৩ টি গুরুতর রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

৩ টি গুরুতর রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা | Herbal Medicine

ঠান্ডা এলার্জির ঘরোয়া চিকিৎসা, ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসা

এলার্জি দূর করার উপায় বলতে আমরা শুধু ঔষধ সেবনই বুঝে থাকি। কিন্তু ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসা ঔষধ খাওয়ার মাধ্যমে এবং ঘরোয়া উপায়ে, দুইভাবেই করা সম্ভব। ঠান্ডা এলার্জি অন্যান্য রোগের মতো বিশেষ কোনো রোগ না হলেও এর কারণে মানুষের মাঝে বিব্রত হতে হয় সবচেয়ে বেশি। তাই চলুন ঔষধ এর দ্বারা এবং ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসা করা যায় সে ব্যাপারে আলোকপাত করা যাক।

এলার্জি কী?

এলার্জি হল ইমিউনসিস্টেমের এক ধরণের অবস্থা যা পরিবেশগত বা খাদ্যাভ্যাসজনিত কারণে মানবদেহে হাইপারসেনসিটিভিটি রূপে প্রকাশ পায়। এলার্জির বাহ্যিক রূপ সাধারণত শরীরে চুলকানো, গোল চাকা দাগ, শ্বাস-প্রশ্বাসে বাধার মাধ্যমে প্রকাশ পায়।

ঠান্ডা জনিত এলার্জি কেন হয় ?

যাদের শরীরে রক্তে এলার্জির পরিমাণ বেশি তাদের ক্ষেত্রে ঠান্ডা এলার্জি বেশি দেখা যায়। তবে কিছু কারণে এই এলার্জি শরীরে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে । যেমন

  • বিভিন্ন পশু পাখির লোম
  • কসমেটিক্স সামগ্রী
  • গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া
  • রাস্তার ধুলাবালি
  • বিভিন্ন ধরনের এলার্জি জাতীয় খাবার যেমন ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, চিংড়ি, বেগুন, হাঁসের ডিম এগুলো থেকে মানবদেহে অ্যালর্জিজনিত সমস্যাগুলো বেশি প্রকট হয়ে ওঠে। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় যে শীতকালে ঠান্ডা আবহাওয়ায় এলার্জির সমস্যা বেশি হয়।

ঠান্ডা জনিত এলার্জির লক্ষণ

এলার্জির প্রধান লক্ষণ হলো শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি। তবে ঠান্ডা এলার্জির আরেকটি লক্ষণ হলো নাক বন্ধ হয়ে আসা এবং বারবার হাচি হওয়া। তাছাড়া এর পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফুলে যাওয়া সহ চোখ লাল হয়ে যেতে পারে। এই কারণে অনেক সময় চোখ দিয়ে পানি ঝরতে পারে। এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে বুঝতে হবে যে এগুলো অ্যালার্জি জনিত সমস্যা।

ঠান্ডা অ্যালার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায়

  • পেয়ারা খান: পেয়ারায় আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি দূর করতে এই উপাদানটি দারুণ কাজ করে। পেয়ারার পাশাপাশি লেবুর শরবত অথবা লেবু চা খেলেও উপকার পাবেন।
  • ঘিতে উপকার: ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি দূর করতে খাবারের সঙ্গে ঘি খেতে পারেন। বিশুদ্ধ ঘি সংগ্রহ করে একবার এক চা-চামচ ঘি খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে গ্রহণ করলে ঠান্ডার সমস্যা কেটে যাবে।
  • কালিজিরা একটি মহৌষধ: কালিজিরা খেয়ে ঠান্ডাজনিত অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। রাতের খাবার কালিজিরা ভর্তা অথবা ঘুমানোর আছে কালিজিরার বড়ি খান। উপকার পেলে নিয়মিত খেতে পারেন।
  • ঠান্ডার সমস্যায় মধু: গ্রামে এখনও ঠান্ডার চিকিৎসায় মধু ব্যবহার করা হয়। যাদের অ্যালার্জিজনিত ঠান্ডার সমস্যার কষ্ট দিচ্ছে, তারা দিনে দুই চা-চামচ মধু খেয়ে দেখুন, ঠান্ডার সমস্যা চলে যাবে।

