- যুক্তি কাকে বলে
- আধুনিক যুক্তি বিজ্ঞানের জনক কে
- যুক্তি কয় প্রকার ও কি কি
- অবরোহ যুক্তি কাকে বলে
- আরোহ যুক্তি কাকে বলে
- অবরোহ যুক্তি ও আরোহ যুক্তির মধ্যে পার্থক্য
- যুক্তির আকার কাকে বলে
- যুক্তির বৈধতা বলতে কী বোঝো, যুক্তির বৈধতা কাকে বলে
- অবৈধ যুক্তি কাকে বলে
- যুক্তির অবৈধতা কাকে বলে
- একটি যুক্তি কখন অবৈধ হয়
- যুক্তির আকারগত বৈধতা বলতে কী বোঝো
- যুক্তির বস্তুগত সত্যতা বলতে কী বোঝো
- যুক্তির আকারগত সত্যতা কাকে বলে
- উপমা যুক্তি কাকে বলে
- উপমা যুক্তির ভিত্তি কি, উপমা যুক্তি মূল্যায়নের মানদণ্ড
- মন্দ উপমা যুক্তি কাকে বলে
- FAQ | যুক্তি
যুক্তি কাকে বলে
যুক্তি হলো এমন বচন সমষ্টি যেখানে একটি বচনের সত্যতা একক বা একাধিক সত্যতার উপর নির্ভর করে বলে দাবি করা হয় ।
উদাহরন – সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব, সকল শিক্ষক হয় মরণশীল জীব
আধুনিক যুক্তি বিজ্ঞানের জনক কে
রজার বেকন আধুনিক যুক্তি বিজ্ঞানের জনক বলা হয়।
রজার বেকন একজন মধ্যযুগীয় ইংরেজ দার্শনিক, যিনি অভিজ্ঞতার আলোকে প্রকৃতির অধ্যয়নের উপর যথেষ্ট জোর দিয়েছিলেন। তিনি আধুনিক পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের একজন পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচিত। তিনি তাঁর স্বাধীন ইচ্ছাশূন্য ও জাদুবিদ্যা সম্পর্কিত গল্পের জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এজন্য তাকে তাকে প্রারম্ভিক আধুনিক যুগের একজন যাদুকর হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
যুক্তি ও বিজ্ঞানে ফ্রান্সিস বেকন যে নবযুগের সূচনা করেন, তার ভিত্তি স্থাপিত হয় তিনশ’ বছর পূর্বে রজার বেকনের হাতে।
যুক্তি কয় প্রকার ও কি কি
যুক্তি দুই প্রকার। যথা- 1) অবরোহ যুক্তি ও 2) আরোহ যুক্তি।
অবরোহ যুক্তি কাকে বলে
অবরোহ শব্দের অর্থ নেমে আসা।
দুই বা ততোধিক আশ্রয় বাক্যের উপর নির্ভর করে বেশি ব্যাপক থেকে কম ব্যাপকতর সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করাই হল অবরোহ যুক্তি।
অবরোহ যুক্তির উদাহরণ :
সকল মানুষ হয় মরণশীল।
রতন হয় মানুষ।
.’. রতন হয় মরণশীল।
আরোহ যুক্তি কাকে বলে
আরোহ কথার অর্থ হল উঠে আসা।
যুক্তিবাক্যের কম বা সংকীর্ণ বিষয় থেকে ব্যাপকতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করাই হল আরোহ যুক্তি।
আরোহ যুক্তির উদাহরণ :
অপরাজিতা রাতে ফোটে হয় সুগন্ধযুক্ত।
টগর রাতে ফোটে হয় সুগন্ধযুক্ত।
শিউলি রাতে ফোটে হয় সুগন্ধযুক্ত।
. ‘ . রাতে ফোটা সকল ফুল হয় সুগন্ধযুক্ত।
অবরোহ যুক্তি ও আরোহ যুক্তির মধ্যে পার্থক্য
অবরোহ যুক্তিতে সিদ্ধান্তের ব্যাপকতা হেতুবাক্যের তুলনায় কম হয়। কিন্তু আরোহ যুক্তিতে সিদ্ধান্তের ব্যাপকতা হেতুবাক্যের তুলনায় সবসময় অধিক হয়।
যুক্তির আকার কাকে বলে
ন্যায়াকার বা যুক্তির আকার হল সংযোজক প্রতীক ও বচনবর্ণ দ্বারা মিলিত এমন একটি পরম্পরা যার মধ্যে বচন বর্ণের স্থলে নিয়মানুসারে বচন সংস্থাপন করলে ফলস্বরূপ ন্যায় বা যুক্তি পাওয়া যায়।
