দাদাভাই নওরোজি এবং এডুলজি ওয়াচা। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস 1885 সালের 28 ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। 

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশনের তালিকা (সভাপতি সহ) নীচের সারণিতে দেওয়া হয়েছে:

সালস্থানসভাপতিগুরুত্ব
1885বোম্বেডাবলু সি ব্যানার্জী1ম অধিবেশনে 72 জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন
1886ক্যালকাটাদাদাভাই নওরোজিজাতীয় কংগ্রেস ও জাতীয় সম্মেলন
1887মাদ্রাজসৈয়দ বদরুদ্দিন তৈয়বজিঅন্যান্য জাতীয় নেতাদের সাথে হাত মেলানোর জন্য মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে
1888এলাহাবাদজর্জ ইউলপ্রথম ইংরেজ প্রেসিডেন্ট
1889বোম্বেস্যার উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন
1890ক্যালকাটাফিরোজ শাহ মেহতা
1891নাগপুরপি. আনন্দ চারলু
1892এলাহাবাদডাবলু সি ব্যানার্জী
1893লাহোরদাদাভাই নওরোজি
1894মাদ্রাজআলফ্রেড ওয়েব
1895পুনাসুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
1896ক্যালকাটারহিমতুল্লাহ এম সায়ানিপ্রথমবারের মতো গাওয়া জাতীয় গান ‘বন্দে মাতরম’
1897অমরাবতীসি শঙ্করন নায়ার
1898মাদ্রাজআনন্দ মোহন বসু
1899লক্ষ্ণৌরমেশ চন্দ্র দত্ত
1900লাহোরএন জি চন্দভারকর
1901ক্যালকাটাডিনশো ই ওয়াচা
1902আমেদাবাদসুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
1903মাদ্রাজলাল মোহন ঘোষ
1904বোম্বেস্যার হেনরি কটন
1905বেনারসগোপাল কৃষ্ণ গোখলেবাংলা ভাগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ
1906ক্যালকাটাদাদাভাই নওরোজি‘স্বরাজ’ শব্দটি প্রথমবারের মতো উল্লেখ করা হয়েছিল
1907সুরাটরাসবিহারী ঘোষপার্টি চরমপন্থী এবং মধ্যপন্থীদের মধ্যে বিভক্ত হয়।
1908মাদ্রাজরাসবিহারী ঘোষপূর্ববর্তী অধিবেশন অব্যাহত ছিল।
1909লাহোরমদন মোহন মালব্যভারতীয় পরিষদ আইন, 1909
1910এলাহাবাদস্যার উইলিয়াম ওয়েডারবার্ন
1911ক্যালকাটাবিশন নারায়ণ ধরপ্রথমবার গাওয়া ‘জন গণ মন’
1912বাঙ্কিপুর (পাটনা)রঘুনাথ নরসিংহ মুধোলকর
1913করাচিসৈয়দ মহম্মদ
1914মাদ্রাজভূপেন্দ্র নাথ বসু
1915বোম্বেসত্যেন্দ্র প্রসন্ন সিনহা
1916লক্ষ্ণৌঅম্বিকা চরণ মজুমদারলক্ষ্ণৌ চুক্তি – মুসলিম লীগের সাথে যৌথ অধিবেশন
1917ক্যালকাটাঅ্যানি বেসান্ত (1847 – 1933)INCর প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট
1918বোম্বে এবং দিল্লীসৈয়দ হাসান ইমাম (বোম্বে) এবং মদন মোহন মালব্য (দিল্লি)দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম বোম্বেতে আগস্ট/সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ডিসেম্বর মাসে দিল্লীতে
1919অমৃতসরমতিলাল নেহেরুজালিয়ানওয়ালাবাগ গণহত্যার তীব্র নিন্দা
1920নাগপুরসি বিজয়রাঘবাচারিয়ার
1921আমেদাবাদহাকিম আজমল খান (সি আর দাসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি)
1922গয়াসি আর দাস
1923কাঁকিনাড়ামৌলানা মহম্মদ আলী
1924বেলগামএম কে গান্ধী
1925কানপুরসরোজিনী নাইডু (1879 – 1949)প্রথম ভারতীয় মহিলা রাষ্ট্রপতি
1926গুয়াহাটিএস শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার
1927মাদ্রাজএম এ আনসারি
1928ক্যালকাটামতিলাল নেহেরুঅল ইন্ডিয়া যুব কংগ্রেস গঠিত হয়।
1929লাহোরজওহরলাল নেহেরু‘পূর্ণ স্বরাজ’-এর জন্য রেজোলিউশন। সম্পূর্ণ স্বাধীনতার জন্য নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলন শুরু করা হবে, 26 শে জানুয়ারী ‘স্বাধীনতা দিবস’ হিসাবে পালন করা হবে।
1930কোনও অধিবেশন হয়নি
1931করাচিবল্লভভাই প্যাটেলমৌলিক অধিকার এবং জাতীয় অর্থনৈতিক অগ্রগতির উপর রেজোলিউশন। গান্ধী-আরউইন চুক্তি অনুমোদন করা হয়েছে। গান্ধী দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠকে কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য মনোনীত
1932দিল্লিঅমৃত র‍্যাঞ্চহার্ডদাস শেঠ
1933ক্যালকাটামালব্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কিন্তু মিসেস নেলি সেনগুপ্ত সভাপতিত্ব করেছিলেন
1934বোম্বে রাজেন্দ্র প্রসাদ
1937লক্ষ্ণৌজওহরলাল নেহেরু
1936ফৈজপুরজওহরলাল নেহেরুপ্রথম গ্রামীণ অধিবেশন/ প্রথম অধিবেশন একটি গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়
1938হরিপুরাসুভাষ চন্দ্র বসুনেহেরুর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় পরিকল্পনা কমিটি
1939ত্রিপুরিসুভাষ চন্দ্র বসুবোস নির্বাচিত হয়েছিলেন তবে গান্ধী পাট্টাভি সীতারামাইয়াকে সমর্থন করার কারণে তাকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। পরিবর্তে, রাজেন্দ্র প্রসাদকে নিযুক্ত করা হয়েছিল
1940রামগড়আবুল কালাম আজাদ
1941-45গ্রেফতারের কারণে কোন অধিবেশন নেই
1946মীরাটআচার্য কৃপালিনিস্বাধীনতার আগে শেষ অধিবেশন
1948জয়পুরপাট্টাভি সীতারামাইয়াস্বাধীনতার পর প্রথম অধিবেশন
1950নাসিকপুরুষোত্তম দাস ট্যান্ডন1951 সালে পদত্যাগ করেন; নেহেরু রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন
1951দিল্লিজওহরলাল নেহেরু
1953হায়দ্রাবাদজওহরলাল নেহেরু
1954কল্যাণীজওহরলাল নেহেরু
1955আভাদি (মাদ্রাজ)ইউ এন ধেবার
1956অমৃতসরইউ এন ধেবার
1958গৌহাটিইউ এন ধেবার
1959নাগপুরইন্দিরা গান্ধী
1960ব্যাঙ্গালোরনীলম সঞ্জীবা রেড্ডি
1961ভাবনগরনীলম সঞ্জীবা রেড্ডি
1962ভুবনেশ্বরদামোদরন সঞ্জব্যয়
1963পাটনাদামোদরন সঞ্জব্যয়
1964ভুবনেশ্বরকে কামরাজ
1965দূর্গাপুরকে কামরাজ
ভারতের জাতীয় কংগ্রেস অধিবেশন
আরো অন্যান্য প্রশ্নোত্তরের সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | জাতীয় কংগ্রেস

Q1, স্বাধীনতার সময় ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি কে ছিলেন

Ans – জে.বি. কৃপালনি 1947 সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। কৃপালনির আগে, 1946 সালে আইএনসির সভাপতি ছিলেন জওহরলাল নেহেরু।

Q2. জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনের সভাপতি কে ছিলেন

Ans – দাদাভাই নওরোজির সভাপতিত্বে 1886 সালে কলকাতায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।

Q3. ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জনক কাকে বলা হয়

Ans – এ. ও. হিউম কে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জনক বলা হয়।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।