তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতা

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা শামসুর রাহমান

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,
তোমাকে পাওয়ার জন্যে
আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?
আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,
সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।
তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
শহরের বুকে জলপাইয়ের রঙের ট্যাঙ্ক এলো
দানবের মত চিৎকার করতে করতে
তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
ছাত্রাবাস বস্তি উজাড হলো। রিকয়েললেস রাইফেল
আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র।
তুমি আসবে ব’লে, ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম।
তুমি আসবে ব’লে, বিধ্বস্ত পাডায় প্রভূর বাস্তুভিটার
ভগ্নস্তূপে দাঁডিয়ে একটানা আর্তনাদ করলো একটা কুকুর।
তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,
অবুঝ শিশু হামাগুডি দিলো পিতামাতার লাশের উপর।

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জন্যে
আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?
আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?
স্বাধীনতা, তোমার জন্যে এক থুত্থুরে বুডো
উদাস দাওয়ায় ব’সে আছেন – তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্ণের
দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নডছে চুল।
স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
মোল্লাবাডির এক বিধবা দাঁডিয়ে আছে
নডবডে খুঁটি ধ’রে দগ্ধ ঘরের।

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে
হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে
বসে আছে পথের ধারে।
তোমার জন্যে,
সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক,
কেষ্ট দাস, জেলেপাডার সবচেয়ে সাহসী লোকটা,
মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি,
গাজী গাজী ব’লে নৌকা চালায় উদ্দান ঝডে
রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস
এখন পোকার দখলে
আর রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুডে বেডানো
সেই তেজী তরুণ যার পদভারে
একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হ’তে চলেছে –
সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনিপ্রতিধ্বনি তুলে,
মতুন নিশান উডিয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা।

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা মূলভাব, তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা সারমর্ম

‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে সর্বস্তরের বাঙালি নারী-পুরুষের সংগ্রামী চেতনা এবং তাদের মহান আত্মত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরা হয়েছে। এ কবিতায় বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের চিত্র প্রতিফলিত হয়েছে। তারা এদেশের নিরীহ বাঙালির ওপর ঝাপিয়ে পড়ে গণহত্যা চালায়। ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিকসহ এদেশের সাধারণ মানুষকে তারা নির্বিচারে হত্যা করে, আগুন দিয়ে মানুষের ঘরবাড়ি-বন্তি পুড়িয়ে দেয়।

তাদের নির্মমতায় সাকিনা বিবির মতাে নারীদের সহায়-সম্বল-সন্ড্রম সবকিছু বিসর্জিত হয়। হরিদাসীর মতাে নারীরা স্বামী হারান। শিশুরা মা-বাবাকে হারায়। এদেশের নিরীহ মানুষ সগীর আলী, কেষ্ট দাস, মতলব মিয়া, রুস্তম শেখও তাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। কবি এদের নাম ও পেশার কথা কবিতায় উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

কবি স্বাধীনতার কাছে জানতে চেয়েছেন- এত রক্ত, এত ত্যাগের পরও কি সে আসবে? তার আসতে হলে কি আরও রক্ত লাগবে? লাশ লাগবে? আগুনে পােড়া ঘরের খুঁটি ধরে মােল্লাবাড়ির বিধবার প্রতীক্ষার প্রহর কি শেষ হবে না? অনাথ কিশােরীর শূন্য থালায় ক্ষুধার অন্ন সংস্থানের উপায় হিসেবে কি সে আসবে না? তাকে অবশ্যই আসতে হবে।

আত্মবিশ্বাসী কবি তাই চারদিকে দামামা বাজিয়ে, নিশান উড়িয়ে স্বাধীনতার আগমনের নিশ্চয়তার বাণী শােনান স্বাধীনতাকামী এদেশের সব মানুষকে।

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কোন কাব্যগ্রন্থের

শামসুর রাহমানের খ্যাতি ও পরিচিতি এর আগে থেকে কিছুটা থাকলেও প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করে তাঁর ‘বন্দী শিবির থেকে‘। এর অধিকাংশ কবিতা মুক্তিযুদ্ধকালে অবরুদ্ধ বাংলাদেশে এপ্রিল – ডিসেম্বর ১৯৭১ সময়ে রচিত। ১৯৭২ সালে জানুয়ারি মাসে কলকাতায় গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয়।

হে স্বাধীনতা তোমাকে পাওয়ার জন্যে” শীর্ষক কবিতাটি শামসুর রাহমানের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ নামক কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। কবিতাটি কবির ‘বন্দিশিবির থেকে’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেক্ষাপটে লেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কবিতা। কবি শামসুর রহমান এই কবিতাটি তে স্বাধীনতা যে একটি মৌলিক অধিকার এবং পরাধীন বাংলাদেশ বাসী তাদের এই মৌলিক অধিকারের জন্য যে কিভাবে প্রতীক্ষারত তাহার বর্ণনা তুলে ধরেছেন। স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও আশা এবং জাতির আত্ম বলিদান এর কথা ছন্দের মধ্যে ফুটে উঠেছে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাবে।

কাব্যগ্রন্থটি শুরুতে ‘পূর্বলেখ’ শিরোনামে একটি ভূমিকা সংযোজন করে কবি তাঁর কাব্য রচনার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতাগুলো হলোঃ

  • তোমাকে পাওয়ার জন্যে হে স্বাধীনতা
  • স্বাধীনতা তুমি
  • মধুস্মৃতি
  • রক্তাক্ত প্রান্তর ইত্যাদি।

প্রতিটি কবিতায় স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন আবেগ ও প্রত্যাশা ব্যক্ত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের শহীদদের স্মরণে এই গ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে।

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার ব্যাখ্যা

»তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা

তােমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগশায়?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন?

