দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কত সালে হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে হয়েছিল

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ আর যুদ্ধ শেষ ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫। এ যুদ্ধ সংঘটিত হয় অক্ষশক্তি ও মিত্রশক্তির মধ্যে। এ যুদ্ধের প্রধান কারণ ছিল জার্মানির নাৎসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব।

মূলত ১৯৩৯ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত, অর্থাৎ এই ছয় বছর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোট সময়সীমা ধরা হয়।  তবে ১৯৩৯ সালেরও আগের  এশিয়ায় সংগঠিত কিছু সংঘর্ষকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরোক্ষ  অংশ হিসেবে ধরা হয়। এরই পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর জার্মানি কর্তৃক পোল্যান্ডে আক্রমণ ঘটে।  আর  এর ইফলশ্রুতিতে জার্মানির বিরুদ্ধে  ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য  যুদ্ধ ঘোষণা করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোন কোন দেশের মধ্যে হয়েছিল

আমেরিকা,ব্রিটেন, রাশিয়া,ফ্রান্স এরা ছিল বিগ-৪ নামে পরিচিত। এদের সবাই চেনে। কিন্তু অষ্ট্রেলিয়া, ইউগোস্লাভিয়া,(বর্তমানে বিলুপ্ত,সার্বিয়া, বসনিয়া, চেক রিপবলিক আর Croatia) Greece, মিশর, নরওয়ে,সুইডেন, চীন এবং এশিয়ান সকল দেশ, আফ্রিকার জার্মান কলোনি ভুক্ত দেশগুলো ছাড়া পুরো আফ্রিকা,কানাডা, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়া,পোল্যান্ড,নেদারল্যান্ড ও ছিল।

আর axis power কিংবা অক্ষ শক্তি ছিল: জার্মানি,ইতালি,জাপান,বুলগেরিয়া,রুমানিয়া,ফিনল্যান্ড।

অক্ষশক্তি শেষমেশ মিত্রশক্তি দ্বারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলো।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রশক্তি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তিতে প্রথমে ফ্রান্স ও বৃটেন থাকলেও পরে ফ্রান্স জার্মানি দ্বারা পরাজিত হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও সোভিয়েত ইউনিয়ন যোগদান করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ ও ফলাফল

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে একনায়কতান্ত্রিক শক্তির উদ্ভব ও বিকাশ ঘটে। ইতালিতে মুসোলিনি এবং জার্মানিতে হিটলার স্বৈরশাসক হন। ইতালি প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মিত্রদের পক্ষে যুদ্ধ করলেও প্যারিস শান্তি সম্মেলনে তেমন লাভ করতে পারেনি। এতে ইতালিতে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়, এর সুযোগ নিয়ে মুসোলিনি ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং সমস্ত ক্ষমতা নিজের হাতে কেন্দ্রীভূত করেন। তিনি ইতালির সর্বোচ্চ নায়ক হয়েছিলেন। একই অবস্থা জার্মানিতেও।

হিটলার নাৎসিবাদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং জার্মানির স্বৈরশাসক হন। মুসোলিনি এবং হিটলার উভয়েই আক্রমনাত্মক নীতি গ্রহণ করেছিলেন, উভয়েই লীগ অফ নেশনস-এর সদস্যপদ ত্যাগ করেছিলেন এবং তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে শুরু করেছিলেন। তার নীতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলেছিল।

পূর্ববর্তী যুদ্ধপ্রথম বিশ্বযুদ্ধ
সময়কাল১৯৩৯-১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ
মিত্রপক্ষইংল্যান্ড, ফ্রান্স, রাশিয়া
অক্ষশক্তিজার্মানি, ইতালি, জাপান
ফলাফলঅক্ষশক্তির পরাজয়
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কেন হয়েছিল

ভার্সাই সন্ধির ত্রুটি

ভার্সাই চুক্তিপত্রের ৪৪০ টি ধারার বেশিরভাগ রচিত হয়েছিল জার্মানিকে স্থায়ীভাবে আর্থিক ও সামরিক দিক থেকে শক্তিহীন করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। জার্মানির সমরশক্তিকে বেলজিয়ামের মতো অতি ক্ষুদ্র দেশের থেকেও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জার্মানির উপনিবেশগুলি ভাগ করে নিয়েছিল মিত্রশক্তি বর্গ । শুধু তাই নয় ভার্সাই চুক্তির দ্বারা জার্মানির ওপর বিশাল অঙ্কের ক্ষতিপূরণের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে জার্মানি যুদ্ধমুখী হতে বাধ্য হয়েছিল ।

অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদ

হিটলার চেয়েছিলেন পূর্ব ইউরোপে জার্মান সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটিয়ে জার্মানবাসীর জন্য লেবেনশ্রউম বা বাসস্থানের সম্প্রসারণ ঘটাতে। এই অতৃপ্ত জাতীয়তাবাদকে চরিতার্থ করতে নাৎসি দলের ক্ষমতা দখলের মধ্যে দিয়ে জার্মানিতে প্রাক্-বিশ্বযুদ্ধকালীন সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছিল ।

হিটলারের পররাষ্ট্রনীতি

হিটলারের পররাষ্ট্রনীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল জার্মানিকে ইউরোপের প্রধান শক্তিতে পরিণত করা। হিটলার বারবারই নিজ কূটনীতি প্রয়োগের মাধ্যমে মিত্রশক্তিগুলির মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সূচনা করেছিলেন এবং রুশ-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে সোভিয়েত ইউনিয়নকে এই জোট থেকে পৃথক করে ফেলতে সমর্থ হয়েছিলেন। অন্যদিকে হিটলার ফ্রান্স, পোল্যান্ড যৈত্রীতে ভাঙন ধরানোর জন্য ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে পোল-জার্মান অনাক্রমণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। ১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করলে ইঙ্গ-ফরাসি জোট জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে । ই. এল. উডওয়ার্ড বলেন – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হিটলারের যুদ্ধ। তিনি এই যুদ্ধের পরিকল্পনা করেছিলেন। তিনি আরম্ভ করেছিলেন এবং শেষপর্যন্ত তিনিই পরাজিত হয়েছিলেন।

