প্রবন্ধ কাকে বলে
চিন্তার ‘প্রকৃষ্টবন্ধনযুক্ত’ রচনাকর্মকে সংস্কৃততে প্রবন্ধ আখ্যা দেয়া হতো। প্রবন্ধের প্রকৃতি প্রত্যয়গত অর্থ হলো ‘প্রকৃষ্ট বন্ধন’। অর্থাৎ, প্রকৃষ্ট রূপের বন্ধনই হলো প্রবন্ধ। প্রবন্ধের ইংরেজি শব্দ হলো ‘Essay’ । তবে প্রবন্ধের আরো একাধিক সমার্থক ইংরেজি শব্দ হতে পারে। যেমন- Article, Paper ইত্যাদি।
বাংলা প্রবন্ধ সাহিত্যে সাধারণত জ্ঞান বিজ্ঞান, ধর্ম, দর্শন, ইতিহাস, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, সাহিত্য, শিল্প ইত্যাদি চিন্তামূলক ও তত্ত্বমূলক বিষয় গদ্যবাহিত হয়ে প্রকাশ পায়। এই সমস্ত লেখার পেছনে থাকে যুক্তি। কোনো চিন্তাগ্রাহ্য বিষয়কে লেখক যখন যুক্তির সাহায্যে প্রতিষ্ঠা করতে চান, তখন তা প্রবন্ধ হয়ে উঠে।
‘প্রবন্ধ’ বা ‘Essay’ এক বিশেষ ধরনের গদ্যরচনা, ষোড়শ শতকে ফরাসি লেখক Michel de Montaigne তার Essais (1580) গ্রন্থের শিরোনামে শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন ‘essai’ বা ‘attempt’, অর্থাৎ প্রয়াস’ এই মূলগত অর্থে।
প্রবন্ধের ভিত্তি মানুষের চিন্তা, মনন ও তত্ত্ব। তথ্য ও যুক্তির সাহায্যে মননজ্যত কোনো বিষয়ের প্রতিষ্ঠা দান প্রবন্ধের লক্ষ্য।
প্রবন্ধ কত প্রকার ও কি কি
প্রবন্ধ মূলত দুই প্রকার যথা – ক. তন্ময় বা বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ খ.মন্ময় বা ব্যক্তিনিষ্ঠ প্রবন্ধ
বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ কাকে বলে
যে প্রবন্ধের মধ্যে বিষয়বস্তুর প্রাধান্য লক্ষ্যণীয় থাকে তাকে বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ বলে । বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধকেই মূলত প্রবন্ধ বলে বিবেচনা করা হয়। এই বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধের মূলত ৭ টি উপভাগ রয়েছে যেগুলি হল-
১. বিবৃতি মূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধে কাহিনীর বিবরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।
২. ব্যাখ্যা মূলক প্রবন্ধ : ব্যাখ্যামূলক প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য হলো মত তত্ব নিয়ে আলোচনা করা ।
৩. বর্ণনামূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধে বিষয়বস্তু বর্ণনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আলোচনা করা হয় ।
৪. বিতর্কমূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধের মাধ্যমে মতবাদের বিশ্লেষণ, পক্ষে এবং বিপক্ষে যুক্তি সমূহ আলোচনা হয় ।
৫. চিন্তামূলক প্রবন্ধ : বিশেষ দৃষ্টি কোন থেকে পরিচিত নির্ণয় করায় হলো এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য ।
৬. তথ্যমূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধ মূলত বিবিধ তথ্যের মাধ্যমে রচিত হয়ে থাকে ।