ব্যাখ্যাঃ এক অনন্য অনুভবে ঋদ্ধ অধিকারের নাম স্বাধীনতা, যা সহজলভ্য ও সহজপ্রাপ্য নয়। এর জন্য অনেক রক্ত দিতে হয়, অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। এদেশ স্বাধীনতার জন্য অনেকবার খাণ্ডবদাহন (মহাভারতে বর্ণিত ‘খাণ্ডব’ বন, যা ভীষণ অগ্নিকাণ্ডে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল) ও রক্তগঙ্গা দেখেছে। বারবার দানবেরা আমাদের স্বাধীনতাকে হরণ করতে চেয়েছে। এদেশ বারবার রক্তস্রোতে ভেসেছে, এবার স্বাধীনতা অর্জন করে তবেই ক্ষান্ত হবে এ দেশের মানুষ।

»তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,

সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল,

সিথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর। 

ব্যাখ্যাঃ তারা অপরিমিত ত্যাগ-তিতিক্ষার পথ বেছে নিয়েছে স্বাধীনতা লাভ করতে। এ জন্য এ দেশের নারীরাও সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন। সাকিনা আর হরিদাসীর স্বামী দেশকে স্বাধীন করতে মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন। মুক্তিযুদ্ধে তারা মৃত্যুবরণ করেছেন। ফলে সহায়-সম্বল, সম্ভম হারিয়ে কপাল ভেঙেছে , সাকিনা বিবির আর স্বামী হারিয়ে সিথির সিঁদুর মুছে গেছে হরিদাসীর।

»তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,

শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলাে

দানবের মতাে চিষ্কার করতে করতে

তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,

ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলাে।

ব্যাখ্যাঃ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক দানবের মতাে চিল্কার করতে করতে শহরে ঢুকে পড়ে। তারা কামানের গােলা আর অগ্নিকাণ্ডে শহরকে ধ্বংসভূপে পরিণত করে। নির্বিচার হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞে উজাড় হয় বস্তি, ছাত্রাবাস। বাঙালিরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনবে বলেই হানাদাররা এ ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

» রিকয়েললেস রাইফেল

আর.মেশিনগান খই ফোটাল যত্রতত্র।

তুমি আসবে বলে ছাই হলাে গ্রামের পর গ্রাম।

ব্যাখ্যাঃ শহরে গণহত্যা, ধ্বংসের পাশাপাশি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গ্রাম-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে। তারা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল আর মেশিনগানের অবিরাম গুলিবর্ষণ করে যেখানে সেখানে। অসংখ্য মানুষকে হত্যা আর বাড়িঘর লুটপাটের পর পুড়িয়ে ছাই করে দেয় গ্রামের পর গ্রাম।

» তুমি আসবে বলে বিধ্বস্ত পাড়ায় প্রভুর বাস্তুভিটার

ভগভূপে দাঁড়িয়ে একটানা আর্তনাদ করল একটা কুকুর।

তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা,

অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতা-মাতার লাশের উপর। 

ব্যাখ্যাঃ স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু থেকেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর ভয়ংকর ও বীভৎস আক্রমণ চালায়। তারা এদেশে গণহত্যা চালিয়ে মানুষের বাস্তুভিটা ভগ্ন্যুপে পরিণত করে। প্রভুর বিধ্বস্ত ভিটায় দাড়িয়ে একটা কুকুর কেবল একটানা আর্তনাদ করে। হানাদারদের নিষ্ঠুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া অবুঝ শিশুর পিতা-মাতার লাশের ওপর হামাগুড়ি দেওয়ার দৃশ্য ভীষণ বেদনাদায়ক।

» স্বাধীনতা, তােমার জন্যে থুথুড়ে এক বুড়াে

উদাস দাওয়ায় বসে আছেন। তাঁর চোখের নিচে অপরাত্নের

দুর্বল আলাের ঝিলিক, বাতাসে নড়ছে চুল।

ব্যাখ্যাঃ স্বদেশের স্বাধীনতার আনন্দ অনুভব করার জন্য অপেক্ষা করে আছেন চলার শক্তিহীন, বয়সের ভারে ন্যুজ এক থুথুড়ে বুড়াে। সবকিছু হারিয়ে উদাস হয়ে বসে আছেন তিনি। তার চোখের নিচে বিকালের দুর্বল আলাের ঝিলিক, বাতাসে নড়ছে মাথার অবশিষ্ট চুল।

» স্বাধীনতা, তােমার জন্যে

মােল্লাবাড়ির এক বিধবা দাঁড়িয়ে আছে

নড়বড়ে খুঁটি ধরে দগ্ধ ঘরের।

ব্যাখ্যাঃ স্বাধীনতার জন্য মােগ্লাবাড়ির এক বিধবা দাঁড়িয়ে আছে। তার মতাে অগণিত নারী নিঃস্ব হয়ে গেছে। তারা স্বামী-সন্তান, ভাই-বােন, বাবা-মা, আশ্রয় সবকিছু হারিয়েছে। আছে শুধু পােড়া ঘরের আধপােড়া খুঁটি। নড়বড়ে খুঁটি ধরে দাঁড়িয়ে সে নিজের অসহায় অবস্থা ঘােষণা করছে।