এলার্জি দূর করার উপায়

এলার্জি কখনো সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করা সম্ভব হয় না। তবে ডাক্তাররা ঠান্ডা এলার্জির চিকিৎসায় পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে এলার্জির চিকিৎসা করার চেয়ে এলার্জি প্রতিরোধ করার সবচেয়ে উত্তম। তাই যদি আপনার ঠান্ডা এলার্জির সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে প্রথমে বের করতে হবে যে এই এলার্জির উৎস কোথায়।

অর্থাৎ কোন খাবার বা কোন পরিবেশের কারণে এই সমস্যাগুলো হচ্ছে। এভাবে খুঁজে বের করে যে সকল কারনে  এলার্জি জনিত সমস্যা হয়ে থাকে সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে।

রক্তের এলার্জি দূর করার উপায় হল যদি বিভিন্ন খাবার খাওয়ার কারণে হয়ে থাকে তাহলে সে সকল খাবার পরিহার করতে হবে। আবার রাস্তার ধুলাবালি এবং গাড়ির কালো ধোঁয়া থেকে যদি সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে চলাচলের সময় মাস্ক পরিধান করতে হব। যদি কখনো সমস্যা অত্যন্ত গুরুতর হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে।

কিডনি রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা, কিডনি রোগের ভেষজ চিকিৎসা

ক্রনিক কিডনি রোগ ক্রনিক রেনাল রোগ নামেও পরিচিত, এটি এমন একটি কিডনি সংক্রান্ত রোগ যার দ্বারা একজন সমর্থ লোক তার রেচন ক্ষমতা ধীরে ধীরে হারাতে থাকে। এই রোগের কিছু অস্পষ্টউপসর্গ দেখা যায় যার মধ্যে কিছু হল ক্ষুধা হ্রাস, অসুস্থ বোধ করা ইত্যাদি। উচ্চ রক্তচাপ সম্পন্ন অথবা ডায়াবেটিক সম্পন্ন অথবা ডায়াবেটিক অথবা ডায়াবেটিক রোগীদের মধ্যে এই রোগটি দেখা যায়। এই রোগটি অন্যান্য রোগ যেমন কার্ডিওভাসকুলার, অ্যানিমিয়া এবং পেরিকার্ডাইটিস-এর কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়।

কিডনির রোগের ঝুঁকি কমানোরও অনেক উপায় রয়েছে। যার মধ্যে প্রধান হল ফিট থাকা। এতে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় এবং কিডনি সহ একাধিক দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমানো যায়। তবে প্রথমে থেকেই যদি কিডনির রোগকে প্রতিরোধ করতে চান তাহলে ডায়েটে এই ৪টি ভেষজ রাখতে পারেন।

  • ত্রিফলা: ত্রিফলা মূলত ফলের তিনটি গুণকে সমানুপাতে মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এটি আয়ুর্বেদের সবচেয়ে কার্যকরী ভেষজ। এটি একাধিক রোগ নিরাময়ের ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্রিফলা সেবনে ডনি ও লিভারকে সুস্থ রাখা যায় সহজেই। উপরন্তু, এটি কিডনির কার্যকারিতাকে উন্নত করে।
  • হলুদ: এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে, হলুদ হচ্ছে সবচেয়ে কার্যকরী একটি ভেষজ। এই শক্তিশালী উপাদানটি হার্ট, লিভার, ত্বক ও কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নিয়ম হলুদ সেবনে কিডনির সংক্রমণকে দূরে রাখা যায়। এর পাশাপাশি মূত্রনালির সংক্রমণ এড়ানো যায়।
  • ​ধনে পাতা: ধনে পাতা এবং ধনের বীজ সব রান্নাঘরেই থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উপাদানটি কিডনিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। রোজের খাবার ধনে পাতা বা ধনে গুঁড়ো ব্যবহার করলেই উপকার পাবেন।
  • আদা: আদা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদে আদাকে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। আদার মধ্যে থাকা ওষুধি গুণ কিডনির পাশাপাশি লিভারের সমস্যাকেও দূরে রাখতে সাহায্য করে।
  • রসুন: রসুন কিডনিসহ দেহের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি দেহ থেকে বাড়তি সোডিয়াম দূর করে। রসুনের মধ্যে রয়েছে অ্যালাইসিন, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটোরি, অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদান। রসুন কিডনি থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে কার্যকর। তাই কিডনি ভালো রাখতে খাদ্যতালিকায় এটি রাখুন।