৭. নীতিকথা মূলক প্রবন্ধ : প্রচলিত নীতিকথা এই প্রবন্ধের স্থান লাভ করেছে ।
ব্যক্তিনিষ্ঠ প্রবন্ধ কাকে বলে
লেখকের পাণ্ডিত্য , জ্ঞানের গভীরতা প্রভৃতি সফল ভাবে প্রকাশ পায়। ব্যক্তিনিষ্ঠ প্রবন্ধের লক্ষণগুলি সূত্রাকারে এমনভাবে নির্ণয় করতে হয়।
- (ক) যুক্তি ও মননশীলতার পরিবর্তে লেখকের হৃদয়াবেগেরই প্রাধান্য থাকবে।
- (খ) এর বিষয়বস্তু লেখকের কল্পনা তথা ভাবরসে জারিত হয়ে পাঠকের হৃদয়কে স্পর্শ করে।
- (গ) সরস, মর্মস্পর্শী, আত্মগত ভঙ্গিতে পাঠককে কাছে টেনে নেন প্রাবন্ধিক।
- (ঘ) বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধকারের মতো মন্ময় প্রাবন্ধিক উদ্দেশ্য তাড়িত নন, বরং আত্মমগ্ন ও কিছুটা রহস্যময়।
- (ঙ) ভাব প্রধান প্রবন্ধ মূলত ব্যক্তিগত নৈর্ব্যক্তিক নয়।
- (চ) আবেগ ও কল্পনার প্রোজ্জ্বলতায় এ প্রবন্ধ লেখকের ব্যক্তিত্বের দর্পণ।
- (ছ) ভাষার ব্যবহারে প্রবন্ধকার অনেক বেশি স্বাধীনতা পান এবং পাঠকের সঙ্গে আন্তরিক বিনিময় গড়ে তোলেন।
আরো পড়তে: অলংকার কাকে বলে
প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য
ভাষার দক্ষতা বিকাশে প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি হল-
১. শিক্ষার্থীদের বলার দক্ষতাকে উন্নতিশীল করে ।
২. শিক্ষার্থীদের লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।
৩. শিক্ষার্থীদের পড়ার প্রতি আগ্ৰহী করে তোলে ।
৪. শিক্ষার্থীদের যুক্তিবাদী করে তুলতে সাহায্য করে ।
প্রবন্ধ পাঠদানের উদ্দেশ্য
প্রবন্ধ পাঠদানের গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যগুলি হল-
১. তথ্যবহুল কথা বলার দক্ষতা অর্জন করানো।
২. যুক্তিবাদী করে তোলা।
৩. গঠন ক্ষমতার উন্মেষ সাধনে প্রবন্ধ একান্ত ভাবে সাহায্য করে।
৪. শব্দ জ্ঞান ও বাক্য পদহিত পদবিন্যাস রীতি সম্বন্ধে ধারণা লাভ করানো সম্ভব।
৫. সাহিত্যে বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় শাখার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানো প্রবন্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।
৬. প্রবন্ধ পাঠদানের মাধ্যমে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যায়।
7. ইতিহাসের বিভিন্ন শাখা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার জন্য প্রবন্ধ পাঠদান করা জরুরি।
প্রবন্ধ লেখার নিয়ম
যে কোন বিষয়ে প্রবন্ধ লেখার শুরুতেই রচনাকারীকে বিষয়বস্তুটি ভালভোবে লক্ষ্য করতে হয়। বিষয়টির গুরুত্ব ও তাৎপর্য নির্ধারণ করতে হয় তারপরই। তারপর প্রবন্ধকার বিষয় সম্পর্কে নিজের বক্তব্যগুলো নির্ধারণ করবেন। অর্থাৎ প্রবন্ধের বিষয় সম্পর্কে তার কী বলবার অছে সেগুলোকে নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় নোট সংগ্রহ করবেন। তারপর তিনি কোন পদ্ধতিতে তার যুক্তিগুলো উপস্থাপন করবেন তা নির্ধারণ করবেন। কারণ তথ্য ও যুক্তির পারম্পর্য সফল ও সার্থক প্রবন্ধের পূর্বশর্ত।