» স্বাধীনতা, তােমার জন্যে

হাড্ডিসার এক অনাথ কিশােরী শূন্য থালা হাতে

বসে আছে পথের ধারে।

ব্যাখ্যাঃ স্বাধীনতার জন্য কত বাবা-মা হারিয়েছেন তাদের প্রিয় সন্তান, একইভাবে কত সন্তান হারিয়েছে তাদের বাবা-মাকে। অসহায় এসব শিশু দারিদ্র্যের কশাঘাতে হাড্ডিসার। তারা পথের ধারে শূন্য থালা হাতে অপেক্ষায় বসে আছে। তাদের অধিকার কখন তারা ফিরে পাবে।

»তােমার জন্যে

সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক,

কেষ্ট দাস, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লােকটা,

মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি,

গাজী গাজী বলে যে নৌকা চালায় উদ্দাম ঝড়ে,

রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস

এখন পােকার দখলে

ব্যাখ্যাঃ পাকিস্তানি যুদ্ধবাজ সেনাদের গুলিতে ও বেয়নেটের আঘাতে অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন হয়েছে। শাহবাজপুরের জোয়ান কৃষক সগীর আলী, জেলেপাড়ার দুর্দান্ত সাহসী লােক কেন্ট দাস- এদেরকে হানাদাররা হত্যা করেছে। মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি মতলব মিয়া জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযােদ্ধাদের পারাপার করেছেন, নিজের জীবন দিয়ে তাদেরকে বাঁচিয়েছেন। | তাকে হত্যা করেছে দানবরা। ঢাকার রিকশাওয়ালা রুস্তম শেখকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে হানাদাররা। তার ফুসফুস এখন পােকার দখলে। স্বাধীনতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় তারা জীবন উৎসর্গ করেছেন।

» আর রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুরে-বেড়ানাে

সেই তেজি তরুণ যার পদভারে

একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে

সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তােমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।

ব্যাখ্যাঃ সব বয়সের তারুণ্যদীপ্ত স্বাধীনতাকামী মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। তেজি তরুণ মুক্তিযােদ্ধাদের মরণপণ যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনারা পর্যদস্ত হয়েছে। তারা মুক্তিবাহিনীর প্রচণ্ড আক্রমণের শিকার হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এভাবেই হানাদারদের শক্তি নিঃশেষ হতে থাকে ক্রমশ । আর স্বাধীন বাংলাদেশের আসন্ন জন্মের প্রতীক্ষা করতে থাকে এ দেশের মানুষ।

» পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত

ঘােষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,

নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক

এই বাংলায়

তােমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা।

ব্যাখ্যাঃ এদেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত সেই স্বাধীনতা আসতে তখন আর দেরি নেই। এ দেশের মানুষ বুঝে গেছে স্বাধীনতা তাদের দরজায় করাঘাত করছে। কেননা তাদের আকাক্ষা, তাদের প্রত্যাশা, তাদের শ্রম ও ত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। এদেশের মানুষের এত রক্ত, আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। বিজয়ের জ্বলন্ত ঘােষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক এই বাংলায় স্বাধীনতা আসবেই। নবীন রক্তের প্রাণস্পন্দন আর আত্মত্যাগের মহিমায় বাঙালিরা স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনবেই- এটা কবিৱও প্রত্যাশা।

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা বহুনির্বাচনি, তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা MCQ

১. দানবের মতাে চিকার করতে করতে কী এসেছিল?

ক। পাকিস্তানি সেনা

খ। ট্যাঙ্ক

গ। মাঝি

ঘ। রাইফেল

উত্তর: খ। ট্যাঙ্ক

২. ‘তুমি আসবে বলে হে স্বাধীনতা

ছাত্রাবাস বস্তি উজাড় হলাে’- ছাত্রাবাস বস্তি উজাড় হলাে’- এ উক্তিতে কিসের চিত্র আছে?

ক। স্বাধীনতার সুর

খ। ধ্বংসের চিত্র

গ। গণ-আন্দোলনের রূপ 

ঘ। মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি

উত্তর: খ। ধ্বংসের চিত্র

নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪-সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও :

চিনতে নাকি সােনার ছেলে

ক্ষুদিরামকে চিনতে?

রুদ্ধশ্বাসে প্রাণ দিল যে

মুকত বাতাস কিনতে।

৩. উদ্দীপকের ক্ষুদিরাম “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কাদের প্রতিনিধিত্ব করে

i.মুক্তিযােদ্ধাদের

ii.আপামর জনসাধারণের

iii.আত্মত্যাগী মানুষদের

নিচের কোনটি সঠিক?

ক। i ও ii 

খ। i ও iii

গ। ii, iii

ঘ। i, ii ও iii

উত্তর: ঘ। i, ii ও iii

৪. এরূপ প্রতিনিধিত্বের কারণ কী?

ক। ঐক্যচেতনা

খ। বাজাত্যবােধ

গ। দেশপ্রেম

ঘ। সাহসিকতা 

উত্তর: গ। দেশপ্রেম

৫. “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতায় কার চোখের নিচে  অপরাহের দুর্বল আলাের ঝিলিক?