কিডনি রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

ক্রনিক কিডনি রোগের চিকিৎসার আদর্শতম উপায় হল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাপদ্ধতি। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাহলো প্রাকৃতিক পদ্ধতি এবং এর দ্বারা রোগের সমস্ত কারণ নিবারণের চেষ্টা করা হয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় উপসর্গ সব সময় প্রধান মান্যতা পায়। উপসর্গের মাধ্যমে এখানে সর্বাপেক্ষা ভাল ওষুধের চয়ন করা হয়। নিম্নে কিছু ওষুধের বিশদ বিবরণ দেওয়া হলো যেগুলি ক্রনিক কিডনি রোগটি নিবারণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

  1. এপিস মেলিফিকা: এই ওষুধটি রোগের তীব্র পর্যায়ে ব্যবহৃত ব্যবহৃত হয় না। এই সময়-এর লক্ষণ গুলি হল প্রচন্ড ঘাম দেওয়া, মাথা ব্যথা, ঘাড়ে ব্যথা হওয়া ইত্যাদি। যখন কিডনিতে অল্প ব্যথা হয় প্রস্রাবের পরিমাণ কম হয়ে যায় তখন এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। রোগীর প্রস্রাবে অ্যালবুমিন থাকে এবং রক্তে করপাসলবর্তমান থাকে ,চামড়া ফুটো হয়ে যায় এবং রোগী তৃষ্ণার্ত বোধ করে।
  2. আর্সেনিকাম: এই ওষুধটি রোগের সব পর্যায়ে ব্যবহৃত হয় এবং এটি রোগের সর্বোত্তম প্রতিকার গুলির মধ্যে একটি। এটি রোগের পরবর্তী পর্যায়ে ব্যবহৃত হয় যখন রোগীর ত্বক ফ্যাকাশে হয়ে যায় এবং সে মোমের ন্যায় আচরণ করে, সাথে অতিরিক্ত তৃষ্ণার্ত বোধ এবং ডায়রিয়া হয়। প্রস্রাবের রং খুবই চাপা ধরনের হয় এবং তাতে অ্যালবুমিনের পরিমাণ প্রচন্ড বেশি থাকে। রাতে শোয়ার সময় রোগীর শ্বাসকষ্ট লক্ষ্য করা যায়। এই সময়ে অ্যাকোনাইট প্রদানের ফলে রোগী কিছুটা স্বস্তি পায়।
  3. অরাম মুরিয়াটিকাম: হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি ছাগলের কারণে হওয়া হওয়া মরবুসব্রাইটির মতো রেচন রোগ নিরাময় ব্যবহৃত হয় ।এর দ্বারা ভার্টিগোও হতে পারে।
  4. বেলাডোনা: কিডনির কটিদেশীয় অঞ্চলে প্রদাহ বা ব্যাথা নিরাময়ের আদর্শ নিরাপদ ওষুধ হলো বেলেডোনা।
  5. ক‍্যান্থারিস: এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি নেফ্রাইটিস নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। ক্যান্থারিস ডিফথেরিক কিডনি রোগে ড্রপসির সাথে ব্যবহার করা হয়।
  6. কোনাভ্যালারিয়া: হৃদরোগের কারণে নেফ্রাইটিস হলে কোনাভ্যালারিয়া ব্যবহৃত হয়। যখন হৃদপিণ্ড অনিয়মিত ভাবে কাজ করে তখন এই ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।

হোমিওপ্যাথিক ওষুধ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য খুবই কার্যকর ।সব ধরনের রেচন রোগের জন্য হোমিওপ্যাথিকে নিরাময় আছে।

দাউদের চিকিৎসা মলম, দাদ এর চিকিৎসা, দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা, পুরাতন দাদ এর চিকিৎসা