যুক্তির আকার হল যুক্তির একটি প্যাটার্ন যা হেতুবাক্য এবং সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে। যুক্তির আকারগুলিকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয়:
- অনুমানমূলক যুক্তি: এগুলি হল সেই যুক্তি যা একটি হেতুবাক্য থেকে একটি সিদ্ধান্ত বের করে।
- ডিডাক্টিভ যুক্তি: এগুলি হল সেই যুক্তি যা হেতুবাক্য থেকে সিদ্ধান্ত বের করে যা হেতুবাক্যগুলির মধ্যে থাকা তথ্যের উপর ভিত্তি করে অনিবার্য।
- ইনডাক্টিভ যুক্তি: এগুলি হল সেই যুক্তি যা হেতুবাক্য থেকে একটি সিদ্ধান্ত বের করে যা হেতুবাক্যগুলির মধ্যে থাকা তথ্যের উপর ভিত্তি করে সম্ভাব্য।
অনুমানমূলক যুক্তির আকার
অনুমানমূলক যুক্তিগুলি হল সেই যুক্তি যা একটি হেতুবাক্য থেকে একটি সিদ্ধান্ত বের করে। হেতুবাক্যগুলি সাধারণত “যদি p হয়, তাহলে q” আকারে থাকে। সিদ্ধান্ত সাধারণত “p, সুতরাং q” আকারে থাকে।
অনুমানমূলক যুক্তির আকারগুলিকে সাধারণত চার ভাগে ভাগ করা হয়:
সরল অনুমান: যদি p হয়, তাহলে q। p। সুতরাং, q।
উদাহরণ: যদি আজ বৃষ্টি হয়, তাহলে রাস্তাগুলি ভিজে যাবে। আজ বৃষ্টি হচ্ছে। সুতরাং, রাস্তাগুলি ভিজে যাবে।
বিপরীত অনুমান: যদি p হয়, তাহলে q। q নয়। সুতরাং, p নয়।
উদাহরণ: যদি আমি একজন ছাত্র হই, তাহলে আমি স্কুলে যাই। আমি স্কুলে যাই না। সুতরাং, আমি একজন ছাত্র নই।
অবিচ্ছেদ্য অনুমান: যদি p হয়, তাহলে q। যদি q হয়, তাহলে r। সুতরাং, যদি p হয়, তাহলে r।
উদাহরণ: যদি আমি একজন ছাত্র হই, তাহলে আমি স্কুলে যাই। যদি আমি স্কুলে যাই, তাহলে আমি আমার পাঠগুলি শিখি। সুতরাং, যদি আমি একজন ছাত্র হই, তাহলে আমি আমার পাঠগুলি শিখি।
অসম্ভব অনুমান: যদি p হয়, তাহলে q। q নয়। সুতরাং, p নয়।
উদাহরণ: যদি আমি একজন মানুষ হই, তাহলে আমার মাথা আছে। আমার মাথা নেই। সুতরাং, আমি একজন মানুষ নই।
যুক্তির আকারগুলির বৈধতা
যুক্তির আকারগুলিকে বৈধ বা অবৈধ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা যেতে পারে। একটি বৈধ যুক্তি হল একটি যুক্তি যা যদি হেতুবাক্যগুলি সত্য হয় তবে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সত্য হবে। একটি অবৈধ যুক্তি হল একটি যুক্তি যা যদি হেতুবাক্যগুলি সত্য হয় তবে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সত্য হবে না।
উদাহরণস্বরূপ, সরল অনুমান হল একটি বৈধ যুক্তি। যদি হেতুবাক্যটি সত্য হয়, তাহলে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সত্য হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আজ বৃষ্টি হয়, তাহলে রাস্তাগুলি ভিজে যাবে। এই হেতুবাক্যটি সত্য হলে, সিদ্ধান্ত “রাস্তাগুলি ভিজে যাবে” অবশ্যই সত্য হবে।
অন্যদিকে, বিপরীত অনুমান হল একটি অবৈধ যুক্তি। যদি হেতুবাক্যটি সত্য হয়, তাহলে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সত্য হবে না। উদাহরণস্বরূপ, যদি আমি একজন ছাত্র হই, তাহলে আমি স্কুলে যাই। এই হেতুবাক্যটি সত্য হলেও, সিদ্ধান্ত “আমি একজন ছাত্র নই” অবশ্যই সত্য হবে না। কারণ একজন ছাত্র স্কুলে নাও যেতে পারে।
যুক্তির আকারগুলির ব্যবহার
যুক্তির আকারগুলি যুক্তি বোঝার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম। এটি আপনাকে যুক্তিগুলিকে বিশ্লেষণ করতে এবং তাদের বৈধতা নির্ধারণ করতে সহায়তা করতে পারে।