উগ্র জাতীয়তাবাদ

হিটলার মনে করতেন বিশ্বে একমাত্র জার্মানরাই বিশুদ্ধ আর্য রক্তের অধিকারী, তাই বিশ্বে জাতিগত দিক থেকে তারাই শ্রেষ্ঠ অর্থাৎ প্রভু জাতি বা হেরেনভক। এই কারণে অন্যান্য জাতির ওপর শাসন প্রতিষ্ঠা করার অধিকার রয়েছে জার্মানদের। হিটলারের এই হেরেনভক তত্ত্ব থেকে যে উগ্র সাম্রাজ্যবাদী নীতির জন্ম হয়েছিল, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে অনিবার্য করে তুলেছিল। চেকোশ্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড প্রভৃতি দেশে জার্মানির সুযোগমতো অধিকার স্থাপনের প্রচেষ্টা বিশ্বযুদ্ধকে নিশ্চিত করে তুলেছিল ।

জাপানের আগ্রাসী নীতি

প্রাচ্য তথা এশীয় অংশে জাপানের ক্রম অগ্রগমন মিত্রশক্তির মনে আতঙ্কের সঞ্চার করেছিল। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে জাপানের মাঞ্চুরিয়া অধিকার তার সাম্রাজ্যবাদী নীতিরই পরিচায়ক।

ইতালি আগ্রাসন

ইতালির আগ্রাসন ও পররাজ্য গ্রাস নীতি বিশ্বকে দ্রুত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়। ইতালি কর্তৃক আবিসিনিয়া অধিকারের কোনো প্রতিকার না হওয়ায় মুসোলিনির ক্ষমতা ও প্রভাব আরও বৃদ্ধি পায়, তাঁর আগ্রাসী মনোভাব বহুগুণ বেড়ে যায় ।

দুটি সামরিক শিবিরের স্বার্থ সংঘাত

ভার্সাই চুক্তির অব্যবহিত পরেই ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডসহ মিত্রশক্তি জোট এবং জার্মানি, জাপান ও ইতালির অক্ষশক্তি জোটের মধ্যে বাণিজ্যিক, ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী সংঘাত বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করেছিল । মুসোলিনির মতে – দুই জগতের এই দ্বন্দ্বে আপসের কোনো স্থান নেই, হয় আমরা নয় ওরা।

ইঙ্গ ফরাসি তোষণ নীতি

তোষণ নীতির দ্বারা ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স পশ্চিম ইউরোপের বদলে পূর্বে রাশিয়ার দিকে হিটলারের অবাধ সম্প্রসারণ চেয়েছিল। কারণ ওইসব ধনতন্ত্রী দেশগুলির কাছে নাৎসি জার্মানি বা ফ্যাসিবাদী ইতালির চেয়ে সমাজতন্ত্রী রাশিয়া ছিল অনেক বেশি বিপজ্জনক। তাই ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স চেয়েছিল হিটলারের জার্মানি ও মুসোলিনির ইতালিকে দিয়ে সোভিয়েত সাম্যবাদকে ধ্বংস করতে। কিন্তু এই তোষণ নীতি হিটলার তথা একনায়কদের শক্তিই শুধু বৃদ্ধি করেনি, তাদের আগ্রাসী মনোভাবকে তীব্র করে তুলেছিল। এ. জে. পি. টেলরের মতে ইঙ্গ-ফরাসি তোষণ নীতি ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ।

আদৰ্শগত দ্বন্দ্ব

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়কালে ইউরোপের রাষ্ট্রগুলি আদর্শগত দিক থেকে পরস্পর বিরোধী দুই শিবিরে ভাগ হয়ে যায় । একদিকে ছিল ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভৃতি গণতন্ত্রবাদী রাষ্ট্র। অপরদিকে ছিল ইতালি, জাপান জার্মানি ও স্পেন প্রভৃতি স্বৈরতন্ত্রী রাষ্ট্র । আবার সোভিয়েত রাশিয়াতে ছিল সাম্যবাদী আদর্শ দ্বারা পরিচালিত সরকার। এদের বিভিন্ন আদর্শের দ্বন্ধ বিশ্বের রাজনৈতিক ভারসাম্যকে বিঘ্ন করে ও আন্তর্জাতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করে যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি করে ।

সমাজতান্ত্রিক ও ধনতান্ত্রিক ভাবধারার সংঘাত

সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে ধনতান্ত্রিক ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের বারংবার ভুল বোঝাবুঝি ও পারস্পরিক সন্দেহপ্রবণতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ত্বরান্বিত করে । হিটলার অনাক্রমণ চুক্তি দ্বারা রাশিয়াকে নিষ্ক্রিয় রাখলেও ইংল্যান্ডের দুর্বল নীতি যুদ্ধ ডেকে আনে ।

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছিল, তার ফলে বিশ্ববাণিজ্য ও শিল্পায়ন প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে। বিভিন্ন দেশে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি চরমে পৌঁছোয় । বেশ কিছু দেশ এই সমস্যার থেকে দেশবাসীর মুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য যুদ্ধে যোগ দেয়।