দাদ বা রিংওয়ার্ম একটি সাধারণ ফাংগাস জাতীয় রোগ। চিকিৎসা না করা বা ভুল চিকিৎসা গ্রহণ করলে দাদ রোগটির ভোগান্তি বেড়ে যেতে পারে বহুগুণ। উপর্যপরি বর্তমান দক্ষিন এশিয়ার দেশগুলোতে ড্রাগ রেসিস্টেন্ট ফাংগাসের দ্বারা দাদে আক্রান্ত হবার সমস্যাটি বেড়ে চলেছে জ্যামিতিক হারে। রোগটি অস্বাভাবিক রকম ছোঁয়াচে, তাই এটি বিপুল হারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বেশি। আসুন জেনে আসি, দাদ রোগ কি, কেন হয়, চিকিৎসা, প্রতিরোধে করনীয় সহ সম্পর্কিত বিষয়াবলি।

দাদ বা দাউদ কি?

Dermatophytosis জাতীয় ফাংগাসের সংক্রমনে হওয়া রোগকে দাদ বলে। ইংরেজিতে একে রিং ওয়ার্ম বলা হয়। তবে এর সাথে ওয়ার্ম বা পোকার কোন সম্পর্ক নেই। এটি সম্পুর্ণই ফাংগাস এর কারণে হয়ে থাকে।

দাদ এর ফাংগাস ত্বকের ভেতর বাসা বাধে, ও ত্বকের ভেতর প্রবেশ করে বসবাস ও খাদ্য গ্রহণ করে। মোট ৪০ টি প্রজাতির ফাংগাস দ্বারা দাদ রোগ হতে পারে।

দাদ কেন হয়?

সাধারনত অপরিষ্কার ও স্যাতস্যাতে পরিবেশে বসবাস বা ব্যাক্তিগত পরিচ্ছন্নতায় অবহেলার কারণে দাদ রোগটি বেশি হয়ে থাকে। রোগটি অত্যন্ত সংক্রমক রোগ হবার কারণে আক্রান্ত ব্যাক্তির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংষ্পর্শে অন্যরা আক্রান্ত হতে পারে। সে কারণে ঘনবসতি এলাকায় দাদ রোগের সংক্রমণ বেশি হতে দেখা যায়। 

দাদ মানুষ ছাড়াও কুকুর, বিড়াল ও গৃহপালিত স্তন্যপায়ী পশুকে আক্রান্ত করতে পারে এবং আক্রান্ত পশুর সংষ্পর্শে মানুষও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত শিশু, কিশোর ও বৃদ্ধদের এ রোগটিতে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা যায়। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে দাদ সহজে আক্রান্ত করতে পারে ও সারতেও সময় লাগে।

দাদ রোগের লক্ষন

দাদ রোগের লক্ষন ও উপসর্গ জায়গা ভেদে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। দাদ হাতে, পায়ে, মুখে, মাথায়, বগল ও কুচকিতে হতে দেখা যায়। তবে সাধারণত নিচের উপসর্গ গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়-

  • প্রাথমিক অবস্থায় ছোট ফোঁড়া ও চুলকানি হতে দেখা যায়। এমন অবস্থায় সহজে দাদ সনাক্ত করা যায় না। 
  • ছোট ফোড়া থেকে আস্তে আস্তে ত্বকে  লালচে ফুসকুড়ি সহ গোলাকার স্থান তৈরি হয়। ফাংগাস প্রায় সমভাবে ত্বকের চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে ফলে একটি গোলাকার আকৃতি তৈরি হয়। গোলাকার অংশের চারপাশে নতুন আক্রান্ত স্থান সামান্য ফুলে থাকে।
  • আক্রান্ত স্থানে চুলকানী ও জ্বলুনী অনুভব হয়।
  • চিকিৎসা না করলে আক্রান্ত স্থান ক্রমশ বড় হতে থাকে ও নতুন স্থান আক্রান্ত হতে পারে।
  • মাথায় দাদ হলে আক্রান্ত স্থানের চুল পড়ে যেতে পারে।

দাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

দাদ হলে সব সময়ই চিকিৎসক বা স্কিন স্পেশ্যালিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত। এসব ক্ষেত্রে শুরুর দিকে সাধারণ চুলকানি মনে হলেও, খুব তাড়াতাড়ি এটা শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে কিছু ঘরোয়া টোটকাও দাদ নিরাময়ে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার যেটা সুবিধা হবে তা হল অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি দাদ বা চুলকানি থেকে বেশ কিছুটা মুক্তি বোধ করতে পারেন। 