প্রবন্ধকে তিনটি অংশে বিভাজন করে নেয়া প্রয়োজন; সূচনা, মূলবক্তব্য ও উপসংহার।
- সূচনা অংশে প্রবন্ধকার তাঁর বিষয়ের গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করবেন। কেন তিনি বিষয়টি নিয়ে একটি প্রবন্ধ রচনা করতে যাচ্ছেন তার কার্যকারণ ব্যাখ্যা করবেন।
- মূল বক্তব্য অংশে প্রবন্ধকার তাঁর যুক্তিজাল বিস্তার করবেন এবং ধাপে ধাপে তাঁর বক্তব্যকে সুশৃঙ্খলভাবে উপস্থাপন করবেন। এ অংশে তিনি বিষয়ের পক্ষে ও বিপক্ষে যত যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি অর্থাৎ রেফারেন্স ও ক্রস রেফারেন্স প্রদান করবেন। এবং সেই সঙ্গে পক্ষে-বিপক্ষের যুক্তিগুলোকে আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে একটি সাধারণ সত্যে উপনীত হবার চেষ্টা করবেন।
- আর উপসংহার অংশে প্রবন্ধকার তাঁর মতামতসহ সমগ্র বক্তব্যের একটি সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন করবেন। কোন কোন ক্ষেত্রে এ অংশে প্রবন্ধকার বিষয়বস্তুর দাবী অনুযায়ী আলোচনালব্ধ পরামর্শ ও সুপারিশ প্রদান করতে পারেন।
প্রবন্ধের যে তিনটি অংশের কথা বলা হল, তা যেন একটি জৈবিক ঐক্যে গ্রথিত হয়। অর্থাৎ, সূচনা, মূলবক্তব্য ও উপসংহার অংশ তিনটি যেন পরস্পর পরস্পরের সম্পূরক হয়- সেগুলো যেন কোনভাবেই তিনটি বিচ্ছিন্ন অংশে পরিণত না হয়। মনে রাখা দরকার, সূচনা অংশেরই বিবর্ধিত রূপ পাওয়া যাবে মূল বক্তব্য অংশে। আবার একইভাবে, উপসংহার অংশে থাকতে হবে সূচনা ও মূলবক্তব্য অংশের অর্থাৎ সমগ্র অংশের সংক্ষিপ্ত সার।
একটি স্বার্থক প্রবন্ধ লিখতে হলে কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। নিম্নে প্রবন্ধ লেখার ১০ টি নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
১. অন্যদের লেখা পড়াঃ কোনো প্রবন্ধ লিখতে হলে প্রথমে অন্য লেখকদের লেখা প্রবন্ধ পড়তে হবে। তারা কোন নিয়ম অনুসরণ করে প্রবন্ধ লিখেছে তা দেখতে হবে।এর ফলে প্রবন্ধ লেখার জন্য সুস্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে।
২. বারবার অনুশীলনঃ যেকোনো বিষয়ে দক্ষ হতে হলে সে বিষয়ে বারবার অনুশীলন করতে হয়।প্রবন্ধ লেখার ক্ষেত্রেও বারবার লিখে অনুশীলন করতে হবে। তবেই প্রবন্ধ লেখায় দক্ষ হওয়া যাবে।পত্র-পত্রিকায় প্রবন্ধ পড়ার অভ্যাস এক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
৩. হতাশ না হওয়াঃ অনেক সময় নিবন্ধ লিখলে সেই নিবন্ধটি পাঠকের পছন্দ নাও হতে পারে।প্রবন্ধ পড়ে পাঠকের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হলে, হতাশ হওয়া যাবে না। বরং দ্বিগুণ মনোবল নিয়ে প্রবন্ধ লিখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