ক। অনাথ কিশােরীর

খ। থুথুড়ে বুড়াের

গ। মােগ্লাবাড়ির বিধবার

ঘ। সানাি বিবির

উত্তর: খ। থুথুড়ে বুড়াের

৬. গাজী গাজী বলে কে নৌকা চালাত?

ক। কেষ্ট দাস 

খ। সগীর আলী 

গ। মতলব মিয়া 

ঘ। রুস্তম শেখ

উত্তর: গ। মতলব মিয়া 

৭. “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কার ফুসফুস এখন পােকার দখলে বলা হয়েছে?

ক। সগীর আলীর

খ। মতলব মিয়ার ।

গ। রুস্তম শেখের

ঘ। কেষ্ট দাসের

উত্তর: গ। রুস্তম শেখের

৮. রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায় কে?

ক। জোয়ান কৃষক 

খ। সাহসী লােক 

গ। তেজি তরুণ

ঘ। দক্ষ মাঝি 

উত্তর: গ। তেজি তরুণ

৯. সেই রেল লাইনের ধারে মেঠো পথটার ‘পরে দাঁড়িয়ে এক মধ্যবয়সী  নারী এখনাে রয়েছে হাত বাড়িয়ে চরণের মধ্যবয়সী নারীর সাথে  “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার প্রতিনিধি চরিত্র  কোনটি?

ক। মােল্লাবাড়ির বউ

খ। অনাথ কিশােরী

গ। হরিদাসী

ঘ। সাকিনা বিবি

উত্তর: খ। অনাথ কিশােরী

১০. শাহবাজপুরের জোয়ান কৃষকের নাম কী?

ক। কেষ্ট দাস 

খ। সৰ্গীর আলী 

গ। মতলব মিয়া 

ঘ। রুস্তম শেখ

উত্তর: খ। সৰ্গীর আলী 

১১. দানবের মতাে চিৎকার করতে করতে কী এসেছিল?

ক। রাইফেল 

খ। মেশিনগান 

গ। ট্যাঙ্ক

ঘ। গ্রেনেড

উত্তর: গ। ট্যাঙ্ক

১২. সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল কার?

অথবা, স্বাধীনতার জন্য কার সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল?

ক। সাকিনা বিবির

খ। মােগ্লাবাড়ির বিধবার

গ। হরিদাসীর

ঘ।  সুমিতা রাণীর

উত্তর: গ। হরিদাসীর

১৩. “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কুকুরের আর্তনাদ যারা কী বােঝানাে হয়েছে?

ক। সতর্ক সংকেত

খ। প্রাকৃতিক প্রতিবাদ

গ। নবীন রন্তে প্রাণস্পন্দন 

ঘ। হানাদারদের প্রতি ঘৃণা

উত্তর: খ। প্রাকৃতিক প্রতিবাদ

১৪. স্বাধীনতার জন্য কপাল ভাঙল কার?

অথবা, তােমাকে পাওয়ার জন্য, হে স্বাধীনতা কবিতায় কার কপাল ভাঙল-

ক। সাকিনা বিবির

খ। সগীর আলীর

গ। মতলব মিয়ার

ঘ। অনাথ কিশােরীর

উত্তর: ক। সাকিনা বিবির

১৫. এখন মার চোখে শিশির-ডাের

মেহের রােদে ডিটে ভরেছে।

-উদ্ধৃতাংশের মনােভাবের সাথে ভাবগত মিল রয়েছে কোন কবিতার?

ক। সাহসী জননী বাংলা

খ। আমি কোনাে আগন্তুক নই

গ। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা

ঘ। স্বাধীনতা, এ শব্দটি কীভাবে আমাদের হলাে

উত্তর: গ। তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা

১৬. ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতায় মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি কে?

ক। রুস্তম শেখ 

খ। কেষ্ট দাস 

গ। সগীর আলী 

ঘ। মতলব মিয়া

উত্তর: ঘ। মতলব মিয়া

১৭. শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক- কিসের প্রতীক।

ক। বীরত্বের

খ। শৌর্যের

গ। বাহাদুরির 

ঘ। দানবের

উত্তর: ঘ। দানবের

১৮. “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় খই ফোটাল’ দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?

ক। বিকট আওয়াজ

খ। বীভৎস অবস্থা।

গ। প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ

ঘ। প্রবল আক্রমণ

উত্তর: গ। প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর, তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা সৃজনশীল প্রশ্ন

সৃজনশীল ০১: মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত দেশমাতৃকার দুর্দিনে অন্য বন্ধুদের সাথে যুদ্ধে যোগ দিল। পাক সেনাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপারেশনে সফল নেতৃত্ব দিল। একদিন সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুর বুলেটের আঘাতে দেহ ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে গেল। বন্ধুরা তার মৃতদেহ বাড়িতে আনলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হলো। কিন্তু তার বৃদ্ধ মা একটুও বিচলিত না হয়ে সবাইকে লক্ষ্য করে বললেন, “দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা গৌরব ও সম্মানের। সকলের ত্যাগের বিনিময়েই দেশ একদিন স্বাধীন হবে।”

ক. অবুঝ শিশু কোথায় হামাগুড়ি দিল?
খ. ‘তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা’— কবির এই দৃঢ় উত্তির কারণ বুঝিয়ে লেখ।
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকে মায়ের উক্তিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে— মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।

১নং প্রশ্নের উত্তর

ক। অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতা-মাতার লাশের ওপর।

খ। প্রশ্নোক্ত পঙ্ক্তিটিতে কবি বাঙালির জন্মগত অধিকার স্বাধীনতা অর্জনের দিকটি তুলে ধরেছেন।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালিদের ওপর বর্বর নির্যাতন চালায়। তারা আগুন দিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। কবি সেই ধ্বংস আর হত্যাযজ্ঞের মধ্যেও অবলোকন করেন নবীন রক্তের প্রাণস্পন্দন ও আশা। তাই তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন— এত আত্মত্যাগ যার উদ্দেশ্যে সেই স্বাধীনতাবে ঙালি একদিন ছিনিয়ে আনবেই।

গ। ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রকাশিত স্বাধীনতার জন্য বাংলার মানুষের সুমহান আত্মত্যাগের দিকটির সঙ্গে উদ্দীপকটির সাদৃশ্য রয়েছে।

যুগে যুগে বাঙালি জাতি নানা বিদেশি শত্রুর কাছে শোষিত নির্যাতিত হয়েছে। সবশেষে এ জাতির ওপর আগ্রাসন চালিয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানিরা। তারা বাঙালিকে দমিয়ে রেখে নিজেদের স্বার্থান্বেষী শাসন কায়েম করতে চেয়েছিল। কিন্তু বীর বাঙালি তাদের পরাজিত করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে।

উদ্দীপকে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অমিত পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। একপর্যায়ে সে শহিদ হয় এবং সহযোদ্ধারা তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে। তার বৃদ্ধা মা ছেলের আত্মত্যাগের জন্য গর্ববোধ করেছেন। ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায়ও স্বাধীনতার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। কবি এখানে দেখিয়েছেন স্বাধীনতা আসবে বলে হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছে যায়, সাকিনা বিবির কপাল ভাঙে। ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হয়। পিতামাতার লাশের ওপর ওবুঝ শিশু হামাগুড়ি দেয়। স্বাধীনতার জন্য বাঙালিকে এমনই আত্মত্যাগ করতে হয়। কবিতার এ দিকটির সঙ্গেই উদ্দীপকটির সাদৃশ্য রয়েছে।

ঘ। উদ্দীপকে মায়ের উক্তিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে— মন্তব্যটি যথার্থ। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়ায়। অবশেষে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বপ্নের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনতে এদেশের অগণিত মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে অমিত যুদ্ধে গিয়ে শহিদ হয়। সহযোদ্ধারা তার মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে এলে বৃদ্ধা মা উদ্দীপকে দেখা যায়, তা দেখে শোকাকুল না হয়ে ছেলের এমন বীরোচিত মৃত্যুতে গর্ববোধ করেন এবং বলেন, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা গৌরব ও সম্মানের। সবার ত্যাগের বিনিময়েই একদিন এদেশ স্বাধীন হবে। অমিতের মায়ের এ উক্তিতে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কবির আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দেখা যায়। কারণ এ কবিতায় কবি বলেছেন এ দেশের সাধারণ মানুষের আত্মত্যাগের কথা, যারা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। কবি তাই মনে করেন স্বাধীনতাকে বাঙালি এক দিন ছিনিয়ে আনবেই।

‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি দেখিয়েছেন স্বাধীনতার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত। সেই সঙ্গে নবীন রক্তে প্রাণস্পন্দন ও আশা জেগে থাকতে দেখে কবি দৃঢ়তার সঙ্গে উচ্চারণ করেন যার উদ্দেশ্যে এত আত্মত্যাগ সেই স্বাধীনতাকে একদিন আসতেই হবে। উদ্দীপকের মায়ের কথায় কবির এ আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন ঘটেছে। এসব বিচারে মন্তব্যটি যথার্থ বলা যায়।

সৃজনশীল ০২: ১১ অক্টোবর, সোমবার, ১৯৭১। হঠাৎ করে ভারী অস্ত্র ও গোলা-বারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে প্রবেশ করে একদল মিলিটারি। গ্রামে ঢুকে তারা প্রথমে বাজার ও দোকানপাট পুড়িয়ে দেয়। নির্বিচারে গুলি চালায় সাধারণ মানুষের ওপর। গুলি খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় অনেক মানুষ। অনেকে গুরুতর আহত হয়। আতঙ্কে জীবন বাঁচাবার জন্য কেউ কেউ পালাবার চেষ্টা করে। অনেককে তারা ধরে নিয়ে যায় ক্যাম্পে। সে এক বিভীষিকাময় পরিস্থিতি, যা এখনও সেই গ্রামের মানুষকে তাড়া করে বেড়ায়।

ক. শামসুর রাহমানের কবিতায় সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে কী?
খ. ‘সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা আলোচনা কর ।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

২নং প্রশ্নের উত্তর

ক। শামসুর রাহমানের কবিতায় মধ্যবিত্ত নাগরিক জীবনের প্রত্যাশা, হতাশা, বিচ্ছিন্নতা, বৈরাগ্য ও সংগ্রাম সার্থকভাবে প্রকাশ পেয়েছে।

খ। ‘সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল’ বলতে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে সম্ভ্রম হারানো সাকিনা বিবির জীবনে মহা দুর্যোগ নেমে আসাকে বোঝানো হয়েছে।

‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এদেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের মহিমা তুলে ধরেছেন। এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে। তাদের সেই অত্যাচারের শিকার হয়েছে সাকিনা বিবি। স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য সাকিনা বিবির মতো গ্রামীণ নারীর . সহায়-সম্বল-সম্ভ্রম বিসর্জিত হয়েছে। কবি এখানে সাকিনা বিবিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীর প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

গ। উদ্দীপকে ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতনের দিকটি ফুটে উঠেছে।  ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালায়।

তারা এদেশের নিরীহ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাঙালির মন থেকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল। উদ্দীপকে মুক্তিযুদ্ধের সময় এদেশের নিরীহ মানুষের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম অত্যাচারের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে। এখানে ১৯৭১ সালের ১১ অক্টোবর ভারী অস্ত্র ও গোলা-বারুদ নিয়ে গাজীপুরা গ্রামে একদল মিলিটারির হত্যাযজ্ঞ চালানোর কথা বলা হয়েছে। তাদের অত্যাচার থেকে গ্রাম ছেড়ে পালাতে গিয়ে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়।

উদ্দীপকের এই চিত্রটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক নিয়ে এদেশের মানুষের ওপর দানবীয় অত্যাচার চালানোর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। কবি এখানে সাকিনা বিবির কপাল ভাঙার, হরিদাসীর সিঁথির সিঁদুর মুছে যাওয়া, ভগ্নস্তূপে দাঁড়িয়ে কুকুরের আর্তনাদ, পিতা-মাতার লাশের উপর অবুঝ শিশুর হামাগুড়ি দেওয়া, সগীর আলী, কেষ্ট দাস, মতলব মিয়া, রুস্তম শেখ প্রমুখের মৃত্যুর কথা বলে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের বর্ণনা দিয়েছেন। এভাবে উদ্দীপকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ ।

ঘ। “উদ্দীপকটি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার খণ্ডচিত্র মাত্র।”- মন্তব্যটি যথার্থ। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে চিরতরে মুছে দিতে চেয়েছিল।

সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তারা এদেশের মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার চালায়। বাঙালিরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে তাদের রুখে দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে। : উদ্দীপকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কিছু সদস্যের আক্রমণে গাজীপুরা গ্রামের মানুষের জীবনে নির্মমতা নেমে আসার দিকটি তুলে ধরা হয়েছে। সেই হত্যাযজ্ঞের কথা ঐ গ্রামের বেঁচে যাওয়া মানুষেরা আজও ভুলতে পারে না। এই বিষয়টি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে নির্দেশ করে।

এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের দিকটি উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই বিষয়টি ছাড়াও কবিতায় স্বাধীনতা অর্জনের জন্য এদেশের সর্বস্তরের মানুষের আত্মত্যাগের বিষয়, নারী নির্যাতন, শিশু ও বৃদ্ধের প্রতি নির্মমতার দিক প্রতিফলিত হয়েছে, যা উদ্দীপকে নেই।

‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উদ্দীপকের বিষয় ছাড়াও স্বাধীনতার জন্য অধীর প্রতীক্ষা, রাইফেল কাঁধে তেজী তরুণ যোদ্ধার ঘুরে বেড়ানো, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত ঘোষণা হয়ে, নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে স্বাধীনতার আগমনের স্বপ্ন ইত্যাদি রয়েছে। এসব দিক বিচারে তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০৩: শহরের এক বড়লোক ব্যবসায়ী ‘খামারবাড়ি’ করার জন্য গ্রামে কিছু জমি কিনলেন। সেখানে তিনি গোমস্তা লাগিয়ে কলের লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করান, গরু-ছাগল পালন করান, মাছ চাষ করান- আরো কত কি। এক সময় তিনি বললেন, ‘আমি পুরো গ্রাম কিনে নিয়েছি, তোমাদেরকে বাড়ি-ঘর ছাড়তে হবে। একদিন তিনি শহর থেকে গুন্ডা এনে ঘর-বাড়ি দখল করতে এলেন। কিন্তু গ্রামবাসী একজোট হয়ে জীবন বাজি রেখে তা প্রতিহত করে। গুন্ডারা পালিয়ে গেলেও গ্রামের অনেকে এতে আহত হয়। তারা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ- জীবন দিয়ে হলেও বাপ-দাদার ভিটা অন্য কাউকে দখল করতে দেবে না।

ক. জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক কীভাবে এলো?
খ. ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো কেন?
গ. উদ্দীপকের বড়লোক ব্যবসায়ী ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উল্লিখিত কাদের প্রতিনিধি? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের গ্রামবাসীদের চেতনা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত কবিচেতনারই প্রতিচ্ছবি”- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

৩নং প্রশ্নের উত্তর

ক। জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক দানবের মতো চিৎকার করতে করতে এলো।

খ। স্বাধীনতার শত্রুদের নির্মম আক্রমণে ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো। বাংলার মানুষ স্বাধীনতার জন্য দিনের পর দিন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তাদের অত্যাচার আর শোষণ চিরস্থায়ী করতে এদেশের মানুষকে হত্যা আর সম্পদ ধ্বংসের উৎসবে মেতে উঠেছিল। তাদের লেলিয়ে দেওয়া হানাদার সেনারা অতর্কিত সারা দেশে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রাখে। কামানের গোলা আর অগ্নিকাণ্ডে তারা সারা দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। তাদের সেই ধ্বংসযজ্ঞে ছাত্রাবাস ও বস্তি উজাড় হয়।