  • নিম পাতা: নিম পাতা যে জীবাণু বিনাশ করতে খুবই কার্যকরী সে কথা আমরা সবাই জানি। নিম পাতা বেটে যদি প্রতিদিন দাদের উপর লাগানো যায় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি এই বিশ্রী সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
  • রসুন: দু’-এক কোয়া রসুনের খোসা ছাড়িয়ে ভাল করে ধুয়ে থেঁতো করে দাদের উপরে নিয়ম করে লাগাতে হবে। রসুন যেহেতু যে-কোনও রকমের ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সক্ষম, তাই থেঁতো করা রসুন দাদের উপরে লাগালে মূল থেকে দাদের সমস্যা দূর হবে।
  • কর্পূর: কর্পূর যে শুধুমাত্র দাদ এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে তা নয়, দাদ যাতে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে না পড়ে তাতেও সাহায্য করে। এছাড়া দাদের একটা বিশ্রী দাগ থেকে যায়, নিয়মিত সংক্রামিত অংশে কর্পূর লাগালে দাদের দাগও মিলিয়ে যাবে।
  • নারকেল তেল:দাদ যেহেতু একটি ফাঙ্গাল ইনফেকশন কাজেই এই সংক্রমণ রোধ করতে নারকেল তেল খুবই উপকারী কারণ নারকেল তেলে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপারটিস। এছাড়াও নারকেল তেল ত্বকের চুলকানি বা জ্বালা-পোড়া কমাতেও সাহায্য করে।
  • অ্যালোভেরা জেল: ঠিক অন্যান্য ঘরোয়া টোটকার মতোই, অ্যালোভেরাও কিন্তু দাদ নির্মূল করতে সক্ষম। ভাল কোনও আয়ুর্বেদিক ব্র্যান্ডের অ্যালোভেরা জেল নিয়মিত সংক্রামিত জায়গায় লাগান, কিছুদিনের মধ্যেই দাদ ও জীবাণু দূর হবে।
  • হলুদ বাটা: হলুদও অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল গুণে সমৃদ্ধ। হলুদ বাটার সঙ্গে সামান্য জল মিশিয়ে দাদ দ্বারা আক্রান্ত শরীরের অংশে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে স্নান করে নিন।
  • উচ্ছে পাতা: শুনতে অবাক লাগলেও, উচ্ছে পাতা কিন্তু দাদের সমস্যা দূর করতে খুব ভাল ঘরোয়া টোটকা। নিম পাতার মতো উচ্ছে পাতাও বেটে নিয়ে নিয়মিত দাদ সংক্রামিত অংশে লাগান। কয়েকদিনের মধ্যেই এই ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে মুক্তি পাবেন।

দাদের চিকিৎসা ঔষধ

দাদ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধগুলো বিভিন্ন রূপে পাওয়া যায়। যেমন: ক্রিম, জেল, লোশন, স্প্রে, পাউডার, ট্যাবলেট ও ক্যাপসুল।

শরীরের ত্বকে দাদ রোগ হলে সাধারণত মুখে খাওয়ার ঔষধ না দিয়ে ক্রিম, জেল, লোশন, স্প্রে কিংবা পাউডার হিসেবে সরাসরি ত্বকে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এমন ঔষধের মধ্যে রয়েছে ক্লট্রিমাজোল, মাইকোনাজোল, টার্বিনাফিন ও কিটোকোনাজল। এগুলো সাধারণত ২–৪ সপ্তাহ একটানা ব্যবহার করতে হয়।

যেসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যাওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ

  1. ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ত্বকে অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ ব্যবহারের পরেও অবস্থার উন্নতি না হলে
  2. কোনো কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে। যেমন: কেমোথেরাপি কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার ও ডায়াবেটিস
  3. মাথার ত্বকের দাদ হলে। এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ১–৩ মাস পর্যন্ত মুখে খাওয়ার ঔষধ ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি শ্যাম্পু ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়ে থাকে।
আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা বই

হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিশনার্স গাইড (অরিজিনাল), বেঙ্গালি মেডিক্যাল



হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিশনার্স গাইড (অরিজিনাল), বেঙ্গালি মেডিক্যাল

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।