৪. সম্পাদনায় যত্নশীল হওয়াঃ অনেক সময় প্রবন্ধ লেখার মান ভালো হলেও সঠিকভাবে সম্পাদনার অভাবে তা পাঠকপ্রিয়তা হারায়।বানানে ভুল হলে প্রবন্ধটি পড়তে পাঠক বিরক্ত হবেন।তাই প্রবন্ধ সম্পাদনার ক্ষেত্রে যত্নশীল হতে হবে।
৫. আকর্ষণীয় শিরোনামঃ র্প্রবন্ধের শিরোনাম এমন হতে হবে যেনো প্রবন্ধটি পড়তে পাঠক আকৃষ্ট হয়।
৬. নির্দিষ্ট কাঠামোঃ প্রবন্ধ লিখার ক্ষেত্রে একটি কাঠামোকে অনুসরণ করতে হবে। এজন্য প্রবন্ধ লেখার আগে লেখক একটি কাঠামো নিজেই তৈরি করে নিতে পারে।ভাষারীতির ক্ষেত্রে সাধু বা চলিত যেকোনো একটি রীতি ব্যবহার করতে হবে। সাধু ও চলিত ভাষার মিশ্রণে লিখা যাবে না। তবে,উদ্ধৃতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে হুবহু দিতে হবে।
৭. পুরো বিষয়ে ফোকাসঃ প্রবন্ধ লেখার ক্ষেত্রে যে কোনো প্রবন্ধের কী-ওয়ার্ডের দিকে বেশি ফোকাস না করে প্রবন্ধের পুরো বিষয়ের উপর ফোকাস করে লিখতে হবে।
৮. পাঠকের কথা মাথায় রাখাঃ প্রবন্ধ লিখার ক্ষেত্রে পাঠকের কথা মাথায় রাখতে হবে। পাঠক প্রবন্ধটি পড়ে যেনো সন্তুষ্ট হয়,সেদিকে খেয়াল রেখে লিখতে হবে।
৯. নিজস্ব ধারায় লেখাঃ প্রবন্ধ লিখার ক্ষেত্রে সব লেখক যেভাবে প্রবন্ধ লিখে থাকে,তা অনুসরণ না করে নিজস্ব স্টাইল অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ লেখনশৈলী গতানুগতিক ধারা থেকে কিছুটা ভিন্ন করা যেতে পারে।
১০. লেখার ধররণঃ প্রবন্ধ লেখার ধরণ এবং পদ্ধতি পরিবর্তন করা যেতে পারে।যেমন,কোনো বিষয়কে মজার ছলে উপস্থাপন করা যেতে পারে
বাংলা প্রবন্ধের ইতিহাস
মানব সমাজে চিন্তার বিকাশের ইতিহাসের সঙ্গে প্রবন্ধের বিস্তার ও বিকাশের ইতিহাস পরস্পর বিজড়িত ও সংলগ্ন। মানুষ তার কথাগুলো যখনই অন্যকে বলতে চেয়েছে বা অন্যকে তার মত করে বুঝাতে চেয়েছে তখনই সে আবিষ্কার করেছে প্রবন্ধের রীতি। সে বুঝেছে এই মাধ্যমটির সাহায্যে সে সরাসরি তার বলবার কথাগুলো অন্যকে বুঝাতে বা অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে।
ইংরেজি ভাষায় প্রবন্ধের সূত্রপাত হয়েছে এখন থেকে প্রায় তিনশত বছর আগে। ফরাসি লেখক মঁতেন এর অনুসরণে ফরাসিতে এবং ফ্রান্সিস বেকনের অনুসরণে ইংরেজিতে প্রবন্ধ সাহিত্যের ধারা গড়ে উঠেছিল। ঐ দুই ভাষার প্রবন্ধ সাহিত্য আজ সমৃদ্ধির চরম শিখরে পৌঁছেছে।
বাংলা ভাষায় প্রবন্ধ রচনার সূত্রপাত হয়েছে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে। বাংলাদেশে তখন সমাজ সংস্কার আন্দোলনের জোয়ার চলছে। রাজা রামমোহন রায় তাঁর একেশ্বরবাদী ধর্ম প্রবর্তনের মাধ্যমে বাঙালি সমাজে একটা প্রবল আন্দোলনের সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি তাঁর ধর্ম মতের এবং সমাজ সংস্কার আন্দোলন, বিশেষ করে সতীদাহ প্রথা নিবারণের বিষয় নিয়ে নিয়মিত প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন। আর সেগুলো প্রকাশ করেছিলেন ‘সম্বাদ কৌমুদী’ ও তৎকালের অন্যসব পত্র-পত্রিকায়।