গ। উদ্দীপকের বড়লোক ব্যবসায়ী ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় উল্লিখিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রতিনিধি। পাকিস্তান জন্মের পর থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাংলাদেশকে নানাভাবে শাসন-শোষণ করেছে। বাঙালিরা নিজেদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে, প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলেছে।

অবশেষে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঘুমন্ত বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনারা নির্মম অত্যাচার ও হত্যাকাণ্ড চালায়। এর প্রতিবাদে বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশ স্বাধীন করে।

উদ্দীপকে শহরের এক বড়লোক ব্যবসায়ীর নিম্নশ্রেণির মানুষের অধিকার হরণ ও অত্যাচার-নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তিনি ‘খামারবাড়ি’ করার নাম করে গ্রামের কিছু জমি কেনে এবং নিজের লোক দিয়ে সেখানে গরু-ছাগল পালন, মাছ চাষ প্রভৃতি করতে থাকেন। একসময় গ্রামের সমস্ত জমি কিনে নিয়েছেন ঘোষণা দিয়ে গ্রামের মানুষদের ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বলেন।

বড়লোক ব্যবসায়ীর এই অমানবিকতা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অমানবিকতার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তারাও এদেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এভাবে উদ্দীপকের বড়লোক ব্যবসায়ী কবিতায় উল্লেখিত পাকিস্তানি বাহিনীর প্রতিনিধি হয়ে উঠেছে।

ঘ। “উদ্দীপকের গ্রামবাসীদের চেতনা ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় বর্ণিত কবিচেতনারই প্রতিচ্ছবি”- মন্তব্যটি যথার্থ। যুগে যুগে পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময় নানাভাবে বর্বর শাসক-শোষকরা নিরীহ মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়েছে।

কিন্তু যখন নির্যাতিতরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে তখন কোনো শাসকগোষ্ঠীই তাদের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। শেষপর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ শক্তি ও সংগ্রামী চেতনারই জয় হয়েছে।

উদ্দীপকে এক বড়লোক ব্যবসায়ী গ্রামের সব জমি তিনি কিনে নিয়েছেন বলে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে তাড়াতে চেয়েছেন। কিন্তু গ্রামবাসী তার কথায় গ্রাম ছেড়ে চলে না গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে অন্যায়কারী ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং জীবন বাজি রেখে ..তাদের ভিটেমাটি রক্ষা করার জন্য রুখে দাঁড়িয়েছে। এই বিষয়টি ‘তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচার এবং তাদের বিরুদ্ধে বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।

‘তোমাকে. পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় কবি স্বাধীনতা অর্জনে এদেশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ চেতনা এবং আত্মত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এ বিষয়টি ভিন্ন প্রেক্ষাপটে উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। গ্রামবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে বড়লোক ব্যবসায়ীর অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে এবং জীবন বাজি রেখে নিজেদের ভিটেমাটি রক্ষা করেছে। এ দিক থেকে প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃজনশীল ০৪:

“গহর মরেনি। মরতে পারে না।
সে আজও রয়েছে বেঁচে।
বাংলাদেশের বুকের ভিতর, হয়তাে এখন তার।
ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঝরা,
বাঁ হাতে ব্যান্ডেজ বাধা,
তবুও বন্দুক হাতে এক লক্ষ্যে বসে আছে
ট্রেঞ্চের ভিতর। গহর আমরা শুধু।
অফুরন্ত দিন গুনছি অগুনতি বছর ।

ক, থুথুড়ে বুড়াের চোখের নিচে কী ছিল?

খ. সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল।”- এ কথার মাধ্যমে কী বােঝানাে হয়েছে?

গ. উদ্দীপকের ‘ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঁঝরা’ চরণটি ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার কোন দিকটি নির্দেশ করে?

ঘ. উদ্দীপকের ‘গহর’ আর ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার ‘তেজি তরুণ’ একই আদর্শে উজ্জীবিত।” তুমি কি একমত? ব্যাখ্যা দাও।

উপরোক্ত তথ্য অনুযায়ী তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কিত এই আর্টিকেলে সৃজনশীল প্রশ্নগুলো কেমন হতে পারে তা আপনি দেখে নিয়েছেন। চলুন এবার তবে প্রশ্নের উত্তর সমাধান গুলোও PDF সহ দেখে নেওয়া যাক।গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর পেতে এখানে চাপুন

সৃজনশীল প্রশ্ন নম্বর ৪ এর উত্তর

ক উত্তরঃ থুথুড়ে বুড়াের চোখের নিচে ছিল অপরাহের দুর্বল আলাের ঝিলিক।

খ উত্তরঃ “সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল” এই কথার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে সাকিনা বিবির স্বামীর মারা যাওয়ার বিষয়টি বােঝানাে হয়েছে।

এদেশের লাখাে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বর আক্রমণে শহিদদের একজন সাকিনা বিবির স্বামী।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশের জন্য সাকিনা বিবির মতাে গ্রামীণ নারীদের সহায়-সম্বল-সম বিসর্জিত হয়েছে। সাকিনা বিবি এখানে মুক্তিযুদ্ধে স্বামী, সম্রম হারানাে নারীদের প্রতিনিধি। প্রশ্নোক্ত কথাটিতে এই ভাবটিই প্রকাশ পেয়েছে।

সারকথা : মুক্তিযুদ্ধে সাকিনা বিবির মতাে অগণিত স্ত্রী স্বামী হারিয়েছেন- এ কথা বােঝাতেই কবি প্রশ্নোক্ত কথাটি বলেছেন।