ঔপনিবেশিক লড়াই

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই ভার্সাই চুক্তির অধিকার বলে ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, আমেরিকা বিশ্বের বেশিরভাগ উপনিবেশগুলি দখল করে নেয়। অপরদিকে ইতালি, জার্মানি ও জাপান দেরিতে হলেও নতুন নতুন উপনিবেশ দখলের কর্মসূচি গ্রহণ করে। ইতালি ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উপনিবেশ বিস্তারে সচেষ্ট হলে ইঙ্গ ফরাসি স্বার্থে আঘাত লাগে । আবার জাপান প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রভাব বাড়াতে চাইলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শঙ্কিত হয়ে পড়ে । এভাবেই ঔপনিবেশিক স্বার্থসংঘাত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করে। জার্মানির বিদেশমন্ত্রী রিবেনট্রপ বলেছিলেন – জার্মানি উপনিবেশ বিস্তারের অধিকারকে এক মৌলিক অধিকাররূপে দাবি জানাচ্ছে। (‘Germany claims a fundamental right to colonial possessions ‘) |

নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলনের ব্যর্থতা

১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে লিগের তত্ত্বাবধানে জেনেভায় নিরস্ত্রীকরণ সম্মেলন আহূত হয়। এই সম্মেলনে সমবেত প্রতিনিধিবর্গ সংকীর্ণ দেশীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে বক্তব্য রাখতে পারেননি । তাই শেষ পর্যন্ত জার্মানি এই সম্মেলন ছেড়ে চলে যায়। এই সম্মেলনের ব্যর্থতা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারণ ছিল । জাতিসংঘের চুক্তিপত্রের অষ্টম ধারায় উল্লিখিত ছিল – শান্তিরক্ষার্থে চুক্তিবদ্ধ সকল সদস্যরাষ্ট্রের আত্মরক্ষার প্রয়োজনের সঙ্গে সংগতি রেখে যতদূর সম্ভব অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিন্তু জাতিসংঘের কোনো সদস্যরাষ্ট্রই তা না মানায় যুদ্ধ ত্বরান্বিত হয়।

অস্ত্র প্রতিযোগিতা

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সাম্রাজ্যবাদী প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জাতিগোষ্ঠী গঠনে আবারও অস্ত্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়। ফ্রান্স তার সীমান্তে ম্যাগিনোট লাইন তৈরি করেছিল এবং ফরাসি সীমান্তে জার্মান আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ দুর্গ তৈরি করেছিল। জবাবে, জার্মানি তার পশ্চিম সীমান্তকে শক্তিশালী করার জন্য সিগফ্রাইড লাইন তৈরি করে। এই সামরিক কার্যকলাপ অবশ্যই যুদ্ধের ভবিষ্যত তৈরি করেছে।

জাতিসংঘের ব্যর্থতা

লিগ বৃহৎ শক্তিবর্গের অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দ্বিধান্বিত ছিল। ফলে বিশ্বের শান্তি ও নিরাপত্তার রক্ষক হিসেবে সদর্থক ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়। ইতালির আবিসিনিয়া অধিকার, জাপানের মাঞ্চুরিয়া অধিকার এবং জার্মানির চেকোশ্লোভাকিয়া দখলের প্রতিকার করতে লিগ ব্যর্থ হয়। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘটে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রত্যক্ষ কারণ হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণ

রোম-বার্লিন-টোকিও অক্ষশক্তি গঠন হওয়ার পর হিটলার পোল্যান্ডের রাষ্ট্রসীমার মধ্যে দিয়ে ডানজিগ অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি সংেেযাগ ভূমি বা পোলিশ করিডর দাবি করেন। ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড এই ঘোষণার বিরোধিতা করে পোল্যান্ডের পক্ষ নেবে বলে হুমকি দেয়। এই হুমকিকে নস্যাৎ করে দিয়ে হিটলার পোল্যান্ড আক্রমণ করে বসেন ( ১৯৩৯ খ্রি. ১ সেপ্টেম্বর)। এর দুদিন পর (৩ সেপ্টেম্বর) ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স পোল্যান্ডের পক্ষে যোগ দিলে শুরু হয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রধান ঘটনা

  • 1 সেপ্টেম্বর, 1939-এ, জার্মানি পোল্যান্ড আক্রমণ করে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূত্রপাত করে। এই বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়া জার্মানিকে সাহায্য করেছিল। যার ফলে পোল্যান্ড পরাজিত হয়, জার্মানি ও রাশিয়া পোল্যান্ডকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।
  • 1 সেপ্টেম্বর 1939 থেকে 9 এপ্রিল 1940 পর্যন্ত সময়টিকে মক ওয়ার বা ধ্বনিযুদ্ধের সময় হিসাবে বিবেচনা করা হয় কারণ যুদ্ধের অবস্থা থাকলেও এই সময়কালে কোনও প্রকৃত যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি।
  • 1940 সালে, জার্মানি ইংল্যান্ডের উপর বিমান হামলা চালায়, কিন্তু ইংল্যান্ডও এই বিমান আক্রমণ ব্যর্থ করে।
  • 1940 সালের 9 এপ্রিল, জার্মানি নরওয়ে এবং ডেনমার্ক আক্রমণ করে এবং তাদের দখল করে। 1940 সালের জুনের মধ্যে, বেলজিয়াম এবং হল্যান্ড ছাড়াও জার্মান সেনাবাহিনী ফ্রান্সকেও দখল করে নেয়। ফ্রান্স আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি
  • 1944 সালে পরাজিত হওয়ার পর ইতালি আত্মসমর্পণ করে। এটি জার্মান শক্তিকে আঘাত করেছিল। স্ট্যালিনগ্রাদের যুদ্ধে জার্মানিকে পরাজিত করার পর সোভিয়েত সেনাবাহিনী এগিয়ে যায় এবং জার্মানির বার্লিনে পৌঁছে। 1945 সালের 7 মে হিটলারকে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল। 1945 সালের 6 এবং 9 আগস্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহরগুলিতে পারমাণবিক বোমা ফেলে, তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে।

উপসংহার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য যুদ্ধরত দুই পক্ষের কূটনৈতিক ব্যর্থতাও কম দায়ী নয় । ইতালিতে ফ্যাসিবাদ, জার্মানিতে নাৎসিবাদ ও জাপানে জঙ্গিবাদের উত্থান বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তাকে বিপন্ন করলেও গণতান্ত্রিক দেশগুলি তা রক্ষার জন্য কোনো উদ্যোগই নেয়নি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ফলাফল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের তুলনায় আরো নির্ধারক ছিল। এটি কেবল ধ্বংসাত্মক প্রভাবই ফেলেনি, তবে এমন কিছু প্রভাবও ছিল যা বিশ্ব ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তন করে এবং একটি নতুন বিশ্বের উত্থান ও বিকাশের দিকে পরিচালিত করে।

সম্পদ এবং মানুষের ব্যাপক ধ্বংস

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রচুর অর্থ ও মানুষের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এই যুদ্ধে উভয় পক্ষের 50 মিলিয়নেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল, যার মধ্যে সর্বাধিক সংখ্যক ছিল সোভিয়েত। লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে যা পুনর্বাসনের সমস্যা বাড়িয়েছে। লক্ষ লক্ষ ইহুদীকে হত্যা করা হয়। আহতদের গণনা করা যায়নি। ইংল্যান্ডে প্রায় 2000 কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের সমগ্র জাতীয় সম্পদের এক-চতুর্থাংশ যুদ্ধে গিয়েছিল।

ঔপনিবেশিক যুগের সমাপ্তি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সব সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রকে একে একে তাদের উপনিবেশ হারাতে হয়েছে। উপনিবেশগুলোতে জাতীয়তাবাদের ঢেউ তীব্রতর হয়। স্বাধীনতা আন্দোলন তীব্রতর হয়। এশিয়ার অনেক দেশ ইউরোপীয় দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়। ভারতবর্ষও ইংরেজদের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়।

জার্মানী বিভক্তি

হিটলারের মৃত্যুর  পর জার্মানি দুইটি ভাগে ভাগ হয়ে যায় । ১৯৪৯ সালে জার্মানি পূর্ব ও পশ্চিমে বিভক্ত হয়।  নাৎসি দলকে  নিষিদ্ধ করা হয়।  এবং তাদের সকল প্রকার ঘৃণ্য আইন  বাতিল হয় । ডানজিগ স্থল  পােল্যান্ডকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। আর নুরেনবার্গ আন্তর্জাতিক আদালতে গিয়ে জার্মান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয় ।

ফ্যাসিবাদী শক্তি নির্মূল

যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর, অক্ষশক্তিগুলো চরম সংকটে পড়েছিল। তার কাছ থেকে জার্মান সাম্রাজ্যের একটি বড় অংশ ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ইতালিকেও তার সমস্ত আফ্রিকান উপনিবেশ হারাতে হয়েছিল। জাপানকেও তাদের দাবিকৃত এলাকাগুলো ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। এসব দেশের অর্থনৈতিক সামরিক অবস্থাও করুণ হয়ে পড়ে।

কমিউনিজমের দ্রুত বিস্তার

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে কমিউনিজম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশে, এশিয়ার দেশ, চীন, উত্তর কোরিয়া ইত্যাদিতে কমিউনিজম ছড়িয়ে পড়ে।

জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে, একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রয়োজনীয়তা পুনরায় দেখা দেয়, যাতে বিশ্ব শান্তি বজায় রাখা যায় এবং বিশ্বযুদ্ধের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়। 1945 সালের 24 অক্টোবর আমেরিকার উদ্যোগে জাতিসংঘ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের শক্তির উত্থান

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবার ঠিক  আগে ব্রিটেন ও ফ্রান্স ছিল বৃহৎ পরা শক্তি । তবে এই যুদ্ধের পরেই বিশ্বরাজনীতির চেহারা এবং বৃহৎ শক্তির কাঠামাে দুইই পুরোটা বদলে যায় । এই যুদ্ধে ব্রিটেন ও ফ্রান্স  ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় । যুদ্ধের পরবর্তী ধাক্কা  সামলে ওঠা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে । এই  সময়টাতেই  যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে তার প্রভাব বিস্তার করা শুরু করে। এবং  বৃহৎ শক্তি হিসেবে নিজেরা  আত্মপ্রকাশ করে। এর পেছনে মূল  কারণ ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ। পাশাপাশি   সামরিক খাতে ব্যয় করার মতে অনেক  অর্থ।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের  পরে পরা শক্তি হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নেরও  উত্থান শুরু হয়। সেভিভিয়েত ইউনিয়নের পরিবর্তনের পোছনে  মূল কারণ ছিল,  দেশটির বিপুল পরিমাণ  সামরিক শক্তি এবং অঢেল সম্পদের প্রাচুর্য।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছবি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের কারণ

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি, জাপান ও ইতালির মধ্যে অক্ষশক্তি জোট গড়ে ওঠে। যুদ্ধে এই জোট শক্তি চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত হয়। জার্মানির নেতৃত্বাধীন অক্ষশক্তির এই পরাজয়ের মূলে বেশ কিছু কারণ ছিল।

বিশ্বের সহানুভূতি মিত্রপক্ষের দিকে

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু করেছিল অক্ষশক্তি-জার্মানি, ইতালি ও জাপান। তারা সমগ্র বিশ্বকে ফ্যাসিবাদের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করতে চেয়েছিল। অপরদিকে মিত্রপক্ষের লক্ষ্য ছিল বিশ্বে গণতন্ত্র, শাস্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা। স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের সহানুভূতি ছিল মিত্রপক্ষের দিকে।

জার্মান আগ্ৰাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ

অক্ষশক্তি কর্তৃক অধিকৃত দেশগুলির জনসাধারণেরও সমর্থন ছিল মিত্রপক্ষের দিকে। অত্যাচারী জার্মানরা যে দেশ দখল করত, সেই দেশকে তারা সর্বস্বান্ত করে দিত। এই কারণে ফ্রান্স, গ্রিস, যুগোশ্লাভিয়া প্রভৃতি দেশে জার্মান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়।

অক্ষশক্তি স্বদেশেই জনপ্রিয় ছিল না

হিটলার-মুসোলিনি প্রমুখ স্বৈরাচারী শাসকরা নিজ দেশেই জনপ্রিয় ছিলেন না। যুদ্ধজনিত কারণে প্রাণহানি, অর্থনৈতিক সংকট ও নিরাপত্তাহীনতা সাধারণ দেশবাসী মেনে নিতে পারেন নি। দেশে নাৎসি শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া শুরু হয় এবং একাধিকবার বলপূর্বক নাৎসি শাসন উৎখাতের চেষ্টা হয়। হিটলারকে তাঁর স্বদেশেই বারংবার মৃত্যুর মুখোমুখি পড়তে হয়েছে। ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দেই তাঁকে অন্তত আটবার হত্যার চেষ্টা করা হয়। ইতালির মুসোলিনিকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাই এবং তিনি নিহত হন তাঁর দেশবাসীর হাতে।

অক্ষশক্তির দুর্বলতা

যুদ্ধের শুরু থেকেই অক্ষশক্তি ছিল দুর্বল। তাদের প্রধান ভরসা ছিল জার্মানি। তার দুই সহযোগী ইতালি ও জাপান ছিল অতি দুর্বল। ইতালি-র কোনও সামরিক শক্তি বা যুদ্ধপ্রস্তুতি ছিল না। তাকে জার্মানির সহযোগী না বলে, ‘বোঝা’ বলাই যুক্তিসংগত। স্পেনের একনায়ক ফ্রাঙ্কো জার্মানিকে কোনোভাবেই সাহায্য করেন নি। যুদ্ধের শুরু থেকেই নানা প্রশাসনিক দুর্বলতা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য জাপানের আর্থিক অবস্থাও খুবই শোচনীয় হয়ে পড়ে। ফিনল্যান্ড, রুমানিয়া, বুলগেরিয়া, হাঙ্গেরি সংকটকালে হিটলারের পক্ষ ত্যাগ করে।

শক্তিশালী মিত্রপক্ষ

ইঙ্গ-ফরাসি পক্ষের অবস্থা সব দিক থেকেই ভালো ছিল। প্রয়োজনে তারা তাদের উপনিবেশগুলি থেকে অর্থ, অস্ত্র ও সৈন্য আনতে পারত। আমেরিকা তাদের নানাভাবে সাহায্য করে। যুদ্ধে যোগদানের পূর্বেই আমেরিকা মিত্রপক্ষকে প্রথমে নগদে এবং পরে ধারে অস্ত্র জোগাতে থাকে। সুতরাং একদিকে ছিল ব্রিটেন, ফ্রান্স, আমেরিকা এবং রাশিয়ার সম্মিলিত সম্পদ ও উদ্যম, আর অপরদিকে জার্মানির একক সম্পদ ও উদ্যম। এই দুই অসম শক্তির মধ্যে যুদ্ধে মিত্রপক্ষের জয় অনিবার্য ছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যোগদান

যুদ্ধের সূচনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিত্রপক্ষকে পরোক্ষভাবে সাহায্য করেছিল। ইতিমধ্যে জাপান দূরপ্রাচ্যে মার্কিন নৌ-ঘাঁটি পার্ল হারবারে বিমান আক্রমণ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবল ক্ষুদ্ধ হয় এবং পূর্ণশক্তি নিয়ে মিত্রপক্ষের অনুকূলে যুদ্ধে যোগদান করে। এর ফলে যুদ্ধের গতি পরিবর্তিত হতে থাকে।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা

  • (১) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে হিটলারের শোচনীয় ব্যর্থতা জার্মানির পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ। ফ্রান্স জয়ের পর হিটলার ইংল্যান্ড জয়ে অগ্রসর হন, কিন্তু নৌ-শক্তিতে অপ্রতিরোধ্য ইংল্যান্ডকে পরাজিত করে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করা হিটলারের পক্ষে সম্ভব হয় নি।
  • (২) এই কারণে হিটলার বিমান পথে ইংল্যান্ড আক্রমণের পরিকল্পনা করেন। সেক্ষেত্রেও তিনি ব্যর্থ হন। কারণ, ইংল্যান্ডবাসীর সদাজাগ্রত দৃষ্টি এড়িয়ে কোনও জার্মান বিমানের পক্ষে ইংল্যান্ডে প্রবেশ করা সম্ভব হয় নি।
  • (৩) উপরন্তু, ইংল্যান্ড পাল্টা বিমান আক্রমণ হেনে জার্মানির বহু শিল্প ও নগর ধ্বংস করে এবং বহু জার্মান বিমান ভূপাতিত করে। যুদ্ধে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ব্যর্থতা জার্মানির পরাজয়ের অন্যতম প্রধান কারণ।

যুদ্ধ জাহাজ নির্মাণে গুরুত্ব

এই ধরনের সর্বগ্রাসী যুদ্ধে বিমানই সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। জাপান এই সত্যটি বুঝতে পারে নি এবং এই কারণে সে যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের উপর গুরুত্ব আরোপ করে।

শীতের প্রকোপ

হিটলার মনে করেছিলেন যে, জার্মান বাহিনী অপ্রতিরোধ্য। তিনি রাশিয়া আক্রমণ করেন, কিন্তু সেখানকার প্রবল শীত মোকাবিলার জন্য কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নি। এর ফলে সেনাবাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

নৌ শক্তির অভাব

জার্মানির নৌ-শক্তির অভাব তাকে যথেষ্ট বেগ দেয়। নৌ-শক্তির অভাবের ফলেই জার্মানির পক্ষে ভারতবর্ষ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রিটেনে পাঠানো সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করা সম্ভব হয় নি। অন্যদিকে মিত্রশক্তির জাহাজগুলি বাধা সৃষ্টি করায় জার্মানির সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়।

রুশ অভিযানের ব্যর্থতা

  • (১) হিটলারের রাশিয়া অভিযান তাঁর পতনের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত। রুশ-জাপান অনাক্রমণ চুক্তি ভঙ্গ করে রাশিয়া আক্রমণ করায় হিটলারকে একই সঙ্গে দুটি রণাঙ্গনে যুদ্ধ করতে হয়।
  • (২) হিটলার যদি রাশিয়ার সঙ্গে অনাক্রমণ চুক্তি অক্ষুণ্ণ রেখে সর্বশক্তি নিয়ে ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হতেন, তবে হয়তো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাস অন্যভাবে লেখা হত।
  • (৩) হিটলার চেয়েছিলেন যত শীঘ্র সম্ভব রুশ অভিযান শেষ করতে, কিন্তু তাঁর সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় এবং তিনি রাশিয়ায় দীর্ঘদিনের জন্য আটকে পড়েন।
  • (৪) স্ট্যালিনগ্রাডের যুদ্ধে হিটলার প্রবল বাধার সম্মুখীন হন। রুশ সেনার প্রতিরোধ অতিক্রম করে নগরে প্রবেশ করা অসম্ভব হয়ে ওঠে। অভিজ্ঞ সেনাপতিরা স্ট্যালিনগ্রাডকে অবরোধ করে রেখে রাশিয়ার অন্যান্য অঞ্চল জয়ের পরামর্শ দেন। হিটলার তাদের পরামর্শে কর্ণপাত না করে মহা ভুল করেন।
  • (৫) স্ট্যালিনগ্রাড অভিযান তাঁর মর্যাদার প্রশ্নে রূপান্তরিত হয় এবং এখানেই তিনি তাঁর সব শক্তি নিয়োগ করেও ব্যর্থ হন। এই অভিযানের ব্যর্থতা জার্মানির পতনকে ত্বরান্বিত করে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অক্ষশক্তির পক্ষে যোগদানকারী দেশগুলি শুরু থেকেই ছিল দুর্বল। অন্যদিকে মিত্রপক্ষের দেশগুলি সব দিক থেকেই ছিল সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। তাই অক্ষশক্তির পরাজয় ছিল অবশ্যম্ভাবী।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের ভূমিকা

আডলফ হিটলার, অস্ট্রীয় বংশোদ্ভূত একজন জার্মান রাজনীতিবিদ।  যিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন  ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট জার্মান ওয়ার্কার্স পার্টির। তিনি   ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জার্মানির চ্যান্সেলর ছিলেন। আর ১৯৩৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সে দেশেরই ফিউরার পদে নিয়োগ ছিলেন।

হিটলার ই সেই ব্যক্তি জিনি তার সকল রাজনৈতিক বক্তৃতার মাধ্যমে  জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র বিরোধিতা  ও ইহুদী বিদ্বেষ  ছড়াতে থাকেন।  তিনি  রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ঢেলে সাজিয়েছিলেন।  সামরিক বাহিনীকে সজ্জিত করেছিলেন নতুন নতুন সব অস্ত্রশস্ত্রে।  আর  সর্বোপরি জার্মানিতে একটি সমগ্রতাবাদী ও ফ্যাসিবাদী একনায়কত্ব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

হিটলার  “লেবেনস্রাউম”  (জীবন্ত অঞ্চল) দখল করে নেয়ার মত এক বৈদেশিক নীতির  অনুসরন করে যান। তারই নেতৃত্বে  ১৯৩৯ সালে জার্মানরা পোল্যান্ড অধিকার করে। আর এরই ফলশ্রুতিতে ব্রিটেন ও ফ্রান্স জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এভাবেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়।

মিত্র শক্তির প্রকোপে  ১৯৪৫ সালের মধ্যেই জার্মানি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। আর হিটলারের এই একরোখা  রাজ্য জয় ও বর্ণবাদী আগ্রাসনের কারণে প্রাণ হারাতে হয় লক্ষ লক্ষ মানুষকে।  ৬০ লক্ষ ইহুদিকে হিটালরের পরিকল্পনামাফিক হত্যা করা হয়। ইহুদি নিধনের এই অপারেশন টি    হলোকস্ট নামে পরিচিত।

১৯৪৫ সালে ৩০ শে এপ্রিল রেড আর্মি কর্তৃক  বার্লিন দখল হওয়ার সময়ে, ফিউরারবাংকারে তিনি সস্ত্রীক আত্মহত্যা করেন। এবং তার মৃত্যুর মাস খানিক পরেই আত্মসমর্পণ করে জার্মান রা।

  • (১) হিটলারের ব্যক্তিগত চরিত্রও জার্মানির পতনের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত। তিনি ছিলেন উদ্ধত, আত্মম্ভরি, প্রভুত্বপরায়ণ, খামখেয়ালি, সবজান্তা এবং সন্দেহপ্রবণ।
  • (২) পদস্থ কর্মচারী বা অভিজ্ঞ সেনানায়কদের তিনি যোগ্য মর্যাদা দিতেন না। তিনি তাঁদের রচিত পরিকল্পনা পরিবর্তন করে তাঁর ইচ্ছামতো পরিকল্পনা সেনাদল ও প্রশাসনের উপর চাপিয়ে দিতেন।
  • (৩) তাঁর বিশ্বস্ত অনুচর গোয়েরিং ও হিমলার তাঁর অত্যাচার থেকে রেহাই পান নি। তাঁর স্বেচ্ছাচারে বিব্রত রোমেল-এর মতো দক্ষ তরুণ সেনাপতিও আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন। এইসব কারণে প্রশাসন ও সেনাদলে অনেকেই তাঁকে পছন্দ করত না এবং তিনিও তাদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হন।

বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব

পৃথিবীর ইতিহাসে  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এক ভয়ংকর ধ্বংসযজ্ঞ ঘটনা । এর প্রভাব ছিল মর্মান্তিক  ও সুদূরপ্রসারী । এই যুদ্ধের মাধ্যমেই আমেরিকা ও রাশিয়া সমগ্র  পৃথিবীর ভেতর, বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের অধিকার নেয় । এর পররেই ব্রিটেন, ফ্রান্স, ইতালির মত  ইউরোপীয় দেশ গুলোর  অবস্থান হয় কর্তৃত্বের দ্বিতীয় সারিতে । ইতালিতে গঠিত হয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার।  পতন হয় ফ্যাসিবাদের।  পূর্ব জার্মানি এবং পশ্চিম জার্মানি দুইটি হিসেবে বিভক্ত হয়ে যায় জার্মানি।

  • এই  বিশ্বযুদ্ধের পরপরই সাম্যবাদী আদর্শ  পৃথিবীর ব্যাপী  ছড়িয়ে পড়ে । এর মধ্যে  রাশিয়ায় সর্ব প্রথম  সাম্যবাদী আদর্শ জয় লাভ করে হয়। এর পরে পোল্যান্ড, চিন, চেকোশ্লোভাকিয়া, পূর্ব জার্মানি  দেশ গুলোও একে একে সাম্যবাদী আদর্শ গ্রহণ করে। এবং একটি  প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচয় লাভ করে।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের   প্রভাবে সমাজতান্ত্রিক বক্তা হিসেবে  পৃথিবীর নানা  দেশে কমিউনিস্ট দলের  আত্মপ্রকাশ ঘটে ।  গোটা পৃথিবীর রাষ্ট্রসমূহ দুইটি  ভাগ হয়ে যায় ।
  • তবে ভারত সহ কিছু দেশ এর মধ্যে নিরপেক্ষ থেকে যায়। দুটি জোটে বিভক্ত হয়ে যাওয়া দেশগুলির মধ্যে এক ধরণের স্নায়ু  যুদ্ধ  শুরু হয়।   যার নাম কোল্ড ওয়ার।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর পর,  পরাধীন দেশগুলিতে শুরু হয়ে যায় স্বাধীনতার লড়াই । বিশেষ করে  কলোনিয়াল অঞ্চল  তাদের স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হয়ে উঠে।    সাম্রাজ্যবাদী শাসকেরা   বুঝতে পরে যে সাম্রাজ্যবাদী শক্তির পতন  ঘটতে আর বেশি দেরি নেই ।  ফলে  উপনিবেশগুলিকে স্বাধীনতা দানে তৎপর হয় হয় দেশগুলি । যার ফলে  বেশ কিছু  দেশ স্বাধীনতা লাভ করে । তেমনি ব্রিটেনে ও ভারত,  পাকিস্তানের কর্তৃত্ব ছাড়তে বাধ্য  হয়।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির  পর বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে  জাতিসংঘ  গঠিত  হয় । এখন  পর্যন্ত এই  সংস্থা বিশ্বের  শান্তি এবং নিরাপত্তা রক্ষায় ও মানুবজাতির সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
  • দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবের উল্লেখযোগ্য অংশ  লিটল বয়।  এর ধ্বংসজজ্ঞ এত ব্যপক  ছিল যে, প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কাঠের যত স্থাপত্ব  ছিল  তা সবই  একেবারে মাটির সাথে মিশে গিয়েছিল। চোখের পলকে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল পুরো শহর। আর এই  ৭৬ বছর পরেও হিরোশিমা নাগাসাকি শহরের মানুষেরা সেই তেজস্ক্রিয়তার ধকল কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এখনো  তেজস্ক্রিয়তার প্রভাবে পঙ্গুত্ব,  বিকলাঙ্গসহ প্রানঘাতি  রোগব্যাধীও দেখা যায়।
  • রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও সংঘর্ষের  কারণে  অগণিতসংখ্যক লোক শরণার্থী হয়েছিলেন এই সময়ে ।  একমাত্র ইউরোপেই ৪০ মিলিয়নেরও অধিক লোক যুদ্ধের পরে  শরণার্থী হয়ে ছিল। যুদ্ধের শেষ মাসে  পাঁচ মিলিয়ন জার্মান বেসামরিক নাগরিক পূর্ব প্রুশিয়া, পোমারানিয়া এবং সিলেসিয়া রাজ্য হতে  রেড আর্মির তীব্র আক্রমণের শিকার হয়।  এরপর ম্যাকলেনবার্গ, ব্রান্ডেনবার্গ এবং স্যাক্সনিতে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়।
  • পটসড্যাম সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মিত্রশক্তি অনুমোদন  করে না। ফলে  যুগোস্লাভিয়া এবং রোমানিয়ার  হাজার হাজার  জার্মানদেরকে সোভিয়েত ইউনিয়নে দাস শ্রমের কাজে ফেরত পাঠানো হয়।  ইতিহাসে এটি ছিল সর্বোচ্চ   শরণার্থী স্থানান্তর।  এতে প্রায়  ১৫ মিলিয়ন জার্মানদের  অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাছাড়া দুই মিলিয়নেরও বেশি জার্মান যুদ্ধকালীন সময়ে বিতাড়িত হযন ও  প্রাণ হারান।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ

Q1. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে শুরু হয়

উত্তরঃ ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ সালে পোলিশ করিডর আক্রমনের মাধ্যমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরাম্ভ হয়।

Q2. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কত মানুষ মারা যায়

উত্তরঃ হতাহতের সংখ্যা অনুসারে –
সোভিয়েত ইউনিয়ন – ২ কোটি ২২ লক্ষ
চীন – ২ কোটি
জার্মানী – ৮৮ লক্ষ
পোল্যান্ড – ৫৬ লক্ষ
জাপান – ৩২ লক্ষ
ভারত (+পাকিস্তান ও বাংলাদেশ) – ২৫ লক্ষ
ফিলিপাইন – ১০ লক্ষ
গ্রীস – ৮ লক্ষ
ফ্রান্স – ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার
কোরিয়া – ৪ লক্ষ ৭৩ হাজার

Q3. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি আত্মসমর্পণ করে কবে

উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানি মিত্রবাহিনীর নিকট আত্মসমর্পন করে- ৭ মে ১৯৪৫ সালে।

Q4. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আমেরিকার যোগদানের কারণ

উত্তরঃ বৃহত্তর ঐতিহাসিক শক্তিগুলি শেষ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসে, কিন্তু প্রত্যক্ষ এবং তাৎক্ষণিক কারণ যা যুদ্ধে তার আনুষ্ঠানিক প্রবেশের দিকে পরিচালিত করে তা হল পার্ল হারবারে জাপানি আক্রমণ।
এই অন্ধ আক্রমণটি 7 ডিসেম্বর, 1941-এর ভোরে এসেছিল, যখন 353টি ইম্পেরিয়াল জাপানি বোমারু বিমান হাওয়াইন নৌ ঘাঁটির উপর দিয়ে উড়ে যায় এবং তাদের ধ্বংস ও মৃত্যুর কার্গো ফেলে দেয়। তারা 2,400 আমেরিকানকে হত্যা করেছে, আরও 1,200 জন আহত হয়েছে; চারটি যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে, অন্য দুটিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ঘাঁটিতে অবস্থানরত অগণিত অন্যান্য জাহাজ ও বিমান ধ্বংস করে। পার্ল হারবারে নিহত আমেরিকান নাবিকদের অধিকাংশই ছিল জুনিয়র সৈন্য। এর মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে প্রবেশের আরেকটি কারণ ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুর, নিষ্ঠুর এবং সবচেয়ে ঘৃণ্য নেতার উত্থান: অ্যাডলফ হিটলার।
1930-এর দশকে, হিটলার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন, জার্মান জনগণের হতাশাকে খাওয়ান – প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে সামরিক শক্তি ছাড়াই তাদের বাধ্য করা হয়েছিল এমন অনাহারী অবস্থান থেকে তাদের গৌরব ও সমৃদ্ধিতে ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদ, যা ইতিহাসের অন্যতম নৃশংস শাসন গঠনের অনুমতি দেয় নাৎসি।
প্রথমদিকে, তবে, বেশিরভাগ আমেরিকানরা এই ঘটনাটির প্রতি খুব বেশি মনোযোগ দেয়নি, পরিবর্তে মহামন্দার কারণে তাদের নিজস্ব দুর্দশার কারণে বিভ্রান্ত হয়েছিল।

Q5. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ কবে শেষ হয়

উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ আর যুদ্ধ শেষ ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৫।

Q6. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোথায় করা হয়

উত্তরঃ নুরেমবার্গ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কোথায় করা হয়।

Q7. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কয়টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল

উত্তরঃ ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ অর্থাৎ দীর্ঘ ছয় বছর এই দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধ স্থায়ী ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশ অংশ নেয়।

Q8. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে পার্ল হারবার আক্রমণ করেছিল কোন দেশ

উত্তরঃ ১৯৪১ সালের ৭ ডিসেম্বর। প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারে অবস্থিত মার্কিন নৌঘাঁটিতে আক্রমণ করে বসে জাপানের সামরিক বাহিনী।

Q9. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন রাষ্ট্রপতি কে ছিলেন

উত্তরঃ রুজভেল্ট ও হেনরি ট্রুম্যান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

Q10. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন

উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হিদেকি তোজো।

Q11. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কাল

উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ব্যাপ্তিকাল ছিল ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ থেকে ২ সেপ্টেম্বার ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত।

Q12. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন

উত্তরঃ উইনস্টন চার্চিল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

Q13. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের ভাইসরয় কে ছিলেন

উত্তরঃ লর্ড লিনলিথগো, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতের ভাইসরয় ছিলেন।

Q14. স্পেনের গৃহযুদ্ধ কে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহড়া বলা হয় কেন

উত্তরঃ যেহেতু স্পেনের গৃহযুদ্ধে একদিকে ইতালি-জার্মানির জয় এবং অপরদিকে ইঙ্গ-ফরাসি শক্তির কূটনৈতিক পরাজয় ঘটে সেহেতু এই যুদ্ধকে ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মহড়া’ বলা যেতে পারে।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।