যুক্তির আকারগুলি ব্যবহার করে, আপনি নিম্নলিখিতগুলি করতে পারেন:
- যুক্তিগুলির মধ্যে পার্থক্যগুলি বোঝা
- যুক্তিগুলির বৈধতা নির্ধারণ করা
- যুক্তিগুলির শক্তি এবং দুর্বলতাগুলি চিহ্নিত করা
যুক্তির আকারগুলি বুঝলে আপনি যুক্তিগুলিকে আরও ভালভাবে বিশ্লেষণ করতে এবং তাদের বৈধ।
যুক্তির বৈধতা বলতে কী বোঝো, যুক্তির বৈধতা কাকে বলে
বৈধ শব্দটির সাধারণ অর্থ হল যথাযথ। কোন যুক্তি যদি যথাযথভাবে নিয়ম মেনে চলে সেই যুক্তিকেই বলা হয় বৈধ যুক্তি।
যুক্তির বৈধতা বলতে বোঝায় যুক্তির নিয়ম অনুযায়ী সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে হেতুবাক্য থেকে নিঃসৃত হওয়া।
আরো পড়তে: দর্শন কি, দর্শন কাকে বলে, দর্শনের জনক কে, আধুনিক পাশ্চাত্য দর্শনের জনক কে
অবৈধ যুক্তি কাকে বলে
যে যুক্তির হেতুবাক্য সত্য কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা ,তাকে অবৈধ যুক্তি বলে। অবৈধ শব্দটির অর্থ হলো যথাযথভাবে নিয়ম মেনে না চলা।
কোন যুক্তি যদি যুক্তির নিয়মগুলোকে ঠিকমতো মেনে না চলে তাহলে সেই যুক্তিকে অবৈধ যুক্তি বলা হয়।
যুক্তির অবৈধতা কাকে বলে
যুক্তির অবৈধতা হল এমন একটি যুক্তি যা তার হেতুবাক্যগুলি সত্য হলেও সিদ্ধান্তটি মিথ্যা হতে পারে। অর্থাৎ, এমন একটি যুক্তি যা সত্য থেকে মিথ্যায় নিয়ে যেতে পারে।
যুক্তির অবৈধতাকে বিভিন্ন উপায়ে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে। একটি সাধারণ সংজ্ঞা হল, “যুক্তির অবৈধতা হল এমন একটি যুক্তি যা সত্য থেকে মিথ্যায় নিয়ে যেতে পারে।” অন্য একটি সংজ্ঞা হল, “যুক্তির অবৈধতা হল এমন একটি যুক্তি যা তার হেতুবাক্যগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।”
যুক্তির অবৈধতার কিছু উদাহরণ হল:
- জোরপূর্বক সিদ্ধান্ত: এই ধরনের যুক্তিতে, সিদ্ধান্তটি হেতুবাক্যগুলির মধ্যে অন্তর্নিহিত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, “যদি এটি একটি ত্রিভুজ হয়, তাহলে এর তিনটি দিক রয়েছে। এটি একটি ত্রিভুজ। সুতরাং, এর তিনটি দিক রয়েছে।”
- অযৌক্তিক প্রসার: এই ধরনের যুক্তিতে, সিদ্ধান্তটি হেতুবাক্যগুলি থেকে বেশি কিছু দাবি করে। উদাহরণস্বরূপ, “যদি এটি একটি পোষা প্রাণী হয়, তাহলে এটি একটি প্রাণী। এটি একটি কুকুর। সুতরাং, এটি একটি জীবন্ত প্রাণী।”
- অযৌক্তিক সংক্ষিপ্তকরণ: এই ধরনের যুক্তিতে, সিদ্ধান্তটি হেতুবাক্যগুলি থেকে কম কিছু দাবি করে। উদাহরণস্বরূপ, “যদি এটি একটি জীবন্ত প্রাণী হয়, তাহলে এটি একটি প্রাণী। এটি একটি প্রাণী। সুতরাং, এটি একটি পোষা প্রাণী।”
যুক্তির অবৈধতা সনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আমাদের যুক্তিগুলির গুণমান সম্পর্কে সচেতন হতে সাহায্য করে। যদি আমরা জানি যে একটি যুক্তি অবৈধ, তাহলে আমরা সিদ্ধান্তটিকে গ্রহণ করার আগে সাবধানতা অবলম্বন করতে পারি।
যুক্তির অবৈধতা থেকে সতর্ক থাকার জন্য এখানে কিছু টিপস রয়েছে:
- যুক্তির হেতুবাক্যগুলির মধ্যে সম্পর্ক বুঝুন।
- সিদ্ধান্তটি হেতুবাক্যগুলি থেকে কী দাবি করে তা বিবেচনা করুন।
- যুক্তির অবৈধতার কিছু সাধারণ ধরন সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
যুক্তির অবৈধতা সম্পর্কে সচেতন থাকা আমাদের যুক্তিগুলির গুণমান উন্নত করতে এবং মিথ্যা তথ্যের প্রচার থেকে নিজেদের রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
একটি যুক্তি কখন অবৈধ হয়
কোনাে যুক্তির সিদ্ধান্ত যখন আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। তখন যুক্তি অবৈধ হয়। তা ছাড়া কোন যুক্তির আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা হলে সেই যুক্তি অবৈধ হবে।
যুক্তির আকারগত বৈধতা বলতে কী বোঝো
যুক্তির আশ্রয়বাক্য সত্য ও সিদ্ধান্তের মিথ্যা না হাওয়াকে যুক্তির আকারগত বৈধতা বলে।
যুক্তির আকারগত বৈধতা বলতে বোঝায় যে, সেই আকারের অন্তর্গত সব যুক্তিই বৈধ। অর্থাৎ যুক্তির আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা না হওয়াকেই যুক্তির আকারগত বৈধতা বলা হয়।
যুক্তির বস্তুগত সত্যতা বলতে কী বোঝো
কোন যুক্তির বক্তব্য বিষয়ের সাথে যদি বাস্তবের মিল থাকে তবে বলা যায় যে যুক্তির বস্তুগত ভাবে সত্য।
যুক্তির বস্তুগত সত্যতা বলতে বোঝায় যুক্তির অন্তর্গত বচনগুলির সত্য -মিথ্যাকে।
যুক্তির আকারগত সত্যতা কাকে বলে
কোন যুক্তি বা যুক্তি আকারের মধ্যে যদি অসংগতি বা স্ববিরোধিতা না থাকে তবে সেই যুক্তিকে আকারগত সত্য যুক্তি বলা যাবে।
যুক্তির আশ্রয়বাক্য সত্য ও সিদ্ধান্তের মিথ্যা না হাওয়াকে যুক্তির আকারগত বৈধতা বলে।
উপমা যুক্তি কাকে বলে
দুটি বস্তুর মধ্যে কোন কোন বিষয়ে সাদৃশ্য লক্ষ্য করে তারই ভিত্তিতে যখন উভয়ের মধ্যে অন্য কোন সাদৃশ্যের অনুমান করা হয় তখন তাকে উপমা যুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরোহ অনুমান বলে।
উদাহরণঃ পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহে জল, মাটি, তাপ, মাধ্যাকর্ষণ ও একই ধরনের আবহাওয়া দেখে এবং পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব দেখে যদি মঙ্গল গ্রহে উপরোক্ত সাদৃশ্যগুলির ভিত্তিতে অনুমান করি যে, সম্ভবত মঙ্গল গ্রহেও প্রাণী আছে তবে ওই যুক্তি বা অনুমানটিকে বলে উপমা যুক্তি।
উপমা যুক্তির ভিত্তি কি, উপমা যুক্তি মূল্যায়নের মানদণ্ড
উপমা যুক্তি মূল্যায়নের মানদণ্ডগুলি হলো –
প্রথমত, উপমা যুক্তির আশ্রয় বাক্যে যে দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সাদৃশ্য থাকে সেই দৃষ্টান্তগুলির সংখ্যা যত বেশি হয় সাদৃশ্যমূলক যুক্তির সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা তত বেশি বেড়ে যায়। যেমনঃ মানিকতলা বাজারে একজন ফল ওয়ালার কাছ থেকে হিমসাগর আম কিনলাম এবং তা মিষ্টি লাগলো। দ্বিতীয় দিনেও ওই ফলওয়ালার কাছ থেকে হিমসাগর আম কিনলাম এবং তা মিষ্টি লাগলো। এ থেকে যদি সিদ্ধান্ত করি ওই ফলওয়ালার সব আম মিষ্টি, তাহলে সিদ্ধান্তটির সম্ভাব্যতা খুবই কম হয়ে দাঁড়ায়। অপরপক্ষে, যদি 15/16 বার ওই ফলওয়ালার কাছ থেকে হিমসাগর আম কিনে দেখি যে তার ফল মিষ্টি এবং তারপর যদি সিদ্ধান্ত করি। ভবিষ্যতেও ওই ফলওয়ালার হিমসাগর আম মিষ্টি হবে, সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি হয়।