রাম মোহন প্রবর্তিত ধর্মমত যেহেতু সংস্কারাবদ্ধ হিন্দু সমাজে প্রবল অভিঘাত সৃষ্টি করেছিল ফলে গোঁড়া হিন্দুরা গড়ে তুলেছিল রাম মোহনের বিরুদ্ধে শক্ত সমর্থ বিরোধী পক্ষ। তাঁরাও রামমোহনের সংস্কার আন্দোলন এবং ধর্ম মতকে অসার প্রমাণের জন্য উঠে পড়ে লেগেছিলেন। এবং নিজেদের মতের সপক্ষে পত্রিকায় লিখে চলেছিলেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে বাঙালি সমাজে যে তর্ক-বিতর্ক, উত্তর-প্রত্যুত্তরের সাহিত্য রচিত হতে শুরু করেছিল তার ওপর ভিত্তি করেই মূলত বাংলা ভাষায় প্রবন্ধের সূত্রপাত ঘটে।
রাজা রামমোহনের পর অক্ষয়কুমার দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এঁদের চিন্তাশীল রচনার মধ্যদিয়ে বাংলা ভাষায় প্রবন্ধ রচনার একটি প্রতিষ্ঠিত ভিত্তি তৈরি হয়। পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, বুদ্ধদেব বসু প্রমুখের রচনার মধ্য দিয়ে বাংলা প্রবন্ধ পুষ্প শোভিত হয়ে ওঠে। আজ বাংলা ভাষায় রচিত প্রবন্ধ সাহিত্য পৃথিবীর যে কোন ভাষায় রচিত প্রবন্ধের সমান মর্যাদা ও সমৃদ্ধির সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন
FAQ | প্রবন্ধ
Q1. প্রবন্ধ Meaning in English
Ans – প্রবন্ধের ইংরেজী প্রতিশব্দ হলো ” Essay ” প্রবন্ধ শব্দের মূলানুগ অর্থ ‘প্রকৃষ্ট বন্ধন যার’, বাংলায় রচনা মাত্রই প্রবন্ধ।
Q2. প্রবন্ধ কি
Ans – প্রবন্ধ’ শব্দের প্রকৃত অর্থ প্রকৃষ্ট রূপে বন্ধন । ‘প্রকৃষ্ট বন্ধন’ বলতে বোঝায় বিষয়বস্তু ও চিন্তার ধারাবাহিক বন্ধনকে । নাতিদীর্ঘ, সুবিন্যস্ত গদ্য রচনাকে প্রবন্ধ বলে । প্রবন্ধ রচনার বিষয়, ভাব, ভাষা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ । এক কথায় কল্পনা শক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিকে কাজে লাগিয়ে লেখক যে নাতিদীর্ঘ সাহিত্য রূপ সৃষ্টি করেন তাই প্রবন্ধ ।
Q4. ব্যক্তিগত বা মন্ময় প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য কি ?
Ans – 1) যুক্তি ও মননশীলতার fপরিবর্তে লেখক এর হৃদয়ে আবেগ এর প্রবণতা স্থান পাবে 2) এই প্রবন্ধের বিষয়বস্তু ভাব রসে জারিত হয়ে পাঠক কে আনন্দ দেবে ।
Q5. বস্তুনিষ্ঠ তন্ময় প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য কি ?
Ans – 1) তত্ব ও তথ্যের একটি লক্ষণ যোগ্য প্রাধান্য থাকে । 2) যুক্তিনিষ্ঠা ও ভাবনার সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা থাকে ।
Q6. তন্ময় প্রবন্ধ কাকে বলে ?
Ans – যে প্রবন্ধ বিষয়বস্তুর প্রাধান্য লক্ষ্যনীয় তাকে তন্ময় বা বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ বলে ।
আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারি ও বেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। হিন্দিতে শিক্ষামূলক ব্লগ পড়তে, এখানে ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন।