স্বাভাবিক সংখ্যা কাকে বলে
শূন্য থেকে বড় সকল পূর্ণ সংখ্যা বা ধনাত্মক অখণ্ড সংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলে । অন্যভাবে বলতে গেলে, সকল গণনার যোগ্য এমন সংখ্যা কে স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। যেমন 1,2,3,4…N
অনেকে বলেন, যেসব পূর্ণসংখ্যা গণনার কাজে বা ক্রম নির্দেশ করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে তাদেরকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলা হয়।
যেমনঃ ১, ২, ৩, ৪, ৫, . . . . ইত্যাদি সংখ্যাগুলো আমরা গণনার কাজে ব্যবহার করে থাকি। যেমন; ৩টি আম, ২টি কলম ইত্যাদি ।
আবার ক্রম নির্দেশক সংখ্যা হিসেবে ১ম, ২য়, ৩য়, . . . . . . ইত্যাদি ব্যবহার করি। উদাহরণস্বরুপ, মেয়েটি ১ম স্থান অধিকার করেছে।
সুতরাং স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো হল ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, . . . . ইত্যাদি।
সাধারণভাবে আমরা যেসব সংখ্যা সচরাচর গণনার জন্য ব্যবহার করি, তাদের স্বাভাবিক সংখ্যা বলে। শূন্য অপেক্ষা বড় যেকোনো পূর্ণ সংখ্যাকে স্বাভাবিক সংখ্যা বলা হয়।
যেমন- ২, ৩, ৫ ইত্যাদি। স্বাভাবিক সংখ্যার সেটকে N দ্বারা প্রকাশ করা হয়। স্বাভাবিক সংখ্যার সেট, N = 1, 2, 3, 4, 5,6, ………………..ইত্যাদি।
ইতালীয় গণিতবিদ পিয়ানো ১৮৯৯ সালে স্বীকার্যের মাধ্যমে স্বাভাবিক সংখ্যার সংজ্ঞা দিয়েছেন।
স্বাভাবিক সংখ্যার স্বীকার্য
- ১ একটি স্বাভাবিক সংখ্যা।
- যেকোনো স্বাভাবিক সংখ্যার সাথে ১ যোগ করলে তার উত্তরাধিকারী সংখ্যা অর্থাৎ পরবর্তী সংখ্যা পাওয়া যায়।
- দুটি সংখ্যার উত্তরাধীকারী সমান হলে সংখ্যাদ্বয়ও একে অন্যের সমান হবে।
- ১ ব্যতিত সকল স্বাভাবিক সংখ্যাই কারও না কারও উত্তরাধিকারী।
স্বাভাবিক সংখ্যা কত প্রকার
সত্যিকার অর্থে স্বাভাবিক সংখ্যা এবং ধনাত্মক সংখ্যার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তাই বলা যেতে পারে স্বাভাবিক সংখ্যা বা ধনাত্মক সংখ্যা তিন প্রকার। যথা,
১. মৌলিক
২. যৌগিক /কৃত্তিম/অমৌলিক এবং
৩. ১ এক
তবে সাধারনত স্বাভাবিক সংখ্যা কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ
১. জোড় সংখ্যা এবং
২. বিজোড় সংখ্যা
জোড় সংখ্যা কাকে বলে
যে সংখ্যাকে সমান দুভাগে ভাগ কয়ার যায় অর্থাৎ ২ দিয়ে নিঃশেষে বিভাগ করা যায় তাকে জোড় সংখ্যা বলে। যেমন- ২, ৪, ৬, ৮…………ইত্যাদি।
অন্যভাবে,
কোন সংখ্যাকে ২ দ্বারা ভাগ করলে যদি কোন ভাগশেষ বা অবশিষ্ট না থাকে, তবে ঐ সংখ্যাকে জোড় সংখ্যা বলে। যেমন– ২, ৪, ৬, ৮, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ২০, ২২, ২৪, ২৬, ২৮, ৩০ ইত্যাদি।
বিজোড় সংখ্যা কাকে বলে
যে সংখ্যাকে সমান দুভাগে ভাগ করা যায় না বা ২ দিয়ে নিঃশেষে বিভাগ করা যায় না তাকে বিজোড় সংখ্যা বলে। যেমনঃ ১, ৩, ৫, ৭, ৯……………ইত্যাদি।