গ উত্তরঃ উদ্দীপকের ‘ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঁঝরা’ চরণটিতে ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবির মুক্তিযুদ্ধের সময়কার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অত্যাচারের দিকটি নির্দেশ করে। ও স্বাধীনতা মানুষের জন্মগত অধিকার। সেই অধিকার অর্জন করতে হলে মানুষকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়।

অনেক রক্ত ও অনেক ত্যাগের বিনিময়ে বাঙালি এ দেশ স্বাধীন করেছে। উদ্দীপকে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী গহরের কথা বলা হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জনের জন্য বাঙালির ত্যাগ-তিতিক্ষার দিকটি এখানে প্রতিফলিত হয়েছে।

তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতায় সাকিনা বিবি, হরিদাসীরা বিধবা হয়েছে; ছাত্রাবাস-বস্তি উজার হয়েছে। হানাদাররা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে। বহু লােক আহত ও পঙ্গু হয়েছে।

উদ্দীপকেও এই য়িটি লক্ষ করা যায়। গহর নামের লােকটি যুদ্ধে শহিদ হয়েও কবির চেতনায় চিরঞ্জীব হয়ে আছেন। তার ডান কাধ কামানের গােলায় ঝাঝরা, বাম হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা, তবুও স্থির লক্ষ্যে সে ট্রেঞ্জের ভিতর যেন বসে আছে।

সারকথা : উদ্দীপকে হানাদারদের নির্যাতনের শিকার গহরের কথা বলা হয়েছে, যা তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে।

হুবুহু সৃজনশীল প্রশ্ন খবুই কম কমন পড়তে দেখা যায় । তাই এই পোষ্ট তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর pdf এর পাশাপাশি মূল বই থেকে এ সম্পর্কিত আরও বিষয়বলী গুলো ধারণা রাখুন। এতে করে যেভাবেই প্রশ্ন আসুক যাতে আপনি উত্তর দিতে পারেন। চলুন বাকী অংশ পড়ে নেওয়া যাক।

ঘ উত্তরঃ উদ্দীপকের ‘গহর’ আর ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার তেজি তরুণ একই আদর্শে উজ্জীবিত।- মন্তব্যটি যথার্থ।

১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এদেশের মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায়। এদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা দীর্ঘ নয় মাস শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের বুকে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয়।

উদ্দীপকের কবিতাংশের গহর এক সাহসী তেজোদীপ্ত তরুণ। তার ডান কাঁধ কামানের গােলায় ঝাঝরা হয়ে গেছে, বাম হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা।

তবুও বন্দুক হাতে সে এক লক্ষ্যে ট্রেঞ্চের ভেতর বসে আছে। তার এই অবস্থান শত্রু নিধন, স্বাধীনতা অর্জন। কবি দিন গুনছেন স্বাধীনতার জন্য! “তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতায় একইভাবে স্বাধীনতার স্বপ্নে তেজি তরুণ উজ্জীবিত।

সে রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। কবি মনে করেন তার পদভারে একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে। সবাই সেখানে প্রতীক্ষায় আছে স্বাধীনতার জন্য। ‘তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা কবিতায় কবি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের বিধ্বস্ত অবস্থা তুলে ধরেছেন।

এখানে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে যা উদ্দীপকের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। উদ্দীপকের গহর এবং তােমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা’ কবিতার তেজি তরুণ উভয়ই মুক্তি চেতনায় উজ্জীবিত।

সারকথা : স্বাধীনতার অর্জনের জন্য মানুষের সংগ্রামী চেতনা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তির চেতনায় ভাস্বর হলেই মানুষ সংগ্রামের পথ বেছে নেয় এবং অস্ত্র ধরে স্বাধীনতা আসে।

তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা pdf

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

FAQ | তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা

Q1. তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতায় সগীর আলী ছিলেন

Ans – তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতায় সগীর আলী ছিলেন একজন জোয়ান।

Q2. তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার প্রেক্ষাপট কি

Ans – স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য মানুষ কিভাবে তাদের আপনজনকে হারিয়েছে এবং কিভাবে তারা অপদস্থ হয়েছে তার একটি বর্ণনা এ কবিতা থেকে পাওয়া যায়। ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ বাসী দেখেছি তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিন। শহরের পর শহর গ্রামের পর গ্রাম ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পাকিস্তানি সৈন্যরা চালিয়েছে হত্যাযজ্ঞ। চারিদিকে বয়েছে রক্তের গঙ্গা। প্রাণ দিয়েছে শত সহস্র মানুষ।

Q3. তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতার শেষ চরণ কোনটি

Ans – মানুষের স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান কবির মনে আশার আলো জাগিয়েছে তাই কবির দৃঢ় বিশ্বাস যে তাদের এই আত্ম বলিদান এবং আত্মত্যাগ কখনোই বৃথা যাবে না। স্বাধীনতা আসবেই অবশ্যই আসবে। একদিন বাঙালি তার স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিবেই।

“পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত
ঘোষণার ধ্বনিপ্রতিধ্বনি তুলে,
মতুন নিশান উডিয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক
এই বাংলায়
তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা।”

Q4. তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতায় শাহবাজপুরের জোয়ান কৃষক কে

Ans – তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা কবিতায় শাহবাজপুরের জোয়ান কৃষক সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক কেষ্ট দাস, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লোকটা।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।