অষ্টম শ্রেণির এসাইনমেন্ট বিজ্ঞান

আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

সূচিপত্র

৮ম শ্রেণির ৯ম সপ্তাহের বিজ্ঞান এসাইনমেন্ট | অষ্টম শ্রেণির এসাইনমেন্ট বিজ্ঞান

ক্রোমোজোম, ক্রোমোজোম কাকে বলে

কোষের নিউক্লিয়াসের ভেতর অবস্থিত নিউক্লিয় জালক থেকে উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত যে-সুতোর মতো অংশ জীবদেহের বংশগত বৈশিষ্ট বহন করে এবং জীবের এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে পরিবাহিত করে, তাকে ক্রোমোজোম বলে।

প্রতিটি কোষে অবস্থিত একপ্রকার তন্তময় বস্তু যা ক্ষারীয় রঞ্জক দ্বারা রঞ্জিত হয় তাকে ক্রোমোজোম বলা হয়। সকল জীবকোষের ক্রোমোজোম তন্তুর মত হলেও এদের আকৃতি কোষ বিভাজনের বিভিন্ন দশায় ও উপদশায় পরিবর্তিত হয়।

ব্যাকটেরিয়ার প্রোক্যারিওটিক নিউক্লিয়াসের মধ্যে একটি মাত্র ক্রোমোজোম থাকে। ক্রোমোজোমকে এর আকৃতি ও প্রকৃতি উন্নত জীব কোষের ক্রোমোজোমের তুলনায় অনেক সরল। ইউক্যারিওটিক উদ্ভিদ ও প্রাণী কোষে ক্রোমোজোমের আকৃতি এবং সংখ্যা বিভিন্ন প্রকারের হয়।

তবে একই প্রাণী ও একই উদ্ভিদের সকল দেহ কোশেই একই সংখ্যক ক্রোমোজোম থাকে। যেমন মানুষের যকৃত, বৃক্ষ এবং শ্বেত কণিকা থেকে ক্রোমোজোম পৃথক করলে তাদের সংখ্যা সকল ক্ষেত্রেই 46 টি হবে। মানুষের 46 টি ক্রোমোজোম এর মধ্যে তেইশটি বিভিন্ন আকারের ক্রোমোজোম থাকে। এদের বলা হয় একটি হ্যাপ্লয়েড সেট। যেহেতু প্রতিটি ক্রোমোজোম দুটি করে থাকে তাই দেহ কোষের ক্রোমোজোমের বলা হয় দুই সেট বা ডিপ্লয়েড

ক্রোমোসোমের গঠন

একটি আদর্শ ক্রোমোসোম নিম্নোক্ত অংশের সমন্বয়ে গঠিত-

ক্রোমাটিড

কোষ বিভাজনের মেটাফেজ পর্যায়ে প্রাতটি ক্রোমোসোম অনুদৈর্ঘ্য বরাবর দুটি খন্ডে বিভক্ত থাকে। এ ধরনের প্রতিটি খন্ডকে ক্রোমাটিড বলে।

ক্রোমাটিন

ক্রোমাটিডের দৈর্ঘ্য বরাবর সূক্ষ তন্তুর ন্যায় এক বা একাধিক যে অংশ দেখা যায় তাকে ক্রোমাটিন তন্তু বা ক্রোমেনেমা বলে। ক্রোমোজোমের মূল উপাদান হলো ক্রোমাটিন যা মূলত DNA প্রোটিন যৌগ।

সেন্ট্রোমিয়ার

রঞ্জিত করলে ক্রোমোসোমের যে অংশ রংহীন থাকে তাকে সেন্ট্রোমিয়ার বলে।

মুখ্যকুঞ্চন

সেন্ট্রোমিয়ার যে স্থানে থাকে সে স্থানে ক্রোমোজোমে একটি খাঁজ এর সৃষ্টি হয়। এই খাঁজকে মুখ্যকুঞ্চন বলে।

বাহু

সেন্ট্রোমিয়ারের দুই পাশের ক্রোমোজোমাল অংশকে বাহু বলা হয়। প্রতিটি ক্রোমোসোমের দুটি বাহু থাকে।