অন্যভাবে,
কোন সংখ্যাকে ২ দ্বারা ভাগ করার পর যদি ভাগশেষ বা অবশিষ্ট থেকে যায়, তবে ঐ সংখ্যাকে বিজোড় সংখ্যা বলে। যেমন– ১, ৩, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩, ১৫, ১৭, ১৯, ২১, ২৩, ২৫, ২৭, ২৯ ইত্যাদি।
জোড় ও বিজোড় সংখ্যা চেনার উপায়
যে সমস্ত সংখ্যা ২ দ্বারা বিভাজ্য অর্থাৎ যে সমস্ত সংখ্যার এককের ঘরের অঙ্ক ২, ৪, ৬, ৮ বা ০ তারা জোড় সংখ্যা। যেমন—২, ৫৪, ১৫৬, ৯০৯৮, ১৫৮৩৪০, ইত্যাদি।
আবার যে সব সংখ্যা ২ দ্বারা বিভাজ্য নয় অর্থাৎ যে সব সংখ্যার এককের ঘরের অঙ্ক ১, ৩, ৫, ৭ বা ৯, তারা বিজোড় সংখ্যা। যেমন—১, ২৩, ৬৯৫, ২০৬৭, ৭২০৩৮৯, …. ইত্যাদি।
জোড় সংখ্যা ও বিজোড় সংখ্যা সম্পর্কিত কয়েকটি নিয়ম
- জোড় সংখ্যা + জোড় সংখ্যা = জোড় সংখ্যা
- জোড় সংখ্যা ⁻ জোড়সংখ্যা = জোড় সংখ্যা
- বিজোড় সংখ্যা + বিজোড় সংখ্যা = জোড় সংখ্যা
- বিজোড় সংখ্যা ⁻ বিজোড় সংখ্যা = জোড় সংখ্যা
- জোড় সংখ্যা × জোড় সংখ্যা = জোড় সংখ্যা
- জোড় সংখ্যা × বিজোড় সংখ্যা = জোড় সংখ্যা
- বিজোড় সংখ্যা × বিজোড় সংখ্যা = বিজোড় সংখ্যা
আরো পড়তে: বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি কি, বাইনারি সংখ্যা বের করার পদ্ধতি, বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির আবিষ্কারক কে
বাস্তব সংখ্যা কাকে বলে
বাস্তব সংখ্যা” যার ইংরেজি হচ্ছে “Real Number.” সহজ করে যদি বলা হয় তবে, সকল ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা কিংবা সকল মূলদ ও অমূলদ সংখ্যাকে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়। বাস্তব সংখ্যায় শূন্য সংখ্যাও বিদ্যমান।
আরো সহজ করে যদি বলি, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যে সকল সংখ্যা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি তাকেই মূলত বাস্তব সংখ্যা বলা হয়। যেটি ছাড়া আমাদের নিত্যদিনের হিসাব নিকাশ করা অসম্ভব।
উদাহরণ দিয়ে যদি বলি তবে, ০, +১, -১, +২, -২, ৫.৩৪ ইত্যাদি বাস্তব সংখ্যা।
বইতে থাকা সজ্ঞাটি হলো “সকল মূলদ সংখ্যা এবং অমূলদ সংখ্যাকে বাস্তব সংখ্যা বলে।” অন্যভাবে, সজ্ঞাটা হবে, “ধনাত্মক সংখ্যা, ঋণাত্মক সংখ্যা এবং শূন্যকে একত্রে বাস্তব সংখ্যা বলে।”
আরও সহজ করে বলতে গেলে বলা যায় “প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহৃত সংখ্যাগুলোকেই বাস্তব সংখ্যা বলে।” বাস্তব সংখ্যার সেটকে R দ্বারা প্রকাশ করা হয় বলে এসএসসি লেভেলে পড়ানো হলেও আসলে একে প্রকাশ করা হয় R দ্বারা। উদাহারণস্বরূপ বলা যায়, 1, 2, -7, 3.1416…., 2.2222222222…, 5252 ইত্যাদি সবই বাস্তব সংখ্যা।
বাস্তব সংখ্যার প্রকারভেদ
বাস্তব সংখ্যাকে ভাগ করতে চাইলে মূলত দুইভাগে ভাগ করা যায়।
- মূলদ সংখ্যা
- অমূলদ সংখ্যা
এখান থেকেই আমরা প্রথম সজ্ঞাটি দিয়েছিলাম বা বইতে দেয়া হয়েছে। এই মূলদ আর অমূলদ আবার কী? এসব জানব, তবে এদেরও প্রকারভেদ আগে জেনে নেয়া যাক।