দ্বিতীয়ত, হেতু বাক্যে জ্ঞাত সাদৃশ্যের সংখ্যা যত বেশি হবে, উপমা যুক্তি সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতাও ততো বেশি হবে। যেমনঃ পৃথিবী ও মঙ্গল গ্রহের মধ্যে সাদৃশ্যের সংখ্যা বেশি এবং গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার জন্য পৃথিবীর মতো মঙ্গল গ্রহেও জীবের অস্তিত্ব আছে। এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেশি। অন্যদিকে, পৃথিবী ও চন্দ্রের মধ্যে সাদৃশ্যের সংখ্যা কম হওয়ার জন্য পৃথিবীর মতো চন্দ্রেও জীবের অস্থিত্ব আছে – এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা খুবই কম।
তৃতীয়ত, হেতু বাক্যে উল্লিখিত দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে, সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতাও ততো বেশি হবে। যেমনঃ একটি বিদ্যালয়ে এর 10 জন ছাত্রকে পরীক্ষা করে দেখা গেল যে, তারা সবাই সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চমাধ্যমিকে ভালো ফল করেছে। রবিন ওই বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক পাশ করে উচ্চমাধ্যমিক পাঠরত। কাজেই সিদ্ধান্ত করা যায় যে, রবিনও উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফল করবে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা আরো বেশি হবে যদি আমরা উল্লিখিত দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য বেশি পর্যবেক্ষণ করি। যদি দেখা হয় তাদের মধ্যে কে ধনী বা নির্ধন, কে শহরের ছাত্র বা গ্রামের ছাত্র ইত্যাদি।
চতুর্থত, জ্ঞাত গুণাবলীর তুলনায় যদি অজ্ঞাত গুণাবলীর সংখ্যা ও গুরুত্ব বেশি হয়, তাহলে উপমা যুক্তির সিদ্ধান্ত কম সম্ভাব্য হবে।
পঞ্চমত, উপমা যুক্তির মূল্যায়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হলো সাদৃশ্যের বিষয়গুলির প্রাসঙ্গিকতা। হেতুবাক্যে উল্লিখিত দৃষ্টান্তের সঙ্গে সিদ্ধান্তের যদি একটি মাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সাদৃশ্য থাকে তাহলেও সেই যুক্তি অনেক বেশি সম্ভাব্য ও গ্রহণযোগ্য হবে। অন্যদিকে, হেতুবাক্যে উল্লিখিত বেশ কয়েকটি কম গুরুত্বপূর্ণ বা অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের সঙ্গে সিদ্ধান্তের উল্লিখিত দৃষ্টান্তের মিল থাকলেও সিদ্ধান্তটি কম সম্ভাব্য হবে।
মন্দ উপমা যুক্তি কাকে বলে
যদি সাদৃশ্যর সংখ্যা ও গুরুত্ব কম হয় তাহলে সেই উপমা যুক্তিতে যে দোষ ঘটে এবং সেইরূপ যুক্তিকে বলা হয় মন্দ উপমা যুক্তি ।
মন্দ উপমা যুক্তির একটি উদাহরণ দাও
উদাহরণ :– কুকুর এবং চেয়ার উভয়ের চারটি করে পা আছে ।
আরো অন্যান্য প্রশ্নোত্তরের সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | যুক্তি
Q1. যুক্তি কি
Ans – সুসংহত ও সুসংবদ্ধ চিন্তা যখন ভাষায় প্রকাশ পায় তখন তাকে যুক্তি বা অনুমান বলা হয়।
Q2. যুক্তিবাক্য কাকে বলে
Ans – উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদের মধ্যে সদর্থক বা নঞর্থকভাবে যে সম্পর্ক প্রকাশিত হয়, তাকে যুক্তিবাক্য বলে।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।