কাইনেটোকোর

প্রতিটি ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ারে এটি ছোট গাঠনিক অবকাঠামো থাকে যাকে কাইনেটোকোর বলে।

ক্রোমোমিয়ার

মিয়োসিসের প্যাকাইটিন উপপর্যায়ে ক্রোমোজোমের উপর যে গোলাকার দানার মতো অংশগুলো দেখা যায় তাকে ক্রোমোমিয়ার বলে।

গৌন ‍কুঞ্চন

সেন্ট্রোমিয়ার ছাড়াও কোন কোন ক্রোমোসোমে এক বা একাধিক কুঞ্চিত অংশ রয়েছে একে গৌন কুঞ্চন বলে।

স্যাটেলাইট

গৌন কুঞ্চন দ্বারা পৃথক করা গোলাকার অংশকে স্যাটেলাইট বলে। স্যাটেলাইট যুক্ত ক্রোমোজোমকে “স্যাট ক্রোমোজোম “ বলে।

টেলোমিয়ার

ক্রোমোসোমের প্রান্তের বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ন অঞ্চলকে টেলোমিয়ার বলে।

পেলিকল

ক্রোমোসোমের কল্পিত বহিরাবরনকে বলে পেলিকল।

ম্যাট্রিক্স

ক্রোমাটিন তন্তুর চারদিকে পেলিকল দ্বারা আবৃত স্তরকে ম্যাট্রিক্স বলে।

ক্রোমোজোমের প্রকারভেদ

সেন্ট্রোমিয়ারের সংখ্যা অনুযায়ী ক্রোমোজোম ৫ প্রকার। যথা-

  • মনোসেন্ট্রিক -১টি সেন্ট্রোমিয়ার থাকে
  • ডাইসেন্ট্রিক- ২টি সেন্ট্রোমিয়ার থাকে
  • পলিসেন্ট্রিক- ২ এর অধিক সেন্ট্রোমিয়ার থাকে
  • ডিফিউজড- সেন্ট্রোমিয়ার নির্দিষ্ট স্থানে সুস্পষ্টভাবে থাকে না
  • অ্যাসেন্ট্রিক- কোন সেন্ট্রোমিয়ার থাকে না।

সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে ক্রোমোজোম ৪ প্রকার। যথা-

মধ্যকেন্দ্রিক বা মেটাসেন্ট্রিক

যে সকল ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার একেবারে মাঝখানে অবস্থান করে তাদেরকে মধ্যকেন্দ্রিক বা মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে।এর আকৃতি ইংরেজী V অক্ষরের মত।

উপ-মধ্যকেন্দ্রিক বা সাব-মেটাসেন্ট্রিক

যে সকল ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ার মাঝখান একটু একপাশে অবস্থান করে তাদেরকে উপ-মধ্যকেন্দ্রিক বা সাব-মেটাসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। এর আকৃতি ইংরেজী L অক্ষরের মত।

উপ-প্রান্তকেন্দ্রিক বা এক্রোসেন্ট্রিক

যে সকল ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ারটি এক প্রান্তের কাছাকাছি অবস্থিত থাকে তাদেরকে উপ-প্রান্তকেন্দ্রিক বা এক্রোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। এর আকৃতি ইংরেজী J অক্ষরের মত।

প্রান্তকেন্দ্রিক বা টেলোসেন্ট্রিক

যে সকল ক্রোমোজোমের সেন্ট্রোমিয়ারটি একবারে প্রান্তে অবস্থিত থাকে তাদেরকে প্রান্তকেন্দ্রিক বা টেলোসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম বলে। এর আকৃতি ইংরেজী I অক্ষরের মত।

কাজ, দেহ গঠন ও লিঙ্গ নির্ধারনের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ক্রোমোজোম দুই ধরনের। যথা-

অটোসোম

যে সকল ক্রোমোজোম দৈহিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রনকারী জিন বহন করে তাদেরকে অটোসোম বলে। অটোসোমের সেটকে A চিহ্ন দ্বারা প্রকাশ করা হয়। মানুষের দেহকোষে মোট ২২ জোড়া অটোজোম থাকে।

সেক্স ক্রোমোজোম

যে সকল ক্রোমোজোম জীবের লিঙ্গ নির্ধারন করে তাদেরকে সেক্স ক্রোমোজোম বলে। এরা দুই ধরনের যথা- X ও Y । পুরুষে থাকে XY এবং স্ত্রীতে থাকে XX ক্রোমোজোম।

ক্রোমোজোম সৃষ্টি হয় কি থেকে

নিউক্লিয় জালিকা থেকে ক্রোমোজোম সৃষ্টি হয়।

একটি ক্রোমোজোম প্রোটিন এবং ডিএনএ দ্বারা গঠিত হয় যা জিনে সংগঠিত হয়। প্রতিটি কোষে সাধারণত 23 জোড়া ক্রোমোজোম থাকে।

ক্রোমোজোম চিত্র, ক্রোমোজোমের, ক্রোমোজোমের চিত্র, ক্রোমোজোমের ছবি

ক্রোমোজোমের চিত্র

এনাফেজ দশার ক্রোমোজোমের ক্ষেত্রে কি কি পরিবর্তন ঘটে

নীচে দেখানো ঘটনাগুলি বিভিন্ন পর্যায়ে ঘটে:

  • সেন্ট্রোমিয়ার বিভক্ত হয়, ক্রোমাটিডগুলি পৃথক হয় এবং বিপরীত মেরুতে চলে যায়, ক্রোমাটিডগুলিকে এখন ক্রোমোজোম বলা হয়।
  • বিপরীত মেরুতে ক্রোমোজোম ক্লাস্টার, ক্রোমোজোমের ডিকনডেনসেশন, নিউক্লিয়ার মেমব্রেনের পুনরাবির্ভাব, গলগি বডি এবং ইআর।
  • ক্রোমোসোমাল প্রতিলিপি।
  • কাইনেটোচোরস স্পিন্ডল ফাইবারগুলির সাথে সংযুক্ত থাকে এবং ক্রোমোজোমগুলি বিষুবীয় প্লেটে সাজানো থাকে।
  • ক্রোমোসোমাল পদার্থের ঘনীভবন।

কোন কোষ বিভাজনে প্রজাতির ক্রোমোজোম সংখ্যা ধ্রুবক থাকে

মাইটোসিসে, কোষে ক্রোমোজোমের সংখ্যা বজায় থাকে।

কোন বিজ্ঞানী ক্রোমোজোম সনাক্তকরণ করেন

বিজ্ঞানী স্ট্রাসবার্গার (Strasburger) (১৮৭৫) সর্বপ্রথম ক্রোমোজোম আবিষ্কার করেন। ১৮৮৮ সালে বিজ্ঞানী ওয়ালডেয়ার (Waldeyer) কোষ বিভাজনের প্রোফেজ দশায় প্রাপ্ত দণ্ডাকার গঠনের ক্রোমাটিনের নাম দেন ক্রোমোজোম।

১৯৩৩ সালে বিজ্ঞানী বোভেরি (Bovery) প্রমাণ করেন যে ক্রোমোজোমই বংশগতির ধারক ও বাহক। ১৯৩৫ সালে বিজ্ঞানী হেইজ (Heitz) সর্বপ্রথম ক্রোমোজোমের গঠনের বিস্তারিত বর্ণনা দেন। ১৯৬৬ সালে বিজ্ঞানী ডুপ্রো (Dupraw) ক্রোমোজোমের সূক্ষ্ম গঠন বর্ণনা করেন।

ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের, ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানিক চিত্র, ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের চিত্র,
একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের, একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গ, একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানিক চিত্র অঙ্কন করো, একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানের চিত্র অঙ্কন করে, একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের অঙ্গসংস্থানের চিত্র অঙ্কন করে নিম্নলিখিত, একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের চিত্র, একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের চিত্র অঙ্কন করো

একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের ব্যাপারে নিচে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা সহ একটি অঙ্গসংস্থানিক চিত্র অঙ্কন করে প্রদত্ত অংশ গুলি চিনহিত করা হল-

  • বংশগতির প্রধান উপাদান হল ক্রোমোজোম । কোষ বিভাজনের প্রোফেজ দশায় ক্রোমাটিন তন্তু দণ্ডাকার গঠনে পরিনত হয় এবং ক্রোমোজোম গঠন করে। এটি জীবের সকল বৈশিষ্ট্য ধারণ করে । মুলত ক্রোমোজোমের মাধ্যমেই বৈশিষ্ট্যসমূহ এক বংশ থেকে পরের বংশে সঞ্চারিত হয়।
  • ক্রোমাটিড : দৈর্ঘ্য বরাবর প্রতিটি ক্রোমোজোমের দুটি সূক্ষ্ম সুতোর মতো অংশ নিয়ে ক্রোমাটিড নামে পরিচিত।
  • সেন্ট্রোমিয়ার- ক্রোমোজোমের মধ্যবর্তী স্থানে থাকা খাজে যে ঘন ,অরঞ্জিত অংশটি থাকে সেটি সেন্ট্রোমিয়ার।
  • নিউক্লিওলার অর্গানাইজার: টেলোফেজ দশায় এই অঞ্চলে থাকা DNA নিউক্লিওলাস গঠন করে তাই গৌণ খাজকে নিউক্লিওলার অর্গানাইজার বলে।
  • টেলোমিয়ার – ক্রোমোজোমের প্রান্তদ্বয়কে টেলোমিয়ার বলে।
 একটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমের চিত্র

কোষ বিভাজনের কোন পর্যায়ে ক্রোমোজোম থেকে পানি শোষণ হয়

টেলোফেজ, র্যায়ে ক্রোমোজোম থেকে পানি শোষণ হয়।

ক্রোমোজোমের প্রান্ত দয় এর নাম কি

ক্রোমোজোমের প্রান্ত বা অন্তিম ভাগকে বলা হয় টেলোমিয়ার। বিজ্ঞানী মুলার সর্বপ্রথম টেলোমিয়ার অঞ্চলের উল্লেখ করেন।

ক্রোমোজোমের রাসায়নিক উপাদান, ক্রোমোজোমের রাসায়নিক উপাদান গুলি উল্লেখ করো

ব্যাকটেরিয়া থেকে মানুষ পর্যন্ত সকল জীব কোষেই ক্রোমোজোম থাকে। তবে ব্যাকটেরিয়ার ক্রোমোজোমের তুলনায় অন্যান্য বহুকোষী জীবের ক্রোমোজোমের আকার, সংখ্যা এবং রাসায়নিক গঠন ভিন্ন ধরনের হয়। ক্রোমোজোমের রাসায়নিক বিশ্লেষণ করলে এতে প্রধান দুটি উপাদান পাওয়া যায়। যথা নিউক্লিক অ্যাসিড এবং প্রোটিন। নিউক্লিক এসিডের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগের অধিক থাকে DNA এবং বাকি অংশ RNA ।

প্রোটিনদের মধ্যে ক্রোমোজোমের মূল গঠনে অধিকমাত্রায় হিস্টোন বা বেসিক প্রোটিন পাওয়া যায়। অহিস্টোন বা এসিড প্রোটিন থাকে খুবই সামান্য। ইঁদুরের যকৃৎ কোষের ক্রোমাটিন বস্তু রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে এতে ১:১ অনুপাত হিস্টোন প্রোটিন এবং DNA পাওয়া গেছে। অপরদিকে হিস্টোন প্রোটিন এবং DNA পাওয়া গেছে ০.৬ঃ১ অনুপাতে এবং RNA ও DNA পাওয়া গেছে ০.১ঃ১ অনুপাতে।

ব্যাকটেরিয়ার ক্রোমোজোমের ইউক্যারিওটিক কোষের মত হিস্টোন প্রোটিন পাওয়া যায় না। তাই ব্যাকটেরিয়ার ক্রোমোজোমকে নগ্ন (naked) ক্রোমোজোম বলে। ব্যাকটেরিয়ার ক্রোমোজোম থেকে DNA পৃথক করলে ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যায় যে এই DNA বিশেষভাবে কুণ্ডলী তৈরি করে থাকে।

ব্যাকটেরিয়া DNA তে সকল অংশ থেকেই প্রোটিন তৈরির সংকেত গঠিত হয়ে থাকে। এর তুলনায় প্রাণী কোষের DNA তে বিশেষত মানুষের DNA একটি বৃহৎ অংশ থেকে প্রোটিন তৈরীর কোন সংকেত গঠিত হয় না। মানুষের ক্রোমোজোমের DNAতে 3×10⁹ বেস জোড়া আছে। এরা আনুমানিক এক লক্ষ জিন তৈরি করতে পারে। তবে এই জিনের মধ্যে কেবল মাত্র ৩% জিন কার্যকরী প্রোটিন তৈরি করে।

যেহেতু ক্রোমোজোমের অন্যতম রাসায়নিক উপকরণ এই হচ্ছে DNA তাই ক্রোমোজোম আসলে জিনের সংগঠক এবং বাহক রূপে কাজ করে।

আরো অন্যান্য অতি জনপ্রিয় প্রশ্নোত্তর সম্পর্কে জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন 

ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন

ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন নিচে বর্ণনা করা হল—–

প্রাণী কোষের নিউক্লিয়াসে ডিটারজেন্টের সাহায্যে বিক্রিয়া করিয়ে সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্রে ঘূর্ণন করলে ক্রোমাটিন বস্তু অধঃপতিত হয়।

ক্রোমাটিন বস্তুদের পুনরায় রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে জানা গেছে যে এটি DNA এবং প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত। প্রোটিনের মধ্যে হিস্টোন প্রোটিনগুলিই অন্যতম উপাদান। হিস্টোন ক্ষারধর্মী প্রোটিন। কারণ এতে অধিক সংখ্যায় ক্ষারীয় অ্যামাইনো এসিড যেমন আরজিনিন এবং লাইসিন থাকে।

ক্রোমাটিনে ৫ প্রকার হিস্টোন প্রোটিন থাকে। এদের নাম H1, H2A, H2B, H3 এবং H4। ক্রোমাটিনে হিস্টোনের সমপরিমানে অহিস্টোন প্রোটিন থাকে। তবে হিস্টোন প্রোটিনগুলি ক্রোমাটিনের আকৃতি তৈরিতে অংশ নিয়ে থাকে।

নিউক্লিওজোম

ক্রোমাটিন অসংখ্য একক নিয়ে গঠিত। এককদের নাম নিউক্লিওজোম। রজার কর্নবার্গ হাজার ১৯৭৪ খ্রীস্টাব্দে সর্বপ্রথম নিউক্লিওজোমের মডেল প্রস্তুত করেন। তিনি উৎসেচকের সাহায্যে ক্রোমাটিনকে আংশিকভাবে পাতিত করে ২০০ বেস জোড়া যুক্ত খন্ডক দেখতে পান।

পরবর্তী সময়ে ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যেও ২০০ বেস জোড়া যুক্ত DNA খন্ডক দেখা সম্ভব হয়। এই খন্ডক ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ এর নিচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দানার মত দেখায়। এই দানাদের V বডির বা নিউক্লিওজোম বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

২০০ বেস জোড়া যুক্ত DNA কে উৎসেচক দিয়ে আরো বেশি পাচিত করলে আরো ছোট আকৃতির দানাদার গঠন পাওয়া যায়, যা উৎসেচক দিয়ে আর পাচিত হয় না। এই অবস্থার দানাদের কোরপার্টিকেল বলা হয়। প্রতিটি কোর পার্টিকেলে ১৪৬ টি জোড়া বেস যুক্ত DNA থাকে।

এই DNA দুটি করে H2A, H2B, H3, H4 হিস্টোন দ্বারা গঠিত অক্টামার এককে ১.৬৫ বার বেষ্টন করে থাকে। H1 হিস্টোন নিউক্লিওজোম কোর পার্টিক্যালের ঠিক বাইরে অবস্থান করে। ক্রোমাটিনের এইরূপ একককে বলা হয় ক্রোমাটোজোম। 

প্রতিটি ক্রোমোজোমের ব্যাস ১১ ন্যানোমিটার এবং উচ্চতা ৬ ন্যানোমিটার। পাশাপাশি অবস্থিত দুটি নিউক্লিওজোম এর মধ্যে কিছু পরিমাণ DNA থাকে। এই DNA কে স্পেসার বা লিংকার DNA বলে।

ক্রোমোজোমের রাসায়নিক উপাদানের ছক

প্রাথমিকভাবে ক্রোমোজোমে ৯০% DNA ও ক্ষারীয় প্রোটিন এবং ১০% RNA ও অম্লীয় প্রোটিন থাকে। Ca, Mg, Fe ইত্যাদি কয়েকটি ধাতব আয়ন থাকে। ক্রোমোজোম প্রধানত হিস্টোন এবং হিস্টোনবিহীন প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিড (DNA ও RNA) দ্বারা গঠিত।

একটি ক্রোমোজোমের রাসায়নিক গঠন হল ডিএনএ এবং হিস্টোন প্রোটিন। ডিএনএ অণুগুলি খুব দীর্ঘ, তবুও তারা ইতিবাচক চার্জযুক্ত হিস্টোনগুলির সাহায্যে একটি ছোট ব্যাসের মধ্যে প্যাক করা হয়। হিস্টোনগুলি আর্জিনাইন এবং লাইসিনে সমৃদ্ধ (অ্যামিনো অ্যাসিডের অবশিষ্টাংশ), যা মূল গঠন করে যার চারপাশে একটি ডবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ থাকে।

x ক্রোমোজোম y ক্রোমোজোমের চেয়ে কত গুন বড়

X ক্রোমোজোম y ক্রোমোজোমের চেয়ে গুন বড় এটি সংখ্যা উপর নির্ভর করবে ।নারীর কোষের দুটা ক্রোমোজমই হলো X অর্থাৎ XX। আর পুরুষের XY। Y ক্রোমোজম পুরুষালি প্রতীক আর X হলো নারীবাচক এর প্রতকি । Y ক্রোমোজোমের গুণ একটাই।

প্রতিটা মানব দেহে ২৩ জোরা ক্রোমোজোম থাকে। ২২ জোরা ক্রোমোজোম মানব শরীরের ঘটনে কাজ করে আর অন্য একটি লিঙ্গধারনে কাজ করে। যে পুরুষ হবে না নারী হবে। এই একটি ক্রোমোজোম এর কম বেশী অনুপাতিক হারে কম হলে তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজরা সন্তান হয়।

এক্স এবং ওয়াই ক্রোমোজমের মধ্যে প্রধান পার্থক্যটি হ’ল এক্স ক্রোমোজোম হ’ল মহিলা লিঙ্গ নির্ধারণকারী ক্রোমোজোম যেখানে ওয়াই ক্রোমোজোম পুরুষ নির্ধারণকারী ক্রোমোজোম।

আপনি কি চাকরি খুজঁছেন, নিয়মিত সরকারিবেসরকারি চাকরির সংবাদ পেতে ক্লিক করুন। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে মানব সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাড়ার জন্য, ক্লিক করুন। এছাড়াও, স্বাস্থ, টেকনোলজি, বিসনেস নিউস, অর্থনীতি ও আরো অন্যান্য খবর জানার জন্য, ক্লিক করুন

অষ্টম শ্রেণির এসাইনমেন্ট বিজ্ঞান

ক্রোমোজোম কাকে বলে
কোষের নিউক্লিয়াসের ভেতর অবস্থিত নিউক্লিয় জালক থেকে উৎপন্ন নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত যে-সুতোর মতো অংশ জীবদেহের বংশগত বৈশিষ্ট বহন করে এবং জীবের এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে পরিবাহিত করে, তাকে ক্রোমোজোম বলে।


আপনার বন্ধুদের সাথে এই পোস্ট শেয়ার করতে

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।