মূলদ সংখ্যাকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়।
- পূর্ণ সংখ্যা
- ভগ্নাংশ
পূর্ণ সংখ্যাকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।
- ধনাত্মক পূর্ণসংখ্যা বা স্বাভাবিক সংখ্যা
- শূন্য (০)
- ঋণাত্মক সংখ্যা
ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা আবার ৩ প্রকার।
- মৌলিক সংখ্যা
- এক (১)
- যৌগিক সংখ্যা
অন্যদিকে আবার মূলদ সংখ্যার দ্বিতীয় ভাগ, অর্থাৎ ভগ্নাংশের প্রকার দুটি।
- সাধারণ ভগ্নাংশ
- দশমিক ভগ্নাংশ
সাধারণ ভগ্নাংশকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- প্রকৃত সাধারণ ভগ্নাংশ
- অপ্রকৃত সাধারণ ভগ্নাংশ
অপ্রকৃত সাধারণ ভগ্নাংশের অধীনে আছে এক ধরনের ভগ্নাংশ। আর তা হচ্ছে,
- মিশ্র ভগ্নাংশ
অন্যদিকে দশমিক ভগ্নাংশকে আবার দুইভাগে ভাগ করা যায়।
- সসীম দশমিক ভগ্নাংশ
- অসীম আবৃত্ত ভগ্নাংশ
আর একেবারে শুরুতে বাস্তব সংখ্যাকে যে দুইভাগ ভাগে করেছিলাম তার মধ্য থেকে দ্বিতীয় বিভাগটি অর্থাৎ অমূলদ ভগ্নাংশের একটি ভাগ আছে। আর তা হলো:
- অসীম অনাবৃত্ত দশমিক
এবার আমরা এসবের বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।
আরো পড়তে: মূলদ সংখ্যা কাকে বলে, মূলদ সংখ্যা চেনার উপায়
ক্রমিক সংখ্যা কাকে বলে
যে সংখ্যারশ্রেণিতে প্রতিটি সংখ্যা ঠিক তার পূর্ববর্তী সংখ্যার থেকে 1 বড়ো ও পরবর্তী সংখ্যার থেকে 1 ছোটো, সেই সংখ্যা শ্রেণিকে ক্রমিক সংখ্যা বলে ।
যে সকল সংখ্যাকে ক্রম অনুসারে সাজানো যায়, তাদের ক্রমিক সংখ্যা বলে। যেমনঃ- ১, ২, ৩, ৪, ৫…… এদেরকে বলে ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যা, ১, ৩, ৫, ৭,……. এদেরকে বলে ক্রমিক স্বাভাবিক বিজোড় সংখ্যা এবং ২, ৪, ৬, ৮, ১০……এদেরকে বলে ক্রমিক স্বাভাবিক জোড় সংখ্যা ইত্যাদি।
উদাহরণ: 5, 6, 7, 11, 12, 13 ইত্যাদি ।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | সংখ্যা
Q1. ঋণাত্মক সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তর: শূন্য অপেক্ষা ছোটো সংখ্যাগুলিকে ঋণাত্মক সংখ্যা বলে। যেমন -১, -২, -৩ ইত্যাদি।
Q2. ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা কাকে বলে?
উত্তর: শূন্য অপেক্ষা বড় সংখ্যাগুলিকে ধনাত্মক সংখ্যা বলে। যেমন- ১, ২, ১০০ ইত্যাদি।
Q3. সদৃশকোণী বহুভুজ কাকে বলে?
উত্তর: সমান সংখ্যক বাহুবিশিষ্ট দুইটি বহুভুজের একটির কোণগুলো যদি ধারাবাহিকভাবে অপরটির কোণগুলোর সমান হয়, তবে বহুভুজ দুইটিকে সদৃশকোণী (equiangular) বলে।
Q4. সমবৃত্তভূমিক বেলনের সমগ্রতলকে কি বলে?
উত্তর: সমবৃত্তভূমিক বেলনের সমগ্রতলকে পৃষ্ঠতল বলে।
Q5. সমবৃত্তভূমিক বেলনের বক্রতলকে কি বলা হয়?
উত্তর: সমবৃত্তভূমিক বেলনের বক্রতলকে বক্রপৃষ্ঠ বলা হয়।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।